জন্মের পর থেকেই একটি ছেলে মায়ের মুখ থেকে, অভিভাবকদের মুখ থেকে ,সাহিত্য, চলচ্চিত্র এবং সংবাদ মাধ্যম ইত্যাদি জায়গায় এই প্রচার শুনতে শুনতে বড় হয় যে নারী সাংঘাতিক ভাবে প্রতারিত এবং অত্যাচারিত এবং পুরুষ সবকিছু বিনা পরিশ্রমে পেয়ে যাচ্ছে, পুরুষের জীবন খুব আনন্দের, স্বাচ্ছন্দ্যের এবং খুব স্বাধীন তাদের কোন সমস্যা হতে পারে না।
এর মানে নারীর সাথে একদমই কখনো প্রতারণা হয়নি তা বোঝাতে চাওয়া হচ্ছে না। নারী-পুরুষ ওভার সাথেই কম বেশি অত্যাচার হয়।
আমাদের সমাজে চিরাচরিত নারীর ভূমিকা ছিল গৃহ কর্ম করা ।গৃহকর্মের শ্রম লাগে না খুব সহজে হয়ে যায় তাও সম্পূর্ণ সত্যি নয়। কিন্তু পুরুষের কাজ শূন্য হাতে রাস্তায় বেরিয়ে যেকোনো মূল্যে উপার্জন করা এবং সেই উপার্জন করে নিয়ে যাওয়া অর্থের মাধ্যমে নিজ তথা পরিবারের খাদ্যের সংস্থান করা ।এটা আমরা খুব সহজেই বুঝতে পারি যদি মস্তিষ্ক সচল থাকে নারীর কাজ অপেক্ষা পুরুষের কাজ অনেকবেশি কষ্টসাধ্য ঝুঁকিবহুল এবং অনিশ্চিত। কিন্তু পুরুষেরা পরিবারের কথা ভেবে নিজের কায়িক শ্রম ,মানসিক কষ্ট কখনো বারবার নারীর কাছে তুলে ধরে নি। অপরদিকে নারী তার সামান্য কষ্টকে অতিরঞ্জিত করে বারবার বাল্যকাল থেকে ছেলেদের মস্তিষ্কে গেথে দিয়েছে। ছেলেরা এই ধারণা নিয়ে বড় হয়েছে আমরা জন্ম থেকেই খুব বিশেষ সুবিধা ভোগ করি বিশেষ স্বাধীনতা পাই অতএব আমাদের কোন কষ্ট, অসুবিধা দুঃখ হতে পারে সেটা সমাজের সামনে কোনভাবেই ব্যক্ত করা যাবে না। যতই কষ্ট হোক নিজের মধ্যে চেপে রেখে দিতে হবে ,মাতৃ তন্ত্রের এই ছলনার বলি নিম্ন শ্রেণীর শ্রমিক থেকে আদালতের বিচারপতি পর্যন্ত।
ঘরের কাজে ঝুঁকি অপেক্ষাকৃত অনেক কম ,ভালো না লাগলে বিশ্রাম নেওয়া যেতে পারে সম্পূর্ণ নিজের উপর নির্ভরশীল অপরদিকে অফিসে চাকরি ,কলকারখানায় কাজ কোন বস বা মালিকের অধীনে করতে হয় সেখানে কোন অজুহাত দেওয়া যায় না। রাস্তায় বেরোলে দৈহিক ক্ষয় ক্ষতি অনেক বেশি হয়, রোদ, জল, ঝড় বৃষ্টিতে পুরুষের শরীরের ত্বক ,মাথার চুল সম্পূর্ণরূপে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, এই ক্ষতির শিকার হন নব্বই শতাংশ পুরুষ। অপরদিকে মহিলারা বাড়িতে বসে অপেক্ষারত পুরুষের তুলনায় কম আকর্ষণীয় চেহারা রূপচর্চার মাধ্যমে বিজ্ঞাপনের আলোয় নিয়ে আসেন।
গৃহকর্ত্রী নিজে উপার্জন না করেও যেসব পুরুষভৃত্ত বা শ্রমিক থাকে তাদের ওপর কর্তৃত্ব করেন অর্থাৎ অপেক্ষাকৃত কম উপার্জন কারী পুরুষেরা তার মালিকের স্ত্রীর দ্বারা অনেক সময় কটুক্তি হেনস্তার শিকার হন। মালিকের স্ত্রী বা গৃহকর্তী নিচে উপার্জন না করেও শ্রমিক শ্রেণীর বা নিম্ন পদস্থ কর্মচারীদের ওপর বসের ভূমিকা পালন করেন । অর্থাৎ এরা কোন দায়িত্ব না নিয়েও পুরুষের উপর হুকুম চালান ।এটা কি বিশেষ সুবিধা নয় নিঃসন্দেহে নিঃসন্দেহে
এটা প্রিভিলেজ। নারীবাদ সব সময় একপাক্ষিক ,এক চোখা, নির্লজ্জ অত্যন্ত মিথ্যা একটা narrative তৈরি করে রাখে। এবং সময় সময়ে তাকে অস্ত্র করে ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের সরকারি সুযোগ-সুবিধা প্রকল্প এবং সর্বোপরি আইন আদায় করে নেয়।
উপসংহার: কল্পনার আবেগে বয়ে গিয়ে যদি আমরা বিচার করি তাহলে মনে হবে নারী প্রতারিত, কিন্তু বাস্তবে যদি চেতনা,বিবেক , ক্ষুরধার যুক্তির মাধ্যমে ন্যায় সঙ্গত পক্ষপাতীত্বহীন বিচার করে তাহলে এটা নিঃসন্দেহে শিক্ষিত ও শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ বলবেন পুরুষ সত্যিই মারাত্মক প্রতারিত।
কিছু পুরুষ শাসন ক্ষমতা তাদের হাতে রেখেছিল অর্থের প্রভাব খাটিয়ে। সেই রকম প্রভাবশালী,উচ্চপদস্থ ব্যক্তির সংখ্যা মাত্র পাঁচ শতাংশ। এই পাচ শতাংশ পুরুষ মানুষের ক্ষমতা প্রভাবকে হাতিয়ার করে বাকি সাধারণ 90% পুরুষের উপর মিথ্যে প্রচার দলগত চিৎকারের মাধ্যমে চাপিয়ে দেয় নারীবাদীদের দল। আরো লক্ষনীয় পুরুষ অপেক্ষা গীত কম দিন বাঁচে তর্কের খাতিরে যদি নারী পুরুষ উভয়ই মানবসম্পাত হয় তাহলে দুজনের আয়ুষ্কাল স্বাস্থ্য এর খেয়াল রাখা সভ্য সমাজের কর্তব্য এবং দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।