(২০২২-২০২৪) এই তিন বছরে ১০ কোটি টাকা বেশি আয় করা বাংলাদেশি মুভির তালিকাঃ-
(টাকা বলতে এখানে বাংলাদেশি টাকায় দেখানো হয়েছে বাংলাদেশি ও পশ্চীম বঙ্গীয় চলচ্চিত্র)
------------------------------
হাওয়া → মেজবাউর রহমান সুমন ২২ কোটি টাকা
পরাণ → রায়হান রাফি ১৭ কোটি টাকা
মুজিব - একটি জাতির রুপকার →শ্যাম বেনেগাল ১২ কোটি টাকা
প্রিয়তমা → হিমেল আশরাফ ৪২ কোটি টাকা
সুড়ঙ্গ → রায়হান রাফি ২০ কোটি টাকা
রাজকুমার → হিমেল আশরাফ ২৬ কোটি টাকা
তুফান→ রায়হান রাফি ৪০ কোটি টাকা (চতুর্থ সপ্তাহে চলছে)
------------------------------
এক নজরে ২০২৪-এর সবচেয়ে সফল পশ্চীম বাংলা্র ছবি (মাল্টিপ্লেক্স চেনে)
১. অযোগ্য: প্রায় ৯২ লাখ ( চার সপ্তাহ)
২. এটা আমাদের গল্প: প্রায় ৬৮ লক্ষ (সপ্তম সপ্তাহ)
৩. নয়ন রহস্য: প্রায় ৫৩ লাখ ( সপ্তম সপ্তাহ)
৪. অতি উত্তম: প্রায় ৫০ লাখ ( অষ্টম সপ্তাহ)
৫. বুমেরাং: প্রায় ২৭ লাখ (চতুর্থ সপ্তাহ)
এক মাসে অযোগ্য, এটা আমাদের গল্প ও বুমেরাং-এর মোট কালেকশন
অযোগ্য- ২.৫২ কোটি টাকা
এটা আমাদের গল্প- ১.৯১ কোটি টাকা
বুমেরাং- ১.০২ কোটি টাকা
এছাড়াও ২০২১-এ টনিক - ৭ কোটি টাকা , ২০২২-এ প্রজাপতি- ১৯ কোটি টাকা, ২০২৩-এ চেঙ্গিস- ৮ কোটি টাকা, প্রধান- , রক্তবীজ- ৬ কোটি টাকা, বাঘা জতীন- ৫.৫ কোটি টাকা, একেন (রাজস্থান)- ৫ কোটি টকা, দশোম অবতার- ৮ কোটি টাকা, প্রধান- ৬ কোটি টাকা
শাকিব এখন দেব আর জিত-এর থেকে অনেক এগিয়ে গেল।
টলিউড ধ্বসে পড়তে শুরু করে ১৯৭০-এর শেষের দিক থেকে।
১৯৮০-এর দশকে টলিউড পিছিয়ে পড়ে বলিউডের থেকে খোদ পঃ বঙ্গেই।
১৯৯০-এর দশকে হিট বাংলাদেশি মুভি নকল করে গ্রাম বাংলা থেকে টাকা তোলা শুরু করে টলিউড আর শহর ও মধ্যবিত্ত পুরোপুরি বলিউডের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়।
২০০০-এর দশকে মূলত এস ভি এফ-এর কল্যাণে দক্ষিণ ভারতের প্রযুক্তি ও হিট মুভির গল্প উপস্থাপনা করা শুরু করে টলিউড।
শহর ও মধ্যবিত্ত দর্শক আবার কিছু ফিরে পেতে শুরু করে টলিউড।
২০০৭ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে বলিউডকে রীতিমত টেক্কা দেওয়া শুরু করে টলিউড।
কিন্তু এর পর থেকেই খেলা ঘুরতে করে।
ইনটারনেট সস্তা হয়ে যাওয়ায় ইউটিউব-এ পঃ বঙ্গের সবাই দঃ ভারতের মুভিগুলো দেখতে শুরু করে এবং টলিউড কোন দঃ ভারতীয় মুভি নকল করলেই ধরা পড়্রে যেতে থাকল।
ফলে দঃ ভারতীয় মুভি নকল করা অসম্ভব হয়ে উঠল টলিউডের জন্যে।
১৯৯০ থেকে ২০১০-এর মধ্যে বলিউডেরর জনপ্রিয়তার কারণ ছিল তার গান।
ইনটারনেট সস্তা হওয়ায় এটা ধরা পড়ে যায় যে বলিউডের পুরনো অধিকাংশ (১৯৯০-২০১০) হিট গানই নকল আর ২০১২ থেকে গান নকল করা কঠিন হয়ে যায় বলিউডের পক্ষে।
ভাল গান না দিতে পারায় বলিউড দুর্বল হোতে শুরু করে।
এই সুযোগ কাজে লাগাতে দঃ ভারতীয় মুভি বাজারে নামে বিপুল বিনিয়োগ নিয়ে।
তেলেগু মুভিতে গড় বিনিয়োগ ২০১২ সালের আগে ছিল ১৫ কোটি ভারতীয় টাকা।
২০১২ সালের পরে তা বেড়ে হয়ে যায় ১০০ কোটির ওপরে।
এবার দঃ ভারতীয় মুভি পঃ বঙ্গ সহ গোটা ভারতের বাজার খেয়ে ফেলে।
২০১৪ থেকে টালিগঞ্জের হাল ভেঙ্গে পড়ে যখন বিপুল খরচ করে বানানো এস ভি এফ-এর যোদ্ধা মুভিটা তেলেগু মুভি মগধিরার নকল হিসেবে ধরা পড়ে এবং একটুও ব্যবসা করতে পারেনা।
এস ভি এফ বিনিয়োগ কমিয়ে দেয় টলিউডে।
তখন টলিউড তার উন্নত প্রযুক্তি (দঃ ভারত থেকে ধার করা) ও উদ্বৃত্ত পুঁজি (পঃ বঙ্গে বিনিয়োগ করে লাভ নেই তাই উদ্বৃত্ত থাকছে পুঁজি) নিয়ে হাজির হয় বাংলাদেশের বাজারে।
যৌথ প্রযোজনার মুভি শুরু হয় ২০১৪ থেকে।
পঃ বঙ্গে বাজার নেই বলে বাংলাদেশের বাজার ধরার চেষ্টা চালাতে থাকে টলিউড প্রযোজক ও নায়ক নায়িকারা।
জিতের দুটো হিট মুভি আসে ওই সময় "বাদশা' আর "বস ২" যা বাংলাদেশে চুটিয়ে ব্যবসা করে এবং পঃ বঙ্গের চেয়ে অনেক ভাল ব্যবসা দেয়।
বাংলাদেশের শাকিব খানও পঃ বঙ্গের প্রযুক্তি ও পুঁজি কাজে লাগিয়ে তিনটে হিট মুভি দেয় বাংলাদেশে "শিকাড়ি ২০১৬", "নবাব ২০১৭", "ভার জান ২০১৮"।
এই মুভিগুলো থেকে বাংলাদেশ কারিগরি ও মার্কেটিং রপ্ত করে এবং ২০১৯ থেকে পঃ বঙ্গের কোনও সাহায্য ছাড়াই "পাসওয়ার্ড"-এর মতো হিট দাঁড় করিয়ে দেয় শাকীব খান যার কারিগড়ি ও বিনিয়োগের মান ছিল পঃ বঙ্গের যৌথ প্রযোজনাগুলোর মতোই।
এরপরে আস্তে আস্তে বাংলাদেশ "সেলিব্রিটি গসিপ"-এ নিজেদের নায়ক নায়িকদের কেচ্ছাকেই নিয়ে বেশি আলোচনা করতে থাকে। ভারতের নায়ক নায়িকা-দের নিয়ে কেচ্ছা কাহিনী জনপ্রিয়তা হারায়।
২০২২ থেকে দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশ বেশ বড় বাজার তৈরি করে ফেলেছে।
আগে যেখানে হিট বলতে ৫ কোটি বোঝাত সেখানে হিটের সজ্ঞা দাঁড়ায় এখন ২০ কোটি। পরাণ, সুড়ঙ্গ প্রায় ২০ কোটি ব্যবসা দেয়। আর শাকিব কাহ্নের প্রিয়তমা ব্যবসা দেয় ৪২ কোটি। বিদেশে বাংলাদেশি ডায়াসপোড়ার যে বিশাল একটা বাজার আছে বোঝা যায়।
এবার টলিউডের এস ভি এফ আবার আসে বাংলাদেশে কারগড়ি সাহায্য আর মার্কেটিং-এ সাহায্য করতে। তৈরি হয় "তুফান" প্রায় ১৫ কোটি টাকা দিয়ে।
যদি তুফান ৭০ কোটি তুওতে পারে বাংলাদেশ ও বিদেশ মিলিয়ে তাহলে কিন্তু আরও বিনিয়োগ আসবে এবং তা হয়তো কেবল পঃ বঙ্গ থেকেই নয়, হয়তো দ; ভারত, বলিউড, হলিউড, চীন, কোরিয়া থেকেও।
কারণ বাজার দেয় মুনাফা আর মুনাফা টানে পুঁজি আর পুঁজি বাড়ায় উৎপাদনের মান আর উৎপাদনের মান বাড়লে বাড়ে বাজার।
শাকিব-এর "তুফান" এর পরেই আসবে নিশোর "কালা"। "কালা" এরকম ব্যবসা দিলে বিনিয়োগ আসবে আরও।
২-৩ বছরের মধ্যে পঃ বঙ্গ, আসাম, ত্রিপুরা ও পূর্ব ভারত জুড়ে বাংলাদেশ মুভি দখল নেবে।
তুফান পঃ বঙ্গে ব্যবসা সফল না হোলেও এই পথে হাঁটার প্রথম পদক্ষেপ।
এটা টলিউড জানে আর জানে বলেই বাংলাদেশ-কে আরও কারিগড়ি ও পুঁজির সাহায্য করবে।