আজ লক্ষ্মী পূজা ১৯৪৬ সালে এই দিনে নোয়াখালী বুকে শুরু হয় এক নির্মম হত্যাকাণ্ড।
বিভিন্ন আর্টিকেল ও কিছু বই থেকে এই হত্যাকাণ্ড নিযয়ে একটি ছোট্ট সংস্করণ তৈরি করেছি এই সংস্করণ থেকে এই ঘটনাটির কিছু হত্যাযজ্ঞ ও গান্ধী ষজির স্বেচ্ছাচারিতা অংশটি তুলে ধরছি।
নােয়াখালির দাঙ্গায় চিত্ত দত্তরায়ের আত্মাহুতি :
শায়েস্তানগরের চিত্ত দত্তরায়ের বাড়ি কয়েক হাজার মুসলমানের দ্বারা আক্রান্ত হলে তিনি তাঁর বৃদ্ধ মা ও সন্তানদের নিজের বন্দুকের গুলিতে হত্যা করে নিজেও গুলিতে আত্মহত্যা করেন। গুলি না থাকায় তার স্ত্রী ও একটি শিশু সন্তান রক্ষা পায়।
সুরেন্দ্র কুমার বোসের বাড়ি আক্রমন :
“এমনই একটি দল স্থানীয় জমিদার সুরেন্দ্র কুমার বোসের বাড়ি আক্রমণ করে। তাঁকে অত্যন্ত নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়। এরপর জনতা সুরেন্দ্রবাবুর কাছারি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। সেই সময় বিভিন্ন জায়গা থেকে পালিয়ে আসা অনেক হিন্দুনারী ও শিশু ঐ কাছারি বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিল। তাদের অনেকেই আগুনে জ্যান্ত দগ্ধ হয়ে মারা যায়। যারা কোনোক্রমে এই জতুগৃহ থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছিল, তাদেরও কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
রাজেন্দ্রলাল রায়ের বাড়ি আক্রমন-
“অপর একটি দল নোয়াখালির District Bar-এর সভাপতি রাজেন্দ্রলাল রায়ের বাড়ি (করপাড়া গ্রাম) আক্রমণ করে। কিন্তু সেখানে স্থানীয় হিন্দুরা সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ করলে দাঙ্গাকারীরা পিছিয়ে আসতে বাধ্য হয়। বাধা পেয়ে ওরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এবং আশেপাশের হিন্দুগ্রামগুলিতে আক্রমণ চালায়। হিন্দুদের দেবস্থানগুলির পবিত্রতা নষ্ট করে। ইতিমধ্যে রাজেন্দ্রলাল রায় বেগমগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ জানান এবং দ্রুত পুলিশী নিরাপত্তা দাবী করেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশতঃ প্রশাসনিক কোন সাহায্যই তিনি পাননি।”
“পরদিন সকাল আটটায় এক বিরাট জনতা মারাত্মক অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে রাজেন্দ্রলাল রায়ের বাড়ি আক্রমণ করে। কিন্তু রাজেন্দ্রবাবু গুলি চালিয়ে আক্রমণকারীদের হটিয়ে দেন। এভাবে পর পর তিনবার দাঙ্গাকারীরা পিছু হটে যেতে বাধ্য চতুর্থব ↑ সফল হয়। মুসলীম লীগের প্রাক্তন এম. এল. এ. গোলাম সরোয়ারের নির্দেশে আক্রমণকারীরা প্রথমেই রাজেন্দ্রলাল রায়কে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করে। এরপর তাঁর পরিবারের সবাইকে এবং সবশেষে তাঁর বাড়িতে আশ্রয় নেওয়া মানুষদের হত্যা করা হয়। ***
(৫০) Amrita Bazar Patrika. 22-10-46
রাজেন্দ্রলাল রায়ের কাটা মাথা একটি রূপার থালায় সাজিয়ে গোলাম সরোয়ারকে উপহার দেওয়া হয়। গোলাম সরোয়ারের নির্দেশে তাঁরই দুই সেনাপতি রাজেন্দ্রলাল রায়ের দুই সুন্দরী মেয়েকে বিজয়ের পুরস্কার হিসাবে গ্রহণ করে।”
রাজেন্দ্রলাল রায় বা সুরেন্দ্র কুমার বোসকে এভাবে হত্যা করার পিছনে মুসলীম লীগ নেতাদের যে পরিকল্পনা ছিল তা সুন্দরভাবে বিশ্লেষণ করেছেন
রাজেন্দ্রবাবুর ছোট ভাই অধ্যাপক এম. এল. রায়। ইনি কলকাতার একটি কলেজে অধ্যাপনা করতেন। তিনি জানিয়েছিলেন,
“মুসলমানরা সমস্ত নোয়াখালিকেই ইসলামে রূপান্তরিত করতে চেয়েছিল। তাই ওরা বেছে বেছে এমন লোকদেরই প্রথম আক্রমণ করেছিল যাঁরা ওদের বাধা দিতে পারতেন। আমাদের পরিবারের সকলের মৃত্যুর এটাই একমাত্র কারণ।
কিন্তু এই পরিস্থিতিতে প্রশাসনের ভূমিকা ছিল রহস্যজনকভাবে নির্লিপ্ত। পুলিশ কখনোই আক্রান্ত মানুষকে রক্ষা করতে যায়নি, বরং তাদের ‘রক্ষাকর্তা’র ভূমিকা পালন করতে অস্বীকার করেছিল।
সুভাষচন্দ্র বোসের দাদা শরৎচন্দ্র বোস নোয়াখালি ঘুরে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন,
"No Police help was given to the persons and families attacked though timely appeals for help were made."**
গােপাইবাগের দাসদের বাড়ি :
কয়েক হাজার মুসলমান এই বাড়ি আক্রমণ করে ১৯ জন পুরুষকে নির্মভাবে হত্যা করে। অর্ধমৃত পুরুষদের দেহে আগুন ধরিয়ে দেয়। মহিলাদের ওপর চলে পাশবিক অত্যাচার।
গান্ধীর স্বেচ্ছাচারিতা
নোয়াখালিতে হিন্দুদের এই মুসলমান বর্বরতা থেকে রক্ষা করবার দায়িত্ব নেওয়ার জন্য গান্ধীজীকে আবেদন জানানো হল। কিন্তু মহাত্মা নোয়াখালি আসতে সম্মত হলেন না। কারণ নোয়াখালি গিয়ে তাঁর 'কর্তব্য' কী হবে 'ঈশ্বর' তাঁকে নির্দেশ দেননি। তাই দাঙ্গ ।পীড়িত মানবাত্মার প্রতি সমবেদনা এবং দুঃখ জানিয়েই তিনি তাঁর কর্তব্য শেষ করলেন।
দিল্লীতে বসে গান্ধীজী যে বিবৃতিটি দিয়েছিলেন তা এখানে তুলে দেওয়া হল : "Ever since I have heard the news of Noakhali, indeed, ever since the blood bath in Calcutta, I have been wandering what my duty is God shall show me the way."**
গান্ধীজী নোয়াখালির হিন্দুদের মুসলমান অত্যাচারের হাত থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার এক অসাধারণ 'অহিংস' পথের সন্ধান দিয়েছিলেন। তিনি হিন্দুদের আহ্বান জানালেন “তারা যেন কখনোই অহসায়ভাবে মৃত্যু বরণ না করে। বরং, তাদের উচিত একটিও শব্দ না করে হত্যাকারীর তরোবারির দিকে মাথা এগিয়ে দেওয়া। তাহলেই দাঙ্গা থেমে যাবে।” ধর্ষিতা বা অপহৃতা মেয়েদের কাছে গান্ধীজী আহ্বান জানালেন, তারা যেন তাদের অত্যাচারীদের বাধা না দেয়। কারণ, “মেয়েদের জানা উচিত কিভাবে মৃত্যুবরণ করতে হয়। সুতরাং খুব সাহসের সঙ্গে মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়াতে হবে এবং এর জন্য একটুও শোক করা উচিত নয়। কেবলমাত্র তাহলেই তাদের উপর এই অত্যাচার (ধর্ষণ ও অপহরণ) বন্ধ হবে।" (women must know how to die... women (should) face death bravely and without a murmur. Then only would the terrible killing now going on, stop)**
গান্ধীজীর অহিংসার এই উদ্ভট ব্যাখ্যার তীব্র প্রতিবাদ জানালেন কংগ্রেস সভাপতি আচাৰ্য্য কৃপালনী। তিনি তখন নোয়াখালির দাঙ্গা কবলিত অঞ্চলগুলি পরিদর্শন করছিলেন। তিনি আহ্বান জানালেন, “গত কয়েকদিন ধরে আমি যা দেখেছি তার পরিপ্রেক্ষিতে শুধু এইটুকুই বলতে পারি, কেন্দ্রীয় বা রাজ্যসরকার কিছু করুক বা না করুক, স্ত্রী-পুরুষ নির্বিশেষে প্রত্যেক বাঙ্গালীর (হিন্দু) আত্মরক্ষার ব্যবস্থা করা উচিত।” (from what I have seen and heard the day before and yesterday. I am clearly of the opinion that whatever the Government's, provincial or central, may or may not do, every Bengali, male or female, has to defend himself or herself.)**
আচার্য্য কৃপালনী আরও বললেন, “আমি যদিও সম্পূর্ণ অহিংসার বিশ্বাসী, তা সত্ত্বেও রাজেন্দ্রলাল রায়ের প্রতি আমার পূর্ণ শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। প্রত্যেক বাঙালীর সামনে আমি রাজেন্দ্রলাল রায় এবং তাঁর পরিবারের কথা উদাহরণ স্বরূপ তুলে ধরতে চাই যাঁরা দুদিন ধরে লড়াই করে আক্রমণকারী উন্মত্ত জনতাকে ঠেকিয়ে রেখেছিলেন। ১
রেফারেন্স
Kripalani: Gandhi-His Life and Thought.
বিনয়ভূষণ ঘোষ : দ্বি-জাতি তত্ত্ব ও বাঙালী
V. V Nagarkar-Genesis
Amrita Bazar Patrika.(1946)
The Statesman (1946)
Pirzada Foundation of Pakistan
R. C. Majumdar: History of the Freedom Movement. Vol-3
Mcinery Papers. 1976
G. D. Khosla: Stern Reckoning: A Survey of the Events before and following the Partition of India
Bengal Press Advisory Committee Report, 1946 (Oct.)
V. P. Menon Transfer of Power
মূল বই - নোয়াখালী নোয়াখালী
Read MoreAuthor: Animesh Datta MallaBarman
Historical Hindu 30-March-2025 by east is rising১৯৪৬-৪৭ এর বেঙ্গল division কে বাঙ্গালী হিন্দুদের একটা বড় অংশ একটা সাফল্য মনে করে। Hard কমিউনিস্ট বাঙালি হিন্দুকেও দেখেছি, পশ্চিমবঙ্গের আলাদা হয়ে যাওয়াকে একটা achievement ভাবতে। কিন্তু, আদৌ কি তাই?
উত্তর দেওয়ার সময় এসেছে।
প্রথমেই একটা Crystal Clarity রাখা দরকার - সেটা হল পশ্চিম পা কিস্তান ও পূর্ব পা কিস্তান এক নয়।
১. বর্তমান পা কিস্তানের পশ্চিমে ইরান, উত্তর আফ গানিস্তান অর্থাৎ, বর্তমান পা কিস্তানের ৩ দিকের ২ দিকই ই সলাম ধর্মাবলম্বী দেশ দ্বারা আবৃত। কিন্তু, পূর্ব পা কিস্তান বা, বর্তমান বাং লাদেশের পশ্চিম, উত্তর ও পূর্ব ভাগ এবং, যেকোনওদিকে সুদূর সীমান্ত অব্দিও কোনো ই সলাম ধর্মাবলম্বী দেশ অনুপস্থিত। এটা একটা গভীর demographic difference
২. অবিভক্ত বাংলায় হিন্দুরা কোনোভাবেই Minority ছিলনা। ৪৮-৫২ এর Ratio তে, ৪৮ যাদের সংখ্যা তাদেরকে কোনোভাবেই Minority বলা চলেনা।
৩. ১৯৪০ এর দশকে বাংলাভাষী মুস লমানদের হাতে মোটের ওপর অর্থ ছিলনা। তাদের অনেকেই স্বচ্ছল ছিল কিন্তু, উচ্চবিত্ত ছিলনা কেউই। আর্থিকভাবে হিন্দু উচ্চবর্ণের ধারকাছ এও কেউ ছিলনা তারা। শিক্ষায় ও আন্তর্জাতিক Connections একেবারেই ছিলনা তাদের।
৪. ব্রিটিশ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক শক্তির সাথে বাঙালি হিন্দু UC দের সম্পর্ক Way better ছিল যেকোনো মুসম্মান নেতার থেকে।
এগুলো ছিল হিন্দুদের বা, হিন্দু UC দের কিছু sharp edge! তাহলে, এগুলোকে কিভাবে ব্যবহার করা যেত?
১. বাংলায় উগ্র বাংলাবাদ এর প্রচার, এবং বাংলায় বসবাসকারী পাঠান, ইরানি, পাঞ্জাবি মুস দের eliminate করা।
২. হিন্দুস্থানী UC হিন্দুর বাংলায় প্রয়োজন না থাকলেও, খুব সহজেই হিন্দুস্থানী Non UC হিন্দু এবং, কিছুক্ষেত্রে NE এর লোকদের বাংলায় ঢুকিয়ে ২০-২৫ বছরের মধ্যেই অখণ্ড বাংলায় হিন্দু পপুলেশন ৬০% আশেপাশে করে নেওয়া যেত।
৩. এই পুরো process টাকে continue করানোর জন্য রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক যে Connections প্রয়োজন সেটা হিন্দুদের বা, হিন্দু UC দের ছিল।
৪. হিন্দু UC দের বিরুদ্ধে পূর্ববঙ্গে যে Movement টা হচ্ছিল, সেটা অনেকটাই ১৯৮০ এর দশকেই বিহার UP তে যাদব, বা রাজস্থান হরিয়ানাতে জাঠ দের উত্থানের সমতুল্য। দুটোই জমিদার শ্রেনীকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে জোতদার (Mid Caste) শ্রেনীর ক্ষমতা দখলের কাহিনী। হিন্দু জমিদারদের বিরুদ্ধে মূলত Middle Caste জোতদার সম্প্রদায় বিদ্রোহ করেছিল, যারা পূর্বে ই সলাম নিয়েছিল।
এটার একমাত্র এবং, "রামবান" Counter হল, Communism। পূর্ববঙ্গের হিন্দু জমিদার শ্রেণী যদি স্বেচ্ছায় জমিদারি ছেড়ে দিয়ে Communist Movement এ নিজেদের সঁপে দিয়ে, জোতদার মধ্যবর্ণ এর সাথে ভূমিহীন কৃষকদের সফল সংঘর্ষ তৈরি করতে সক্ষম হত তাহলে, তারা বাংলার ক্ষমতা Clean sweep করতো আবার আরেকবার।
**এমনিতেও ব্রিটিশ আমলে যখন ব্যবসার ভিত্তিতে জমিদারি নিলামী শুরু হয়, সেই তখন থেকেই জমিদারির রাজনৈতিক প্রভাব হ্রাস পায়।
৫. এখনও অব্দি, চার নম্বরে বলা পরিকল্পনার বাস্তবায়ন কেবল ও কেবলমাত্র সম্ভব ছিল যদি ভূমিহীন সমাজ এই কাজে হিন্দু উচ্চবর্ণকে সহায়তা করতো। ভূমিহীন সমাজ অর্থাৎ, নমশূদ্র, পো দ আদি সমাজ। ভূমিহীন হিন্দু সমাজ ও ভূমিহীন মুসলমান সমাজ ঐক্যবদ্ধ হয়ে যদি Ground Zero তে ভূমি অধিকার করে থাকা কৃষক সমাজ (যারা ধর্মে মুলমান পূর্ববঙ্গে, ও হিন্দু পশ্চিমবঙ্গে) এর বিরুদ্ধে গণআন্দোলন করতো উচ্চবর্ণের হিন্দুদের বৌদ্ধিক ও রাজনৈতিক নেতৃত্বে, তাহলে ইতিহাস অন্যরকম হতো। কিন্তু, এর জন্য দরকার হতো, যোগেন মন্ডলদের সাহায্য, যা পাওয়া যায়নি।
৬. Communist রাষ্ট্র একমাত্র Communism বাদে অন্য কোনো কিছুর সামনে মাথানত করেনা। Hinduism এমনিতেও communist রাষ্ট্রকে challenge করার জায়গায় নেই, কিন্তু ইস ,লামপন্থী faction যদি এহেন পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যেত, সেক্ষেত্রে Communist রাষ্ট্র তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে বাধ্য থাকতো। USSR বা, Communist China এর সমান শ্রেনীর action সেক্ষেত্রে হত। অর্থাৎ, হিন্দুদের শ্রেষ্ঠ সুরক্ষা Communist রাষ্ট্রেই হত।
Conclusion - উপরিউক্ত তত্ত্ব পুরোটাই একটা Realizable Plausibilistic Theory। যা করলেও করা যেত।
তবে, এই নিয়ে কোনো সংশয় নেই, বর্তমান বাংলাদেশ আজকের পশ্চিমবঙ্গের চেয়ে বহুগুণ এগিয়ে গেছে প্রায় সমস্ত parameters এই, যে বাস্তবতাকে অধিকাংশ বাঙালিই মানতে চায়না কারণ, সেটা মেনে নিলে পশ্চিমবঙ্গ যে একটা Failed Project সেটা মেনে নেওয়া হয়।
Read MoreAuthor: Animesh Datta MallaBarman
Historical Hindu 30-March-2025 by east is risingTakashi Shimura Facebook Profile:
2010: Viktor Yanukovich is elected president of Ukraine in a fair election, according to the OSCE.
2013: Yanukovich strengthens economic ties with Russia and moves away from the EU as the loans from Russia were were a much better deal than the loans from the EU (IMF).
2013: Senator John McCain discusses US backed regime change for Ukraine on CNN.
2013: US Assistant Secretary of State Nuland and US Ambassador to Ukraine Piatt discuss the upcoming coup of President Yanukovich and of who his replacement will be. (leaked phone call), choosing to lead the unpopular Yatsenyuk who infact becomes Prime Minister, later leaving office with single digit approval rating.
February 2014: Yanukovich is overthrown by nationalists in a violent coup.
February 2014: Nationalist groups flood cities harassing ethnic minorities. (Ethnic Russians are a minority in Ukraine, but a Majority in some regions.)
March 1 2014: Crimea's elected leader, Sergey Aksyonov, requests Russian security assistance.
March 3 2014: Vice news reports soldier convoys entering Crimea. (It is later revealed that this is a private security force.)
March 16 2014: Crimea votes to join Russia by a 95% majority. The U.S. state radio NPR reports that "The referendum had widely been expected to pass; Crimea's parliament has already voted to seek annexation by Russia."
March 18 2014: Russia annexes Crimea. Western media accuses Russian of invading, but not a single life was lost nor any structural damage done. (For reference, that would be like Canada taking half of Mane without a single shot fired.)
April 2014: Ukraine military launches attack on Donbass, (a somewhat separately governed eastern portion of Ukraine). The Donbass small military and volunteers defend the region. Some Russian backed security forces assist in the fight.
April 2014 Ukraine passes a law against using the Russian language in government, business, school, and media settings, which is met with more protests across the eastern and southern regions.
May 2014: Odessa - Dozens of Ethnic Russian protestors are burnt alive by Nazi groups, and ethnic Russian minorities are murdered and harassed throughout the country.
May 2014: leaders from the Luhansk and Donetsk regions request independence and repatriation to Russia, but the Kremlin refuses.
Sept. 2014: Minsk 1 - First ceasefire treaty is signed but doesn't last, in part because right wing Nationalists (Svoboda, Azov, Right Sector, Fatherland, Trident, White Hammer....), won't stop attacking ethnic Russians especially in the eastern regions where there are majority Russians..
Feb. 2015: Minsk 2 - Second treaty allows Russian military to stay to defend civilians in the breakaway regions. Chancellor Merkel later in 2023 states this agreement was a ruse and was only intended to give an advantage to NATO to better arm and train Ukraine for future attacks.
2016: US leads an anti Russia propaganda campaign, beginning with the bogus Russiagate collusion accusation hatched in the DNC in the run-up to U.S. presidential general election. In over 8 years there have been numerous studies (Mueller Report, Durham Report, Twitter Files Reveal, etc.), that have debunked this accusation and not one person has been prosecuted for it.
May 2016: NATO activates new missile systems in Romania. (Close to Russia)
June 2016: NATO launches Anti Russian war games with 31,000 troops near Russia’s western border. This scale exercise hasn't happened since the Cold War. German troops retrace the steps of the Nazi invasion of the Soviet Union across Poland.
May 2018 UNICEF reports that as many as half a million eastern Ukrainian children are in danger due to attacks coming from Kyiv, which started in 2014.
May 2019: Petro Poroshenko leaves office with under 10% approval rating (lowest of any leader in the world). ... Volodymyr Zelensky wins election on promise to end the attacks on eastern Ukraine regions.
May 2021: Zelensky meets with Antony Blinken and Victoria Nuland, subsequently breaking his mandate and agreeing to escalate attacks on eastern Ukraine.
December 2021: Russia attempts to negotiate the removal of the Romanian NATO missiles. NATO rejects the negotiations.
February 2022: Ukrainian military initiates a new bombing campaign into the separatist regions (OSCE) while Ukrainian Nationalist militias (openly Nazi as per their flags) increase their attacks on the minority Russian population. Kyiv commits nearly 5000 UN ceasefire violations and hundreds die. Russia intervenes on behalf of eastern Ukraine regions and in defense of its shared border on Feb 24th.
March 2022 Russia and Ukraine schedule two peace negotiations, both blocked by the U.S. and U.K.
September 2022: Donbass, Kherson, and Zaporizhzhia vote to join the Russian Federation.
March 2023 U.S. Pulitzer Prize winning journalist Seymour Hersh reports the embezzlement of $400 million by Zelensky and his inner circle.
April 2024: Volodymyr Zelensky's presidency ends, but he has cancelled elections, and closed all 14 opposition parties, jailing some of the opposition leaders, and so he remains in power.
February 2025: The U.S. and NATO claim $300 billion of Russian (private and public) assets to be used for Ukraine's defense and reparations.
All Zelensky had to do was to accede to and implement the initial Minsk II Agreements, which basically required Ukraine to remain outside NATO in exchange for Russian troops would be removed and Donbas regions would remain within Ukraine's border. This would have also saved roughly a million lives. However Zelensky was too weak of character to do what the majority of his people wanted, what he was voted in to do, and instead accepted the cynical plans of Antony Blinken, VIctoria Nuland, and Jake Sullivan.
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Historical General USA vs Russia 22-March-2025 by east is rising"আকবরনামার একটি ১৬শ শতকের চিত্রের বিশদ অংশ, যেখানে ১৫৭৬ সালে একটি যুদ্ধের দৃশ্য চিত্রিত হয়েছে, যেখানে দাউদ শাহ কররানিকে বন্দি করা হয়েছে এবং তার হাত বাঁধা রয়েছে।
মুগল সেনাপতি খান-ই-জাহান মুনিম খান বাঙলা সালতানাতের শেষ সুলতান দাউদ শাহের মস্তক শিরশ্ছেদ করেন। দাউদ শাহ কররানির মাথাবিহীন দেহ কররানি সালতানাতের রাজধানী তান্ডায় ফেলে রাখা হয়, যেখানে তা পচে যায়, আর তার কাটা মাথা মুঘল বিজয়ের প্রতীক হিসেবে সম্রাট আকবরের কাছে পাঠানো হয়।"
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Historical General 07-March-2025 by east is risingইতিহাস ফিসফিস কথা কয় ফেসবুক পেজ থেকেঃ
কোরিয়াকে একসময় "হারমিট কিংডম" (Hermit Kingdom) বা নিঃসঙ্গ রাজ্য বলা হতো, কারণ তারা বাইরের বিশ্বের সাথে যোগাযোগ প্রায় সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে রেখেছিল। এই নীতি মূলত জোসন রাজবংশ (Joseon Dynasty, 1392-1897)-এর সময় কার্যকর ছিল, যখন কোরিয়া কনফুসীয় নীতিকে কঠোরভাবে অনুসরণ করত এবং বিদেশি প্রভাবকে তাদের সমাজের জন্য হুমকি হিসেবে দেখত।
জোসন রাজবংশের শাসকরা নিও-কনফুসীয় দর্শন (Neo-Confucianism) অনুসরণ করত, যা সামাজিক শৃঙ্খলা, নৈতিকতা এবং ঐতিহ্যের প্রতি অনুগত্যের উপর জোর দেয়। তারা মনে করতো, বিদেশি পশ্চিমা মতাদর্শ, সমাজের স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে পারে। ফলে, তারা বাইরের বিশ্বের সাথে সংযোগ এড়িয়ে চলার নীতি গ্রহণ করে।
কোরিয়া ঐতিহাসিকভাবে চীনের মিং সাম্রাজ্যের (Ming Dynasty, 1368-1644) অধীনস্থ একটি উপনিবেশমূলক রাষ্ট্র হিসেবে কাজ করত। কিন্তু ১৬৪৪ সালে চীনে কিং সাম্রাজ্য (Qing Dynasty) প্রতিষ্ঠিত হলে কোরিয়া মানচুদের শত্রু মনে করে এবং নতুন রাজবংশকে স্বীকৃতি দিতে অনিচ্ছুক ছিল। যদিও পরবর্তীতে কোরিয়া কিং সাম্রাজ্যের বশ্যতা স্বীকার করে, তবুও তারা বিদেশি শক্তির সাথে সরাসরি সম্পর্ক স্থাপন করতে অস্বীকৃতি জানায়।
১৮শ ও ১৯শ শতকে, চীনের মাধ্যমে ক্যাথলিক ধর্ম কোরিয়ায় প্রবেশ করে এবং তা ক্রমশ জনপ্রিয় হতে থাকে। কিন্তু কনফুসীয় নীতির সাথে ক্যাথলিক বিশ্বাসের বিরোধ ছিল—কারণ ক্যাথলিক ধর্ম রাজাকে স্বর্গীয় প্রতিনিধির পরিবর্তে সমান মর্যাদার মানুষ হিসেবে দেখে। ফলস্বরূপ, জোসন সরকার খ্রিস্টধর্ম নিষিদ্ধ করে।
১৮৬৬ সালে, USS General Sherman নামে একটি আমেরিকান বাণিজ্যিক জাহাজ অনুমতি ছাড়াই কোরিয়ায় প্রবেশ করলে কোরীয়রা সেটিকে ধ্বংস করে এবং ক্রুদের হত্যা করে। এই ঘটনার প্রতিশোধ নিতে ১৮৭১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কোরিয়ায় একটি সামরিক অভিযান চালায়, যা "শিনমিও যুদ্ধ" (Shinmiyangyo) নামে পরিচিত।
১৮৭৬ সালে জাপান কোরিয়াকে "গ্যাংহাওয়া চুক্তি" স্বাক্ষর করতে বাধ্য করে, যার ফলে কোরিয়া তাদের বন্দর খুলতে বাধ্য হয়।
এটি ছিল কোরিয়ার স্বেচ্ছা-বিচ্ছিন্নতার সমাপ্তির প্রথম ধাপ।
১৮৯৭ সালে কোরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে "কোরিয়ান সাম্রাজ্য" (Korean Empire) ঘোষণা করে এবং রাজা গোজং সম্রাট হন।
কিন্তু ১৯১০ সালে জাপান কোরিয়াকে সম্পূর্ণরূপে দখল করে নেয় এবং কোরিয়া পরবর্তী ৩৫ বছর জাপানের উপনিবেশে পরিণত হয়।
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Historical General 08-February-2025 by east is risingWestern Version:
The fall of Constantinople in 1453 marked the end of a remarkable 1,100-year run for the Byzantine Empire. What's lesser known is that the Ottomans used massive bronze cannons to breach the legendary walls - cannons designed by a Hungarian Christian named Orban who had first offered his services to Constantinople. When they couldn't afford his astronomical price, he went to the Ottomans instead. His 27-foot cannon could fire 1,200 pound stone balls and took 60 oxen just to move into position. The mighty walls that had protected the city for centuries finally fell to Christian-made artillery in Muslim hands.
Turk Version:
Urban was left without work in Constantinople and came to Sultan Mehmed with a request to give him a job. The Sultan was preparing for a siege at that time and showed him the drawings of the Shahi cannon, which stunned him. The Sultan asked if he could build this cannon. Uran replied, yes, I can, but I can't fire a bullet. The Sultan said don't worry about it, just make the cannon. Sultan Mehmet made the drawings and calculations himself. Not like you Western historians have invented their own fame. Along with Urban, there were other engineers, Sarudzha Sekpan and Muslihitdin. A total of 3 cannons were built. Urban's cannon couldn't withstand the first week and cracked and exploded during the shot, and Urban died next to him. The other 2 worked until the end of the siege. one is in a museum in Britain, was given as a gift by Sultan Abdulaziz to Queen Victoria. learn history, not lies
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Historical General 05-February-2025 by east is risingBetween 1325 and 1353, Moroccan scholar Ibn Battuta traveled over 75,000 miles, exploring Africa, Asia, Europe, and the Middle East. His journeys included:
1325-1327: Pilgrimages to Mecca and travels through the Middle East
1330-1332: Serving as a judge in India’s Delhi Sultanate
1332-1346: Crossing Asia, reaching China, Sri Lanka, and the Maldives
1349-1353: Returning through North Africa, sharing his vast knowledge
Ibn Battuta’s Rihla still inspires global explorers today.
Author: Saikat Bhattacharya
Historical General 26-January-2025 by east is risingশুধু লোহার ব্যবহার জানলেই লৌহ যুগ আসেনা।
লৌহ যুগ আনতে হলে তিনটে শর্ত পালন করতে হবেঃ
১) ইতিমধ্যে ব্যবহৃত কৃষি জমিতে লৌহ লাঙ্গল ব্যবহার করে জমির উৎপাদনশীলতা বাড়াতে হবে,
২) তার পরিণামে বাড়াতে হবে জন্ম হার ও জনসংখ্যা (অর্থাৎ শক্তিশালী পিতৃতন্ত্র আসতে হবে) এবং
৩) এই বর্ধমান জনসংখ্যা লৌহ কুঠার ব্যবহার করে জঙ্গল কেটে আরও বেশি বেশি জমি নিয়ে আনবে কৃষি ও বাণিজ্যের উদ্যেশ্যে ব্যবহার করার জন্যে।
তামিল নাড়ু-তে ১ পাওয়া যায়নি আর ২ হওয়ার কোন নিদর্শন নেই।
শুধু ৩ অর্থাৎ লৌহ কুঠার পাওয়া গেছে।
ফলে লোহার কিছু সরঞ্জাম ব্যবহার হলেও লৌহ যুগ আনতে পারেনি দ্রাবিড়েরা।
সেটা হিতাইত-রাও (বর্তমান তুর্কি) আনেনি কারণ তারা লোহার জিনিস কেবল উচ্চবিত্ত-দের বিলাস দ্রব্য হিসেবে ব্যবহার করেছে।
লৌহ যুগ নিয়ে আনে মূলত অসিরীয়রা (বর্তমান উত্তর ইরাক)।
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Historical Hindu 24-January-2025 by east is risingUyghur Bookshelf
305 A.D. marked a pivotal moment in European history during the late Roman Empire. This was the era of the Tetrarchy, a system of rule established by Emperor Diocletian to stabilize and manage the vast Roman Empire. Here’s an overview of Europe during this time:
________________________________________
1. The Roman Empire
• Tetrarchy:
o The empire was divided into Eastern and Western halves, each governed by an Augustus (senior emperor) and a Caesar (junior emperor).
o In 305 A.D., Diocletian (Eastern Augustus) and Maximian (Western Augustus) abdicated, passing power to their Caesars:
Galerius became Augustus of the East.
Constantius Chlorus became Augustus of the West.
Two new Caesars were appointed: Maximinus Daza (East) and Severus II (West).
• Territory:
o The Roman Empire stretched across most of Europe, North Africa, and parts of the Middle East.
o The Rhine and Danube rivers marked the northern boundaries, constantly threatened by barbarian tribes.
________________________________________
2. Barbarian Tribes and Beyond the Empire
• Germanic Tribes:
o Various Germanic tribes, such as the Goths, Franks, Vandals, and Alamanni, lived beyond the Roman frontiers.
o These tribes occasionally raided Roman territories or were recruited into Roman military service as foederati (allied tribes).
• Huns:
o The Huns, a nomadic people from Central Asia, began moving westward. While their impact on Europe would intensify later, they were starting to displace other tribes, like the Goths.
________________________________________
3. Christianity and Religious Change
• Christianity:
o Christianity was spreading across the Roman Empire despite ongoing persecution.
o The Diocletianic Persecution (303–311 A.D.), the empire's last and most severe campaign against Christians, was ongoing.
o Many Christians became martyrs, further strengthening the religion’s influence.
________________________________________
4. Britain
• Roman Britain:
o Britain was a Roman province under the rule of Constantius Chlorus.
o The island was relatively stable but faced pressure from Picts in the north.
________________________________________
5. Other Key Regions in Europe
• Scandinavia:
o Populated by early Germanic and Norse tribes, not yet centralized into kingdoms.
• Eastern Europe:
o Dominated by migrating peoples, including Slavic and Sarmatian tribes.
• Celtic Regions:
o Celtic culture persisted in areas like Ireland and parts of Scotland, where Roman influence did not reach.
________________________________________
Legacy of 305 A.D.
• The Tetrarchy was an ambitious system to manage the vast Roman Empire, but it eventually collapsed due to internal conflicts and power struggles, leading to Constantine the Great's rise.
• This period set the stage for the Constantinian shift, where Christianity would gain imperial support and transform European history.
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Historical General 21-January-2025 by east is risingUyghur Bookshelf
The Kushan Empire (c. 30 CE – 375 CE) was one of the most significant empires in Central Asia and South Asia during the early centuries of the Common Era. It was instrumental in connecting the East and the West, facilitating the flow of goods, ideas, and cultures across a vast area of India, Central Asia, and China. The Kushans played a pivotal role in the cultural and economic exchanges along the Silk Road, making them one of the most influential empires in the region.
1. Origins of the Kushan Empire
The Yuezhi Confederation: The Kushan Empire originated from the Yuezhi people, a group of nomadic tribes that had lived in the region around the Tarim Basin (modern-day Xinjiang, China). The Yuezhi were initially part of the larger Indo-Scythian migration and settled in the regions of Gandhara (modern-day Pakistan and parts of Afghanistan) and Kashmir.
Kushan Kings: The Yuezhi eventually formed the Kushan dynasty, which came to power in the early 1st century CE. The first notable king was Kujula Kadphises (r. c. 30-80 CE), who united the Yuezhi tribes and expanded their territory. His successor, Vima Takto, further consolidated the empire's control over the region.
Kanishka the Great: The most famous of the Kushan rulers was Kanishka the Great (r. c. 127-150 CE). He is considered one of the most powerful and influential rulers in the history of South Asia. Under his rule, the Kushan Empire reached its peak, both territorially and culturally.
2. Territorial Extent of the Kushan Empire
The Kushan Empire stretched across a vast region, from Central Asia in the north to Northwest India and parts of Pakistan in the south. Its boundaries included:
Central Asia: The empire controlled parts of modern-day Afghanistan, Tajikistan, Uzbekistan, and Kyrgyzstan.
South Asia: It held territories in Gandhara (modern-day Pakistan) and the Indus Valley, extending as far south as the Deccan Plateau in India.
Silk Road: The empire played a crucial role in controlling and promoting trade along the Silk Road, connecting the Indian subcontinent to the Roman Empire, China, and beyond.
3. Economy and Trade
Silk Road: The Kushans were central players in the Silk Road trade routes, facilitating the exchange of goods, culture, and ideas between the East and West. They acted as intermediaries between the Chinese, Parthians, and Romans, which helped establish their empire as a thriving hub for trade.
Goods Traded: The Kushans traded a wide variety of goods, including silk, spices, precious metals, gems, and textiles. Roman coins have been found throughout the empire, demonstrating strong economic ties with the Western world.
Minting Coins: The Kushans are also known for their extensive coinage. They minted gold, silver, and copper coins that depicted their kings and gods. These coins not only served as currency but also as symbols of Kushan sovereignty and religious identity.
4. Culture and Religion
Religious Tolerance: The Kushan Empire was known for its religious pluralism and tolerance. Kanishka, in particular, is remembered for his promotion of both Buddhism and Hinduism, as well as his interaction with other religious traditions, including Zoroastrianism and Greek polytheism.
Buddhism: The Kushans played a crucial role in the spread of Buddhism across Central Asia and into China. King Kanishka is credited with supporting Buddhist monasticism and sponsoring Buddhist art, particularly the Gandhara School of Art, which blended Greek and Indian artistic styles.
Gandhara Art: The art of Gandhara, influenced by both Greco-Roman and Indian styles, is famous for its sculptures and reliefs depicting the life of the Buddha. This unique style of art flourished during the Kushan period and has had a lasting impact on Buddhist art throughout Asia.
Greek Influence: Due to the earlier Greek rule in the region (the Greco-Bactrian Kingdom), the Kushans inherited many Greek cultural elements. The influence of Greek culture is evident in Kushan coinage, art, and architecture.
5. Decline of the Kushan Empire
The decline of the Kushan Empire began in the 3rd century CE, largely due to internal strife and external pressures:
Internal Conflicts: The empire faced several internal challenges, including dynastic struggles and the fragmentation of power within the ruling elite.
External Pressures: The Sassanid Persians in the west, along with invasions from the Hephthalites (White Huns), put increasing pressure on the Kushans. The empire began to lose territory in the north and south, and by the mid-3rd century, its power had significantly waned.
Fall of the Empire: By the end of the 3rd century CE, the Kushan Empire had effectively dissolved, with its territories being absorbed into various other states and empires, such as the Gupta Empire in India and the Sassanid Empire in Persia.
6. Legacy of the Kushan Empire
Cultural and Religious Influence: The Kushan Empire's contributions to the spread of Buddhism and the flourishing of Gandhara art continue to be recognized as significant achievements. The Kushan rulers facilitated the exchange of ideas and cultures across continents, particularly through their support of trade along the Silk Road.
Political Legacy: The legacy of the Kushans as rulers of a cosmopolitan and multi-ethnic empire influenced the political structures of later empires in the region, particularly the Gupta Empire in India, which adopted many aspects of Kushan governance.
Conclusion
The Kushan Empire was a remarkable empire in the history of Central and South Asia. At its height, it connected the East and the West, thriving as a commercial and cultural hub. The Kushans played a crucial role in the development of Buddhism, art, and trade, leaving an enduring impact on the history and culture of the regions they ruled.
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Historical General 17-January-2025 by east is risingপ্রথম প্রশ্ন রাজপুত কারা?
রাজপুত দের দুটি শ্রেণিতে আমরা ভাগ করবো -
১. রাজস্থান অঞ্চলের রাজপুত
২. UP বিহারের ঠাকুর সম্প্রদায়, হিমাচলের খাসি, জম্মুর ডোগড়া
রাজপুত যত Icon এর নাম পাওয়া যায়, তারা প্রত্যেকে প্রথম শ্রেণীর। দ্বিতীয় শ্রেণী এর যে শুধুমাত্র নিজের কোন Icon নেই এবং তারা প্রথম শ্রেণীর Icon Borrow করে কাজ চালায়, তাই নয়; এরা আর্থিকভাবেও অনেকেই বেশি দরিদ্র, এবং Genetics বা চেহারার দিক থেকেও দুই শ্রেণীতে মিল নেই। প্রথম শ্রেণীর রাজপুত দের আর্থিকভাবে বেশ স্বচ্ছল অনেকেই, এবং চেহারার দিক থেকে ব্রাহ্মণদের সমকক্ষ না হলেও, একেবারে বাজে দেখতে হয়না। Whereas, একটা average ভোজপুরি ঠাকুর এর চেহারা অতীব জঘন্য।
বস্তুতঃ, দ্বিতীয় শ্রেণীর ৮০ -৯০% আদিতে কেউ Gond, কেউ পাসি ইত্যাদি জাতির অংশ ছিল। মুঘল আমল এর শুরুর দিক থেকে Pre Brittish Era অব্দি, মোটামুটি যেকোনো কাস্ট এর লোক যে একটি পয়সা করতো, কিংবা লোকবল সঞ্চয় করতো (সেটা ডাকাতি করার লোকবল বহুক্ষেত্রে), তারা রাজপুত কাস্ট এর অন্তর্গত হয়ে যেত, এই পদ্ধতির নাম Rajputisation বা, রাজপুতকরণ। আমরা আমাদের পরবর্তী আলোচনায়, রাজস্থান বাদে অন্য অঞ্চলের রাজপুতদের Fake রাজপুত বলে উল্লেখ করবো, Central Politics (দিল্লী) এ এদের প্রভাব অতীব সামান্য হওয়ায় এদের আমরা ধর্তব্যের মধ্যে রাখলাম না।
তবে, Rajputisation এর মজা হল - এই পদ্ধতিতে নতুন রাজপুত হওয়া কোন ব্যক্তি/ পরিবার মূল রাজপুত বা, রাজস্থানি রাজপুতের থেকে বংশ মর্যাদায় নিম্নতর বা, অবিশুদ্ধ বলে পরিচিত হল।
এখান থেকে দেখছি Rajputisation এর দুটো Interesting Effect ~
১. মূল রাজপুত সেনানায়কের সেনায় Manpower Supply দেওয়া এর সমস্যা মিটছে একদিকে, তেমনই একজন Fake রাজপুত নিজের বিশ্বাসযোগ্যতা প্রমাণ করার তাগিদে একজন মূল রাজপুতের সেনায় মরতে ও মারতে প্রস্তুত থাকছে।
২. যেকোনো নিম্নজাতির কেউ যে আর্থিকভাবে সক্ষমতা বা, লোকবল বৃদ্ধি করছে, তার Caste Conversion করিয়ে তাকে রাজপুত বানিয়ে দেওয়ায় রাজপুত বাদে দ্বিতীয় কোন কাস্ট এর Military Activity Run করার ক্ষমতা থাকছেনা উত্তর ভারতে।
এখনও অব্দি আমাদের discussion এ এটা প্রমাণ হয়েছে, Rajputisation এর process কতটা Effectively পশ্চিম ভারতীয় মূল রাজপুত দের ক্ষমতাবৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
আমাদের দ্বিতীয় প্রশ্ন হল, এই মূল রাজপুত ঠিক কারা?
একটা Conceptual Clarity এখানে আগেভাগে দরকার। সেটা হল - রাজস্থান কিন্তু আর্যধর্মের কেন্দ্র নয়। বাংলাকে যেমন মূল আর্য সংস্কৃতির বলয়ের বাইরে assume করা হতো, রাজস্থানকেও তাই। ১৬ মহাজনপদের একটি জনপদও আজকের রাজস্থানে ছিলনা। তবে, এই মূল রাজপুত কারা?
মূল রাজপুত হল আদতে গুপ্ত আমলের শেষের দিকে ভারতে আক্রমণ করা, ও শেষে পশ্চিম ভারতে settle করা হুন (Hun) দের বংশধর, যারা কালক্রমে এরা হিন্দু ধর্ম (law of the land) গ্রহণ করে।
আমাদের তৃতীয় প্রশ্ন হল, মুঘল রাজপুত সম্পর্ক এর ভিত্তি কী?
১. বাল্যকালে রাজস্থানের রাজপুত পরিমণ্ডলে বড় হওয়ার ফলে, মুঘল সম্রাট আকবর একটা জিনিস বোঝেন - রাজপুতরা মূর্তিপূজক হলেও আদতে এদের হিন্দুধর্মের প্রতি বিশেষ কোনো প্রীতি নেই। এদের উদ্দেশ্য - নিজেদের রাজনৈতিক ও সামরিক নিয়ন্ত্রণ পশ্চিম ভারতে অক্ষুন্ন রাখা, এবং সর্বোপরি Hun Brotherhood। হিন্দু থাকা আর না থাকাটা সেই প্রয়োজনের ওপর নির্ভর করছে।
২. আকবর ও মুঘলরা বোঝে, ভারতে সাধারণ হিন্দুদের ধর্মান্তরণ করা কঠিন। তাই, ইসলামের তরবারি হাতে সোজা ঝাঁপিয়ে পড়লে, সম্পূর্ণ ভারতে মুঘল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা সহজ হবেনা। বরং, সহজ উপায় হল - যদি একটা হিন্দু কাস্টকেই নিজেদের Alliance হিসেবে গ্রহণ করা যায়, যারা নামে হিন্দু হলেও হিন্দু ধর্মের প্রতি অন্তরে এদের কোন শ্রদ্ধাভক্তি থাকবেনা;
এই এরা যদি সাধারণ হিন্দুদের গণহত্যা করে, তাহলে তাতে সাধারণ হিন্দুদের এটা মনে হবেনা যে, বিধর্মীরা তাদের ওপর অত্যাচার করছে। তাদের কাছে এটা হবে কোন প্রাত্যহিক রাজনৈতিক ঘটনা।
এবং, Most Importantly, যদি Mainland India তে কেউ লোকবল বৃদ্ধি করে, তাকে Rajputisation এর মাধ্যমে এই মূল রাজপুতরা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে পারবে। মূল রাজপুতরা যেহেতু মুঘল সাম্রাজ্যের সাথে Alliance এ থাকছে, তাই এই Rajputisation এর product গুলোও by default মুঘল সম্রাটের প্রতি অনুগত থাকবে, এবং মুঘল সেনার অফুরন্ত Manpower supply অব্যাহত থাকবে।
অর্থাৎ, মুঘল সাম্রাজ্য নিজেদের প্রসারের জন্য ধর্মান্তরকরণ বা, Conversion of Religion এর বদলে Conversion of Caste করার সিদ্ধান্ত নেয়।
৩. Hun দের আসল উদ্দেশ্য ছিল Inner India বা, গাঙ্গেয় অববাহিকাতে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা কারণ, সহস্র বছর ধরে এটিই ছিল সবথেকে prosperous region, যে উদ্দেশ্য তারা সাধন করতে পারেনি গুপ্ত সম্রাটদের হাতে পরাজিত হওয়ায়। মূল রাজপুত দের হৃদয়ে নিজেদের পূর্বপুরুষদের সেই শেষ না করা কাজের সমাপ্তির তীব্র আকাঙ্খা জ্বলমান ছিল।
৪. আর্থিক দৃষ্টিকোণ - মুঘল সাম্রাজ্য বিস্তারলাভ করার প্রধান কারণ ছিল, মুঘলরা খুব সফলভাবে অবিভক্ত ভারতের পুরো উত্তর পশ্চিমকে (পাঠান, রাজপুত) এক ছাতার তলায় আনে। লক্ষ্য করুন, রাজস্থান বা, আফগানিস্তান এর অর্থনীতি সম্পূর্ণ Based On Trade Roots, তাই এই অঞ্চলের Ruling Class (হিন্দু মুসলিম নির্বিশেষে) এর জন্য বাকি ভারতের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা ছিল Question of Survival,
তাই মুঘল সাম্রাজ্যকে বলা যায়, Peak of North West Imperialism
মুঘল সাম্রাজ্যবাদ যে গাঙ্গেয় অববাহিকাকে কতটা হিংস্রভাবে লুঠ করেছে, সেটার প্রমাণ এই থেকেই পাওয়া যায় যে, রাজস্থানের প্রতিটি দুর্গ ও প্রাসাদের বয়স ৩০০ - ৪০০ বছর, অর্থাৎ প্রতিটি ই মুঘল আমলে নির্মিত। বা, বলা যায়, রাজস্থানের প্রতিটি স্থাপত্য এর খরচা আদতে পূর্ব ভারতকে করা শোষণ থেকে প্রাপ্ত।
Read MoreAuthor: Animesh Datta MallaBarman
Historical Hindu 09-December-2024 by east is risingNeanderthals became extinct around 40,000 years ago. Hypotheses on the causes of the extinction include violence, transmission of diseases from modern humans which Neanderthals had no immunity to, competitive replacement, extinction by interbreeding with early modern human populations, natural catastrophes, climate change and inbreeding depression. It is likely that multiple factors caused the demise of an already low population.
In research published in Nature in 2014, an analysis of radiocarbon dates from forty Neanderthal sites from Spain to Russia found that the Neanderthals disappeared in Europe between 41,000 and 39,000 years ago with 95% probability. The study also found with the same probability that modern humans and Neanderthals overlapped in Europe for between 2,600 and 5,400 years. Modern humans reached Europe between 45,000 and 43,000 years ago. Improved radiocarbon dating published in 2015 indicates that Neanderthals disappeared around 40,000 years ago, which overturns older carbon dating which indicated that Neanderthals may have lived as recently as 24,000 years ago, including in refugia on the south coast of the Iberian peninsula such as Gorham's Cave. Zilhão et al. (2017) argue for pushing this date forward by some 3,000 years, to 37,000 years ago. Inter-stratification of Neanderthal and modern human remains has been suggested, but is disputed. Stone tools that have been proposed to be linked to Neanderthals have been found at Byzovya (ru:Бызовая) in the polar Urals, and dated to 31,000 to 34,000 years ago, but is also disputed. At Mandrin Cave the French palaeolontologist Ludovic Slimak [fr] and colleagues developed a new method of analysing soot from fires. They were able to distinguish between fires made by Neanderthals and modern humans based on the differing food residues in the soot as a result of their different diets. The researchers found that the last layer of soot from Neanderthal fires was a year or less before the first made by modern humans, and in Slimak's view this shows that the two species met and supports the hypothesis that the Neanderthals disappeared due to competitive replacement.
Slight competitive advantage on the part of modern humans may have accounted for Neanderthals' decline on a timescale of thousands of years.
Generally small and widely dispersed fossil sites suggest that Neanderthals lived in less numerous and socially more isolated groups than contemporary Homo sapiens. Tools such as Mousterian flint stone flakes and Levallois points are remarkably sophisticated from the outset, yet they have a slow rate of variability and general technological inertia is noticeable during the entire fossil period. Artifacts are of utilitarian nature, and symbolic behavioral traits are undocumented before the arrival of modern humans in Europe around 40,000 to 35,000 years ago.
The noticeable morphological differences in skull shape between the two human species also have cognitive implications. These include the Neanderthals' smaller parietal lobes and cerebellum, areas implicated in tool use, visuospatial integration, numeracy, creativity, and higher-order conceptualization. The differences, while slight, would have possibly been enough to affect natural selection and may underlie and explain the differences in social behaviors, technological innovation, and artistic output.
Jared Diamond, a supporter of competitive replacement, points out in his book The Third Chimpanzee that the replacement of Neanderthals by modern humans is comparable to patterns of behavior that occur whenever people with advanced technology clash with people with less developed technology
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Historical General 06-November-2024 by east is risingThe Preveza victory, won in 1538, is one of the greatest naval victories in Turkish history and one of the greatest naval victories in world history. You will understand when you examine the numbers.
Europe brought together the largest Crusader fleet the world had ever seen in the history of warfare. The navies of Spain, Germany, Portugal, Venice, Malta, Genoa, the Papacy and Florence were united.
Among these, the Spanish navy was the second in the world after the Ottoman, and the Venetian navy was the third.
At their head was Andrea Doria, the greatest admiral of the Christian world at the time. The Crusader navy consisted of more than 600 ships. 308 of these were pure warships, the rest were small warships and transport ships.
The Crusader fleet had 60 thousand soldiers, excluding rowing convicts. They had huge galleons, each carrying 2 thousand soldiers.
The Ottoman navy under the command of Barbaros Hayreddin Pasha consisted of 128 ships and 20 thousand sailors.
There were also names who commanded the navy, such as Salih Reis, Seydi Ali Reis and Turgut Reis.
More than 120 thousand people were facing each other on the sea, along with the soldiers and convicts of both sides. This was something that had never been seen before.
This terrific naval battle ended with an overwhelming Ottoman victory in five hours. The Crusader navy lost 128 ships. Andrea Doria escaped by extinguishing all the lanterns.
The Preveza victory and the Djerba naval victory in 1560 were considered great honors among the Ottoman soldiers. This or that beam was praised by saying "it was found in Preveza or Djerba" and everyone envied that beam.
The levents in both of them would rise to the rank of heroes among their friends...
Collected from Facebook page A lil Bit Of Everything
Author: Saikat Bhattacharya
Historical General 19-June-2024 by east is risingAshoka killed 18000 Ajivikas of Pundrahvardhana and eradicated the entire Ajivika faith. He also enforced vegetarianism and perscuted whoever did not follow that dictat. This destroyed livelihoods of many classes whose profession was tied to hunting, fisheries and animal byproducts. But he is considered 'The Great'. This is is what called propaganda. Here actions do not matter but affiliation is everything. This is the main peril of monotheistic religions.
Sharamanic faiths emerged in eastern gangetic plains as a reaction to Vedic Religion. Their main objection was Animal sacrifice in rituals and meat-eating, ban on moneylending and interests, restriction of the power of propertied classes and private property in general. It is the Shramanic religions that banned cowslaughter as Cow was an important animal in both agriculture and trade. Yet this crucial history is supressed to hide the true knowledge about how everything came into existence.
When Vedic religion died, their old followers also took on these Shramanic ethos.
Buddhism is one of the pioneer of state-sponsored theocracy, religious persecution and violence. It was from Kushans Buddhism started to become more evolved and humane.
Is it surprising that the narratives of monotheist reactionaries and indian state always converges or there is some deeper links?
Read MoreAuthor: Purandhar Khilji
Historical Hindu 16-June-2024 by east is risingKodavas are military caste of Kodagu district of Karnataka.
Kodagu is mountainous country and even today is a well forested.
Kodavas used this mountainous and forested landscape to their advantage - invading armies were lured deep into Kodagu, then relentlessly harassed by guerrilla warfare and then finished off by large scale surprise attacks.
Problems between Kodagu and Muslim rulers of Mysore began as early as 1765.
Hyder Ali of Mysore sent a large force under Fazalulla Khan to conquer Kodagu. Kodavas under Chikka Virappa defeated the force in four major battles and forced them into retreat.
Unfortunately in 1773, a succession dispute in Kodagu was taken advantage by Hyder Ali - Lingaraja, one of the contestants asked for Hyder Ali’s help and he invaded Kodagu with a Mysore army.
This force was thoroughly defeated at Battle of Yedavanad. But Lingaraja being a Kodava himself, persuaded many Kodavas to support his cause and this managed to win over the whole Kodagu without any fight!
Deposed king named Devapparaja and his entire family was murdered by Hyder Ali.
But soon nemesis struck - in 1780, Lingaraja died.
His sons Vira Rajendra and Lingaraja were minors - taking advantage of this situation, Hyder Ali took over the administration of Kodagu directly.
His pretext was that he will rule until princes became adults - though it was clear to all that his aim was annex Kodagu. Both princes were kept in captivity for 8 years (until 1788).
In 1782, a massive revolt broke out in Kodagu as people were angry with Hyder Ali deposing their king.
Kodavas drove out all Mysore forces from their land and became independent (Hyder had died in the meantime).
Now Tipu is the ruler of Mysore - he invades Kodagu in 1784 but was driven out by Kodavas in 1785.
Tipu then sent another army of 15,000 men but were defeated by 4,000 Kodavas at Battle of Ulagulli. Entire Mysore army had flee for their life and their whole baggage was looted by Kodavas.
Then as usual, Tipu used treachery - he promised to make peace with Kodavas and invited them for a peace talk at Talakkaveri.
But Kodava delegation was arrested and their 85,000 followers and their family members were forcibly converted to Islam.
Not content with this, Tipu then ordered his army to kill every single Kodava man they could lay hand on and enslave their women and children.
Terrible atrocities were committed - mass rape, enslavement of women, forcible conversions, destruction of temples, slaughter of cows, wholesale burning of villages, fields and orchards etc.
Kodavas refused to buckle and wage valiant guerrilla warfare from hills and forests.
In 1788, imprisoned VIRA RAJENDRA along with his family escaped from jail (due to help by Pazhassi Raja by some accounts).
Kodavas who were leaderless until then, rallied around this charismatic and energetic 24 year old prince.
He and his men launched a massive campaign that drove out Muslim forces from Mysore and even invaded and sacked Mysore proper itself.
Infuriated Tipu sent a large army under Ghulam Ali to deal with Kodavas - bitter fighting followed. Kodavas fought for every inch of land and Mysore army suffered heavy losses.
Luck also came to help Kodavas as Ghulam Ali and his army was re-directed to Malabar in 1789 to deal with massive revolt by Nayars there.
But Vira Rajendra was determined not to let Mysore army retreat in peace - He and his men launched a massive attack on retreating army of Ghulam Ali and slaughtered a large part of enemy force in Battle of Kodantur.
Another Mysore force sent against him was totally defeated at Battle of Heggala and their entire baggage was looted.
This was followed by Kodavas defeating another Mysore army in Battle of Kushalnagara and seized the Mysore fortress there.
He followed up this victory by defeating Mysore garrison stationed at Beppunad and then seizing several forts and outposts of Mysore army across Kodagu.
In 1790, Tipu sent another large force under Buranuddin into Kodagu - this force too was defeated by Vira Rajendra at Second Battle of Kushalnagara.
His next major victory was occupation of Amara Sulya.
Tipu for the last time, sent a large force under Kader Khan to defeat Vira Rajendra - but Khan was also defeated at Battle of Mullusoge and most important Mysore fort in Kodagu - Mercara was captured.
Rajendra and his troops then invaded Mysore proper once more and pillaged it thoroughly to retaliate the destruction done by Tipu’s troops in Kodagu.
With this, Kodagu was permanently free of Tipu’s threat.
Post Script:
Revengeful Tipu - unable to defeat Rajendra in battle - sent assassins to kill him. But they were caught and executed.
When Tipu faced British threat in Third Anglo-Mysore War, he tried to reconcile with Rajendra and asked his help.
Rajendra told him that he will not help him as he could never forget nor forgive the genocidal cruelty done to his people.
Reference:
Coorg Manual - G. Richter (1870)
Written in Quora by Sagar Meloth
Author: Saikat Bhattacharya
Historical Hindu 27-May-2024 by east is risingরাজস্থানীরা মোঘলদের পায়ে থাকতে রাজি হয়।
কেন?
রাজস্থান সমুদ্রতটহীন ও কৃষিহীন মরুভূমি। তাই রাজস্থানের বাইরের অঞ্চল দখল করে সেখানকার কৃষি ও বৈদেশিক ব্যবসা থেকে খাজনা তোলার লক্ষ্য তাদের তাকবেই। তাদের সাধ্যে কুলোয়নি কখণো গোটা দক্ষিণ এশিয়া দখল নেওয়ার। তারা উত্তর প্রদেশ অব্ধি এগিয়েছে কিন্তু বারবার দক্ষীনে মারাঠি ও পূর্বে বাঙালি ও পশ্চীমে আরব (সিন্ধু) পাঞ্জাবী কাশ্মিরীদের সাথে পেরে ওঠেনি। যেমন প্রতিহারেরা পাল ও রাষত্রকূট ও আরবদের সঙ্গে সম্পূর্ণ ভাবে কখনো জয়ী পারেনি।
কিন্তু উজবেক মোঘলরা বাংলা থেকে ডেক্কান সমস্ত সালতানাতকেই পরাজিত করার ক্ষমতা ধরত। তাই রাজস্থানীরা বুঝল মোঘলদের সঙ্গ দিলে উতর প্রদেশ বাংলা ডেক্কান সমস্ত এলাকার খাজনার বখরার ভাগ পাওয়া যাবে। রাজস্থানীরা যা একা পারতনা মোঘলদের সঙ্গী হলে তা পারা যাবে।
তাই রাজস্থানীরা সঙ্গ দেয় মোঘলদের। নিজের ঘরের মা বোন স্ত্রীদের মোঘলদের হারেমে দিয়ে নিজেদের আনুগত্য প্রকাশ করে মোঘলদের বিশ্বাস অর্জন করে মোঘলদের লিটের বখরা পেয়েছে।
(বঙ্কিম চন্দ্র "দুর্গেশ নন্দিনী" উপন্যাসে আবার মোঘল রাজপুত লটকে বৈধতা দিয়ে গেছেন আর বাঙালি রাজকুমারীকে রাজস্থানি রাজকুমাওরের কাছে সঁপে দিয়েছেন। গল্পে হোলেও বাঙ্গালির হিন্দি চাটা মনন-এর শুরু ওখানেই।)
বাঙ্গালির কি মোঘলদের থেকে বা রাজস্থানীদের থেকে কিছু পাওয়ার ছিল?
সেই সময় কোনও বাঙালি কি মোঘলদের সঙ্গী হয়নি?
বাঙ্গালির কৃষিজমি আর সমুদ্রতট দুইই আছে। তাই বাঙ্গালির থেকে বাইরে থেকে লোক ছিনিয়ে নিতে আসবে খাজনা সেটাই স্বাভাবিক। মোঘলরা ও তাদের অনুচর রাজস্থানীরা বাংলায় আসে বাংলার সুলতানের থেকে খাজনার ভাগ নিতে। সুলতান ও তার সঙ্গী রাজারা স্বাভাবিকভাবেই মোঘল বিরোধী অবস্থান নেয়। আবার দক্ষিণ বাংলার অনেক রাজাই যেমন পঞ্চানন গাঙ্গুলী (সাবর্ণ রায় চৌধুরী) মোঘলদের সঙ্গী হয়।
মোঘলরা জিতলে সাবর্ণরা কি পেতে পারে?
বড় জোড় সুলতানকে যে খাজনা দিতে হবে তার চেয়ে মোঘলদের কম দিতে হবে? মানে বাংলার সামস্তদের আসলে লাভের জায়গা ছিলনা সেরকম মোঘলদের সমর্থন করে। কারণ তাকে খাজনা দিতেই হবে আর সে লুটের বখরা সেভাবে পাবেনা কারণ তার কাছে সমুদ্র ব্যবসা ও কৃষিজমি আছে। রাজস্থানীদের ভারত লুটের ইচ্ছে বেশি। কারণ রাজস্থানে খাজনা নেই। যার খাজনার উৎস নেই তার মধ্যে বাইরের এলাকা দখল করার বাসনা বেশী। মোঘল আর রাজস্থানিদের লক্ষ্য ছিল এক। যাদের কৃষি আছে বা সমুদ্র কৃষি দুইই আছে তাদের মনে হবে মোঘলরা তাদের খাজনা নিচ্ছে। রাজস্থানীদের মনে হবে মোঘলরা তাদের খাজনার ভাগ দিচ্ছে। এটাই তফাত।
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Historical Hindu 26-May-2024 by east is risingশচীন্দ্র পাল, কানাই নিয়োগী, কমলা ভট্টাচার্য, সুনীল সরকার, সুকোমল পুরকায়স্থ, কুমুদ দাস, চন্ডীচরণ সূত্রধর, তরণী দেবনাথ, হীতেশ বিশ্বাস, বীরেন্দ্র সূত্রধর ও সত্যেন্দ্র দেব।
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Historical General 22-May-2024 by east is risingমাত্র ৩২ বছরের আয়ুতে...
★ ভারতবর্ষকে ৩ বার খালি পায়ে প্রদক্ষিণ করে,
★ তৎকালীন ভারতবর্ষে বিদ্যমান মোট ৭২ টি বিরোধী ও নাস্তিক্য মতবাদকে তর্কে পরাজিত করে,
★ মহাভারত থেকে শ্রীমদ্ভগবদ্গীতাকে আলাদা গ্রন্থ হিসেবে তুলে ধরে,
★ ১১ টি প্রধাণ উপনিষদের ভাষ্য করে,
★ বেদব্যাস রচিত মহান ব্রহ্মসূত্রের শ্রেষ্ঠ ভাষ্য রচনা করে,
★ ১৫১ টি শাস্ত্রীয়, জ্ঞানমূলক ও ভক্তিপূর্ণ গ্রন্থ রচনা করে,
★ দেবদেবীদের নিয়ে বহু ভক্তিপূর্ণ স্তোত্র রচনা করে,
★ ভারতের ৪ প্রান্তে ৪ মঠ স্থাপন করে,
★ সেই ৪ মঠে নিজের ৪ প্রধাণ শিষ্যকে দায়িত্ব দিয়ে,
★ ৪ মঠে ৪ বেদের চর্চা ও ৪ মহাবাক্যের চর্চার নীতি স্থাপন করে,
★ দশনামী সন্ন্যাসী সম্প্রদায় প্রতিষ্ঠা করে...
পুনরায় সনাতন ধর্মকে উজ্জীবিতকারী জগৎগুরু ভগবান আদি শঙ্করাচার্যের আবির্ভাব তিথিতে উনার শ্রীচরণে জানাই কোটি-কোটি প্রণাম
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Historical Hindu 15-May-2024 by east is rising"Brahmins are mostly 5'8" tall, with good physique, given to very good personal hygiene, who shave daily and are extremely reliable, making them very good soldiers". This was the note circulated to all unit commanders in India by the British Indian Military Intelligence Branch in the 1897.
In the 19th century the British Indian Military Intelligence Branch issued special handbooks to its unit commanders. These handbooks were called “Caste Handbooks for the Indian Army”. All unit commanders were supposed to read them closely and use the insights they offered in managing their troops.
This is what the military handbooks compiled by the Intelligence Branch said:
India was divided into three caste groups. Brahmins, who studied; Kshatriyas who ruled; Vaishyas who produced wealth. Do notice that there is no mention of untouchables or of shudras.
This is what the note on Brahmins said (given below is an complete excerpt from chapter 1 of the Intelligence Branch Handbook on Brahmans):
“Endowed with subtle minds, trained to the utmost keenness, and intellectually far in advance of any other caste, the Brahmans were peculiarly fitted for the business of political administration. They were largely employed in civil capacities, not only by Hindu Princes, but also by the Mughal Emperors, who recognized their ability and fitness for positions of trust. The chief adviser of the Emperor Akbar in matters of revenue, finance, and currency, was the Raja Todar Mai, a Brahman of the greatest ability and integrity.
Throughout the centuries of Muhammadan dominion the Brahmans never relinquished their ascendancy over the rest of the Hindu world. As their numbers increased, however, it became impossible for the whole caste to devote itself exclusively to religious functions. In the Doaba and on the banks of the Ganges and Jumna, where the principal shrines were situated, Brahmans became very numerous. Many compelled to resort to agriculture as a means of livelihood, and as they collected in villages and acquired land, the unsettled state of the country compelled them to take measures for the defence of their rights against the encroachments of their warlike neighbours.
There thus arose a class of Brahmans who, while retaining the privileges of a Levite caste, were in all essentials an agricultural people, of naturally pacific tendencies, but ready and able to defend themselves whenever occasion required. War, pestilence, and famine, often compelled the younger member of these communities to seek employment at a distance from their homes, and, as their religion debarred them from the acceptance of menial offices, they naturally resorted to military service as the only form of employment which could be accepted without loss of caste.
The general anarchy which followed the breaking up of the Mughal Empire compelled most of the European settlers in India to entertain corps of native irregulars for the defence of their posts and factories. The idea of giving discipline to these levies originated with the French, but other nations, and the native princes, were not slow to follow their example, and by the middle of the 18th century the Madras and Bombay settlements of the English East India Company possessed a considerable force of wellU trained topasses «topasses were Portuguese half-castes and native Christians, enlisted by the East India Company, and so called because they wore topis or hats. They were armed and dressed exactly like Europeans» and sepoys, armed and equipped like Europeans.
After the recapture of Calcutta in 1757 it was decided to form a similar force for service in Bengal, and early in that year Clive raised the
1st Regiment of Bengal Native as the Lal Pultun, because it was the first native corps to be dressed in red.
Nearly all the warlike races of Northern India were represented in the new corps, for, owing to the Muhammadan conquest of Bengal, the province was overrun by bands of military adventurers from Oudh, the Punjab and even from beyond the Indus. It was from men of this stamp that Clive selected his recruits, and in the corps raised about this time in Calcutta were to be found Pathans, Rohillas, Jats, Rajputs, and Brahmans.
The majority of the men were Musulmans, but as most of our early campaigns were directed against Muhammadan princes, it was considered expedient to gradually replace them by Hindus. It thus came about that the ranks of the Bengal regiments were filled almost entirely by Brahmans and Rajputs from Behar, Oudh, and the Doab, until our military service became practically the monopoly of these classes. Other reasons tended to encourage the enlistment of high caste Hindus. They were more docile and easily disciplined, they were quicker to learn their drill; and their natural cleanliness, fine phusicque and soldierly bearing, made them more popular with their European officers than the truculent Muhammadans from the north, to whom pipeclay and discipline were abhorrent.
No historical notice of the Brahmans would be complete without some reference to their military services. It is, however, impossible to separate the deeds of our Brahman sepoys from those of their comrades of other classess, for as the Hindustani portion of the army was not organized on the class system until 1893, for its achievements could not be allotted to any particular caste without obvious injustice to the others.
Brahmans have served in our ranks from Plassey to the present day. They have taken part in almost every campaign undertaken by the Indian armies. Under Forde they defeated the French at Condore. Under Cornwallis they assisted at the capture of Seringapatam. Under Lake they took part in the Mahratta wars, including the siege of Bharatpupr. As volunteers, Brahmans took part in the conquest of Java, also in the Nepal campaign, and in the expeditions to Burma and China. Brahman sepoys shared in the victories and disasters of the first Afghan War, including the defence of Jelalabad. In the Sikh wars, Brahmans and other Hindustanis helped us to win the Punjab, and even the Great Revolt of 1857 furnishes many instances of their personal devotion and fidelity. In Sir Hugh Rose’s brilliant campaign in Central india, nothing could surpass the gallantry and loyalty of certain regiments of the Hyuderabad Contingent, which was largely composed of Brahmans, Rajputs, and other classes recruited from the North-West Provinces. ….
Since the Mutiny, Brahmans have taken part in the Afghan War, in the expedition to Egypt, in the conquest of Burma, and in numerous expeditions on the north-west and north-east frontiers of India. At the storming of Minhla, the Brahman sepoys of the 11th Bengal Infantry were the first to enter the fort, and on the conclusion of the war two Brahman native officers of this regiment were awarded the order of merit, for valiant and distinguyished conduct whilst holding independent commands. In the same campaign a detachment of the 4th Bengal Infantry, undera a Brahman. Subadar, made a forced march of 65 miles in 36 hours, stormed Kendat, and thereby saved a number of European officials from a cruel and untimely death. With such an excellent record in the past, it may be confidently predicted that the new organisation into class regiments will enable our Brahman sepoys to add yet further to their military reputation, and place them on an equality with the most warlike of the races now serving under the British colours.
Pic. Painting from 1900 of an Indian sepoy in the employ of the British Indian Army.
Collected from Facebook Page "India History"
Author: Saikat Bhattacharya
Historical Hindu 02-May-2024 by east is risingAl-Jahiz, The Muslim Scientist Philosopher Who Formulated Theory of Evolution a Thousand Years Before Darwin, Detailed in The Book of Animals. The encyclopedia presents 350 species
(BBC). About a thousand years before Darwin, an Iraqi Muslim philosopher, Abu Usman Amr Bahr Alkanani al-Basri, wrote the book Kitab al-Hayawan (The Book of Animals), in which he describes how animals change through a process he also called natural selection.
(BBC). Also known as Al-Jahiz, Abu Usman was born in 776 in the city of Baçorah, southern Iraq, at a time when the Mutazilah movement—a school of theological thought that defended the exercise of human reason—was growing in the region at the height of the Abbasid caliphate.
Academic works were translated from Greek to Arabic, and Baçorá chaired important debates about religion, science, and philosophy that shaped the mind of Al-Jahiz and helped him formulate his ideas.
The paper had been introduced to Iraq by Chinese merchants, which prompted the dissemination of ideas, and the young Al-Jahiz began writing on various topics.
His interests covered many academic areas, such as science, geography, philosophy, Arabic grammar and literature.
He is believed to have published 200 books during his lifetime, but only one-third have survived to this day.
THE BOOK OF THE ANIMALS
His most famous work, The Book of Animals, was conceived as an encyclopedia featuring 350 species. In it, Al-Jahiz posits ideas that are very close to Darwin's theory of evolution.
"Animals are engaged in a fight for existence and resources, to avoid being eaten and reproducing," Al-Jahiz writes.
"Environmental factors influence organisms causing them to develop new characteristics to ensure survival, thus transforming them into new species. "
He continues: "Animals that survive to reproduce can pass on their successful traits to their offspring."
To survive, animals had to possess competitive characteristics to find food, avoid turning over food from others, and reproduce. That made them change from generation to generation.
Al-Jahiz ideas influenced other later Muslim thinkers. His work was read by the likes of Al-Farabi, Al-Arabi, Al-Biruni, and Ibn Khaldun.
Pakistan's "spiritual father" Muhammad Iqbal, aka Allama Iqbal, acknowledged the importance of Al-Jahiz in his collection of lectures, published in 1930.
Iqbal pointed out that "it was Al-Jahiz who pointed out the changes taking place in the lives of animals due to migration and environmental changes."
'THEORY OF MAOMETANA'
The contribution of the Muslim world to the idea of evolution was no secret to 19th-century European intellectuals. Indeed, a contemporary of Darwin, the scientist William Draper, spoke of the "Mohammed theory of evolution" in 1878.
However, there is no evidence that Darwin knew al-Jahiz's work or that he understood Arabic.
Science journalist Ehsan Masood, who ran a series for the BBC called Islam and Science, says it's important to remember others who contributed to the history of evolutionary thought.
Ehsan Masood also points out that creationism did not appear to exist as a significant movement in 9th-century Iraq, when Baghdad and Bazarah were major centers of advanced education in Islamic civilization.
“Scientists did not spend hours examining Revelation landscapes to see if they were comparable to the knowledge observed in the natural world,” Masood wrote in an article on al-Jahiz in the British newspaper The Guardian.
https://www.bbc.com/portuguese/internacional-47577118
Author: Saikat Bhattacharya
Historical General 01-May-2024 by east is risingThe period of the Later Ilyas Shahi dynasty (1435-1487 AD) was perhaps the greatest era of Bengal on the cultural side. It was this dynasty that patronised Bengali literature the most. And not just Bengali literature but also Persian literature aswell as various sciences such as the Ayurveda, astrolonomy & various arts. Surprisingly under the patronisation it's most powerful ruler #Ruknuddin_Barbak_Shah (1459-1476 AD) #Krittivasa composed the Bengali adaptation of Ramayana & #Gunaraja_Khan composed the epic Sri Krishna Vijaya the most popular epic of the Sultanate period. It was also an era of social reforms such as Nulo Panchanan's movement, the Datta Khani movement, the Barendri movement of #Udayanacharya_Bhaduri etc. So certainly a cultural high point of the Sultanate. The Later Ilyas Shahis certainly took the legacy of their ancestor #Shamsuddin_Ilyas_Shah (1339-1358 AD). Atleast that's what's believed. Yet the historical sources really makes one doubt if they truly were the descendents of Ilyas Shah.
In most text-books it's usually written that the founder of the Later Ilyas Shahi dynasty #Nasiruddin_Mahmud_Shah (1435-1459 AD) was the great-grandson of Ilyas Shah. But what do the sources of the old actually say?
According to the Riyaz Al-Salatin which is from the 18th century but used earlier works, after the death of the last Kans Shahi ruler #Shamsuddin_Ahmad_Shah 2 of his nobles named Sadi Khan & Nasir Khan struggled for power. After slaying Nasir Khan, Sadi wanted to become king himself. After 7 days (or half a day) of rule the nobles & secretaries of the court put him to death & raised one of the grandsons of Ilyas Shah to the throne. He would take the title Nasir Shah. The word used in Riyaz is از نبأر (Az Nabaer) which means amongst the grandsons.
Another source from the 18th century is Buchanan's account who had access to many lost manuscripts written in Bengal, "Ahmed Shah...reigned three years. He was destroyed by two of his nobles, Sadi Khan and Nasir Khan, the later of whom was made king, and erected many buildings at Gaur, to which he seems to have transferred the royal residence. He governed 27 years, and was succeeded by Sultan Barbuck Shah." Buchanan is stating that Ahmad Shah's noble Nasir Khan is Sultan Nasir Shah & mentions nothing about being Ilyas Shah's grandson.
Amongst the earliest sources we can find are from the 16th century. Namely the Tabaqat-i-Akbari & Gulshan-i-Ibrahimi. Both of these were written in distant lands beyond Bengal. One in North India & another in Deccan. They probably had relied on legends to an extent but are still important as our earliest available sources on the matter. They very much give the same account as the Riyaz & probably were the source behind the information in Riyaz. However these texts don't mention the word for grandson at all. The word in Tabaqat-i-Akbari is احفد which just means relative. Could be someone from direct family but also can be some in-law. Meanwhile Gulshan-i-Ibrahimi uses the word اولاد which just means descendent. Also unclear on the relation to İlyas Shah. Firishta also states Nasir was dedicated to farming before coming to the throne.
Now in those days it was not uncommon for ruling families to claim lineage from their in-laws. We know the Timurids did this. The last ruler of this dynasty #Jalaluddin_Fateh_Shah (1481-1487 AD) styled himself as 'Sayyid' meaning a descendent of the Prophet Muhammad (Sa) through his daughter Fatima (Ra). Seeing no other ruler of this dynasty has claimed this lineage, he probably claimed it from his mother's side. Much like the Muzaffarids of Gujarat, rulers of this dynasty also used symbols of the Suryavamsa in their coins. Could it be that they were Sanatan who converted & married into the Ilyas Shahi family. However claimants to the Suryavamsa is also a bit weird in context of Bengal as Bengali ruling houses usually claimed lineage from the Chandravamsa & not Suryavamsa. There's also a receit of slave trade claiming a date equivalent to 1440 AD which mentions the king as 'Sulutan Mahamud Saha Gajan' (Bibliography of the Muslim Inscriptions of Bengal p.133) which is preserved at Dhaka University. Gajan has relations with Shiva the God of Destruction. However considering the Bengali language of that time, Gajan could also have been a Bengalification of Ghaznavi. We can't be certain.
And that's it. We've failed to determine the actual lineage of this dynasty. The thing is the dynasty itself cherished multiple lineages those of Saka, Sayyid & native. And this is not something unusual for that time. However there is no doubt that this dynasty was culturally Bengali. Perhaps referring to this dynasty as Mahmudi Shahi dynasty instead is more scientific instead of using Later Ilyas Shahi would be more scientific. However since most people will have trouble understanding I will be referring to them as Mahmud Shahi aka Later Ilyas Shahi dynasty from hence forward.
Read MoreAuthor: Ishtiak Ahmed
Historical General 10-April-2024 by east is risingWhen most think of Medieval Indian armour most usually think of either Zirah Baktar or Chahar Aina. However those types are actually rather modern. Throughout the large timespan of the Middle Ages aswell as the diverse regions of the Subcontinent there have been various forms of armours in use. Unfortunately there are no surviving examples of armour from the actual Middle Ages. However there is iconography. Here we will look into iconography depicting armour throughout the Middle Ages.
First we have a man clad in scale armour from the Ajanta Caves Paintings. Although they date anywhere from the 5th-7th century which is more of an intermediate phase between the Classical era & the Middle Ages, armour during the Early Middle Ages wouldn’t likely have been far off from those of the Late Classical Antiquity.
And here is a coin of #Shashanka (606-636 AD) the founder of the Gauda kingdom. He seems to be depicted wearing a muscle cuirass & shin guards. Again not very different from Classical era.
With various waves of Islamic invasions during the High Middle Ages the Subcontinent got introduced to armour that covered more of the body from head to toe. However we don't have much iconography of this era. The Basatin Al-Uns gives us our earliest look into the armours worn by troops of Islamic India during the 14th century. Here we can see the cavalry of #Ghiyasuddin_Tughlaq (1320-1326 AD) of Hindustan clad in composite armour. Most are wearing lamellar cuirasses called #Jawshan , segmented/laminar shoulder armour, plate lower arm, foot, shin, knee & thigh armour. There's also an additional round disc attached on the chest. There's likely mail underneath but difficult to say to for certain. Some are also wearing Brigandine/Coat of Plates style armour called #Chihalta_Hezar_Masha.
Next we go into the 15th century. This is from a Shahnamah manuscript composed in 1438 during the reign of #Alauddin_Mahmud_Shah (1436-1469 AD) of Malwa. Here we see the cavalrymen clad in scale armour & about no type of metalic armour for the infantrymen. This back to basics may more have been just regionalism.
We draw very close to the end of the Middle Ages. This is a depiction of the army of Alexander from the Sharfnama manuscript composed during the reign of #Ruknuddin_Barbak_Shah (1459-1476 AD). We see both the cavalry & the infantry clad in composite armour. We already know the Bengal Sultanate had a standing army composed mostly heavy infantry from the Chinese sources. Anyway they are shown weaing a conical helmet called #kulahkhud with scale aventail, #Chihalta_Hezar_Masha (Brigandine/Coat of Plates), plate vembraces or #bazubands .
The last example is going to be a battle scene from the Jagamohana Ramayana, an Odia adaptation of the Ramayana by Balarama Dasa (1474-1522). And the body armour is similar to that of Bengal but the helmet styles are very different. We know from the sources of the next century that this type of body armour was popular in Vijayanagara & the Deccan Sultanates aswell, probably due to the climate of these regions. Anyway this covers the armour types during Medieval India. This was just a basic introduction really without going into much details on how which functions.
Read MoreAuthor: Ishtiak Ahmed
Historical General 10-April-2024 by east is risingThe period of the Later Ilyas Shahi dynasty (1435-1487 AD) was perhaps the greatest era of Bengal on the cultural side. It was this dynasty that patronised Bengali literature the most. And not just Bengali literature but also Persian literature aswell as various sciences such as the Ayurveda, astrolonomy & various arts. Surprisingly under the patronisation it's most powerful ruler Ruknuddin_Barbak_Shah (1459-1476 AD) Krittivasa composed the Bengali adaptation of Ramayana & Gunaraja_Khan composed the epic Sri Krishna Vijaya the most popular epic of the Sultanate period. It was also an era of social reforms such as Nulo Panchanan's movement, the Datta Khani movement, the Barendri movement of Udayanacharya_Bhaduri etc. So certainly a cultural high point of the Sultanate. The Later Ilyas Shahis certainly took the legacy of their ancestor Shamsuddin_Ilyas_Shah (1339-1358 AD). Atleast that's what's believed. Yet the historical sources really makes one doubt if they truly were the descendents of Ilyas Shah.
In most text-books it's usually written that the founder of the Later Ilyas Shahi dynasty #Nasiruddin_Mahmud_Shah (1435-1459 AD) was the great-grandson of Ilyas Shah. But what do the sources of the old actually say?
According to the Riyaz Al-Salatin which is from the 18th century but used earlier works, after the death of the last Kans Shahi ruler Shamsuddin_Ahmad_Shah 2 of his nobles named Sadi Khan & Nasir Khan struggled for power. After slaying Nasir Khan, Sadi wanted to become king himself. After 7 days (or half a day) of rule the nobles & secretaries of the court put him to death & raised one of the grandsons of Ilyas Shah to the throne. He would take the title Nasir Shah. The word used in Riyaz is از نبأر (Az Nabaer) which means amongst the grandsons.
Another source from the 18th century is Buchanan's account who had access to many lost manuscripts written in Bengal, "Ahmed Shah...reigned three years. He was destroyed by two of his nobles, Sadi Khan and Nasir Khan, the later of whom was made king, and erected many buildings at Gaur, to which he seems to have transferred the royal residence. He governed 27 years, and was succeeded by Sultan Barbuck Shah." Buchanan is stating that Ahmad Shah's noble Nasir Khan is Sultan Nasir Shah & mentions nothing about being Ilyas Shah's grandson.
Amongst the earliest sources we can find are from the 16th century. Namely the Tabaqat-i-Akbari & Gulshan-i-Ibrahimi. Both of these were written in distant lands beyond Bengal. One in North India & another in Deccan. They probably had relied on legends to an extent but are still important as our earliest available sources on the matter. They very much give the same account as the Riyaz & probably were the source behind the information in Riyaz. However these texts don't mention the word for grandson at all. The word in Tabaqat-i-Akbari is احفد which just means relative. Could be someone from direct family but also can be some in-law. Meanwhile Gulshan-i-Ibrahimi uses the word اولاد which just means descendent. Also unclear on the relation to İlyas Shah. Firishta also states Nasir was dedicated to farming before coming to the throne.
Now in those days it was not uncommon for ruling families to claim lineage from their in-laws. We know the Timurids did this. The last ruler of this dynasty Jalaluddin_Fateh_Shah (1481-1487 AD) styled himself as 'Sayyid' meaning a descendent of the Prophet Muhammad (Sa) through his daughter Fatima (Ra). Seeing no other ruler of this dynasty has claimed this lineage, he probably claimed it from his mother's side. Much like the Muzaffarids of Gujarat, rulers of this dynasty also used symbols of the Suryavamsa in their coins. Could it be that they were Sanatan who converted & married into the Ilyas Shahi family. However claimants to the Suryavamsa is also a bit weird in context of Bengal as Bengali ruling houses usually claimed lineage from the Chandravamsa & not Suryavamsa. There's also a receit of slave trade claiming a date equivalent to 1440 AD which mentions the king as 'Sulutan Mahamud Saha Gajan' (Bibliography of the Muslim Inscriptions of Bengal p.133) which is preserved at Dhaka University. Gajan has relations with Shiva the God of Destruction. However considering the Bengali language of that time, Gajan could also have been a Bengalification of Ghaznavi. We can't be certain.
And that's it. We've failed to determine the actual lineage of this dynasty. The thing is the dynasty itself cherished multiple lineages those of Saka, Sayyid & native. And this is not something unusual for that time. However there is no doubt that this dynasty was culturally Bengali. Perhaps referring to this dynasty as Mahmudi Shahi dynasty instead is more scientific instead of using Later Ilyas Shahi would be more scientific. However since most people will have trouble understanding I will be referring to them as Mahmud Shahi aka Later Ilyas Shahi dynasty from hence forward.
Read MoreAuthor: Ishtiak Ahmed
Historical General 04-April-2024 by east is risingLet's briefly explore some pertinent details of each of these languages.
TIBETO-BURMAN
---------------------------
1. Bhauti:
- Region: Likely the Himalayan region, including parts of modern-day Sikkim and Bhutan.
- Age: The Tibeto-Burman languages have ancient origins, though specific ages for Bhauti are not well-documented.
- Details: Part of a family of languages spoken by various ethnic groups in the Himalayas.
INDO-ARYAN
--------------------
2. Gandhari:
- Region: Ancient Gandhara, corresponding to present-day northwest Pakistan and eastern Afghanistan.
- Age: Flourished around the 3rd century BCE to 3rd century CE.
- Details: Known for the Gandhari Prakrit, written using the Kharosthi script; influential in early Buddhist texts.
3. Paisachi:
- Region: Possibly in the northwest of the Indian subcontinent.
- Age: Mentioned as early as the 5th century CE; details are sparse.
- Details: Considered a literary language with few surviving examples, often cited in folklore.
4. Sauraseni:
- Region: Around the central region of India, including what is now Madhya Pradesh.
- Age: Used as a literary Prakrit language in plays and poetry, around 1st century CE onwards.
- Details: Ancestor of the Western Hindi languages, including modern-day Hindi and Punjabi.
5. Magadhi:
- Region: Ancient Magadha, roughly the modern state of Bihar in India.
- Age: Prevalent in the 1st millennium BCE, continuing into the first half of the 1st millennium CE.
- Details: Associated with the spread of Buddhism and Jainism, and is a precursor to languages like Bengali, Assamese, and Odia.
6. Kamarupi:
- Region: Ancient Kamarupa, corresponding to modern Assam and parts of Bengal.
- Age: Flourished from the 4th to the 12th century CE.
- Details: An early form of Assamese, influential in the development of other Eastern Indo-Aryan languages.
7. Maharashtri:
- Region: Region corresponding to modern-day Maharashtra and neighbouring states.
- Age: Dominant around the 1st millennium BCE to 5th century CE.
- Details: Considered the "mother of Marathi," with a significant body of early literature, including the celebrated 'Gatha Saptashati'.
8. Odra:
- Region: Region around modern-day Odisha.
- Age: Known from the 10th century onwards, with inscriptions dating back to the 6th century.
- Details: Precursor to the Odia language, with distinctive script and literature.
9. Elu:
- Region: Ancient Sri Lanka.
- Age: Considered to be the earliest form of the Sinhalese language, with origins in the 3rd century BCE.
- Details: Shows significant influence from the Pali language, holding an important place in Sri Lankan history and culture.
DRAVIDIAN
------------------
10. Kannada:
- Region: Primarily spoken in the state of Karnataka, India.
- Age: Old Kannada inscriptions date from the 5th century CE.
- Details: Rich literary tradition with extensive classical and medieval literature.
11. Telugu:
- Region: Andhra Pradesh and Telangana states in India.
- Age: Inscriptions date back to the 6th century CE.
- Details: Has a strong literary tradition with distinct script; often called the "Italian of the East."
12. Tulu:
- Region: Coastal Karnataka, specifically the Dakshina Kannada and Udupi districts.
- Age: The earliest available Tulu writing dates to around the 15th century CE.
- Details: Has its own script and a rich oral literature tradition with folk songs and stories.
13. Malayalam:
- Region: Kerala state and the Union Territory of Lakshadweep in India.
- Age: Separated from Middle Tamil around the 9th century CE.
- Details: Malayalam has a unique script and a rich literary and cultural tradition.
14. Tamil:
- Region: Tamil Nadu in India, and Northern and Eastern Sri Lanka.
- Age: Tamil literature dates back to at least 500 BCE.
- Details: Recognized as one of the longest-surviving classical languages in the world with an extensive body of literature.
SANSKRIT (Also Indo-Aryan)
--------------------------------------------
15. Sanskrit:
- Region: Pan-Indian subcontinent and beyond.
- Age: Vedic Sanskrit can be traced back to around 1500 BCE; Classical Sanskrit flourished from about 500 BCE.
- Details: The classical language of India, used extensively in literature and liturgy. It was the lingua franca for intellectual, spiritual, and religious discourse.
(collected from Facebook Krishna Sen)
Author: Saikat Bhattacharya
Historical General 01-April-2024 by east is risingThe period from 1500 to 1800 in Asia was marked by significant trade and cultural exchange developments, primarily driven by the emergence of European maritime powers, technological advancements in navigation, and the establishment of global trading networks. Here are some critical aspects of Asia's trade and cultural interactions during this period:
1. European Expansion and Asian Trade Routes: European powers such as Portugal, Spain, the Netherlands, France, and Britain sought to establish trade routes to Asia for valuable commodities such as spices, silk, porcelain, and tea. This led to the exploration and opening of maritime routes, bypassing the traditional overland Silk Road routes.
2. The Age of Exploration: The 15th and 16th centuries saw European explorers like Vasco da Gama, Christopher Columbus, and Ferdinand Magellan venturing into unknown seas, eventually reaching Asia and establishing direct trade links with Asian civilizations.
3. Establishment of Trading Posts: European powers established trading posts and colonies in various parts of Asia. For example, the Portuguese set up bases in Goa (India), Malacca (Malaysia), and Macau (China); the Dutch in the Indonesian archipelago and parts of present-day Taiwan; and the British in India and Southeast Asia.
4. Impact on Asian Economies: The influx of European traders and goods significantly impacted Asian economies. Local rulers and merchants benefited from trade, but there were also disruptions and conflicts as European powers competed to control lucrative trade routes and resources.
5. Cultural Exchange and Hybridization: Trade brought about cultural exchange between Asia and Europe. Ideas, technologies, religions, languages, and goods were exchanged, leading to cultural hybridization and the emergence of new artistic forms, art styles, and culinary traditions.
6. Influence of Asian Goods in Europe: Asian luxury goods such as silk, spices (like pepper, cloves, and cinnamon), tea, and porcelain became highly sought after in Europe, leading to the establishment of trade networks known as the "Columbian Exchange" or "Global Trade Network."
7. Formation of Global Trade Networks: By the 17th and 18th centuries, global trade networks had become more established, connecting Europe, Asia, Africa, and the Americas in what has been termed the "First Global Age" or "Age of Mercantilism."
8. Challenges and Conflicts: The intensification of trade and colonial rivalries also led to conflicts and wars, such as the Anglo-Dutch Wars, the Anglo-French Wars, and the numerous wars between European powers and Asian states.
9. Cultural Syncretism: The exchange of ideas and cultures during this period contributed to developing syncretic cultural forms, blending elements from different traditions. For example, the spread of Christianity in Asia led to the development of unique Christian art and practices influenced by local traditions.
Overall, the period from 1500 to 1800 witnessed a dynamic interplay of trade, cultural exchange, and power struggles that shaped the trajectories of both Asian and European societies and laid the groundwork for modern global interconnectedness.
(collected from Facebook Uyghur Bookshelf)
Author: Saikat Bhattacharya
Historical General 01-April-2024 by east is rising Read More
Author: Saikat Bhattacharya
Historical General 23-March-2024 by east is risingআবু রায়হান আল-বিরুনি'ই প্রথম মানব যিনি ১১ শতকে পৃথিবীর ব্যাসার্ধ পরিমাপের সূত্র আবিষ্কার করতে সক্ষম হন!
প্রায় ১০০০ বছর আগে, তিনি যে পরিধি পরিমাপ করেছিলেন তা আধুনিক যুগের স্বীকৃত মানের বিবেচনায় ৯৯.৭ শতাংশ নির্ভুল।
এছাড়াও আল-বিরুনি তার যুক্তি এবং প্রজ্ঞা সম্পর্কে এতটাই নিশ্চিত ছিলেন যে তিনি সূর্য, এর গতিবিধি এবং গ্রহন সম্পর্কে ব্যাপকভাবে লিখেন।
তিনি জ্যোতির্বিদ্যার যন্ত্র আবিষ্কার করেন এবং অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশের সঠিক গণনার মাধ্যমে বর্ণনা করেছিলেন কিভাবে পৃথিবী একটি অক্ষের উপর ঘোরে। তিনি একজন জ্যোতির্বিজ্ঞানী, গণিতবিদ এবং দার্শনিক ছিলেন এছাড়াও পদার্থবিদ্যা এবং প্রাকৃতিক বিজ্ঞানও অধ্যয়ন করেছিলেন।
বিরুনির পাণ্ডিত্যপূর্ণ জ্ঞান ও আবিষ্কার উত্তরাধিকার কয়েক শতাব্দী ধরে গণিতবিদ এবং বিজ্ঞানীদের অনুপ্রাণিত করে এবং আজও তার মহান নাম শ্রদ্ধা ও সম্মান পাওয়ার যোগ্য।
জার্মান ইতিহাসবিদ ম্যাক্স মেয়ারহফের মতে, সম্ভবত বিরুনি সর্বজনীন শ্রদ্ধেয় মুসলিম পণ্ডিতদের মধ্যে সবচেয়ে বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব যার বহু বৈচিত্র্যময় ক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে তাকে "আল-উস্তাদ" শ্রেষ্ঠত্বের শিক্ষক বা প্রফেসর উপাধিতে ভূষিত করেছে।
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Historical General 21-March-2024 by east is rising‘প্রাচীনকালে বাঙালীর বসন’
কাশ্মীরী কবি ক্ষেমেন্দ্র তাঁর ‘দশোপদেশ’ গ্রন্থে কাশ্মীর প্রবাসী গৌড়ীয় বিদ্যার্থীদের বেশ অদ্ভুত রকমের একটা ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন। খৃষ্টীয় দশম-একাদশ শতকে প্রচুর গৌড়ীয় বিদ্যার্থী বঙ্গদেশ থেকে কাশ্মীরে বিদ্যালাভ করবার জন্য যেতেন। ক্ষেমেন্দ্র লিখেছিলেন যে, তাঁদের প্রকৃতি ও ব্যবহার রূঢ় এবং অমার্জিত ছিল। তাঁরা অত্যন্ত ছুঁৎমার্গী ছিলেন; তাঁদের দেহ ছিল ক্ষীণ — কঙ্কালমাত্র সার; একটু ধাক্কা লাগলেই যেন তাঁরা ভেঙে পড়বেন — এই আশঙ্কায় সকলেই তাঁদের কাছ থেকে দূরে দূরে থাকতেন। কিন্তু কিছুদিন প্রবাসযাপন করবার পরেই কাশ্মীরী জল-হাওয়ায় তাঁরা বেশ মেদ ও শক্তিসম্পন্ন হয়ে উঠতেন। তাঁদের পক্ষে ওঙ্কার ও স্বস্তি উচ্চারণ যদিও অত্যন্ত কঠিন কাজ ছিল, তবুও তাঁরা — পাতঞ্জলভাষ্য, তর্ক, মীমাংসা ইত্যাদি সমস্ত শাস্ত্রই পড়বার জন্য ব্যগ্র ছিলেন। খুব সম্ভবতঃ তখনকার কাশ্মীরী মানদণ্ডে বাঙালীদের সংস্কৃত উচ্চারণ যথেষ্ঠ শুদ্ধ ও মার্জিত ছিল না; এবং সেটাই সম্ভবতঃ বাঙালীদের নিয়ে ক্ষেমেন্দ্রের বক্রোক্তির কারণ হয়েছিল। এছাড়া ক্ষেমেন্দ্র আরও বলেছিলেন যে, সেইসব গৌড়ীয় বিদ্যার্থীরা ধীরে ধীরে নিজেদের পথ চলতেন এবং থেকে থেকে তাঁদের দর্পিত মাথাটি এদিকে সেদিকে দোলাতেন! ঐভাবে হাঁটবার সময়ে তাঁদের ময়ূরপঙ্খী জুতোয় মচ্মচ্ শব্দ হত। মাঝে মাঝে তাঁরা নিজেদের সুবেশ ও সুবিন্যস্ত চেহারাটার দিকে তাকিয়ে দেখতেন। তাঁদের ক্ষীণ কটিতে (কোমরে) লাল রঙের কটিবন্ধ (কোমরবন্ধ) থাকত। তাঁদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করবার জন্য ভিক্ষু এবং অন্যান্য পরাশ্রয়ী লোকেরা তাঁদের তোষামোদ করে বিভিন্ন ধরণের গান গাইতেন ও ছড়া বাঁধতেন। কৃষ্ণ গাত্রবর্ণ ও শ্বেতদন্তপংক্তিতে তাঁদের বাঁদরের মত দেখতে লাগত। তাঁদের দুই কর্ণলতিকায় তিন তিনটে করে স্বর্ণ কর্ণভূষণ থাকত, আর তাঁদের হাতে থাকত যষ্ঠি; তাঁদের দেখে মনে হত — তাঁরা যেন সাক্ষাৎ কুবের! স্বল্পমাত্র অজুহাতেই তাঁরা রোষে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠতেন; এমনকি সাধারণ একটা ঝগড়ার মধ্যে হঠাৎ ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে ছুরিকাঘাতে নিজের সহ-আবাসিকের পেট চিরে দিতেও তাঁরা দ্বিধাবোধ করতেন না। তাঁরা গর্ব করে ঠক্কুর বা ঠাকুর বলে নিজেদের পরিচয় দিতেন, এবং কমদাম দিয়ে বেশি জিনিস দাবি করে দোকানদারদের উত্যক্ত করতেন।
বিদেশে সেকালের বাঙালী বিদ্যার্থীদের বসনভূষণ সম্বন্ধে আংশিক পরিচয় এই কাহিনীর মধ্যে পাওয়া যায়; কিন্তু সেটার বিস্তৃত পরিচয় জানতে হলে তৎকালীন বঙ্গদেশের সমসাময়িক সাহিত্যগ্রন্থের এবং প্রত্নবস্তুর মধ্যে অনুসন্ধান করতে হবে। সেইসব সাক্ষ্য থেকে তৎকালীন বাঙালীর বসনভূষণের মোটামুটি একটা ছবি দাঁড় করানো কঠিন কিছু নয়।
আদিমকালে — পূর্ব, দক্ষিণ ও পশ্চিম ভারতে সেলাই করা বস্ত্র পরিধান করবার রীতি প্রচলিত ছিল না; তখন সেলাইবিহীন একবস্ত্র পরাটাই পুরারীতি ছিল। পরবর্তীকালে সেলাই করা জামা বা গাত্রাবরণ মধ্য ও উত্তর-পশ্চিম ভারত থেকে আমদানী করা হয়েছিল; কিন্তু অধোবাসের ক্ষেত্রে বাঙালী অথবা তামিল অথবা গুজরাটি-মারাঠীরা ধুতি পরিত্যাগ করে ঢিলা বা চুড়িদার পাজামাকে গ্রহণ করেননি। সেযুগে পুরুষদের অধোবাসে ক্ষেত্রে যেমন ধুতি ব্যবহার করা হত, মেয়েদের ক্ষেত্রে তেমনই শাড়ি প্রযোজ্য ছিল। ধুতি ও শাড়িই প্রাচীন বাঙালীর সাধারণ পরিধেয় ছিল, তবে একটু সঙ্গতিসম্পন্ন মানুষের মধ্যে উত্তরবাসরূপে আরেক খণ্ড সেলাইবিহীন বস্ত্রের ব্যবহার ভদ্র বেশ ছিল, যেটা পুরুষদের ক্ষেত্রে উত্তরীয় এবং নারীদের ক্ষেত্রে ওড়না ছিল। ওড়নাই তখন প্রয়োজন মত অবগুণ্ঠনের কাজ করত। সেকালের দরিদ্র ও সাধারণ ভদ্র গৃহস্থ ঘরের নারীদের এক বস্ত্র পরাটাই ছিল রীতি, সেই বস্ত্রাঞ্চল (কাপড়ের আঁচল) টেনেই তাঁরা অবগুণ্ঠন তৈরি করে নিতেন। বর্তমানে অনেকে যেমন শখের বশে পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত ঝুলিয়ে কোঁচা দিয়ে কাপড় পরিধান করেন, প্রাচীনকালের বাঙালীরা কিন্তু সেটা করতেন না। তখনকার ধুতি দৈর্ঘ্যে ও প্রস্থে অনেক ছোট ছিল; হাঁটুর নিচে নামিয়ে কাপড় পরাটা সেকালের সাধারণ নিয়মের ব্যতিক্রম ছিল; তখন সাধারণতঃ হাঁটুর উপর পর্যন্তই কাপড়ের প্রস্থ থাকত। ধুতির মাঝখানটা কোমরে জড়িয়ে সেটার দু’প্রান্ত টেনে পশ্চাদ্দিকে কচ্ছ বা কাছা করা হত। ঠিক নাভির নিচেই দু’–তিন প্যাঁচের একটা কটিবন্ধের সাহায্যে কাপড়টা কোমরে আটকানো থাকত; কটিবন্ধের গাঁটটা ঠিক নাভির নিচেই দুল্যমান থাকত। কেউ কেউ আবার ধুতির একটা প্রান্ত পেছনের দিকে টেনে কাছা দিতেন, আর অন্য প্রান্তটা ভাঁজ করে সামনের দিকে কোঁচার মত ঝুলিয়ে নিতেন। সেযুগের নারীদের শাড়ি পরবার ধরনও প্রায় একই রকমের ছিল; তবে শাড়ি ধুতির মত অতটা খাটো হত না, সেটা পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত ঝুলানো থাকত, এবং বসনপ্রান্ত পশ্চাদ্দিকে টেনে কচ্ছে রূপান্তরিত করা হত না। বর্তমান সময়ের বাঙালী নারীরা যেভাবে কোমরে এক বা একাধিক প্যাঁচ দিয়ে অধোবাস রচনা করেন, প্রাচীন পদ্ধতিও ঠিক একই ধরণের ছিল; তবে এখনকার মত প্রাচীন বাঙালী নারী শাড়ির সাহায্যে উত্তরবাস রচনা করে নিজেদের দেহ আবৃত করতেন না; তাঁদের উত্তর-দেহাংশ অনাবৃত রাখাই তখন সাধারণ নিয়ম ছিল। তবে কোন কোন ক্ষেত্রে, সম্ভবতঃ সঙ্গতিসম্পন্ন উচ্চকোটি স্তরে এবং নগরে — কিছুটা হয়ত মধ্য ও উত্তর–পশ্চিম ভারতীয় আদর্শ ও সংস্কৃতির প্রেরণায় — সেযুগের কেউ কেউ উত্তরীয় বা ওড়নার সাহায্যে নিজের শরীরের উত্তরার্ধের কিছুটা অংশ ঢেকে রাখতেন, বা স্তনযুগলকে চোলি বা স্তনপট্টের সাহায্যে রক্ষা করতেন। কেউ কেউ আবার উত্তরবাসরূপে সেলাই করা বডিস জাতীয় একপ্রকারের জামার সাহায্যে স্তননিম্ন ও বাহু-ঊর্ধ্ব পর্যন্ত দেহাংশ ঢেকে রাখতেন। এবিষয়ে কোন সন্দেহ নেই যে, সেই জাতীয় উত্তরাবাসের ব্যবহার নগর ও উচ্চকোটি স্তরেই সীমাবদ্ধ ছিল। নারীর সদ্যোক্ত উত্তরবাস ও তাঁর শাড়ি এবং পুরুষের ধুতি প্রভৃতি কোনও কোনও ক্ষেত্রে — সমসাময়িক পাণ্ডুলিপি চিত্রের সাক্ষ্যে এতথ্য সুস্পষ্ট যে — নানাপ্রকারের লতাপাতা, ফুল, এবং জ্যামিতিক নকশা দ্বারা মুদ্রিত হত। খৃষ্টীয় সপ্তম–অষ্টম শতক থেকে সেই ধরণের নকশা–মুদ্রিত বস্ত্রের সঙ্গে ভারতবর্ষের পরিচয় আরম্ভ হয়েছিল, এবং — সিন্ধু, সৌরাষ্ট্র ও গুজরাট — গোড়ার দিকে সেই বস্ত্র ব্যবসার প্রধান কেন্দ্র ছিল। পরে ভারতবর্ষের অন্যত্রও ক্রমশঃ সেটা ছড়িয়ে পড়েছিল। সেই নকশা-মুদ্রিত বস্ত্রের ইতিহাসের মধ্যে ভারত–ইরাণ–মধ্য এশিয়ার ঘনিষ্ঠ শিল্প ও অলংকরণগত সম্বন্ধের ইতিহাস লুকিয়ে রয়েছে। কিন্তু বর্তমান প্রসঙ্গে সেকথা অবান্তর। যাই হোক, সেযুগের নারীদের পরিধেয়র ব্যাপারে সমগ্র প্রাচীন আদি অষ্ট্রেলিয়–পলেনেশিয়–মেলানেশিয় নরগোষ্ঠীর মধ্যে এটাই প্রচলিত নিয়ম ছিল। বালিদ্বীপ এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অন্যান্য কয়েকটি দ্বীপে সেই অভ্যাস ও ঐতিহ্যের অবশেষ এখনও বিদ্যমান রয়েছে বলে দেখা যায়। সভা সমিতি এবং বিশেষ বিশেষ উপলক্ষ্যে তখন বিশেষ বিশেষ পোষাক-পরিচ্ছদের ব্যবস্থা ছিল। জীমূতবাহন তাঁর দায়ভাগ–গ্রন্থে সভা সমিতির জন্য পৃথক পোষাকের কথা বলেছিলেন। সেযুগের নর্তকী নারীরা পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত বিলম্বিত আঁটসাঁট পাজামা পরতেন; এবং দেহের উত্তরার্ধে কাঁধের উপর দিয়ে একটা দীর্ঘ ওড়না ঝুলিয়ে দিতেন; তাঁদের নৃত্যের গতিতে সেই ওড়নার প্রান্ত লীলায়িত ভঙ্গিতে উড়ে বেড়াত। সন্নাসী-তপস্বীরা এবং একান্ত দরিদ্র সমাজ-শ্রমিকেরা ন্যাঙ্গোটি পরিধান করতেন। সৈনিক ও মল্লবীরেরা ঊরু পর্যন্ত লম্বা খাটো আঁট পাজামা পরতেন; তাঁরা ছাড়াও সেযুগের সাধারণ মজুরেরাও সম্ভবতঃ কখনো কখনো সেই একই ধরণের পোষাক পরতেন; অন্ততঃ — পাহাড়পুরের ফলকচিত্রের সাক্ষ্য সেকথাই বলে। শিশুদের পরিধেয় ছিল হাঁটু পর্যন্ত লম্বা ধুতি, আর না হয় আঁট পাজামা, আর কটিতলে জড়ানো ধটি; তাঁদের কণ্ঠে এক বা একাধিক পাটা বা পদক–সম্বলিত সূত্রহার ঝোলানো থাকত।
এখনকার মত প্রাচীনকালেও বাঙালীর মস্তকাবরণ বলে কিছু ছিল না। নানা কৌশলে সুবিন্যস্ত কেশই তখন তাঁদের শিরোভূষণ ছিল। সেযুগের পুরুষেরা লম্বা বাবরীর মতন চুল রাখতেন; কুঞ্চিত থোকায় থোকায় সেগুলো তাঁদের কাঁধের উপরে ঝুলত; কারও কারও আবার নিজের মাথার উপরে একটা প্যাঁচানো ঝুঁটি থাকত; এবং কপালের উপরে দুল্যমান কুঞ্চিত কেশদাম বস্ত্রখণ্ড দ্বারা ফিতার মত করে বাঁধা থাকত। নারীদের লম্বমান কেশগুচ্ছ যেমন তাঁদের ঘাড়ের উপরে খোঁপা করে বাঁধা থাকত, তেমনি আবার কারো কারো মাথার পিছনদিকে এলানো থাকত। সন্ন্যাসী-তপস্বীদের লম্বা জটা দুই ধাপে মাথার উপরে জড়ানো থাকত। শিশুদের চুল তিনটে কাকপক্ষ গুচ্ছে মাথার উপরে বাঁধা থাকত।
ময়নামতি ও পাহাড়পুরের মৃৎফলকের সাক্ষ্য থেকে মনে হয় যে, সেযুগের যোদ্ধারা তাঁদের পায়ে পাদুকা ব্যবহার করতেন; তখনকার প্রহরী দারোয়ানেরাও পাদুকা ব্যবহার করতেন; এবং সেই পাদুকা এমনভাবে চামড়া দিয়ে তৈরি করা হত যাতে পায়ের কণ্ঠা পর্যন্ত ঢাকা পড়ে যায়। ব্যাদিতমুখ সেই জুতো ফিতাবিহীন ছিল। সেকালের সাধারণ মানুষেরা সম্ভবতঃ কোনও ধরণের চর্মপাদুকা ব্যবহার করতেন না, যদিও কর্মানুষ্ঠান–পদ্ধতি ও পিতৃদয়িত–গ্রন্থে পুরুষদের পক্ষে কাষ্ঠ এবং চর্মপাদুকা — উভয়েরই ব্যবহারের ইঙ্গিত দেখতে পাওয়া যায়। সেকালের সঙ্গতিসম্পন্ন মানুষের মধ্যেও কাষ্ঠপাদুকার চলন খুব বেশি ছিল। বাঁশের লাঠি এবং ছাতার ব্যবহারও তখন প্রচলিত ছিল। মৃৎ ও প্রস্তর ফলকে এবং সমসাময়িক সাহিত্যে ছত্র (ছাতা) ব্যবহারের সুপ্রচুর ঐতিহাসিক সাক্ষ্য দেখতে পাওয়া যায়; লাঠির সাক্ষ্যও স্বল্প হলেও দেখা যায়। সেযুগের প্রহরী, দারোয়ান, মল্লবীরেরা সকলেই সুদীর্ঘ বাঁশের লাঠি ব্যবহার করতেন।
সধবা নারীরা কপালে কাজলের টিপ পরতেন এবং তাঁদের সীমন্তে সিঁদুরের রেখা থাকত; তাঁরা নিজেদের পায়ে লাক্ষারস অলক্তক (লাক্ষারসের তৈরি আলতা) পরতেন, ঠোঁটে সিঁদুর লাগাতেন; দেহ ও মুখমণ্ডলে প্রসাধন হিসেবে চন্দনের গুঁড়ো ও চন্দনপঙ্ক, মৃগনাভী, জাফ্রান প্রভৃতি ব্যবহার করতেন। বাৎস্যায়ন বলেছিলেন যে, গৌড়ীয় পুরুষেরা হস্তশোভী ও চিত্তগ্রাহী লম্বা লম্বা নখ রাখতেন এবং সেই নখে তাঁরা রঙ লাগাতেন; খুব সম্ভবতঃ যুবতীদের মনোরঞ্জন করবার জন্যই তাঁরা সেকাজ করতেন। তবে সেযুগের নারীরা নখে রঙ লাগাতেন কিনা, — এবিষয়ে কোনো ঐতিহাসিক সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়না। তবে তাঁরা যে চোখে কাজল লাগাতেন, দমোদরদেবের চট্টগ্রাম-লিপি থেকে সে ইঙ্গিত পাওয়া যায়। মদনপালের মনহলি-লিপিতে সেযুগের নারীদের প্রসাধন-ক্রিয়ায় কর্পূর-ব্যবহার করবার, এবং নারায়ণপালের ভাগলপুর লিপিতে রঙ ব্যবহার করবার ইঙ্গিত দেখতে পাওয়া যায়। ঠোঁটে লাক্ষার (অলক্তরাগ) লাগানো এবং খোঁপায় ফুল গুঁজে দেওয়া যে সেযুগের বাঙালী তরুণীদের বিলাস-প্রসাধরনের অঙ্গ ছিল, সমসাময়িক বাঙালী কবি সাঞ্চাধরও সেকথা জানিয়েছিলেন। তখন কোন নারী বিধবা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাঁর সীমন্তের সিঁদুর যে ঘুঁচে যেত, একথায় ইঙ্গিত দেবপালের নালন্দা লিপিতে, মদনপালের মনহলি-লিপিতে, বল্লালসেনের অদ্ভুতসাগর গ্রন্থে এবং গোবর্ধনাচার্যের নিম্নোদ্ধৃত শ্লোকে পাওয়া যায় —
“বন্ধনভাজোহমুষ্যাঃ চিকুর কলাপস্য মুক্তমানস্য।
সিন্দূরিত সীমন্তচ্ছলেন হৃদয়ং বিদীর্ণমেব॥”
সেযুগের নারীরা যে গলায় ফুলের মালা পরতেন এবং মাথার খোঁপায় ফুল গুঁজতেন, এই সাক্ষ্য নারায়ণপালের ভাগলপুর-লিপি এবং কেশবসেনের ইদিলপুর-লিপি থেকে পাওয়া যায়। নারায়ণপালের ভাগলপুর–লিপিতে দেখা যায় যে, বুকের বসন স্থানচ্যুত হয়ে যাওয়ার ফলে লজ্জায় আনতনয়না নারী কথঞ্চিত গলার ফুলের মালা দিয়ে বক্ষ ঢেকে লজ্জা নিবারণ করছেন। বলা বাহুল্য যে, এই চিত্রটি তৎকালীন নাগর-সমাজের উচ্চকোটি স্তরের ছিল। বিশ্বরূপ সেনের সাহিত্যপরিষদ-লিপি এবং সমসাময়িক অন্যান্য লিপির সাক্ষ্যগুলিকে একসঙ্গে করলে একথা মনে হয় যে, সেই সমাজস্তরের নারীরা, — বিশেষভাবে বিবাহিতা নারীরা তখন প্রতি সন্ধ্যায় নদী বা দীঘিতে অবগাহনান্তর (গা ধুইয়ে) করে প্রসাধনে-অলংকারে সজ্জিত ও শোভিত হয়ে আনন্দ ও ঔজ্জ্বল্যের প্রতিমা হয়ে বিরাজ করতেন। বিজয়সেনের দেওপাড়া-প্রশস্তিতে সেযুগের নারীদের বক্ষযুগলে কর্পূর ও মৃগনাভি রচনার সংবাদ পাওয়া যায়। তখনকার রাজা-মহারাজ-সামন্ত-মহাসামন্ত এবং রাজকীয় মর্যাদাসম্পন্ন নাগর-পরিবারের নারীরা তাঁদের বেশভূষা, প্রসাধন, অলংকার ইত্যাদিতে উত্তরাপথের আদর্শকেই মেনে চলতেন; অন্ততঃপক্ষে সদ্যোক্ত বিবরণ থেকে সেকথাই মনে হয়। রাজমহিষীরা তো তৎকালীন ভারতবর্ষের নানা জায়গা থেকেই আসতেন, আর নগর-সমাজে রাজপরিবারের আদর্শটাই সাধারণতঃ সক্রিয় ছিল বলে মনে হয়। সদুক্তিকর্ণামৃত গ্রন্থ থেকে নেওয়া একজন অজ্ঞাতনামা জনৈক কবির এই শ্লোকটিতে সেকালের নগরবাসিনী বঙ্গবিলাসিনীদের বেশভূষার একটা সুস্পষ্ট ছবি দেখতে পাওয়া যায় —
“বাসঃ সূক্ষ্মং বপুষি ভুজযোঃ কাঞ্চনী চঙ্গদশ্রীর।
মালাগর্ভঃ সুরভি মসৃনৈগর্ন্ধতৈলৈঃ শিখণ্ডঃ॥
কর্ণোত্তংসে নবশশিকলানির্মলং তালপত্রং।
বেশং কেষাং ন হরতি মনো বঙ্গবারাঙ্গনাম॥”
অর্থাৎ — দেহে সূক্ষ্মবসন, ভুজবন্ধে সুবর্ণ অঙ্গদ (তাগা); গন্ধতৈলসিক্ত মসৃণ কেশদাম মাথার উপরে শিখণ্ড বা চূড়ার মত করে বাঁধা, তাতে আবার ফুলের মালা জড়ানো; কানে নবশশিকলার মত নির্মল তালপত্রের কর্ণাভরণ — বঙ্গবারাঙ্গনাদের এই বেশ কার না মন হরণ করে!
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Historical General 17-March-2024 by east is risingরাম মন্দির নির্মাণ বুঝিয়ে দিল এখন ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্র ঘোষণা করা শুধু সময়ের অপেক্ষা। ভারতের বাম ও সংখ্যালঘু অংশ ভারতীয় সাংবিধানিক পরিকাঠামোর মধ্যে দাঁড়িয়ে আর কোনও লড়াই চালাতে পারবেনা। হয় বাম ও সংখ্যালঘুদের সাংবিধানিক পরিকাঠামোরই বিরুদ্ধে যেতে হবে অথবা চুপচাপ হিন্দু রাষ্ট্রকে মেনে নিতে হবে। আমার ধারণা অধিকাংশ বাম ও সংখ্যালঘু মানুষই এই হিন্দু রাষ্ট্রকে মেনে নিতে বাধ্য হবে বা ভয়ে মেনে নেওয়ার ভনিতা করতে বাধ্য হবে। কারণ সাধারণ মানুষ কোনও দিনই রাষ্ট্র ক্ষমতার বিরুদ্ধে লড়তে পারেনা বা লড়াই করার দায় নেয়না। ফলে হিন্দু রাষ্ট্র বিরোধিতা ঠিক্টহাক করতে গেলে ভারতীয় সাংবিধানিক পরিকাঠামোর বাইরে গিয়ে লড়াই করা ছাড়া আর উপায় রইলনা। এর একটা সুবিধে হল ঢপবাজ স্বার্থ লোটা হিন্দু বিরোধী অংশটা শেষ হয়ে যাবে। আর সেকুলার উদারবাদী ভারতের স্বপ্ন দেখানো যাবেনা।
রাম মন্দির নির্মাণকে প্রায় উৎসব হিসেবে মেনে নিয়েছে গ্রাম পশ্চীম বঙ্গ। কোথাও দীক্ষা গুরু নিরামিষ খাবার আদেশ দিয়েছেন রাম মন্দির নির্মাণের দিন, আবার কোথাও এক সন্যাসি গ্রামে গ্রামে ঘরে ঘরে চারটে চাল দিয়ে বলেছে খিচুরি পায়েস করে খেতে। আর মোড়ে মোড়ে রামের মূর্তি বানিয়ে গাম চালিয়ে গেরুয়া ঝাণ্ডা তুলে নাচানাচি তো আছেই। গ্রাম পশ্চীম বঙ্গের হিন্দুরা বলছে দারুণ কারণ মুসলিমরা না কি এই সব দেখে "চুপসে" গেছে। এই "চুপসে যেতে" দেখেই সাধারণ মানুষ এবার বিজেপি-কে বিপুল ভোটে জয়যুক্ত করবে। ২০২৪-এ বড়ো জয় নিয়ে এসে "ডিলিমিটেশন ২০২৬" করে সাংবিধানিকভাবেই হিন্দি-গুজারাতি-দের নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে কারণ সংসদের দুই কক্ষের সাংসদ-দের ৫২% আসবে হিন্দি প্রদেশগুলো আর গুজারাত থেকে। দুর্ভাগ্যের বিষয় লারী পূজারী পাপাচারী জাতিটা পাশের বাড়ির লোককে "চুপসে যেতে" দেখেই আনন্দে মসগুল আসল ক্ষমতাবান অর্থাৎ গুজারাতি-হিন্দিদের হাতে সব চলে যাচ্ছে তা বোঝার ক্ষমতা এদের নেই।
ভারত রাষ্ট্র সবসময় গুজারাতি-হিন্দিদের অধিকারে থেকেছে। গুজারাতি ও রাজস্থানীদের (হিন্দিদের একটা অংশ) পুঁজি আর হিন্দিভাষিদের ভোটব্যঙ্ক সবসবয় ভারতের বাকিদের থেকে বেশি শক্তিশালী থেকে গেছে। জন্মহারে বাকিদের পিছিয়ে পড়া গুজারাতি-হিন্দিদের ক্ষমতাকে আরও স্থায়িত্ব দিয়েছে ও শক্তি যুগিয়েছে। ফলে আজ আর সমাজতান্ত্রিক বা সেকুলার সাঁঝার প্রয়োজন নেই গুজারাতি হিন্দি অক্ষের। আজ তারা খোলাখুলিভাবে নিজেদের আগ্রাষণ চালাবে। একে আটকাবার শ্রেণিবাদী, ভীমবাদী নারীবাদী বা সংখ্যালঘুদের নেই। দক্ষিণ ভারতে তামিল-তেলেগু-মালোয়ালী-কণ্ণড়-টুলু দ্রাবিড়ীয় অক্ষের কাছ থেকে গুজারাতি-হিন্দি অক্ষ একটা প্রতিরোধ অবশ্যই পাবে। শিখ, কাশ্মীরি, উত্তরপূর্বের ও মধ্য ভারতের কিছু উপজাতিও কিছুটা লড়াই দেবে।
তবে আরও দুটো জায়গা থেকে গুজারাতি-হিন্দি অক্ষ ঝামেলায় পড়বে। এক, গুজারাতি ব্যবসায়ী ও হিন্দি রাজনীতিবীদদের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি হতে পারে মোদী পরবর্তী সময়ে বিশেষ করে অমিত শাহ বনাম যোগী হওয়ার সম্ভাবনা যথেষ্ট। দুই, আন্তর্জাতিক ভূরাজনীতি। চীনের উত্থান ভারতের ক্ষমতা দক্ষিণ এশিয়াতে কমিয়ে ফেলেছে এবং চীন ভারতের জমিও আস্তে আস্তে গ্রাস করছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চীনকে আটকাতে ভারতকে বলির পাঁঠা বানাতে চাইছে। গুজারাতি-হিন্দি চরিত্র ঝুঁকি প্রবণ বা দুঃসাহসী চরিত্রের নয় আর তাই মার্কিন কথায় তারা সরাসরি চীনের সঙ্গে ঝামেলায় যেতে চায়না।চীন অন্যদিকে জানে যে ভারত-কে শেষ করে দিলেই মার্কিন ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল খতম। তাই চীনও ভারতের আন্তর্জাতিক ও আভ্যন্তরীন দুর্বলতাগুলো ভালভাবে বুঝে নিচ্ছে। গুজারাতি-হিন্দি অক্ষের এক ভাষ এক ধর্মের ভারত চীনের কাছে ভাবী হুমকি। নিজের পাশে একটা সমান ক্ষমতাধর দেশ কোনও দেশই চায়না। ভারত আজ সত্যি এক ঐতিহাসিক দিন দেখল।
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Historical Hindu Manuvad Brahmannwad মনুবাদ ব্রাহ্মণ্যবাদ 22-January-2024 by east is risingআজকাল একটা হিড়িক উঠেছে - বাঙালির কোনো একটা অক্ষমতার বা, ক্ষতিকর দিক উঠলেই,
"আরে এর কারণ ৩৪ বছরের বাম শাসন" - এই oneliner
অন্য কিছু বলার আগে একটা সহজ প্রশ্ন ,
সুচেতা কৃপালিনী এর জন্ম যখন, তখন বাম ভাবধারা ছিল ?
উত্তর - না।
জানা না থাকলে জেনে নিন, এই সুচেতার পৈতৃক পদবী কিন্তু মজুমদার।
সুচেতা মজুমদার - যার বাঙালি পিতা
এই পর্যায়েও কিন্তু সেরকম উল্লেখ কোনো বাঙালি পুরুষ পাওয়া যাবেনা, যে হিন্দি মেয়েকে বিয়ে করেছে।
আরেকটু পিছিয়ে গিয়ে আরো একটা উদাহরণ দিই,
ফিরিঙ্গি কালীবাড়ি - প্রসিদ্ধ নাম !
তাই তো?
এই ফিরিঙ্গি কালীবাড়ির ইতিহাস কি?
এক বাঙালি বিধবা সৌদামিনী আর একজন পর্তুগিজ পুরুষের প্রেম সম্বন্ধ এর কাহিনী হল এই ফিরিঙ্গি কালীবাড়ি।
একটু feel করার চেষ্টা করুন scenario টা -
দেশ আপনার, সেই দেশের নারীর ওপর প্রথম অধিকারও সেই দেশের ভূমিপুত্র পুরুষের,
সেই দেশে শুধু যে একজন বিজাতীয় বিধর্মী পুরুষ আসছে তাই নয়, সে বিজাতীয় পুরুষের সাথে আপনার দেশীয় নারীদের সম্পর্ককে incentivise করছে যে architecture (মন্দির) সেখানে লোক দলে দলে ভক্তি ভাব নিয়ে পুজো দিতে যাচ্ছে।
তাই, যারা সবকিছুর root cause হিসেবে বাম আমলের নাম নেয়, they're nothing else than cheap political stooge
বাম আমলের বহু আগে ১৮৭০ থেকেই কোলকাতার বদলে বোম্বেকে incentivise করা শুরু করে ব্রিটিশ সরকার,
১৯৪০ এর দশকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মাঝেই কলকাতা থেকে আর্মেনিয়ান , ফ্রেঞ্চ, পর্তুগিজ রা একে একে নিজের ব্যবসা তুলে দিচ্ছিল,
আর তুলে দেওয়ার আগে সেই ব্যবসা দিয়ে যাচ্ছিল নিজেদের প্রিয় মারওয়ারি, বানিয়া ব্যবসায়ীদের হাতে
এখনও, কিন্তু বাম আমল আসা আরো ৩০ বছর বাকি!
তাই, বাম আমলের অনেক আগে থেকেই বাঙালি মৃত্যুশয্যা রচিত হয়ে গেছিল,
বাম আমল বাঙালির ধ্বংসের কারণ নয়, বরং বাঙালির ধ্বংসের ফলাফল।
Read MoreAuthor: Animesh Datta MallaBarman
Historical Hindu 16-November-2023 by east is risingএই মেয়েটার নাম হচ্ছে নাঈরা। সাদ্দাম হোসেনের কুয়েত দখলের পর ইরাক আক্রমণের পূর্বে আমেরিকানরা কুয়েতি এই মেয়েটাকে কংগ্রেসের একটা অধিবেশনে হাজির করে। সেখানে মেয়েটা সাক্ষ্য দেয়, সে ইরাকি সৈন্যদেরকে কুয়েতের হসপিটালগুলোতে ঢুকে সদ্যজাত শিশুদেরকে তুলে আছাড় মেরে হত্যা করতে দেখেছে।
নাঈরার এই সাক্ষ্য আমেরিকান গণমাধ্যম ব্যাপকভাবে প্রচার করতে শুরু করে। প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ সিনিয়রও ইরাক আক্রমণের যৌক্তিকতা তুলে ধরার জন্য তার ভাষণে মেয়েটার এই সাক্ষ্যের কথা উল্লেখ করেন এবং সাদ্দামকে হিটলারের সাথে তুলনা করেন। এর কয়েকমাস পর আমেরিকা সত্যি সত্যিই ইরাক আক্রমণ করে।
পরবর্তীতে জানা যায়, মেয়েটার পুরো নাম ছিল নাঈরা আল-সাবাহ, সে ছিল আমেরিকায় নিযুক্ত কুয়েতি রাষ্ট্রদূতের কন্যা, এবং তার এই সাক্ষ্য ছিল সম্পূর্ণ বানানো। ইরাক আক্রমণের বৈধতা তৈরির জন্য আমেরিকান একটা পিআর ফার্মের উদ্যোগে সে এই মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়েছিল।
===
ইসরায়েলি বিভিন্ন সংগঠনের, মিডিয়ার বা সেনাবাহিনীর বরাতে পশ্চিমা মিডিয়া যখন প্রচার করবে যে হামাস সদস্যরা অপারেশনে গিয়ে ইসরায়েলি মেয়েদেরকে রেপ করেছে, শিশুদেরকে হত্যা করেছে, তখন চট করে বিশ্বাস করার আগে এই ঘটনাটা মাথায় রাখবেন।
Mozammel Hossain Toha থেকে:
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Historical General world order 11-October-2023 by east is risingমুক্তবেণীর গঙ্গা যেথায় মুক্তি বিতরে রঙ্গে
আমরা বাঙালী বাস করি সেই তীর্থে- বরদ বঙ্গে,
বাম হাতে যার কমলার ফুল, ডাহিনে মধুর-মালা,
ভালে কাঞ্চন-শৃঙ্গ-মুকুট, কিরণে ভূবন আলো,
কোল ভরা যার কনক ধান্য, বুকভরা যার স্নেহ,
চরণ পদ্ম, অতসী অপরাজিতায় ভূষিত দেহ,
সাগর যাহার বন্দনা রচে শত তরঙ্গ ভঙ্গে,
আমরা বাঙালী বাস করি সেই বাঞ্চিত ভূমি বঙ্গে।
বাঘের সঙ্গে যুদ্ধ করিয়া আমরা বাঁচিয়া আছি,
আমরা হেলায় নাগেরে খেলাই, নাগেরি মাথায় নাচি।
আমাদের সেনা যুদ্ধ করেছে সজ্জিত চতুরঙ্গে,
দশাননজয়ী রামচন্দ্রের প্রপিতামহের সঙ্গে।
আমাদের ছেলে বিজয়সিংহ লঙ্কা করিয়া জয়
সিংহল নামে রেখে গেছে নিজ শৌর্যের পরিচয়।
একহাতে মোরা মগের রুখেছি, মোগলের আর হাতে,
চাঁদ-প্রতাপের হুকুমে হঠিতে হয়েছে দিল্লীনাথে।
জ্ঞানের নিধান আদিবিদ্বান কপিল সাঙ্খ্যকার
এই বাঙ্গলার মাটিতে গাঁথিল সূত্রে হীরক-হার।
বাঙালী অতীশ লঙ্ঘিল গিরি তুষারে ভয়ঙ্কর,
জ্বালিল জ্ঞানের দীপ তিব্বতে বাঙালী দীপঙ্কর।
কিশোর বয়সে পক্ষধরের পক্ষশাতন করি,
বাঙালীর ছেলে ফিরে এল দেশে যশোর মুকুট পরি।
বাংলার রবি জয়দেব কবি কান্ত কোমল পদে
করেছে সুরভি সংস্কৃতের কাঞ্চন-কোকনদে।
স্থপতি মোদের স্থাপনা করেছে ‘বরভূদরের’ ভিত্তি,
শ্যাম কাম্বোজে ‘ওস্কার-ধাম’, -মোদেরি প্রাচীন কীর্তি।
ধেয়ানের ধনে মূর্তি দিয়েছে আমাদের ভাস্কর
বিট পাল আর ধীমান,- যাদের নাম অবিনশ্বর।
আমাদেরি কোন সুপটু পটুয়া লীলায়িত তুলিকায়
আমাদের পট অক্ষয় করে রেখেছে অজন্তায়।
কীর্তনে আর বাউলের গানে আমরা দিয়েছি খুলি
মনের গোপনে নিভৃত ভুবনে দ্বার ছিল যতগুলি।
মন্বন্তরে মরি নি আমরা মারী নিয়ে ঘর করি,
বাঁচিয়া গিয়েছি বিধির আশীষে অমৃতের টিকা পরি।
দেবতারে মোরা আত্মীয় জানি, আকাশে প্রদীপ জ্বালি,
আমাদেরি এই কুটীরে দেখেছি মানুষের ঠাকুরালি,
ঘরের ছেলের চক্ষে দেখেছি বিশ্বভূপের ছায়া,
বাঙালীর হিয়া অমিয় মথিয়া নিমাই ধরেছে কায়া।
বীর সন্ন্যাসী বিবেকের বাণী ছটেছে জগৎময়,
বাঙালীর ছেলে ব্যাঘ্রে বৃষভে ঘটাবে সমন্বয়।
তপের প্রভাবে বাঙালী সাধক জড়ের পেয়েছে সাড়া,
আমাদের এই নবীন সাধনা শব-সাধনার বাড়া।
বিষম ধাতুর মিলন ঘটায়ে বাঙালী দিয়েছে বিয়া,
মোদের নব্য রসায়ন শুধু গরমিলে মিলাইয়া।
বাঙালীর কবি গাহিছে জগতে মহামিলনের গান,
বিফল নহে এ বাঙালী জনম, বিফল নহে এ প্রাণ।
ভবিষ্যতের পানে মোরা চাই আশাভরা আহ্বাদে,
বিধাতার কাজ সাধিবে বাঙালী ধাতার আশির্বাদে।
বেতালের মুখে প্রশ্ন যে ছিল আমরা নিয়েছি কেড়ে,
জবাব দিয়েছি জগতের আগে ভাবনা ও ভয় ছেড়ে,
বাঁচিয়া গিয়েছি সত্যের লাগি সর্ব করিয়া পণ,
সত্যে প্রণমি থেমেছে মনের অকারণ স্পন্দন।
সাধনা ফলেছে, প্রাণ পাওয়া গেছে জগত-প্রাণের হাটে,
সাগরের হাওয়া নিয়ে নিশ্বাসে গম্ভীরা নিশি কাটে,
শ্মশানের বুকে আমরা রোপণ করেছি পঞ্চবটী,
তাহারি ছায়ায় আমরা মিলাব জগতের শত কোটী।
মণি অতুলন ছিল যে গোপন সৃজনের শতদলে,
ভবিষ্যতের অমর সে বীজ আমাদেরি করতলে,
অতীতে যাহার হয়েছে সূচনা সে ঘটনা হবে হবে,
বিধাতার বরে ভরিবে ভূবন বাঙালীর গৌরবে।
প্রতিভার তপে সে ঘটনা হবে, লাগিবে না দ্বেষাদ্বেষি,
মিলনের মহামন্ত্রে মানবে দীক্ষিত করি ধীরে—
মুক্ত হইব দেব-ঋণে মোরা মুক্তবেণীর তীরে।
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Historical General 25-September-2023 by east is risingAniket Mitra লিখেছেন ফেসবুকে
বাস্তব:-
হিন্দি ভারতের কোনো দেশজ ভাষা নয়, মাটির ভাষা নয়। তাই হিন্দিতে কোনো লোকসংস্কৃতি নেই। কিন্তু ভারতের বাকি ভাষাগুলির আছে।
হিন্দিতে কোনো ধ্রুপদী সঙ্গীত, শিল্প, সাহিত্য ইত্যাদির সৃষ্টি ও রচনা নেই। কিন্তু ভারতের বাকি ভাষাগুলিতে (অধিকাংশতেই) আছে।
পেছনের ইতিহাস:-
ব্রিটিশ হানাদারদের লুটতরাজ ও রাজনৈতিক স্বার্থ রক্ষার্থে গঠিত এই অর্বাচীনতম খিচুড়ি ভাষা, হিন্দিভাষা। ব্রিটিশদের উদ্যোগেই হিন্দির যাত্রারম্ভ। ব্রিটিশ আগমন তো দূর, ব্রিটিশ উদ্যোগের আগে অবধি হিন্দি নামক কোনো ভাষার অস্তিত্ব ছিলোনা ভূভারতে!
"ভারতীয়দের ভাষা" নামক একটি মিথ্যা তকমা এঁটে ইংরেজির বদলে অন্য ভাষার মাধ্যমে একই কাজ সুসম্পন্ন করার নীলনকশার প্রথম ধাপ হিন্দি নামক কৃত্রিম একটি ভাষার নির্মাণ। ভারতীয়দের বোকাও বানানো গেল, ব্রিটিশদের কাজকম্ম অব্যাহত থাকলো।
এরপরের ধাপে ব্রিটিশ দালাল গুজরাটি-পারসি-মাড়োয়াড়ি বানিয়া গোষ্ঠীর অর্থপুষ্ট দিল্লী থেকে চালিত ও নিয়ন্ত্রিত ভারতীয় ভূরাজনীতির প্রবর্তন। তারপরে মাঠে নামানো হলো বলিউডকে, বিনোদনের মাধ্যমে মগজধোলাই করার জন্য -- একপ্রকার social engineering।
হিন্দি ভাষার পূর্বসূরীর জন্ম বহিরাগত হানাদার মোঘলদের সেনাছাউনি এবং হারেমে। সুলতানদের দরবারি ভাষা আরবি মিশ্রিত ফারসির সাথে দিল্লী ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের খড়িবলি ভাষার মেলবন্ধনে প্রচলিত একটি ততোধিক মিশ্র ভাষা তৈরী হয় যার পোষাকি নাম জুবান-ই-ওর্দু। এর আক্ষরিক অর্থ, সেনাছাউনির ভাষা। তার থেকেই উর্দু। মোঘলরা যেহেতু সরকারি কাজের মাধ্যম হিসেবে এই ভাষাটাকে বেছে নিয়েছিল, তার ফলে প্রচুর প্রচুর আরবি ফার্সি তুর্কি শব্দের অনুপ্রবেশ ঘটে। সে ভাষার লিপি ছিল পারস্য-আরবি লিপি বা নাস্তালিক লিপি।
এই জুবান-ই-ওর্দু মধ্য এশিয়াতে জুবান-ই-হিন্দভি বা হিন্দুস্তানি নামে প্রচলিত ছিলো। তাই ব্রিটিশরাও এই নামটাই তুলে নিয়ে এই ভাষাকে 'হিন্দুস্তানি' নামে ডাকতো।
সেই জুবান-ই-উর্দু ওরফে জুবান-ই-হিন্দভি ওরফে হিন্দুস্তানি ভাষা থেকে ১৮০০-র শুরুর দিকে স্কটিশ ভাষাবিদ জন বর্থউইক গিলক্রিস্টের তত্ত্বাবধানে মাড়োয়াড়ি বানিয়া তাঁবেদার ভারতেন্দু হরিশ্চন্দ্র, গুজরাটি ব্রাহ্মণ তাঁবেদার লাল্লু লাল এবং আরো ২-১ জন কর্তৃক কলিকাতার বুকে ভারতের সর্বপ্রথম ফ্রীমেসনস্ লজ ফোর্ট উইলিয়াম কলেজে উর্দুর থেকে কিছু ফারসি আরবি সরিয়ে তার জায়গায় সংস্কৃত গুঁজে এবং বাংলার শব্দভাণ্ডার থেকেও কিছু ধার করা শব্দ গুঁজে দিয়ে একটি বকচ্ছপ ভাষা নির্মিত হয়, যার নাম দেওয়া হয় 'হিন্দি'।
পূর্বতন নাস্তালিক লিপিটা উর্দুর জন্যেই বরাদ্দ রেখে পশ্চিমী নাগরী লিপিতে হিন্দির প্রমিতকরণ করে বাজারে ছেড়ে দেওয়া হয়। এই ক্রিয়াকলাপ সেপাই বিদ্রোহের (ব্রিটিশ প্রভুকে ভাল্লাগছেনা তাই মোঘল প্রভুতে প্রত্যাবর্তনের নামে যে হইহট্টগোল, সেটাই 'সেপাই বিদ্রোহ') আরো আগে। একটু তলিয়ে ভাবলেই হিসেব মিলবে।
আপাতবৈপরীত্য ও দ্বান্দিকতা সৃষ্টির মাধ্যমে মানুষকে একটু একটু করে ঘেঁটে দেওয়ার কারসাজি।
বিশ্বাস না হলে উর্দু এবং হিন্দির ব্যাকরণ, ভাষার ব্যবহার, গঠন, লিঙ্গের ব্যবহার ও নিয়মবিধি ঘাঁটলেই উভয় ভাষার অভিন্নতা প্রকট হবে।
কার্যত, হিন্দি হচ্ছে লিপ্যন্তরিত উর্দু।
ব্রিটিশ তাঁবেদার ভারতেন্দু হরিশচন্দ্রের পূর্বপুরুষ ব্রিটিশদের থেকে এই বাংলার বুকে জমিদারি পায় এবং তাঁবেদার লাল্লু লাল তৎকালীন মুর্শিদাবাদের নবাবের সেবায় রত ছিল। বাংলার বুকে মাড়োয়াড়ি জমিদারদের বংশধর ভারতেন্দু হরিশ্চন্দ্র ব্রিটিশ আমলে বাংলার নগজাগরণ প্রত্যক্ষে করে। সেটা দেখাদেখি তার নিদান ছিল -- "বঙ্গভাষার অক্ষয় রত্নভাণ্ডারের সহায়তায় হিন্দি ভাষায় উন্নতিবিধান।" এদেরকেই ব্রিটিশরা বেছে নেয় হিন্দি নির্মাণপ্রকল্পে সাহায্যের জন্য।
এবারে আসা যাক, হিন্দুস্তানি ভাষায় বৈদগ্ধ্য অর্জনকারী স্কটিশ ভাষাবিদ John Borthwick Gilchrist সাহেবের ব্যাপারে। এই গিলক্রিস্ট সাহেব ছিল অধুনা ব্যবহৃত হিন্দি ভাষার জনক, হিন্দুস্তানি ভাষার সর্বপ্রথম অভিধানপ্রণেতা এবং বৈয়াকরণ। তার রচিত শব্দকোষ পারস্য-আরবি বা নাস্তালিক লিপি, নাগরী লিপি এবং রোমান লিপিতে প্রকাশিত হয়। সাহেব আবার নিজের কাজের অর্থযোগানের চাহিদা মেটাতে আফিম এবং নীল চাষও করাতেন; সেসব চাষের কালো ইতিহাস অনেকেই জানে!
এই "মহানুভব" সাহেবের রচিত কিছু গ্রন্থাদি নিম্নরূপ:-
১. A Dictionary: English and Hindoostanee
২. Dialogues, English and Hindoostanee, calculated to promote the colloquial intercourse of Europeans, on the most useful and familiar subjects, with the natives of India, upon their arrival in that country
৩. A Grammar of the Hindoostanee Language
৪. The Hindee-Arabic Mirror; or improved Arabic practical tables of such Arabic words which are intimately connected with a due knowledge of the Hindoostanee language
৫. The Hindee-Roman Orthoepigraphical Ultimatum
৬. Dialogues, English and Hindoostanee; for illustrating the grammatical principles of the Strangers' East Indian Guide, and to promote the colloquial intercourse of Europeans on the most indispensable and familiar subjects with the Natives of India immediately upon their arrival in Hindoostan
গিলক্রিস্ট সাহেবের গ্রন্থগুলি এটাই প্রমাণ করে যে, ইংরেজদের অপশাসন, লুন্ঠন ও শোষণের সুবিধার্থে হিন্দুস্তানি তথা হিন্দি-উর্দুর যথাসম্ভব ব্যবহার বাড়ানোর প্রয়াস হয়েছে গোটা উত্তরভারত জুড়ে। যার ফলে উত্তরভারতের বিভিন্ন জাতীয় ভাষাগুলি বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ইংরেজরা ইংরেজি এবং হিন্দুস্তানির মধ্যে কিছু মিল খুঁজে পেয়েছিল। এও সত্যি যে আরবি এবং হিন্দিরও একটি সংযোগ আছে... উর্দুর গর্ভজাত ভাষা বলে কথা!!
ফরাসি ভাষাবিদ Jules Bloch, যিনি একটি ভাষার সাংস্কৃতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটের আঙ্গিকে সেই ভাষার গবেষণা করতেন, তিনিও লাল্লু লালের গ্রন্থ 'প্রেম সাগর' নিয়ে প্রণিধানযোগ্য উক্তি করেছেন যার নিম্নরূপ --
"Lallu Lal, under the inspiration of Dr. Gilchrist, changed all that by writing the famous Prem Sagar, whose prose portions are on the whole Urdu, from which Persian words have been throughout replaced by Indo-Aryan words… The new dialect gave a lingua franca to the Hindus."
প্রেমসাগর-কে হিন্দিতে সৃষ্টি ভেবে হিন্দির গর্বে গর্বীয়ান কল্পজগৎনিবাসীদের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়তে পারে!
A History of Hindi Literature নামক গ্রন্থে লেখক K.B. Jindal বলছেন -- "Hindi as we know it today is the product of the nineteenth century."
ওদেরই লোক হাটে হাঁড়ি ভেঙে দিয়েছে!
মান্য বা প্রমিত হিন্দি বা তথাকথিত খাঁটি হিন্দি সম্পর্কে প্রখ্যাত আইরিশ ভাষাবিদ George Abraham Grierson বলছেন -- "an artificial dialect the mother tongue of no native-born Indian, a newly invented speech, that wonderful hybrid known to Europeans as Hindi and invented by them."
এই গ্রিয়ার্সন সাহেবের নামেই হিন্দির জন্য একটি সাহিত্য পুরস্কার চালু করা হয়, Dr. George Grierson Award... ভিনরাষ্ট্রে হিন্দি ভাষা প্রচার ও উন্নয়নের জন্য ভারতের হিন্দি অধিদপ্তর থেকে প্রদান করা হয়। কিন্তু কালের কি অমোঘ পরিহাস: বহু আগেই গ্রিয়ার্সন সাহেব হিন্দির কাছা খুলে সেটার অর্বাচীনতা ও বকচ্ছপ প্রকৃতির স্বরূপ জানিয়ে দিয়ে গেছেন!! যার নামে পুরস্কার বিতরণ করে নিজের চুরি ঢাকবে ভেবেছিল সেই কবে বলে দিয়ে গেছে "ছিঁচকে চোর!"
মোদ্দাকথা হলো গিয়ে উলেখযোগ্য ভাষাবিদগণ এবং হিন্দি ভাষার ঐতিহাসিকগণ এই সিদ্ধান্তে একমত যে, ঊনবিংশ শতাব্দীতে একটি ছয়-আঁশলা সংকর বকচ্ছপ ভাষার উদ্ভাবন ও নির্মাণ করা হয় ব্রিটিশদের দ্বারা। এই ভাষা না তো ভারতের কোনো জাতির দেশীয় ভাষা আর নাই এখানকার কোনো ভূমিসন্তানদের মাতৃভাষা।
হস্তান্তরিত ভারতে কংগ্রেসী আমলে মধ্যপ্রদেশের বেওহর রাজেন্দ্র সিনহা, উত্তরপ্রদেশের হাজারিপ্রসাদ দ্বিবেদী, মহারাষ্ট্রের বালকৃষ্ণ কালেল্কার, উত্তরপ্রদেশের মৈথিলীশরণ গুপ্তা এবং মধ্যপ্রদেশের নামী ব্যাংকিং পরিবারের শেঠ গোবিন্দ দাস (অবাঙ্গালী) প্রমুখ সংসদবভবন এবং ভারত জুড়ে বিভিন্ন জায়গায় জায়গায় হিন্দিকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হিসেবে চালানোর জন্য উঠেপড়ে লাগে। সমাবেশ বসায়, চাপ সৃষ্টি করে।
এতো অনুনয়বিনয়, তর্কবিতর্ক আর দালালির পরে অবশেষে ১৪ই সেপ্টেম্বর ১৯৪৯ সাধারণাব্দে বেওহর রাজেন্দ্র সিনহার জন্মদিবসকেই 'হিন্দি দিবস' হিসেবে গ্রহণ করা হলো এবং হিন্দিকে ভারতের একটি দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে সকলের উপরে চাপানোর পথ প্রশস্ত করা হলো।
উপসংহার:-
ক) ভারতে ব্রিটিশ উপনিবেশ ও সাম্রাজ্যবাদ ছিল বলেই সর্বত্র হিন্দির এত রমরমা। ইংরেজির সাথে হিন্দি মেলানো যেতো বলেই ইংরেজরা এই ভাষাটার প্রসার, প্রচার ও প্রমোশান করেছিল।
খ) হিন্দি ভারতের নিজস্ব ভাষা নয়, ভারতের কোনো জাতি কিংবা জনগোষ্ঠীর ভাষা নয়। হিন্দির উৎসে আরবি, ফারসি, তুর্কি, ইংরেজির ছাপ বেশী। বলতে গেলে হিন্দির আগাপাশতলা অ-ভারতীয় অথচ হিন্দি দিয়ে ভারতের প্রাচীন ও সমৃদ্ধ ভাষাগুলিকে গেলানো হচ্ছে। উত্তর, পূর্ব ও মধ্যভারতের ভাষাসমূহ ব্রজ, অওধি, ডোগরি, পাহাড়ি, হরিয়ানভি, রাজস্থানি, মেওয়ারি, গাঢ়ওয়ালি, বুন্দেলখন্ডি, বাঘেলখন্ডি, ভোজপুরি, মগধি, অঙ্গিকা, মৈথিলীর মতন ভাষাগুলি হিন্দির কবলে গিয়ে আজ মুমূর্ষু।
গ) ১৯৪৭ পরবর্তী ভারতে হিন্দি আগ্রাসন, সম্প্রসারণ ও সাম্রাজ্যবাদ আসলে প্রাক্তন ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক সাম্রাজ্যবাদের নামান্তর। অভিন্ন চরিত্র, অভিন্ন অভিসন্ধি। প্রভুদের কাজ তাদের ছেড়ে যাওয়া ভৃত্যেরাই করে চলেছে কারণ ভৃত্যেরা সেইরক্মই দাসখত দিয়েছিল। আজকে ভারতের যেসকল সরকার হিন্দি ও উর্দুর পেছনে অঢেল, অযাচিত ও অপ্রয়োজনীয় অর্থব্যয় করছে, তারা আসলে প্রভুদের আজ্ঞাপালন করছে। চাটুকার প্রবৃত্তি।
ঘ) ভারতের সংবিধানে যেই ধারায় শুধুমাত্র ইংরেজি ও হিন্দিকে সরকারি ভাষার স্বীকৃতি দেওয়া এবং বিশেষভাবে হিন্দির প্রসারের নিদান দেওয়া হয়েছে, এইসব আসলে কাদের আদেশে করা হয়েছে আশা করি তা অনুমানে কষ্ট হবেনা!
ঙ) তথাকথিত "স্বাধীন" ভারতে আজও যারা "হিন্দি-হিন্দুস্তানি" বলে সপ্তম সুরে চেঁচিয়ে ক্যাওড়ামি করে, তারা আসলে নির্দিষ্ট সুরের তালে নাচছে?!!
চ) যে কাজ ইংরেজরা শুরু করেছিল, সেটা ক্ষমতা হস্তান্তরের পরে কংগ্রেস করেছে। কংগ্রেসের পর আজকে আরএসএস-চালিত বিজেপি করছে। ভারতের কিছু প্রাদেশিক সরকারও দোসর হিসেবে কাজ করছে। সব্বার সুঁতো যেন এক জায়গা থেকেই টানা হচ্ছে! আর জনগণ, থুড়ি, ভেড়াগণ যেন সংশোধনাতীত। জানবেনা, ভাববেনা, বুঝবেনা, শিখবেনা, শোধরাবেনা, জাগবেনা।
উপলব্ধি:-
এখনো আমাদের আগের ২-৩ প্রজন্ম মোটের উপরে হিন্দিকে রাষ্ট্রভাষা মনে করার ভুলটা করে থাকে। সে তাদেরকে সংবিধানের ধারা বলে দিলেও তাদের গেঁতোমি যায়না -- এটাই হলো cognitive dissonance। বহুদিন ধরে মিথ্যের পুনরাবৃত্তি হতে হতে সেটা সত্যের ভেক ধরেছে যে সত্যি জানলে অস্বস্তি হয়।
আজকাল নাগরী লিপির দোহাই দিয়ে হিন্দিকে এখন সংস্কৃতের আধুনিক রূপ ভাবানো হচ্ছে। "দেবনাগরী" শব্দখানি বিশেষ উদ্দেশ্যেই ব্যবহৃত হয়, যাতে সাধারণ মানুষের অবচেতনে একটা অগাধ ভক্তিভাব জন্মে -- এটাকে বলে psychological operation।
হিন্দির ভিত এতোই দুর্বল যে নানান মিথ্যে ও কপটতার আবরণে ঢেকে রাখতে হয়। এই আবরণ সরিয়ে দিলেই হিন্দি ধপাস হয়ে যাবে, চুরমার হয়ে যাবে।
হিন্দি ভাষার পত্তন, প্রসার এবং গ্রহণ যেহেতু স্বাভাবিকভাবে হয়নি সেহেতু ছলে-বলে-কৌশলে আগ্রাসন একমাত্র উপায়।
১৪ই সেপ্টেম্বর মিথ্যাচারের দিবস
১৪ই সেপ্টেম্বর বিভিন্ন জাতির দেশজ ভাষা গিলে খাওয়ার দিবস
১৪ই সেপ্টেম্বর নবরূপে পুরোনো সাম্রাজ্যবাদের দিবস
১৪ই সেপ্টেম্বর আদ্যোপান্ত একটি অভারতীয় ভাষিক-সাংস্কৃতিক একাধিপত্যের দিবস
১৪ই সেপ্টেম্বর একটি কালো দিবস
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Historical Hindu 17-September-2023 by east is risingআজ বাংলার নেতা শরৎ চন্দ্র বসুর জন্মদিন। ইনি এমন এক নেতা, যার নাম বাঙালীকে দিল্লী ভুলিয়ে দিতে চেয়েছে, কিন্তু ১৯৪৭এর পরে নেহেরু তার উপর ২৪ ঘণ্টা গোয়েন্দা নজরদারি করে গেছে। শুধু ১৯৪৭ এর পর থেকে বাংলা ভাগের পর যে আড়াই বছর উনি বেঁচে ছিলেন, তার মধ্যেই ১৮২৪ পাতার গোয়েন্দা রিপোর্ট শুধু ওনাকে নিয়ে! ইনি ১৯৪৭এর আগে একাধিকবার বাংলার কংগ্রেসের সভাপতি ছিলেন। ছিলেন সুভাষ চন্দ্র বসুর নিজের দাদা। এবং কুখ্যাত ফিরিঙ্গী পুলিশ কর্তা চার্লস টেগারট তার সম্বন্ধে বলেছিলেন যে তিনি "সুভাষ বসুর পিছনে আসল শক্তি"। এছাড়াও ব্রিটিশরা তাকে "ঘাসে আসল সাপ (রিয়েল স্নেক ইন দা গ্রাস)", "সরকারের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর বিরোধী" বলে আখ্যায়িত করে। বাংলায় ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের সহিংস পক্ষের সাথেও তার প্রত্যক্ষ যোগাযোগ ছিল, দিতেন সাহায্যও। যখন বাংলা ভাগ হতে চলেছে, তখন বাংলার কংগ্রেস ও মুসলিম লীগের যে নেতৃবৃন্দ স্বাধীন যুক্ত বাংলার প্রস্তাব করেন, সেই প্রস্তাবকদের মধ্যে তিনি অন্যতম প্রধান ব্যক্তি। ইনি বাংলা ভাগের পরেও বারে বারে বলেছেন যে বাঙালী, বিশেষত পশ্চিমবঙ্গের বাঙালী বুঝছে না, তার রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক কত বড় দাসত্ব বরণ করতে হল এর ফলে। ১৯৪৯ এর জুনে মাসে তিনি দক্ষিণ কলকাতা আসনে নেহেরুর কংগ্রেসের প্রার্থীর বিরুদ্ধে দেশপ্রেমী বাঙালীদের যুক্ত প্রার্থী হিসেবে দাঁড়ান এবং সমগ্র প্রচার চালান দিল্লী কি ভাবে বাংলাকে ধ্বংস করছে, এই মর্মে। এই নির্বাচনে বাঙালী বিপুলভাবে তাকে জেতায়, নেহেরুর কংগ্রেস প্রার্থীকে পরাস্ত করে। ১৯৫০-এর ফেব্রুয়ারিতে বাংলা মায়ের এই মহান সন্তানের মৃত্যু হয়। কেন তাঁর পুণ্যস্মৃতিকে দিল্লী মুছে দিয়েছে, তা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন। আজকে বাংলা ও বাঙালির দরকার তার নিজেদের নেতাদের নিজেদের চোখ দিয়ে চেনার, দিল্লীর দেওয়া চশমা ফেলে দিয়ে।
১৯৪৭-এর ২০ মে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে স্বাধীন অবিভক্ত বাংলার পক্ষপাতী নেতাদের মধ্যে একটি চুক্তি সম্পাদিত হয়। চুক্তির শর্তগুলি ছিল নিম্নরূপ:
১. বাংলা একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হবে। স্বাধীন বাংলা রাষ্ট্র অবশিষ্ট ভারতের সঙ্গে তার সম্পর্ক নির্ধারণ করবে।
২. স্বাধীন বাংলা রাষ্ট্রের সংবিধানে যুক্ত নির্বাচন ও বয়স্ক ভোটাধিকারের ভিত্তিতে বাংলার ব্যবস্থাপক পরিষদের নির্বাচনের ব্যবস্থা থাকবে আর সে সঙ্গে হিন্দু ও মুসলমান জনসমষ্টির সংখ্যানুপাতে আসন সংরক্ষিত থাকারও ব্যবস্থা থাকবে। কোনো প্রার্থী তাঁর নিজ সম্প্রদায়ের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট পেলে এবং একইভাবে প্রদত্ত অন্য সম্প্রদায়গুলির ২৫ শতাংশ ভোট পেলে তাঁকে নির্বাচিত ঘোষণা করা হবে। যদি কোনো প্রার্থী এ শর্তাবলি পূরণ না করতে পারেন তাহলে যিনি তাঁর সম্প্রদায়ের সর্বোচ্চ সংখ্যক ভোট পাবেন তিনিই নির্বাচিত হবেন।
৩. স্বাধীন বাংলা রাষ্ট্রের মন্ত্রিসভায় মুসলিম ও হিন্দু সম্প্রদায়ের (তফশিলি হিন্দু ও হিন্দুসহ) সমান সংখ্যক সদস্য থাকবেন। তবে মুখ্যমন্ত্রী এ হিসেবের বাইরে থাকবেন। এ মন্ত্রিসভায় প্রধানমন্ত্রী হবেন একজন মুসলিম ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী হবেন একজন হিন্দু।
৪. নতুন সংবিধানের আওতায় একটি আইন পরিষদ ও একটি মন্ত্রিসভা চূড়ান্ত পর্যায়ে গঠিত হওয়া সাপেক্ষে ইত্যবসরে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন (তফশিলি হিন্দুসহ) ও মুসলিম সম্প্রদায়ের সদস্যরা সামরিক বাহিনী ও পুলিশ বাহিনীসহ বিভিন্ন চাকরিতে সমান অংশের অধিকারী হবেন। আর এসব চাকরি-বাকরি করবেন বাঙালিরা।
এসব ইতিহাস। ইতিহাস বদলানো যায়না। কিন্তু ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রে বাংলা ও বাঙালির অধিকারের লড়াইয়ের অনুপ্রেরণা শরৎচন্দ্র বসু।
প্রণাম, প্রিয় নেতা।
ছবি: কেওড়াতলা মহশ্মশানে শরৎ চন্দ্র বসু স্মৃতি সৌধতে মাল্যদান।
Read More
Author: Saikat Bhattacharya
Historical General 07-September-2023 by east is risingফেসবুক পেজ মুসলমানের স্বর্ণকাল থেকে নেওয়া
সুলতান ইলিয়াস শাহর শাহ্-এর রাজত্বকালের একটি এক দিনার বাঙ্গালী স্বর্ণমোহরের মূল্যমান বর্তমানের হিসাবে দেড় লক্ষ টাকা। বাংলার অর্থনৈতিক উৎকর্ষের প্রমাণ আজও বিদ্যমান পর্তুগিজ ও চৈনিক পর্যটকদের লেখার পাতায় পাতায়।
পৃথিবীর সবচাইতে সুসমৃদ্ধ রাষ্ট্র ছিলো বাংলা, যার বণিকেরা পায়ে পরতেন সোনার কারুকার্যখচিত ভেড়ার চামড়ার জুতো।
ইলিয়াস শাহ্ ৭৩৮ হিজরি মোতাবেক ১৩৩৮ সালে রাঢ় ও বিহারের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করেন এবং সাতগাঁও-এর সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হন ৷ কালক্রমে গড়ে তোলেন বিশাল এক সাম্রাজ্য, যার বিস্তৃতি নেপাল থেকে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত! সকল বৈষম্য, আশরাফ-আতরাফ ভেদাভেদ, ব্রাহ্মণ-শূদ্র ভেদাভেদ উৎখাত করে ইলিয়াস শাহ্ বাঙালি জাতিকে ১৭৭ বছরের শোষণ (১১৬১-১৩৩৮) থেকে মুক্তিদান করেন। পাল সাম্রাজ্যের পতনের পর থেকে বাঙালি জাতি যে শোষণ ও নিপীড়নের শিকার হয়ে আসছিলো, তার অবসান ঘটে ইলিয়াস শাহর মসনদে আরোহণের মধ্য দিয়ে।
এর আগে বখতিয়ার খিলজীর গৌড় জয়ের মধ্য দিয়ে মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠিত হবার পর থেকে গৌড় একটা বড় সময় স্বাধীন ছিলো। কিন্তু হিন্দুস্তানের সুলতান যখনই স্বয়ং আক্রমণ করেছেন তখনই গৌড়ের স্বাধীনতার সমাপ্তি ঘটেছে! এর আগে সুলতান আলী মর্দান খিলজী (রাজত্ব: ১২১০-১২১৩), সুলতান ইয়াজ শাহ খিলজী (১২১৩-১২২৭), তুঘরিল তুঘ্রান খাঁ, বলকা খিলজী, সুলতান ইউজবেক শাহ (১২৫০-১২৫৮) এঁরা স্বাধীনই ছিলেন । আবার বলবানী বংশের সুলতানরা একটানা ১২৮৭ থেকে ১৩২৮ সাল পর্যন্ত শাসন ক্ষমতায় ছিলেন।
কিন্তু তারা কেউই বাংলা কে আঞ্চলিক পরাশক্তিতে পরিণত করতে পারেন নি৷
যখনই দিল্লীর সুলতান স্বয়ং আক্রমণ করেছেন বাংলার পতন ঘটেছে। তার কারণ- তাদের প্রতি জনগণের কোনো সমর্থন ছিলো না।
তারা ছিলো স্রেফ নিছক শাসক মাত্র, জনগণের অভিভাবক নয়। তাই তাঁরা বাংলা শাসন করা বা দিল্লীর সুলতানের বাংলা শাসন করা- জনগণের কাছ দুটোই একই জিনিস ছিলো! তাঁরা ব্যর্থ কেননা- জনগণ কে তাঁরা ইনসাফ দিতে পারেন নি। সেসময় আশরাফ-আতরাফ ভেদাভেদ ছিলো। অর্থাৎ, ধর্মান্তরিত মুসলিমদের উপর জন্মগত তুর্কি মুসলমানদের বৈষম্যের দৃষ্টিভঙ্গি ছিলো। তুর্কীরা ধর্মান্তরিত বাঙালি মুসলিম দের মুসলিম বলে গণ্যই করতো না, কোনো সরকারি চাকরিতে তাদের অধিকার ছিলো না- ব্যাপারটা অনেকটা উমাইয়াদের অনারব দের থেকে জিজিয়া নেবার মতো জঘন্য! ইসলাম গ্রহণ করার পরেও বাঙালিদের সাথে কাফিরের মতো আচরণ করা হতো।
[ এই নিকৃষ্ট জাতপ্রথা ইসলাম সমর্থন করে? ]
আর অমুসলিমদেরও সরকারি চাকরির কোনো অধিকারই ছিলো না। ধর্মান্তরিত মুসলিমদেরই যেখানে অধিকার দেয়া হচ্ছে না, সেখানে অমুসলিমদের তো প্রশ্নই আসে না!
আর এইজন্যেই তাদের প্রতি জনগণের কোনো সমর্থন ছিলো না।
কারণ আপনি শাসক হয়ে প্রজাদের মধ্যে বৈষম্য করছেন - তারা তো আপনার জন্য মনপ্রাণ দিয়ে জীবন বাজি রাখবে না! আপনি যে জন্মগত মুসলিম তাকেই শুধু সুবিধা দিচ্ছেন, যে ধর্মান্তরিত তাকে যোগ্যতা থাকার পরেও সুবিধা দিচ্ছেন না। আপনার অমুসলিম প্রজাদের আপনি অধিকার দিচ্ছেন না। তাহলে
তারা তো আপনার জন্য মনপ্রাণ দিয়ে লড়বে না!
আর এজন্যই গৌড় সালতানাতের সুলতানরা বেশিদিন শাসন করতে পারেন নি। তাঁদের কোনো ধরনের জনসমর্থনই ছিলো না। তাঁরা প্রজাদের হৃদয় জয় করতে পারেন নি....
বিজয় অর্জন করতে গেলে সবার আগে প্রজার মন জয় করতে হয়। প্রজাপালক না হলে শাসক হওয়া যায়, অভিভাবক হওয়া যায় না।
ইলিয়াস শাহ্ হলেন সর্বপ্রথম শাসক যিনি প্রজার মন জয় করেছিলেন। তিনিই সর্বপ্রথম শাসক যিনি জাতির অভিভাবক হয়ে উঠেছিলেন। বাংলার অন্যান্য সুলতানরা অনেকেই বাংলার অধিপতি হয়েছিলেন, তবে ইলিয়াস শাহ হয়েছিলেন বাংলার মানুষের হৃদয়ের সম্রাট।
স্বীয় কর্মগুণে তিনি জয় করেছিলেন হিন্দু-মুসলিম সবার হৃদয়।
যিনি ধর্ম-বর্ণ-আশরাফ-আতরাফ সকল ভেদাভেদ চূর্ণ করেছিলেন। তাঁর সুশাসনে ধর্মান্তরিত মুসলিম তো বটেই, যোগ্য হিন্দুরাও উচ্চ রাজপদে অধিষ্ঠিত হতে পারতেন। বিচক্ষণ ইলিয়াস শাহ হিন্দুদের নেতৃত্ব দিতেন মুসলমানদের হাতে, মুসলমানদের নেতৃত্ব দিতেন হিন্দুদের হাতে- যাতে তাঁরা একসাথে ষড়যন্ত্র করতে না পারে।
ইলিয়াস শাহ একজন পার্শিয়ান সিস্তানি হয়ে বাংলাকে ভালবেসে বাঙালি হয়ে গিয়েছিলেন। তিনি নিজেকে বলতেন- 'আমিই বাঙলা', তাই নামের শেষেই 'বাঙ্গালাহ' উপাধিটি যুক্ত হয়ে যায়- 'শামসুদ্দিন ইলিয়াস শাহ বাঙ্গালাহ্'।
ইলিয়াস শাহর পূর্বে বাংলার সাথে দিল্লীর যত যুদ্ধ হতো, তা ছিল মূলত গৌড়ের তুর্কি মুসলিমের সাথে দিল্লীর তুর্কি মুসলিমের লড়াই। লড়াই হতো তুর্কিতে তুর্কিতে, রাজায় রাজায় -- সাধারণ জনগণের কোনো মাথাব্যথা ছিলো না।
ইলিয়াস শাহ্ সর্বপ্রথম বাংলার সাথে হিন্দুস্তানের যুদ্ধকে একটি "'জাতীয় রূপ" প্রদান করেন।
আমি বাংলার অধিপতি, বাঙালিদের বাদশাহ, আমার সাথে আমার লোকেরা আছে -- যে জন্মগত মুসলিম সেও আছে, যে ধর্মান্তরিত মুসলিম সেও আছে, আমার যে প্রজা অমুসলিম সেও আছে!
তুমি হিন্দুস্তানের রাজা, তোমার সাথে তোমার লোকরা আছে...!!
এভাবেই ইলিয়াস শাহ সর্বপ্রথম হিন্দুস্তান-বাংলার লড়াইকে জাতীয় রূপ দিলেন।
আর এজন্যই ইলিয়াস শাহ্ বাঙ্গালী জাতির জনক।
আর এজন্যই একডালার রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে হাজার হাজার পাইকসেনা প্রাণ দিয়েছিলো, লাশের পর লাশ পড়েছিলো- তবুও বাঙালিরা থামেন নি। আর এই জন্যেইই, বাংলা সালতানাত সুদীর্ঘ আড়াইশ বছর রাজত্ব করেছিলো - গৌড় সালতানাতের পক্ষে সাতান্ন বছরের বেশি স্থায়ী হয় নি!
আর তাই, ইলিয়াস শাহ্ অন্য অপরাপর সুলতানদের মতো হলেও তিনি অসাধারণ... অনেকের মাঝে একজন হলেও তিনিই শ্রেষ্ঠ...
বাংলার মুক্তির সাল ১৩৩৮, যখন ইলিয়াস শাহ স্বাধীনতা ঘোষণা করলেন। যার শাসনামলে বাংলা এতো ধনী ছিলো যে, তাঁর একটি স্বর্ণমুদ্রার মূল্য বর্তমানের প্রায় দেড় লাখ টাকা।
মুদ্রায় লিখিত আছেঃ
............ "সিকান্দার-ই-সানী ইয়ামিন আল-খিলাফাহ আমীর উল-মুমিনীন সুলতান উল-আদিল শামসউদ্দিন আবুল মুজাফফর ইলিয়াস শাহ আস-সুলতান" [ কমেন্ট সেকশনে ]
চিত্রঃ বিস্তৃতির শিখরে বাংলা সালতানাত ১৩৯৪-১৩৯৯ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে, গিয়াসউদ্দিন আজম শাহর শাসনামলে, আয়তন- ১৪,৬৮,৭০৬ বর্গকিলোমিটার
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Historical General 16-August-2023 by east is risingআঙুলের ছাপ দিয়েই খুলে যাচ্ছে মোবাইলের লক, গেটের তালা,অফিসের উপস্থিতি, ফিঙারপ্রিন্ট নিয়েই যাচাই করা যাচ্ছে কে অপরাধী, এই ফিঙারপ্রিন্ট ডিটেকশান সিস্টেম প্রথম কে আবিষ্কার করেছিল জানেন?
তিনি ছিলেন একজন বাঙালী,নাম খান বাহাদুর কাজী আজিজুল হক।বাড়ি খুলনা জেলার কসবার পায়গ্রামে।কাজ করতেন তৎকালীন বেঙল পুলিশে।
ফিঙারপ্রিন্ট নিয়ে অনেকেই আগে কাজ করেছেন কিন্তু এর প্র্যাকটিক্যাল ইউজ কি,কিভাবে যাচাই করা যায়,কিভাবে ফিঙারপ্রিন্ট দিয়ে আলাদা করা যায় মানুষকে সেটা প্রথম আবিষ্কার করেন আমাদের দেশের কাজী আজিজুল হক।
ব্রিটিশ আমলে বেঙল পুলিশের আইজি ছিলেন এডওয়ার্ড রিচার্ড হেনরি। তিনি ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিয়ে গবেষণার জন্য নিয়োগ করেন দুই বাঙালী প্রতিভাকে, একজন গণিতবিদ কাজী আজিজুল হক, আরেকজন হেম চন্দ্র বোস।
কাজী আজিজুল হক ও হেমচন্দ্র বোস ৭০০০ ফিঙ্গারপ্রিন্ট এর এক বিশাল সংগ্রহ গড়ে তোলেন। অনেক পরিশ্রম করে একটা গাণিতিক সূত্র দাড়া করলেন যেটা দিয়ে ফিঙারপ্রিন্ট যাচাই এর মাধ্যমে মানুষ সনাক্ত করা যায়।আধুনিক বিজ্ঞানের এক বিশাল বড় আবিষ্কার। এই পদ্ধতির নাম হওয়া উচিত ছিল "বোস-হক আইডেন্টিফিকেশান সিস্টেম"। কিন্তু ওখান থেকেই ইংরেজদের বেঈমানী শুরু।
পুলিশের আইজি হেনরী সাহেব এবার সবার কাছে প্রচার করা শুরু করলেন যে এই ফিঙারপ্রিন্ট ডিটেকশন সিস্টেম আবিষ্কার করেছেন উনি নিজেই। এমন কি কাজী আজিজুল হক-কে কোন রকম স্বীকৃতি দিতেই অস্বীকার করলেন। তিনি চুপি চুপি একটা পেপার পাবলিশ করেও ফেললেন নিজের নামে।ব্যাস, বাংলাদেশের কাজী আজিজুল হক আবিষ্কৃত সিস্টেম এর নাম হয়ে গেল "হেনরী ক্লাসিফিকেশন সিস্টেম"
"হেনরি ক্লাসিফিকেশন সিস্টেম " এখন জগৎ বিখ্যাত, মোবাইলের টাচে, অফিসে, অপরাধী সনাক্তকরণে বলতে গেলে যত্ত জায়গায় ফিঙারপ্রিন্ট ব্যবহৃত হচ্ছে, তত জায়গায় এই হেনরি ক্লাসিফিকেশন সিস্টেম-ই ব্যবহার করা হচ্ছে। কাজ করে গেল আমার দেশের সূর্য্য সন্তান, কিন্তু নাম হচ্ছে এক বেঈমান ব্রিটিশ এর।
যদিও কিছুদিন আগে ব্রিটেনের "দ্যা ফিঙারপ্রিন্ট সোসাইটি" চালু করেছে "The Fingerprint society Azizul Huque & Hemchandra Bose prize"।ওদিকে যে সিস্টেমের নাম হতে পারত "হোক-বোস সিস্টেম " তা আজ-ও "হেনরি ক্লাসিফিকেশন সিস্টেম"-ই রয়ে গেছে।আর অজানায় থেকে গেছেন আমাদের আজিজুল হক।
Facebook Post of মোহাম্মদ আফ্রিদি
Author: Saikat Bhattacharya
Historical General 30-July-2023 by east is risingMurad Biwas Facebook Profile
লিখেছেন আহমেদ আফগানী।
পাকিস্তান শাসনামলে পূর্ব পাকিস্তান
আমাদের প্রচলিত ইতিহাসে পাকিস্তান আমল সম্পর্কে আমাদেরকে এমনভাবে উপস্থাপন করা হয় যেন পাকিস্তানীরা ব্রিটিশদের মতো আমাদের ওপর চেপে বসেছে অথবা আমাদের দেশ দখল তারা আমাদের শাসন করেছে। বস্তুত এটা মোটেই সত্য নয়। বরং পাকিস্তান তৈরি হওয়া থেকে নিয়ে পাকিস্তানের ২৪ বছর আমলে বাঙালিরা শাসকগোষ্ঠীর সাথে ছিলেন। পাকিস্তান আমলকে মোটাদাগে দুইভাগে ভাগ করা যায়। এক গণতান্ত্রিক পাকিস্তান ও দুই সেনাশাসনের পাকিস্তান। গণতান্ত্রিক পাকিস্তানের সময় ছিলো সাড়ে এগারো বছরের মতো। এই সময়ে ক্ষমতার শীর্ষে ছিলেন খাজা নাজিমুদ্দিন, মোহাম্মদ আলী বগুড়া, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দির মতো বাঙালি নেতারা।
সেসময় পাকিস্তানের বড় জাতিগোষ্ঠী ছিল বাঙালি, পাঞ্জাবি, সিন্ধি, বেলুচ, পশতুন ও কাশ্মিরী। গণতান্ত্রিক পাকিস্তানে ৭ জন প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ৩ জন প্রধানমন্ত্রী ছিল বাঙালি, ৩ জন ছিলেন পাঞ্জাবি, বাকী একজন হলেন গুজরাটের (ভারত হতে আগত)। তাছাড়া ৭ জনের প্রতিটি মন্ত্রীসভায় বাঙালিদের উপস্থিতি ছিল বেশ ভালো। তাই পাকিস্তানে বাঙালিদের শাসন ক্ষমতা থেকে দূরে রাখা হয়েছে এমন ধারণা অমূলক।
পাকিস্তান আমলের ২৪ বছরের মধ্যে সাড়ে ১২ বছর ছিল সেনাশাসন। এর মধ্যে আইয়ুব খান সাড়ে ১০ বছর আর ইয়াহিয়া খান ২ বছর। আইয়ুব খান শুধু পূর্ব পাকিস্তানের জন্য সমস্যা ছিলেন না বরং সমগ্র পাকিস্তানের জন্যই সমস্যা ছিলেন। বেশি সমস্যা ছিলেন পশ্চিম পাকিস্তানের জন্য। আর এজন্য তারা আইয়ুবের বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলন করে তাকে ক্ষমতা থেকে সরিয়েছে। অন্যদিকে আইয়ুব বাঙালিদের সাথে সুসম্পর্ক রেখেছে এবং ঢাকাকে সেকেন্ড ক্যাপিটাল হিসেবে গড়ে তুলেছে। তাই আইয়ুবের বিরুদ্ধে জোরালো আন্দোলন করেনি বাঙালিরা। বরং ভাসানীর মতো জনপ্রিয় নেতা আইয়ুবের হয়ে কাজ করেছেন। সময়ে সময়ে শেখ মুজিবের আওয়ামীলীগও আইয়ুবের সাথে ষড়যন্ত্রের অংশিদার হয়েছে। আইয়ুবের মন্ত্রীসভায়ও বাঙালিদের আধিক্য ছিল।
বস্তুত ১৯৪৭ সালে মুহাম্মদ আলী জিন্নাহর আমল থেকেই এ অঞ্চলের উন্নয়নের পরিকল্পনা নেয়া হয়। জিন্নাহ বিমান বা স্থল বাহিনীর পাশাপাশি নৌ-বাহিনীকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে সংযোগ রক্ষার জন্য নৌ-পথই একমাত্র উপায় বলে সম্ভবত নৌ বাহিনীকে শক্তিশালী করার আগ্রহ তাঁর বেশী ছিল। রিয়ার এডমিরাল জে. ডব্লিউ জেফোর্ড হাজার মাইল দূরে পূর্ব পাকিস্তানে কোন নেভাল বেস না থাকায় ক্রুসহ একটি গোটা বেতার ষ্টেশন চট্টগ্রামে আকাশ পথে নিয়ে এসে বসালেন।
দেশের শিল্পোন্নয়নের জন্য আমাদেরকে যেমন চীন-কোরিয়ানদেরকে Foreign Direct Investment করার জন্য আহ্বান জানাতে হচ্ছে, তাদেরকে বিভিন্ন tax rebate দিতে হচ্ছে। পাকিস্তান হবার পর ইস্পাহানী, আদমজী, বাওয়ানীসহ বড় বড় শিল্পোদ্যক্তাদেরকে দেশের এ অঞ্চলে শিল্প কারখানা গড়ে তোলার জন্য আহ্বান জানানো হয়। তারা প্রতিষ্ঠিত করেন আদমজী, ইস্পাহানী ও বাওয়ানী জুট মিল এবং এদের পথ অনুসরণ করে বাংলাভাষী মুসলমানরা ১৯৭১ সনের মধ্যে গড়ে তুলে পাটকল ৭৬টি, বস্ত্রকল ৫৯টি ও চিনি কল পূর্বের ৪টিসহ ১৫টি।
যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির জন্য এই অঞ্চলে রেলপথের প্রসার, টেলিগ্রাম, টেলিগ্রাফ ইত্যাদির ব্যবস্থা করা হয়। তবে বাংলার উন্নয়নের সাথে পশ্চিম পাকিস্তানের উন্নয়ন তাল মেলাতে পারে নি কারণ ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশদের শোষণের ফলে পূর্ববাংলা ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে পার্থক্য ছিল অনেক বেশি। ইংরেজ আমলে সবচেয়ে বেশি শোষণের শিকার হয়েছে পূর্ব বাংলা। এখানে শিল্প কারখানা বন্ধ করে রাখা হয়েছে। স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এভাবে চলেছে ১০০ বছর। এই ১০০ বছর কোম্পানী শাসনে চলেছিলো। পরবর্তী ৮০-৯০ পশ্চিম পাকিস্তান পুরোপুরি ব্রিটিশদের কবলে আসে। কিন্তু ততক্ষণে ব্রিটিশরা তাদের বর্বরতা থেকে অনেকটাই সরে এসেছিলো। এরপরও পূর্ব বাংলায় উন্নয়ন হয় নি হিন্দুদের কঠোর বিরোধীতায়। তাই ১৯৪৭ সালে পূর্ব বাংলার অবস্থান ছিল পুরো ভারতের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা।
সেখান থেকে পূর্ব বাংলাকে কামব্যাক করার সুযোগ দিয়েছেন পাকিস্তান আমলের শাসকেরা। ২৪ বছরে উন্নয়নের হার পাকিস্তানের অন্য অঞ্চলগুলোর চাইতে অবিশ্বাস্যরকম বেশি ছিলো। এই ২৪ বছরে তাই আপনি একটি আন্দোলনও দেখাতে পারবেন না যেখানে বৈষম্যের জন্য আন্দোলন হয়েছে। আন্দোলন যা হয়েছে সব ছিলো রাজনৈতিক আন্দোলন। জাতিগত আন্দোলন হয়েছে শুধু একটা আর সেটা হলো ভাষা আন্দোলন। কিন্তু মজার বিষয় হলো পূর্ব বাংলার বেশিরভাগ জনগণ ভাষা আন্দোলনের বিরোধী ছিলেন।
পাকিস্তান আমলের কিছু উল্লেখযোগ্য প্রতিষ্ঠান ও অবকাঠামো
০১. বাংলাদেশ সচিবালয় (১৯৭১ সনের পর এ সচিবালয়ের পুরাতন ৬ নং ভবনটি ভেঙে ২০ তলা ভবন তৈরী করা হয়)
০২. পাকিস্তানের Second capital হিসাব শেরেবাংলা নগরকে পরিকল্পিতভাবে তৈরী (যার সুবিধা আমরা এখন নিচ্ছি)
০৩. সংসদ ভবন (পাকিস্তানের গণপরিষদের জন্য তৈরি বিশাল কমপ্লেক্স)
০৪. বায়তুল মোকাররম মসজিদ (পাকিস্তানের জন্য আইকনিক ও সবচেয়ে বড় মসজিদ)
০৫. বাংলা একাডেমি (বাংলা ভাষা সংরক্ষণ ও উন্নয়নের জন্য)
০৬. ইসলামিক একাডেমি (বর্তমান ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
০৭. পানি ও বিদ্যুৎ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (ওয়াপদা)
১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসকরা চলে যাবার সময় ঢাকায় কোনো বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ছিল না। অথচ ভারতের প্রায় সব শহরেই তখন কেন্দ্রীয়ভাবে বিদ্যুৎ সাপ্লাইয়ের ব্যবস্থা ছিল। ঢাকার নবাব পরিবারের জন্য তাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় দুটি জেনারেটরের ব্যবস্থা ছিল। ১৯৪৮ সালে বিদ্যুৎ সরবরাহের পরিস্থিতির পরিকল্পনা ও উন্নয়নের জন্য বিদ্যুৎ অধিদপ্তর তৈরি করা হয়। ১৯৫৯ সালে পানি ও বিদ্যুৎ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (ওয়াপদা) তৈরি করা হয়। ১৯৬০ সালে উচ্চতর ক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি করা হয় সিদ্ধিরগঞ্জ, চট্টগ্রাম ও খুলনায় (সর্বোচ্চ উচ্চক্ষমতার কেন্দ্রের আকার ছিল সিদ্ধিরগঞ্জে ১০ মেগাওয়াটের স্টিম টারবাইন)। তাদের অব্যাহত প্রচেষ্টায় ১৯৬০ সাল থেকে ১৯৭০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের তথা তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের বিদ্যুতের উৎপাদন ক্ষমতা গিয়ে দাঁড়ায় ০ মেগাওয়াট থেকে ৪৭৫ মেগাওয়াট। যার অধিকাংশই উৎপাদিত হত প্রাকৃতিক গ্যাস ও তেল চালিত জেনারেটর দ্বারা, স্টিম টারবাইন জেনারেটর দ্বারা এবং জল বিদ্যুৎ থেকে।
০৮. কমলাপুর রেল ষ্টেশন (পূর্বতন রেল ষ্টেশনটি ছিল গুলিস্তান-ফুলবাড়িয়ায়)
০৯. মিরপুর চিড়িয়াখানা (পূর্বতন চিড়িয়াখানায় বর্তমানে জাতীয় ঈদগাহ, সুপ্রীম কোর্টের প্রবেশদ্বারসহ প্রাঙ্গণ, বার কাউন্সিল, সড়ক ভবন নির্মিত হয়েছে)
১০. কুর্মিটোলা বিমানবন্দর (ঢাকার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর)
১১. যমুনা সেতু (১৯৬৬ সনে একনেকে অনুমোদিত)
১২. রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র (১৯৬১ সনে এটির পরিকল্পনা গ্রহণ করে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের অনেক কর্মকর্তাকে বিদেশে প্রশিক্ষণে প্রেরণ করা হয়, যারা বর্তমানে ইরান-ইরাকে কর্মরত। ১৯৭২ সনে প্রকল্পটি শেখ মুজিব বন্ধ করে দেয়া হয়)
১৩. জাহাঙ্গীরনগর মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়
১৪. বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ
১৫. শেরে বাংলা কৃষি কলেজ (এখন কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়)
১৬. চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
১৭. রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
১৮. ইস্ট পাকিস্তান হেলিকপ্টার সার্ভিস (বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, চট্টগ্রাম, খুলনা, মংলা, কুষ্টিয়া, বরিশাল, চাঁদপুর, সন্দ্বীপ, হাতিয়া, ফরিদপুর এই স্থানগুলোর সাথে ঢাকার যোগাযোগ দ্রুত করতেই এই সার্ভিসের আয়োজন করে পাকিস্তান। এই সার্ভিস সরকারি ভর্তুকি দিয়ে পরিচালনা করা হতো। অথচ এরকম সার্ভিস পশ্চিম পাকিস্তানে ছিল না )
১৯. শাহজীবাজার বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র
২০. আশুগঞ্জ বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র
২১. কর্ণফুলী বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র
২২. হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল
২৩. গঙ্গা-কপোতাক্ষ প্রকল্প
২৪. রামপুরা টেলিভিশন ভবন (পাকিস্তানের টেলিভিশন সেন্টার লাহোরে ও ঢাকায় একইসাথে স্থাপন করা হয়। লাহোরে সম্প্রচার শুরু হওয়ার একমাস পরে ঢাকায় সম্প্রচার শুরু হয়)
২৫. ঢাকা স্টেডিয়াম (বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম)
২৬. জাতীয় যাদুঘর (পূর্বতন যাদুঘরটি বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আবাসিক ভবন হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে)
২৭. WAPDA এবং এর অধীন শতশত বাধ ও সেচ প্রকল্প
২৮. ঢাকা ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্ট (যা বর্তমানে রাজউক নামে পরিচিত। ঢাকাকে আধুনিক ও পরিকল্পিত নগর করার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো। ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, মিরপুর, গুলশান, বনানী প্রভৃতি পরিকল্পিত আবাসিক এলাকা গঠন ও নগরায়ন। ঢাকা রক্ষা বাঁধসহ বহু উন্নয়ন পরিকল্পনা নেয়া ও বাস্তবায়ন করা হয়)
২৯. শত শত পাট ও কাপড়ের কল যা বাংলাদেশ হওয়ার পর জাতীয়করণের মাধ্যমে ধ্বংস করা হয়
৩০. শিল্পায়নের জন্যে গড়ে তোলা হয় East Pakistan Industrial Development Corporation (EPIDC)
৩১. গাজীপুর সমরাস্ত্র কারখানা (Ordinance Factory)
৩২. গাজীপুর মেশিন টুলস ফেক্টরি
৩৩.The Mercantile Marine Academy পরবর্তীত নাম Bangladesh Marine Academy
৩৪. Institute of Postgraduate Medicine and Research (পিজি হাসপাতাল ও বিশ্ববিদ্যালয়)
৩৫. মংলা সামুদ্রিক বন্দর
৩৬. ঢাকার নিউ মার্কেটসহ বিভাগীয় শহরে এক একটি নিউ মার্কেট তৈরী।
৩৭. রাজশাহী, চট্টগ্রাম, খুলনা, রংপুর, সিলেট বেতার কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা
৩৮. পূর্ব পাকিস্তান অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (নৌ-পথে যাত্রী ও মালামাল পারাপারের জন্য এটি তৈরি করা হয়, বর্তমান নাম বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ। অব্যাহত দুর্নীতির ফলে স্বাধীনতার পর থেকে আজ পর্যন্ত এই প্রতিষ্ঠান লাভের মুখ দেখে নি। অথচ পাকিস্তান আমলে তা লাভজনক প্রতিষ্ঠান ছিল)
৩৯. আণবিক শক্তি কেন্দ্র, ঢাকা (যা এখন পরমাণু শক্তি কেন্দ্র নামে পরিচিত। এই প্রতিষ্ঠানের জন্যই দক্ষিন এশিয়ার সর্বপ্রথম কম্পিউটার ঢাকায় স্থাপন করা হয়)
৪০. জুট রিচার্স ইনস্টিটিউট (বর্তমানে পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট নামে পরিচিত)
তারপরও মিথ্যা ইতিহাস রচনা করে এ অঞ্চলের মানুষের মনে বদ্ধমূল ধারণা সৃষ্টি করা হয় যে, পশ্চিম পাকিস্তানীরা এ অঞ্চলের মানুষকে কেবল শাসন-শোষন করছে, উন্নয়নমূলক কোন কাজ করেনি। এছাড়া সকল ক্ষেত্রের উন্নয়নের পরিকল্পনাকে অপব্যাখ্যার মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে উত্তেজিত করা হয়। তথাকথিত মুক্তিযুদ্ধের জন্য ১৯৭১ সালের পরে যে তত্ত্বকথা ও যুক্তি দাঁড় করানো হয়েছিল তা ছিল দু’অঞ্চলের বিভিন্ন ক্ষেত্রের দৃশ্যমান বৈষম্য ও বিভিন্নতা। পূর্ব পাকিস্তানকে দেখানো হয় পশ্চিম পাকিস্তানী জনগোষ্ঠীর শোষণের ক্ষেত্র হিসেবে।
আমরা যে পরিসংখ্যানগুলো জানি, তা মূলত ষাট-এর দশকের শেষ দিকে প্রাপ্ত কিছু সংখ্যা ও সংখ্যাতত্ত্ব। এর মধ্যে উদাহরণ স্বরূপ বলা যায় পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের তথা কেন্দ্রীয় সুপিরিয়ার সার্ভিস (সিএসএস) ও পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে পূর্ব পাকিস্তানের প্রতিনিধিত্ব তুলনামূলকভাবে কম থাকা। উপস্থাপিত পরিসংখ্যানে এটাও দেখানো হয় যে, পশ্চিম পাকিস্তানের তুলনায় উন্নয়ন খাতে পূর্ব পাকিস্তানের জন্য কম অর্থ বরাদ্দ করা। যদিও উপস্থাপিত ঐ পরিসংখ্যান অসত্য ছিলনা; কিন্তু জনগণের সামনে যে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ এবং প্রচারণা সেই পরিসংখ্যান নিয়ে চালানো হয়েছে, তা মোটেই সত্যি ও বাস্তব নির্ভর ছিল না। ঐসব পরিসংখ্যানকেন্দ্রিক ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ ও প্রচারণা সর্বোতভাবে সত্যি ছিল না; হয়তো কিয়দাংশ ছিল ব্যতিক্রম এবং তাও ছিল অর্ধসত্য।
পুরো পরিসংখ্যান সহজ হয়ে যাবে যদি আপনি কয়েকটি বিষয় বিবেচনা করেন। তখন আপনার দিব্যচোখে যে বৈষম্য দেখছেন তা বৈষম্য থাকবে না। অনেকক্ষেত্রে উদারতা মনে হবে।
প্রথমত,
তৎকালীন পাকিস্তানে প্রদেশ ছিল পাঁচটি। বরাদ্দ হয়েছে প্রদেশভিত্তিক। প্রদেশভিত্তিক উন্নয়ন বরাদ্দ যদি আপনি ধরেন তাহলে আপনি আপনি মোট বরাদ্দকৃত অর্থকে পাঁচটি ভাগে ভাগ করুন। তাহলে দেখা যাবে বেশী বরাদ্দ ছিল পূর্ব পাকিস্তান বা বাংলাদেশের জন্য।
টেবিলঃ পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তান নিয়ে অর্থনৈতিক সমীক্ষা
এখানে আমি বলতে চাই না বাংলাদেশের প্রতি পক্ষপাতিত্ব করা হয়েছে। সাধারণত বরাদ্দ দেয়া হয় প্রয়োজন অনুসারে। পাকিস্তানের এই অংশ আকারে ছোট হলেও এর এখানে মানুষ ছিল বেশী। পাকিস্তানের একটি প্রদেশ বাংলাদেশে ছিল অধিকাংশ মানুষ। সেই হিসেবে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল। এখানে বরাদ্দ কিছুটা বেশী লাগবে এটাই স্বাভাবিক।
বরাদ্দের ক্ষেত্রে সমান হতে হবে এই ধারণা অবান্তর। বাংলাদেশের প্রতিটা জেলায় কি সমান বরাদ্দ হয়? বাংলাদেশের প্রতিটা বিভাগে কি সমান বরাদ্দ হয়? আবার কিছু কিছু বরাদ্দ আছে দূর্যোগকালীন। দূর্যোগ হলে বরাদ্দ হয়, খরচ হয়। আবার দূর্যোগ না হলে খরচ হয় না। এভাবেই চলে। এই নিয়ে প্রতিবেদন দাঁড় করানো অন্যায়, অযৌক্তিক।
দ্বিতিয়ত
যে কোন দেশের উন্নয়ন হয় রাজধানী কেন্দ্রীক। একটা পরিসংখ্যান দাঁড় করানো হয় পাট, পাটজাতীয় দ্রব্য ও অন্যান্য খাদ্যশস্য বেশী উৎপন্ন হয় বাংলাদেশে। কিন্তু উন্নয়ন বেশী হয়েছে পশ্চিম পাকিস্তানে। মূল কথা হল সারা পশ্চিম পাকিস্তানজুড়ে উন্নয়ন বেশী হয় নি। উন্নয়ন হয়েছে রাজধানী কেন্দ্রীক। এটা খুবই স্বাভাবিক। এটাকে আপনি যদি বৈষম্য বলেন তাহলে বলতে হয় বর্তমান বাংলাদেশে এর চাইতেও বেশী বৈষম্য হচ্ছে। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় যে কোন উৎপাদনের দিক দিয়ে (কাঁচামাল ও শিল্পজাত) সবচেয়ে পেছনে থাকার কথা। কিন্তু বাংলাদেশের সব উন্নয়ন হয়েছে ঢাকা কেন্দ্রীক।
কেউ যদি বলে আমাদের প্রধান ফসল ধান সবচেয়ে বেশী উৎপাদন হয় দিনাজপুরে। তাই ঢাকার মত সকল উন্নয়ন দিনাজপুরেও করতে হবে। বড় বড় হোটেল করতে হবে। পিকনিক স্পট করতে হবে। ফ্লাইওভার করতে হবে। ঢাকার মত সমান করে উন্নয়ন বরাদ্দ দিতে হবে তাহলে এটাকে আপনি পাগলের প্রলাপ বলবেন নিশ্চয়ই। এটাকে যদি পাগলের প্রলাপ বলেন তবে কেন আপনি চান পশ্চিম পাকিস্তান ও পূর্ব পাকিস্তানে সমান বরাদ্দ দিতে হবে?
বাংলাদেশে সবচেয়ে সফল শিল্প ‘তৈরি পোশাক শিল্প’। এতে মানুষের কর্মসংস্থানও হয় অনেক বেশি। ২০১২ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী গার্মেন্টস কারখানা ঢাকা বিভাগে যখন ছিল ১৫ হাজারের বেশি, তখন চট্টগ্রাম বিভাগে মাত্র এক হাজার আর রংপুর বিভাগে মাত্র তিনটি। এখন এই পরিসংখ্যান অনুযায়ী কেউ যদি বলে ঢাকা বিভাগ অন্যান্য বিভাগের সাথে বৈষম্য করেছে তা রীতিমত হাস্যকর। কারণ বাংলাদেশের যেখানে এই শিল্প কারখানা স্থাপন করা লাভজনক সেখানেই প্রতিষ্ঠা হয়েছে।
বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গে নগরায়ন অনেক কম হয়েছে দক্ষিণাঞ্চলের তুলনায়। ব্যবসা বাণিজ্যসহ সবদিক দিয়ে জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন হয়েছে ঢাকা থেকে শুরু করে চট্টগ্রামে। এর নানান কারণ রয়েছে। শিক্ষিতের হার, নদী বন্দর, সমুদ্র বন্দর, ব্যবসা বাণিজ্য জন্য আগে থেকেই বিখ্যাত, যোগাযোগের সুবিধা, জলবায়ু ইত্যাদি অনেক কিছুই অবদান রেখেছে। এই ব্যাপারটিকে সামনে এনে কেউ যদি বলে উত্তরবঙ্গের সাথে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়েছে তবে তা ভুল হবে।
তৃতীয়ত
অনেকে বলে থাকেন এদেশে বেশী মানুষের বাস ছিল। এদেশে পশ্চিম পাকিস্তানের চাইতেও বেশি বরাদ্দের প্রয়োজন ছিল। এটা নিরঙ্কুশ নয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এমন প্রয়োজন হতে পারে। তবে অবকাঠামোগত উন্নয়ন, রাস্তা-ঘাট ইত্যাদি ক্ষেত্রে বরাদ্দ আসলে জনসংখ্যার উপরে নির্ভর করে না। বরাদ্দ নির্ভর করে প্রয়োজনের উপরে। ধরুন ঢাকা- চট্টগ্রামের রাস্তা সংস্কার করতে হবে। সেক্ষেত্রে খরচ নির্ভর করবে না এ পথ দিয়ে কত মানুষ যাতায়াত করবে বরং নির্ভর করবে এর দূরত্ব কত? পশ্চিম পাকিস্তান পূর্ব পাকিস্তানের চাইতে সাতগুণ বড়। সেক্ষেত্রে যোগাযোগ ব্যবস্থায় সেখানে খরচ বেশি হবে এটা স্বাভাবিক। এভাবে শুধু যোগাযোগ নয় অবকাঠামোসহ প্রায় সকল উন্নয়ন বরাদ্দের জন্য জনসংখ্যা মূল ফ্যাক্টর নয়।
চতুর্থত
আরেক সমস্যা হল আমরা মনে করে নিয়েছি পাকিস্তান সৃষ্টির সময় পূর্ব ও পশ্চিমের জীবনযাত্রা অবকাঠামো সমান ছিল। কিন্তু ১৯৪৭ সনে পাকিস্তান হবার সময় পূর্ব পাকিস্তান যা ব্রিটিশ আমলে পূর্ব বাংলা নামে পরিচিত ছিল এবং যা তদানীন্তন ভারতের যে কোন অঞ্চলের চাইতে ছিল পশ্চাদপদ। পূর্ব পাকিস্তানের নতুন রাজধানী ঢাকার সাথে পশ্চিম পাকিস্তানের করাচী, লাহোর ও অন্যান্য শহরের একটি তুলনা করতে গিয়ে এক সময়ের পূর্ব বাংলা সম্পর্কে অভিজ্ঞ সাংবাদিক লেখক এইচ.এম আব্বাসী লিখেন: ‘ঢাকা যখন রাজধানীতে পরিণত হয় তখন সেখানে মুসলমান কিংবা হিন্দু মালিকানায় একটি সংবাদপত্রও প্রকাশিত হতো না। মাত্র ৫ ওয়াটের একটি রেডিও ষ্টেশন ছিল এবং বেশ কয়েক বছর সময় লাগে সেখান থেকে বাংলা দৈনিক আজাদ ও ইংরেজী দৈনিক মনিং নিউজ প্রকাশনা শুরু হতে। আমার একটা বড় দায়িত্ব ছিল পত্রিকার ছবি ব্লক করে করাচী থেকে বিমান যোগে তা ঢাকায় প্রেরণ করা যা নতুন ইংরেজী দৈনিক অবজারভার-এ প্রকাশিত হতো অর্থাৎ ঢাকায় ব্লক বানানোর কোন মেশিনও ছিল না।
তারপরেও পূর্ব পাকিস্তানের ঘুরে দাঁড়াতে সময় লাগেনি, এটা অবিশ্বাস্যকর। এটার একটা বড় কারণ হতে পারে পাকিস্তান শাসকরা এই প্রদেশটিকে প্রয়োজনীয় গুরুত্ব দিয়ে দ্রুত উন্নয়নের দিকে নিয়ে গিয়েছিল। পূর্ব পাকিস্তান তার জীবন শুরু করে বলা যায় সম্পূর্ণ শূন্য থেকে, অর্থনৈতিক ও শিল্পক্ষেত্রে প্রদেশটির কোনই অবকাঠামো ছিল না। অন্যদিকে পশ্চিম পাকিস্তান ছিল মোটামোটি শিল্পসমৃদ্ধ এবং ছিল সম্ভাবনাময় অর্থনৈতিক অবকাঠামো। অর্থাৎ সর্বক্ষেত্রে সর্ব বিবেচনায় পশ্চিম পাকিস্তান ছিল পূর্ব পাকিস্তানের তুলনায় অনেক অগ্রসর।’
১৯৪৭ সালের বাস্তব চিত্র হল পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের উভয় অংশের জনগনই ছিল গরীব। বৃটিশ যুগের পূর্ব বাংলায় বসতি স্থাপনকারীদের জীবনের মান ছিল অতি নিচে। এর সুস্পষ্ট কারণ ছিল পূর্ব বাংলা বৃটিশদের কলোনী হিসেবে শোষিত ও নিগৃহীত হয়েছে ১৯০ বছর তথা ১৭৫৭ থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত। পক্ষান্তরে পশ্চিম পাকিস্তান অঞ্চলে বৃটিশদের কলোনী ও শোষণের সময়কাল ছিল ৯০ বছর। প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধের পর ১৮৫৮ সালে বৃটিশ রাণী ভিক্টোরিয়া পুরো ভারতের কর্তৃত্ব গ্রহণের পর থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত। এটা মোটেই অবিশ্বাস্য নয় যে, বৃটিশদের শাসনামলে পূর্ব বাংলা অর্থনৈতিকভাবে পশ্চিম পাকিস্তান থেকে অনেক বেশী শোষিত ও নিগৃহীত হয়েছিল। বিদেশী শাসন-শোষণ ছাড়াও পূর্ব বাংলার জনসাধারণ তাদের স্বদেশীদের দ্বারাও বৃটিশ শোষণ থেকে কম নির্যাতিত ও শোষিত হয়নি। জনসংখ্যার অধিকাংশ মুসলমান হওয়া সত্ত্বেও ভূমির প্রায় নিরঙ্কুশ মালিকানা ছিল উচ্চবর্ণের হিন্দুদের। ১৯৪৭ সাল নাগাদ তারা ৮০ শতাংশ ভূমির মালিক ছিল।
পঞ্চমত
কথিত বৈষম্যের প্রমাণ হিসেবে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে পূর্ব পাকিস্তানীদের কম প্রতিনিধিত্বের অভিযোগ একটি জনপ্রিয় শ্লোগান। ১৯৭০ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ৩ লক্ষ সদস্যের মধ্যে পূর্ব পাকিস্তানীদের সংখ্যা ছিল ৪০ হাজার। অথচ সংখ্যায় বাঙালি ছিল বেশি। এই সংখ্যা দেশের দুই অংশের মধ্যে বৈষম্য চিত্রিত করে। কিন্তু বিশ্বাসযোগ্য ও বাস্তবানুগভাবে বিষয়টির মূল্যায়ন করতে হলে কেহই ১৯৪৭ সালে সেনাবাহিনীতে বাংলাভাষী মুসলমান সৈনিকদের সংখ্যা কত ছিল এই হিসাবের দিকে অবশ্যই দৃষ্টিপাত করবে। পাকিস্তানের শুরুতে ফেডারেল সেনাবাহিনীতে বাংলাভাষী মুসলমান সৈনিকের সংখ্যা ছিল শ’কয়েক বা কোন অবস্থাতেই এক হাজারের বেশী নয়।
সেনাবাহিনীতে বাংলাভাষীদের সংখ্যা অতি নগণ্য হওয়ার ঐতিহাসিক কার্যকরণ রয়েছে। বৃটিশ আমলে বাংলাভাষী মুসলমানদেরকে সেনাবাহিনীতে নেয়া হতোনা। আবার বাঙালি মুসলমানরাও বৃটিশ সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে খুব একটা যেতোনা। মূল কারণ হল প্রাকৃতিক কারণে নাতিশীতোষ্ণমন্ডলের মানুষগণ যোদ্ধা হয় না। সাধারণত যোদ্ধা হয় রুক্ষ অঞ্চলের মানুষগণ। সেই হিসেবে পশ্চিম পাকিস্তানের বেশিরভাগ অঞ্চলের মানুষ ঐতিহাসিকভাবে যোদ্ধা জাতি। আগে থেকেই সেনাবাহিনীতে তাদের উপস্থিতি ছিল বেশি।
সেনাবাহিনীতে বাঙালিদের এমন দূরাবস্থার ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটের কারণে পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা কায়েদে আযম মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ১৯৪৮ সালের মার্চ মাসে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাঙালি তথা বাংলাভাষী পূর্ব পাকিস্তানীদের পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগদান করে সেনা সার্ভিসে তাদের যোগ্যতা প্রমাণের জন্য অনুরোধ জানান। পাকিস্তানের ২৩ বছরে এক হাজার বাঙালি থেকে সেনাবাহিনীতে পূর্ব পাকিস্তানীদের সংখ্যা দাঁড়ায় ৪০ হাজার-এ, যার বৃদ্ধি সূচক হচ্ছে চার হাজার শতাংশ। এই তুলনায় সেনাবাহিনীতে পশ্চিম পাকিস্তানের চারটি প্রদেশের প্রতিনিধিত্ব বৃদ্ধির হার ছিল অনেক কম। ঐ সময়ে ৫০ হাজার পশ্চিম পাকিস্তানী সেনা সদস্য বৃদ্ধি পেয়ে ১৯৭১ সনে দাঁড়ায় ২,৬০,০০০ যার বৃদ্ধিসূচক হচ্ছে ১২০০ শতাংশ। অর্থাৎ তুলনামূলক বিবেচনায় সেনাবাহিনীতে অন্যান্য প্রদেশের তুলনায় পূর্ব পাকিস্তানের সংখ্যা বৃদ্ধির পরিমাণ ছিল ২৮০০ শতাংশ বেশী।
১৯৪৮ সালের হিসাব মতে সেনাবাহিনীতে চাকরীর জন্যে পশ্চিম পাকিস্তানী প্রার্থী ছিল ২৭০৮ জন; আর পূর্ব পাকিস্তানের আবেদনকারী প্রার্থী ছিল মাত্র ৮৭ জন; অর্থাৎ পশ্চিম পাকিস্তানী প্রার্থী ছিল ৩০০ ভাগ বেশী। ১৯৫১ সালে সেনাবাহিনীতে চাকুরী প্রার্থী পূর্ব পাকিস্তানীদের সংখ্যা ছিল ১৩৪ আর পশ্চিম পাকিস্তানের সংখ্যা ছিল ১০০৮ জন। ১৯৫৪ সালের পূর্ব পাকিস্তানীদের সংখ্যা একটু বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ১৬৫ জনে। কিন্তু তুলনামূলকভাবে পশ্চিম পাকিস্তানীদের সংখ্যা ছিল ২০০ গুণ বেশী অর্থাৎ ৩২০৪ জন। আবেদনপত্র দাখিল কিংবা সেনাবাহিনীতে ভর্তি করার ক্ষেত্রে কোন বৈষম্য কিংবা ডিসক্রিমিনেশান থাকার গালগল্প হয়তো কেউ দাঁড় করাবেন, যা কিছুতেই প্রমাণযোগ্য নয়।
এটা অবশ্যই সবার জানার কথা যে সেনাবাহিনী গড়ে তুলতে দরকার কঠোর ও অব্যাহত প্রশিক্ষণ যা দিন কয়েক এবং মাস কয়েকের ব্যাপার নয়। পৃথিবীর কোন দেশের পক্ষেই জেনারেল এর চাইতে অনেক নিচের একজন সেনা অফিসারকেও ২৫ বছরের কমে তৈরী করা সম্ভব নয়। ১৯৫০ এর দশকের শেষের দিকে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে পূর্ব পাকিস্তানের দুই জন অফিসারের নাম উল্লেখ করার মত হয়ে উঠে এর একজন ছিলেন কর্ণেল ওসমানী এবং আর একজন ছিলেন মেজর গনি। অথচ ঐ সময়ের মধ্যে পাঞ্জাব ও পাঠানদের মধ্য থেকে বহু সৈনিক জেনারেল পদে পর্যন্ত উন্নীত হয়। পূর্ব পাকিস্তানের জিওসি পদে কর্মরত থাকাকালে আইয়ুব খান ১৯৫৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রী অর্জনেচ্ছু ছাত্রদের এক সমাবেশে তাদেরকে সেনাবাহিনীতে ভর্তি হবার আহবান জানান। কিন্তু তাদের নিকট থেকে তেমন উৎসাহব্যাঞ্জক সাড়া পাওয়া যায়নি। এর পরের দুই বছরের পরিসংখ্যানে তা স্পষ্ট। ১৯৫৬ সালে সেনাবাহিনীর অফিসার পদে আবেদনকৃতদের মধ্যে পূর্ব পাকিস্তান থেকে ছিল মাত্র ২২ জন; অথচ পশ্চিম পাকিস্তান থেকে ছিল ১১০ জন। ১৯৫৭ সনে পূর্ব পাকিস্তান থেকে আবেদন করার সংখ্যা ৮০ শতাংশ উন্নীত হয়ে দাঁড়ায় ৩৯ জনে, অথচ পশ্চিম পাকিস্তান থেকে আবেদনকারীদের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১১০ থেকে ২৯৪-তে।
ষষ্ঠত
সরকারি চাকুরি তথা কেন্দ্রীয় সিভিল সার্ভিসে পূর্ব পাকিস্তানের প্রতিনিধিত্ব ছিল পশ্চিম পাকিস্তানের বিভিন্ন প্রদেশ-এর সম্মিলিত প্রতিনিধিত্বের চাইতে অনেক কম। এর পাশাপাশি আর একটি বাস্তবতা ছিল পাঞ্জাবী নয়, পশ্চিম পাকিস্তানীদের এমন প্রতিনিধিত্বের সংখ্যাও ছিল তুলনামূলকভাবে অনেক কম। এটা ঐতিহাসিক বাস্তবতা তথা বাঙালি, সিন্ধী, পাঠান ও বেলুচীদের ঐতিহাসিক অনগ্রসরতারই ফল। পাঞ্জাবে বসতি গড়া ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের মুসলিম মুহাজিররা ছিল পূর্ব বাংলা, সিন্ধু, বেলুচিস্তান ও উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশের জনগোষ্ঠীর চাইতে পড়ালেখায় অনেক অগ্রসর। শিক্ষা-দীক্ষায় শেষোক্ত জনগোষ্ঠীর তুলনামূলক অনগ্রসতার কারণ ছিল অর্থনৈতিক এবং কিছুটা সামাজিক। বস্তুতঃ পূর্ব বাংলা, সিন্ধু, বেলুচিস্তান ও সীমান্ত প্রদেশের মুসলমানরা উচ্চ শিক্ষায় প্রবেশ করে বিংশ শতাব্দীর প্রথমভাগে। কিন্তু পাঞ্জাব ও অন্যান্য অঞ্চলের জনগণ আধুনিক উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ শুরু করে ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহের বলা যায় পর পরই।
অর্থাৎ তারা পাকিস্তানের অপরাপর অঞ্চলের মুসলমানদের চাইতে শিক্ষা-দীক্ষায় ছিল ৭০ থেকে ৮০ বছরের অগ্রে। এর প্রধান কারণ ছিল উনবিংশ শতাব্দীর ৭০ এর দশকে স্যার সৈয়দ আহমেদেরর নেতৃত্বে আলীগড়ে প্রতিষ্ঠিত এঙ্গলো মহামেডান কলেজ ভারতের বধিষ্ণু অঞ্চলের মুসলমানদেরকে উচ্চ শিক্ষায় আকৃষ্ট করে তোলে। পাশাপাশি লাহোর সরকারী কলেজ এবং পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বহু আগে। ১৮৫৭ সালে স্থাপিত কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ছিল ভারতীয় উপমহাদেশের প্রাচীনতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, যেগুলোতে মুসলমান ছাত্রের সংখ্যা ছিল অনুল্লেখ্য; এমনকি ১৯২১ সালে প্রতিষ্ঠিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রধানত মুসলিম শিক্ষার্থীদের জন্যে প্রতিষ্ঠার কথা বলা হলেও মুসলিম ছাত্র ও শিক্ষকের সংখ্যা ছিল হাতেগোনা কয়েকজন। হিন্দু ছাত্র ও শিক্ষকরা ছিল নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ। এই অবস্থার পরিবর্তন ঘটে কেবল ১৯৪৭ সালের পর, যখন পূর্ব বাংলার মুসলমানরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি ও শিক্ষকতার ফুরসত পায়। সত্যিকার অর্থে শিক্ষা-দীক্ষায় বাংলার মুসলমানদের অনগ্রসরতার কারণেই বৃটিশ যুগের ভারতীয় সিভিল সার্ভিস তথা আইসিএস-এ কোন বাঙালি মুসলমানের ঢোকার যোগ্যতা ছিলনা; যদিও উক্ত সার্ভিস ১৮৫৩ সালের অধ্যাদেশ বলে ১৮৫৪ সালে প্রবর্তিত হয়েছিল। ফলে ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর পাকিস্তানের প্রশাসন পায় মাত্র ১০০ জন প্রাক্তন আইসিএস অফিসার আর ভারত পায় ৫০০ জন। প্রাপ্ত ১০০ জনের মধ্যে একজনও বাঙালি কিংবা পাকিস্তানের অন্যান্য অনগ্রসর এলাকার ছিল না।
ঐ ১০০ জনের মধ্যে কেউ কেউ ছিল বৃটিশ বংশোদ্ভুত মুসলমান, কেউ ছিল শিক্ষায় অগ্রসর ভারতের অপরাপর এলাকার মুসলিম জনগোষ্ঠীভূক্ত। সঙ্গত কারণেই তারা ছিল পাঞ্জাব বা ইউপি’র মুসলমান। পাঞ্জাব ও ইউপি’র মুসলমানদের অগ্রসরতা আর পূর্ব বাংলার মুসলমানদের অনগ্রসরতার আরো প্রমাণ আছে। ১৮৮৬ সালের এক পরিসংখ্যানে দেখা যায় আইসিএস অফিসারদের মধ্যে পাঞ্জাবের ছিল তিন জন মুসলমান, শিখ ছিল দুই জন এবং হিন্দু ছিলনা একজনও; এমনকি মুসলমান সংখ্যালঘিষ্ঠ এলাকা অযোধ্যার ৫ জন মুসলমান ছিল আইসিএস আর তার বিপরীতে ছিল ছয় জন হিন্দু। অথচ বাংলা মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চল হওয়া সত্ত্বেও মাত্র দুই জন মুসলমান ছিল আইসিএস, আর ৯ জন ছিল হিন্দু।
১৯৪৭ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর এক সময় আইসিএস সার্ভিসে শুধু মনোনীত একজন বাঙালি মুসলমান জনাব নুরুন্নবী চৌধুরীকে পাওয়া যায়। ফলে পাক প্রশাসনে উদ্ভূত বিশাল শুন্যতা পশ্চিম পাকিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চলের অফিসারদেরকে দিয়ে পুরণ করতে হয়েছে। তবে প্রতিযোগিতা নয় ১৯৪৯-৫০ সালে প্রবর্তিত ৪০ শতাংশ কোটার ভিত্তিতে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সার্ভিসের পূর্ব পাকিস্তানীদের স্থান লাভ শুরু হয়। সেনাবাহিনীতেও একইভাবে পাকিস্তানের অপরাপর অঞ্চলের চাইতে পূর্ব পাকিস্তানীদের সংখ্যা বাড়তে থাকে। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় প্রশাসনিক সার্ভিসে নিয়োগ দেয়ার জন্য পূর্ব পাকিস্তান থেকে কাকেও পাওয়া যায়নি; অথচ পশ্চিম পাকিস্তান থেকে আট জনকে পাওয়া যায়।
১৯৪৮ সালে পূর্ব পাকিস্তান থেকে পাওয়া যায় দুই জনকে, একজন ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাজুয়েট আর পশ্চিম পাকিস্তান থেকে পাওয়া যায় ১৬ জনকে (যার মধ্যে ৭ জন ছিল পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাজুয়েট এবং ১০ জন ছিল ভারতের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের। ১৬ বছরের ব্যবধানে ১৯৬৪ সালে সিএসএস-এ পূর্ব পাকিস্তানীদের সংখ্যা দাঁড়ায় ১৯ জন (১৫ জন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের) আর পশ্চিম পাকিস্তানের সংখ্যা দাঁড়ায় ২০ জন (১৩ জন পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ের)। অর্থাৎ কেন্দ্রীয় সার্ভিসে পূর্ব পাকিস্তানীদের সংখ্যা বৃদ্ধি ছিল পশ্চিম পাকিস্তানীদের তুলনায় ১০ গুণ।
পূর্ব পাকিস্তানীদের সংখ্যা বৃদ্ধি এত দ্রুত হারে ঘটেছিল যে তারা পশ্চিম পাকিস্তানীদের সামগ্রিক প্রতিনিধিত্বের প্রায় কাছাকাছি পৌঁছে যায়। যার দরুণ ১৯৭০-৭১ সালে বহু বাঙালি অফিসারই পাকিস্তান প্রশাসনের সর্বোচ্চ পর্যায়ে উপনীত হয়। পূর্ব পাকিস্তানের চীফ সেক্রেটারী ছিল সিএসএস ক্যাডারের একজন বাঙালি। যে হারে পাকিস্তান প্রশাসনে পূর্ব পাকিস্তানীদের প্রতিনিধিত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছিল তাতে এটা প্রায় নিশ্চিত করেই বলা যায় যে, আরো ১০ বা ২০ বছরের মধ্যে পূর্ব পাকিস্তানীদের প্রতিনিধিত্ব জনসংখ্যা অনুপাতে যথাযথ পর্যায়ে উপনীত হতো।
সপ্তমত
১৯৭০ সনে পূর্ব পাকিস্তানে যে প্রাথমিক স্কুল ছিল ২৮৩০০ আর পশ্চিম পাকিস্তানে ছিল ৩৯৪১৮। বলা হয় প্রাথমিক শিক্ষায় পিছিয়ে রাখার জন্যই এই বৈষম্য। পূর্ব পাকিস্তানে মানুষ বেশি স্কুলও থাকার কথা বেশি। এখানে প্রচারণা এমনভাবে চালানো হয় যাতে পূর্ব পাকিস্তানের চাইতে সাতগুন বৃহৎ পশ্চিম পাকিস্তানের বাস্তবতা অসচেতন পাঠকের নিকট চাপা থাকে। মূলত শিশুদের জন্য প্রাথমিক স্কুল শিক্ষা বিস্তারের শুরু থেকেই প্রতিটি মহল্লায় গড়ে উঠে এবং তা প্রতিষ্ঠা করা হয় প্রতিটি শিশুর পায়ে হেঁটে অতিক্রম করতে পারে এমন দূরত্বে। ফলে প্রতি ৪/৫ মাইল ব্যাসার্ধের মধ্যে প্রাইমারী স্কুল প্রতিষ্ঠা লাভ করে সন্নিহিত এলাকায় জনবসতি গড়ে উঠার পর পরই। শিক্ষাবীদদের সংজ্ঞায় যাকে বলা হয় স্কুল মেপিং; এই বাস্তবতায় সাতগুণ বড় পশ্চিম পাকিস্তানে প্রাইমারী স্কুলের সংখ্যা বেশী হবারই কথা। সেই হিসেবে বলা যায় পশ্চিম পাকিস্তানে আরো বেশি স্কুল হওয়া উচিত ছিল। উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের সংখ্যার ক্ষেত্রেও একই কথা বলা যায়।
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Historical General 05-July-2023 by east is risingPeople who migrated INTO Indian subcontinent to create India:
1. Stone Age Africans 40,000+ years
2. Neolithic Iranian farmers 7,000+ years
3. Steppe Pastoralists (Arya) 3,500+ years
4. Tibeto-Burmese, Austroasiatic 3,000+ years
5. Yavanas, Sakas, Pahalavas, Kushan, Hun, Gujar 2000 years
6. Turks, Afghans, Mongols, Arabs, Persians, Africans <1000 years
7. Europeans <500 years
This is based on archeology, history & genetic research.
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Historical Hindu 12-May-2023 by east is risingপশ্চিম বঙ্গের সর্ববৃহৎ জনগোষ্ঠী চাষী কৈবর্ত ।সংখ্যায় প্রায় 34%-37%।ইতিহাস বলছে- -বর্ণহিন্দুদের পাতা ফাঁদে পা দিয়ে,ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের কালে,খাঁটি শুদ্র থেকে এরা জলচল শূদ্রে উন্নীত হয় এবং চাষা চাষা গন্ধটাকে গা থেকে ঝেড়ে মুছে ছদ্মনাম মাহিষ্য ধারণ করে ।
স্বাধীনতা আন্দোলনের কালে মাহিষ্য সমাজের অগ্রগণ্য নেতা প্রখ্যাত ব্যারিস্টার দেশপ্রাণ বীরেন্দ্রনাথ শাসমল কলকাতার মেয়র পদে প্রায় নির্বাচিত হয়েও, বর্ণহিন্দু নেতা শরৎ বসু ও চিত্তরঞ্জন দাশের ষড়যন্ত্রের স্বীকার হন।মেদিনীপুর থেকে একটা ক্যাওট এসে কলকাতা বাসিকে শাসন করবে! তা কিছুতেই হতে দেওয়া যায় না ।ফলে পদটি সদ্য ICS ত্যাগ করে আসা সুভাষ চন্দ্র বসু প্রায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় লাভ করে ।শুদ্র হওয়ার অপরাধে বর্ণহিন্দুদের থেকে পাওয়া এই অপমানের জ্বালাটা তিনি এক ঐতিহাসিক ভুল সিদ্ধান্তের মাধ্যমে মিটিয়ে ছিলেন ।একথা পরবর্তী কালে তাঁর ডায়েরিতে অত্যন্ত মর্মবেদনার সঙ্গে তিনি তা স্বীকার করে গিয়েছেন।
তাঁর ভুল সিদ্ধান্তটা ছিল---- বাবাসাহেব ড. ভীমরাও রামজি আম্বেদকর তাঁর কাছে প্রস্তাব দিয়েছিলেন 'পিছিয়ে পড়া শুদ্র জাতি' হিসেবে তফশিলি বর্গে নাম লেখাতে ।কিন্তু কলকাতা মেয়র পদে নির্বাচিত না হওয়ার অপমানের বদলা হিসেবে তিনি দম্ভের সঙ্গে বলেছিলেন- -- আমার জাতি জেনারেল বর্গের মধ্যে থেকেই নিজেদের প্রতিভা ও যোগ্যতা দেখিয়ে দেবে, কোন রকম সংরক্ষণের আওতায় আসবে না ।
প্রতিভা ও যোগ্যতা যতই থাক ,জাতের নামে শোষণ বঞ্চনা, জাতের নামে নীচ-হীন প্রতিপন্ন করা, জাতের নামে অযোগ্য ঘোষণা করা, জাতের নামে বদনাম করা ,জাতের নামে একচেটিয়া ভোগ দখলের নির্লজ্জ ইতিহাসটা সেকালে বাবাসাহেবের মতো আর বোধ হয় কেউ ঠিক তেমন করে বুঝে উঠতে পারে নি।
তাই কংগ্রেস ও মি. গান্ধীর প্ররোচনায় " জল অচল শূদ্র " থেকে " জলচল শূদ্র" হয়ে এবং বাবাসাহেবের কথা মতো তফশিলি ভুক্ত না হয়ে তিনি যে ঐতিহাসিক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ও স্বজাতির প্রতি অবিচার করেছিলেন, সে কথা অত্যন্ত মর্মবেদনার সঙ্গে বার বার উল্লেখ করেছেন তাঁর ডায়েরি তে।লেখাগুলি পরবর্তী কালে তাঁর ছেলে বিমলানন্দ শাসমল "স্বাধীনতার ফাঁকি " গ্রন্থে লিপিবদ্ধ করেন ।
আসলে তিনি গান্ধী ও কংগ্রেস কে বিশ্বাস করেছিলেন ।গান্ধীবাদ তফশিলিদের মৃত্যু ফাঁদ বা গান্ধী যে দলিত বহুজন সমাজের ধোঁকা দিচ্ছে, এ কথা বাবাসাহেবের মতো করে বুঝতে তিনি অক্ষম ছিলেন ।
তবে জেনারেল বানিয়ে রেখে নিজেদের দল ভারি করে,পরবর্তী কালে বর্ণবাদিদের মেধার নামে স্বজন পোষণের নির্লজ্জতা ও মাহিষ্যদের প্রতি পদে পদে বঞ্চনা করার যন্ত্রণা, স্বজাতি দরদী সচেতন অবিসংবাদী নেতা হিসেবে তাঁর জীবনকে ক্ষত বিক্ষত করেছে, মোহভঙ্গ করেছে ।তিনি উপলব্ধি করতে সক্ষম হয়েছিলেন যে,মাহিষ্যদের জেনারেল বানিয়ে রেখে নিজেদের দল ভারি করাটা একটা চালাকি ছিল ।তাদের কে বঞ্চিত করে তাদের ভাগের ভাগ খেয়ে ফেলছে বর্ণহিন্দুরাই।যারা হাজার হাজার বছর ধরে পরাজিত শুদ্র বানিয়ে তাদের শিক্ষার অধিকার কেড়েছে,ধন সঞ্চয়ের অধিকার হরণ করেছে,স্বাধীন ধর্মাচরণের অধিকার পর্যন্ত দেয় নি।আজ নবরূপে তারাই আবার তাদের উপর শোষণ বঞ্চনার খাঁড়া নামিয়ে এনেছে।মর্মবেদনার যন্ত্রণায় তিনি শুধু কাতরেছেন কিন্তু জাতির জন্য করতে পারেন নি কিছুই ।
তবে পরবর্তী কালে 1990 সালে বিন্ধ্যেশ্বরী প্রসাদ মণ্ডলের তত্ত্বাবধানে গঠিত কমিশনের সুপারিশে পশ্চিমবঙ্গের পিছিয়ে পড়া জাতি হিসেবে চাষী কৈবর্তরা OBC তালিকা ভুক্ত হওয়ার সুযোগ পায় ।কিন্তু স্বজাতি চেতনার অভাবে, নিজেদের জাত লুকিয়ে চলার হীন মানসিকতার জন্য, আর এসসি এসটি মানে নীচু জাত এই মানসিকতার বশবর্তী হয়ে তাদের ঘৃণা করার অপদস্থ করার হীন মানসিকতা ঝেড়ে ফেলে তাদের সঙ্গে জোট বাঁধার মানসিকতা তৈরি না হওয়ার কারণে, একে একে ক্ষমতায় আসা দল গুলো আজও তাদের জেনারেল বানিয়ে রেখে বঞ্চিত করছে ।OBC সার্টিফিকেট দিতে চাইছে না ।তবে আশার কথা, এ ব্যাপারে মাহিষ্য বা চাষী কৈবর্তদের একাংশ সজাগ হয়েছে,OBC হওয়ার জন্য আওয়াজ তুলছে । এরা দলবদ্ধভাবে একত্রিত হলে , বর্ণহিন্দুদের গড়া দল কে ছেড়ে সংঘবদ্ধ হয়ে নিজেদের দল বানালে একক সংখ্যাগরিষ্ঠ জাতি হিসেবে আগামী দিনে চাষী কৈবর্তরাই হতে পারে পশ্চিমবঙ্গের শাসক গোষ্ঠী, ভাগ্য বিধাতা।আর মনুবাদীদের বাড়া জাত্যাভিমান ত্যাগ করে যদি এরা অন্যান্য বহুজন দলিত সম্প্রদায়ের সঙ্গে এক হতে পারে তো কথাই নেই।
জাগো! জাগো শুদ্র তথা OBC তথা চাষী কৈবর্ত তথা মাহিষ্য ।
স্বস্তি সরদার ভৌমিক
নন্দন ভৌমিক ।
Read MoreAuthor: Rudra Prasad Mandal
Historical General 08-May-2023 by east is rising৬২৯ বছর আগে ২৮শে রবি-উল-আউয়াল ৭৫৫ হিজরী মুতাবিক ২২শে এপ্রিল ১৩৫৪ ঈসায়ীর একদলার মহাযুদ্ধের বিবরণ দিতে গিয়ে জিয়া-উদ-দ্বীন বারানী তারিখ-ই-ফিরুয শাহীতে লিখেছেন 'বাঙ্গালী পদাতিক সৈন্যরা যারা বহু বছর যাবৎ নিজেদের বাংলার শ্রেষ্ঠ বীর ভাবতো ও নিজেদের বাঙ্গালীদের বাপ বলতো! তারা ইলিইয়াস বাঙ্গালীর সামনে আস্ফালন করে বেড়াতো ও তার সামনে তরবারী উচিয়ে তার জন্যে নিজেদের জীবণ দেয়ার ওয়াদা করেছিলো তারাই এখন যুদ্ধের সময় যুদ্ধ ভুলে গেলো ও মুখের মাঝে আঙুল পুরে দিলে ইসলামী যোদ্ধাদের সামনে বোকার মতো আচারণ করতে থাকলো ও নিহত হতে থাকলো'!
নিঃসন্দেহে নির্লজ্জ মিথ্যেচার! যুদ্ধের সময় যুদ্ধ ভুলে মুখে আঙুল পুরে দিলে ফিরুয শাহ্ আর বাংলা অধিকার না করে ফিরে আসতেন না।
আফীফ, ইয়াহ্ইয়া ও কনরাজের প্রশস্থিতে অবশ্য ভিন্ন সাক্ষ্য দেয়!
সত্য সেটাই যে- সেদিন একদলার মহাযুদ্ধে পদাতিক বাহিনীর প্রধান সহদেবসহ বাংলার প্রায় গোটা বাহিনীই ধ্বংস হয়ে যায়! বাঙ্গালীদের মাথার সংখ্যাই ছিলো ১ লাখ ৮০ হাজার!
অর্থাৎ বাংলার পদাতিকেরা যারা সুলতান ইলিইয়াস শাহ্'র সামনে তার জন্য জীবণ দেয়ার জন্য তরবারী উচিয়ে সংকল্প করেছিলো তারা তাদের কথা রেখেছিলো! যুদ্ধ এতোই ভয়াবহ ও রক্তক্ষয়ী হয়েছিলো যে- রণক্ষেত্র প্রায় ৩৪ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত হয়ে পরে!! বাঙ্গালীদের ২,০৯,৯৯৩ জনের প্রাণের বিনিময়ে হিন্দুস্তানী বাহিনীর হিন্দু সেনাদের ৬০,০০০ কাটা মাথা ও তুগলাক্ব বাহিনীর ২৪,০০০ কাটা মাথা রণক্ষেত্রে পরে থাকে! বাংলার ৩টে হাতীর জীবণের বিনিময়ে হিন্দুস্তানী ফাওযের গোটা হস্তী বাহিনীই নিঃচিহ্ন হয়ে যায়। মূলত একদলার মহাযুদ্ধের সেদিনের নায়ক ছিলো বাংলার হাতীগুলোই! হাতীদের বেপরওয়া আক্রমণেই হিন্দুস্তানী বাহিনী তছনছ হয়ে যায়!
স্বরণীয় সেই এপ্রিল মাসেই স্বরণ করছি সেই সব বীর সেনাদের! যারা তাদের কথা এখেছিলো!
from Sultan ILYAS SHAH Bangalah سلطان إلياس شاه بنگال Fcebook page
Author: Saikat Bhattacharya
Historical General 02-May-2023 by east is risingবর্তমান বিশ্বে সব থেকে পশ্চাৎপদ ও আদিম জীব হল গাংবাঙালী।গাংবাঙালীর বিবর্তন হল তাম্র যুগ পর্যন্ত।এরা আদিম কৃষি নির্ভর অবস্থাতেই আটকা পড়ে আছে।এর বাইরে বিবর্তন হয়নি।একটু খতিয়ে দেখা যাক।
এই প্রজাতিটি নিজের ভালোর থেকে অপরের ক্ষতি করতে বেশী উৎসাহিত থাকে।এরা পরবর্তী প্রজন্মকে ধ্বংস করে অপার আনন্দ পায়।এরা সমস্ত কিছু মাগনাতে চায়, ক্ষমতাসুদ্ধু।ইহাদের মধ্যে কোন ধনী শ্রেণী নেই, তাই মধ্যবিত্ত উলুবনে শেয়াল রাজা হয়ে বসে থাকে।এদের পরিবার ব্যাবস্থাও সুষ্ঠু নয়, না আছে কোন সুষ্ঠসামাজিক কাঠামো।এরা একদিকে চূড়ান্ত অসৎ এবং অপরদিকে ভীতু।ফলত এরা বড় স্তরের দুর্নীতি করতে পারেনা, ছোটখাটো ছিঁচকে চুড়ি করে।এরা নিজের কাছের, বিশ্বস্ত মানুষদের ঠকায় এবং বাকিদের পদলেহন করে।
এই জাতিটি জন্মগত একটি ভৃত্যজাতি এবং পুরোপুরি সামাজিক ভ্যালিডেশনের উপর বাঁচে।এদের মধ্যে চারটি প্রাণী সারাক্ষণ চিন্তায়- নেড়িকুত্তা, মধ্যবিত্ত, মেয়েছেলে ও বুড়োদামড়া।অর্থাৎ যারা অপদার্থ, পরগাছা, আনপ্রোডাক্টিভ তারাই মাগনাতে মাতব্বরি করে বেড়ায়।গাংবাঙালী চলে বিবর্তনের বিপরীত দিকে।যতদিন যায় এরা পশ্চাৎপদ হয়।
যেহেতু ইহাদের বিবর্তন হয়নি তাই ইহারা নগর সভ্যতাতে প্রবেশ করেনি।ইহাদের মধ্যে পিতৃতান্ত্রিক বিবর্তনও হয়নি।ইহারা বাণিজ্য, শিল্প, জাতি, রাষ্ট্র, সমর কিচ্ছু বোঝেনা।ইহাদের জগত হল ইহাদের পাড়াগাঁয়ের কুয়োর জগত।ইহাদের অর্থনীতি হল চাঁদাবাজি করে একশোটা পুজোপার্বণ-মোচ্ছব করে সব উড়িয়ে দেওয়া।পরের অর্থে এদের লোভ এবং জন্মগত।এরা বসেবসে ফাউতে সব পেয়ে যেতে চায়।
এরা ক্ষমতাও চায় ফাউতে।এদের রাজনীতি হল মাগনাতে চাঁদাবাজি করে মাতব্বরি করা।কোন কারণ ছাড়াই এরা মাতব্বরি করতে এবং মাথায় চড়ে বসতে চায়।আবার আসল জায়গাতে এলেই লেজ তুলে কেঁউকেউ করে পালায়।
যেহেতু ভীতু তাই বড়সড় অপরাধ করতে পারেনা, ছিঁচকেছ্যাচরামো করে কাটায়।এই কারণে গাংবাঙালী কোনদিন বিশ্বাসযোগ্য হয়না। এরা জন্মগত এক ভৃত্য জাতি।এদের মধ্যে যেই সারমেয় হতে চায়না তাদের এরা এক ঘরে করে দেয়।
গাংবাঙালীই সব থেকে বড় রাষ্ট্রচাটা হয়।ভারত রাষ্ট্র হাগলে এরা হা করে মুখ এগিয়ে দেয়।এই কারণে রাষ্ট্র যদি বলে যে নিজের অণ্ডকোষ কেটে দাও তাহলে এরা তাই করবে।অপর দিকে কোন বাঙালী যদি অর্থ, ক্ষমতা, নারী লাভ করে তাহলে আবার এরা হিংসেতে জ্বলে পুড়ে যায়।গাংবাঙালী মূলত গুজ্জু-মেরোদের তল্পিবাহক ও পতিতা হিসাবে কাজ করে।
গাংবাঙালী মেয়ে সার্বজনীন সকল জাতির জন্যে উন্মুক্ত এবং এটা নিয়ে গব্বে ফেটে পড়ে এই গোলামচন্দ্রদের।স্বজাতির তরুণ পুরুষদের ধ্বংস করে কাকোল্ড কলুর বলদে পরিণত করাও অপর সমস্ত জাতিতে নারীর জোগান দেওয়া যে শিল্পের পর্যায়ে যেতে পারেতা এদের দেখে শিখতে হবে।
বাঙালী বুমার ও জেনএক্স প্রজন্ম সমস্ত কিছু ধ্বংস করে গেছে।নিজেরা সারা জীবন শুয়ে বসে আড্ডা মেরে কাটিয়েছে এবং ঝাণ্ডা উড়িয়ে কাটিয়েছে।এই দায় তারা পরবর্তী প্রজন্মের উপর চাপিয়ে দিয়ে নিজেরা সমস্ত সুবিধা নিয়ে নিয়েছে।পরবর্তী প্রজন্মের সমস্ত প্রাপ্য খেয়ে নিয়ে তাদের দারিদ্র্য ঠেলে দিচ্ছে।
বাঙালী স্বার্থপর এবং এটা চায় যে আমি আমার স্বার্থ দেখব এবং বাকিরাও আমার স্বার্থ চলবে।গোটা দুনিয়া তাদের কথা মতন চলবে।কিন্তু নিজেদের ক্ষুদ্র স্বার্থ নিয়ে ক্যাচাল করতে করতেই গোটা জীবন অতিবাহিত করে এরা।
বাঙালী বাবামায়েরা নিজেদের পুত্র সন্তানের উপর অকথ্য অত্যাচার করে এবং সেটাকে উপাস্য হিসাবে দেখা হয়।নারী পুজারী গাংবাঙালী নারীর মলমূত্রকেও পূজা করে দেয়।একই পরিবারে কন্যা সন্তানের জন্যে এরা সিন্দুক লুঠ করেও সবকিছু অকাতরে বিলি করে দেয়, অপর দিকে পুত্রসন্তানের স্কুলছুট করিয়ে শিশুশ্রমে পাঠায়।এতে বোঝা যায় যে গাংবাঙালীর প্রবৃত্তি সরীসৃপ, কীটপতঙ্গের থেকেও নিকৃষ্ট।
এই কারণে এরা জীবনে ভালো কিছু করতে পারেনা কারণ ছোটবেলা থেকেই কলুর বলদের ঘানি টানতেটানতেই এদের জীবন অতিবাহিত হয়।বাঙালী বাবামায়েরা আজীবন সন্তানের উপর মাগনাতে মাতব্বরি করে যেতে চায় এবং এটা চায় যে সন্তানেরা তাদের জন্য নিজের জীবনের সবকিছু ত্যাগ করুক।আসলে মাগনাতে বসে সবকিছু পাবার নিম্ন প্রবৃত্তিই এটার কারণ।
এরা মূলত সময়কে আটকে রেখে স্থিতাবস্থা রেখে দিতে পছন্দ করে।নতুন কারুর উত্থান, পুরাতনের পতন, অবস্থার পরিবর্তন এরা মেনে নিতে পারেনা।এইকারণে এরা সবসময়েই প্রতিক্রিয়াশীল হয় এবং জঙ্গলেই পড়ে থাকে।
এসমস্ত কিছু থেকে এটাই বোঝা যায় যে গাংবাঙালী আদতে অত্যন্ত নীচ-হীন একটি প্রাণী এবং এদের বিলুপ্তি আসন্ন।পৃথিবীর সবথেকে ভালো স্থানে থেকেও যাদের এই অবস্থা তাদের এই পরিণতিই হওয়া উচিত।
Author: Purandhar Khilji
Historical General 20-February-2023 by east is risingপ্রাচীন মিসরের সবচেয়ে বিখ্যাত রাজা তুতেনখামেন। তার সমাধিস্থল আবিষ্কারের পর এর ঐশ্বর্য দেখে স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিলেন ব্রিটিশ প্রত্নতাত্ত্বিক হাওয়ার্ড কার্টার। বলে উঠেছিলেন, “ওয়ান্ডারফুল থিংস!” সত্যিই এক বিস্ময়কর ব্যাপার বটে। ১৯২২ সালের ৪ নভেম্বর মিশরের অকালপ্রয়াত সম্রাটের সমাধিতে প্রবেশের পথ আচমকাই বেরিয়ে পড়ে এক শ্রমিকের হাতে। সেই আবিষ্কারের শতবর্ষ পূর্ণ হলো কিছু দিন আগে। যদিও তুতেনখামেনের সোনার শবাধার-সহ মমি আবিষ্কার হতে সময় গড়িয়ে যায় ১৯২৫ পর্যন্ত।
৩৫০০ বছর আগে প্রাচীন মিশরের কিশোর রাজা বা ফারাও ছিলেন তুতেনখামেন। পিতার মৃত্যুর পরে ৯ বছর বয়সেই সিংহাসনে বসেন। ১০ বছর রাজত্ব করার পরে হঠাৎই রহস্যময় কারণে মৃত্যু। অজানা কোনো কারণে বেশ তাড়াতাড়ি কিশোর ফারাওকে বিপুল ঐশ্বর্য-সহ সমাধিস্থ করা হয়। তুতেনখামেনের সমাধির প্রবেশপথ ঢাকা পড়ে গিয়েছিল অন্যান্য খননের ধ্বংসাবশেষে। তাই বিস্তর খোঁজাখুঁজির পরও দীর্ঘ সময় কিছুতেই প্রকাশ্যে আসেনি সেই সমাধি।
ফারাওদের বৈভবের নিরিখে তুতানখামেনের সমাধিক্ষেত্র বেশ ছোটই ছিল। তার মৃত্যুর পর ৭০ দিনের মধ্যে বেশ তড়িঘড়ি করে তাকে সমাধিস্থ করা হয়েছিল। প্রাচীন মিশরীয় বিশ্বাস অনুসারে, ফারাও বা অন্য গুরুত্বপুর্ণ ব্যক্তিদের মৃত্যুর পর তাদের ব্যবহৃত যাবতীয় সামগ্রী মৃতদেহের সঙ্গে রেখে দেওয়ার রীতি ছিল। তুতেনখামেনের সমাধিতে স্বর্ণপালঙ্ক, স্বর্ণসিংহাসন, সোনার শবাধারের ঐশ্বর্যে তামাম বিশ্ব হতচকিত হয়ে পড়ে। সোনা তো শুধু নয়! রুপো, মেহগনি কাঠ, হাতির দাঁত- কী ছিল না সমাধির বদ্ধ কক্ষে।
মমির সঙ্গেই পাওয়া গিয়েছিল একটি ছোট চামড়ার থলি, সঙ্গে কোমরে বেঁধে নেয়ার ফিতে। পরে বোঝা যায়, জিনিসটি আসলে আদি কন্ডোম। বিস্ময়ের কথাই বটে! কয়েক হাজার বছর আগে প্রাচীন মিশরীয়রাও কন্ডোমের ব্যবহার জানতেন! কন্ডোমের মধ্যে পাওয়া ডিএনএ পরীক্ষায় জানা গেল, সেটি স্বয়ং তুতেনখামেনেরই ব্যবহৃত। গবেষকরা এই সিদ্ধান্তেও পৌঁছন যে, কন্ডোমটি গরুর পাতলা চামড়া দিয়ে তৈরি, সেটি গর্ভনিরোধক সরঞ্জাম হিসাবেই মমির সঙ্গে দেওয়া হয়েছিল, কোনো প্রাচীন রীতি পালনের সঙ্গে এর যোগসূত্র নেই। শুধু তাই নয়, তুতেনখামেনের লিঙ্গটি প্রায় ৯০ ডিগ্রি উত্থিত করে তাকে মমি করা হয়েছিল। মমি আবিষ্কারের কিছু পরেই লিঙ্গটি নিখোঁজ হয়, পরে জানা যায়, সেটি ভেঙে অন্যত্র রাখা হয়েছিল।
তুতেনখামেনের মমিতে পাওয়া এই কন্ডোম ইতিহাসের প্রাচীনতম আবিষ্কৃত কন্ডোম। উত্থিত লিঙ্গের সম্ভাব্য কারণ ধর্মাচরণের সঙ্গে যুক্ত। মিশরীয় সভ্যতার রীতি অনুসারে তুতেনখামেনকে দেবতা ওসিরিসের অবতার হিসেবে দেখার চেষ্টা ছিল। অন্য দিকে, প্রাচীন কালেই মিশরবাসী নানা রঙের কন্ডোম ব্যবহার শুরু করেছিলেন। বিভিন্ন সামাজিক স্তরের লোকজনের জন্য নির্দিষ্ট বর্ণের কন্ডোমের চল ছিল।
কন্ডোমের প্রাচীন ইতিহাস মিশরের বাইরেও রয়েছে। কায়রো লাইব্রেরি এবং পুরনো গবেষণার তথ্য হাতড়ালে দেখা যায়, প্রাচীন গ্রিসের ক্রিট দ্বীপের রাজা মিনোস এক সমস্যায় পড়েন। রাজার সঙ্গে সঙ্গমের পরেই আশ্চর্যজনক ভাবে মারা যাচ্ছিলেন রানিরা। রাজার শুক্রাণুতে নাকি সাপ ও বিছে রয়েছে, এমন ধারণাও দানা বাঁধে।
এই সময় বুদ্ধিমতী রানি পাসিফি একটি উপায় বার করেন। শুয়োরের পাতলা চামড়া নিজের যৌনাঙ্গে লাগিয়ে রাজার সঙ্গে মিলিত হন। প্রাণে তো বাঁচেনই রানি, শেষে ৮টি সন্তানের জন্মও দেন।
যিশুর জন্মের ১৮০০ বছর আগে প্রাচীন মিশরে ‘কাহুন মেডিক্যাল প্যাপিরাস’ রচিত হয়েছিল। প্রাচীন মিশরীয়রাও সেই পুঁথি অনুসরণ করে কুমিরের মলের সঙ্গে অন্যান্য প্রাকৃতিক ঔষধি মিশিয়ে তৈরি করতেন গর্ভনিরোধক পদার্থ। এই পদার্থ মূলত নারীরা তাদের যৌনাঙ্গে ব্যবহার করতেন। কুমিরের মল অ্যাসিডিক, যা কিনা শুক্রাণুগুলোকে নিমেষে নিকেশ করত। বর্তমান গবেষণা অবশ্য জানাচ্ছে উল্টো কথা।
অ্যাসিডিক হলে সফল নিষেক হবার সম্ভাবনা কমে না, বরং বেড়ে যায়। তাই কুমিরের মলে কতগুলো শুক্রাণু বধ হতো, সে নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। প্রাচীন ভারতীয়রা অবশ্য কুমিরের বদলে হাতির মল দিয়ে গর্ভ নিরোধনের চেষ্টা চালিয়েছিলেন। রোমানরা প্রথমে কন্ডোম নিয়ে তেমন ভাবিত না হলেও, পরে তাদের চিন্তায় ফেলেছিল যৌন রোগ সিফিলিস। সিফিলিসের হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করতে তারা প্রাণীর চামড়ার ব্যবহার শুরু করেন।
তাই মিশরীয়দের কিছু পরে রোমানরা প্রাণীদেহের (মূলত ছাগল ও ভেড়ার) পাতলা চামড়া দিয়ে কন্ডোম তৈরির একটা বন্দোবস্ত করেছিলেন। পিছিয়ে ছিলেন না চিনারাও। সিল্কের সঙ্গে বিশেষ তেল মিশিয়ে তারাও কন্ডোম তৈরি করে ফেলেন। জাপানিরা তো তত দিনে কাবুতা-গাতার ব্যবহার শিখেছে পুরুষ যৌনাঙ্গের মুখ ঢাকতে। মূলত কচ্ছপের খোল ব্যবহার করে কাবুতা-গাতা তৈরি হত।
নিউগিনির প্রাচীন বাসিন্দারা গর্ভনিরোধক হিসেবে বিশেষ কিছু নির্বাচিত উদ্ভিদের নির্যাস স্ত্রীদেহে ব্যবহার শুরু করেছিলেন। সে সময়ের প্রায় সব সভ্যতায় পুরুষেরা মিলনের ঠিক পূর্বে স্ত্রী যৌনাঙ্গে ছয় ইঞ্চি লম্বা বিশেষ পাতা দিয়ে প্রস্তুত ফানেল ব্যবহার করতেন, যার একমুখ খোলা অন্য প্রান্ত বন্ধ।
ষোড়শ শতকের ইতালীয় শরীরতত্ত্ববিদ গাব্রিয়েল ফালোপ্পিও পুরুষের যৌনাঙ্গে ভেড়া ও ছাগলের পাতলা চামড়ার টুপি পরিয়ে পরীক্ষা করে দেখেন, তাতে সিফিলিসের মতো মারাত্মক যৌন রোগ বাধাপ্রাপ্ত হয়। পঞ্চদশ শতকে যখন যৌন রোগ সিফিলিস আছড়ে পড়ে ফ্রান্সের সেনাদলে, তখন কন্ডোম ব্যবহার আবশ্যিক হয়ে পড়ে। সেই সময় থেকে প্রাণীদেহের পাতলা চামড়া দিয়ে কন্ডোম তৈরির বহুল ব্যবহার শুরু হয়। শুধু তাই নয়, মাছের নাড়িভুঁড়ি ব্যবহার করেও তৈরি হয়েছে কন্ডোম।
সপ্তদশ শতকে ইংল্যান্ডে বহুল ভাবে গর্ভনিরোধক ব্যবস্থা হিসেবে কন্ডোমের প্রচলন শুরু হয়। সে সময় ইংল্যান্ডের জনসংখ্যাও আচমকা কমে যায়। তবে আমেরিকান রসায়নবিদ চার্লস গুডইয়ারের ভালোকানাইজড রবারের ব্যবহারিক প্রয়োগ বিশ্বকে চমকে দেয়। তিনি প্রথম রবারের সঙ্গে গন্ধক মিশিয়ে স্থিতিস্থাপক, নমনীয়, টেকসই আধুনিক কন্ডোমের ধারণা দেন। ১৮৬০ থেকে শুরু হয় আধুনিক কন্ডোমের সাম্রাজ্য বিস্তার।
From an article published by State Watch https://statewatch.net/post/35884?fbclid=IwAR3pRewKe5nHFgrKX9GLXZLCE32aYnxiYkURgezQNf6xDNw8VITN-wtvx7c
Author: Saikat Bhattacharya
Historical General 15-February-2023 by east is risingNine human species went extinct 300,000 years ago. Homo Sapiens tried to triumph in a fierce battle for survival. Neanderthals adapted to Europe's cold weather. Denisovans lived in Asia. Homo Erectus and Homo Floresiensis lived in Indonesia. Homo Rhodesiensis lived in Central Africa. Homo Naledi lived in South Africa. Homo Luzonensis inhabited the Philipines. Red Deer Cave people lived in China. But just 10,000 years ago all other than Homo Sapiens were gone. It resembles mass extinction though there was no trace of environmental disaster. Scientists have now concluded that extinction took place due to spread of Homo Sapiens. In Southern Africa between 260,000 and 350,000 years ago Homo Sapiens evolved as a species. Spread of Homo Sapiens from Africa started Sixth Mass Extinction and other human species died because of it. Homo Sapiens hunted wooly mammoth to extinction. They destroyed forests for farming and altered climate.
Other human species failed to compete with them for land and resources. Cooperative violence among male chimps suggests that war predates evolution of humans. Archeology shows that war in primitive cultures was intense and lethal. Homo Sapiens built neolithic weapons such as clubs spears and axes which were very lethal when combined with guerilla tactics. Cave paintings and music instruments show that Homo Sapiens even developed mental tools for war. Homo Sapiens can cooperate, manipulate and deceive.
DNA shows that Homo Sapiens have mated with other now extinct human species. East Asian, Polynesian, Australian population have DNA from Denisovan. Homo Erectus DNA found in Asian people. African genomes show DNA of other archaic species. So these human species got erased after encountering Homo Sapiens. Evidence shows Homo Sapiens and Neanderthals were at war for 100,000 years. Humanity split into two groups around 600,000 years ago. One group stayed in Africa evolving as Homo Sapiens, other group moved to Asia and then Europe and became Neanderthals.
Break to the lower arm are considered sign of war. Trauma and deaths especially common among Neanderthal males. For around 100,000 years Neanderthals resisted Homo Sapiens and forced them inside Africa. Neanderthals had an aggressive military strategy. Homo Sapiens lost to Neanderthals for thousands of years. When a species start growing in population, fight for hunt and land start within the species. Fight for women among men becomes common too. Male chimps gang up to kill male chimps from rival gangs. This proved cooperative aggression evolved 7 million years ago in the common ancestor of chimps and Homo Sapiens and other human species like Neanderthals. Neanderthals had 99.7% of Homo Sapiens DNA, they made fire, buried their dead bodies, made jewelry from sea shells and made art work.
By the 1920s, discoveries made at a number of European archaeological sites had prompted a consensus about the Paleolithic Period, which is now dated from 12,000 to nearly 2.6 million years ago. Archaeologists divided this period into Lower (oldest), Middle, and Upper (youngest) Paleolithic phases. Distinctive stone-tool assemblages—or “industries”—characterized each phase. Archaeologists identified these industries by the presence of diagnostic artifact types, such as Acheulian hand axes (Lower Paleolithic), Mousterian scrapers made on Levallois flakes (Middle Paleolithic), and Aurignacian prismatic blades and carved antler points (Upper Paleolithic). The fact that tools from more recent industries were lighter, smaller and more heavily modified suggested there was a trend toward greater technological and cultural sophistication in the Paleolithic sequence. European Upper Paleolithic industries were associated exclusively with Homo sapiens fossils and Lower and Middle Paleolithic industries were associated with earlier hominins (Homo heidelbergensis and Homo neanderthalensis). This supported the idea that there were important evolutionary differences between modern Homo sapiens and earlier archaic hominins.
Author: Saikat Bhattacharya
Historical General 22-January-2023 by east is rising"মা বনবিবি, তোমার বাল্লক এলো বনে,
থাকে যেন মনে।
শত্রু দুষমন চাপা দিয়ে রাখ গোড়ের কোণে।।
দোহাই মা বরকদের, দোহাই মা বরকদের।"
আজ আঠারো ভাটির দেশ 'সুন্দরবনে' মা বনবিবির পূজা।"বনবিবির জহুরানামা" অনুসারে মক্কা থেকে আসা ইব্রাহিম ও তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী গুলালবিবির সন্তান মা বনবিবি। ইব্রাহিমের স্ত্রী গুলাল বিবি সতিনের প্ররোচনায় সুন্দরবনে পরিত্যক্ত হন। কয়েকদিন পর সেখানেই যমজ পুত্র-কন্যার জন্ম দিয়ে তার মৃত্যু হয়। সদ্যোজাত শিশু দু'টির কান্না শুনে বনের বাঘ, কুমির, হরিণ, অজগর, বানস সবাই ছুটে আসে। তারাই দুই ভাইবোনকে লালনপালন করে বড়ো করে তোলে। বড় হয়ে ছেলেটি শা-জাঙ্গলী এবং মেয়েটি বনবিবি নামে পরিচিত হয়।
সুন্দরবনের প্রধান দণ্ড রক্ষ মুনীর সন্তান দক্ষিণরায় ছিল এই দেশের অত্যাচারী রাজা যারা তাকে নরমাংস উৎসর্গ করতো না তাদের বাঘের রূপে এসে হত্যা করতেন। বনবিবির সঙ্গে দক্ষিণরায়ের ভয়ঙ্কর যুদ্ধ হয় এবং সেই যুদ্ধে দক্ষিণরায় পরাস্ত হয়। সেই থেকে বনবিবি হয় ওঠে সুন্দরবনের রক্ষার্থী দেবী।
সুন্দরবনে মা বনবিবির পুজা না করে জঙ্গলে জেলেরা মাছ ধরতে কিংবা মৌলিরা মধু কাটতে বা মোম সংগ্রহ যান না। একবার দুই মৌলি ধোনা আর মোনা জঙ্গলে মধু কাটতে গেছিল এবং সঙ্গে ছিল তাদের ভাইপো দুখে। দুখে খুবই গরিব ঘরের, বাবা চলে গেছে, মায়ের এক মাত্র ভরসা সে। মায়ের অসুস্থ্যতার কারণে ছেলে সেই বালক বয়সেই কাজে নেমে যায়। ধোনা, জঙ্গলে যাওয়ার আগে দক্ষিণরায়ের পুজো দিতে ভুলে গেল। রাতে সে দক্ষিণরায়ের থেকে স্বপ্নাদেশ পায় এই ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করতে তাকে নরমাংস উৎসর্গ করতে হবে, তাহলেই সে জঙ্গল থেকে মধু আর মোম নিয়ে যেতে পারবে। পরের দিন তারা দুখেকে জঙ্গলে ছেড়ে চলে যায়। গ্রামে এসে সবাইকে বলে দুখেকে বাঘে খেয়ে নিয়েছে।
দুখের মা কাঁদতে কাঁদতে অন্ধ হয় যায়। ঐদিকে জঙ্গলে দুখেকে খেতে বাঘ রূপে আসে দক্ষিণরায়। দুখে মা মা করে তিনবার ডেকে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। তার আর্তনাদ শুনে মা বনবিবি তার ভাই শা জাঙ্গলীকে পাঠান এবং সেখানে দক্ষিণরায়ের সাথে যুদ্ধ হয়, যুদ্ধে পরাস্ত হয় দক্ষিণরায় সেখান থেকে পালিয়ে গাজীর দরবারে শরণাপন্ন হন। গাজীর প্রার্থনায় মা বনবিবির সাথে অবশেষে দক্ষিণরায়ের বিবাদ মেটে। দক্ষিণরায়কে শান্তির প্রতিজ্ঞা করিয়ে মা বনবিবি বলেন-
"আঠারো ভাটির মাঝে আমি সবার মা।
মা বলি ডাকিলে কার বিপদ থাকে না।
বিপদে পড়ি যেবা মা বলি ডাকিবে।
কভু তারে হিংসা না করিবে।"
মা বনবিনি দুখেকে প্রচুর ধনরত্ন দিয়ে সেকো তার বাহন কুমিরের সাথে গ্রামে পাঠিয়ে দেন। এবং পরবর্তীতে সে হয় ওঠে সুন্দরবনের প্রধান এবং আজকের এই দিন পয়লা মাঘ শুরু করেন মা বনবিবির পুজা।
সুন্দরবনের হিন্দু, মুসলমান সকলের মা বনবিবি। একদিকে হিন্দুরা মনে করেন মা হলেন চন্ডীর এক রূপ। অন্য দিকে মুসলমানরা মনে করেন আল্লা পাঠিয়েছেন মা বনবিবিকে সুন্দরবন রক্ষা করতে। মা বনবিবির পুজায় কোনো মন্ত্র থাকে না, কোনো পুরোহিত পৌরোহিত্ত্ব করে না। এই পূজা হয় ভক্তি আর ভালোবাসা দিয়ে। বাংলার লৌকিক দেব দেবীদের অন্যতম প্রচলিত দেবী মা বনবিনি।
collected from Facebook
Author: Saikat Bhattacharya
Historical General 19-January-2023 by east is risingপৃথিবীতে আজ বাঙালির সংখ্যা কত?
প্রায় ৩০-৩৫ কোটি তো হবেই।
হুন চীনাদের পরে ২য় বৃহত্তম জাতিস্বত্বা!
কতজন বাঙালি জানে এটা?
উপমহাদেশের ২০-২৫ টি মেজর জাতির মাঝে একমাত্র বাঙালিরই একটি রাষ্ট্র রয়েছে। কতজন খেয়াল করেছেন এটা?
আজকে আপনাদের একটা গল্প বলবো। ঠিক গল্প না।
নিজের আত্মপরিচয়ের বাস্তব গল্প।
আপনাদের কারো মনে কী কোনো দিন একটা প্রশ্ন উঠেছে যেঃ জাতি হিসেবে আমাদের বাঙালি বলা হয় কেনো? এর শুরুটা কীভাবে?
-চলুন সেটাই বলা যাক।
চলে যাই সুদূর অতীতে, যখন ভারতবর্ষে আর্যদের আগমন ঘটেছে কয়েকশ বছর হয়ে গেছে। উত্তর ভারত দিয়ে প্রবেশ করে ওরা একে একে সব অঞ্চল জয় করে নিচ্ছিল। ফলত, দ্রাবিড় জনগোষ্ঠী ক্রমশ ভারতের দক্ষিণে সরে যেতে লাগলো। [এই বিষয়টা খেয়াল করলে আজও উপলব্ধি করতে পারবেন। দক্ষিণ ভারতের মানুষগুলো, উত্তর ভারতীয়দের তুলনায় কিছুটা ডার্ক হয়।] সেসময় ভারতের পূর্ব অঞ্চল জয়ের প্রচেষ্টাও তারা চালাচ্ছিল। কিন্তু কিছুতেই পারছিল না।
সেজন্য ওরা নানা উপায়ে এই অঞ্চলের মানুষদের প্রতি ঘৃণা ছড়াচ্ছিল।
যেমনঃ কোনো আর্য সন্তান এই ভূমিতে পা রাখলে য়ার জাত যেতো। ওরা আমাদের বলতো 'বয়াংশি' অর্থাৎ এই অঞ্চলের(বঙ্গ) মানুষজনের পা পাখির মত সরু এবং এরা পাখির মত কিচিরমিচির করে।
এই 'বয়াংশি' শব্দটা সর্বপ্রথম পাওয়া যায় ঐতরেয় আরণ্যক নামক গ্রন্থে এবং শব্দটা থেকে ক্রমে ক্রমে বঙ্গ শব্দের উৎপত্তি।- ১টি মতাবাদ অনুযায়ী।
২য় মতবাদ অনুযায়ী, বং নামক একটি ট্রাইবের থেকে বঙ্গ শব্দের উৎপত্তি।
তবে, বলে রাখি 'বঙ্গ' বলতে আজ আপনি যা বুঝেন অতীতে তেমন ছিল না। নিচের ম্যাপটা দেখুন। তখন বঙ্গ বলতে সেটুকুই বুঝাত।
বাংলার প্রথম সার্বভৌম নৃপতি শসাঙ্ক বাংলার ক্ষমতায় আরোহন করার আগে এই বাংলা অনেকগুলো জনপদে বিভক্ত ছিল। যেমনঃ বঙ্গ, সমতট(কুমিল্লা সমতটে ছিল। আর সমতটের রাজধানী ছিল দেবীদ্বারের বরকামতা), হরিকেল, চন্দ্রদ্বীপ, গৌড়, রাঢ়.........
(মহাভারতে আমরা পুন্ড্ররাজ ও বঙ্গরাজের উপস্থিতি দেখতে পাই)।
এই ছোটো ছোটো অঞ্চলগুলোকে এক করে শসাঙ্ক নামকরণ করেন 'গৌড়'। যার রাজধানী ছিল কর্ণসুবর্ণ।
এবং তিনি 'গৌড়াধিপতি' উপাধি নিয়েছিলে। তাঁর পর মৎসন্যায়,পাল যুগ, সেন যুগ এবং ফখরুদ্দিন মোবারক শাহের আমল অব্ধি সমগ্র বাংলায় গৌড় নামটি প্রাধান্য পেয়ে এসেছে। এই বিশাল সময় গৌড় নামটি রাষ্ট্রীয় ভাবে পৃষ্ঠপোষকতা পাওয়ার দরুন আধুনিক যুগ অব্ধি ছিল। উদাহরণঃ রাজা রামমোহন রায় বাংলায় রচিত বাংলা ভাষার প্রথম ব্যাকরণ গ্রন্থের নাম দিয়েছিলেন 'গৌড়ীয় ব্যাকরণ'। অর্থাৎ তিনি বাংলা ভাষাকে গৌড়ীয় ভাষা বলেছেন।
ফফখরুদ্দীন মোবারক শাহের পর কী এমন ঘটলো যে আমরা গৌড়ীয়, সমতটী, রাঢ়ী, হরিকেলী না হয়ে বাঙালি হলাম?
এর নেপথ্যে রয়েছেন সুলতান শমস-উদ্দিন ইলিয়াস শাহ। তিনিই প্রথম বাংলার সবগুলো জনপদ কে এক করে নাম রাখেন 'বাঙ্গালাহ' এবং মানুষজন 'বাঙ্গালী' হিসেবে পরিচিত হন। তাঁর আমলে দিল্লির সেনাকে বলা হতো মুসলমান সেনা, আর তাঁর সেনা কে বলা হতো বাঙ্গালী সেনা। তিনি নিজেও পরিচিত ছিলেন 'শাহী বাঙ্গালী' নামে।
এই কারণেই তিনি বাঙালির ইতিহাসে একটি বিশেষ স্থান দখল করে আছেন।
বাঙালি জাতীয়তাবাদ পঠন এবং চর্চায় তিনি সবসময়ই আলোচিত হয়ে থাকেন।
-
সূত্রঃ
১) বাঙ্গালার ইতিহাস
-রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়
২) বাংলাদেশের ইতিহাস
- রমেশচন্দ্র মজুমদার
লিখেছেন - জাহেদুল হক হমি
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Historical General 18-December-2022 by east is risingআমাদের সুলতান শামসউদ্দিন ইলিয়াস শাহ
১. সুলতান শামসউদ্দিন ইলিয়াস শাহ হলেন সেই ব্যক্তি যিনি সর্বপ্রথম খণ্ডে খণ্ডে বিভক্ত বাংলা অঞ্চলের জনপদসমূহকে একত্রিত করে এই বিস্তীর্ণ ভূখণ্ডকে "বাঙ্গালাহ" (বাংলা) নামে অভিহিত করেন।
২. তিনি এই অঞ্চলের একই ভাষাভাষী ও নৃতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন অধিবাসীদেরকে 'বাঙ্গালি' (বাঙালি) হিসেবে আখ্যায়িত করেন এবং এই সময় থেকেই পৃথিবীর অন্যান্য অঞ্চলের মানুষ বাংলার অধিবাসীদের বাঙালি পরিচয়ে চিনতে শুরু করে। এভাবেই বিশ্বের বুকে বাঙালি জাতির স্বতন্ত্র জাতিগত পরিচয়ে পরিচিতি প্রদান করেছিলেন সুলতান ইলিয়াস শাহ।
৩. ইলিয়াস শাহ নিজেকে 'শাহ-ই-বাঙ্গালিয়ান' (বাঙালি জাতির শাহ) ও 'শাহ-ই-বাঙ্গালাহ' (বাংলার শাহ) ঘোষণা করেছিলেন। ইলিয়াস শাহের পূর্বে বাংলার কোনো শাসক কখনো নিজেকে বাংলার শাসক ঘোষণা করেন নি। রাজা শশাঙ্ক, পাল সম্রাটগণ ও সেন রাজারা নিজেদেরকে আখ্যায়িত করতেন 'গৌড়রাজ বা গৌড়েশ্বর হিসেবে'।
৪. সুলতান ইলিয়াস শাহ বাংলাকে এতোটা ভালোবাসতেন যে, একটি নদীর নামই তিনি দিয়েছিলেন 'বাঙ্গালি', যা আজও বহমান।
৫. প্রাচীন বাংলার বিখ্যাত বৌদ্ধ শহর বিক্রমপুরের বজ্রযোগিনীর জনৈকা হিন্দু বিধবা ব্রাহ্মণ পুষ্পবতী ভট্টাচার্যকে বিবাহ করেন সুলতান শামসউদ্দিন ইলিয়াস শাহ। ইসলাম গ্রহণের পর তিনি পুষ্পবতীর নাম দেন 'ফুলওয়ারা বেগম'। ইলিয়াস শাহ্ স্ত্রী ফুলওয়ারা বেগমের নিকট থেকেই বাংলা শিখেছিলেন এবং বাংলা ভাষা শেখার পর তিনি স্ত্রীকে ডাকতেন 'ফুলমতি' নামে। ফুলমতি বেগমের গর্ভেই জন্মগ্রহণ করেন সুলতান ইলিয়াস শাহের সুযোগ্য পুত্র সুলতান সিকান্দার শাহ।
৬. তিনি বাংলার রাজধানী গৌড় থেকে পান্ডুয়ায় স্থানান্তরিত করেছিলেন এবং রাজধানী ফিরোজাবাদ (পান্ডুয়া) কে পরিণত করেছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের অত্যন্ত সমৃদ্ধ নগরীতে। তিনি প্রাচীন বাংলার সমৃদ্ধ গৌড় নগরীর পুনর্নির্মাণও করেছিলেন।
৭. ফিরোজাবাদে তিনি নির্মাণ করেছিলেন ২৭ টি হাম্মামখানা বিশিষ্ট বিখ্যাত সাতাশঘড়া প্রাসাদ।
৮. তিনিই সেই ইলিয়াস শাহ, যাঁর মুকুটে শোভা পেত পৃথিবীর দ্বিতীয় মূল্যবান হীরা- ''দরিয়া-ই-নূর''।
৯. তিনি প্রথম রাজভাষা হিসেবে বাংলার মর্যাদা দেন এবং ফার্সির পাশাপাশি বাংলাকে দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে ব্যবহার শুরু হয় সুলতান শামসউদ্দিন ইলিয়াস শাহের হাত ধরে।
১০. তিনি প্রথম ও একমাত্র মুসলিম শাসক যিনি নেপাল বিজয় করেছিলেন।
১১. ১৩৩৮ সালে তিনি সাতগাঁওয়ের শাসনক্ষমতা দখল করে নিজেকে রাঢ়ের স্বাধীন সুলতান ঘোষণা করেন এবং ''শামস আদ দুনিয়া ওয়া আদ দ্বীন আবু আল মুজাফফার ইলিয়াস শাহ'' উপাধি ধারণ করে দিল্লি সালতানাত থেকে পৃথক করে নিজেকে রাঢ়ের স্বাধীন সুলতান ঘোষণা করেন।
১২. ১৩৪২ সালে তিনি গৌড় আক্রমণ করেন এবং গৌড়ের সুলতান আলাউদ্দিন আলী শাহকে পরাজিত করে গৌড় দখল করে গৌড়ের সুলতান হিসেবে অধিষ্ঠিত হন।
১৩. ১৩৪৪ সালে তিনি ত্রিহুত বিজয় করেন ।
১৪. ১৩৫০ সালে গৌড়ের সুলতান ইলিয়াস শাহ্ নেপালে অভিযান পরিচালনা করেন এবং নেপালের রাজা জয়রাজ মল্লকে পরাজিত করে কাঠমুণ্ডুর পতন ঘটান। জয়রাজ মল্ল বীরত্বের সাথে লড়াই করেও শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়ে পলায়ন করেন।
১৫. তিনি ১৩৫০ সালে কাঠমুণ্ডুর পতন ঘটিয়ে শম্ভূনাথ মন্দির আক্রমণ করেন এবং পূর্বপ্রতিজ্ঞা অনুসারে শম্ভূনাথের মন্দির ধ্বংস করেন।
[সুলতান ইলিয়াস শাহ প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, যে পশুপতিনাথের সামনে এত নিরীহ মানুষকে বলি দেয়া হলো তার মূর্তি আমি নিজ হাতে ভাঙবো।]
১৬. সেসময় শৈবপ্রধান নেপালে শিবপূজাকে কেন্দ্র করে এক বিকৃত যৌনাচার উৎসব শুরু হয়েছিলো।
এই বিকৃত কামাচারকে উৎখাত করার নিমিত্তে ইলিয়াস শাহ কাঠমুণ্ডুর সকল শৈব উপাসনালয় জ্বালিয়ে দেন। কিন্তু সুলতান ইলিয়াস শাহ বৈষ্ণবদের আক্রমণ করেন নি এবং তাদের মন্দিরেরও কোনো ধরনের ক্ষতি করেন নি। বৈষ্ণবদের মন্দিরসমূহ সম্পূর্ণ নিরাপদ ছিলো।
১৭. শম্ভূনাথ মন্দির থেকে ৩০০ মণ খাটি সোনা ও প্রচুর ধন-রত্ন লাভ করে রাজধানীতে ফিরে আসেন সুলতান।
১৮. ১৩৪৯ সালে বঙ্গের সুলতান ফখরউদ্দিন মোবারক শাহ ইন্তেকাল করেন এবং তাঁর পুত্র ইখতিয়ারউদ্দিন গাজী শাহ সোনারগাঁওয়ের সিংহাসনে বসেন। ১৩৫২ সালে সুলতান শামসউদ্দিন ইলিয়াস শাহ ইখতিয়ারউদ্দিন গাজী শাহের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করেন এবং তাঁকে বিতাড়িত করে সোনারগাঁও দখল করেন।
১৯. তিনি ১৩৫২ সালে গৌড় ও বঙ্গ একত্রিত করে তাঁর সাম্রাজ্যের নামকরণ করেন "বাঙ্গালাহ" এবং এভাবেই গোড়াপত্তন ঘটে স্বাধীন বাংলা সালতানাতের।
২০. সুলতান শামসউদ্দিন ইলিয়াস শাহের পূর্বে মুসলিম শাসকেরা কেবলমাত্র মুসলিমদেরই সেনাবাহিনীতে নিয়োগ দিতেন। কিন্তু ইলিয়াস শাহ যোগ্য হিন্দুদের মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে উচ্চ রাজপদে নিয়োগ দান করেন।
২১. ১৩৫১ সালে মুহাম্মাদ বিন তুঘলকের মৃত্যুর পর দিল্লির সুলতান হন তাঁর চাচাত ভাই ফিরোজ বিন রজব। ১৩৫৩ সালে হিন্দুস্থানের সুলতান ফিরোজ শাহ তুঘলক বাংলার সুলতান ইলিয়াস শাহের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনা করলে ইলিয়াস শাহ তাঁর দুর্ভেদ্য দিনাজপুরের একডালা দুর্গে সপরিবারে আশ্রয় গ্রহণ করেন। ফিরোজ শাহ তুঘলক একডালা দুর্গ অবরোধ করে ব্যর্থ হন এবং বর্ষাকাল চলে আসলে হিন্দুস্থানী সৈন্যরা প্রতিকূল পরিবেশে টিকতে না পেরে ইলিয়াস শাহের সাথে সন্ধি করে ফিরোজ শাহ তুঘলক দিল্লি ফিরে যান।
২২. সুলতান ইলিয়াস শাহের আধিপত্য ছিলো বেনারস পর্যন্ত, তিনি ১৩৪৫ সালে হিন্দুরাজ্য ছোটনাগপুর বিজয় করেন এবং ছোটনাগপুরকে বিহারের সাথে জুড়ে দেন। তিনি গোন্দওয়ানা রাজ্য বিজয় করেন এবং উড়িষ্যার বিস্তৃত অঞ্চল অধিকারে আনেন।
২৩. সুলতান ইলিয়াস শাহের সেনাপতি ছিলেন একজন হিন্দু ব্যক্তি, নাম শাহদেব। ১৩৫৩ সালে দিল্লিশ্বর ফিরোজ শাহ তুঘলক বাংলা আক্রমণ করলে বাংলার সৈন্যবাহিনীর নেতৃত্ব দিয়েছিলেন শাহদেব।
২৪. উপমহাদেশের একমাত্র হাজ্বী শাসক হলেন সুলতান শামসউদ্দিন ইলিয়াস শাহ। তাই তাঁর নামের পূর্বে সবসময় "হাজ্বী" শব্দটি যুক্ত ছিলো। [সে যুগে পবিত্র হজ্বব্রত পালন এখনকার মতো এতোটা সহজ ছিলো না। ইলিয়াস শাহই ভারতীয় উপমহাদেশের একমাত্র শাসক যিনি হজ্ব পালন করেছিলেন।]
২৫. সুলতান শামসউদ্দিন ইলিয়াস শাহ ১৩৫৬ সালে কামরূপ বিজয় করেন। উল্লেখ্য যে, কামরূপের কামাখ্যা মন্দিরে বহুকাল ধরে এক অশ্লীল ও নোংরা উপাসনা পদ্ধতি প্রচলিত আছে। সুলতান শামসউদ্দিন ইলিয়াস শাহ যখন কামরূপ বিজয়ের পরিকল্পনা করেছিলেন তখন কামাখ্যা মন্দিরের কুসংস্কারাচ্ছন্ন পূজারীদের ধারণা ছিলো, এই যৌনি মূর্তির কারণেই নাকি ইলিয়াস শাহ কামরূপ বিজয় করতে পারবেন না। কিন্তু ইলিয়াস শাহ ১৩৫৬ সালে রাজধানীর পতন ঘটিয়ে কামরূপ বিজয় করে তাঁর সাম্রাজ্যভুক্ত করেন।
২৫. কিছু সূত্রমতে, তাঁর আধিপত্য বেনারস নয়, বিস্তৃত ছিলো উত্তর প্রদেশের সুদূর বাহরাইচ পর্যন্ত।
একের পর এক যুদ্ধাভিযানের ফলে ১৩৫৭ সালের শেষদিকে সুলতানের শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে এবং রাজধানী ফিরোজাবাদ ত্যাগ করে তিনি চলে আসেন তাঁরই পুনর্নির্মিত ঐতিহাসিক গৌড় নগরীতে। ১৩৫৮ সালের জানুয়ারি মাসে গৌড় দুর্গেই মহান প্রতিপালকের ডাকে সাড়া দিয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন সুলতান। তাঁকে তাঁর প্রতিষ্ঠিত বিহারের হাজিপুর শহরে সমাধিস্থ করা হয়।
সুলতান শামসউদ্দিন ইলিয়াস শাহ চলে যান সুন্দর এই পৃথিবী ছেড়ে, কিন্তু রেখে যান তাঁর প্রতিষ্ঠিত উপমহাদেশের অন্যতম ধনী ও শক্তিশালী সাম্রাজ্য- বাংলা সালতানাত।
আজ বাঙালি মুসলমান আজ তাঁর অতীত জৌলুস, বীরত্বগাঁথা ভুলে আত্মপরিচয়সংকটে জর্জরিত।
লেখক: রাজিত তাহমীদ জিত
সোর্স:
তারিখ-ই ফিরোজশাহী- জিয়াউদ্দিন বারাণী
তাবাকাত- ই নাসিরী - মিনহাজ-উস-সিরাজ
মধ্যযুগে বাংলা- খন্দকার স্বনন শাহরিয়ার
হাজার আফসারী
সিরাত-ই ফিরোজশাহী
SISB (Sultan Ilyas Shah Bangalah) Foundation
ফ্রান্সিস বুকাননের লেখা
বাংলার ইতিহাস: সুলতানী আমল - আব্দুল করিম
R. D. Banerji. বাঙ্গালার ইতিহাস (in Bengali). Vol. 2. pp. 145–146.
Abdul Karim (1959). Social History of the Muslims in Bengal (Down to A.D. 1538
Author: Rajit Tahmid Jeet
Historical General 25-October-2022 by east is risingদ্বিজাতি তত্ত্বের জন্য স্যেকুলারপন্থীরা জিন্নাহ আর মুসলিম লীগকে দায়ী করে। কিন্তু উনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগেই হিন্দু জাতির ধারণার উদ্ভব হয়। হিন্দু শব্দটা জাতি শব্দের সমার্থক হিসেবেও ব্যবহৃত হতে থাকে। এই হিন্দুত্বের ধারণাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেন সাভারকার। তিনি “হিন্দু” শব্দকে ডিফাইন করেন এভাবে “He who considers India as both his Fatherland and Holyland” এর মানে “ভারতকে পবিত্রভুমি এবং পিতৃভূমি হিসেবে যারা বিবেচনা করে তারাই হিন্দু জাতি”। Koenraad তার Decolonizing the Hindu mind বইয়ে বলেছেন এই সংজ্ঞা সকল আব্রাহামিক ধর্ম যেমন মুসলমান, খ্রিষ্টান, ইহুদীদের হিন্দু জাতিসত্বার বাইরে ঠেলে দিল। ধরে নেয়া হল তাঁরা বিদেশী। এই হিন্দু জাতি গঠনের বাইরে যাদের রাখা হল তাদেরকে তো সাভারকারই আলাদা আরেকটা জাতি হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিলেন। হিন্দু জাতির ধারণা প্রতিষ্ঠা করার ফলেই ভারতে তার পাল্টা একাধিক জাতির ধারণাকে প্রতিষ্ঠিত করার অনুকুল পরিবেশ গড়ে উঠলো।
এই হিন্দুত্বের জাতিকল্পনাই এক মারাত্মক দীর্ঘমেয়াদী সমস্যার জন্ম দিয়েছে। হিন্দু ধর্ম আর জাতি যদি অভিন্ন হয় তাহলে নেপাল বলে তো কোন রাষ্ট্রের অস্তিত্বই থাকতে পারেনা। নেপাল, যা হিন্দুপ্রধান একটা দেশ যা ভারত নয় সে তো কোনভাবেই নিজেকে হিন্দু পরিচয় দেয়ার জন্য ভারতকে পিতৃভূমি আর হোলি ল্যান্ড ভাবতে পারেনা। ভারতের সাথে হিন্দু প্রধান নেপালের সমস্যার একটা ঐতিহাসিক সুত্র এখানেও থাকতে পারে। তবে যেখানে হিন্দুরা সংখ্যালঘু সেখানে হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য অন্য সম্প্রদায়ের সাথে মিলে রাষ্ট্র গঠন এই হিন্দুত্বের সংজ্ঞার জন্য মানসিকভাবে কার্যত খুব জটিল হয়ে যায়। বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে তাঁদের পলিটিক্যাল এজেন্ট হিসেবে ভারত রাষ্ট্র একটা সম্ভাবনা হয়ে বিরাজ করতে থাকে।
হিন্দু জাতীয়তাবাদীদের মুল বক্তব্য ছিলো; পৃথিবীতে হিন্দু জাতি বলে বহু প্রাচীন গরিমায় দীপ্ত এক মহান স্বতন্ত্র জাতি আছে। হিন্দু জাতির ধর্ম স্বতন্ত্র, ভাষাও স্বতন্ত্র। হিন্দু জাতি সম্পর্কিত এই ভাবনাই হিন্দুত্বের জন্ম দেয়, যার পলিটিক্যাল এক্সপ্রেশন ছিলো দ্বিজাতি তত্ত্ব, আর সেটাই হয়ে দাড়ায় ভারতভাগের কারণ। এই হিন্দু জাতীয়তাবাদই ভারতীয় জাতীয়তাবাদের ব্যাকবোন।
এদিকে আমরা যদি দেখি মুসলমানদের আলীগড় আন্দোলনের নেতা সৈয়দ আহমেদ এমনকি ১৮৮৩ সালেও বলেছেন ধর্মাধর্ম নির্বিশেষে ভারতবর্ষে বসবাসরত সকলেই “একটি জাতি”। এমনকি এর অনেক পরেও ছিলো জিন্নার মুখে ঐক্যের সুর। ১৯২৮ সালের ডিসেম্বরে এক সর্বদলীয় সন্মেলনে বলেন, We are all sons of this land. We have to live together…. Belive me, there is no progress for India until the Musolmans and Hindus are united. আমরা সকলেই এই মাটির সন্তান। আমাদের একসাথেই বাঁচতে হবে…। বিশ্বাস করুন ভারতের কোন অগ্রগতি হবেনা যদি হিন্দু আর মুসলমানেরা ঐক্যবদ্ধ না হয়।
১৯৩৭ সালে আহমেদাবাদে হিন্দু মহাসভার ১৯ তম অধিবেশনে সাভারকার বলেন, “There are two antagonistic nations living side by side in India”, India cannot be assumed today to be a unitarian and homogenous nation. On the contrary, there are two nations in the main: the Hindus and the Muslims, in India…. several infantile politicians commit the serious mistake in supposing that India is already welded into a harmonious nation, or that it could be welded thus for the mere wish to do so”
“দুটি পরস্পরবিরোধী জাতি ভারতে পাশাপাশি বাস করে এসেছে, ভারতকে কখনোই একশিলা সমসত্ব জাতি হিসেবে বিবেচনা করা যাবেনা। বরং উল্টোভাবে ভারতে প্রধানত দুইটি জাতি; হিন্দু এবং মুসলমান…। কিছু বালকসুলভ রাজনীতিবিদেরা এই মারাত্মক ভ্রান্ত ধারণা পোষন করে যে, ভারত এরমধ্যেই একটি সুসমসত্ব একটি জাতি হিসেবে তৈরি হয়েছে বা তৈরি করা যেতে পারে।”
এই সভার প্রায় সতেরো বছের আগেই এসেন্সিয়ালস অফ হিন্দুত্ব নামে সাভারকারের একটা পুস্তকে দ্বিজাতি তত্ত্ব উপস্থাপন করা হয়। এবং হিন্দুদেরকে একটি জাতি হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়। এই সভার তিন বছর পরে লাহোর অধিবেশনে অল ইণ্ডিয়া মুসলিম লীগের সভার জিন্নাহও সাভারকার উত্থাপিত হিন্দু মহাসভার দ্বিজাতি তত্ত্ব গ্রহণ করে।
ঘটনার পরম্পরা বিবেচনা করলে পাকিস্তান সৃষ্টির পিছনে দ্বিতীয় অবদান ভারতীয় মুসলমানদের। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার প্রথম ভিত্তি প্রতিষ্ঠা করে দেন সাভারকার তার হিন্দু জাতির তত্ত্ব দিয়ে।
নেহেরু তার অটোবায়োগ্রাফিতেও লিখেছেন “Socially speaking, the revival of Indian Nationalism in 1907 was definitely reactionary” সামাজিকভাবে বলতে গেলে ১৯০৭ সালে ভারতীয় জাতীয়তাবাদের পুনরুত্থান অবশ্যই প্রতিক্রিয়াশীল ছিলো।
হিন্দু মহাসভার হিন্দুত্বের চর্চাই মুসলিম লীগের প্রভাব বাড়াতে সাহায্য করে। রমেশচন্দ্র মজুমদার যিনি কোনভাবেই মুসলমান প্রেমী ছিলেন না, তিনিও স্ট্রাগল ফর ফ্রীডম বইয়ে লিখেছেন, The outburst of Hindu Mohasova served to strengthen the power and influence of Muslim League. “হিন্দু মহসভার বিস্ফোরণই মুসলিম লীগের ক্ষমতা ও শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করেছিলো।”
দ্বিজাতি তত্ত্বের জনক জিন্নাহ নয়; হিন্দুত্ববাদী সাভারকার। অথচ কি আশ্চর্য ভারত এবং বাংলাদেশের স্যেকুলারেরা এই দ্বিজাতি তত্ত্বের জন্ম দেয়ার জন্য জিন্নাহ আর মুসলিম লীগকেই তুলোধোনা করে সবসময়।
Read MoreAuthor: Pinaki Bhattacharya
Historical Hindu 12-September-2022 by east is risingIt is May 6th 1529, the Timurid (better known as Mughal) forces lead by Babur himself face of against the frontier forces in Bahraich province of the Bengal Sultanate under the command of Basanta Raya. For the first time we see a full on fire armed warfare. Babur is greatly impressed at how proficient Bengalis are in the use of firearms. He writes in his autobiography Tuzuk-i-Baburi, "Bengalis have quite the reputation for their atishbazi. We tested it today. They do not aim to hit a particular target but fire at random." Bengalis of that time were so skilled that they didn’t require to even aim. However it is generally believed that canons were first used in India at the Battle of Panipat in 1526. How could it be that Bengalis became so reputed in it in only 3 years?
A deep study shows otherwise. We have records of use of firearms in a battle 9 years prior to the Panipat. In Lendas de India by Gaspar Correia we find out of a naval skirmish between the Portuguese & Bengalis in 1517. What happened was a Portuguese Captain named Silvera had feud with the brother of the administrator who was the Gromal of Chakoria. Silvera had proceeded to pirate 2 of his ships filled with rice. So as response the Gromal had began to fire cannons at the Portuguese ships from the fortress of Chakoria. So we see an fortress armed with cannons used in a naval battle against the Portuguese ships. Perhaps the first modern naval battle in subcontinent.
However that too wasn’t the 1st mention of cannons in Indian history. In Gujarat's own Arabic history Zafar Al-Walih bi Mizaffar wa Alihi we find out that the founder of the Muzaffarid dynasty Sultan Ahmad Shah I had used cannons in the Battle of Thane against the Bahmanids. Actually the Battle of Panipat saw the first use of cannons in the Hindustan region specifically & not the whole Subcontinent. But does that make Gujarat the pioneer of firearms in the subcontinent. Not exactly as we've barely set foot on the tip of the iceberg.
Kuochunli has stated the existence of gun factoris in Bengal in the Yinghya Shinlan. He writes this of his 1409 visit which was 117 years prior to the 1st Battle of Panipat! Keep in mind that guns are a far more advanced technology than cannons. The first cannons ever used in Europe was during the Battle of Crecy in 1346 AD by the English. But it wasn’t until 1453 AD at the Siege of Constantinople did European soil see the use of modern cannons. Just imagine how advanced it makes Bengal of this period.
Now we look at the elephant of our room. The Bacchawali which now rests at the Nizamat Fort Campuss at Murshidabad. It's name literally means the pregnant woman. It is named so as it's sound is said to have caused miscarriages to pregnant women. It's 5.49 metres in length, 55.88 cm in width & has the mass of 7657 kg. Very much a rival & if not even superior to the Dardanelles as it has proven to be more durable where as the later had received a crack. It was previously carbon dated to have been constructed between 12th to 16th century. Many believe it have been the cannon of founder of the Bengal Sultanate Shamsuddin Ilyas Shah (Oitihasihik Murshidabad, Dailyhunt). There are reasons to believe it. We have the mention of Yavana King's (of Bengal) usage of cannons in an inavasion of Jajanagara (in Orissa) in the Niranjaner Rushma of the Agamapurana by Ramai Pandita. It was composed in the mid 14th century as the only Bengali text at end of the so called dark age of Bengali literature. He should've well flourished within Ilyas Shah's reign. Another evidence is a praise of the feudal Kana ruler Kedara of Vishakhapatnam which mentions the usage of Agniyastra (meaning firearms) by his Yavana overlord against the King of Orissa. Thus from both sources we can conclude that Ilyas Shah used cannons against Orissa. Which makes him the sole candidate as the pioneer of firearms in Bengal & thus the Subcontinent as a whole.
But how did Bengal develop cannons so early? There could be multiple factors behind it. Bengal had a strong relationship with China during the early Ilyas Shahi period. It could've been that it was the Chinese that the Bengalis learnt to make firearms from. On top of that the Barendra region is also has mines of Sulphur from which gunpowder is made. These could've played the role in Bengal's early development of firearms.
Author: Ishtiak Ahmed
Historical General 05-September-2022 by east is risingআজকের দিনে, গবেষণা চোরকে নাও চিনে।
বাঙালী ছাত্র যদুনাথ সিংহের গবেষণা চুরি করে নিজের নামে চালিয়েছিল সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ। রাধাকৃষ্ণণের মত চিটিংবাজ জাতীয় শিক্ষক নয়। আজ শিক্ষক দিবস নয়। দিল্লী চোরকে শিক্ষক বলে। যেমন হিন্দি কে রাষ্ট্রভাষা।
আমাদের জাতীয় শিক্ষক পন্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। আর ঠিক তিন সপ্তাহ পরেই জাতীয় শিক্ষক দিবস। ২৬শে সেপ্টেম্বর। সর্বকালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বাঙালি, বীরসিংহের সিংহহৃদয় পন্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্মদিবস।
যে দুই খন্ডের ‘Indian Philosophy’ গ্রন্থের জন্য সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণের ডক্টরেট পাওয়া, আসলে সেটা তার লেখাই নয়। সেটি লিখেছিলেন বাঙালী গবেষক ডঃ যদুনাথ সিংহ। ১৯১৭ সালে যদুনাথ এমএ পাশ করার পর তার গবেষণা পত্রের প্রথম খন্ড ও দ্বিতীয় খন্ড কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে জমা করেন। সেখান থেকেই চুরি করে সেই গবেষণা রাধাকৃষ্ণণ ১৯২৭ সালে লন্ডন থেকে নিজের নামে প্রকাশ করেন। প্রকাশের বেশ কিছু দিন পর যদুনাথ সিংএর নজরে আসে। এবং ১৯২৯ সালে ২২ আগস্ট কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন। অনেক দিন মামলা চলার পর ‘আউট অফ কোর্ট সেটেলমেন্ট’ হয়।
বিড়লার দালাল, ১৯৪৩এ ৫০ লক্ষ বাঙালী খুনের অন্যতম নেপথ্য নায়ক শ্যামাপ্রসাদ থিসিস চোর রাধাকৃষ্ণণকে বাঁচিয়েছিল। প্রবল চাপ সৃষ্টি করে বাঙালী গবেষক ডঃ যদুনাথ সিংহকে বাধ্য করেছিল অসাধু চোর চিটিংবাজ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণের বিরুদ্ধে যদুনাথের থিসিস চুরি করে নিজের নামে চালানোর বিরুদ্ধে আদালতের কেস তুলে নিতে। এই তো সব নিকৃষ্ট লেভেলের মাল। দিল্লী তোমায় বাঙালী গবেষক যদুনাথের নাম শেখাবে না, শেখাবে চিটিংবাজ থিসিস চোর রাধাকৃষ্ণণের নাম, বানাবে চোরের মূর্তি, চোরের গলায় পরাবে মালা।
Collected from Facebook Post of Tuhin Bhowmik
Author: Saikat Bhattacharya
Historical General 05-September-2022 by east is risingবাংলার মাটিতে যোগেন মন্ডলের মতন বহুজন সমাজের নেতৃত্বের খুব দরকার ছিল। দেশভাগের পর আম্বেদকরের পাল্লায় পড়ে তিনি তাঁর অনুগামীদের নিয়ে বরিশালে না থেকে এপার বাংলায় ফিরে এলে এখানকার মূলনিবাসী বহুজন সমাজ একটা শক্ত খুঁটির জোর পেত। জগজীবন রামের কাছে তিনবার হেরে ভূত হওয়া আম্বেদকরকে তিনিই বাংলা থেকে জিতিয়ে আনেন, নইলে আম্বেদকরের পক্ষে আইনসভায় যাওয়া সম্ভব ছিল না। সেই আম্বেদকরই, ভারত রাষ্ট্রের বাদবাকি মনুবাদী শাসকদের মতই বাংলাভাগের পক্ষে সায় দিয়ে যোগেন মন্ডল, রসিক বিশ্বাস এদেরকে চিরতরে কোণঠাসা করে দিলেন। বাংলা নিজের এক ভূমিপুত্র হারিয়ে দলিত, নিম্নবর্ণের মুসলমান তথা নমঃশূদ্রদের মসিহা হিসেবে এক বহিরাগত পশ্চিমা আম্বেদকরের ভজনায় মেতে উঠল।
জাতিসত্তার চেতনায় এই চর্চাও জরুরী।
জয় মণ্ডল।
জয় মণ্ডল।
Author: Sujoy Sarkar
Historical General Manuvad Brahmannwad মনুবাদ ব্রাহ্মণ্যবাদ 25-August-2022 by east is risingগত পর্বে পরিলক্ষিত হয়েছিল যে বাঙালী হিন্দু আদতে একটি গোলাম জাতি। এই পর্বে এই বিষয়ে বিশদে আলোচনা করব।
বাঙালী হিন্দুর অফিসিয়াল ইতিহাস শুরু হয় ঊনবিংশ শতকে। এটি বাঙালী নিজেই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে। ঊনবিংশ শতকের কতগুলো অতিসাধারণ ব্যাক্তিকে নিয়ে বাঙালী হিন্দু রীতিমত ধর্মীয় কাল্ট বানিয়ে ফেলেছে এবং তাদের নিয়ে কিছু শুনলেই একদম খড়গহস্ত হয়ে ওঠে (যদিও প্রকৃত শত্রু দেখিলে আবার গর্তে ঢোকে)। এই সময়েই নাকী ‘নবজাগরণ’ ও বাঙালী হিন্দুর গব্বের সময়। যদিও 1870 পর্যন্ত কিছু বাঙালী পুঁজিপতির বিকাশ হয়েছিল তবে তা 1870 এরপরে থেকে পিছু হঠতে শুরু করে। আর সব থেকে বড় কথা এইসময়ে বাঙালী হিন্দু ছিল ঔপনিবেশিক শাসনে পরাধীন। নিতান্ত আহাম্মক জাতি না হলে ঔপনিবেশিক পরাধীনতার সময়কে ভালো বলে কোন মুখ্খে। অথচ বাঙালী হিন্দুর ন্যারেটিভটাই হল এমন, আগে আমাদের কোন অস্তিত্ব ছিলনা, শুধু সতীদাহ আর বাল্যবিবাহ হত, নারীরা খুব অত্যাচারিত হত, আমরা পড়াশুনা করতে জানতামনা ইত্যাদি ইত্যাদি। রামমোহন, বিদ্যাসাগর, রবীন্দ্রনাথ এসে আমাদের উদ্ধার করে দিয়েছেন। আদতে ব্রিটিশ আমলে ঔপনিবেশিক শাসন পরিচালনার জন্যে প্রচুর বাবু-কেরানীর দরকার ছিল। সেটি তৈরী করতেই ঔপনিবেশিক শিক্ষাব্যাবস্থা প্রচার করা হয়েছিল। আর মোগলদের হাতে বাংলার সার্বভৌমত্ব চলে যাবার পরে অনেক অবক্ষয় ঘটেছিল বাংলার, তাই সেগুলির প্রভাব ব্রিটিশ আগমনের সময়েও ছিল। সতীদাহরোধ ও বিধবাবিবাহ চালুর খুব সহজ কারণ দিয়ে দেওয়া যেত জন্মহার বাড়িয়ে ডেমোগ্রাফি শক্তিশালী করার। কিন্তু সেটা না করে হল উল্টো, যেহেতু বাঙালীর মস্তিষ্কে যুক্তিবুদ্ধির বিকাশ হয়নি এবং মূলত আবেগে চলেতাই তার নারী পুজাই শেষ কথা বলল। এবং সে তার নারী পুজাকেই তত্ব বানিয়ে নারীবাদী হয়ে উঠল যার প্রভাবে ধীরে ধীরে ডেমোগ্রাফিকালি দূর্বল হতে শুরু করল। এছাড়াও যেহেতু ঊনবিংশ শতক থেকেই বাঙালীর ভূমিকা ছিল মূলত বাধ্য চাকর হিসাবে, ফলে গোলামিও বাঙালীর মজ্জাতে ঢুকে গেল। এছাডাও বাঙালী স্বভাবতই নিশ্চিত জীবন চায় এবং স্থিতাবস্থা চায়। ফলত পরাধীনতায় সুরক্ষিত থাকাকেই তারা বেছে নিল। এইভাবে বাঙালী ধীরে ধীরে মেরুদণ্ড খুইয়ে নতমস্তক ক্রীতদাসে পরিণতহল। সমসাময়িক বাঙালীর তথাকথিত আইকনদের রচনাতেও বাঙালীর গোলাম হওয়াকেই মোক্ষ বলেছেন। ‘সুবোধবালক’ হওয়া থেকে ‘ভারতের মহামিলনের তীর্থে’ বিলীন হওয়ার মাধ্যমে বাঙালী হিন্দু একটি আপাদমস্তক গোলাম জাতি তৈরী হল। বাংলা সাহিত্যে ও বিজাতীয়দের নায়ক ও বাঙালী শাসকদের খলনায়ক বানিয়ে হীনমন্যতা ঢুকিয়ে দেওয়া হল।
অথচ বাঙালী হিন্দু যখন রাজনৈতিক ধাক্কা খেল, দেশভাগে বিপর্যস্ত হল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল থেকে বিহার সবেতেই কচুকাটা হল তখন কিন্তু এই কবিতা, গদ্য, সাহিত্যের ঝুড়ি ঝুড়ি জ্ঞান তাদের বাঁচাতে আসেনি। বাঙালী হিন্দু যে শশাঙ্ক, দেবপালদের বিস্মৃত করে দিয়েছিল তার মাসুল দিতে হল।
বর্তমানেও বাঙালী হিন্দু একটি গোলাম গোষ্ঠী এবং এটাই আশা করে যে রাষ্ট্র তাদের ঢেলে ঢেলে চাকরি দেবে এবং স্থিতাবস্থা বজায় রেখে নিশ্চিন্তে মধ্যবিত্তের জীবন কাটাবে। এর ফলে ভৃত্য হওয়া ছাড়া আর কোন উপায় নেই।
বাঙালী হিন্দুর নেতা ও সেই হয় যে আরামে নিরাপদে বসে ফাঁকায় বুলি ঝাড়বে এবং অন্যদের বিনামূল্যে গাড্ডাতে ফেলবে। বিপদ আসলে সেই নেতাই চম্পট দেয়।
এর কারণ বাঙালি হিন্দু মেরুদণ্ডযুক্ত পুরুষকে সহ্য করতে পারেনা। ফলে ভেড়ুয়া ও ধান্দাবাজরাই দখল নেবে এবং নিজেদের ক্ষুদ্র ব্যাক্তিস্বার্থ গোছাবে।
ভারতের সকল জাতিই ইতিহাস সচেতন কেবল বাঙালী বাদে। এর ফলে বাঙালী অন্য জাতির কাছে ভ্যালিডেশন খোজে ও তাদের সাথে একাত্ম হতে চায়। কিন্তু ছিন্নমূল চাকরদেরকে পাত্তা দেবে।
যে নিজেকে সম্মান করে না, যার মেরুদণ্ড সোজা নয়, যে টিকে থাকার জন্যে পরনির্ভর, যে সর্বদাই অপরকে তুষ্ট করাকে মোক্ষ ভাবে তার কপালে তো ভোগান্তি আছেই।
Read MoreAuthor: Purandhar Khilji
Historical Hindu 19-August-2022 by east is risingবাংলার সাথে তাইমূরীদের শত্রুতা অর্ধশত বছরের প্রাচীন। মূলত বাবুরের হিন্দুস্তান বিজয়ের সাথে সাথেই ১৫২৬ ঈসায়ীতে এর আরম্ভ হয় এবং এর প্রাথমিক অংশের শেষ হয় ১৫৭৬ সালে।
বাংলা বিজয়ের স্বপ্ন বাবুরের সত্য হয়নি, তাকে কেবলমাত্র ১টি সীমান্ত যুদ্ধে(গোগরার যুদ্ধ ১৫২৯ ঈঃ) জয়লাভ করেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিলো।
বাবুরের পুত্র সম্রাট হুমাইয়্যূন বাংলা অধিকারে সমর্থ হন ১৫৩৯ সালে, যদিও বাংলার সুলতানের কাছ থেকে নয়, হানাদার শের শাহ্'র হাত থেকে।
হুমাইয়্যূনের পুত্র সম্রাট আকবার ষড়যন্ত্র ও দাগাবাজীর মাধ্যমে বাংলার রাজধানী অধিকারে সমর্থ হন ১৫৭৬ সালে- আগ-মাহালের যুদ্ধের মাধ্যমে।
অর্থাৎ বাংলার রাজধানী অধিকার করতেই তাইমূরীদের লেগেছিলো ৫০ বছর!
যদিও রাজধানীকে স্থায়ীভাবে অধিকার করতে না পেরে রাজধানীই সড়িয়ে নেয়া হয়- আগ-মাহালে।
তদুপরি বাংলা থেকে কোন কর আদায় করতে পারেননি- সম্রাট আকবার! যার মূল কারণ ছিলেন ঈসা খান ও উনার মদদপুষ্ট ছোট ছোট রাজন্যবর্গ।
উপরন্তু আকবারকে দ্বিগুণ বেতন, ভাতা ও জায়গীর দিতে হতো বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যায় অবস্থানরত তাইমূরী সৈন্যদের!
সমস্থ স্বাধীনতাকামী শক্তিগুলোকে পর্যুদস্থ করে বাংলা অধিকার করতে তাইমূরীদের সময় লেগেছিলো আগের ৫০ বছর+ ১৫৭৬-১৬১২ ঈঃ পর্যন্ত আরও ৩৬ বছর! অর্থাৎ মোট ৮৬ বছর!
১৬১২ সালের পরও বাংলা থেকে কোন কর আদায় করতে পারেননি সম্রাট জাহাঙ্গীর! যতোদিন না সুবাহ্দার হয়ে আসেন জাহাঙ্গীরের শ্যালক ইব্রাহীম খান ফাতিহ্ জাঙ্গ!
১৬১৭ সালে ইব্রাহীম খান বাংলার সুবাহ্দার হয়ে আসেন ও ১৬১৮ সালে সম্রাট ও সম্রাজ্ঞীর জন্য ১০ লাখ টাকা প্রেরণ করে। যদিও সে যুগের ১০ লাখ একালের ১০ হাজার কোটি টাকার সমান।
বাংলা থেকে এই ১ম নগদ অর্থ প্রেরিত হলো তাইমূরী সাম্রাজ্যের কোষাগারে! অর্থাৎ শত্রুতার ৯২ বছরে ১ম অর্থ আদায় করতে পেরেছিলেন বাংলা থেকে!
জহাঙ্গীরের পুত্র শাহ্ জাহান ১৬২৮ সালে সিংহাসনে আরোহণ করে বাংলাকে নিয়মের অন্যান্য প্রদেশের মতোই একই নিয়মে আনার পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। তিনি কাসিম খান জুঈনীকে বাংলার সুবাহ্দার নিযুক্ত করে প্রেরণের সময় তৃণমূল পর্যায়(গ্রাম) থেকে কর নির্ধারণ ও আদায় করে তা প্রেরণের নির্দেশ দেন। তারই ফলশ্রুতিতে ১৬৩০ সালে ১ম বাংলা থেকে নিয়মতান্ত্রিক ভাবে কর প্রেরিত হলো সম্রাটের কাছে।
অর্থাৎ সম্রাট বাবুর যে স্বপ্ন দেখেছিলেন তা পূরণ হতে তাইমূরীদের লেগেছিলো মোট ১০৪ বছর! এ দিক দিয়ে শাহ্ জাহান-ই ১ম সার্থক তাইমূরী সম্রাট!
Read MoreAuthor: Abdur Rahman
Historical General 17-August-2022 by east is risingআম্রপালী ছিলেন এমন একজন অনিন্দ্য সুন্দরী ; প্রায় ২,৫০০ বছর আগে রাষ্ট্র যাকে বানিয়েছিল নগরবধূ বা পতিতা-
স্বাদের দিক থেকে অনেকের কাছেই 'আম্রপালী' আম খুবই প্রিয় । আকারে ছোট কিন্তু মিষ্টির দিক থেকে যেন সকল আমকে পিছনে ফেলে দিয়েছে 'আম্রপালী' । কিন্তু এই আমটার নামকরণ কোথা থেকে হল জানেন ?
আম্রপালী জন্মেছিলেন আজ থেকে ২,৫০০ বছর আগে ভারতে । তিনি ছিলেন সে সময়ের শ্রেষ্ঠ সুন্দরী এবং নর্তকী । তার রুপে পাগল ছিল পুরো পৃথিবী আর এই রুপই তার জন্য কাল হয়ে ওঠে । যার কারণে তিনি ছিলেন ইতিহাসের এমন একজন নারী, যাকে রাষ্ট্রীয় আদেশে পতিতা বানানো হয়েছিল !
আম্রপালী বাস করতেন বৈশালী শহরে । বৈশালী ছিল প্রাচীন ভারতের গণতান্ত্রিক একটি শহর, যেটি বর্তমানে ভারতের বিহার রাজ্যের অর্ন্তগত ।
মাহানামন নামে এক ব্যক্তি শিশুকালে আম্রপালীকে আম গাছের নিচে খুঁজে পান । তার আসল বাবা-মা কে ইতিহাস ঘেঁটেও তা জানা যায়নি । যেহেতু তাকে আম গাছের নিচে পাওয়া যায় তাই তার নাম রাখা হয় আম্রপালী । সংস্কৃতে আম্র মানে আম এবং পল্লব হল পাতা । অর্থাৎ, আমগাছের নবীন পাতা ।
কিন্তু শৈশব পেরিয়ে কৈশোরে পা দিতেই আম্রপালীকে নিয়ে হইচই পড়ে যায় । তার রুপে চারপাশের সব মানুষ পাগল হয়ে যান । দেশ-বিদেশের রাজপুত্রসহ রাজা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ তার জন্য পাগলপ্রায় হয়ে যান । নানা জায়গায় থেকে তাকে নিয়ে দ্বন্দ, ঝগড়া আর বিবাদের খবরও আসতে থাকে । সবাই তাকে একনজর দেখতে চান, বিয়ে করতে চান । এ নিয়ে আম্রপালীর মা-বাবা খুব চিন্তিত হয়ে পড়েন । তারা তখন বৈশালীতে সকল গণমান্য ব্যক্তিকে এর একটি সমাধান করার জন্য বলেন । কারণ, সবাই আম্রপালীকে বিয়ে করতে চান । তখন বৈশালীর সকল ক্ষমতাবান ও ধনবান ব্যক্তি মিলে বৈঠকে বসে নানা আলোচনার পর যে সিদ্ধান্ত নেন তা হল, আম্রপালীকে কেউ বিয়ে করতে পারবেন না । কারণ তার রুপ । সে একা কারো হতে পারে না । আম্রপালী হবে সবার । সে হবে একজন নগরবধু, মানে সোজা বাংলায় পতিতা ।
এটা ছিল একটা ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত । ইতিহাসে এভাবে রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্তে কাউকে পতিতা বানানো হয়েছে এমন সিদ্ধান্ত খুবই বিরল ! আম্রপালী সে সভায় পাঁচটি শর্ত রাখেন-
(১) নগরের সবচেয়ে সুন্দর জায়গায় তার ঘর হবে ।
(২) তার মুল্য হবে প্রতি রাত্রির জন্য পাঁচশত স্বর্ণমুদ্রা ।
(৩) একবারে মাত্র একজন তার গৃহে প্রবেশ করতে পারবেন ।
(৪ ) শক্র বা কোন অপরাধীর সন্ধানে প্রয়োজনে সপ্তাহে সর্বোচ্চ একবার তার গৃহে প্রবেশ করা যাবে ।
(৫) তার গৃহে কে এলেন আর কে গেলেন- এ নিয়ে কোন অনুসন্ধান করা যাবে না ।
সবাই তার এসব শর্ত মেনে নেন । এভাবে দিনে দিনে আম্রপালী বিপুল ধন-সম্পদের মালিক হয়ে ওঠেন । তার রুপের কথাও দেশ-বিদেশে আরও বেশী করে ছড়িয়ে পড়তে থাকে ।
প্রাচীন ভারতের মগধ রাজ্যের রাজা ছিলেন বিম্বিসার । শোনা যায়, তার স্ত্রীর সংখ্যা নাকি ৫০০ ছিল ! নর্তকীদের নাচের এক অনুষ্ঠানে তিনি এক নর্তকীর নাচ দেখে বলেছিলেন, এ নর্তকী বিশ্বসেরা ।
তখন তার একজন সভাসদ বলেন- মহারাজ, এই নর্তকী আম্রপালীর নখের যোগ্য নয় !
বিম্বিসারের এই কথাটি নজর এড়ায়নি । তিনি তার সেই সভাসদের থেকে আম্রপালী সম্পর্কে বিস্তারিত শুনে তাকে কাছে পাবার বাসনা করেন ।
কিন্তু তার সভাসদ বলেন, সেটা সম্ভব নয় । কারণ, তাহলে আমাদের যুদ্ধ করে বৈশালী রাজ্য জয় করতে হবে আর আম্রপালীর দেখা পাওয়াও এত সহজ নয় । দেশ-বিদেশের বহু রাজাসহ রাজপুত্ররা আম্রপালীর প্রাসাদের সামনে তার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেন । কিন্তু মন না চাইলে তিনি কাউকে দেখা দেন না ।
এত কথা শুনে বিম্বিসারের আগ্রহ আরও বেড়ে গেল । তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন, ছদ্মবেশে বৈশালী রাজ্যে গিয়ে আম্রপালীকে দেখে আসবেন । কি এমন আছে সেই নারীর মাঝে, যার জন্য পুরো পৃথিবী পাগল হয়ে আছে !
তারপর বহু চড়াই উৎরাই শেষে তার আম্রপালীর সাথে দেখা করার সুযোগ আসে । আম্রপালীর প্রাসাদ আম্রকুঞ্জে । কিন্তু দেখা করতে গিয়ে রাজা চমকে উঠেন, এত কোন নারী নয় ; যেন সাক্ষাৎ পরী ! এ কোনভাবেই মানুষ হতে পারেন না । এত রুপ মানুষের কিভাবে হতে পারে !
কিন্তু অবাক রাজার জন্য আরও অবাক কিছু অপেক্ষা করছিল । কারণ, আম্রপালী প্রথম দেখাতেই তাকে মগধ রাজ্যের রাজা বলে চিনে ফেলেন এবং জানান- তিনি তার প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছেন বহু আগে থেকেই ।
এই কথা শুনে রাজার বিস্ময়ের সীমা থাকে না ।
রাজা সাথে সাথে তাকে তার রাজ্যের রাজরাণী বানানোর প্রস্তাব দেন । কিন্তু আম্রপালী জানান, তার রাজ্যের মানুষ এটা কখনোই মেনে নেবেন না । উল্টো বহু মানুষের জীবন যাবে । রক্তপাত হবে । তাই রাজাকে দ্রুত এখান থেকে চলে যেতে বলেন ।
কিন্তু বিম্বিসার বৈশালী আক্রমন করে আম্রপালীকে পেতে চান । ওদিকে আম্রপালী তার নিজের রাজ্যের কোন ক্ষতি চান না । তাই তিনি রাজাকে তার নিজ রাজ্যে ফেরত পাঠান এবং বৈশালীতে কোন আক্রমণ হলে তিনি তা মেনে নেবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন ।
এদিকে বিম্বিসারের সন্তান অজাতশত্রুও আম্রপালীর প্রেমে মগ্ন ছিলেন । তিনি বিম্বিসারকে আটক করে নিজে সিংহাসন দখল করে বসেন এবং আম্রপালীকে পাওয়ার জন্য বৈশালী রাজ্য আক্রমণ করে বসেন । কিন্তু দখল করতে সক্ষম হননি এবং খুব বাজেভাবে আহত হন । পরবর্তীতে আম্রপালীর সেবায় সুস্থ হয়ে গোপনে তার নিজের রাজ্যে ফেরত যান । সেদিনও আম্রপালী অজাতশত্রুর বিয়ের প্রস্তাব সবিনয়ে ফিরিয়ে দেন ।
এত নাটকীয়তার পর শেষের দিকে এসে কি হল ? গৌতম বুদ্ধর সময়কাল তখন । গৌতম বুদ্ধ তার কয়েকশ সঙ্গী নিয়ে বৈশালী রাজ্যে এলেন । একদিন বৈশালী রাজ্যের রাবান্দা থেকে এক বৌদ্ধ তরুণ সন্ন্যাসীকে দেখে আম্রপালীর মনে ধরে গেল । তিনি ভাবলেন, দেশ-বিদেশের রাজারা আমার পায়ের কাছে এসে বসে থাকেন আর এত সামান্য একজন মানুষ । তিনি সেই সন্ন্যাসীকে চার মাস তার কাছে রাখার জন্য গৌতম বুদ্ধকে অনুরোধ করলেন । সবাই ভাবলেন, বুদ্ধ কখনই রাজি হবেন না । কারণ, একজন সন্ন্যাসী এমন একজন পতিতার কাছে থাকবেন ; এটা হতেই পারে না । কিন্তু গৌতম বুদ্ধ তাকে রাখতে রাজি হলেন এবং এটাও বললেন, আমি শ্রমণের (তরুণ সে সন্ন্যাসীর নাম ছিল) চোখে কোন কামনা-বাসনা দেখছি না । সে চার মাস থাকলেও নিষ্পাপ হয়েই ফিরে আসবে- এটা আমি নিশ্চিত !
চার মাস শেষ হল । গৌতম বুদ্ধ তার সঙ্গীদের নিয়ে চলে যাবেন । তরুণ শ্রমণের কোন খবর নেই । তবে কি আম্রপালীর রুপের কাছেই হেরে গেলেন শ্রমণ ? সেদিন সবাইকে অবাক করে দিয়ে তরুণ শ্রমণ ফিরে আসেন । তার পিছনে পিছনে আসেন একজন নারী । সেই নারীই ছিলেন আম্রপালী । আম্রপালী তখন বুদ্ধকে বলেন, তরুণ শ্রমণকে প্রলুব্ধ করতে কোনও চেষ্টা বাকি রাখেননি তিনি । কিন্তু এই প্রথম কোন পুরুষকে বশ করতে ব্যর্থ হয়েছেন বৈশালীর নগরবধূ আম্রপালী । তাই আজ সর্বস্ব ত্যাগ করে বুদ্ধের চরণে আশ্রয় চান তিনি ।
পরে সব কিছু দান করে বাকী জীবন গৌতম বুদ্ধের চরণেই কাটিয়ে দেন ইতিহাস বিখ্যাত সেই রমণী আম্রপালী আর এই আম্রপালী নামেই ১৯৭৮ সালে ভারতের আম গবেষকরা 'দশোহরি' ও 'নিলাম'- এই দু'টি আমের মধ্যে সংকরায়ণের মাধ্যমে এক নতুন জাতের আম উদ্ভাবন করেন এবং নাম রাখেন 'আম্রপালী' ।
Collected From Facebook by Anonymous Writer
Author: Saikat Bhattacharya
Historical Hindu 17-August-2022 by east is risingবাঙালী হিন্দুর সঠিক বিকাশ হয়নি সে নিয়ে গত পর্বেই আলোচনা করছি।এই পর্বে আরো গভীরে যাব এবং দেখব কীভাবে বাঙালী হিন্দুর কয়েকটি চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য তাদের ধ্বংসের কারণ হয়ে উঠেছে।
বাঙালী হিন্দু হল কূপমণ্ডুক গোষ্ঠী। ছোট্ট সংসার, পাড়া, অফিস-কাছাড়ি এই নিয়েই তার জীবন।তার ফলে এর বাহিরে সে দুনিয়া দেখতে পারেনা। এছাড়া সে সর্বদাই তার এই ক্ষুদ্রজগতে কূপমণ্ডুকের ন্যায় সীমাবদ্ধ থাকে এবং একেই দুনিয়া হিসাবে মানে। এই ক্ষুদ্র জগতের বাইরে সম্পর্ক গড়তেও সে অনিচ্ছুক। তাই বৃহৎ জগত কেউ ওয়াকিবহল থাকেনা।ফলত তার জীবনের কোন পরিবর্তন হয়না। কূপমণ্ডুক হবার কারণে অত্যন্ত সংকীর্ণমনা ও আত্মকেন্দ্রিকও হয়, ফলত এরা নিজেদের দল বাড়াতে তো পারেইনা উল্টে খেয়োখেয়ি করে আরো ছোট হয়।যদি যে কোন বাঙালী সংগঠনকে পর্যবেক্ষণ করা যায় তাহলে দেখা যাবে যে তারা ক্রমাগত ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে ছোট ছোট দল তৈরী হচ্ছে।বাঙালী হিন্দু জুড়ে বড় হতে পারেনা, ভেঙ্গে ছোট হতে জানে। এর কারণ হিসাবে বাঙালী হিন্দুর উত্তরাধিকার ব্যাবস্থাও দায়ী, পৈতৃক সম্পত্তি সন্তানদের মধ্যে ক্রমাগত ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হতে হতে শেষে কিছুই থাকেনা।যেহেতু তারা কূপমণ্ডুক ও জগত থেকে বিচ্ছিন্ন থাকে তাই এগুলিকে অবলীলায় স্বাভাবিক হিসাবে মেনে নেয়।
যেহেতু তারা কুয়োর জগতে পড়ে থাকে তাই নিজেদের বর্তমান অবস্থা কী, কোনটা ঠিক কোনটা বেঠিক, কীভাবে অবস্থার উন্নতি করে যায়, দুনিয়াটা কি সেই বিষয়ে কোন বোধই গড়ে ওঠেনা।
এছাড়াও কূপমণ্ডুকতার কারণে তারা কূটনৈতিক, রাজনৈতিক জোট বা মিত্রতা গড়তে পারেনা। কে শত্রু ও কে বন্ধু এই বোধ আসেনা। কার সঙ্গে লড়া উচিত কার সঙ্গে নয়, এই বোধ না থাকার কারণে দিনের শেষে বাঙালী হিন্দু একা হয়ে যায়। আবেগে ভেসে অনেকে অগ্নিযুগের বিপ্লবী থেকে নক্সাল হতে যায় এবং দিনের শেষে তার পরিণাম আরো ভয়ঙ্কর হয়।
বাঙালী হিন্দু সংগঠিতই হতে পারেনা, তো একা লড়ে কিছু আদায় করা তো দূর, ভোগান্তি ছাড়া কিছু আসেনা।এরা কারুর সাথে সখ্যতা তৈরী না করে সবার সাথেই বৈরীতা তৈরী করে ফেলে এবং সকলের চক্ষুশূল হয়।বর্তমান পরিস্থিতি বিচার করলে এটাই বোঝা যায় যে বাঙালী হিন্দুর কোন মিত্রই নেই এবং যেই সুযোগ পায় সে এসে অবলীলায় সর্বনাশ করে যায়।
আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল বাঙালী হিন্দুর পরিচয়হীনতা। কোন বাঙালী হিন্দুই জানেনা সে নিজে কে? কেউ বলবে আমি বিশ্বমানব, কেউ আগে মানবতাবাদী, কেউ হয় ভারতীয়, কেউ বিশ্বহিন্দু, কেউ রাবীন্দ্রীক বাঙালী, ইত্যাদি।অর্থাৎ বাঙালী হিন্দু নিজেই জানেনা তার পরিচয়। অথচ শত্রুর কাছে সে বাঙালী বা বাঙালী হিন্দু হিসেবেই চিহ্নিত হয় ও আক্রমণের শিকার হয়। পরিচয় না গড়ে ওঠারও মূল কারণ হল কূপমণ্ডুকতা এবং ঐতিহাসিক বিকাশ না হওয়া।ফলত নিজের ক্ষুদ্র জীবনের নাগপাশেই আবদ্ধ হয়ে থাকে ও বৃহৎ দৃশ্যটি দেখতে অক্ষম।
নানা ভাবে ও রাষ্ট্রীয় মদতে বাঙালী হিন্দুর মধ্যে চাকুরীজীবী মধ্যবিত্ত শ্রেণী উলু বনে শেয়াল রাজা হয়ে উঠেছে।এই শ্রেণীর সহযোগীতাতে বাকী বাঙালী বিশেষত পুঁজিপতি, উৎপাদক, সংগঠক শ্রেণীদের শেষ করে দেওয়া হয়েছে।বাঙালী গরীবদেরকেও তুষ্ট করে তাদের উচ্চাকাঙ্খাকে শেষ করে দেওয়া হয়েছে।তাছাড়া বাঙালী হিন্দুর অন্তর্নিহিত ঈর্ষা ও উলু বনে শেয়াল রাজা থাকার বাসনা সমস্ত সম্ভাবনাময় বাঙালীকে ধ্বংস করে দিয়েছে।ফলে আপৎকালে বাঙালীর রক্ষাকর্তার কোন উদয় হয়নি। যেহেতু এরা কূপমণ্ডুক ও তাই অকারণেই হাম্বড়া। এরা মধ্যবিত্ত জীবনটাকেই স্বর্গসুখ ভাবে।
আবার এই চাকরীজীবী শ্রেণী তো সম্পূর্ণরূপে পরনির্ভর। ফলে এরা টিকে থাকার জন্যে রাষ্ট্রের উপরেই নির্ভর।ফলত এরা রাষ্ট্রের বাধ্য ক্রীতদাস।ভারত রাষ্ট্র বাঙালীর নয় সেই বোধটাও বিকাশ হয়নি কারণ ইহাদের কাছে সরকারী চাকুরে বা আইটি কুলি হওয়ার মতো মোক্ষ আর নেই।ফলত বাঙালী হিন্দুই ভারত রাষ্ট্রের প্রতি শর্তহীন আনুগত্য দেখায় যদিও ভারত রাষ্ট্র প্রথম থেকেই বাঙালী হিন্দুর পেছনে আছোলা বাঁশ দিয়ে যাচ্ছে, কীভাবে তা নিয়ে দ্বিতীয় পর্বে আলোচনা করা আছে। ভারতের বাকী জাতিরা রাষ্ট্রের সাথে দরকষাকষি করে নিজেদেরটা বাগিয়ে নেয় কিন্তু বাঙালী হিন্দুর সেই মুরোদ নেই। এতেও বাঙালী হিন্দুর পশ্চাদপদতা বোঝা যায়।
জয়ন্ত ভাণ্ডারী বা প্রবীণ সাহনি ভারতের শাসক জাতিরই ব্যাক্তি। একজন পশ্চিম ভারতীয় জৈন ও অপরজন পাঞ্জাবী হিন্দু। কিন্তু তা সত্বেও এরা ভারতকে তুলোধোনা করতে পিছপা হয়না।অথচ বাঙালী হিন্দু রাষ্ট্রের থেকে কিছু পায় তো নিই বরঞ্চ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।তাতেও বাঙালী হিন্দুই ভারত রাষ্ট্রের প্রতি শর্তহীনভাবে সিজদা করে চলেছে এবং আজকেও কোন বাঙালী জয়ন্ত ভাণ্ডারীর হদিশ পেলামনা।
উপসংহার হিসেবে এটাই বলতে হয় যে মোটের উপর বাঙালী হিন্দু একটি পশ্চাৎপদ গোলাম জাতি এবং আদৌ স্বশাসনের যোগ্যতা যে নেই তাও বলা যায়।এই অবস্থার দ্রুত বদল হতে হবে নয় বাঙালী হিন্দুর ঠাঁই যাদুঘরেও হবেনা।অথচ মরণকালেও বোধোদয় হয়নি এবং মুষ্টিমেয় কিছু দূরদর্শী বাঙালী হিন্দু যারাই অবস্থার পরিবর্তন করার চেষ্টা করছে তারাই প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হচ্ছে স্বজাতির থেকে। তা সত্বেও তাদের শুভকামনা জানিয়ে আমার লেখা শেষ করলাম।
Read MoreAuthor: Purandhar Khilji
Historical Hindu 17-August-2022 by east is risingশাহী বাংলার ইলিয়াস শাহী বংশের তৃতীয় সুলতান গিয়াসুদ্দিন আজম শাহ সর্বপ্রথম চীনের মিং সাম্রাজ্যের সহিত কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেন।
তার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্কেরও সূচনা হয়।
এরপর 1402 থেকে 1435 খ্রীষ্টাব্দ পর্যন্ত মিং শাসক ইয়ঙ্গলে সম্রাটের(Yongle Emperor) পৃষ্ঠপোষকতায় অ্যাডমিরাল Zheng He এর নেতৃত্বে বিখ্যাত Ming Treasure Fleet Voyage শুরু হয়। বহু দফায় এই অভিযান চলেছিল। বিশাল এক বাণিজ্য নৌবহর বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ব্যাবসা ও বাণিজ্যের কার্যে যেত মিং সাম্রাজ্যের ঐশ্বর্যিক শক্তি প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে। এই অভিযানের সময় এই নৌবহর বাংলার উপকূলেও আসে। তখন বাংলার তৎকালীন সুলতান সৈফুদ্দিন হামজা শাহ ইয়ঙ্গলে সম্রাটের উদ্দেশ্যে একটি জিরাফকে রাজকীয় উপঢৌকন হিসাবে প্রেরণ করে। এই জিরাফটি পূর্ব আফ্রিকার মালিন্দি অঞ্চল থেকেই আগত ছিল।
প্রসঙ্গত জিরাফের সহিত চৈনিক উপকথার এক কিংবদন্তি প্রাণী কিলিন(qilin) এর সাদৃশ্য আছে। সেইকারণে মিংসম্রাট এই উপহারটি সাদরে গ্রহণ করেন এবং ইহাকেই স্বর্গের বিধান(Mandate of Heaven) হিসাবে আখ্যা দেন এবং এর ফলে তিনি যে শাসক হিসাবে বৈধ তা প্রমাণিত হয়। (Mandate of Heaven হল চীনের শাসকের বৈধতাপ্রাপ্তির মাপকাঠি)
বাংলা ও চীনের ঐতিহাসিক সুসম্পর্কের নিদান এই উপঢৌকনটি। বাংলার ঐতিহাসিক ভূরাজনৈতিক শক্তিরও একটি নিদান এটি। এরপরথেকে বঙ্গচৈনিক যোগ আরো নিবিড় হতে থাকে।
Read MoreAuthor: Sayak Bhattacharya
Historical General 14-August-2022 by east is risingশাহী বাঙ্গালা সালতানাতে অসংখ্য সুদক্ষ সুলতান ও বীর সেনাপতির আগমন ঘটেছে। তবে আসাম থেকে উড়িষ্যা পর্যন্ত কিংবদন্তিতে চিরস্মরণীয় হয়ে আছে বাংলার যে সেনানায়কের নাম, তিনি হলেন কালাপাহাড়। সাহিত্য কিংবা সিনেমা, লোকমুখে প্রচলিত মিথ বা কিংবদন্তি সব কিছু ছাপিয়ে যাঁর নাম আজও বিখ্যাত হয়ে রয়েছে যে মহান বীরের নাম, তিনি আর কেউ নন, তিনিই কালাপাহাড় । কে ছিলেন কালাপাহাড়? কেনই বা তার নামে এতো কিংবদন্তী তুল্য উপাখ্যান?
আজ আলোচনা করবো সে কথাই, আজ আলোচনা করতে চলেছি "বঙ্গ রক্ষক" কালাপাহাড় সম্পর্কে।
কালাপাহাড় বর্তমান বাংলাদেশের রাজশাহী মতান্তরে নওগাঁ জেলার বীরজোয়ান গ্রামে সম্ভ্রান্ত ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন ভাদুড়ি বংশের সম্ভ্রান্ত বারেন্দ্রী ব্রাহ্মণ। তাঁর বাল্যনাম ছিলো রাজীবলোচন রায় মতান্তরে কালাচাঁদ রায়- ডাকনাম ছিলো রাজু। রাজু ভাদুড়ী হিসেবেই পরিচিত ছিলেন কালাপাহাড়। তাঁর পিতা নয়নচাঁদ রায় ছিলেন বাংলার সুলতানের অধীনস্থ ফৌজদার। অকালে পিতৃহারা হয়ে রাজীবলোচন রায় ভাদুড়ি ভাগ্যের সন্ধানে সুলতান সুলায়মান শাহ'র সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। অতি অল্প সময়ের মধ্যেই মেধা ও সমরকুশলতায় সুলতান ও অন্যান্য পদস্থ কর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে উচ্চপদে নিযুক্তি লাভ করেন। ধর্মপ্রাণ ব্রাহ্মণ ছিলেন রাজু,, নিয়মিত বিষ্ণুপূজা করতেন। সুদর্শন কালাপাহাড়ের সাথে সুলায়মান শাহ কারলানীর সুন্দরী কন্যা দুলারী বিবির প্রণয়ের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দুলারী বিবি পিতার কাছে কালাপাহাড় কে বিবাহ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। কালাপাহাড় শাহজাদীকে বিবাহ করার জন্য ধর্মান্তরিত হয়ে মুসলিম হন ও মুহাম্মাদ ফর্ম্মুলী নাম ধারণ করেন। কালাপাহাড়ের সাথে দুলারী বিবির শুভ বিবাহ সম্পন্ন হয়। তিনি অচিরেই সুলায়মান শাহ'র প্রধান সেনাপতি পদ লাভ করেন।
কালাপাহাড় মুসলিম হওয়ায় বর্ণবাদী উগ্র ব্রাহ্মণ সমাজ তাকে সমাজচ্যুত করে । তিনি ইসলাম গ্রহণের পরও তাঁর বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-পরিজনের সাথে সৌহার্দ্য বজায় রাখবার চেষ্টা করলেও ধর্মান্তরের কারণে হিন্দু সমাজ তাঁকে পরিত্যাগ করে, বারংবার তাঁকে অপদস্থ হতে হয়।
এমতাবস্থায় নিজ জাতি কর্তৃক অপমানে জর্জরিত হয়ে শেষমেশ তিনি মায়ের পরামর্শে পদ-পদবী, ক্ষমতা, প্রিয়তমা নবপরিণিতা স্ত্রীর ভালোবাসা , রাজবংশের জামাতার সম্মান, জীবন-মৃত্যুর ভয়, শাস্তি সবকিছু উপেক্ষা করে প্রায়শ্চিত্তের জন্য পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে গমন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। কিন্তু জগন্নাথ ধামের পুরোহিতরা তাকে অত্যন্ত জঘন্য ভাষায় অপমান করে তাকে দেবালয়ে প্রবেশ করতেই দেয় নি। ব্রাহ্মণ্যবাদী উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের দ্বারা অপমানিত-অপদস্থ হয়ে কালাপাহাড়ের মনে হিন্দু ধর্ম সম্পর্কে তীব্র বিদ্বেষের সৃষ্টি হয়। ধীরে ধীরে হিন্দু রীতি-নীতি সম্পর্কে তাঁর মনে জন্ম নেয় তীব্র ঘৃণা। তিনি প্রচণ্ড হিন্দু ধর্মবিদ্বেষী হয়ে ওঠেন...…।
বাংলায় তখন চলছে পাঠান কারলানী রাজবংশের শাসন, তান্ডার সিংহাসনে আসীন সুলতান সুলায়মান শাহ্ কারলানী (রহ.)
উড়িষ্যার সিংহাসনে তখন পরাক্রমশালী সম্রাট মহারাজ গজপতি হরিচন্দন মুকুন্দদেব। গজপতি হরিচন্দন মুকুন্দদেবের একের পর এক আক্রমণ আসছে দক্ষিণ ভারতীয় সালতানাত ও বাংলার উপর। তান্ডা দখলের অভিপ্রায়ে বারবার সপ্তগ্রামে আক্রমণও করেছেন উড়িষ্যারাজ। এইভাবে শাহী বাঙ্গালাহ্'র সার্বভৌমত্ব তখন উড়িয়া গজপতিদের কাছে হুমকির মুখে। বাংলা সালতানাত বারবার হুমকির মুখে পড়ছে উড়িয়া হিন্দুদের। উড়িয়াদের একের পর এক হানায় বাংলার মুসলিম সাম্রাজ্যের অস্তিত্ব হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। বাংলার মুসলিম শাসনকে রক্ষার জন্য মুশরিক শক্তির বিরুদ্ধে আবির্ভূত হলেন যে মহামানব, তিনিই কালাপাহাড়।
১৫৬৪-৬৫ খ্রিষ্টাব্দে সম্রাট আকবরের বশ্যতা স্বীকার করে নেন ও উড়িষ্যার গজপতি হরিচন্দন মুকুন্দদেব গৌড় আক্রমণ করে গঙ্গার তীরে অবস্থিত সপ্তগ্রাম অধিকার করে নেন। ১৫৬৫ সালে ত্রিবেনীর যুদ্ধে পরাজিত হলেন সুলায়মান শাহ কারলানী, সন্ধি করতে বাধ্য হলেন মুকুন্দদেবের সাথে।
বাদশাহ আকবর যখন মেবারের শিশোদীয় রাজপুতদের সঙ্গে দীর্ঘকাল যুদ্ধে ব্যস্ত ছিলেন, সুলায়মান শাহ ১৫৬৮ খ্রিস্টাব্দে উড়িষ্যা আক্রমণ করেন। মুকুন্দদেব কোটসামা দুর্গে আশ্রয় গ্রহণ করলে সুলায়মান শাহ্ কালাপাহাড়ের অধীনে ময়ূরভঞ্জের অরণ্যসংকুল পথে উড়িষ্যা আক্রমণ করতে সৈন্য পাঠান।
এইসময় মুকুন্দদেব তার এক বিদ্রোহী সামন্তের হাতে নিহত হন, এর ফলে ওই বিদ্রোহী সামন্ত এবং রঘুভঞ্জ ছোটরায় উড়িষ্যার সিংহাসন দখল করার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু উভয়েই কালাপাহাড় কর্তৃক পরাজিত ও নিহত হন।
১৫৬৮ সালে মহাপরাক্রান্ত সম্রাট গজপতি মুকুন্দদেবকে শোচনীয়ভাবে পরাজিত ও পৃথিবী থেকে গজপতিদের সমূলে উৎখাত করে চিরস্থায়ীভাবে উড়িষ্যা বিজয় করেন কালাপাহাড়। এরপর ১৫৭৬ সালে রাজমহলের যুদ্ধে সম্রাট দাউদ শাহ্ কারলানীর পরাজয়ের পর্যন্ত আর কখনো উড়িষ্যা বাংলা সালতানাতের হাতছাড়া হয় নি!
উড়িষ্যা জয় করে কালাপাহাড় উপস্থিত হলেন পুরীর কুখ্যাত জগন্নাথ মন্দিরে। দেবালয়ে প্রবেশ করেই পূর্বের স্মৃতি মনে পড়লো কালাপাহাড়ের। ইসলাম গ্রহণের অপরাধে কী নিদারুণ যাতনা ভোগ ও অপমানের শিকারই না হতে হয়েছিলো তাঁকে!! কেউ তাকে গ্রহণ করেনি,কেউ না! বাংলার ব্রাহ্মণ্যবাদী সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে ক্ষিপ্ত মহাবীর কালাপাহাড়।
প্রতিশোধ গ্রহণের তীব্র স্পৃহা ও ব্রাহ্মণ্যবাদী বিভাজনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ালেন কালাপাহাড়। জগন্নাথ মন্দিরে প্রবেশ করে গরুর চামড়ার বিশাল ঢোল হাতে নিয়ে বাজাতে লাগলেন। ঢোলের তীব্র শব্দে মন্দিরের বিগ্রহগুলো খসে খসে পড়তে লাগলো। বাঙ্গালীবীরের তীব্র ঢোলের আওয়াজে ব্রাহ্মণ্যবাদী শক্তির অন্তরাত্মা ক্রন্দন করে উঠলো। এককালে অপমানিত হয়েছিলেন যেই মন্দিরে, সেই জগন্নাথ মন্দির তছনছ করে দিলেন কালাপাহাড়। উড়িষ্যার সকল মন্দিরে ধ্বংসযজ্ঞ চালালেন তিনি। ময়ূরভঞ্জের মন্দির, কোনার্কের সূর্য মন্দিরের সকল দেবালয় উপড়ে ফেলেন কালাপাহাড়।
জগন্নাথ নামে কথিত দেবতার মূর্তি চিল্কা হ্রদে নিক্ষেপ করলেও
জগন্নাথের কোনো অভিব্যক্তি দৃশ্যমান হলোনা!
তিনি কোচরাজ বিশ্বসিংহের পুত্র বিখ্যাত সমরনায়ক শুক্লধ্বজ কে পরাজিত ও বন্দি করেন এবং কোচরাজ্যসহ কামরূপের তেজপুর পর্যন্ত অধিকার করে বাঙলার অন্তর্ভুক্ত করেন ।
কালাপাহাড়ের মন্দির ধ্বংসের কৌশল ছিলো অন্য রকম। তিনি দেবালয়ে প্রবেশ করে একটি গরুর চামড়ার তৈরি ঢোল নিয়ে প্রচন্ড শব্দে বাজাতেন। সেই বিকট আওয়াজে প্রতিমাগুলো খসে খসে পড়তো। এই আওয়াজ মু-শ-রি-ক রাজশক্তির বিরুদ্ধে ইসলামের রাজনৈতিক বিজয়ঘোষণাস্বরূপ।
অতঃপর সমস্ত ধন-রত্ন লুট করে কালাপাহাড় চলে যেতেন।
কালাপাহাড়ের আসাম জয়ের সময় ইতিহাসের এক অভিনব পুনরাবৃত্তি ঘটে। প্রায় দুই শতাব্দী পূর্বে ১৩৫৬ সালে শাহ-ই-বাঙ্গালিয়ান শামসুদ্দীন ইলিয়াস শাহের কামরূপ জয়ের সময় আসামের কামাখ্যা মন্দিরের সীতাযোনীপূজারীরা ধারণা করেছিলো, তাদের পূজ্য সীতাযোনীর কারণেই ইলিয়াস শাহ কামরূপ দখল করতে পারবেন না , তাদের সেই ধারণা সেদিন ব্যর্থ হয়েছিলো....কালাপাহাড়ের আসাম অভিযানেও তারা একই চিন্তা করলো যে, সীতাযোনিমূর্তির জন্যই কালাপাহাড় আসামের কিছুই করতে পারবেন না। এবারো পূজারীদের আশায় নিরাশ হতে হলো। গাজী কালাপাহাড় কামাখ্যা মন্দিরে ভাঙচুর চালালেন...
সুলায়মান শাহ-এর মৃত্যুর পর তাঁর জ্যেষ্ঠ পুত্র বায়াজিদ শাহ সিংহাসনে বসলেও আমির ওমরাহ তার অযোগ্যতার কারণে তাঁ কে হটিয়ে কনিষ্ঠ পুত্র দাউদ শাহ কররানীকে সিংহাসনে বসান। দাউদ শাহ-এর সার্বক্ষণিক সহচর ছিলেন কালাপাহাড়।
রাজমহলের যুদ্ধ:
১৫৭৫ সালের তুর্কাইয়ের যুদ্ধে দাউদ শাহ্ পরাজিত হলে বিহার-বাংলা মুঘলদের অধীনে চলে যায়, কররানী দের নিয়ন্ত্রণে থাকে কেবল উড়িষ্যা। কিন্তু তান্ডায় প্লেগ ছড়িয়ে পড়লে ৫০০০ সৈনিক ও ১৫ জন সেনাপতিসহ সুবাদার মুনিম খান মৃত্যুবরণ করলে এই সুযোগে কালাপাহাড় কে সঙ্গে নিয়ে উড়িষ্যা থেকে গৌড় পর্যন্ত প্রতিটি দুর্গ অধিকার করেন দাউদ শাহ। অন্যদিকে দাউদ শাহর ডানহাত ভাটির রাজা ঈসা খাঁ তাঁর শক্তিশালী নৌবহর দিয়ে হামলা চালিয়ে পূর্ববাঙলাকে মুঘল নিয়ন্ত্রণমুক্ত করেন।
আকবর খান জাহান হোসেইন কুলী খান তুর্কমান কে পাঠান দাউদ শাহকে দমনের জন্য। বাবা খান কাকশাল,ইসমাইল বেগ, জান বাহাদুর বাহসুতী, রাজা গোপাল, রাজা তোডরমল, শাহাম খান, কিয়া খান, মোজাফফর হোসেন খান তুর্বাতী প্রমুখ বড় বড় মানসাবদারদের নিয়ে ৯১ হাজার সৈন্যসহ রাজমহলের প্রান্তরে গঙ্গার তীরে উপস্থিত হয় মুঘল বাহিনী। দীর্ঘ আটমাস তোপযুদ্ধে কেউ কারোর ক্ষতি করতে না পারলেও ১১ই জুলাই রাতে বিশ্বাসঘাতক কুতলু খান লোহানি মুঘলদের জানিয়ে দেয়- সাইফ-ই-পাখতুন ফৌজ জুনায়েদ খান কররানী আজ প্রচন্ড গরমের কারণে সেনাশিবিরের বাইরে চারপায়ার উপরে ঘুমুচ্ছেন। সঠিক জায়গায় তোপ দাগে মুঘল ফৌজ। গোলার আঘাতে উড়ে যায় জুনায়েদ খান কররানীর একটি পা।
পরের দিন ১২ই জুলাই বিশ্বাসঘাতক শ্রী হরি ও কুতলু খান লোহানির প্রেরিত তথ্যের ভিত্তিতে মুঘলরা গঙ্গানদী পেরিয়ে বাংলার বাহিনীকে আক্রমণ করতে সক্ষম হয়।
বাবা খান কাকশাল অতর্কিতে কালাপাহাড়কে আক্রমণ করে বসেন। কালাপাহাড় বাবা খান কাকশালের বাহিনীকে বিধ্বস্ত করে দেন।
সবাই ভেবেছিলো প্রচন্ড আহত হওয়ায় জুনায়েদ খান যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। কিন্তু সবাই হতবাক হয়ে দেখলো, একটি পা উড়ে যাবার পরেও জুনায়েদ হাতির পিঠে চড়ে লড়াই করছেন ও বিহারের মুঘল সুবাদার মোজাফফর হোসেন খান তুর্বাতীর বাহিনীকে বিধ্বস্ত করে দেন। কিন্তু ক্রমশ প্রচন্ড রক্তক্ষরণ হতে থাকলে হাওদাপৃষ্ঠে লুটিয়ে পড়েন জুনায়েদ, শহীদ হলেন সাইফ-ই-আফগান ফৌজ জুনায়েদ খান কররানী। তাঁর মৃত্যুতে বাংলার পরাজয় প্রায় নিশ্চিত হয়ে যায়।
এমন ক্রান্তিকালে রণাঙ্গন ছেড়ে নিজেদের বাহিনীসহ চলে যায় কুতলু খান লোহানী ও শ্রী হরি বিক্রমাদিত্য। ফলে বাংলার বাহিনী ব্যাপক দুর্বল হয়ে পড়ে। যুদ্ধে পরাজয় নিশ্চিত জেনে কালাপাহাড় নিজে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পলায়ন করেন ও সুলতান দাউদ শাহ কে পালানোর জন্য তাগাদা দিতে থাকেন। বীরদর্পে আগ্রাসী দখলদার হিন্দুস্তানী ফৌজের বিরুদ্ধে লড়াই করেন দাউদ শাহ।
আবুল ফজলের ভাষায়-
[ সেই উগ্র সিংহ প্রবল বিক্রমে অনেককেই আহত ও নিহত করলেন। যদি তিনি কোনো অশ্বারোহীকে আঘাত করছিলেন, তাহলে ঘোড়াসহ সেই অশ্বারোহীকে তিনি দ্বি-খণ্ডিত করছিলেন। যখনই তিনি কাউকে আঘাত করছিলেন তার মাথা তার পায়ের কাছে পড়ছিলো ]
শেষে দাউদ শাহ পালাতে সম্মত হন। কিন্তু, প্রচণ্ড যুদ্ধে সুলতানের ঘোড়াও নিহত হয়েছিলো। তখন দাউদ শাহর এক চাকর দালিত বাদাখনী সুলতানকে নিজের ঘোড়া প্রদান করলো ও জঘন্য বিশ্বাসঘাতকতা করে সুলতান কোন পথে যাচ্ছেন তা মুঘলদের জানিয়ে দিলো। সুলতান বেশিদূর যেতে পারলেন না। একটি পার্বত্য নদীর কাছেই ধৃত হলেন সুলতান। তাঁকে হাজির করা হলো খান জাহানের সামনে।
খান জাহান হোসেন কুলী খান তুর্কমানের প্রতি আকবরের নির্দেশ ছিলো দাউদ শাহ যদি আকবরের বশ্যতা স্বীকার করে নেন, তাহলে তিনি বাংলার সুবাদার হিসেবে নিযুক্ত হবেন।
দাউদ শাহকে খান জাহান বললেন- বাদশাহ আকবরের বশ্যতা স্বীকার করে নিন।
কিন্তু বাংলার সার্বভৌম সম্রাট যিনি, তিনি কি আর হিন্দুস্তানের অধীনতা মানতে পারেন!
দাউদ শাহ উদ্ধতস্বরে জবাব দিলেন- "বাংলার বাদশাহ আসমানের বাদশাহ ব্যতীত অন্য কারো সামনে মাথা নত করে না।"
দাউদ শাহের মাথা তীক্ষ্ণ তলোয়ার দিয়ে কেটে ফেলা হলো। দাউদের রক্তে বাংলার মাটি লাল হয়ে গেলো। বাঙ্গালার সার্বভৌমত্ব লুপ্ত হলো।
বাংলা সালতানাতের পতনের পর বাংলা নামেমাত্র মুঘল সাম্রাজ্যের প্রদেশে পরিণত হয়, ছড়িয়ে পড়ে বিদ্রোহ। উড়িষ্যায় গাদ্দার কুতলু খানকে রাজত্ব দেয়া হয়,সুন্দরবনে গাদ্দার শ্রীহরি ও তার ভাই বসন্ত রায়কে রাজত্ব দেয়া হয়। বেশিরভাগ অংশ স্বাধীন হয়ে যায়। ভাটির রাজা ঈসা খাঁ বিদ্রোহের লাল ঝান্ডা উত্তোলন করেন। সকল ভূস্বামী ও আফগান দলপতিরা ঈসা খাঁর অধীনে যোগ দিতে থাকেন।
আকবর দ্বীন-ই-ইলাহি প্রবর্তন করে সরাসরি মুর্তাদ হয়ে গেলে আকবরের অনেক সেনানায়ক বিদ্রোহ করেন এবং ভাটিরাজ ঈসা খাঁর কাছে আশ্রয় নেন।
মাসুম খান কাবুলির সাথে আকবরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহে যোগদান করেন কালাপাহাড়। আজীবন হিন্দুস্তানি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছেন কালাপাহাড়।
১৫৮৩ সালের ৪ এপ্রিল বিহারে মুঘল বাহিনীর সাথে যুদ্ধে শহিদ হন কালাপাহাড় (রহঃ)
বাংলা থেকে ব্রাহ্মণ্যবাদী শক্তিকে সমূলে উৎখাত করার জন্য সারাজীবন লড়ে গেছেন কালাপাহাড় (রহঃ), মৃত্যুভয়কে তুচ্ছ করে দিল্লীর আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন বাঙলার স্বাধীনতার জন্য।
২০০৬ সালে উগ্রবাদী হিন্দুরা বিহারে কালাপাহাড় ও তাঁর সহযোদ্ধাদের সমাধি ধ্বংস করে দেয়।
লেখক:- রাজিত তাহমীদ জিত
০৯.০৮.২০২২
তথ্যসূত্র- (১) উড়িষ্যা-কামরূপ বিজয়ী বাঙালি বীর 'কালাপাহাড়' - সরদার আব্দুর রহমান
(২) তারিখ-ই-সালাতিন-ই আফগানা /তারিখ-ই-শাহী - আহমেদ ইয়াদগার
(৩) তারিখ-ই-দাউদী- আব্দুল্লাহ
(৪) তারিখ-ই-বাঙ্গালাহ- মুফতি সলিমউল্লাহ
Read MoreAuthor: Rajit Tahmid Jeet
Historical General 09-August-2022 by east is rising
মহরম একটা মাসের নাম ( ইসলামিক ক্যালেন্ডারের প্রথম মাস ) আর কারবালা একটা জায়গা যেটি ইরাকে অবস্থিত। এখানে ১০শে অক্টোবর ৬৮০ খ্রিস্টাব্দে ( ১০শে মহরম ৬১) একটি ঘটনা হয়েছিল। একটা যুদ্ধ, অসম যুদ্ধ। এই যুদ্ধের পেছনের প্রেক্ষাপট বা ইতিহাস একটু দীর্ঘ তাই তার বিবরণ আর দিচ্ছি না। তবে এটা প্রায় সবাই স্বীকার করে যে এজিদের বাবা, নিজে খলিফা থাকা কালে, নিজের স্বাক্ষরিত চুক্তি ভঙ্গ করেন ও নিজ পুত্র এজিদ কে অন্যায্য ভাবে খলিফা করেন। কিনতু খলিফা হবার কথা ছিলো প্রথমে হাসানের। হাসান কে বিষ খাইয়ে মেরে দেবার পর তার ছোট ভাই হোসেনের।
এজিদ ছিলো একজন অত্যাচারী রাজা । খলিফা হবার পরে সে স্বাভাবিক ভাবেই হোসেনের আনুগত্য দাবী করে। যা হোসেন দিতে অস্বীকার করে। মক্কা থেকে দূরে কুফার পথে যাবার সময় এজিদের সৈন্য হোসেনের পথ আটকায়। হোসেনের সাথে তখন তার পরিবার ও ঘনিষ্ঠরা । বাচ্চা ও মহিলাদের বাদ দিলে অস্ত্র ধরবার মতো সাকুল্যে ৭২ জন। এজিদের হয়তো ধারণা ছিলো আনুগত্য স্বীকার করে নেওয়া ছাড়া হোসেনের কাছে আর কোন পথ নেই।
এজিদের হাজারের বেশী সসস্ত্র বাহিনী কারবালার প্রান্তরে শুধু হোসেন কে ভয় দেখিয়ে আনুগত্য চেয়েছিল। হোসেনের কাছ থেকে এজিদের প্রতি আনুগত্য। ফুরাত নদীর পাড়ে সসস্ত্র সেনা বাহিনী দাঁড় করিয়ে দেয়, যাতে হোসেন ও তার পরিবার জল খেতে না পায়। তিন দিন আটকে থাকার পরও জল না পেয়ে হোসেনের কাছে যুদ্ধ ছাড়া আর কোন পথ ছিল না। হারবো জেনেও একটা যুদ্ধ - মারা যাবো জেনেও অন্যায়ের সাথে আপোস না করার মনোভাব । ৭২ জনের সবাই মারা যাবে জেনেও আপোস করে নি , যুদ্ধের ময়দান ছাড়েনি। সত্যকে অবলম্বন করে বেঁচেছে, সত্যর জন্য মারাও গেছে।
অথচ আপোসের রাস্তাটা কতো সোজা ছিলো। কিছু লাগবে না, শুধু একজন কে শাসক বলে মেনে নিতে হতো। একজন অন্যায্য ভাবে ক্ষমতা পাওয়া লোককে, একজন অত্যাচারী কে শাসক বলে মেনে নিতে হতো। তাহলেই সব সেট হয়ে যেত, তাহলেই সব ঠিক হয়ে যেত। তুমি তোমার মতো থাকো, আমাকে আমার মতো থাকতে দাও ।
আসলে আজও আমরা হোসেনের নামে বুক চাপড়াই কেন জানেন - কারণ আমরা কেউ হোসেন হতে পারি না । আমরা সব সময় সোজা পথ টা বেছে নিই। কোনটা ঠিক বা কোনটা ভুল ? সেটা ভাবি না - আমাদের বিচার্য কোনটা ?আমার কি? ভুল জেনেও আমরা রোজ আপোস করি। চাকরীর জন্য ঘুষ, উন্নতির জন্য তেল আমাদের মজ্জায়। তাই আমরা "হায় হোসেন !" বলে বুক চাপড়াই। রাস্তা ঘাটে রোজ লাগাম হীন অনিয়ম ও অন্যায় - আমরা রোজ করি বা হতে দিই। সেই দুঃখে আমরা ' হাই হোসেন বলে বুক চাপড়াই ' ।
আজ কের দিনে দাঁড়িয়ে মাঝে মাঝে মনে হয় এই রকম না হয়ে পৃথিবীর সব গ্রাম আর শহর যদি একদিনের জন্য কারবালা হতো আর দিনটা ১০ ই মহরম ৬১ । শুধু একটা দিনের জন্য আমাদের শিরদাঁড়া টা থাকতো হোসেনের মতো । আর আমরা সবাই বলতে পারতাম অন্যায়ের সাথে একবিন্দু আপোস করবো না । মরে গেলে ও না।
আমরা সবাই যদি একদিনের জন্য হোসেন হোতে পারতাম!
যদি প্রতিদিন, প্রতিটি স্থানে কারবালা হতো, আর আমার সবাই রোজ হোসেন হতাম। তাহলে হয়তো আর "হায় হোসেন!" বলে বুক চাপড়াতে হতো না !!
Read MoreAuthor: Minhajur Rahaman
Historical General 09-August-2022 by east is risingঅনেকে প্রায়ই প্রশ্ন করে থাকেন যে বাংলার সুলতানরা বায়োলজিক্যালি কোন জাতির ছিলেন? আবার অনেকের মধ্যে বদ্ধমূল একটি বড়ো রকমের ভ্রান্ত ধারণা আছে যে, বাঙ্গালা সালতানাতের সুলতানরা নাকি তুর্কী ছিলেন!
আজ সে বিষয় নিয়েই খোলাখুলিভাবে আলোচনা করতে চলেছি। এর উত্তর হলো- স্বাধীন বাংলা সালতানাতে রাজত্বকারী কোনো রাজবংশই তুর্কী ছিলো না, বাংলার একজন সুলতানও তুর্কী ছিলেন না, একজনও নয়।
মহান বাঙ্গালা সালতানাতে (১৩৫২-১৫৩৯, ১৫৫৪-১৫৭৬) ৬ টি রাজবংশ রাজত্ব করেছে। যথা- (১) ইলিয়াস শাহী বংশ, (২) রাজা গণেশের পরিবার বা কানস শাহী বংশ, (৩) হাবশী বংশ (৪) হোসেন শাহী বংশ, (৫) মুহাম্মাদ শাহী বংশ এবং (৬) কররানী রাজবংশ `|| ~
(১) এর মধ্যে বাংলা সালতানাতের সূচনাকারী ইলিয়াস শাহী রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা শামসউদ্দিন ইলিয়াস শাহ্ ছিলেন একজন পার্শিয়ান, আরও নির্দিষ্ট করে বললে তিনি ছিলেন সিস্তানী। সিস্তানীরা হলো ইরানে বসবাসকারী একটি স্বতন্ত্র সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠী, ইরানের সিস্তান-বালুচিস্তান প্রদেশে যাদের বাস।
সিস্তানীরা ইউরেশিয়ার শক জাতির বংশধর, সিস্তানীরা সুপ্রাচীনকাল থেকে ছিলো যোদ্ধা জাতি।
সুলতান ইলিয়াস শাহ্ ছিলেন একজন পার্শিয়ান ( সিস্তানী) বংশোদ্ভুত ব্যক্তিত্ব এবং তাঁর মাতৃভাষা ছিলো পার্শিয়ান সিস্তানী (ফার্সী ভাষার সিস্তানি উপভাষা)
সুতরাং যেহেতু সুলতান ইলিয়াস শাহ পার্শিয়ান ছিলেন, তাই তার প্রতিষ্ঠিত ইলিয়াস শাহী বংশ এথনিক্যালি পার্শিয়ান (সিস্তানি)
আর ইলিয়াস শাহী বংশের সুলতানরা সকলেই ধর্মান্তরিত বাঙালি নেটিভ বিয়ে করতেন। ইলিয়াস শাহর স্ত্রী সুলতানা ফুলওয়ারা বেগম (ফুলমতী বেগম) ছিলেন বিক্রমপুরের বজ্রযোগিনীর ব্রাহ্মণ ঘরের মেয়ে, ইসলাম গ্রহণের আগে তাঁর নাম ছিলো- পুষ্পবতী ভট্টাচার্য। তিনি সুলতান সিকান্দার শাহর আম্মা এবং ইলিয়াস শাহর সংগ্রামময় ও সাফল্যমণ্ডিত জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রের অংশীদার।
ইলিয়াস শাহের সম্রাজ্ঞী সুলতানা ফুলওয়ারা বেগম থেকে শুরু করে সকল ইলিয়াস শাহী সম্রাজ্ঞীই ছিলেন বাঙ্গালী নেটিভ। ইলিয়াস শাহী বংশের রীতি ছিলো নেটিভ বিয়ে করা। ২য় সুলতান সিকান্দার শাহ থেকে আরম্ভ করে জালালউদ্দিন ফতেহ শাহ অবধি ইলিয়াস শাহর সব বংশধর ছিলেন বাঙ্গালী নেটিভ মায়ের সন্তান। আর যেহেতু তারা নেটিভ বাঙালি মায়ের সন্তান, তাই তাদের মাতৃভাষা (মায়ের ভাষা) অবশ্যই বাংলা!
ইলিয়াস শাহ এক অসাধারণ রীতির প্রচলন করেন। ইলিয়াস শাহী সুলতানেরা সবাই বাঙালি বিয়ে করতেন। রাজপরিবারের সদস্যরা নেটিভ বিয়ে করায় রাজপরিবারের দেখাদেখি বহিরাগত অভিজাত মুসলিম আমির-ওমরাহ, সমরনায়ক, সৈনিক ও মন্ত্রীগণও বাঙালি বিয়ে করা শুরু করেন ও বাংলায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। ফলে দলে দলে বাংলার অজস্র মানুষ ইসলামের সাম্যের বাণী গ্রহণ করে মুসলিম হতে থাকে। আর এভাবেই বাংলায় ইসলামের ব্যাপক বিস্তার ঘটে এবং, বহিরাগত মুসলিমরা ধীরে ধীরে বৈবাহিক সম্পর্কের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতিসত্তার সাথে মিশে একাকার হয়ে যান। এভাবেই বহিরাগত মুসলিমরা বাংলা জনজাতির সাথে মিশে যাওয়া শুরু করেন, তারা পরিণত হন বাঙ্গালীতে।
তাই যেহেতু সিকান্দার শাহ থেকে শুরু করে সব সুলতানের মা-ই ছিলেন নেটিভ বাঙালি, তাই ইলিয়াস শাহী বংশ ছিলো- "সিস্তানী ও বাঙালির মিশ্রিত ধারা"
(২) রাজা গণেশের পরিবার বা কানস শাহী বংশ বায়োলজিক্যালি নেটিভ বাঙালিই ছিলো- সবারই জানা।
গণেশের পুত্র সুলতান জালালউদ্দিন মুহাম্মাদ শাহর রাজত্বকালে বাংলায় সবচেয়ে বেশি ইসলামের বিস্তার ঘটেছিলো। এটি প্রায় সবারই জানা যে, রাজা গণেশের পরিবার জাতিগতভাবে বাঙ্গালিই। গণেশ ছিলো বারেন্দ্রী ব্রাহ্মণ, দিনাজপুরের জমিদার। সে ইলিয়াস শাহী সুলতানদের দুর্বলতার সুযোগে ক্ষমতার দখল নিয়ে মুসলিমদের উপর অত্যাচার করা শুরু করে দিয়েছিলো। আল্লাহর ইচ্ছায় তাঁর জ্যেষ্ঠ পুত্র রাজকুমার যদু ইসলাম গ্রহণ করেন ও পিতা ও ছোটভাইকে হত্যা করে ইসলামি সাম্রাজ্য পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন।
(৩) হাবশীরা ছিলো আবিসিনিয়ান বা ইথিওপিয়ান। তাদেরকে বারবাক শাহর আমলে পঙ্গপালের মত নিয়ে আসা হয়েছিলো সেনাবাহিনী, প্রশাসনে নিযুক্তির জন্য। এরা একসময় ইলিয়াস শাহী বংশকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করে নেয় ও ছয় বছর চরম দুঃশাসন চালায়।
উল্লেখ্য, হাবশিদের সাথে বাঙালির কোনো মিশ্রণ ঘটেনি। কারণ, হাবশি দাসদের পাশাপাশি অনেক হাবশী দাসীকেও আনা হয়েছিলো। ক্রীতদাসদের সাথে ঐ আবিসিনিয় দাসীদের-ই বৈবাহিক সম্পর্ক হয়েছিলো। কোনো বাঙালিকে তারা বিবাহ করেনি কখনো এবং হাবশিদের উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করার পর সুলতান আলাউদ্দিন হোসেন শাহ্ তাদেরকে বাংলা থেকে চিরতরে বহিষ্কার করেছিলেন।
(৪) হোসেন শাহী বংশ এথনিক্যালি বাঙালি নেটিভই ছিলো।
বুকাননের মতে আলাউদ্দিন হোসেন শাহ ছিলেন পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার সন্তান।
যৌবনে গৌড়ের আধিকারিক সুবুদ্ধি রায়ের কর্মচারী ছিলেন তিনি।
অনেক ক্ষেত্রে উল্লেখ করা হয় যে, আলাউদ্দিন হোসেন শাহ আরব ছিলেন। ধারণা করার কারণ তাঁর নামের পূর্বে 'সৈয়দ' (সৈয়দ হোসেন) তাই বলা হয়ে থাকে অনেকক্ষেত্রে যে, তিনি নাকি মক্কার শরিফের সন্তান - রাসুল (সা.) এর বংশধর। রাসুল (সা.) এর বংশধরের নামের পূর্বে সৈয়দ/সায়্যিদ ব্যবহারের রীতি এসেছে শিয়াদের থেকে।
কিন্তু হোসেন শাহ ছিলেন সুন্নি। তাই রমেশ্চন্দ্র সাহার এই "সৈয়দ তত্ত্ব' গ্রহণযোগ্য নয়। আরবিতে সৈয়দ অর্থ জনাব, হোসেন শাহ উত্তরবঙ্গের নেটিভ সৈয়দ পরিবারের ছিলেন।
এছাড়া তিনি গৌড়ের সুবুদ্ধি রায়ের অধীনে কাজ করেছেন যৌবনে। একজন শরিফের সন্তান বাংলায় এসে নিম্নপদে তাও অমুসলিমের অধীনে কাজ করবেন- এটি অনেকটাই ভ্রান্ত ধারণা।
হোসেন শাহ তাঁর উস্তাদ চাঁদ কাজীর কন্যাকে বিবাহ করেছিলেন বলে শক্ত মত রয়েছে।
এই সকল কিছু
বিবেচনায় প্রমাণিত হয় যে, তিনি নেটিভ বাঙালি ছিলেন, হোসেন শাহী রাজবংশ নেটিভ। এছাড়া হোসেন শাহী বংশও ইলিয়াস শাহী বংশের মতোই বংশানুক্রমে বাঙালি নেটিভই বিবাহ করতেন। তাঁর প্রমাণ হিসেবে অনেক পুঁথিতে গ্রাম সম্পর্কে চৈতন্যকে হোসেন শাহর শ্যালক বলা হয়েছে।
হোসেন শাহ নিজে নেটিভ বিবাহ করেছিলেন। তাঁর সম্রাজ্ঞী নেটিভ ছিলেন...এছাড়া নুসরত শাহ নেটিভ ছাড়াও দিল্লীর সুলতান ইব্রাহিম লোদীর কন্যাকে বিয়ে করেছিলেন।
(৫) মুহাম্মাদ শাহী ও কররানী বংশ দুইটাই পাঠান। মুহাম্মাদ শাহী বংশের প্রতিষ্ঠাতা মুহাম্মাদ খান শূর ও কররানী বংশের প্রতিষ্ঠাতা তাজ খান কররানী।
দাউদ শাহ কররানীর পতনের পর তাঁর পুত্র শাহজাদা হাসান ও পরিবারবর্গ সিলেটে আশ্রয় গ্রহণ করেন। শাহজাদা হাসানের পুত্র দ্বিতীয় বায়েজিদ কররানী সিলেটের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করে ভাটিরাজ ঈসা খাঁর অধীনে মুগল প্রতিহতকরণে যোগ দেন। পরবর্তীতে বারো ভূঁইয়াদের পতনের পরও বাংলায় আসা আফগানরা বাংলাতেই স্থায়ীভাবে বসবাস করা শুরু করেন এবং নেটিভ বিবাহ করে বাস করতে করতে বাংলার সাথে মিশে যান।
সুতরাং, দেখা যাচ্ছে বাংলা সালতানাতের কোনো সুলতানই তুর্কী ছিলেন না, একজনও না। ইলিয়াস শাহী বংশ সিস্তানি ও বাঙালির মিশ্রিত ধারা, গণেশের পরিবার বাঙালি, হোসেন শাহী বংশ বাঙালি, এবং মুহাম্মাদ শাহী ও কররানী বংশ পাঠান।
তাই যারা বলে থাকেন বাংলা সালতানাত তুর্কীদের শাসন, কথাটি সম্পূর্ণ ভ্রান্ত।
তাহলে তুর্কী কারা ছিলেন? তুর্কী ছিলেন বখতিয়ার খলজী ও গৌড়ে নিযুক্ত দিল্লীর সুলতানের গভর্নররা। তারা কোনো সুলতান ছিলেন না, বখতিয়ার খলজি ও খলজিরা কোনো সুলতান ছিলেন না,তিনি ছিলেন কুতুব উদ্দিন আইবেকের গভর্নর। দিল্লী সালতানাতের অধীনস্থ বাংলার গভর্নররা ও লখনৌতির বলবানী শাসকেরা ছিলেন তুর্কী (১২০৪-১৩৩৮) ,, তারা বাংলা সালতানাতের কেউ ছিলো না।
বাংলা সালতানাত প্রতিষ্ঠার পূর্ববর্তী বাংলার শাসকেরা ছিলেন তুর্কী, তখন বাংলা সালতানাত ছিল না,, ছিল দিল্লীর প্রদেশ ( ১২০৪-১২৮৭, ১৩২২-১৩৩৮) এবং বলবানী সুলতানদের শাসন (১২৮৭-১৩২২)
বাংলা সালতানাত প্রতিষ্ঠিত হয় ১৩৫২ সালে ইলইয়াস শাহ কর্তৃক পুরো বাংলা জয়ের মাধ্যমে।
বাঙ্গালা সাম্রাজ্যের সুলতানরা কেউই তুর্কী ছিলেন না, ছিলেন পার্শিয়ান, বাঙালি ও পাঠান এবং তারা এথনিক্যালি যাই হয়ে থাকেন না কেন, বাঙালি জনজাতির সাথে মিশে তারা বাঙালিতে পরিণত হয়ে গিয়েছিলেন কালক্রমে। আর জেনে রাখা ভালো-
ইলিয়াস শাহ থেকে শুরু করে বাংলার সুলতানেরা সবাই নিজেকে পরিচয় দিতেন "বাঙ্গালী" নামে। শুধু সুলতানেরাই নয়, বাংলা সালতানাতের সব অভিজাত ও কর্মকর্তারাই নিজেদের পরিচয় দিতেন "বাঙ্গালি" নামে, সে তারা আরব, তুর্কি,পাঠান, বালুচ, ইরানি, তাজিক যাই হয়ে থাকুক না কেনো- বহির্বিশ্বে তাঁরা নিজেদের পরিচয় দিতেন 'বাঙ্গালী' নামে। ইরানি বংশোদ্ভুত ইলিয়াস শাহ্ নিজেকে পরিচয় দিয়েছিলেন "শাহ-ই-বাঙ্গালিয়ান" (বাঙালির সম্রাট) নামে। যিনি বাংলার তিনিই বাঙালি- তিনি এথনিক্যালি আরব না তুর্কি না অন্যকিছু সেটা বিবেচ্য বিষয় নয়। তিনি আরব বা তিনি পাঠান, বাংলার অধিবাসী যিনি তার নাগরিক পরিচয় তিনি বাঙ্গালী। আর এভাবেই শুরু হয় বাংলার মানুষের জাতিগত স্বতন্ত্র পরিচয় বা বাঙ্গালি পরিচয়ের।
বাংলার সুলতানেরা নিজেকে পরিচয় দিতেন "শাহ-ই-বাঙ্গালিয়ান" নামে এবং বাংলা সালতানাতের সৈন্যরা দিল্লীসহ সারাবিশ্বে পরিচিত হয় "পাইক-ই-বাঙ্গালাহ" হিসেবে। বাঙালি নামে যে আলাদা একটা রাজনৈতিক শক্তি আছে, তা ১৩৫২ সালের আগে ছিলোইনা, বাঙ্গালী জাতিপরিচয়ের স্রষ্টা সুলতান ইলিয়াস শাহ গাজী (রহঃ)
শায়খ নূর কুতুব উল আলম ছিলেন শাহী বাংলা সাম্রাজ্যের প্রধান ইসলামিক স্কলার। বিশ্বে তিনি পরিচিত ছিলেন "শেখ নূর বাঙ্গালী" নামে [যদিও তিনি ছিলেন এথনিক্যালি আরব]
বাংলা নামে যে আলদা কোনো জাতি আছে তার স্রষ্টাই হয়েছে বাংলা সালতানাতের মাধ্যমে। তার আগে পৃথিবী বাংলাকে জাতিপরিচয়ের ভিত্তিতে চিনতোইনা। উল্লেখ্য, এর আগে কখনো এই অঞ্চলের মানুষ নিজেদের বাঙালি পরিচয় দিতেন না, না দিতেন পরাক্রমশালী সুশাসক পাল সম্রাটেরা, না দিত দক্ষিণ ভারত থেকে আগত দ-খ-ল-দা-র শত শত শূদ্র ও বৌদ্ধের হত্যাকারী সেনরাজারা, না দিতো ধর্মান্ধ শশাঙ্ক,না দিতো দিল্লীর তুর্কি গভর্নররা (১২০৪-১৩৩৮)
মুঘল আমলে বাংলার সুবাদার ও অভিজাতরা নিজেদের হিন্দুস্তানী বলে দিতেন- বাঙ্গালি নামে তারাও পরিচয় দিতেন না নিজেকে। মুঘল বাদশাহ ও অফিসাররাও নিজেদের পরিচয় দিতেন হিন্দুস্তানী নামে। এভাবে 'হিন্দুস্তানী' পরিচয় নির্মাণে যেমন মুঘলরা ভূমিকা রেখেছিলো,
তেমনি বাঙ্গালি পরিচয় নির্মাণে ভূমিকা রেখেছিলেন কেবলমাত্র শাহী বাঙ্গালার সুলতানেরা।
বাংলা সালতানাত তাই বিশ্বে পরিচিত হয় বাঙ্গালি সাম্রাজ্য নামে এবং বাংলার সুলতানকে সারাবিশ্ব চিনতো বাঙালির সুলতান নামে, বাঙালির বাদশাহ নামে, সে তিনি হোক নেটিভ বা হোক ইরানি বা হোক পাঠান..
They were Bengali not because they were born in Bengal but because Bengal was born in them...
এই বাংলাভূমিকে তাঁরাই করেছিলেন পরাশক্তি - করেছিলেন "দারুল ইসলাম", তাই আজ সারা ভারত হিন্দু অধ্যুষিত হয়েও আমাদের বাংলা আজ মুসলিম অধ্যুষিত। আলহামদুলিল্লাহ!
উৎস:
১) তারিখ-ই-মুবারাক শাহী
২) তারিখ-ই-দাউদি
৩) আইন-ই-আকবরী
৪) রিয়ায উস সালাতিন
৫) তারিখ-ই-ফিরিশতা
৬) "ভারতজনের ইতিহাস" - শ্রীবিনয় ঘোষ
৭) চৈতন্যপুরাণ
৮) মধ্যযুগে বাংলার শাসক- আসকার ইবনে শাইখ
----------------------®-------------------------------------------
Read MoreAuthor: Rajit Tahmid Jeet
Historical General 06-August-2022 by east is rising"বাঙ্গালীদের শারীরিক গঠন মেয়েলি ও ভঙ্গুর বলা চলে। এরা বাষ্পস্নানে অভ্যস্থ। নির্জনতা প্রিয়। দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ অশক্ত, চলাফেরা নিস্তেজ ও নির্জীব। যুগের পর যুগ তারা বিদেশী শাসকদের দ্বারা পদদলিত হয়েছে। ক্ষীণ দেহ বলে এরা সাহস রাখে না, স্বাতন্ত্র্যবোধ এদের নেই এবং এরা কখনো সত্যবাদী হয় না। এদের মন ও দেহ অভিন্ন। এরা পুরুষোচিত প্রতিরোধে অপারগ, দুর্বল দেহের জন্য অসহায়বোধ করে। কিন্তু এদের নমনীয়তা ও চাতুর্য প্রশংসা ও নিন্দা উভয়ই প্রাপ্য। বস্তুত ভিন্ন জলবায়ুর লোকেরা এদের যেমন ভক্তি করে, তেমনি ঘৃণা করে। একটা দূর্বল জাতির আত্মরক্ষার্থে যেসব কৌশল প্রয়োজনে অবলম্বন করতে হয় তার সবগুলি এদের জানা আছে। জুভেনালের সময় আওনীয়দের কিংবা মধ্যযুগে ইহুদিদেরও এত কৌশল জানা ছিলো না। মহিষের কাছে সিং-এর যে মূল্য, বাঘের কাছে থাবার যে গুরুত্ব, মৌমাছির যেমন হুল, পুরনো গ্রীক কবিতা অনুসারে নারীর জন্য সৌন্দর্য যা, বাঙালির কাছে প্রতারনা সেরকম মূল্যবান। এরা লম্বা- লম্বা প্রতিজ্ঞা করে, প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করার সুন্দর অজুহাত দেখায়, প্রতারনা, মিথ্যা হলফ, জালিয়াতি এসব তারা আত্মরক্ষার্থে কিংবা অন্যের ক্ষতি করার জন্য অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে দ্বিধা করে না। গাঙ্গেয় নিম্নাঞ্চলের লোকদের স্বভাবই এরকম। বঙ্গে কয়েক মিলিয়ন বাঙালি বাস করে। অথচ এদের একজনও কোম্পানির সেনা বিভাগে নাম লেখায়নি। কিন্তু সুদের ব্যবসা, পোদ্দারি এবং মোক্তারিতে প্রতিযোগিতায় কোন জাতি এদের সামনে দাঁড়াতে পারবে না। আবার বাঙ্গালীরা নমনীয় চরিত্রের হলেও এদের মতো নির্দয় ও অদম্য শত্রু অন্য কোন জাতির মধ্যে দেখা যায় না। এরা মানুষের প্রতি করুণাশীল হতে জানে না। স্বীয় উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য ক্লান্তিহীনভাবে লেগে থাকতে জানে এবং বিপদের আশঙ্কা দেখা না দিলে ক্ষান্ত হয় না।"
এরকম আরও গুন বচন পড়তে চাইলে আগ্রহীরা দেখতে পারেন-
Memories of the life of Warren Hastings, first Governor-General of Bengal By Lord Macle, London: 1841.
লেখক মনে করে মেকলে সাহেব ঠিকই বলেছেন মূলত বাঙালি হিন্দু সম্পর্কে। বাঙালি মুসলমানদের ধরলে চরিত্র অনেকটাই আলাদা হবে যদিও কোন কোন ক্ষেত্রে মিলেও যাবে। কিন্তু লেখক মনে করে বাঙালি হিন্দুদের যে ভাল গুণগুলো মেকলে তুলে ধরেছে যেমন ব্যবসা করার ক্ষমতা বা কোন বিষয় বিপদ না থাকলে লেগে থাকার ক্ষমতা তা উনবিংশ শতকের মধ্যভাগের বাঙালি হিন্দুদের জন্যেই প্রযোজ্য। উনবিংশ শতকের শেষভাগের, বিংশ শতাব্দীর, এবং বিশেষ করে বর্তমান সময়ের বাঙালি হিন্দুদের মধ্যে ব্যবসা করার ক্ষমতা বা কোন বিষয় লেগে থাকার ক্ষমতা একেবারেই নেই। উনবিংশ শতাব্দীর বাঙালি হিন্দু নিজের দুর্বলতা সম্পর্কে সচেতন ছিল এবং গায়ের জোড় ও সাহসের কমতি চাতুর্য দিয়ে ও ধৈর্য দিয়ে পূরণ করার চেষ্টা করত।
লেখক মনে করে বঙ্কিম চন্দ্রের লেখনীর সময় থেকে মানে ১৮৬৬ সাল থেকে বাঙালি হিন্দু নিজেদের দুর্বলতাকে রাজপুত ও মারাঠা সাহসিকতার গল্প (অধিকাংশেই যা ছিল মিথ্যা) দিয়ে ঢাকার চেষ্টা করেছে। এভাবেই বাঙালি হিন্দু রাজপুত ও মারাঠাদের (যারা অতীতে বাঙালি হিন্দুদের লুট করতে আসত এবং শত্রু বলে অভিহিত হত) নিজেদের আরাধ্য বানিয়েছে এবং হিন্দু জাতিয়তা ও ভারতীয় জাতিয়তার দিকে গাঁ ভাসিয়েছে। গিতা পড়ে বম্ব বেঁধে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সাথে লড়াই করতে গেছে। আসলে মনে মনে নিজেকে হীন মনে করে সেই হীনতাকে অতিক্রম করার চেষ্টা করে গেছে। সাম্রাজ্যের সাথে লড়ে স্বাধীন রাষ্ট্র বানাবার অর্থ কি তা বাঙালি হিন্দু বোঝেনি আর তাই ব্রিটিশ সাম্রাজ্য যখন শেষ হল বাঙালি হিন্দুরা তখন উদ্বাস্তু হল আর হিন্দিভাষীদের গোলামে পরিণত হল।
Author: Saikat Bhattacharya
Historical Hindu 06-August-2022 by east is risingআধুনিক হিন্দী ভাষার বয়স ১৫০ বছরের কাছাকাছি। এই ভাষাকে স্থানীয় অনেক ভাষাকে নিশ্চিহ্ন করে কৃত্রিমভাবে তৈরি করা হয়েছে। ভারতে নেশন স্টেট বানানোর জন্য যে তিনটি মুল স্তম্ভকে বেছে নেয়া হয়।
তার একটি হিন্দু ধর্ম, একটি হিন্দি ভাষা , আরেকটি হিন্দুস্তান বলে একটি কাল্পনিক ভুখণ্ড। এই ভাষার উদ্ভব এবং বিকাশের সাথে জড়িয়ে আছে হিন্দু মহাসভার নাম।
দিল্লি এবং এর পাশের অঞ্চলের সাধারণ মানুষের যে ভাষা ছিলো তাকে হিন্দি বলয়ের বাইরের মানুষেরা বলতো হিন্দবি বা হিন্ধি। আর নিজেরা এই ভাষাকে বলতো খড়ী বোলি বা চালু ভাষা।
দিল্লি ছাড়া উত্তর ভারতের অন্যান্য অংশে ব্রজভাষা, ডিঙ্গল, মেওয়ারি, আবধী, মাগহি, ভোজপুরি, মৈথিলি এই ভাষাগুলো ব্যবহৃত হতো। সবগুলোই খুব সমৃদ্ধ ভাষা ছিলো।
কবীরের বচন ছিলো ব্রজভাষায় রচিত, মীরার ভজন ডিঙ্গলে, আবধীর কবি ছিলেন বিখ্যাত তুলশি দাস, মৈথেলি ভাষায় বিদ্যাপতি আর গোবিন্দ। কিন্তু আপনি আজকে কোন ভাষাই আর খুঁজে পাবেন না। হিন্দি সব ভাষাকে সিস্টেমিকভাবে মুছে দিয়েছে। মুছে দিয়েছে তাঁদের অমুল্য সাহিত্যের কথাও।
আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে হিন্দির আনুষ্ঠানিক ও প্রাতিষ্ঠানিক উদ্ভব হয় কোলকাতাতেই আর আজকে এই কোলকাতাতেই হিন্দির দাপটে বাঙলার ত্রাহি ত্রাহি দশা। হিন্দি ভাষার প্রসার এবং তাকে হিন্দু সাম্প্রদায়িক রূপ দেয়া হয় হিন্দু মহাসভার মাধ্যমে।
উনবিংশ শতাব্দীর শুরুতে ফোর্ট উইলিয়াম কলেজে ইংল্যান্ড থেকে আগত ইংরেজ কর্মচারিরা এখানকার চাপরাশি, সহিস, জমাদার এইধরনের ভৃত্যস্থানীয় কর্মচারিদের সাথে ও দোকানদার, ফেরিওয়ালা এদের সাথে কথা বলার জন্য যে ভাষার চর্চা করতো তা ছিল এই দিল্লির খড়ি বোলি, ইংরেজরা তাকে হিন্দি বলতো।
এই কথ্য ভাষাকে সংস্কার করে লিখিত ভাষার রূপ দেন জেমস গিলগ্রিস্ট নামের এক ইংরেজ। কলকাতা শহরেই প্রথম হিন্দি পত্রিকা প্রকাশিত হয় “উদন্ত মার্তণ্ড” নামে। তখনো পর্যন্ত হিন্দির জন্য বিশেষ কোন লিপি স্বীকৃত বা গৃহীত হয়নি।
ব্রাহ্মসমাজের কেশবচন্দ্র সেন যখন তার নতুন মতবাদ প্রচারের জন্য সারা ভারত ঘুরছিলেন তখন তিনি উপলব্ধি করেন সারা দেশের মানুষ নানা বিচিত্র ভাষায় কথা বলে, এক অঞ্চলের ভাষা আরেক অঞ্চলের মানুষ বুঝতে পারেন না।
তিনি আশ্রয় করেন হিন্দি ভাষার এবং “সুলভ সমাচার” পত্রিকার মাধ্যমে হিন্দিতে তার মতবাদ সারা ভারতে প্রচার করতে শুরু করেন। এরপরে কোলকাতায় আসেন আর্যসমাজের প্রতিষ্ঠাতা স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী একটা বক্তৃতা দিতে। তিনি ছিলেন গুজরাটি কিন্তু শিক্ষিত সমাজের মাঝে বক্তৃতা দিতে হলে বক্তৃতা দিতেন সংস্কৃতে।
এসে দেখলেন এখানে কেশবচন্দ্র সেন, দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর সবাই হিন্দিকে সামাজিক স্বীকৃতি দিচ্ছেন। এটা দেখে দয়ানন্দ সরস্বতী কোলকাতায় নিজের বক্তৃতাটা দেন হিন্দিতে। এরপরেই তিনি প্রস্তাব করেন হিন্দি নাগরি লিপিতে লেখা যেতে পারে। নাগরি লিপি হচ্ছে সেই লিপি যা দিয়ে গুজরাটি ব্রাহ্মণেরা সংস্কৃত চর্চা করতেন।
হিন্দির এই সর্বব্যাপী আগ্রাসনের ফলেই ভারতের সংখ্যালঘু মুসলমানের কাছে উর্দু হয়ে দাঁড়ালো তাঁদের আত্মপরিচয়, আর পাকিস্তান রাষ্ট্রকল্প তাঁদের কাছে হয়ে দাঁড়ালো হিন্দির দাপট থেকে মননের মুক্তাঞ্চল।
Read MoreAuthor: Pinaki Bhattacharya
Historical General 05-August-2022 by east is risingএই তোপ এতোটাই শক্তিশালী ছিলো যে কাছাকাছি কোন গর্ভবতী নারী থাকলে এই তোপের বিকট আওয়াজে ডেলিভারি হয়ে যেতো! তাই এই তোপের নাম "তোপ-ই-বাচ্চাওয়ালী"।
৭,৭৭৯ সের ওজনের এই তোপ টেনে নিয়ে যেতো ৫০০ মহিষ।
সুলতান ইলিয়াস শাহ ১৩৪৮ সালে উড়িষ্যার পূর্বগঙ্গ রাজবংশের সম্রাট ত্রিকলিঙ্গেশ্বর (উৎকল, মহাশোল ও কলিঙ্গ) তৃতীয় নরসিংহদেবের বিরুদ্ধে যুদ্ধে বাচ্চাওয়ালী তোপ ব্যবহার করেন। ১৩৪৮ সালে উড়িষ্যা জয় করেন ইলিয়াস শাহ্।
এই বিরাট তোপটিই ছিলো ভারতীয় উপমহাদেশের প্রথম ও এশিয়ার দ্বিতীয় তোপ। চীনের পর ইলিয়াস শাহ-ই প্রথম তোপ ব্যবহার করেন।
উল্লেখ্য, সম্রাট বাবর ১৫২৬ সালের ২১শে এপ্রিল পানিপথের যুদ্ধে প্রথম আধুনিক তোপ ব্যবহার করেছিলেন, কামান আরও আগে থেকেই ব্যবহৃত হয়ে এসেছিলো,, তবে ভারতে প্রথম "আধুনিক কামান" ব্যবহার করেন জহিরুদ্দীন মুহাম্মদ বাবর। আধুনিক তোপ ব্যবহারের কৃতিত্ব বাবরের হলেও উপমহাদেশের প্রথম তোপ, এশিয়ার ২য় তোপ ও বিশ্বে তৃতীয় তোপ ব্যবহারের কৃতিত্ব সুলতান ইলিয়াস শাহের ||
সুলতান শামসউদ্দিন ইলিয়াস শাহ্ ১৩৪৮ সালে নরসিংহদেবকে পরাজিত করে উড়িষ্যা জয় করেন। উড়িষ্যার বিশাল হস্তী বাহিনী ও অগ্নিবাণ নিক্ষেপকারী সৈনিকদের রক্তে চিল্কা হ্রদের পানি লাল হয়ে যায়।
ইলিয়াস শাহ্ পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে তোপ দেগে পুরো মন্দির ধুলিসাৎ করে দেন। মন্দির ধুলিসাৎ হয়ে মাটির সাথে মিশে যায় ; মন্দির ধুলিসাৎ হয়ে গেলেও জগন্নাথ দেবের কোনো খোঁজ অবশ্য মেলে নি!
নরসিংহদেব যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পলায়ন করেন। উড়িষ্যা জয় করে ইলইয়াস শাহ "গাজী" উপাধি ধারণ করেন।
উড়িষ্যা আক্রমণে তোপ ব্যবহারের প্রথম প্রমাণ পাওয়া যায়- "বিশাখাপত্তনম্" (বিশাখাপত্তনম, অন্ধ্রপ্রদেশ, ভারত ) শাসনকারী কন-রাজবংশের ২য় কেদারের উৎসর্গকৃত সংস্কৃত শ্লোক থেকে। উল্লেখ্য যে, কনরাজ ছিলেন সুলতান ইল্ইয়াস শাহ্'র তাবেদার শাসক।
তোপটি বর্তমানে মুর্শিদাবাদে হাজার দুয়ারী প্যালেস মিউজিয়ামে সংরক্ষিত রয়েছে।।
Author: Rajit Tahmid Jeet
Historical General 05-August-2022 by east is risingগণিতশাস্ত্রে ইতিহাসে বহু গণ্যমান্য ব্যাক্তিত্ব তাদের অবদান রেখে গেছেন যাদের দরুণ মানবসভ্যতার আজকের অগ্রগতি সম্ভব হয়েছে। সেই প্রাচীনকালের পিথাগোরাস থেকে আধুনিকযুগের সূচনাকালের নিউটন, সকলের হাত ধরেই গণিতশাস্ত্র সমৃদ্ধ হয়েছে ও মানবজগতের কল্যান সম্পন্ন হয়েছে। এই গুণীদের সভাতে এক বাঙালীর নামও স্বর্ণাক্ষরে খচিত হয়ে থাকবে। সেই বঙ্গরত্ন হলেন শ্রীধরাচার্য্য(আনুমানিক 870 খ্রীষ্টাব্দ থেকে 930 খ্রীষ্টাব্দ)।
বর্তমান পশ্চিমবঙ্গের হুগলী জেলার ভুরিশ্রেষ্ঠী/ ভুরশুট গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার পিতা ছিলেন সংস্কৃত পণ্ডিত বলদেবাচার্য্য ও মাতা অচ্চোকাবাঈ। পিতার পেশা অনুসরণ করেই তিনি হয়ে উঠেছিলেন সংস্কৃত পণ্ডিত, দার্শনিক এবং তার সাথে গণিতজ্ঞ।
গণিতজগতে তিনি যে অসামান্য সৃজন করে গেছেন আজ তার উপরে ভিত্তি করেই বর্তমানের গণিতজগতের অগ্রগতি সম্ভব হয়েছে। তাঁর রচিত দুটি রচনা প্রখ্যাতঃ পাটিগণিতসার/ত্রিশতিকা(তিনশো শ্লোকে রচিত বলে এই নামকরণ) ও পাটীগণিত। পাটীগণিত বিষয়ক এই দুটি রচনাতে সংখ্যাতত্ব, গণনা, স্বাভাবিক সংখ্যা, যোগ-গুণ-বিয়োগ-ভাগের নিয়ম, ভগ্নাংশ ও তাহার গাণিতিক প্রক্রিয়া, পূরক(reciprocal) ও ভগ্নাংশে তাহার প্রয়োগ, বর্গ ও ঘনফল ও মূল, সমানুপাতের rule of three, সুদের হিসাব, অংশীদারী ব্যাবসার হিসাব, পরিমিতি ইত্যাদি নিয়ে বিশদে বর্ণনা করা হয়েছে। তার আরো কিছু রচনা হল বীজগণিত, নবসতি ও ব্রহপতি।
শুধু এই নয়, গণিতজগতে তার বিশিষ্ট আবিষ্কার ও আরো কিছু অবদান আছে। তা হলঃ
এক, শূণ্যের ব্যাবহার ও তা নিয়ে বর্ণনা করেন বিশদে।
দুই, বীজগণিতকে সর্বপ্রথম পাটীগণিত থেকে পৃথক করেন ও বীজগণিতের বাস্তব প্রয়োগ নিয়ে গভীরে আলোকপাত করেন।
তিন, ভগ্নাংশকে বিভাজনের জন্য বিভাজক সংখ্যার পূরক(reciprocal) দিয়ে গুণ করার এই পদ্ধতিই তাঁর আবিষ্কার।
চতুর্থ এবং সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ, দ্বিঘাত সমীকরণ সমাধানের পদ্ধতিমালা ও বীজদ্বয় নির্ণয়ের সূত্র তিনিই আবিষ্কার করেন। এই সূত্র বীজগণিতে 'শ্রীধরাচার্য্যের সূত্র' নামে পরিচিত।
গণিতের ইতিহাসে এমন উল্লেখযোগ্য অবদান রাখলেও বর্তমানে তা বাঙালীর স্মৃতি থেকে বিস্মৃত হয়েছে। কিন্তু বিশ্বজগতে তার গুণের সমাদর হয়েছে এবং তিনি তার সৃষ্টির মধ্যে দিয়ে অমর থাকবেন এবং এইভাবেই বাঙালীর স্বর্ণযুগের ইতিহাস লিপিবদ্ধ থাকবে।
Read MoreAuthor: Sayak Bhattacharya
Historical General 02-August-2022 by east is rising
★অবস্থা:সম্রাজ্য
★রাজধানী: ১.গৌড় ২.পান্ডুয়া (ফিরোজাবাদ) ৩.সোনারগাঁও ৪.তান্ডা
★আনুগত্য: মামলুক সালতানাত (আব্বাসি খেলাফত)
ওসমানি খিলাফত
★প্রতিষ্ঠাতা: শামসুদ্দিন ইলিয়াস শাহ্
★প্রথিষ্ঠা সালঃ ১৩৫২
★দ্বিতীয় প্রথিষ্ঠাতাঃ আলাউদ্দিন হোসেন শাহ্
★উপাধি:১. শাহ-ই বাঙ্গালাহ
২.সুলতান-ই বাঙ্গালাহ
৩. খিলাফতের ডানহাত এবং রক্ষাকারী
৪. আমির-উল-মুমিনীন (বিশ্বাসীদের অধিনায়ক)
৫. বিশ্বাসীদের খলিফা
★সবচেয়ে ক্ষমতাবান শাসক:১. আলাউদ্দিন হোসেন শাহ
২. শামসউদ্দিন ইলিয়াস শাহ
৩. রুকনউদ্দিন বারবাক শাহ্
৪. জালালউদ্দিন মুহম্মদ শাহ্
★সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী শাসক: আবুল মুজাহিদ সিকান্দার শাহ (৩৫ বছর)
★শ্রেষ্ঠ শাসনকাল: আলাউদ্দিন হোসেন শাহের শাসনকাল (১৪৯৪-১৫১৯)
★সবচেয়ে বড় বিজয়:
১.ঐতিহাসিক একদালার প্রথম মহাযুদ্ধে দিল্লির সুলতান ফিরোজ শাহ তুঘলককে পরাজিত করা
২. একদালার দ্বিতীয় যুদ্ধে দিল্লি সালতানাতকে চূড়ান্তভাবে পরাজিত করা
৩.নেপাল বিজয়
৪. আরাকান পুনর্বিজয়
★সবচেয়ে বড় পরাজয়:
১. রাজমহলের যুদ্ধ
২. শেরশাহের হাতে হোসেন শাহী রাজবংশের পতন ও ১৫ বছরের জন্য বাংলার স্বাধীনতা হারানো
৩. উড়িষ্যার গজপতিদের স্বাধীনতা ঘোষণা ও বাংলার উপর আক্রমণ
৪. তুর্কাইয়ের /মোঘলমারির যুদ্ধ
★শত্রু সমূহ:১. মুঘল সাম্রাজ্য
২.দিল্লি সালতানাত (১৩৫৯ সালের পূর্বে)
৩. শূরী সাম্রাজ্য
৪. শার্কি সালতানাত
৫. কামরূপ রাজ্য
৬. গজপতি সাম্রাজ্য
৭. বার্মিজ সাম্রাজ্য
★ মিত্রসমূহ: ১. তৈমুরি সাম্রাজ্য
২. মামলুক সালতানাত (কায়রোর আব্বাসী খিলাফত)
৩.মিং রাজবংশ
৪. দিল্লি সালতানাত (১৩৫৯ সালের পরে)
৫. পর্তুগাল
৬.আরাকান
৭.উসমানীয় সাম্রাজ্য
রাজবংশঃ ১. ইলিয়াস শাহী রাজবংশ [১৩৫২-১৪১৪]
২. রাজা গণেশের পরিবার [১৪১৪-১৪৩৬]
৩. দ্বিতীয় ইলিয়াস শাহী রাজবংশ [১৪৩৬-১৪৮৭]
৪. হাবশি শাসন [১৪৮৭-১৪৯৩]
৫. হোসেন শাহী রাজবংশ [১৪৯৪-১৫৩৮]
৬. মুহম্মদ শাহী রাজবংশ [১৫৫৪-১৫৬৩]
৭. কররানি রাজবংশ [১৫৬৪-১৫৭৬]
★সবচেয়ে বড় লজ্জাঃ মোগলমারির যুদ্ধে পরাজিত হয়ে মুঘলদের কাছে বাংলা ও বিহার হারানো।
বিশ্বাসঘাতকতার দরুণ শোচনীয়ভাবে রাজমহলের যুদ্ধে পরাজয়বরণ
★সর্বশেষ শাসক: দাঊদ শাহ্ কররানী
★বিলুপ্তি: ১৫৭৬
বিখ্যাত শাসকেরাঃ
১. হাজি শামসুদ্দিন ইলইয়াস শাহ:- পুরো বাংলা জয় করেন, বাংলা ও বাঙালি নাম দুটো তাঁরই দেয়া।
প্রথম ব্যক্তি হিসেবে নেপাল জয় করেন। তিনি বাহরাইচ থেকে উড়িষ্যা পর্যন্ত জয় করেন।
(২) আবুল মুজাহিদ সিকান্দার শাহঃ ১৩৫৯ সালে হিন্দুস্তানি সালতানাতকে চূড়ান্তভাবে পরাজিত করেন একডালার দ্বিতীয় জঙ্গে। পান্ডুয়ার বিখ্যাত আদিনা মসজিদের তিনি নির্মাতা।
(৩) জালাল আদ-দ্বীন মুহাম্মাদ শাহ:- বাংলায় মুসলিম শাসন পুনরায় প্রতিষ্ঠা করেন। নিজ পিতা অত্যাচারী রাজা গণেশকে হত্যা করে ইমানের চরমতম পরীক্ষা দেন তিনি। ফ্রান্সিস বুকানন হ্যামিল্টন লিখেছেন- তাঁর সময়ে যত মানুষ ইসলাম গ্রহণ করেছিলো , তা বিগত একশো বছরে বাংলায় করেনি। তিনি আরাকান জয় করেন।
(৪) বাদশাহ জাহান রুকনউদ্দিন বারবাক শাহঃ সুশাসক ও প্রতাপশালী সম্রাট ছিলেন।
(৪) আলাউদ্দিন হোসেন শাহঃ অমুসলিমদের প্রতি উদারতার জন্য তিনি বিখ্যাত ছিলেন। আরাকান পুনর্বিজয় করেন তিনি। হাবশি দের দুঃশাসনের অবসান ঘটিয়ে তিনি হাবশিদের বাংলা থেকে প্রথমে উড়িষ্যায় পাঠান, পরে পুরো বাংলা থেকেই বিতাড়িত করেন।
(৬) মুহাম্মাদ শাহ গাজী : শেরশাহ সুরি বাংলা দখল করে নিয়ে প্রদেশে পরিণত করলে ইসলাম শাহ কর্তৃক গভর্নর নিযুক্ত হয়েছিলেন মুহাম্মাদ খান। তিনি স্বাধীনতা ঘোষণা করে বাংলা সালতানাত পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন ১৫৫৪ সালে। তিনি তৃতীয়বারের মতো আরাকান বিজয় করে "গাজী" উপাধি গ্রহণ করেন।
(৭) সুলাইমান শাহ কররানীঃ সুলাইমান শাহ কররানীর সেনাপতি ছিলেন রাজীবলোচন রায় ভাদুড়ি ওরফে রাজু ভাদুড়ি।
তার সাথে শাহজাদী দুলারি বিবির সাথে বিয়ে হওয়ায় তিনি ইসলাম গ্রহণ করে মহম্মদ ফর্ম্মুলী কালাপাহাড় নাম ধারণ করেন। ১৫৬৮ সালে কালাপাহাড় উড়িষ্যার গজপতিদের পরাজিত করে জয় করেন।
★ বাংলা সালতানাত ছিলো পৃথিবীর অন্যতম ধনী সাম্রাজ্য। ইলইয়াস শাহের মুকুটে শোভা পেত পৃথিবীর দ্বিতীয় মূল্যবান হীরা "দরিয়া-ই নূর"। বাংলার চট্টগ্রামেই তৈরি হতো উছমানলি তুর্ক সাম্রাজ্যের যুদ্ধজাহাজ। বাংলার সুলতানের বশ্যতা স্বীকার করে নিয়েছিলো আরাকানের ম্রাউক-ইউ, ত্রিপুরার মাণিক্য, কোচ, আসামের শাসক ও উত্তর-পূর্ব ভারতের নাগাভূম,কাছাড়ের গোত্রপতিরা।
সংগৃহীত
ইসলামের হারিয়ে যাওয়া ইতিহাস নামক ফেসবুক গ্রুপ থেকে
Author: Saikat Bhattacharya
Historical General 28-July-2022 by east is risingপশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের পুরুলিয়া জেলার সদর পুরুলিয়া শহর থেকে 47 কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে রথুনাথপুর মহকুমার অন্তর্গত জলে নিমজ্জিত প্রত্নস্থল তেলকুপি। পাঞ্চেতে দামোদার নদীর উপর 1959 সালে বাঁধ তৈরীর সময় এই পুরাকেন্দ্রটি দামোদারের জলে নিমজ্জিত হয় এবং তার সাথে সলিলসমাধি ঘটে বাঙালীর ইতিহাসের একটি অধ্যায়ের।
তেলকুপীর প্রাচীন নাম ছিল 'তৈলকম্পী'। তৈল অর্থাৎ কর ও কম্পন অর্থাৎ পরগণার সংযোগে এর নামকরণ যার অর্থ করদ প্রদেশ। এই তৈলকম্পী ছিল পঞ্চকোট রাজ্যের শিখরবংশীয় রাজাদের একটি প্রাচীন রাজধানী। আনুমানিক নবম থেকে ত্রয়োদশ শতক পর্যন্ত এর অস্তিত্ব ছিল বলে বিভিন্ন ঐতিহাসিকদের মত। এই বংশেরই একাদশ-দ্বাদশ শতকের এক রাজা রুদ্রশিখর তার বিভিন্ন সামন্তের সহযোগীতায় পালসম্রাট রামপালকে বরেন্দ্রভূমি পুনরুদ্ধারে সহায়তা করেছিলেন। তাদের এই গৌরবগাথা সন্ধ্যাকর নন্দীর 'রামচরিতম' এ বর্ণনা করা আছে:
''শিখর ইতি সমর পরিসর বিসর দরিরাজ
রাজিগত্ত গধ্বগহন দহন দাবানল:
তৈলকম্পীয় কল্পতরু রুদ্রশিখর''
(যুদ্ধে যার প্রভাব, নদী-পর্বত ও উপান্তভূমি জুড়ে বিস্তৃত, পর্বত কন্দরের রাজবর্গের যিনি দর্প দহনকারী দাবানলের মতো সেই তৈলকম্পের কল্পতরু রুদ্রশিখর।)
পঞ্চকোটের রাজবংশমালা অনুযায়ী রুদ্রশিখরের আবির্ভাব ঘটে 1098 সালে আবার ঐতিহাসিক নীহাররঞ্জন গুপ্তর মতে রামপালের শাসনকাল 1070-1120 খ্রীষ্টাব্দ। সুতরাং বাংলার ইতিহাসের একটা হারানো অধ্যায় এখানে পাওয়া যাবে।
রাজধানী হবার সাথে সাথে এটি ছিল তৎকালীন এক গুরত্বপূর্ণ বন্দরনগরী। এর কাছেই অবস্থিত ছিল দুটি তামার খনি। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য রাঢ়বাংলা যুগ যুগ ধরেই তামা, কাঁসা, পিতলের দ্রব্য উৎপাদনে প্রসিদ্ধ। এই থেকে ঐতিহাসিকদের মত যে এই বন্দরনগরী দামোদার নদীপথের বাণিজ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ছিল এবং এই বাণিজ্যপথে বণিকরা তাম্রলিপ্ত বন্দরে বাণিজ্যসামগ্রী নিয়ে যেত যার মধ্যে তামা, কাঁসা, পিতল, পাথর, মৃৎশিল্প ও অন্যান্য সামগ্রী থাকত। বণিকরা মূলত জৈনধর্মাবলম্বী ছিল বলে ঐতিহাসিকদের মত। এর কারণ হল রাঢ়বাংলাতে জৈনধর্মের বিকাশ ঘটেছিল এবং বণিকদের মাঝে জৈনধর্ম ছিল জনপ্রিয়। তাছাড়া তেলকুপির মন্দিরগুলির অনেকগুলিই হল জৈনমন্দির ও হিন্দুমন্দিরগুলিতেই জৈনপ্রভাব পরিলক্ষিত হয়। মূলত বণিকদের পৃষ্ঠপোষকতাতেই এই মন্দিরগুলি গড়ে বলে অনুমান করা হয়। পরবর্তীকালে জৈনধর্ম হ্রাস পাওয়াতে অনেক জৈন মন্দির হিন্দু মন্দিরে রূপান্তিরত হয় ও অনেক জৈন বিশ্বাস, আচার, ধর্মীয় চরিত্র হিন্দুদের মাঝে প্রবেশ করে। যেমন স্থানীয় অধীবাসীদের এক উপাস্য দেবতা হল বিরূপনাথ বা ভৈরবনাথ। এই ভৈরবনাথ আদতে জৈন তীর্থঙ্কর ঋষভদেব। পরবর্তীকালে স্থানীয় হিন্দুদের মধ্যে শিবের এক রূপ হিসাবে উপাস্যে পরিণত হন। কিছু কিছু স্থাপত্যে বৌদ্ধধর্মের প্রভাবও দেখা যায়।
এই মন্দিরসমূহ নিয়ে ঐতিহাসিক বিবরণগুলির মধ্যে বিখ্যাত হলঃ
1. ১৮৭৮ এ প্রকাশিত জে. ডি বেগলারের “Report of A Tour through the Bengal Provinces (Vol VIII)”।
2. ১৮৭৭ সালে প্রকাশিত হান্টারের "Statistical Account of Bengal (volume=XVII)"।
3. ১৮৯৬ সালে অবিভক্ত বাংলার পূর্ত বিভাগের দ্বারা সংকলিত বাংলার প্রাচীন সৌধের একটি তালিকা যা ৩১শে আগস্ট ১৮৯৫ পর্যন্ত সংযোজিত করা ছিল।
4. 1903 সালে বেঙ্গল সার্কেলের আর্কিওলজিকাল সার্ভেয়ার টি. ব্লচের বিবরণ।
5. নির্মলকুমার বসুর বিবরণ।
6. দেবলা মিত্রের বিবরণ।
7. এছাড়া ঐতিহাসিক নীহাররঞ্জন রায় ও সুভাষ রায়ের বিবরণ।
এর মধ্যে বেগলারের বিবরণীতেই পুঙ্খানুপুঙ্গভাবে মন্দিরসমূহের বিবরণী আছে। বেগলারের মতে সেসময় ছোটনাগপুর সার্কেলের ভিতর তেলকুপী ব্যতীত এত স্বল্প পরিসরে এতগুলি উৎকৃষ্ট মানের মন্দির দেখা যায়নি। মন্দিরগুলি তিন ভাগে বিভক্ত ছিল। প্রথম ভাগের মন্দিরগুলি গ্রামের উত্তর দিকে নদীর কাছে অবস্থিত ছিল। দ্বিতীয় ভাগের মন্দিরগুলির অবস্থান ছিল গ্রামের কাছে; কিছুটা পশ্চিম দিকে। তৃতীয় মন্দির সমষ্টিগুলি ছিল দক্ষিণ পশ্চিম দিকে– গ্রামের শেষ প্রান্তে। প্রথম সমষ্টিতে তেরোটি মন্দির ছিল। দ্বিতীয় মন্দিরসমূহতে বেগলার ছটি মন্দির ও অনেক মূর্তি দেখেছিলেন, যার মধ্যে উনি চারটি মন্দিরকে উল্লেখযোগ্য মনে করেছিলেন। তৃতীয় মন্দিরশ্রেণীর মধ্যে বেগলার তিনটি মন্দির ও একটি মঠের ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কার করেছিলেন। এই শেষাক্ত মন্দিরশ্রেণীর আশেপাশে উনি অনেক পাথরের ও ইঁটের স্তুপ দেখতে পেয়েছিলেন। নিম্নে তার লিঙ্কটি দেওয়া হল বিস্তারিত জানার জন্যঃ
https://en.m.wikisource.org/wiki/Report_of_a_Tour_through_the_Bengal_Provinces/Telkupi
মন্দিরগুলির স্থাপত্যরীতি স্বকীয়তা ও নৈপুণ্যের পরিচয়বাহক। বড় পাথরকেটে উপযুক্ত আকার করে তারপর তা দিয়ে মন্দিরগুলি নির্মিত হত। কোন পেষণীযন্ত্রের প্রযোগ হতনা। তারপর পাথরের উপর ভাস্কর্য নির্মাণ হত। ছোট ফাঁকগুলি পাথর ও বড় ফাঁকগুলি করবেলিং পদ্ধতির মাধ্যমে ভরাট করা হত। মন্দিরগুলিতে একটিমাত্র খিলানযুক্ত প্রবেশপথ থাকত যাকে দেউল বলা হত।
বর্তমানে এই প্রত্নস্থলের পুরোটাই জলে নিমজ্জিত। 1959 সালে জলরাশির অতল গভীরে তলিয়ে গেল বাঙালীর ইতিহাসের এক অধ্যায়। কয়েকটি মন্দিরই টিকে আছে যার মধ্যে কিছু ভগ্নপ্রায় ও কিছু অক্ষত। গ্রীষ্কালের দাবদাহে জল শুকোলে কিছু মন্দিরের চুড়া দেখা যায়। একটি মন্দির অর্ধনিমজ্জিত ও তা নৌকার সাহায্যে গিয়ে দেখতে হয়। এছাড়া ইতস্ততভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে কিছু অবশিষ্ট দেউল, কিছু বিগ্রহ, ইঁটের ভগ্নস্তুপ ইত্যাদি।
এই তেলকুপি কী অন্য কিছুরও সংকেত দেয়? বাঙালীর ইতিহাস নিমজ্জিত হয়ে অতল গভীরে হারিয়ে যাওয়ার করুণ কাহিনীর সাক্ষী হয়ে আছে আজকের তেলকুপী। তবে জলের মধ্যে থেকেও চুড়ো তুলে থাকা কিছুটা আশার উদ্রেক করে।
Read MoreAuthor: Sayak Bhattacharya
Historical General 14-July-2022 by east is risingশুশুনিয়া পাহাড় পর্যটনপ্রিয় মানুষের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ। মূলত শীতকালে এখানে পর্যটকদের ঢল নেমে পড়ে। camping, rock climbing, trekking ছাড়াও মনোরম প্রকৃতির আস্বাদন করতে পর্যটকেরা এখানে আসেন।
তবে এই পাহাড়ের মূল গুরুত্ব পর্যটনের জন্য নয়, এটি মূলত ঐতিহাসিক ও প্রত্নতাত্তিক অঞ্চল হিসাবে অসীম গুরুত্বপূর্ণ। এর কারণ এই অঞ্চল বাংলার সর্বপ্রাচীন অঞ্চলদের মধ্যে অন্যতম।
পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলার ছাতনা শহরের কাছে এই পাহাড় অবস্থিত। ভূতাত্বিকভাবে বাংলার সবচেয়ে পুরনো ভূমি হল পশ্চিম রাঢ়, তারই অন্তর্গত এই শুশুনিয়া পাহাড়। শুশুকের আকৃতির জন্যে এই নামকরণ।
এই অঞ্চলে হায়না, জিরাফ, এশিয়াটিক সিংহ প্রভৃতি প্রাণীর জীবাষ্ম মিলেছে। এর মধ্যে এশিয়াটিক সিংহের গুরত্ব আলাদাই কারণ বাংলার রাজকীয় পশু যুগ যুগ ধরে ছিল এই এশিয়াটিক সিংহ।
প্রাণীর জীবাষ্ম ছাড়াও এখানে মিলেছে প্রস্তরযুগে ব্যাবহৃত যন্ত্রাদি ও অস্ত্র। প্রস্তরযুগের নানান সময়কালের(time period) অস্ত্রই এখানে মিলেছে। নুড়িপাথর, স্ফটিক, ফেল্সপার,জ্যাসপার, ব্যাসল্ট, ডোলোরাইট প্রভৃতি পাথরের তৈরী অস্ত্র, যন্ত্রাদি মিলেছে এখানে। কুঠার, ছুরি, তীরের ফলা, খননযন্ত্র, চাঁছনি, ওভেট, খননযন্ত্র, ছেদক ইত্যাদি যন্ত্রাদি পাওয়া গেছে। এই অঞ্চল সম্পূর্ণ বনজঙ্গলে আবৃত ছিল এবং নানান ধরণের তৃণভোজী, মাংসাসী প্রাণীর বিচরণ ছিল এখানে। আবার কাছেপিঠে নদী ও ঝর্ণা উভয়ের জলই প্রাপ্য ছিল। ফলে প্রস্তরযুগে বসবাসের জন্যে পর্যাপ্ত রসদ ছিল তাই সমগ্র প্রস্তরযুগ ধরেই মানুষের বসবাস ছিল। মূলত পশুর মাংস ও বুনোফল ছিল তাদের খাদ্য। শুশুনিয়ার পাদদেশের কাছাকাছি ত্রিশটি মত পুরাতাত্বিক কেন্দ্র অবস্থিত।
তবে শুধু প্রাগৈতাহিক যুগেই নয়, বাংলার ইতিহাসেও এর গুরুত্ব অপরিসীম। এই শুশুনিয়া পাহাড়েই মিলেছে বাংলার প্রাচীনতম শিলালিপি- রাজা চন্দ্রবর্মার শিলালিপি। এই পাহাড়েই চন্দ্রবর্মার দূর্গের অবস্থান ছিল বলে অনেক ঐতিহাসিক অনুমান করেন। এর নিকটেই ছিল রাজধানী পুষ্করণা নগর। মালবদেশের দশপুর-মন্দসৌর লিপি যা হরপ্রসাদ শাস্ত্রী আবিষ্কার করেন তা অনুসারে জয়বর্মার পুত্র সিংহবর্মা ও সিংহবর্মার দুই পুত্র- বড় চন্দ্রবর্মা ও ছোট নরবর্মা। এই বংশের আদি পরিচয়, নিবাস নিয়ে জল্পনা রয়েছে। কোনমতে তারা রাজস্থানের, কোনমতে আবার তাদের আদিনিবাস সিংহল। গুপ্তসম্রাট সমুদ্রগুপ্তের সভাকরি হরিসেন রচিত 'এলাহাবাদ প্রশস্তি' তে যে চন্দ্রবর্মার উল্লেখ আছে তা ঐতিহাসিক রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতানুসারে এই পুষ্করণারাজ চন্দ্রবর্মাই।
ধর্মে তারা ছিলেন বৈষ্ণব এবং বিষ্ণুকে নৃসিংহরূপেই উপাসনা করতেন। রাজার প্রভাবে এই অঞ্চলে মানুষদের মধ্যেও বৈষ্ণবধর্ম প্রসার ঘটে। শুশুনিয়া পাহাড়ে ওঠার ধাপের আগেই পাদদেশে একটি নৃসিংহ মূর্তি ও উপাসনাস্থল রয়েছে। আবার এর সামনেই রয়েছে একটি পাহাড়ি ঝর্ণা যেটি টাইলসে বাঁধানো ও জলের উৎসমূখে সিংহের মূখ বসানো রয়েছে। এই জলে ঔষধিগুণ আছে বলেও জনমানসে বিশ্বাস। এছাড়াও নরসিংহ নিয়ে বহু কিংবদন্তী স্থানীয় লোককথাতে প্রচলিত।
সেই চন্দ্রবর্মার আমলেই শুশুনিয়া পাহাড়ে খচিত হয় বাংলার প্রাচীনতম শিলালিপি। এই লিপির দুটি অংশ- উপরের অংশে দুটি সমান্তরাল বৃত্ত অবস্থান করছে। একটি বৃত্ত থেকে কতগুলি রেখা নির্গত হয়ে এসেছে, এই রেখাগুলি আবার আরেকটি বড় বৃত্ত দ্বারা আবৃত। অপর বৃত্তটি থেকে বেরিয়ে এসেছে অনেকগুলি অগ্নিশিখা। প্রতিটি অগ্নিশিখার পরেই আবার দুটি করে অর্ধবৃত্ত দিয়ে ঘেরা। এটি মূলত ভাবলিপি। এই ভাগটিকে বিষ্ণুচক্র বলে ধারণা করা হয়েছে।
নীচের অংশে ব্রাহ্মীলিপিতে নিম্নোক্ত কথা খোদিত আছে যা বন্ধনীতে বাংলা করে দেওয়া হল:
''পুষ্করণাধিপতে মহারাজ শ্রীসিঙ্ঘবর্মণঃ পুত্রস্য/ মহারাজ শ্রীচন্দ্রবর্মণ কৃতিঃ/ চক্রস্বামিন দাসাগ্রেণাতি সৃষ্টঃ’'
(পুষ্করণার অধিপতি মহারাজ শ্রীসিংহবর্মার পুত্র মহারাজ শ্রীচন্দ্রবর্মার কীর্তি। চক্রস্বামী অর্থাৎ বিষ্ণুর অগ্রদাসের দ্বারা সৃষ্ট।)
হয় রাজ্যবিজয় নয় ভূদান বা কোন গুরুত্বপূর্ণ কীর্তির স্মারক হিসাবেই এই লিপি খোদিত।
সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের মতে এটি ‘দ্য ওল্ডেস্ট ব্রাহ্মি ইনস্ক্রিপশন ইন বেঙ্গল' এবং প, ম, হ, র প্রভৃতি কয়েকটি অক্ষর প্রায় আধুনিক বাংলা অক্ষরের মতো’।
এই অঞ্চলের কাছেই নেতকমলা ও বিকনা গ্রামদুটি ডোকরা শিল্পের জন্যে বিখ্যাত। এই ডোকরা শিল্প হল এক প্রাচীন শিল্প যার নিদর্শন সিন্ধ্যুসভ্যতা থেকে চীন, ভিয়েতনাম সর্বত্র পাওয়া যায়। সুপ্রাচীন এই শিল্প পশ্চিমবঙ্গেও প্রচলিত তার মধ্যে অন্যতম কেন্দ্র হল উপরোক্ত দুটি গ্রাম। এছাড়াও বর্ধমান, বাঁকুড়ার আরো কিছু স্থানে এই শিল্পের প্রচলন আছে। পাহাড়ের পাদদেশে যে হাট বসে তাতে এই শিল্পসামগ্রী পাওয়া যায়। এছাড়াও গ্রামে ডোকরামেলা অনুষ্ঠিত হয়। এই শিল্পের অবস্থা বর্তমানে সঙ্গীন। এই ডোকরা শিল্প নিয়ে পারলে পরে লিখব।
অতীতের সেই পুষ্করণা নগরী বর্তমানে পখন্না বা পোখরনা নামে একটি সাধারণ গ্রাম মাত্র।
এই অঞ্চলের ভূমি আদিম ও ঐতিহ্যবাহী। সঠিক উদ্যোগে ঐতিহাসিক, পুরাতাত্বিক গবেষণাকার্য হলে বাঙালীর ইতিহাসের আরো অনেক অধ্যায় বেরিয়ে আসবে তা সন্দেহাতীত। সুতরাং বাংলার ইতিহাস, পুরাতত্ব ও ঐতিহ্যের দিক দিয়ে এই অঞ্চল বাংলার এক অমূল্য সম্পদ।
Read MoreAuthor: Sayak Bhattacharya
Historical General 14-July-2022 by east is risingইতিহাস ও নৈসর্গের এক মনোরম সহাবস্থান হল গড় পঞ্চকোট। নৈসর্গিক সৌন্দর্যের সাথে সাথে জীবন্ত ইতিহাসেরও সাক্ষী এই স্থানটি। পশ্চিমবাংলার পুরুলিয়া জেলার পাঞ্চেত পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত এই স্থান। বরাকর বা আদ্রা থেকে সড়কপথে যাওয়া যায় এখানে।
জনস্রুতি অনুসারে দামোদার শিখর আনুমানিক নব্বই খ্রীষ্টাব্দে পাঁচজন উপজাতি সর্দারের সহায়তায় ঝালদাতে এই রাজ্যের প্রতিষ্ঠা করেন। সেই থেকে এই রাজ্যের নামকরণ হয় পঞ্চকোট অর্থাৎ পাঁচ গোষ্ঠী, কোট শব্দের অর্থ হল গোষ্ঠী। রাজবংশের নাম হয় শিখর রাজবংশ যদিও মধ্যযুগের একদম শেষের দিকে তারা সিংহদেও উপাধি ধারণ করে। এরপরে রাজধানী কয়েকবার বদল হয় এবং এই বংশের আরেক শাসক কীর্তিনাথশেখর দশম শতাব্দীতে এই গড়ের নির্মাণ করেন ও এখানে রাজধানী স্থাপন করেন। সেই থেকে শিখরবংশের রাজধানী পঞ্চকোটের গড় বা গড়পঞ্চকোট নামে পরিচিত হয়। তখন গোটা অঞ্চলটি ছিল বৃহৎ দূর্গে ঘেড়া এবং তার কেন্দ্রে ছিল রাজধানী।
দূর্গটি ছিল এক অর্ধবৃত্তাকার বিশাল পরিখাতে ঘেড়া যেটি নৌকাতেই পার করা যেত এবং তাতে কুমীরও ছাড়া থাকত। মূল দূর্গটি পুরু পাথরের দেওয়াল দিয়ে আবৃত থাকত ও তার বাইরে আরো একটি বিশাল প্রতিরক্ষাপ্রাচীরের অবস্থান ছিল। এছাড়াও স্থানে স্থানে থাকত watchtower। বর্তমানে সেই প্রাচীরগুলির কিছু ধ্বংসস্তুপ পড়ে আছে ও পরীখাটি এখন ক্ষুদ্র একটি জলাশয়রূপেই আছে। এছাড়াও আরো কিছু উল্লেখযোগ্য স্থাপত্য হল রাণীমহল, পঞ্চরত্ন মন্দির, কঙ্কালেশ্বরী মন্দির, জোড়াবাংলা মন্দির, watchtower, প্রবেশপথ ইত্যাদি। এগুলি সবই এখন ধ্বংসস্তুপ ও সংস্কারের অভাবে বিলীন হবার উপক্রম। তবে পঞ্চরত্ন মন্দিরটি ইদানীং সংস্কার করা হয়েছে। কিন্তু কোন মন্দিরেই আর বিগ্রহ অবস্থান করেনা।
শিখররাজারা বৈষ্ণব, শাক্ত ও জৈনধর্মের পৃষ্ঠপোষকতা করতেন। এইকারণে পঞ্চকোট রাজ্যে বৈষ্ণব, শাক্ত ও জৈন মন্দিরের সংখ্যাধিক্য দেখা যায়। অনেক মন্দির আবার নদীর তীর বরাবর স্থাপিত হত। মন্দিরগুলি পোড়ামাটি ও পাথর উভয়দ্বারাই নির্মিত হত। খোদ গড় পঞ্চকোটেই একসময়ে চল্লিশটির বেশী মন্দিরের উপস্থিতি ছিল।
এই রাজ্যের বিস্তৃতি ছিল পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া, বর্ধমানের কিয়দংশে, সমগ্র পুরুলিয়া, ঝাড়খণ্ডের বোকারো, ধানবাদ, রাঁচী সিংভূমে। এছাড়াও কটক ও বারাণসীতে তাদের জমিদারী ছিল।
JD Beglar 1872 খ্রীষ্টাব্দে আঁখ দুয়ার, বাজার মহল দুয়ার, খড়িবাড়ি দুয়ার এবং দুয়ার বাঁধ নামক চারটি তোরণের বর্ণনা করেন। এর মধ্যে খড়িবাড়ি দুয়ার এবং দুয়ার বাঁধে মল্লরাজ বীর হাম্বীর মল্লদেবের নাম পাওয়া যায় যেটা থেকে এটাও ধারণা করা যায় যে তারা মল্লভূমের অধীনস্থ ছিলেন।
শিখররাজারা প্রজাহিতৈষী ছিলেন এবং নিষ্কর মৌজাদানের উদাহরণ পাওয়া যায় এই নিয়েও ঐতিহাসিকমহলের মত। বৃহৎ মানভূমের সংস্কৃতিকে তারা পৃষ্ঠপোষকতা করতেন। তাদের সভা অলঙ্কৃত করতেন কথাসাহিত্যিক থেকে সঙ্গীতশিল্পী থেকে নর্তক-নর্তকীরা। (এখানে নাচ বলতে মূলত ছৌনাচের কথাই বলা হয়েছে)
বাংলাতে বর্গী আক্রমণের সময়ে এই দূর্গনগরী বর্গীদের নজরে পরে ও হামলাতে এই নগরী সম্পূর্ণ ধ্বংসপ্রাপ্ত শ্মশানে পরিণত হয়। কথিত আছে, রাজার সতেরো রাণী সম্ভ্রম বাঁচাতে কুয়োতে ঝাপ দিয়ে আত্মহত্যা করে। অবশিষ্ট রাজবংশ কাশীপুরে প্রস্থান করে ও সেখানেই রাজধানী স্থাপন করে। সেখানেও ইতিহাস আছে, তবে তা অন্য পোস্টে বর্ণনা করা যাবে।
মারাঠা ধ্বংসলীলার জীবন্ত সাক্ষী হয়ে আজও দাঁড়িয়ে আছে এই গড় পঞ্চকোটের ধ্বংসস্তুপ। এককালে এইনগরী লোকজনে গমগম করত, রাজপাট বসত, দূরদূরান্ত থেকে বণিকরা আসত বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে। এখন এটি একটি পাহাড়ি ধ্বংসস্তুপ।
Read MoreAuthor: Sayak Bhattacharya
Historical General 14-July-2022 by east is risingWhen the Republic of India was formed in 1947, it generated high hopes around the around. Mythical predictions were made about that mighty nation for the future. This practice continued. India is often compared with China which shows people are largely clueless about India. But over the years the country has only decayed. From 1991 to mid-2000s the decadence was halted for a while but again it accelerated from then onwards and now the decay is complete. Currently India is returning to its natural self. The India we see now is India in its unadulterated form. Very few people actually understands India properly, that's why they're awestruck. In a previous writing, I showed how India was created by Timurids and British. After formation of the Indian state, those inertia remained but was curbed day by day. That's why it seems like that a great dream is falling apart, but it was inevitable. To understand this, we need to analyze the state's people, society, professional spheres etc. then it will be clear. Let's point out all the things in brief.
If we combine the above points, it can be concluded easily that Indians are unfit for urban civilization let alone the industrial world. Their social setup is only fit for a village republic, not beyond that. Their professional setup is bound to make economy dysfunctional. So what's happening is the natural outcome. In a feral world where trade isn't possible and security is absent, only pre-historic caveman days will return and its happening. India is falling back to its prehistoric barbarity.
The country is huge, so is the population. British have given them a readymade country on a platter which they are living off still today(it didn't have to build everything from scratch unlike other colonies. Rather best things of Britain were available in British India). Soviet Union during cold war was always ready with blank cheque. After 1990s due to the outsourcing of low-end service jobs and global capital flow there was a short period of hope. But that low hanging fruit is now plucked and is nullified.
The future of this country is bleaker than ever and darker times are ahead.
This can be easily become a case study to avoid similar fates for others.
Read MoreAuthor: Purandhar Khilji
Historical General 03-July-2022 by east is risingবাঙালি হিন্দু লৌহযুগেই প্রবেশ করেনি।
এরা তাম্র যুগের প্রথম দিকটার স্তরে আটকে আছে যখন কৃষি সবে শিখেছে এবং মাটির উর্বরতা ও নারীর উর্বরতাকে মিশিয়ে নারী পুজো করে।
এর একটা কারণ এটাই হয়তো যে বাংলার নগরগুলোতে যেই বাঙালিরা লৌহযূগ ও মধ্যযুগের স্তরে ছিল তারা আস্তে আস্তে তুর্কি পাঠানদের সাথে মিশে বাঙালি মুসলমান হয়ে গেছে বা ব্রিটিশ চাপে শেষ হয়ে যায়।
মনে রাখা দরকার বাংলা ও বাঙালি নামটা তুর্কি আমল থেকেই জনপ্রিয়তা পায়।
বাংলাতে অনেক জঙ্গল ছিল তুর্কি আসার আগে পর্যন্ত যা কেটে সাফ করে আফগানিস্তান, তাজিকিস্তা্ন, ইরান, ইরাক ও উত্তর ভারত থেকে অনেক মানুষ এসে বাংলাতে বসতি স্থাপন করতে শুরু করে। সে সময়ে জঙ্গলের সমাজের সঙ্গে কৃষি বণিক সভ্যতার লড়াইয়ের কথা নানা গল্পের মধ্যে দিয়ে আমরা পাই যেমন মনসা বনাম চাঁদ সওদাগর এবং বন বিবি-শাহ জঙ্গালী বনাম দক্ষিণ্র রায়।
স্রেফ লোহা ব্যবহার করলেই লৌহ য্যগ আসেনা।
লোহার ব্যবহার যখন জঙ্গল কেটে সাফ করে দেয় এবং আরও বেশি জমি মানুষ কাজে লাগাতে শুরু করে কেবল তখনই লৌহ যুগ আসে। মনে রাখা দরকার জন সংখ্যার বিপুলভাবে না বাড়লে জঙ্গল কেটে আরও জমি বাড়ানোর প্রবণতা আসবেনা।
অসিরিয়াতে প্রায় খ্রিষ্ট পূর্ব ১২০০ থেকে পিতৃতান্ত্রিক সমাজ প্রথমে গোড়ে ওঠে এবং তার ফলে জনবিষ্ফোরণ হয় এবং তখনই কেবল লোহার ব্যবহার বাড়িয়ে জঙ্গল কেটে গ্রাম নগরের সংখ্যা বাড়তে থাকে।
ইটন বলেছেন বাংলাতে কৃষি হত কিন্তু জঙ্গল এখানকার মানুষেরা নিজেরা সাফ করে কৃষি জমি বাড়ায়নি তুর্কিরা আসার আগে পর্যন্ত কারণ এদের জন বিষ্ফোরণ হয়নি।
প্রাক তুর্কি যুগের বাঙালিদের জনবিষ্ফোরণ না হওয়াটা পরিষ্কার বুঝিয়ে দেয় বাঙালি হিন্দু যে তাম্র যুগের প্রথম স্তরে আটকে আছে বা খুব সীমিত জনসংখ্যার বৃদ্ধি ঘটে আর তাই ওই স্তরের ওপরে যেতে পেরেছিল সামান্য কিছু মানুষ।
বিজয় সিংহ, রাজা শশঙ্ক, রাজা গোপাল, রাজা গণেশ, রাজা প্রতাপাদিত্য-এর মতো যোদ্ধা পুরুষ এই সীমিত কিছু সংখ্যার বাঙালি হিন্দু যারা তাম্র যুগের প্রথম স্তরের ওপরে উঠতে পেরেছিল।
ফলে তুর্কি শাসনে বিপুল সংখ্যক মানুষ মধ্য এশিয়া ও উত্তর ভারত থেকে বাংলায় আসার সুযোগ পায়। এবং তারা জঙ্গল কেটে সাফ করে নিজেদের জন্য গ্রাম ও নগর বানাতে থাকে।
মুসলিম ঐতিহাসিকদের মতে পঞ্চদশ শতকে বাংলার গৌড় ছিল চীনের পিকিং ও দক্ষিণ ভারতের বিজয়নগরের পরে বিশ্বের সবচেয়ে বড় শহর।
সীমিত কিছু সংখ্যার বাঙালি হিন্দু যারা তাম্র যুগের প্রথম স্তরের ওপরে উঠতে পেরেছিল, তারা তুর্কি পাঠান এবং শেষে ইংরেজদের সাথে যুদ্ধ করে হয় শেষ হয়ে যায়, নয়তো নিজেরাই ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে তুর্কি পাঠানদের সাথে মিশে গিয়ে বাঙালি মুসলমান জাতিকে তৈরি করে।
বাঙালি হিন্দুদের যেই অংশটা ইংরেজদের সান্নিধ্যে আসে তারা মূলত গ্রামের ওই তাম্র যুগের প্রথম দিকটার স্তরে আটকে ছিল।
ইংরেজদের দালালি করে কিছু কামিয়েছিল বটে কিন্তু তা ব্যবহার করে নিজেদের ক্ষমতা বাড়াতে অক্ষম হয় এরা কারণ এদের ক্ষমতা বাড়াতে যে প্রতিষ্ঠান বানাতে হয় সেগুলো বানানোর মতো দক্ষতা ছিলনা।
যে বাঙালি হিন্দু কোন যোদ্ধা পুরুষেরই পুজো করেনা, সে কিভাবে যুদ্ধ করে স্বাধীনতা পেতে পারে?
যে বাঙালি হিন্দুর রণনীতি ও কূটনীতি নিয়ে কোন আদি চর্চা নেই সে কিভাবে নিজের স্বার্থ বাগাবে রাজনীতি করে।
এরা দুর্গা কালি ইত্যাদি নারীদেবীর পুজো করে এবং পুরুষালী কাজকে ঘৃণা করে।
এরা যুদ্ধকে বোকামী আর কবিতা সাহিত্যকে বিশাল কিছু ভাবে।
শ্রেষ্ঠ বাঙালি হিন্দু পুরুষ বললে বাঙালি হিন্দু নাম নেবে রবীন্দ্রনাথ, রামকৃষ্ণ, চৈতন্যদেব বা বিবেকানন্দের।
এরা বিজয় সিংহ, রাজা শশঙ্ক, রাজা গোপাল, রাজা গণেশ, রাজা প্রতাপাদিত্য-এর মতো যোদ্ধা পুরুষের নাম কদাপি করেনা।
বাঙালি হিন্দু খুব শীঘ্রই এমন ঝাড় খাবে যে হয় নিজে বদলাবে নয় শেষ হবে।
Read More
Author: Saikat Bhattacharya
Historical General 22-June-2022 by east is risingমস্তক মোর নত তোমার সমক্ষে, হে গৌড়েশ্বর।
দেড় সহস্র অব্দ পরেও তুমিই মোদের অধীশ্বর।।
তোমার হাতেই সূচনা মোদের বর্ষের, তোমার হাতেই বিদায়।
তবে কি না তোমাকেই মুছে দিয়াছে অবলীলায়।।
তবু আমি ভুলে যাইনি।।
যারা ভুলিয়ে দিয়েছে তাদের ক্ষমা করিনি।।
ভুলিনাই যে দিন তব রাজদণ্ডে বঙ্গ, রাঢ়, সমতট, বারেন্দ্র সকলে হয়েছিল একদেহে বিলীন।
হিন্দুস্তান হইতে কামরূপ, তব পরাক্রমে সকল শত্রুর গরিমা হয়েছিল মলিন।।
বাংলার বুকে যেদিন ঘোর সঙ্কট।
তবুও সেই আঁধার বিদীর্ণ করেছিল তোমার দাপট।।
তব পরাক্রমে, শত্রুকুল কাঁপে, ভীত হয়ে পলায়ন করে।
তবুও পলায়ে কোনখানে??
তোমাতে অধিষ্ঠান করিছে স্বয়ং মহেশ্বর।
ঈশ্বর শ্রেষ্ঠের বর যাহার প্রাপ্য তাহাকে বধিবে কোন অর্বাচীনে।
শত্রুর কাছে কালভৈরব, মোদের কাছে সাক্ষাৎ মহেশ্বর।
পুরুষোত্তম তব, দিয়েছিলে মোদের শৌর্য্য, বীর্য, ঐশ্বর্য্য।
তব কারণে কৈলাশ হতে বর্ষিত হয়েছিল শশধরের বরা ভয়।
হয়ে ছিলাম মোরা দৈববলে বলীয়ান, দিয়েছিল তব অভয়।
করিয়াছিলে মোদের শিরমেরুসমউচ্চ, মোদের চরিত্র ছিল বজ্রসম কঠোর।
তোমার ডাকে চালিয়ে দিয়েছিলাম মোদের তরবারি গঙ্গা থেকে কলিঙ্গ।
কাশী থেকে কটক, সকলে হয়েছিল তব ধ্বজা তলে পদানত।
চুরমার করেছিলে দর্প ঐ দাম্ভিক পূষ্যভূতির।
লোলুপ কামরূপের জিহ্বা করেছিল ছিন্ন।
মগধ, মিথিলা, কলিঙ্গ সকলের অরিরাজ হয়েছিলে তব।
পূর্বের সমস্ত প্রতিশোধ মিটিয়ে নিয়েছিলে তব।
গৌড়ভূম হয়েছিল পূণ্যভূমি তব রাজদর্পেই।
সহস্র বছরধরিয়াই সেই পবিত্রভূম হয়েছিল মোদের প্রাণ, মোদের গরিমা।
মোদের সহস্রবর্ষের গরিমা তব মহাসৃষ্টির অমরগাথা।
দিয়ে গেছো মোদের সেই অমূল্য রত্ন যার তুলনা নাই এই জগতে কোথা।
আজিকে সেই গৌড় শ্মশানসম।
তব পবিত্রভূমি আজ শেয়াল, কুকুরেদন্তে ছিন্নবিচ্ছিন্ন।
যে ইতরদের একদা মোরা করিয়াছিলাম পদানত আজ তাহারাই মোদের প্রভু।
তব হস্তে যাহারা সৃষ্টি হল আজ তাহারাই তোমাকে মুছে দিয়েছে।
আজিকে তব সৃষ্টি ইহয়ে গিয়াছে নির্লজ্জ, দুষ্ট, দূর্জন।
তোমারি মুখে তারা দিনেদিনে লেপিছে কালিমা।
তাই আজ কোন নববর্ষ নাই মোদের।নাহি কোন বঙ্গাব্দ।
ভুলিয়া গিয়াছি যে এই বর্ষপঞ্জিকা তোমারই অমর সৃষ্টি।
কারণ মোদের সময় সেই কবেই চলিয়া গিয়াছে।
পড়ে আছে শুধু ছিটেফোঁটা উচ্ছিষ্ট।
তাহার উপর হইয়া চলেছে একের পর এক অনিষ্ট।
নববর্ষের নামে শুধুএ কটি দিন যে দিন যে টি যায় আর আসে আর কোমারোগীর ক্ষণিকের হৃৎস্পন্দন জাগে।
আর তার মাঝেই কখনো কখনো আশার ঝিলিক জাগে যে হয়তো আবার এক দিন পারব আমরা।
স্বর্গশোক থেকে আর তাই বর্ষিত হয়না দেবদিগের আশীর্বাদ।
তথাপি ইহা সহন করিবনা হে।
তব অধিষ্ঠান করিছ দেবলোকেই আমি জানি।
কিন্তু এই ভ্যূলোকেই তোমার ডাক পড়িতেছে পুনরায়।
পুর্নজন্ম নিয়ে নবপুরুষোত্তমের অবতারে ফিরে এসো মোদের মাঝে।
তব চরণে সকল ভূমি হইবে পবিত্র।
আরোহন করো সেই গৌড়ের সিংহাসন।
ফিরিয়ে আনো সেই পূণ্যভূমির গরিমা।
আদেশ দাও আমাদিগকে।
সমরাস্ত্রে প্রস্তুত মৌরা এযুগের রুদ্রভয়ঙ্কর।
পুনরায় ফিরিয়া আনিব সেই তাণ্ডব।
যে দিক চাহে সেদিকে ছুটিয়ে দেব সমররথ।
শত্রুর মস্তকে গাঁথিব তব বিজয়স্মারক।
তব অবমাননাকারীদের হবে অশ্বত্থামার ন্যায় পরিণতি।
শত্রুর রক্তে রঙ্গীন হইবে আকাশ-পাতাল-সাতসমুদ্র।
শহীদ নহে, বিজয়ী হব সেদিন।
তবেই ফিরিবে মোদের সেই স্বর্ণেখচিত দিন।
যুগান্তে সূচনা করিব নতুন দিনের।
সেই দিন সত্যই মোরা পালিব নববর্ষ।
Read MoreAuthor: Purandhar Khilji
Historical General 17-June-2022 by east is risingবাঙালী হিন্দু অধুনাযুগে তিন বার বড় ধাক্কা খায়- 1870, 1910-1920 ও 1945-47 এ। সে সব নিয়ে আগের পর্বেই কথা হয়েছে। এইপর্বে 1947 পরবর্তীকাল বিশ্লেষণ করা হবে।
1870 থেকেই বাংলার বিভিন্ন অংশকে কেটে ছেঁটে অন্যপ্রদেশে দিয়ে দেওয়া হচ্ছিল। দেশভাগ হবার পরেও তাবলবৎ থাকে। 1956 এর ভাষিক রাজ্য পুনর্গঠনের সময়ে শুধুমাত্র মানভূমভাষা আন্দোলনের কারণে পুরুলিয়া পায়, বাকি অংশটি বিহারেই থাকে। সেই সব অঞ্চলে ধীরে বাংলা নিশ্চিহ্ন হয়।আসামের বরাকে ভাষা আন্দোলের মাধ্যমে বাংলা থাকলেও গোয়ালপাড়া অঞ্চল থেকে পুরোপুরি বাংলা নিশ্চিহ্ন হয়। তাছাডা আসামে বঙ্গাল খেদা, মেঘালয়ে, ত্রিপুরাতে বাঙালী গণহত্যা, বিহারে, উড়িষ্যাতে বাঙালী বিরোধী আন্দোলন হয়।ফলে পশ্চিম বঙ্গের বাইরে ভূমিপূত্র বাঙালী কোনঠাসা হয় ও ভারতীয় বাঙালী বিশাল এলাকা হারায়।খোদ পশ্চিম বঙ্গেই নেপালের সাথে উন্মুক্ত সীমান্তের দরুণ দার্জিলিং পর্বতে বাঙালীর এথনিক ক্লিনজিং হয় এবং বর্তমানে সেই ধারা অব্যাহত।এছাড়া উত্তর বঙ্গ থেকে রাঢ় বাংলা থেকে ত্রিপুরা সকল জায়গতাতেই বাঙালী বহিরাগত ও উপজাতি ভূমিপুত্রের জিগির তুলে ক্রমাগত বাঙালী উপরে নির্যাতন হয়।
দেশভাগের ফলে নিঃস্ব বাঙালী উদ্বাস্তু বৈষম্যের শিকার হয়।পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের উদ্বাস্তুদের ক্ষেত্রে পুরোপুরি বৈষম্যমূলক নীতি নেওয়া হয় পশ্চিম পাকিস্তানের হিন্দু ও শিখ ভারতে এসে ফুলেফেঁপে ওঠে।কিন্তু পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালী উদ্বাস্তুদের (অবাঙালীদের ক্ষেত্রে উল্টো নীতি নিয়েছিল) বহিরাগত দাগিয়ে জাতিগত বৈষম্য, হিংসার স্বীকার হয়।
উপরন্তু খোদ পশ্চিম বঙ্গেই বাঙালীকে দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক বানানো হয়। আদতেই এই আধা রুটির টুকরোর মত ভিক্ষা দেওয়ার জন্যই কোন বাঙালী হিন্দু হোমল্যাণ্ড হিসেবে তৈরী হয়নি। এটি মূলত মারোয়ারীদের স্বার্থেই বানানো হয়েছে। ব্রিটিশদের ফেলে যাওয়া বেনামী সম্পত্তি সম্পূর্ণভাবে মারোয়ারীরা দখল করে।এছাড়া রাষ্ট্রীয় মদতেই বাঙালী পুঁজি ধ্বংস হয়। নক্সাল দমনের নামে তরুণ বাঙালীদের হত্যা করে শেষ মেরুদণ্ডটিও ভাঙে।এরপর বামেদের হাত ধরে মধ্যবিত্ত ও ক্ষুদ্রমালিক এই দুটি দালাল বাঙালী শ্রেণীর হাত ধরে সম্পূর্ণ রূপে কফিনে শেষ পেরেক পোঁতে। সকল রাজ্য তাহার নিজের জাতির জন্যেই সুরক্ষিত কিন্তু পশ্চিম বঙ্গ হয় মুক্তঞ্চল।ফলে চুড়ান্তভাবে একপাক্ষিক সম্পর্কে আটকা পড়ে বাঙালী।
এইভাবে ধীরে ধীরে বাঙালী হিন্দুর অন্তরায় ঘনিয়ে আসে।
এত কিছুর পরেও বাঙালী হিন্দু কিচ্ছু করতে পারলনা কেন? দক্ষিণীদের মতো নিজেদের আখের গোছালোনা কেন? উত্তর জানতে পরের পর্বের অপেক্ষা করতে হবে।সেখানে বাঙালী হিন্দুর সম্পূর্ণ পোস্টমর্টেম হবে এবং কীভাবে বাঙালী মুসলমান এই সংকট আটকালো সেটাও তারপরের পর্বে বিশ্লেষণ হবে।
Read MoreAuthor: Purandhar Khilji
Historical Hindu 14-June-2022 by east is risingবাঙালী হিন্দু বিশ্বের সব থেকে পশ্চাৎপদ জাতগুলির মধ্যে পড়ে। বাঙালী হিন্দুর বিবর্তন তাম্রযুগ অবধি।subsistence farming , ঘরোয়া সংসারকেন্দ্রিক জীবন, পাড়া গাঁই জগৎ এইভাবেই বাঙালী হিন্দু গড়ে উঠেছে। ফলেনগর সভ্যতা, কৌমচেতনা, সমষ্টিগঠন, বাণিজ্য, শিল্প, রাষ্ট্রচেতনা এসবের বিকাশ হয়নি।এছাড়াও নারী পুজারী হবার কারণে পৌরুষের বিকাশ ঘটেনি। ফলেসাহস, সততা, শক্তি, বিজয়, সম্প্রসারণ, প্রাচুর্য, মূল্যবোধ, সামাজিককাঠামো, ন্যায়বোধ এসব পুরো ভিনজগতের ধারণা।এগুলি সমস্ত ভারতীয়দের জন্যে প্রযোজ্য হলেও বাঙালী হিন্দু আরো পেছনের সারিতে কারণ এরা দল বানাতেই পারেনা। বাকী ভারতীয়দের মতো দল বানিয়ে রাষ্ট্রের থেকে কিছু আদায় করতে পারেনা, পয়সা কড়ি করতে জানেনা বরং যেটা করে তা হল নিজেদের মধ্যে কামড়াকামড়ি, হিংসা হিংসি।যদু বংশকে শেষ করতে বহিঃশত্রু লাগেনা।
বাঙালী হিন্দুই বোধহয় একমাত্র জাতি যেখানে মধ্যবিত্তকে এলিট বলে দেওয়া হয়।কারণ এদের কাছে ওটাই বিশাল পাওনা। তাছাড়া ঈর্ষাতে তাহার জুড়ি মেলা ভার।এই জাতির পুরুষদের চরিত্রও পুরো নারীদের মতো (ইহা যদিও সকল ভারতীয়র জন্যেই প্রযোজ্য, কিন্তু বাঙালী হিন্দুর ক্ষেত্রে তা অন্যমাত্রা ধারণ করে)। এর জন্যে বাঙালী হিন্দুর মধ্যে কোন আকাঙ্খাই নেই। খাদ্য, বাসস্থান, সংসার হলেই তার যথেষ্ট এবং মূলত একটা ঘোরের জগতে দিবাসপ্ন দেখে বাকিটা কাটায়।তার ফলে ক্রমাগত তার পশ্চাৎদেশে একটার পর একটা আছোলা বাঁশ ঢুকলেও সে কোনরকমে মাথা গোঁজার ঠাঁই খুজলেই যথেষ্ট মনে করে। ফলে ক্ষমতা, অর্থ, শক্তি, সুখ সব কিছু থেকেই তারা বঞ্চিত।আর নিজেদের মধ্যেই মারামারি করা এদের জন্মজাত। ফলে এদের বিনাশ আটকানো সম্ভব হয়নি।
একটা বাজারি কথা খুব প্রচলিত যে কলকাতার এলিটরা না কী জেলাকে বঞ্চনা করছে!!!! এই বোকাদেরকে যদি জিজ্ঞাসা করা হয় যে এই এলিট কারা তখন তারা অঙ্গুলি দেখাবে শহরতলিতে থাকা মধ্যবিত্তের দিকে।অথচ কলকাতার এলিট আদতে তো গুজরাটী, মারোয়ারীরা। বাঙালী কে কীভাবে এলিট বলবো?এটা যাদের চোখে পড়েনা তারা বোকা ছাড়া আর কি? কলকাতাতে এসে দুনিয়ার লোক ফুলেফেঁপে ওঠে অথচ এই জেলা থেকে আসা বাঙালিরা বঞ্চিতহয়। কলকাতা তো দুরহস্ত, এখন হুগলী শিল্পাঞ্চল, হাওড়া, শিলিগুড়ি, খড়গপুর, আসানশোল, দূর্গাপূর সব বাঙালীর হাতছাড়া। অর্থাৎ এরা শহরাঞ্চল দখলে রাখতে অপটু কারণ নগর সভ্যতাতে এরা পৌঁছয়নি।উল্টে পূর্ব পুরুষের সম্পত্তি সব মায়ের ভোগে পাঠিয়েছে। পারিবারিক বিবাদ, পড়শীর বিবাদ, শরীকী বিবাদ করে সব সম্পত্তি খুইয়েছে, পৈত্রিক সম্পত্তি বেচে খেয়ে উড়িয়েছে।
এই একটা উদাহরণ দিয়েই বোঝা যায় যে এদের বিকাশ কতটা নিম্নে যে এরা কিছুই ধরে রাখতে অপারগ।
আবার পেছনে ব্যাঙ্গ বিদ্রুপকরা, পেছনে লাগা, কাঠি করার মতো অসভ্য জংলীপনা ও এদের সংস্কৃতির মধ্যে পড়ে।
এবার দেখা যাক এদের নারীপূজার উন্মাদনা। বাঙালী হিন্দু নারী নামেই পাগল, দিগ্বিদিকশূণ্য।হতদরিদ্র জাতি হয়েও এরা মেয়েদের জন্য টাঁকশাল উন্মুক্ত করে দেবে। ফলে ছেলেগুলোকে ছোটবেলা থেকে গবাদীপশু বানাতে লাগে।বাল্যকাল থেকেই এরা মেয়েদের শিক্ষা দেয় যে তুমি আলালের ঘরের দুলালী, তাই আজীবন মাগনাতে অন্যের অর্থে ফুটানী করবে। আর ছেলেদের শিক্ষা দেয় যে একদম মেরুদণ্ডহীন ক্লীবলিঙ্গ হয়ে অন্যের খ্যাঁটনের যোগান দেবে, তোমার মানুষ হিসাবে কোন জীবন থাকবেনা এবং এর জন্যে তোমাকে সারা জীবন ইঁদুরদৌড় করে যেতে হবে।ফলে এদের মেয়েগুলিকে একদিকে সাপের পাঁচপা দেখে আর ছেলেগুলির জীবন বলেই কিছু থাকেনা, পুরোপুরী নারীসুলভ, স্তাবক, ভীরু, অসামাজিক, কাঠিবাজ, হিংসুটে, কুচুটেপ্রকৃতির। এর ফলে এরা কোন সমষ্টিই বানাতে পারেনা।
এদের বৃদ্ধগুলি আরেক বিষ। এদের মানসিকতা হল এদের পরবর্তী প্রজন্মহল এদের বৃদ্ধবয়সের পেনসন, সন্তানদের মুখ্য ফাংশন ইহল তাদের অপদার্থ অবসর জীবন কাটানোর যোগান দেওয়া।ফলে এরা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে যূপকাষ্ঠে বলি দেয় নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্যে।
তবে এই জনগোষ্ঠীর সকলেই নিজেকে বিশাল কিছু মনে করে।
উপরিউক্ত সমস্ত কিছুই মাত্র একটি সারাংশ। পুরো বলতে গেলে শতগিলগামেশের চেয়েও বড় উপাখ্যান হবে।
তবে একটা জিনিস পরিষ্কার, এই জনগোষ্ঠীর পক্ষে কিছু করা তো দুর হস্ত, টিকে থাকাও দুষ্কর।কারণ বাকি সবকিছুর মতো এরা ডেমোগ্রাফিও হারিয়ে ফেলেছে। তবে এই অর্বাচীনদের মতে জনসংখ্যাও বোঝা।
তবে নে, এবার ঠেলা বোঝ।
Author: Purandhar Khilji
Historical Hindu 14-June-2022 by east is risingবাঙালি হিন্দু ১৮৭০ থেকে ইলবারট বিলকে কেন্দ্র করে ক্রমেই ব্রিটিশদের সাথে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে। চীন ও বাংলা অষ্টাদশ শতকে ছিল বিশ্বের সবচেয়ে বেশি শিল্পোন্নত অঞ্চল এবং সবচেয়ে বড় বাজার। কিন্তু ১৮৪০ এর পরে ব্রিটেন ও পশ্চীম ইউরোপ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হয়ে উঠতে শুরু করে সবচেয়ে বেশি শিল্পোন্নত অঞ্চল এবং সবচেয়ে বড় বাজার। ফলে পূর্ব দিকের কোলকাতার থেকে পশ্চীম দিকের মুম্বাই-এর গুরুত্ত্ব বাড়তে শুরু করে। কারণ চীন ও বাংলার সাথে যখন প্রধান বাণিজ্য তখন কোলকাতাই গুরুত্বপূর্ণ আর পশ্চীমের সাথে যখন প্রধান বাণিজ্য তখন মুম্বাই সুরাট ইত্যাদির গুরুত্ব বেড়ে যাবে। ১৮৭০ থেকে এটাই হচ্ছিল আর তাই বাঙালি হিন্দুর ব্রিটিশদের প্রধান বন্ধু হিসেবে থাকাটা অসম্ভব হচ্ছিল। তাই বাঙালি হিন্দু ও ব্রিটিশ দ্বন্দ্বে লিপ্ত হয়।
প্রথমে দ্বন্দ্বের জন্য বাঙালি হিন্দু বাংলা জাতিয়বাদের দিকে যায়। ১৮৮০-এর আদম সুমারী থেকে বোঝা যেতে থাকে যে বাংলা আস্তে আস্তে মুসলমান প্রধান অঞ্চল হয়ে যাচ্ছে। ব্রিটিশরা ১৮৫৭ শিপাই বিদ্রোহ থেকে শিক্ষা নেয় যে মোঘল ও ব্রাক্ষণ জোট ভাঙতে হবে কারণ ব্রিটিশ শিপাইদের ব্রাক্ষণ অংশ বিদ্রোহ করে কিন্তু রাজপুত অংশ ব্রিটিশদের প্রতি অনুগত থাকে। তাই হিন্দি অঞ্চলে রাজপুতদের ক্ষমতা বাড়াতে ও হিন্দু-মুসলমান দূরত্ব বাড়াতে হিন্দিকে উর্দুর থেকে পৃথক ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেয় ব্রিটিশরা ১৮৬৭ সালে আর সেন্ট্রাল প্রভিন্স (বর্তমান ইউপি) হিন্দিকে সরকারী ভাষা বানায় ১৮৮১ সালে। এইভাবে একটা বিশাল অঞ্চলকে হিন্দিভাষি বানিয়ে ফেলল ব্রিটিশরা।
ব্রিটিশরা বাঙালি হিন্দুদের বাঙালি জাতিয়তাবাদকে ভাঙতে হিন্দি ভাষা ও মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠতা দুতোকেই ব্যবহার করে। ১৯০৫-এ রিসলে সাহেব বলেন, "United Bengal is a power, once divided it will fall into different ways"। অর্থাৎ বাঙালি জাতিয়তাবাদকে ভাঙো। কার্জন বঙ্গ ভঙ্গ করতে চাইল এমনভাবে জাতে পূর্ব দিকে মুসলমানরা সংখ্যাগুরু হয়ে আর পশ্চীমে হিন্দিভাষিরা সংখ্যাগুরু হয়। এভাবে বাঙালি হিন্দুকে শক্তিহীন করে ফেলা সম্ভব। এই চাপের মুখে বাঙালি হিন্দু বলল বাঙালিকে এক রাখতে হবে। অর্থাৎ বাঙালি হিন্দু মুখে বলল যে তারা বাঙালি মুসলমানকে বেশি আপন মনে করে। কিন্তু কাজে এই মিলনের পক্ষে কোন আন্দোলন গড়ে তুলতে পারলনা। শশঙ্ক ও ইলিয়াস শাহ-কে এক সূত্রে গাঁথতে হত। সিস্তানী, তুর্কি, পাঠানদের বিদেশি বলে যে তকমা বঙ্কিম চন্দ্ররা দিয়েছিল তা ভাঙতে হত। কিন্তু বাঙালি হিন্দু সেরকম কিছুই করতে পারলনা। উলটে এক দিকে চিত্তরঞ্জন দাশ বাংলার মুসলমানদের সাথে কোন আদর্শগত জোট না করে স্রেফ রাজনৈতিক জোট চালাতে লাগলেন আর রবীন্দ্রনাথ ভারতের মহামানবের সাগরতীর প্রচার শুরু করলেন।
বাঙালি হিন্দু এটা মেনে নিতে পারছিলনা যে বাংলাতে মুসলমান সংখ্যা ৫০%-এর ওপরে আর তাই বাংলা কখনোই আর উনবিংশ শতকের মতো নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেনা বাঙালি হিন্দু। তাই সে ১৯৩০-এর দশকে ভারতীয় জাতিয়তাবাদকে আঁকড়ে ধরছিল। কিন্তু ভারতকে হাতে রাখতে সে বাঙালি মুসলমানকে বাঙ্গালিত্বের মোড়কে সাঝাতে চাইছিল। এদিকে ১৯৩০-এর দশকে ফজলুল হকের সময় থেকেই কৃষক প্রজা পার্টি বানিয়ে বাঙালি মুসলমান দেখিয়ে দেয় স্বাধীন বাংলাতে নিজেদের শাসন প্রতিষ্ঠাই তাদের বেশি পছন্দের। এর মানে হল বাঙালি হিন্দু চাইছিল বাঙালি মুসলমান যেন তার সংখ্যা দিয়ে ভারতে বাঙালির সংখ্যা ও ক্ষমতা বাড়ায় আর বাঙালি মুসলমান চাইছিল স্বাধীন বাংলায় সংখ্যাগুরু হিসেবে নিজেদের ক্ষমতা প্রতিষ্ঠা করতে এবং বাঙালি হিন্দু যেন সেই কাজে বাঙালি মুসলমানকে বাঙ্গালিত্বের নামে সমর্থন করে। বাঙালি হিন্দু যা করতে পারত তা হল খুব শক্তিশালী সংখ্যালঘু হিসেবে স্বাধীন বাংলায় নিজেদের প্রতিষ্ঠা করা এবং সেখানে নিজেদের দাবিদাওয়া দরকষাকষির মধ্য দিয়ে সংখ্যাগুরু বাঙালি মুসলমানদের কাছ থেকে আদায় করা। সেটা না করে বাঙালি মুসলমানদের ওপর নিজেদের তৈরি উনবিংশ শতকের বাঙ্গালিত্ব চাপাতে গেল আর ভেবে গেল বাঙালি মুসলমানের সমর্থন নিয়ে ভারতকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে।
এরকম ভুল ভাবনা সফল হয়নি স্বাভাবিকভাবেই। বাঙালি হিন্দু পশ্চীম বঙ্গ নামে ভারতের মধ্যে ৮% জনসংখ্যার দুর্বল একটা রাজ্য তৈরি করল। ৪৭%-এর হিন্দিভাষি বা ৫২%-এর হিন্দি-গুজারাতি জোটের সামনে এই ৮% খুবই দুর্বল। এই ৮% বাঙ্গালির মধ্যে আবার ৩০% বাঙালি মুসলমান, ৩ঁঁ% উর্দুভাষি মুসলমান, ৮% হিন্দিভাষি ও ২% নেপালী। বাঙালি হিন্দু ৫৭%-এর বেশি নয় পশ্চীম বঙ্গে। আসাম, ত্রিপুরা ও ঝারখণ্ডে বসবাসরত বাঙালির মধ্যে সেরকম কোন উদ্দীপনা তৈরি করতে পারেনি। ১৯৪৭-এর ধাক্কা বাঙালিকে ভেঙেচুড়ে দিয়েছে। শুধু পাওয়ার মধ্যে বাংলাদেশ নামে একটা রাষ্ট্র তৈরি করতে পেরেছে বাঙালি মুসলমানেরা। বাকিটা একদম এলোমেলো হয়ে আছে। ইতিহাস এই এলোমেলো অয়ে যাওয়া জাতিকে খুব শিঘ্র একটা সুযোগ দিতে চলেছে। দেখা যাক.........।
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Historical Hindu 11-June-2022 by east is risingহিটলারকে নিয়ে আরেকটা অপ্রিয় সত্য। হিটলারের চেয়ে হাজার গুণ বেশী অত্যাচারী শাসক খোদ ইউরোপেই এসেছে। হত্যাযজ্ঞও চালিয়েছে। কিন্তু সব দোষ নন্দঘোষের মত হিটলারের উপরেই বর্ষায় কেন?এটাও একটু খতিয়ে দেখা দরকার। বেলজিয়ামের লিওপোল্ডকে এত ঘৃণা করা হয়না। গোটা আমেরিকাই নেটিভ আর কৃষ্ণাঙ্গদের অমানুষিক অত্যাচারের মাধ্যমে তৈরী। তো এতকিছু ছেড়ে সব দায় হিটলারের উপর কেন? ফ্যাসিবাদ তো গোটা ইউরোপজুড়ে ছিল। শ্বেতাঙ্গবাদী তো সব ইউরোপীয় দেশই ছিল কমবেশী। চার্চিলের মতো নরদানব নায়ক হলে হিটলার কেন ঘৃণ্য ভিলেন হলেন? আসল সত্যটা উদঘাটন করা যাক।
হিটলার মোটেই শ্বেতাঙ্গবাদী ছিলেননা,ছিলেন জার্মান জাতীয়তাবাদী। হিটলার খোদ অন্যান্য শ্বেতাঙ্গ জাতিকেই untermensh তকমা দেন। হিটলারের lebensrum এর মূল উদ্দেশ্য ছিল পূর্ব ইউরোপের উর্বর জমিগুলো দখল করে সেখানে পাকাপাকিভাবে জার্মানদের বসতি গড়া। উপনিবেশ নিয়ে অত মাথা ঘামায়নি। মূল লক্ষ্য ছিল ইউরোপে জার্মান আধিপত্য পাকাপাকিভাবে স্থাপন করা। এবার এর থেকেই আসল কথা বোঝা যাবে। হিটলারের ভিক্টিমরা ছিল সবাই কমবেশী শ্বেতাঙ্গ ইউরোপীয়, অশ্বেতাঙ্গ না। হিটলার একের পর এক শ্বেতাঙ্গ দেশ দখল করে তাকে ছারখার করে তার মধ্যে ঔপনিবেশিক শক্তিগুলিও বাদ যায়নি। যে ফ্রান্স, বেলজিয়াম, হল্যাণ্ড, ব্রিটেন একসময়ে গোটা বিশ্বে ত্রাস ছড়িয়েছে নাৎসী বাহিনী তাদের ভূমিতে গিয়েই হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে আসে। এইজন্যেই শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যের জগতে চক্ষুশূল হয়ে ওঠে হিটলার। কী সাহস দেখো, যে শ্বেতাঙ্গরা এতদিন ঈশ্বরের ন্যাওটা বলে ভাবা হত হিটলার তাদেরকেই এরম হাল করল নিজে শ্বেতাঙ্গ হয়ে!!!! আবার খোদ শ্বেতাঙ্গ জাতিদেরকেই untermensh বলছে,যেটা এতদিন অশ্বেতাঙ্দের বলে আসা হয়েছে!!!কী সাহস দেখো!!! এইটা কোনদিন ভুলতে পারেনি শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যকামীরা। সেই থেকেই তাকে নরদানব বানানো। ইহুদী আর রোমাদের গণহত্যা ইউরোপের ইতিহাসের সাথে প্রথমথেকেই জড়িত। ইতিহাস ঘাঁটলে এই ইউরোপের সব তথাকথিত মহানদেরই হাত এদের রক্তে রঞ্জিত। ইউরোপের সঙ্গে ওতপ্রতভাবে জড়িয়ে আছে ইহুদীবিদ্বেষ। তাহলে একা হিটলারকে কাঠগড়াতে দাঁড় করানো কেন বাপু!!!! আসলে ওসব কোন কারণ না। আসল কারণ হল এই স্বপ্নের white man's burden এর দুনিয়াকে চুরমার করে দেন হিটলার। শ্বেতাঙ্গ ইউরোপীয়রা গোটা বিশ্বে যা ধ্বংসলীলা চালিয়ে গেছে সেটার কিছুটা হলেও তিনি খোদ তাদের ভূমিতেই ফেরত দেন। নিয়তির কী অদ্ভুত পরিহাস। আর তাতেই এত ক্ষোভ, রাগ, ঘৃণা। কোন মানবতাপ্রেম থেকে না। যারা গোটা আমেরিকা মহাদেশে conquistidor পাঠিয়েছে, আফ্রিকানদের দাস বানিয়েছে তাদের উপর অকথ্য অত্যাচার করে, গোটা ভারতীয় উপমহাদেশকে চুষে শেষ করেছে, নেটিভ আমেরিকানদের trail of tears এ পাঠিয়েঠেন তারা আবার মানবতার পাঠ পড়াবেন!!! যে স্লাভদের 'মানবেতর' আখ্যা দেওয়া হয়েছিল তারাই আজ দলে দলে শ্বেতাঙ্গবাদের ঝাণ্ডাবাহক, কী অদ্ভুত না!!!
Hitler was just another european dictator. কিন্তু তার ভিক্টিম সিংহভাগ শ্বেতাঙ্গই। এখনও শ্বেতাঙ্গকেন্দ্রিক এই বিশ্বে তাই তার কোনো ক্ষমা নেই। যদি চার্চিলের মতো কোন অশ্বেতাঙ্গ জাতিকে অনাহারে মারতেন তাহলে হয়ত তিনিও আজ নায়কের জায়গাতে থাকতেন, কে জানে।
Read MoreAuthor: Purandhar Khilji
Historical General 11-June-2022 by east is rising●|| Gaudeshwar Paramasaugata Madhusen - the King of Bengal who defeated Turks of Bihar & reestablished Nalanda & Buddhagaya (1278)||
●
In 1193, the Nālandā Viśhwavidyālaẏa & Baud'dhabihāra was destroyed by the Turk fanatic Bakhtiyar Khilji; this event is seen by scholars as a late milestone in the decline of Buddhism in India. The Persian historian Minhaj-i-Siraj, in his chronicle the Tabaquat-I-Nasiri (طبقات نصیری), reported that thousands of monks were burnt alive and thousands beheaded as Khilji tried his best to uproot Buddhism by the sword; the burning of the library continued for several months and smoke from the burning manuscripts hung for days like a dark pall over the low hills. This ended in total decline by 1197 CE.”
In the second half of the thirteenth century Bengal was ruled by the Sena dynasty with Bikrampur as its capital. Maharaja Narayan Sen was succeeded by his mighty son Paramasaugata Madhusen who ascended the throne of Bengal. He was a devotee of Bud'dha Tathāgata and held the title of 'Paramsaugata' (পরমসৌগত/ परमसौगत).
● Conquest of Lakhnauty (1272 AD) :
In 1268 after the death of Tatar Khan, the Sultan of Delhi Ghiyasuddin Balban appointed Sher Khan (شير خان) to serve as the Governor of Lakhnauty. Sher Khan ruled quietly for four years as he received little funds and power from Delhi. Thus, Bengal remained in the hands of the Sena dynasty kings. At this time Maharaja Madhusen attacked Lakhnauty with a well-organized Kaivartya navy. The Gaudiya army, located on the west bank of the Karatoya River, tore apart the Turk army with incessant arrows. Sher Khan was killed in this battle. Paramasaugata Madhusena ascended the throne of Gauda and held the title of "Gaudeshwar". Raja Gour Govardhan of Srihatta was ruling Lakhnauty as the feudal king of him. A handwritten ancient Sanskrit manuscript preserved by the Bengal Government states that ' "Paramabhaṭṭāraka Mahārājādhirāja Paramasaugata Madhusēna" ruled Gaudavanga at 1272 AD (1194 Shaka).
● Conquest of Magadha (1278 AD) :
Following the death of Governor Sher Khan in 1272, Amin Khan Aitigin (امین خان آیتگین) was appointed as the Governor of Oudh and Bihar by Ghiyas ud din Balban, the ruler of the Delhi Sultanate. Since Bengal had been under the control of the Sena dynasty for over 30 years, he remained a weak governor with little money or power.
Taking the advantage of the weakness of the Turks in Eastern India, Vaṅgādhipati Madhusēna formed an alliance with Kamaraj Purushottam Singha and Ashoka Challa and marched towards Bihar with a huge Dhali infantry. Amin Khan was defeated in a two-pronged attack from east and south and fled to Oudh. The Magadha and Gaya regions were conquered by Bengal and ruled by feudal lords of the Sena dynasty at that time.
● Restoration of Buddhagaya and Nalanda Vishwavidyalay :
After a long period of 85 years, the Sanātanī rule was reestablished by Gaudeshwar Madhusen in Magadha by expelling the Mlēccha Turks. Paramasaugata Raja Madhusena, a devotee of Bud'dha Tathāgata, organized a Mahāsaṅgha in the Gaya region, the holy shrine of the Buddhists, to re-establish Buddhism. Buddhism was being newly established in the Gaya region on the initiative of his feudal lords Kamārāja Puruṣhōttama Singha and Sapādalakṣhapati Aśhōkachalla. The Nalanda vishwavidyalaya & monastery, destroyed by the Turks, was renovated and re-established by Gaudeshwar Madhusen. A Buddhist inscription found in the contemporary Gaya region mentions "Lakṣhmaṇasēna Dēvapādānāmatītarājyē (লক্ষ্মণসেন দেবপাদানামতীতরাজ্যে/ लक्ष्मणसेन देवपादानमतीतराज्ये), which testifies to the existence of Bengal's Sena rule in Magadha at that time.
Read MoreAuthor: শান্ডিল্য স্নেহাংশু দেবশর্মা
Historical General 23-November-2021 by east is risingঅষ্টাদশ শতাব্দীতে ভারত ইংল্যান্ডের উপনিবেশ হয়। স্বাভাবিকভাবে প্রতিযোগিতায় এঁটে উঠতে না পেরে ইংল্যান্ড আইন বানিয়ে জোড় করে ভারতীয় শিল্পগুলোকে ধ্বংস করতে সচেষ্ট হয়। মার্কিন স্বাধীনতা সংগ্রাম শ্রম অনুসারে প্রাপ্তি তত্ত্বকে দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করে। ফরাসি বিপ্লব সামন্তপ্রভুদের উচ্ছেদ করে ভূমি সংস্কার কর্মসূচী পালন করে উৎপাদনকারী শক্তি বাড়িয়ে তোলে। ইংল্যান্ডে শিল্পবিপ্লব শুরু হয়। শিল্পবিপ্লবের পরে বস্তুগত অবস্থা উৎপাদনকারী পুঁজিবাদের পক্ষে আসে। উৎপাদনকারী পুঁজি একদিকে সামন্তদের আর অন্যদিকে বাণিজ্য পুঁজি-কে পরাস্ত করতে সক্ষম হয়।
এইভাবে ছয় শতাব্দী ধরে লড়াই করে পুঁজিবাদ জয়ী হয়। প্রথম শতকে সামন্ততান্ত্রিক পশ্চীমের কেবল প্রাচুর্য সম্পর্কে ধারণা হয়। দ্বিতীয় শতকে কারিগরি শিল্পের বিকাস হয় এবং তার ফলে শ্রেণী সংগ্রাম তীব্র হয়, যদিও শাসক সামন্ত শ্রেণীর জয় হয়। তৃতীয় শতকে প্রাচ্য থেকে আসা বাঁধাকে দক্ষিণ ইউরোপের সামন্ত শাসকরাই সৃষ্টিশীলতা দিয়ে অতিক্রম করে নিজেদের শক্তি বাঁড়ায় আর উত্তর ইউরোপে বণিক ও কারিগররা সৃষ্টিশীলতা দিয়ে সামন্ততন্ত্রের শক্তি কমায়। চতুর্থ শতকে উত্তর ইউরোপে সামন্ত শ্রেণীর দর্শনকে আঘাত করা হয় এবং বণিক শ্রেণির ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। পঞ্চম শতকে বিশ্বের ইতিহাসে উত্তর ইউরোপে বিশেষ করে ইংল্যান্ডে প্রথম বণিক শ্রেণীর সাথে উৎপাদনকারী পুঁজি একত্রিত হয়ে পুঁজিবাদী দর্শনকে দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করে। শেষ শতকে উৎপাদনকারী পুঁজি শিল্পবিপ্লব করে বস্তুগত অবস্থা নিজের পক্ষে নিয়ে আনতে সক্ষম হয় এবং সম্পূর্ণরূপে জয়ী হয়। এই চলার পথে তৈরি করতে হয়েছে নানা সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান, নানা আবিষ্কার, নানা দর্শন। এবার দেখা যাক মাত্র দুই শতাব্দীতে কমিউনিস্ম ও পুঁজিবাদের লড়াই কিরকম বিকাশ লাভ করেছে।
Author: Saikat Bhattacharya
Historical General 06-November-2021 by east is risingসপ্তদশ শতাব্দীতে পশ্চীম প্রাচ্যের থেকে উৎপাদন ছাড়া অন্য সমস্ত বিষয়ে প্রবলভাবে ছাপিয়ে যায়। আসলে বিশ্বকে সম্পূর্ণ নতুন দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখতে শুরু করে পশ্চীম এই শতক থেকেই। বোরেলির মাইক্রোস্কোপ ও লেন্স আবিস্কার, বলের গ্যাসের চাপ তত্ত্ব, গ্যালিলিওর উন্নত টেলিস্কোপ আবিস্কার যা কোপারনিকাস-এর তত্ত্বকে সঠিক বলে প্রমাণ করে, কেপলারের গ্রহের গতি নিয়ে তত্ত্ব, নিউটনের মাধ্যাকর্ষণ তত্ত্ব, রায়ের সিস্টেমিক্স, হুকের কোষ তত্ত্ব, ডেস্কারটিসের বিশ্ব ব্রাহ্মান্ডকে স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র হিসেবে ব্যক্ষা :- সপ্তদশ শতক শুধু পশ্চীমকেই বিজয়ী বানায়নি, বিজ্ঞানকেও বিজয়ী করেছিল ধর্মের সঙ্গে দ্বন্দ্বে।
“ত্রিশ বছরের যুদ্ধ”-এর শেষে (১৬১৮-১৬৪৮) পশ্চীমী সামন্ততন্ত্রের দুই প্রধান রাষ্ট্রযন্ত্র- পবিত্র রোম সাম্রাজ্য ও স্পেন “ওয়েস্টফালিয়া চুক্তি” করে এবং প্রোটেস্টান্ট দেশ হল্যান্ডের স্বাধীনতা স্বীকার করে নেয়। উত্তর ও পূর্ব জার্মানিতেও প্রোটেস্টান্ট রাষ্ট্রগুলো স্বীকৃতি পায়। তার মধ্যে অন্যতম ছিল ব্র্যান্ডেনবারগের প্রাশিয়া। প্রাশিয়া রাষ্ট্র পরবর্তীকালে জার্মান জাতির ঐক্যকরণ ঘটিয়ে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যকে দুর্বল করতে এবং পরোক্ষভাবে সোভিয়েত ইউনিয়নের ভিত্তি স্থাপন করতে সাহায্য করেছিল।
ইংল্যান্ডে এই শতকে পার্লামেন্টপহ্নী বনাম রাজাপহ্নীদের মধ্যে ব্যপক সংঘর্ষ হয়। যে পার্লামেন্ট ছিল সামন্তদের রাজার ক্ষমতা খর্ব করার মাধ্যম, তা হয়ে দাঁড়ায় সাধারণ জনগণের রাজার ক্ষমতায় লাগাম টানার হাতিয়ার। এই সময়েই ইংল্যান্ডে জন লক (ইতিহাসে উদারবাদের জনক বলে চিহ্নিত) শ্রম অনুসারে প্রাপ্তি তত্ত্বকে তুলে ধরেন। এই তত্ত্ব শুধু অর্থ লোলুপ ব্যবসায়ীকেই নয়, সাধারণ কৃষক ও কারিগর উৎপাদকদেরও সামন্তদের থেকে রাষ্ট্র ক্ষমতা ছিনিয়ে আনতে উদ্বুদ্ধ করে। বিশ্বের ইতিহাসে ইংল্যান্ডে প্রথম উৎপাদনকারী পুঁজি রাষ্ট্র ক্ষমতা ছিনিয়ে নেওয়ার কাজে লীপ্ত হয়। ছোট স্বাধীন কৃষকরা (ইউম্যানরি) পার্লামেন্টের মূল সেনাবাহিনী হিসেবে কাজ করে। যদিও মজার বিষয় পার্লামেন্ট বিজয়ী হওয়ার পরে ছোট কৃষক উচ্ছেদ আরও বৃদ্ধি পায়। উচ্ছেদ হওয়া কৃষক হয় শহরের মজুরে পরিণত হচ্ছিল, নয় উপনিবেশবাদের সেনা, নয় আমেরিকা মহাদেশে পলায়নকারী।
তবে হল্যান্ড এই শতকে সকলকে ছাপিয়ে গেছিল। তারা জাতি রাষ্ট্রকে সরাসরি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য দখলের কাজে ব্যবহার করে। ডাচ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বানিয়ে তাকে একচেটিয়া অধিকার দেয় এশিয়া ও ইউরোপের মধ্যে বাণিজ্য করার। আবার ডাচ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির অর্থের যোগানের জন্য হল্যান্ড বিশ্বের ইতিহাসে প্রথম শেয়ার বাজার তৈরি করে। শেয়ার ছেঁড়ে ডাচ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি তার প্রথম পুঁজি তোলে। হল্যান্ড পর্তুগালকে ভারত মহাসাগরে পরাস্ত করে, এশিয়ার বহু বন্দর পর্তুগালের কাছে থেকে ছিনিয়ে নেয় এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াকে উপনিবেশ বানিয়ে সেখানকার শাসক হয়ে দাঁড়ায়। আপেক্ষিকভাবে উন্নত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার উৎপাদন ব্যবস্থাকে নিজেদের মুনাফার স্বার্থে কাজে লাগাতে শুরু করে হল্যান্ড। সপ্তদশ শতকের হল্যান্ড ছিল বাণিজ্য পুঁজিবাদের পথিকৃৎ।
এই শতকের শেষের দিকে ওসমানীয় তুর্ক সাম্রাজ্যের ও ভারতের মোঘল সাম্রাজ্যের ক্ষয়িষ্ণুতা প্রকট হয়। ওসমানীয়রা ভিয়েনাতে পরাস্ত হয় ১৬৮৩ সালে আর হাঙ্গেরি ছেঁড়ে দিতে বাধ্য হয় ১৬৯৯ সালে। ভারতের মোঘল সাম্রাজ্যও নানা বিদ্রোহে দুর্বল হয়ে পড়ে। চীন সাম্রাজ্য তার শক্তি বজায় রেখেছিল এবং ডাচদের বেশ কিছু নৌযুদ্ধে পরাস্তও করেছিল।
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Historical General 06-November-2021 by east is risingষোড়শ শতাব্দীর সূচনাতে পঞ্চম চার্লস পিতার দিক থেকে স্পেন-এর আর মায়ের দিক থেকে পবিত্র রোম সাম্রাজ্য-এর সম্রাট হয়। ওনার নেতৃত্বে স্পেন আমেরিকা মহাদেশ জয় করে এবং সেখান থেকে বিপুল সোনা আমদানি করতে থাকে ইউরোপে। চার্লস হয়ে দাঁড়ায় ইউরোপের শ্রেষ্ঠ সম্রাট ও সমগ্র বিশ্বের একজন অন্যতম ক্ষমতাবান শাসক। কিন্তু পর্তুগাল চার্লসকে সমুদ্র পথে তীব্র প্রতিযোগিতার মুখে ফেলে দিচ্ছিল। পর্তুগাল এশিয়ার বন্দরগুলো দখল করতে থাকে এবং ভারত মহাসাগরে আধিপত্য কায়েম করে। এভাবে পর্তুগাল এশিয়া ও ইউরোপের মধ্যেকার আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের প্রধান নিয়ন্ত্রক হয়ে দাঁড়ায়। আবার অন্যদিকে ওসমানীয় সুলতান সুলাইমান-এর নেতৃত্বে তুর্কিরা হাঙ্গেরি, সার্বিয়া, ক্রোয়েশিয়া, রোমানিয়া দখল করে নেয়। চার্লস যখন পর্তুগাল ও তুর্কিদের সাথে লড়াইতে ব্যাস্ত তখন তাকে আরেকটা বিপদের মুখে পড়তে হয়। বাইবেল-এর স্বাধীন ব্যক্ষা বেড়ে গেছিল প্রিন্টিং সস্তা হয়ে যাওয়ায়। নতুন বিশ্ব ও নতুন সমুদ্র বাণিজ্য থেকে আগত অর্থ পশ্চীমের মানুষকে অর্থমুখী করে তোলে। আর তাই ক্যাথোলিক চার্চের অর্থোপার্জনে নানা বিধিনিষেধ তাদের পছন্দ হচ্ছিলনা। তাই ক্যাথোলিক চার্চের বাইবেল বিশ্লেষণকে নাকচ করে স্বাধীন ব্যক্ষার পক্ষে কথা বলতে থাকেন উত্তর ইউরোপের মারটিন লুথার ও ক্যালভিন। এই আন্দোলনকে প্রোটেস্টান্ট আন্দোলন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। একদিকে অ-লাতিন জার্মান শেকড়জাত মাতৃ ভাষা্র জাতিগুলো প্রোটেস্টান্ট হয়ে যেতে শুরু করে কারণ ক্যাথোলিক চার্চ কেবল লাতিনকেই কুলীন ভাষা বলে মনে করত। আর অন্যদিকে রাজারা প্রোটেস্টান্ট আন্দোলনের মধ্যে খুঁজে পায় ক্যাথোলিক চার্চ ও পোপের কাছ থেকে পূর্ণ স্বাধীনতার ইন্ধন। চার্লস জার্মানিতে প্রোটেস্টান্ট আন্দোলন দমন করতে চেষ্টা করেন কিন্তু নির্মূল করতে ব্যর্থ হন। ইংল্যান্ড, হল্যান্ড, স্কান্ডেনাভিয়ায় প্রোটেস্টান্টরাই জয়ী হয়।
চার্লস-এর মৃত্যু হলে তাঁর পুত্র দ্বিতীয় ফিলিপ সম্রাট হন। ফিলিপ স্পেন ও পবিত্র রোম সাম্রাজ্যের শ্রেষ্ঠত্ব বজায় রাখতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ছিলেন। উনি ১৫৭১ সালে তুর্কিদের বিরুদ্ধে নৌযুদ্ধে বিজয়ী হন এবং পর্তুগালকে স্পেনের সাথে চুক্তি করতে বাধ্য করান ১৫৮০ সালে। কিন্তু হল্যান্ডের প্রোটেস্টান্ট অঞ্চলের স্বাধীনতা ঘোষণা ঠেকাতে ব্যর্থ হন ১৫৮১ সালে। হল্যান্ডের স্বাধীনতা আন্দোলন পশ্চীমে জাতিরাষ্ট্র-এর ভিত্তি রচনা করে। ১৫৮৮ সালে ফিলিপ নৌযুদ্ধে ইংল্যান্ডের কাছে পরাস্ত হন। এরপর থেকে আটলান্টিক মহাসাগরে পশ্চীমের সামন্ততন্ত্রের প্রধান শক্তি স্পেনের আধিপত্য শেষ হয় এবং বাণিজ্য পুঁজিবাদী (merchantile capitalist) ইংল্যান্ড ও হল্যান্ডের আধিপত্য শুরু হয়।
প্রোটেস্টন্ট আন্দোলনের ফলে পোপের কর্তৃত্ব শেষ হয়, মাতৃভাষার বিকাশ হয়, জাতিরাষ্ট্রের ভিত্তি শক্তিশালী হয়, পয়সা করার জন্য যেকোন কাজ এমনকি সুদের কারবারও সামাজিক স্বীকৃতি পায়। ফলে কৃষক উচ্ছেদ করে জমি গ্রাস করায় আর কোন সামাজিক বাঁধা থাকলনা আর তাই ইংল্যান্ডে “এনক্লোসার মুভমেন্ট” আরও বৃদ্ধি পায়। এই শতকেই ইংল্যান্ডে সেক্সপিয়ার ইংরিজি ভাষার বিকাশ ঘটান তার নাটক রচনার মধ্য দিয়ে।
ষোড়শ শতাব্দীর শেষে পশ্চীমারা গোটা বিশ্বের সমস্ত মহাসাগরের শাসক হিসেবে প্রতিষ্ঠা পায় এবং স্বাধীন বিজ্ঞান, দর্শন, প্রযুক্তি চর্চায় প্রাচ্যের সমকক্ষ হয়ে ওঠে। সমুদ্র শাসন করলেও জমিতে তারা তখনও ভারতের মোঘল সাম্রাজ্য ও ওসমানীয় তুর্কি সাম্রাজ্য-এর সাথে পেরে উঠছিলনা। চীন সাম্রাজ্যের সাথে তারা নৌযুদ্ধেও পরাস্ত হচ্ছিল। চীন, ভারত, জাভা-বালি-সুমাত্রা-মালয়-এর উৎপাদন ব্যস্থা অনেক উন্নত ছিল পশ্চীমের তুলনায়। আর তাই এশিয়ার সাথে পশ্চীমের বাণিজ্য ঘাটতি রয়ে যেত। এই ঘাটতি পূরণ করতে পশ্চীমারা দাস ব্যবসা, লুণ্ঠন এবং জলদস্যুগিরির আশ্রয় নিতে শুরু করে।
এছাড়াও কোপার্নিকাস নামক পোল্যান্ডের বিজ্ঞানী আবিষ্কার করেন যে পৃথিবী সূর্যের চারপাশে ঘোরে যা বাইবেলের শিক্ষার বিরোধী ছিল। বলা বাহুল্য প্রোটেস্টান্ট আন্দোলনের জনক মারটিন লুথার ও ক্যালভিন কোপারনিকাসের পাশে দাড়াননি।
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Historical General 06-November-2021 by east is risingপঞ্চদশ শতাব্দীতে ওসমানীয় তুর্কিদের ইউরোপ বিজয় শুরু হয়। তারা কনস্টান্টিনোপল দখল করেই ক্ষান্ত হয়নি। তারা এশিয়া থেকে ইউরোপে পণ্য যাওয়াও নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। ইতালিয়ারা ব্যাবসা হারাতে থাকে আরও বেশী। এর ফলে ইতালিতে সামন্ত শ্রেণী পুনরায় শক্তিশালী হয়ে যায়। ক্রমেই উত্তর ইতালির একটা বড় অংশ ক্যাথোলিক চার্চের প্রধান শক্তি পবিত্র রোম সাম্রাজ্য (Holy Roman Empire, অধুনা অস্ট্রিয়া, দক্ষিণ-পশ্চীম জার্মানি, হল্যান্ড, বেলজিয়াম, চে্ক, স্লোভাকিয়া, ক্রোয়েশিয়া, হাঙ্গেরি)-এর হাতে চলে যায়।
আইবেরিয়া পেনিনসুলাতে (অধুনা স্পেন ও পর্তুগাল) আরবদের হটিয়ে পর্তুগাল ও কাস্তিল নামে দুই রাজ্য মাথাচারা দিতে থাকে। তুর্কিরা এশিয়ার পণ্য চলাচলে বাঁধা দেওয়ায় পর্তুগাল নতুন ব্যাবসার পথ খুঁজতে থাকে। তারা আটলান্টিক মহাসাগর দিয়ে পশ্চীম আফ্রিকার উপকূল ঘুরে ভারত মহাসাগর পেড়িয়ে ভারত, চীন ও জাভা-বালি-সুমাত্রা-মালয় যাওয়ার চেষ্টা করতে থাকে। এই সুদূর প্রাচ্যের দেশগুলোই ছিল তৎকালীন বিশ্ব উৎপাদনের প্রাণকেন্দ্র। তাই সেখানকার পণ্য পাওয়া গেলে তুর্কিদের বাঁধাকে অস্বীকার করা যাবে আর ইতালিয়দের ওপরও নির্ভরশীল থাকতে হবেনা। পর্তুগালের যুবরাজ হেনরি দ্যা নেভিগেটর এই উদ্যেশ্যে বিশ্বের প্রথম নৌ-সেনা ও সমুদ্র অভিযানের বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলেন। সেখানে উন্নত জাহাজ নির্মাণ প্রযুক্তি প্রস্তুত করে পর্তুগাল। প্রায় একশত বছরের প্রচেষ্টায় পঞ্চদশ শতকের শেষ দশকে পর্তুগালের নাবিক ভাস্কো ডা গামা ভারতে পৌঁছোতে সক্ষম হন এবং মশলা বোঝাই জাহাজ নিয়ে আনেন। ইতিমধ্যে কাস্তিল রাজ্য পর্তুগাল বাদে আইবেরিয়া পেনিনসুলার বাকি অংশ দখল করে এবং তার নাম হয় স্পেন। কলম্বাস নামক এক ইতালিয় চাইছিলেন গোলাকার পৃথিবী ঘুরে আটলান্টিক মহাসাগর দিয়ে আরও পশ্চীম দিকে গিয়ে জাপান, চীন, ভারত-এ পৌঁছতে। ওনাকে স্পেনের রাজা অর্থ দেন এই যাত্রার জন্য। উনি চীন-ভারতের বদলে আমেরিকা মহাদেশে পৌঁছে যান যাকে ষোড়শ শতাব্দী থেকে পশ্চীমারা “নতুন বিশ্ব” (New World) বলে ডাকতে থাকে। পঞ্চদশ শতাব্দীর শেষ দশকের এই দুই নতুন সমদ্র পথ আবিষ্কার ষোড়শ শতাব্দীতে পশ্চীমাদের বিশ্ব ইতিহাসের মূল চালিকা শক্তিতে পরিণত করে। মনে রাখা দরকার পর্তুগাল ও স্পেনের এই দুই সমুদ্রপথ সেখানকার সামন্ত শ্রেণীর অর্জন আর তাই প্রাথমিকভাবে এই দেশগুলোর সামন্ততন্ত্রকেই শক্তিশালী করে।
অন্যদিকে এশিয় পণ্য ইউরোপে আসা বন্ধ হওয়ায় উত্তর ইউরোপিয়রা নিজস্ব উৎপাদন ব্যবস্থা তৈরি করতে থাকে আরও বেশি করে। এর একটা ফল হল এই শতাব্দীর মধ্যভাগে জার্মানিতে গুটেনবারগ-এর চলমান ছাপানোর যন্ত্র (movable printing machine) আবিষ্কার। এই আবিষ্কারের জন্য ছাপানোর কাজ অনেক সস্তা হয়ে যায় এবং তাই বাইবেল পড়ার প্রবণতা অনেক বেড়ে যায়। এর পরিণতি হল ক্যাথোলিক চার্চ বহির্ভূত বাইবেল-এর স্বাধীন ব্যখ্যা বৃদ্ধি পায়। লাতিন ভাষার কৌলীন্য অগ্রাহ্য করে বিভিন্ন মাতৃ ভাষায় বই লেখার ও পড়ার প্রবণতাও বাড়তে থাকে। অন্যদিকে ইংল্যান্ডে হেনরি টিউডর বা সপ্তম হেনরি নামে এক ব্যবসায়ী সিংহাসনে বসেন ১৪৮৫ সালে। টিউডর রাজারা ইংল্যান্ডের সামন্তদের স্বাধীন সেনাবাহিনী রাখার ও বারুদ বানাবার অধিকার কেঁড়ে নেন এবং তাদের বাণিজ্য করতে উৎসাহ দেন। ফলে ইংল্যান্ডে সামন্তদের জায়গায় বণিকদের সামাজিক ও রাজনৈতিক উত্থান হয়। সুতরাং এই শতকে সামন্ততন্ত্র দক্ষিণ ইউরোপে শক্তিশালী হয় আর উত্তর ইউরোপে দুর্বল হয়।
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Historical General 05-November-2021 by east is risingত্রয়োদশ শতাব্দীতে ইতালিয়াদের থেকে পাওয়া এশিয়ার পণ্য ইউরোপের সামন্তদের ও বণিকদের জীবনযাপনের মান বাড়িয়ে দিয়েছিল। কিন্তু চতুর্দশ শতকে মোঙ্গল সাম্রাজ্য ভেঙ্গে যায় এবং ওসমানীয় তুর্কিদের উত্থান শুরু হয়। এর ফলে ইতালিয়দের জাঁকজমক এবং এশিয়া থেকে আগত পণ্যের পরিমাণ কিছুটা কমে। প্রতিক্রিয়া হিসেবে ইউরোপে নতুন সামাজিক বিকাশ দেখা দেয়। এশিয়া থেকে পণ্যের আমদানি কমে যাওয়ায় সেখানে শহরগুলোতে শুধু বাণিজ্য নয়, কারিগরি শিল্প উৎপাদন ব্যাবস্থাও গড়ে উঠতে শুরু করে। বাল্টিক অঞ্চলে (অর্থাৎ বর্তমান জার্মানি, পোল্যান্ড, লাতভিয়া, লিথুয়ানিয়া ও এস্টনিয়া) বণিকদের বাড়বড়ন্ত দেখা যায়। বণিকরা অনেকগুলো শহরের মূল স্তম্ভ হয়ে দাঁড়ায়। ব্যাবসায়িক স্বার্থ কায়েম রাখতে ৯০টা শহর মিলে “হ্যান্সিয়াটিক লীগ” গড়ে তোলে ১৩৫৬ সালে। লীগ ইংল্যান্ড ও ফ্রান্স সরকারের কাছ থেকে অনেক ব্যাবসায়িক সুবিধে ছিনিয়ে নেয় আর স্কান্ডানাভিয়ায় যুদ্ধ করে সামন্তদের কাছ থেকে অনেকগুলো দুর্গ দখল করে। এইভাবে লীগ উত্তর ইউরোপে একটা বিশাল শক্তি হয়ে দাঁড়ায়। তবে লীগ আভ্যন্তরীন দ্বন্দ্বে ভেঙ্গে পড়ে শতাব্দীর শেষের দিকে। লীগের পতনে উত্তর ইউরোপের সামন্তরা হাঁফ ছেঁড়ে বাঁচে। এই দ্বন্দ্বের একটা কারণ ছিল ব্যাবসা ও কারিগরি শিল্পৎপাদন ততদিনে ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সেও ছড়িয়ে পড়েছিল এবং এই নতুন প্রতিযোগিতার মুখে লীগের পক্ষে কায়েমী স্বার্থগুলোকে রক্ষা করা অসম্ভব হয়ে পড়ে।
এশিয়া থেকে আমদানি করা পণ্য ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের সামন্তদের বাজারজাত পণ্যের চাহিদা বাড়িয়ে দেয়। ফলে এক দিকে বণিকদের বিকাশ হয়, আর অন্যদিকে সামন্তদের কৃষকের থেকে, বণিকের থেকে ও কারিগরের থেকে চাওয়া খাজনার পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। সামন্তরা নগদ অর্থ চাইতে থাকে এবং নগদ অর্থের বিনিময়ে অনেক ভূমীদাসকে মুক্তি দিতে থাকে। কিন্তু স্বাধীনভাবে কৃষিকাজ করার আর্থিক সঙ্গতি না থাকায় বহু কৃষক জমি হারায় এবং মজুর কৃষকে পরিণত হয়। “ব্ল্যাক ডেথ”-এর প্রকোপে ইউরোপের জনসংখ্যা কমে যায় একতৃতীয়াংশ। এর ফলে মজুরি বেড়ে যায় বহু গুণ। মজুরির পরিমাণ নির্দিষ্ট স্তরে বেঁধে দেয় সামন্ত শাসকরা। ইংল্যান্ডের সামন্ত ও বড় কৃষকরা ছোট কৃষকদের জমি কেঁড়ে নিয়ে বেড়া দিতে থাকে। এই প্রক্রিয়াকে “এনক্লোসার মুভমেন্ট” বলা হয়। (“এনক্লোসার মুভমেন্ট” ইংল্যান্ডের আদি পুঁজির সঞ্চয়ে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং পরবর্তী কালে শিল্পবিপ্লবের প্রাথমিক শর্ত হয়ে দাঁড়ায় আদি পুঁজির সঞ্চয়।) এর ওপর যুক্ত হয় নরম্যান্ডির ওপর দাবীকে কেন্দ্র করে ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের “একশ বছর ব্যাপী যুদ্ধ”। শহরের বণিক ও কারিগর আর গ্রামের কৃষকদের ওপর ঋণের বোঝা বাড়তে থাকে। ফ্রান্সে বণিক নেতা মার্শালের নেতৃত্বে ১৩৫৮ সালে জেকুয়ারী বিদ্রোহ দেখা দেয় আর ১৩৮১ সালে ইংল্যান্ডে ললারড সম্প্রদায়ের ওয়াট টাইলরের নেতৃত্বে বিদ্রোহ হয়। কিন্তু ফ্রান্স ও ইংল্যান্ডের সামন্ত শাসকরা বিদ্রোহ দমন করতে সমর্থ হয়। সামন্ত শাসকরা জয়ী হয় বটে, কিন্তু যুগ যে বদলাচ্ছে তার ইঙ্গিতও পাওয়া যায় এই শতকে।
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Historical General 05-November-2021 by east is risingত্রয়োদশ শতক থেকেই ক্যাথোলিক চার্চ ও খ্রিষ্ট ধর্ম সম্পর্কে মোহ কমতে শুরু করে পশ্চীমাদের। তারা বোঝে যে শুধুমাত্র ঈশ্বরের নাম নিয়ে যুদ্ধে জেতা যায়না। এশিয়ার প্রাচুর্য, প্রযুক্তি, বিজ্ঞান, দর্শন পশ্চীমাদের আকর্ষণ করতে থাকে। ইতালি প্রথম নতুন পথের দিশা দেখায় পশ্চীমকে। তারা ক্রুসেডের নামে ব্যাবসায়িক প্রতিপত্তি বাড়াবার দিকেই মন দেয় এবং শেষ পর্যন্ত খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বী গ্রীক বাইজান্টাইন সাম্রাজ্যকে দখল করে। বাজান্টাইন দিয়েই ইউরোপে এশিয়া থেকে পণ্য ঢুকত আর তাই ইতালির শহরগুলো যথা ভেনিস, নেপ্লস, জেনোয়া, ফ্লোরেন্স, পিসা, ইত্যাদি ফুলে ফেঁপে ওঠে বাজান্টাইন দখল করে। ইতালিয়দের সুযোগ আরও বেঁড়ে গেল যখন মোঙ্গলরা চীন থেকে শুরু করে হাঙ্গেরি পর্যন্ত বিশাল সাম্রাজ্য গড়ে তুলল। এতদিন আরব, তুর্কি, পার্সি নিয়ন্ত্রিত “রেশম পথ” ছিল এশিয়া ও ইউরোপের মধ্যে বাণিজ্যের প্রধান পথ। মোঙ্গল সাম্রাজ্যের ফলে চীন থেকে রাশিয়া হয়ে ইউরোপ অবধি একটি নতুন বাণিজ্য পথ রচিত হয়। ত্রয়োদশ শতাব্দীতেই মার্কো পোলো সুদূর ইতালি থেকে চীন-ভারত যাত্রা করেন এবং ইতালিতে ফিরে এসে চীনের ও ভারতের উন্নত জীবনযাত্রা, উৎপাদন ও প্রযুক্তির কথা তুলে ধরেন। এর ফলে ইউরোপীয়দের সুদূর প্রাচ্যের উন্নত রাজ্যগুলোতে যাওয়ার ইচ্ছে আরও প্রবল হয়। চীন থেকে প্রিন্টিং যন্ত্র, বারুদ, ঘড়ি, রেশম ইউরোপে নিয়ে এনে ইতালিয়রা অনেক মুনাফা করতে থাকে। ইতালিয় শহরগুলোতে ব্যাবসায়ীরাই প্রধান শাসক হয়ে ওঠে। তাদের প্রিষ্টপোষকতায় আধুনিক চিন্তা ক্রমেই দানা বাঁধে ইতালিয় সমাজে যা নবজন্ম (Reneissance) নামে ইতিহাসে বিখ্যাত। ক্যাথোলিক চার্চের ঈশ্বরে বিশ্বাসের ওপর দাঁড়িয়ে যুক্তিহীনভাবে সবকিছু মেনে নেওয়ার ধারণাকে প্রশ্ন করতে শেখাল আধুনিকতাবাদ। আরব, চীন, ভারত, পার্সি, গ্রীক ও প্রাচীন রোম বিষয় পড়াশুনো শুরু করে ইতালিয়রা যা ক্রমেই গোটা ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ে।
ত্রয়োদশ শতাব্দীতে আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটে ইংল্যণ্ডে। ক্রুসেডের জন্য ইংরেজ কৃষক, কারিগর, সামন্তদের অনেক খাজনা দিতে হয়েছিল রাজাকে। ক্রুসেড শেষ হওয়ার পরেও খাজনা বেঁড়েই চলছিল। ১২১৫ খ্রীষ্টাব্দে রাজার খাজনা বসানোর প্রতিবাদে রাজার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে বেশ কিছু সামন্ত ও পাদ্রি। তাদের দাবী মেনে একটা সনদ গ্রহণ করতে বাধ্য হয় রাজা যা “ম্যাগনা কার্টা” নামে পরিচিত। এর ফলে রাজার ইচ্ছে মতো খাজনা বসানোর ক্ষমতা খর্ব করা হয় এবং সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে রাজাকে গ্রেট কাউন্সিল-এর সভায় সামন্ত ও পাদ্রিদের সাথে আলোচনা করেই সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ১২৬৫ সালে ইংল্যান্ডের রাজা গ্রেট কাউন্সিল-এর সভা না ডাকায় বিদ্রোহ হয় এবং শেষ পর্যন্ত রাজা বাধ্য হয় দ্বিতীয় গ্রেট কাউন্সিল গ্রহণ করতে যা পার্লামেন্ট নামে পরিচিত। পার্লামেন্ট ত্রয়োদশ শতকে ইংল্যান্ডে সামন্তদের ক্ষমতাই বৃদ্ধি করেছিল। সামন্ততন্ত্র বিরোধী প্রতিষ্ঠান হিসেবে পার্লামেন্ট গড়ে ওঠেনি।
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Historical General 05-November-2021 by east is risingপশ্চীমের জাতিগুলো মূলত তৈরি হয়েছে রোম সাম্রাজ্যের ধ্বংসাবশেষের ওপর। ক্ষয়িষ্ণু রোম সরকারের নির্দেশ অস্বীকার করে জার্মান উপজাতিগুলো যেমন গথ, ফ্রাঙ্ক, অ্যাংলো, স্যাক্সন, লোম্বারড, ইত্যাদি রোম সাম্রাজ্যে প্রবেশ করতে শুরু করে চতুর্থ শতাব্দীর শেষের দিক থেকে। এই উপজাতিগুলো তখনও পর্যন্ত প্রাক কৃষি বর্বর স্তরে রয়ে গেছিল। ষষ্ঠ শতাব্দী থেকে তারা কৃষি সমাজে প্রবেশ করা শুরু করে এবং খ্রিষ্ট ধর্ম গ্রহণ করে। দাস ভিত্তিক রোম সাম্রাজ্য ভেঙ্গে পড়ার পরে পশ্চীমারাই গড়ে তোলে ভূমিদাস ভিত্তিক সামন্ততান্ত্রিক সমাজ। ভৌগলিক ও ঐতিহাসিক কারণে পশ্চীম ইউরোপের এই নতুন কৃষি সভ্যতা এশীয়া ও উত্তর আফ্রিকার পুরনো সভ্যতাগুলোর তুলনায় অনেক পিছিয়ে ছিল। পুরনো সভ্যতাগুলো প্রায় খ্রিষ্ট পূর্ব ৪০০০ সাল থেকেই কৃষি সভ্যতায় প্রবেশ করেছিল। তারা তাম্র-ব্রোঞ্জ যুগ পেরিয়ে লৌহ যুগে প্রবেশ করে খ্রিষ্ট পূর্ব ১০০০ সালে। তাই বলাই যায় এই পুরনো সভ্যতাগুলো পশ্চীমের তুলনায় প্রায় সাড়ে চার হাজার বছর আগে থেকে তিলে তিলে গড়ে তুলেছিল প্রযুক্তি, বিজ্ঞান, উৎপাদন ব্যাবস্থা, কৃষি, শিল্প, বাণিজ্য, শ্রেণী বিন্যাস, ধর্ম ও সংস্কৃতি। সপ্তম শতকের মধ্যভাগ থেকে পশ্চীম এশীয়ায়, ভূ-মধ্যসাগরে ও উত্তর আফ্রিকায় আরবদের উত্থান পশ্চীমাদের আরও কোণঠাসা করে দিয়েছিল। অষ্টম শতকের প্রথম দিকে আরবরা আইবেরিয়া পেনিনসুলা (অধুনা স্পেন ও পর্তুগাল), সিসিলি ও দক্ষিণ ইতালির দখল নেয়। উত্তর ইউরোপের স্কান্ডানাভিয়া থেকে ভাইকিং বর্বরদের আঘাত পশ্চীমাদের ব্যাতিব্যাস্ত করে তোলে। তাই দশম শতাব্দী পর্যন্ত পশ্চীমারা নীম্নমানের কৃষি ভিত্তিক সামন্ততান্ত্রিক সভ্যতার বেশি কিছু গড়ে তুলতে পারেনি। সেখানে শিল্প ও শহরের সংখ্যা ছিল খুব কম। তাদের ব্যাবসা বাণিজ্য করার প্রবণতাও কম ছিল। কিন্তু একাদশ শতাদীর গোড়ার দিকে থেকে আন্তর্জাতিক রাজনীতি পরিবর্তিত হয়। আরবদের অবক্ষয় আর তুর্কিদের উত্থান শুরু হয়। ভাইকিংরাও খ্রিষ্ট ধর্ম গ্রহণ করে পশ্চীমা সভ্যতার সাথে মিশে যেতে থাকে এবং তাতে নতুন প্রাণ সঞ্চার করে। এরকম সময়েই পশ্চীমারা ক্ষয়িষ্ণু আরবদের ওপর আঘাত হানে। একাদশ শতাব্দীর মধ্যভাগেই পশ্চীমারা আরবদের থেকে সিসিলি, দক্ষিণ ইতালি ও আইবেরিয়া পেনিনসুলা (অধুনা স্পেন ও পর্তুগাল)-এর একটা বড় অংশ ছিনিয়ে নেয়। আর একাদশ শতকের শেষের দিকে তুর্কিদের সাথে আরব ও গ্রীকদের বৈরিতার সুযোগ নিয়ে পশ্চীমারা ধর্ম যুদ্ধ ক্রসেড শুরু করে। প্রথম দিকে জয়ী হলেও ক্রমেই পশ্চীমারা আরব ও তুর্কিদের উন্নত প্রযুক্তি, বিজ্ঞান ও অধিক জনসংখ্যার কাছে হার মানে। পুরনো সভ্যতা হিসেবে গ্রীকরা খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বী হওয়া স্বত্ত্বেও মুসলমান আরব, কুরদ ও তুর্কিদের সাথে হাত মিলিয়ে পশ্চীমাদের পরাজিত করে। দ্বাদশ শতকের শেষ দশকে ক্রুসেডারদের পরাজয় সম্পূর্ণ হয়।
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Historical General 05-November-2021 by east is rising