স্বল্প জন্মহার সমস্যা রোধে পুরুষের অধিকার, বাজার ও একক পালক পিতার (Foster Father) প্রযুক্তি

All Bengal Men's Forum-এর প্রধান নিন্দিনী ভট্টচারয-কে উৎসর্গ করে এই লেখা লিখলাম।
এক উনি আমাকে উৎসাহিত করেছেন পুরুষাধিকার নিয়ে লিখতে।দুই উনি সমস্ত পুরুষাধিকার সংগঠনগুলোকে নিয়ে একটা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন ১৮ই জুন, ২০২২ ICCR এ। সেখানে আমার দেখা হয় পশ্চীম বঙ্গের প্রথম একক পালক পিতার (Foster Father) সঙ্গে যিনি একক পালক পিতা হওয়ার প্রক্রিয়াটা তুলে ধরেন। আমি তার কাছ থেকে আলাদা করে একক পালক পিতা হওয়ার প্রক্রিয়ার খরচও জানি (১১ লাখ টাকা)।
তারপরেই আমার অনেকদিনের একটা সমস্যা দূর হয়। সমস্যাটা হল স্বল্প জন্মহারের সমস্যা আগামীদিনে মানব সভ্যতা কিভাবে মোকাবিলা করবে। পুরুষাধিকার আন্দোলনে আমার আসা এই সমস্যা দূর করার ইচ্ছা থেকেই। একক পালক পিতা হওয়ার প্রক্রিয়াটা জেনে প্রথম আমি স্বল্প জন্মহার সমস্যা দূর করার একটা উপায় আবিষ্কার করি। এই আবিষ্কার করে আমার ভাল লাগছে এবং আবারও বলি নন্দিনীদির জন্যেই আমি চীন থেকে ফিরে আবারও পুরুষাধিকার আন্দোলনে আসি এবং ওনার জন্যেই অভিষেক বাবুর সঙ্গে আমার দেখা হয়। ওনাদের দুজনের কাছেই আমি ঋণী।   


পুরুষের
পক্ষে বিয়ে যে বর্তমানে লাভজনক প্রতিষ্ঠান নয় তা এখন পুরুষাধিকার আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত লোকেরা সবাই জানে আর মানে কেউ চাইছে আইন বদলে বিয়েকে পুনরায় পুরুষের কাছে লাভজনক করতে আর কেউ বলছে আইন বদলালো কি না ভেবে লাভ নেই, বিয়ে/প্রেম এড়িয়ে গিয়ে জীবনকে উপভোগ কর যৌন ক্রিয়া অন্যন্য অনেক উপভোগ্য ক্রিয়ার মধ্যে একটা তাই যৌন পরিষেবা যাতে বাজার থেকে বিনা বাঁধায় কেনা-বেচা করা যায় তার পক্ষে বলবে পুরুষাধিকার আন্দোলোনের সাথে যুক্ত সকলেই কিন্তু যৌনতার উপভোগ্য পরিষেবা ছাড়াও আরেকটা উপযোগিতা আছে আর তা হল সন্তানলাভ বাজার থেকে যৌন পরিষেবা কিনলেই সন্তানলাভ করা যাবেনা সন্তানলাভ করতে গেলে দীর্ঘ ১০ মাস ১০ দিন ধরে গর্ভ থেকে ভ্রুণ যে পরিষেবা পায় তা নিশ্চিত করতে হবে   

এই গর্ভের পরিষেবা যৌন পরিষেবার থেকে সম্পূর্ণ আলাদা একজন পুরুষের শুক্রাণু একজন নারীর ডিম্বাণু নিয়ে দ্বিতীয় আরেকজন নারীর কাছ থেকে গর্ভ পরিষেবা নেওয়া যেতে পারে প্রযুক্তির মাধ্যমে পুরুষাধিকার আন্দোলনকে শুক্রাণুর বাজার, ডিম্বাণুর বাজার এবং গর্ভ পরিষেবার বাজারকে উন্মুক্ত করার পক্ষে থাকতে হবেকিছু পুরুষের শুক্রাণুর বাজার দর বেশি হবে, কিছু পুরুষের শুক্রাণুর বাজার দর কম হবে কিছু নারীর ডিম্বানুর বাজার দর বেশি হবে, কিছু নারীর ডিম্বানুর বাজার দর কম হবে আবার কিছু নারী গর্ভ পরিষেবা দিতে রাজি থাকবে চীনে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করে এখন আরটিফিসিয়াল গর্ভ তৈরি করা হয়েছে, যদিও তা অনেক খরচ সাপেক্ষ কিন্তু বিজ্ঞান বাজারের চাপে আশা করা যায় ক্রমেই আরটিফিসিয়াল গর্ভ সাধারণ মানুষের সাধ্যের মধ্যে বলে আসবে তা এসে গেলে নারীর কাছ থেকে গর্ভ পরিষেবা পাওয়ার দরকার হবেনা    

এটা মনে রাখা দরকার যে একজন নারী জন্মায় ১০ লক্ষ ডিম্বাণু নিয়ে, কিন্তু সেই নারী যখন বয়ঃসন্ধি কালে পৌঁছয় তখন তার মাত্র ৩০,০০০ হাজার ডীম্বাণু বাকি থাকে এদের মধ্যে ৩০০-৪০০ ডিম্বাণু প্রজনন কালে সন্তান দেওয়ার উপযোগী থাকে যত বয়স বাড়বে নারীর ডিম্বাণুর মান কমতে শুরু করবে বিয়ে/প্রেম/সহবাস ইত্যাদির মতো প্রতিষ্ঠানে হয় একজন নারীকে অল্প বয়সে বাচ্চা নিতে হবে নয়তো বেশি বয়সে বাচ্চা নিতে হবে যখন ডিম্বানুর মান যথেষ্ট খারাপ হয়ে গেছে বর্তমান যুগে নারী যেহেতু পড়াশুনা করে চাকরী করছে, তাই বিয়ের বয়স বেড়ে যাচ্ছে এবং খারাপ মানের ডিম্বানু জাত সন্তান আসছে পৃথিবীতে কিন্তু ডিম্বানুর যদি পর্যাপ্ত বাজার থাকে, তাহলে অল্প বয়সে নারীরা তাদের উচ্চমানের ডিম্বানু বাজারে বিক্রি করতে পারবে যা ব্যবহার করে ডিম্বানুর ক্রেতা পুরুষ নিজের সন্তানলাভ করবে ডিম্বানু বিক্রেতা নারীটি এই ক্ষেত্রে নিজের গর্ভে সন্তান নাই নিতে পারে এবং ডিম্বানু ক্রেতা পুরুষ গর্ভের পরিষেবা পেতে দ্বিতীয় কোন নারীর গর্ভ পরিষেবা কিনতে পারে আরও উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, বিয়ে/প্রেম/সহবাস ইত্যাদির মতো প্রতিষ্ঠানে যেই সকল নারীর SMV বা যৌন বাজার মূল্য অত্যন্ত বেশি, সাধারণ পুরুষ তাদের ডিম্বানুজাত সন্তান চাইলেও পাবেনা কারণ উচ্চ SMVএর নারী প্রজননকালে খুব বেশি বিয়ে করতে পারবেনা এবং সন্তানও নেবে সীমিত সংখ্যায় বরোজোড় ৩টে তাও প্রজনন কালের শেষের দিকে বাকি ২৯৭-৩৯৭ ডিম্বাণু সম্পূর্ণ নষ্ট হবে ডিম্বাণুর বাজার উন্মুক্ত হলে উচ্চ SMVএর নারীর বাকি ২৯৭-৩৯৭ ডিম্বাণু অল্প বয়সেই সন্তান দেওয়ানোতে ব্যবহার করা যেতে পারে আর ওই সময় নারীটি তার পছন্দ মতো কাজও করতে পারবে গর্ভে কোন সন্তান না নিয়েই যেখানে উচ্চ SMVএর নারীর থেকে সমাজ ৩টে সন্তান পাচ্ছিল এখন সমাজ তার থেকে ৩০০-৪০০ সন্তান পেতে পারে কারণ উচ্চ SMVএর নারীর ডিম্বানুর যথেষ্ট পরিমাণে পুরুষ ক্রেতা থাকবে

পুরুষ ১৪ থেকে ৬৫ বছর পর্যন্ত শুক্রাণু তৈরিতে সক্ষম পুরুষ তার পুরো বয়স ব্যবহার করে পর্যাপ্ত অর্থ উপার্জন করে মনের মতো ডিম্বাণু কিনে সময় মতো সন্তান নিতে পারে নারীরাও উচ্চ SMV-এর পুরুষের শুক্রাণু কিনে নির্দিষ্ট বয়সে পৌঁছে সন্তান নিতে পারবে সমস্যা এখানেই যে যেসকল নারী নিজেদের গর্ভ পরিষেবা বাজারে বিক্রি করবে তারা অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল হলেই কেবল এমন কাজ করবে তাই উন্নয়ন যত হবে, মানুষ অর্থনৈতিকভাবে স্বাধীন হবে, এমন নারী পাওয়া কঠিন হবে যে নিজের গর্ভ পরিষেবা বাজারে বিক্রি করবে তাই গর্ভ পরিষেবা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব স্বয়ংক্রিয় করার পক্ষে আমি অর্থাৎ সাধারণ মানুষের জন্য আরটিফিসিয়াল গর্ভ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব উদ্ভাবন করতে হবে কিন্তু এও মনে রাখতে হবে যে গর্ভ পরিষেবা বিক্রেতা তার অল্প বয়সেই যদি এই কাজ শুরু করে তবে ১৫ বছরে (২০ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে) ৭টি সন্তান দিয়ে সে যথেষ্ট রোজগার করে নিক যাতে বাকি জীবনটা তার ভালভাবে কেটে যায় সরকার এক্ষেত্রে গর্ভ পরিষেবার বাজার মূল্য নির্দিষ্ট করে দিতেই পারেতাহলে বহু নারী এই পরিষেবা দিতে উৎসাহ বোধ করবে।   

 শুক্রাণু, ডিম্বাণু গর্ভ পরিষেবার বাজার উন্মুক্তকরণ ভিষণভাবেই পালটে দেবে দুনিয়া জনসংখ্যা একই রেখে দিতে যে কোন সমাজের সমস্ত নারীকে ২টো সন্তান জন্ম দিতে হবে অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু প্রজনন সমস্যার জন্য আমরা আনুমান করি যে . সন্তানের জন্ম গড়ে সমাজে সমস্ত নারীকে দিতেই হবে বিয়ে/প্রেম/সহবাস ইত্যাদির মতো প্রতিষ্ঠান বর্তমান অর্থনীতির সঙ্গে মানানসই নয় একজন নারী নিজের পায়ে দাঁড়াতে গিয়ে তার শ্রেষ্ঠ সময়টায় সন্তান নিতে পারছেনা নারীরা বেশি বয়সে বিয়ে করার কথা ভাবছে বলে পুরুষরাও বিয়ের জন্য পছন্দসই নারী পাচ্ছেনা পেলেও কোন মতে একটা সন্তান নিচ্ছে আমরা যদি শুক্রাণু, ডিম্বাণু গর্ভ পরিষেবার বাজার তৈরি করতে পারি তবে গর্ভ পরিষেবা বিক্রেতা নারীরা গড়ে ৭টা শিশুর জন্ম দিতে পারবে গর্ভ পরিষেবা দিয়ে এর ফলে সমাজের মোট নারী সংখ্যার স্রেফ ৩০% (./=.=৩০%) নারীকে সমাজের প্রয়োজন হবে গর্ভে সন্তান ধারণ করতে বাকি ৭০% নারী সমাজের অন্যান্য কাজে পুরো সময় দিতে পারবে এভাবনে জনসংখ্যা পতন রোধ করা সম্ভব হবে

১০০% পুরুষ ১০০% নারী তার আকাঙ্ক্ষিত মানুষের থেকে তার সন্তান পেয়ে যাবে, তারা পুরো সময়টা সে দিতে পারবে তাদের কর্মক্ষেত্রে ও জীবনকে উপভোগ করাতে তারা পর্যাপ্ত রোজগার করে ও সঠিক বয়সে এসে তবেই সন্তানকে লালন পালন করবে আরেকটা বিষয় হল সকল পুরুষ নারী গড়ে একজন করে সন্তানের লালন করলেই সমাজ জনসংখ্যা পতন রোধ করতে পারবে আগামী দিনের স্বল্প জন্মহারের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে বিয়ে/প্রেম/সহবাস ইত্যাদির মতো প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভরতা কমাতে হবে এবং শুক্রাণু, ডিম্বানু গর্ভ পরিষেবার বাজারকে উন্মুক্ত করতেন হবে এটা করলে জনসংখ্যা হ্রাস তো আটকানো যাবেই, এমনকি সমস্ত মানুষ তার আকাঙ্ক্ষিত মানুষের থেকে সন্তানলাভ করতে পারবে পর্যাপ্ত অর্থ থাকলেই ফলে মানুষ অনেক বেশি অর্থ উপার্জনের জন্য অনুপ্রাণিত হবে এবং এর ফলে অনেক বেশি কর্মোদ্যোগী হবে। আবার জীবনের সবচেয়ে বেশি কর্মক্ষম সময়টুকু নিজের কর্মে নিয়োজিত করতে পারবে আবার জীবনকে উপভোগ করার মতো পর্যাপ্ত সময়ও পাবে আবার সমাজে সমস্ত জীন বেঁচে থাকবে এবং সমাজে জীনের তারতম্য বজায় থাকবে সবার ওপরে একজন মানুষ গড়ে একজন সন্তানকে বড়ো করার দিকেই মন দিতে পারবে।  

তবে মনে রাখতে হবে এই সুন্দর সমাজ তৈরি করতে গেলে নারী ও পুরুষকে সমান চোখে দেখতে হবে। একজন পুরুষকে সমাজ ও আইন যদি তার সন্তানকে বড় করার অধিকার দেয় তাহলে নারীরাও কিন্তু একাধিক সন্তানকে বড় করার দায় থেকে মুক্তি পাবে। নারীরা আজ চাকরীতে যায়, আগের মতো পুরো সময় সন্তানকে দিতে পারেনা। একাধিক সন্তানকে বড় করা তার পক্ষে আরও কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। তাই নারী বাধ্য হয় একের বেশি সন্তান না নিতে এবং অনেক ক্ষেত্রে একমাত্র সন্তানকে কোন পেশাদার আয়ার কাছে বা ক্রেশে সন্তানকে রেখে যেতে। আইন ও সমাজ যদি পুরুষের ওপর তার নিজের সন্তানের ভার ছাড়ে তাহলে পুরুষও পেশাদার আয়া ও ক্রেশের সাহায্য নিয়ে এক বা একাধিক সন্তানকে বড় করতেই পারে। সমাজ ও আইন পুরুষের ওপর পিতা হিসেবে ভরসা করতে পারলে সমাজ ও নারী উভয়েরই লাভ হবে।

আমি আবারও বলব গর্ভ পরিষেবা বিক্রেতাকে যেন সমাজ ও আইন অর্থনৈতিক ও সামাজিক সুরক্ষা দেয়। মোট নারী সংখ্যার ৩০%-কে আমরা গর্ভ পরিষেবা বিক্রেতা বানাতে পারলেই আমাদের সমস্যা অনেক দূর হবে। সেই জন্য গর্ভ পরিষেবার বাজারকে বিক্রেতার কাছে লাভজনক করে তোলা খুবই দরকার। তারা যেন কোনভাবেই তাদের অর্থনৈতিক দুর্বলতার জন্য বঞ্চিত না হয়। তারা বঞ্চিত হলে আমাদের পুরো প্রকল্প ব্যর্থ হবে।

নারী ও পুরুষ সমাজে একে অপরের পরিপূরক। একজনের ওপর ভরসা বাড়ালে আরেকজনের বোঝা খানিকটা কমবে। নারী আজ রোজগার করছে বলে, পুরুষের ওপর অর্থনৈতিক চাপ কমেছে, পুরুষের সন্তান পালনের ওপর ভরসা করতে পারলেও নারীর ওপর সন্তান পালনের চাপ কমবে। তবে ভরসা করতে হবে স্বাধীন পুরুষ ও স্বাধীন নারীকে। স্বামী-স্ত্রী বা প্রেমিক-প্রেমিকা হিসেবে আরে পুরুষ ও নারী একে অপরের পাশে দাঁড়াতে পারবেনা। তাই অবিবাহিত পুরুষকে নিজের ঔরসজাত সন্তানের একক পালক পিতা (single foster father) হওয়ার অধিকার এখনই দেওয়া প্রয়োজন। মানব সভ্যতার ভবিষ্যৎ বিয়ে/প্রেমসহবাস নয়। মানব সভ্যতার ভবিষ্যৎ হল শুক্রাণু, ডিম্বাণু ও গর্ভ পরিষেবার বাজারকে উন্মুক্ত করায়। আশা রাখি একদিন স্বয়ংক্রিয় আরটিফিসিয়াল গর্ভ ও যৌন রোবট আসবে এবং আমাদের জীবনকে আরও সুন্দর করবে।  

প্রথমে এই বাজার কেবল উচ্চবিত্ত ও উচ্চ মধ্যবিত্তদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে কিন্তু ক্রমেই মুনাফা ও সামাজিক প্রয়োজনে অন্যান্য সমস্ত বাজারের মতো তা সাধারণ মানুষের কাছেও সুলভ হবে।
      

Read More

Author: Saikat Bhattacharya

Technology news Sex War 28-June-2022 by east is rising