written by Zahid Mollah
প্রশ্ন করুন ভারত একটা 'দেশ' নাকি 'সাম্রাজ্য'?
১৯৪৭ সালে ভারত কিন্তু কোনো দেশ হিসেবে ব্রিটিশদের থেকে স্বাধীনতা লাভ করে নাই। সত্যি কথা বলতে ভারত পাকিস্তান কেউই স্বাধীন হয় নাই। এরা উভয়েই ব্রিটিশদের কাছ থেকে ক্ষমতা হস্তান্তর চুক্তি বা Transfer of Power এর মাধ্যমে ডোমিনিয়ন স্ট্যাটাস পেয়েছিলো।
ভারতের পলিটিক্যাল বাউন্ডারির বাইরে তখনও কাশ্মীর, গোয়া, হায়দ্রাবাদ, সিক্কিমের মতো ৫৬৫ টা স্বাধীন প্রিন্সলি স্টেট্ ছিল যে গুলাকে ভারত মিলিটারি আগ্রাসনের মাধ্যমে দখল করে নিয়ে নিজের ভূমিতে আত্তীকরণ করেছে।
ভারত হচ্ছে Ex British Empire যেটার মালিকানা পরিবর্তন হয়ে এখন Neo Hindi Empire এ পরিণত হয়েছে। এবং এটার মালিকানা হস্তগত হয়েছে গুজরাটি, মাড়োয়ারি (রাজস্থানি) পুঁজিপতি গোষ্ঠীর হাতে।
হিন্দি-গুজরাটি কেন্দ্রিক সেই শাসক গোষ্ঠীর অধীনে প্রায় ১১৬টিরও বেশি ভিন্ন ভিন্ন জাতিগোষ্ঠী শাসিত হচ্ছে যাদের নিজস্ব ভাষা, ধর্ম ও সংস্কৃতি রয়েছে এবং এই সকল জাতিগোষ্ঠী কিন্তু পরস্পর বিরোধী এবং সংঘর্ষ প্রবণ ।
এত্ত কিছুর পরেও ভারত তাদেকে একটা ইউনিয়নের অধীনে কিভাবে রাষ্ট্রীয় একক হিসেবে টিকিয়ে রেখেছে?
এর উত্তরে প্রথমটা হচ্ছে ভারতের হিন্দু জাতীয়তাবাদ (যেটার ভিত্তি মুসলমান বিদ্বেষ) আর দ্বিতীয়টা হচ্ছে ভারতের ব্রুটাল মিলিটারি ফোর্স।
হিন্দু জাতীয়তাবাদই ভারতকে বহুধর্মের, বহুভাষিক, বহু সংস্কৃতির দেশ থেকে একটি একক শক্তিশালী থিওলজিক দেশ হিসেবে গড়ে উঠতে সাহায্য করবে। আর এই প্রসেসে মারা পড়বে ভারতের মুসলমানেরা।
ভারতের গুজরাটি মাড়োয়ারি হিন্দি পুঁজিবাদ কেন্দ্রিক শক্তি তাদের মিডিয়া প্রোপাগান্ডার মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায় বা ধর্মের প্রতি ভারতের সামাজিক বুনিয়াদকে যেভাবে বিষাক্ত করে দিয়েছে তাতে ভারতের অমুসলমান সকল জাতিগোষ্ঠী স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে ভারতীয় মুসলমানদের মারবে।
এবং এই গণহত্যা সিস্টেমেটিক্যালি নানান উপজীব্যের আড়ালে হবে, দেখে মনে হবে না যে সেখানে গণহত্যা হচ্ছে।
যেমন বিহারি হিন্দুদের উস্কে দেয়া হচ্ছে বিহারি মুসলমানদের উপর, উত্তরভারতে ভারতীয় বাংলাভাষী মুসলমানদের কে বাংলাদেশী দাগিয়ে উস্কে দেয়া হচ্ছে , নর্থ ইস্টে হিন্দু মেইতেইদের উস্কে দিচ্ছে খ্রিস্টান কুকিদের উপর গণহত্যা করতে।
যখন পশ্চিমবঙ্গের মুসলমানদের বাংলাদেশী হিসেবে তকমা দিয়ে মারা শেষ হবে, এর পর ধরা হবে পশ্চিমবঙ্গের বাঙ্গালী হিন্দুদের। বাঙ্গালী হিন্দুরা যদি স্বেচ্ছায় হিন্দি গ্রহণ করে এবং তাদের ঘরের মেয়েদের ইউপি, বিহারি, রাজস্থানি বা গুজরাতিদের খাটে তুলে দিয়ে রবীন্দ্রনাথের মহাভারতে বিলীন হয় তবে তারা রক্ষা পাবে।
কিন্তু দক্ষিণ এশিয়ায় মুসলমানদের কোনো রক্ষা নাই সেটা এক প্রকার নিশ্চিত।
গণহত্যার ক্ষেত্র প্রস্তুত এবং হিন্দু মনোবলকে পুরুষোচিত জোশে চাঙ্গা করতে ভারতীয় পুঁজিপতি গোষ্ঠী তাদের ভারতীয় নেটিভ মাতৃতান্ত্রিক ধর্মগুলোকে সরিয়ে দিয়েছে।
আর এইখানেই উত্তর ভারতের হনুমান এবং জয় শ্রী রামের উত্থান হয়েছে।
রাম হনুমান কেন্দ্রিক ধর্মীয় উন্মাদনার মূল লক্ষ্য মুসলমানদের ম্যাসকুলিন যোদ্ধা মনোভাবকে কাউন্টার করতে বৃহত্তর হিন্দু পলিটির মধ্যে সহস্রাধিক বছর ধরে লালিত মাতৃতান্ত্রিক ধর্মীয় চেতনাকে হত্যা করে পুরুষোচিত উগ্র মনোভাবের পুনর্জাগরণ ঘটানো।
তাই বাঙ্গুল্যান্ডের সিভিল সোসাইটি এবং আর্মিকে অনুরোধ করবো আপনারা বৃহত্তর কনফ্লিক্টের জন্য প্রস্তুত হন।
Vedic Frontier এর পুনরুত্থানে দক্ষিণ এশিয়ায় পাকিস্তান-ভারত-বাংলাদেশ-চীন কেন্দ্রিক একটা সিভিলাইজেশনাল কোর স্টেট্ ওয়ার অসম্ভব কিছুই না।