যে পরিকাঠামোটাই বোঝেনা তার কাছে মজবুত পরিকাঠামো আশা করা ভুল।
১। প্রথমে একটা শক্তিশালী সংসার থাকতে হবে যেখানে জনসংখ্যা বৃদ্ধি ঠিকঠাক হতে থাকবে।
২। তারপরে নিজেকে আত্মরক্ষা করতে পারার মতো একটা বাহিনী দরকার।
৩। তারপরে এলাকা বৃদ্ধি করার জন্য সম্প্রসারণবাদী মানসিকতা ও বাহিনী দরকার।
৪। তারপরে নিজেদের দখলে থাকা অঞ্চলে নিজেদের মতো করে ব্যবসা করার বুনিয়াদ বানানো দরকার।
৫। তারপরে অন্য কোন নিরপেক্ষ অঞ্চলে গিয়ে দরকষাকষি করে ব্যবসা করার পরিকাঠামো দরকার।
৬। সব শেষে শক্তিশালী সংস্কৃতি থাকা দরকার যা অন্য জাতিগুলোর কাছে উক্ত জাতি সম্পর্কে ভয়কে ভক্তিতে পরিণত করবে।
বাঙালি মুসলমান সহ বহু তৃতীয় বিশ্বের জাতি আধুনিক যুগে এখনো পর্যন্ত কেবল মাত্র দ্বিতীয় স্তর অবধি যেতে পেরেছে।
একমাত্র মার্কিন জাতিই ষষ্ট স্তরে আছে। হলিউড থেকে শুরু করে গণতন্ত্র, স্বাধীন সংবাদ মাধ্যম থেকে শুরু করে অভিবাসী হওয়ার হাতছানিঃ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে ভক্তিভাব পৃথিবী জুড়ে বহু মানুষের মধ্যেই আছে।
চীন রাশিয়া পঞ্চম স্তরে আছে আর চীনের পঞ্চম স্তরের বুনিয়াদ রাশিয়ার থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী। তাই চীন আস্তে আস্তে ষষ্ট স্তরে উন্নীত হচ্ছে। চীনের দারিদ্র্য দূরীকরণ, স্বল্প মূল্যের উন্নত মানের পণ্য, সস্তা ঋণ, দ্রুত প্রযুক্তির উন্নয়ন, উন্নত পরিকাঠামো এবং বিশাল বাজার ক্রমেই চীন সম্পর্কেও বিশ্বের মানুষের মনে ভক্তিভাব জাগাচ্ছে।
ইউরোপ ব্রিটেন ও জাপান চতুর্থ স্তর অবধি যেতে পেরেছে আর পঞ্চম স্তরে যেতে ব্যর্থ হয়েছে কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বা রাশিয়ার সাথে বা চীনের সাথে স্বাধীনভাবে দরকষাকষি করার ক্ষমতা তাদের নেই। এমনকি মার্কিন ও চীন রাশীয়ার বৈরিতার সুযোগ নেওয়ার ক্ষমতাও তাদের নেই।
লাতিন আমেরিকার দেশগুলো, ইরান, উত্তর কোরিয়া অধিকাংশ আরব দুনিয়া এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোও চতুর্থ স্তরে আছে। এদের মধ্যে কেউ কেউ মার্কিন ও চীন রাশীয়ার বৈরিতার সুযোগ ভাল মতো নিচ্ছে আর কেউ নিতে পারছেনা।
তুর্কিয়ে চতুর্থ স্তর থেকে পঞ্চম স্তরে উন্নীত হচ্ছে আস্তে আস্তে।
ভারতের নিয়ন্ত্রক জাতিগুলোও (হিন্দি ও গুজারাতি) চতুর্থ স্তরে আছে। তামিল তেলেগু ও শিখরা রয়েছে দ্বিতীয় স্তরে।
বাঙালি হিন্দুদের দ্বিতীয় স্তরটাই নেই। মানে নিজেদের আত্মরক্ষা করতে পারার মতো বাহিনীই নেই। অথচ ষষ্ট স্তরের সাংস্কৃতিক বিষয় নিয়ে এরা অধিকাংশ সময়টা অতিবাহিত করে। এরা বুঝতেই পারেনা যে এদের সাংস্কৃতিক ও গবেষণামূলক কাজের কোন ফলই এরা পাবেনা। কারণ সংস্কৃতি ও গবেষণাকে ক্ষমতায় রূপান্তর করতে গেলে একটা জাতির দরকার যুদ্ধ করার ও ব্যবসা করার পরিকাঠমো ও মানসিকতা। বাঙালি হিন্দুদের যুদ্ধ করার ও ব্যবসা করার পরিকাঠমো ও মানসিকতা কোনটাই নেই। উপরন্তু সংস্কৃতির দোহাই দিয়ে যুদ্ধ করাকে খারাপ বলে চিহ্নিত করে। ফলে এরা যোদ্ধা পুরুষের পুজো করেনা। নারীর হাতে অস্ত্র দিয়ে, নারীর পায়ে পুরুষকে রেখে তারা যোদ্ধা পুরুষকে ব্যঙ্গ করে। যুদ্ধ করতে পারেনা বলে ব্যবসা করতেও ব্যর্থ হয় আবার বিপদে ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারেনা।
এমনকি প্রথম স্তরেও অর্থাৎ সংসার এবং জন্মহারেও বাঙালি মুসলমান ও হিন্দিদের সাথে বাঙালি হিন্দুরা পাল্লা দিতে পারছেনা। তবে এই সঙ্কট প্রায় সমস্ত জাতির জীবনেই ঘনিয়ে এসেছে আর তাই আলাদা করে এই স্তর নিয়ে এখানে বলা হলনা।