যুদ্ধ দুই প্রকারঃ
১। আত্মরক্ষামূলক
২। আক্রমণাত্বক
বাঙালি মুসলমান তিতু মীর, দুধু মিয়া, ১৯০৫, ১৯৪৭, ১৯৫২, ১৯৭১, ২০২৪ যে যুদ্ধগুলো করেছে তার মধ্যে আত্মরক্ষামুলোক ও আক্রমণাত্বক দুই প্রকারই ছিল। প্রথম তিনটে-তে তাদের পরাজয় ঘটে, ১৯৪৭-এ তারা আধা জয় পায় আর শেষ তিনটে-তে তারা বিজয়ী হলেও আত্মরক্ষামূলক অবস্থান থেকে আক্রমণাত্বক অবস্থানে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়নি। আর এখানেই সমস্যা তৈরি হচ্ছে।
তিতু মীর ও দুধু মিয়া আঘাত হেনেছিল বাঙালি হিন্দু জমিদার-দের ওপর। ব্রিটিশরা বাঙালি হিন্দু জমিদারদের রক্ষায় নেমে অনায়াসেই তাদের দমন করতে সক্ষম হয়। তিতু মীর ও দুধু মিয়ারা কায়াকেই চিহ্নিত করতে না পেরে ছায়ার সাথে যুদ্ধ করতে গিয়ে পরাজিত হয়।
১৮৭০ সাল থেকে ব্রিটিশদের প্রধান দালালের জায়গাটা বাঙালি হিন্দুদের থেকে গুজারাতি মাড়োয়াড়ি-রা নিয়ে নেয়। ক্রমেই ব্রিটিশদের সাথে বাঙালি হিন্দুদের দূরত্ব তৈরি হয় যার চূড়ান্ত পরিণতি পায় কার্জন রিসলের ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গে। ব্রিটিশদের উদ্যেশ্য ছিল বাঙালি হিন্দুদের পঃ অংশে হিন্দিদের কাছে সংখ্যালঘু বানানো ও পূর্বে মুসলমানদের (বাঙালি ও উর্দু) কাছে সংখ্যালঘু বানানো। তখন যদি বাঙালি মুসলমান পূর্ব অংশ পেয়ে যেত তাহলে কেবল আজকের বাংলাদেশ নয়, বর্তমান পঃ বঙ্গের উত্তরাংশ এবং গোটা উত্তর পূর্বাঞ্চল তাদের হত। ১৯৩৫ সালের ইণ্ডিয়া এক্ট অনুযায়ী জনসংখ্যা অনুযায়ী নির্বাচিত প্রতিনিধি পাঠানো শুরু হলে বাঙালি মুসলমান এই বিশাল অংশ নিজেরাই দখল নিত। ১৯৪৭-এই বাঙালি মুসলমান স্বাধীন রাষ্ট্র পেয়ে যেত। কিন্তু ১৯০৫ সালে বাঙালি হিন্দু জমিদারেরা বাঙালি মুসলমান অধ্যুষিত বর্তমান বাংলাদেশ ও পঃ বঙ্গের উত্তরাংশ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে ১৯৩৫ অবধি।
১৯৪৭-এ আধা জয়ের স্বাদ পায় বাঙালি মুসলমান। বাঙালি হিন্দুদের জমিদারী শেষ হয়। বর্তমান বাংলাদেশ অংশ তারা পায় এবং যুক্ত পাকিস্তানের প্রধান সংখ্যাগুরু জাতি হয়। কিন্তু ১৯০৫ সালে জিতলে যে বিশাল অংশ তাদের পাওয়ার কথা ছিল তার সামান্য অংশই তারা পায়। এছাড়াও তারা দেখে যে যুক্ত পাকিস্তানে ভোট দিয়ে ক্ষমতা দখল করতে তাদের পঃ পাকিস্তান বাঁধা দিচ্ছে। অথচ পঃ পাকিস্তানীরা বাঙালি মুসলমান অঞ্চলে এসে ব্যবসা করছে এবং প্রচুর মুনাফা তুলছে। পঃ পাকিস্তানীদের সাংস্কৃতিক আগ্রাসন বাঙালি মুসলমান রুখে দেয় ১৯৫২ সালে উর্দু চাপানো অস্বীকার করে। শেষে ১৯৭১-এ তারা স্বাধীন বাংলাদেশ ছিনিয়ে আনে সোভিয়েত ইউনিয়ন ও ভারতের সাহায্যে।
১৯৭১-এর পরেই বোঝা যায় নতুন দেশ ভারতীয় আধিপত্যবাদের নিয়ন্ত্রণে চলে যাচ্ছে। ১৯৭৫-এ সেনা বিদ্রোহ মারফত ভারতীয় আধিপত্যবাদের নাগপাশ থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা শুরু করে বাংলাদেশ। তারা মার্কিন ও ভারতের মধ্যে দর কষাকষি করে টিকে থাকার চেষ্টা করে। সোভিয়েত পতনের পরে ভারত দুর্বল হয়ে গেলে বাংলাদেশ মার্কিন ও ভারতের মধ্যে আরও বেশি করে দর কষাকষি করার সুযোগ পায়। কিন্তু ২০০১ সালের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে আল কায়দা আঘাত হানলে ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধে মার্কিন ভারত মৈত্রী গড়ে ওঠে। ২০০৮ সালের বিশ্ব মন্দার পরে চীনের উত্থান শুরু হয় এবং চীনকে প্রতিহত করার জন্যে মার্কিন ভারত মৈত্রী আরও সুদৃঢ় হয়। এর ফলে বাংলাদেশের দর কষাকষির জায়গাটাই শেষ হয়ে যায়। মার্কিন মদতে ভারত ১৫ বছর শেখা হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগকে দিয়ে নির্বাচনহীন শাসন চালায় বাংলাদেশে ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত। হাসিনার আওয়ামী সরকারের পতন হয় এক রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে যা ৩৬শে জুলাই বিপ্লব নামে পরিচিতি পায়।
২০২৪-এর জয় অবশ্যই সবচেয়ে বড় জয় বাঙালি মুসলমানের। কারণ ১৯৫২-তে তারা কেবল ভাষা আগ্রাসন আটকায় অর্থাৎ পুরোপুরি আত্মরক্ষামূলক। ১৯৭১-এ তারা উর্দু ব্যবসা দখল নেয় এবং স্বাধীন রাষ্ট্র পায় বটে কিন্তু তাদের নতুন রাষ্ট্র অনেকটাই ভারত নির্ভর হয়ে পড়ে। এই ভারত নির্ভরতা চূড়ান্ত রূপ নেয় ২০০১ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত যখন ভারত মার্কিন মৈত্রী দৃঢ় হয়। ২০২৫-এও ভারত মার্কিন মৈত্রী বজায় আছে চীনের বিরুদ্ধে। কিন্তু আগের মতো দৃঢ় নেই। এর কারণ হল চীনের সঙ্গে সংঘাতে যেতে ভারতের অপারগতা, রুশ সমরাস্ত্রের ওপর নির্ভরশীলতা এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক ভাবে চীনের সঙ্গে ভারতের এঁটে উঠতে না পারা। মার্কিন ভারত মৈত্রী একটু আলগা বলেই ২০২৪-এ বাংলাদেশ ভারতীয় আধিপত্যবাদকে আঘাত করতে সক্ষম হয়েছে। ১৯০৫ সালে বাঙালি হিন্দু বনাম ব্রিটিশ দ্বন্দ্বের সদ্ব্যবহার করতে পারেনি বাঙালি মুসলমান। কিন্তু ২০২৪-এ মার্কিন ভারত জোট একটু আলগা হওয়ার সুযোগ পুরোপুরি নিতে সক্ষম হয়েছে তারা। কিন্তু এখনো পর্যন্ত ২০২৪-এর লড়াই আত্মরক্ষামূলকই রয়ে গেছে। ভারতীয় আধিপত্যকে তারা সাময়িক পরাজিত করতে পেরেছে, কিন্তু ভারতের বিরুদ্ধে এখনো আরকমণাত্বক হতে পারেনি।
ভারতীয় আধিপত্যবাদের অজস্র এসেট রয়েছে বাংলাদেশের মধ্যে কিন্তু বাংলাদেশ এখনো ভারতের মধ্যে কোনও এসেট বানাতে সক্ষম হয়নি। পঃ বঙ্গ ও আসাম জুড়ে বাঙালি মুসলমানের সংখ্যা বহুগুণ বেড়েছে। বাঙালি হিন্দু ও অহমীয়া হিন্দুরা জনসংখ্যায় ক্ষয়িষ্ণু, পঃ বঙ্গের শহরগুলোয় হিন্দিভাষি বনাম বাঙালি (মূলত বাঙালি হিন্দু) সমীকরণ তৈরি হয়েছে। পঃ বঙ্গে বাঙালি হিন্দু উচ্চ বর্ণ-দের রাজনৈতিক ক্ষমতা মুলত মুসলমান ভোটের ওপরেই নির্ভরশীল। পঃ বঙ্গের ব্যবসা পুরোপুরি রাজস্থানী (মাড়োয়াড়ি)-দের হাতে। বাঙালি হিন্দু মধ্য বর্ণ ও নীম্ন বর্ণ বাঙালি হিন্দু উচ্চ বর্ণের রাজনৈতিক আধিপত্যকে খর্ব করতে চাইছে। এই বিষয়গুলো পর্যালোচনা করে ভারতের ভেতরে নিজেদের এসেট তৈরি করার মানসিকতা তৈরি করতে হবে বাংলাদেশের বাঙালি মুসলমানদের। কেবল আত্মরক্ষামূলক চিন্তা করে বাংলাদেশে ভারতীয় এসেটের সাথে লড়াই করা যথেষ্ট নয়। আক্রমণাত্বক ভঙ্গিতে ভারতের মধ্যে নিজেদের এসেট তৈরি করা শিখতে হবে বাংলাদেশের বাঙালি মুসলমানদের।
এছাড়াও মার্কিন ও ভারতের মধ্যে দর কষাকষির ধান্দা ছেড়ে সরাসরি চীনের সাথে জোট বেঁধে ভারতকে কোণঠাসা করার কথা ভাবোতে হবে। মার্কিন সরকার-কে বোঝাতে হবে বাঙালি মুসলমান-এর ভূরাজনীতির বাস্তবতাঃ যা হল কোনভাবেই ভারতের সাথে আপোষ সম্ভব নয়।
Author: Saikat Bhattacharya
Theoretical General 22-March-2025 by east is rising১। ভারি শিল্প ও পরিকাঠামো ভিত্তিক পণ্য পরিষেবা থাকে রাষ্ট্রীয় মালিকানায়, কিন্তু সেখানে বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় সংস্থার মধ্যে এবং বিদেশী সংস্থার সঙ্গে প্রতিযোগিতা যতটা সম্ভব রাখা হয় যাতে ভোক্তা কম মূল্যে পণ্য পরিষেবা পায়। এই সমস্ত সংস্থায় রাষ্ট্রীয় ভর্তুকিতে প্রয়োজনের অতিরিক্ত কর্মচারীও নেওয়া হয় সমাজে স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্যে।
২। শিক্ষা স্বাস্থ্য গবেষণা রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বা রাষ্ট্রীয় ভর্তুকিতে চলে কিন্তু এদের মধ্যে প্রতিযোগিতা করানো হয় মূলত রাষ্ট্রের বেঁধে দেওয়া টার্গেটকে কেন্দ্র করে। যে সংস্থা রাষ্ট্রীয় টার্গেটের যত কাছাকাছি থাকবে, সংস্থা তত রাষ্ট্রীয় অর্থ পাবে।
৩। ভোগ্য পণ্য ও পরিষেবা অধিকাংস ক্ষেত্রেই বেসরকারী মালিকানাধীন। তবে বড়ো সংস্থা হলে বোর্ড অফ ডিরেক্টারস-এ কমিনিস্ট পার্টির দুজন প্রতিনীধি রাখা বাধ্যতামূলক। পুঁজিবাদী দেশে কোনও বিশেষ বড়ো সংস্থা বা কয়েকটা বড়ো সংস্থা মিলে ওলিগোপলি বা মোনোপলি তৈরি করে যাতে নতুন সংস্থা সেই বাজারে ঢুকতে না পারে। কিন্তু চীনে কয়েকটা বড়ো বেসরকারী সংস্থা এই ওলিগোপলি বা মোনোপলি তৈরি করতে পারেনা। চীনের কমিউনিস্ট সরকার না না ধরণের আইন করে রেখেছে যাতে বড়ো সংস্থা উদ্ভাবন দেখাতে পারছে এমন ছোট সংস্থাকে কিনতে না পারে, বা ব্যকোয়ারড বা ফরওয়ারড লিঙ্কেজে প্রসার ঘটাতে না পারে, বা এন্ট্রি ব্যারিয়র তৈরি করতে না দেওয়া। এটাই কারণ মার্কিন স্মারটফোন বলতে যেমন শুধু এপেল, দঃ কোরীয় বলতে শুধু স্যামসাং, সেখানে চীনা স্মারটফোনের অজস্র ব্রাণ্ড ও সংস্থা যাদের মালিকানা একে অপরের থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন।
৪। উদ্ভাবনী ক্ষেত্রে চীন নির্ভর করে সামাজিক উদ্যোগের ওপর। প্রথমে ১০ লাখ উদ্ভাবনী সংস্থাকে সমগ্র চীনের মধ্যে বেঁছে নেওয়া হয় তার কাজের ক্ষেত্র ও গবেষণা ও উদ্ভাবনের ওপর ভিত্তি করে। এই ১০ লাখ উদ্ভাবনী সংস্থাকে রাষ্ট্রের বেঁধে দেওয়া নির্দিষ্ট লক্ষ্য পূরণ করতে হয় যার অধিকাংশই প্রযুক্তিগত এবং রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ দেওয়া হয় ও বিনিয়োগের টাকা টুকু পণ্য পরিষেবা বিক্রি করে তুলতে হয়। এছাড়াও দেওয়া হয় কম মূল্যে গবেষণা লব্ধ জ্ঞান, উৎপাদনে দরকারী এমন মধ্যবর্তী পণ্য। এই ১০ লাখের মধ্যে ১ লাখ সংস্থা বেঁছে নেওয়া হয় রাষ্ট্রীয় লক্ষ্য পূরণে সফলতা দেখে। এই ১ লাখ সংস্থা-কে বলা হয় স্পেশালাইসড সংস্থা যাদের আবারও নির্দিষ্ট রাষ্ট্রীয় লক্ষ্য পূরণ করতে হয় ও সেই অনুযায়ী রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ পায়। এর পরের ধাপে ১ লাখের মধ্যে ১০ হাজার সংস্থা বেঁছে নেওয়া হয় যাদের ক্ষুদ্র দানব বলে। এরা শুধু রাষ্ট্রীয় অনুদান নয়, স্টক মার্কেট থেকেও অর্থ তুলতে পারে। ফলে এদের মধ্যে মুনাফার গুরুত্ব বৃদ্ধি পায়। এই ১০ হাজার থেকে আবার ১ হাজার সংস্থা বেঁছে নেওয়া হয় বৃহৎ বেসরকারী সংস্থা হিসেবে। ডিপসিক নামের বিশ্ব বন্দিত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সংস্থা আসলে প্রথম উল্লিখিত ১০ লাখ উদ্ভাবনী সংস্থার একটা। যার এখনো মুনাফা কেন্দ্রীক বাণিজ্যকরণও হয়নি অর্থাৎ সামাজিক উদ্যোগের স্তরেই এই উদ্ভাবনী সংস্থা আছে এখনো এবং এই স্তরেই বিশ্ব কাপানো কাজ করতে সক্ষম হয়েছে। পুঁজিবাদী দেশে বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে উদ্ভাবনী সংস্থা মূলত শেয়ার বাজার থেকে পুঁজি তোলে বিনিয়োগকারীদের উচ্চ মুনাফা দেওয়ার আশা দেখিয়ে। এই আশা দেখানো হয় বাজারে উদ্ভাবন নিয়ে "হাইপ" তৈরি করে। যাতে উদ্ভাবনী পণ্য বা পরিষেবা বাজারে আশার আগেই তার মূল্য বাড়তে থাকে। এবং এই বিশাল বিনিয়োগ নিয়ে খরচ করতে গিয়ে অনেক আজেবাজে খরচ করে মার্কিন উদ্ভাবন সংস্থা। এই সমস্যা এতদিন বোঝা যায়নি কারণ কোনও বিকল্প বাজার বা মডেল ছিলনা। চীনা বিকল্প মডেল এসে মার্কিন মডেলকে বিশাল সমস্যায় ফেলে দিতে শুরু করেছে বলাই যায়।
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Theoretical General 14-March-2025 by east is risingবামপন্থীদের সমস্যা
বামপন্থী নেতা কর্মীদের বিশাল একটা সমস্যা আছেঃ ছুঁকছুঁক করা। না, সেটা যৌনতার জন্যে হলে এতোটা খারাপ হতনা। তাদের ছুঁকছুকানি হল কিছু একটা করার। "কিছু কর", "কিছু কর"। এদিকে মার্কস লেনিন মাও তার ক্রিটিক কাউন্টার ক্রিটিক কিছুই পড়া নেই। আবছা আবছা গরীবের, শ্রমিকের, কৃষকের, নারীর পক্ষে থাকতে হবেঃ এইটুকু বোঝে। কিন্তু ১৯০০ থেকে ১৯৭০ পর্যন্ত গড়ে ওঠা ধারণা দিয়ে ১৯৭০ পরবর্তী অবস্থাকে বোঝা যাচ্ছেনা কেন তা বিশ্লেষণ করেনা এই বামেরা।
কৃষক আন্দোলন আর নেই কেন?
বিংশ শতকের সত্তর দশক পর্যন্ত যেরকম জমির মালিকানা পিয়াসী কৃষক ছিল তা আজ নেই কারণ জমির আর আয়ের মূল উৎস নেই। এর কারণ শিল্পোন্নয়ন ১৯৪৫ থেকে ১৯৭০-এর মধ্যে অত্যন্ত দ্রুত হয়েছে, ১৯৭০-১৯৯০-এ খানিকটা গতি কমলেও শিল্পোন্নয়ন এগিয়ে গেছে, আর ১৯৯০-২০০৮-এর মধ্যে ৫০-৭০ ও ৭০-৯০-এর মাঝামাঝি একটা গতিতে শিল্পোন্নয়ন হয়েছে। ফলে এক দিকে জমির মালিকানা চাওয়া কেন্দ্রিক কৃষক আন্দোলন শেষ হয়ে গেছে আর অন্যদিকে কৃষি জমিতে শিল্প হওয়া-কে কেন্দ্র করে কিছু কৃষক আন্দোলন গড়ে ওঠে ১৯৯০-২০০৮-এর মধ্যে। এনজিও কেন্দ্রিক প্রকৃতি বাঁচাও, সবুজ বাঁচাও আন্দোলন এই সময়ে খুব চলেছে। বামেরা তখন এই জমি সবুজ প্রকৃতি বাঁচানোর আন্দোলনে গাঁ ভাসায়। কিন্তু ২০০৮-এর মন্দার পরে শিল্পোন্নয়নের গতি কমায় সেই আন্দোলনেও ভাটা পড়েছে।
শ্রমিকের আন্দোলন দুর্বল কেন?
সমাজের জীবিকা হিসেবে কৃষির গুরুত্ব কমে শিল্পের গুরুত্ব বাড়ায় শ্রমিক সংখ্যা বেড়েছে। কিন্তু ১৯৭০-এর পর থেকে নারীরাও শ্রমিক হিসেবে বেশি বেশি করে যুক্ত হয়েছে শ্রম বাজারে আর এর ফলে শ্রমিক-এর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে দারুণ গতিতে। অর্থাৎ কেবল কৃষক থেকেই শ্রমিক হয়নি, ঘরের দেখভালের দায়িত্বে থাকা নারীরাও শ্রমিক হয়েছে। এর সাথে যুক্ত হয়েছে স্বয়ংক্রিয়তা বা অটোমেশন-এর দ্রুতগতির বৃদ্ধি এবং অবশ্যই পুঁজির বিশ্বায়ণ যা পুঁজিকে স্বাধীনতা দিয়েছে এক দেশ থেকে অন্য দেশে যাওয়ার। ফলে পুঁজি যে দেশে মুনাফা বেশি পাবে, সেখানে ছুটবে। মুনাফা সেখানেই বেশি হবে যেখানে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির হার মজুরি বৃদ্ধির হারের চেয়ে বেশি থাকবে। ১৯৮০ থেকে ২০২৫-এর মধ্যে চীন ও ভিয়েতনামের মতো সামান্য কিছু দেশ আছে যারা উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির হার লাগাতার বেশি রাখতে পেরেছে মজুরি বৃদ্ধির হার যথেষ্ট বৃদ্ধি করেও। খুব উচ্চ উৎপাদনশীলতা দেখাতে না পারলে মজুরি বৃদ্ধি করার আন্দোলন করা অসম্ভব বিশ্বায়ণের যুগে।কিছু ভোউগলিক সুবিধে থাকলে যেমন পৃথিবীতে অপ্রতুল এমন খনিজ সম্পদ থাকলে (গালফ আরব) বা উন্নত বড়ো দেশের নিকটবর্তী হলে (তুর্কিয়ে মেক্সিকো), বিশ্ব বাণিজ্যের পক্ষে আদর্শ স্থানে বন্দর থাকলে (সিঙ্গাপুর) কিছুটা দর কষাকষির জায়গা পায় বটে শ্রমিকেরা কিন্তু ১৯৭০-এর আগে যা পেত তার থেকে অনেক কম পায়।
অগত্যা নারী ও সংখ্যালঘু রাজনীতি
অধিকাংশ তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলো লুটেরা-বাণিয়া পুঁজি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত আর উৎপাদক পুঁজি থাকলেও তাদের সাথে আপোষ করে চলে। শ্রমিক শ্রেণির কোণঠাসা অবস্থা আগেই বলা হয়েছে। ফলে তৃতীয় বিশ্বের অধিকাংশ দেশই দ্রুত উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করতে পারেনা। তাই শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধি করা কঠিন হয়ে যায়। মজুরি বৃদ্ধি হলে শিল্পায়ণের গতি থমকে যায়। তাই বর্তমানে শ্রমিককে ভিত্তি করে বামেরা আন্দোলন করতে পারেনা। কৃষকের ভূমি সংস্কার-এর আন্দোলনও নেই। ২০০৮ সালের পর থেকে প্রকৃতি সবুজ কৃষি জমিকে শিপ্লের জন্য ব্যবহার করার বিরোধিতা করে আন্দোলনও অনেক দুর্বল। তাই বামেরা এখন আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে নারী স্বাধীনতা ও তারই সাথে তৃতীয় লিঙ্গের স্বাধীনতার অন্দোলনে। এর বাইরে তারা খুব একটা বেরতেই পারেনা। এর সাথে যুক্ত হয় সংখ্যালঘু বাঁচাও আন্দোলন এবং মাঝেমাঝে গরীব বাঁচাও আন্দোলন। বামেরা "কিছু একটা করতে হবে" এমন মানসিকতা থেকেই নারী, তৃতীয় লিঙ্গ ও সংখ্যালঘু রক্ষা আন্দোলনে নেমে পড়ে।
পালটা রক্ষণশীল শ্বেতাঙ্গবাদ ও ইসলাম-এর উত্থান
কিন্তু এর ফল কি দাঁড়ায় তা নিয়ে নিজেদের কমিউনিস্ট পরিচয় দেওয়া বামেদের কোনও ব্যখ্যা নেই। কারণ আন্দোলন করে টিভি-তে ও সামাজিক মাধ্যমে মুখ দেখানোই এদের লক্ষ্য। এর ফল দাঁড়াচ্ছে ভয়াবহ। নারীর যৌন স্বাধীনতা প্রতিক্রিয়াশীল, বৈপ্লবিক নয়। মহিলারা অর্থনৈতিক স্বাধীনতা পাওয়ার পরে যৌন স্বাধীনতা চাইবে এবং মহিলাদের যৌন পছন্দের হাইপারগামিক প্রকৃতি (কেবল উচ্চ মানের পুরুষের প্রতি আকৃষ্ট হওয়া ও সাধারণ পুরুষদের কাছে যৌনতার বিনিময়ে উচ্চ মূল্য চাওয়া) সাধারণ পুরুষদের জন্য যৌনতার খরচ বাড়িয়ে দেবে। ফলে সাধারণ পুরুষদের একটা বড়ো অংশ মহিলাদের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা দেওয়া বন্ধ করার পক্ষে থাকে (আফগান পদ্ধতি বা মার্কিন বাইবেল বেল্ট পদ্ধতি), আবার অনেকে মহিলাদের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা দিয়ে যৌন স্বাধীনতা না দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেন (ইরানী পদ্ধতি)। তারা ধর্মকে সামনে রেখে চরম বাম বিরোধিতায় লিপ্ত হচ্ছে। পশ্চীম বিশ্বে শ্বেতাঙ্গবাদী ও খ্রিশ্চান রাজনীতির মধ্য দিয়ে লিঙ্গ ও সংখ্যালঘু রাজনিতির বিরোধিতা শুরু হয়েছে। আর মুসলমান অধ্যুষিত দেশগুলোয় ইসলামকে সামনে রেখে লিঙ্গ ও সংখ্যালঘু রাজনিতির বিরোধিতা চলছে। শিল্পোন্নত পূর্ব এশিয়ায় সাধারণ পুরুষদের জন্য যৌনতার খরচ কমানোর জন্য সেক্স রোবট, ভার্চুয়াল সেক্স, একক পিতৃত্ব, স্বয়ংক্রিয় গর্ভ, সারোগেসি, ইত্যাদি ব্যবস্থা করার চেষ্টা চলছে (চীনা পদ্ধতি)।
বাংলাদেশে লুটেরা বাণিয়া পুঁজি ও ভারতীয় আধিপত্যবাদ কিভাবে বামদের ব্যবহার করে?
বাংলাদেশ ১৯৭১ সালে স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই লুটেরা-বাণিয়া পুঁজি দ্বারা শাসিত। এই শাসক শ্রেণি আবার ভারতীয় আধিপত্যবাদের মিত্র। এর বিরুদ্ধে ২০২৪-এর ৫ই অগাস্ট ঘটে গেছে উৎপাদক পুঁজি-মধ্যবিত্ত-শ্রমিকের বিপ্লব। কিন্তু এই সামাজিক শ্রেণিগুলো দুর্বল হওয়ায় লুটেরা-বাণিয়া পুঁজিকে এখনো পর্যন্ত উচ্ছ্বেদ করতে পারেনি বিপ্লবী শক্তি। বলা বাহুল্য ভারতীয় আধিপত্যবাদ ও বাংলাদেশের লুটেরা বাণিয়া পুঁজি সবসময় বামেদের "কিছু কর" মানসিকতা কাজে লাগিয়ে সমাজকে নারী সংখ্যালঘু কেন্দ্রীক রাজনীতি উসকে দিয়েছে এবং সামাজিকভাবে ইসলামপন্থীদের কোণঠাসা করার চেষ্টায় লীপ্ত থেকেছে। ৫ই অগাস্ট বিপ্লবের পরে বিপ্লবী নেতা মাহফুজ আলম বলেছিলেন বাম ও ইস্লামপন্থীদের দ্বন্দ্ব শেষ হয়েছে। বিপ্লবীরা বাম ও ইস্লামপন্থীদের নিয়ে এক ধরণের মধ্যপন্থী রাজনীতি তৈরির চেষ্টা করেছিল। কিন্তু "ধর্ষণ মঞ্চ" থেকে বিপ্লব বিরোধিতায় যেভাবে বামপন্থীরা যেভাবে মেতে ওঠে তাতে এটা পরিস্কার যে বাম-ইসলামপন্থী মিলন হয়নি। আর তাই বলাই যায় মাহফুজের ও বিপ্লবীদের তথাকথিত মধ্যপন্থী রাজনীতি ব্যর্থ হয়েছে।
এবার প্রশ্ন বাংলাদেশের মধ্যপন্থী বিপ্লবীরা ব্যর্থ হল কেন?
এর কারণ বস্তুগত দিকে দিয়ে তারা বাম ও ইসলামপন্থীদের অবস্থান বিচার করেনি। মাহফুজ আলম বলেন যে ভাষা দিয়ে বাম ও ইস্লামপন্থীদের তিনি এক জায়গায় এনেছেন। এখানেই ভুল হয়েছে। ভাষা দিয়ে ওপর ওপর এক হয়েছিল কেবল শত্রু এক হওয়াতে অর্থাৎ হাসিনা আওয়ামী ভারত- সেখানে ঐক্যকরণের কাজটা করেছে। কিন্তু মনে রাখতে হবে যে বামেরা যেহেতু কৃষক শ্রমিক-কে কেন্দ্র করে বর্তমানে রাজনীতি করতে পারছেনা, তারা নারী ও সংখ্যালঘু কেন্দ্রীক রাজনীতিতে চলে যেতে বাধ্য। এবং বামেদের "কিছু কর" মানসিকতা কাজে লাগিয়ে লুটেরা-বাণিয়া পুঁজি ও ভারতীয় আধিপত্যবাদ সেই নারী ও সংখ্যালঘু বিষয়কে অহেতুক সামনে এনে ইসলাম্পন্থীদের কোণঠাসা করা শুরু করবে এবং করছে। ফলে বাম বনাম ইসলামপন্থী আবারও ফিরে এসেছে এবং মধ্যপন্থী বিপ্লবীরা ব্যর্থ হয়েছে।
দুই প্রতিকারঃ সামাজিক উদ্যোগ ও পুরুষের যৌনতা পাওয়ার খরচ কমানো
এই সমস্যাকে দুভাবে সামলাতে হবে। এক, রাজনীতিকে উৎপাদন মুখী করতে হবে। মহম্মদ ইউনূস-এর সামাজিক ব্যবসা-কে সামনে রেখে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। মানুষ উৎপাদন মুখী চিন্তা করলেই কেবল তোলাবাজী, ঘুষ ও মজুতদারী বিরোধী রাজনীতি তৈরি হবে। বিংশ শতকের সত্তর দশক অবধি যে শ্রমিক শ্রেণি ছিল অথবা উনবিংশ ও অষ্টাদশ শতকে যে উৎপাদক মধ্যবিত্ত পুঁজি (ফরাসী ভাষায় বুর্জোয়া) ছিল তা আজ অনুপস্থিত। তাই ইউনূস সাহেবের সামাজিক উদ্যোগকে সামনে রেখেই উৎপাদন মুখী রাজনীতি গড়ে তুলতে হবে। ইউনূস সাহেব নিজেও বাংলাদেশের যুবকদের উদ্যেশ্যে সামাজিক উদ্যোগের আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান। ইউনূস স্যার জানেন যে উৎপাদন মুখী রাজনীতি করতে হবে আর তাই তিনি "ছাত্র জনতা"র বিপ্লবকে "ছাত্র শ্রমিক জনতা"র বিপ্লব বলে চিহ্নিত করেন। দুই, নারীর যৌন স্বাধীনতার ফলে সাধারণ পুরুষের কাছে যৌনতা পাওয়ার (সঙ্গিনী পাওয়া বা বিয়ে করার) খরচ যে বেড়ে যায় সেই ব্যপারে ওয়াকিবহাল হওয়া এবং সেই খরচ কমাবার উদ্যোগ গ্রহণ করা। উন্নয়নের সাথে সাথে বিয়ের বয়স বেড়ে যায় আর এই সমস্যা প্রতিকারে বাংলাদেশের ছাত্র নেতা সারজিস আলম-এর ভালো লেখাও ছিল ফেসবুকে। এরকম উদ্ভাবনী চিন্তা করতে হবে। বাংলাদেশে কাবিন নিয়ে দর কষাকষি যেভাবে চলে তা বুঝে কাবিন যাতে ব্যবসায় পরিণত না হয় সেরকম আইন আনা। ধর্ষণের কড়া শাস্তির পাশাপাশি মিথ্যে ধর্ষণ মামলা করাও যেন কঠিন শাস্তিযোগ্য অপরাধ হয়।
সুতরাং সামাজিক উদ্যোগ-এর আন্দোলন ও পুরুষের যৌনতা পাওয়ার খরচ কমানোর নীতি নিলে অবশ্যই লুটেরা বাণিয়া পুঁজি ও ভারতীয় আধিপত্যবাদকে পরাজিত করা সম্ভব।
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Theoretical General 12-March-2025 by east is risingকমিউনিস্ম মানে উতপাদক শক্তি এমন জায়গায় পৌঁছবে যে সমস্ত প্রয়োজনীয় অথচ করতে ভালো লাগেনা এমন ক্রিয়া মেশিন করবে আর মানুষ কেবল এমন ক্রিয়াই করবে যা করতে মানুষ পছন্দ করবে।
যেহেতু মানুষ নিজের পছন্দের ক্রিয়া করে তাই জীবনের ক্রিয়াকে আর শ্রম ও উপভোগে পার্থক্য করা যায়না।
যেহেতু মানুষ নিজের পছন্দের ক্রিয়া কেবল করে সে তার ক্রিয়ার সময়-কে বিক্রী করেনা আকাঙ্ক্ষিত কিছু পেতে কারণ সে আকাঙ্খিত ক্রিয়াই করছে আর তাই সম বিনময় মূল্য বলে কিছু থাকছে অর্থাৎ অর্থের বা মুল্যের জন্যে ক্রিয়া (যাকে শ্রম বলে) আর থাকছেনা।
যেহেতু মানুষ পছন্দের ক্রিয়াই করছে আর অপছন্দের ক্রিয়া মেশিন করছে তাই অন্য কোনও মানুষকে লোভ বা ভয় দেখিয়ে নিজের পছন্দের কোনও ক্রিয়া করাতে হচ্ছেনা আর তাই সমাজ শ্রেণিহীন।
শাসক শ্রেণির শাসিত শ্রেণিকে লোভ আর ভয় দেখিয়ে কাজ করানোর হাতিয়ার রাষ্ট্র আর তাই শ্রেণিহীন বলেই রাষ্ট্র নেই।
Marx declared:
In the higher phase of communist society, after the enslaving subordination of the individual to the division of labour, and therefore also the antithesis between mental and physical labour, has vanished; after labour has become not only a means of life but life's prime want; after the production forces have also increased with the all-round development of the individual, and all the springs of co-operative wealth flow more abundantly -- only then can the narrow horizon of bourgeois right be crossed in its entirety and society inscribe on its banners: From each according to his ability, to each according to his needs!
[Marx, "Critique of the Gotha Programme", Selected Works of Marx and Engels, FLPH, Moscow, Vol. 2, p. 24.]
https://www.marxists.org/reference/archive/mao/works/1964/phnycom2.htm?fbclid=IwY2xjawJAQglleHRuA2FlbQIxMAABHXJfKEOwcuI_n-t4yPuHvdj9lbu0ZGM44npDbvLCRox_LwDwSwDe4fj90g_aem_hGwg7yf57E4DJOxxtd19yw
Author: Saikat Bhattacharya
Theoretical General Socialism Communism Xi Jinping Mao USSR China 12-March-2025 by east is risingরাষ্ট্র কি আমি এই লেখায় লিখেছিলাম: https://www.eastisrising.in/view-news/272। রাষ্ট্র কি তা বুঝতে পারলে বোঝা যায় রাষ্ট্র কিভাবে ভাঙ্গে আর গড়ে। রাষ্ট্র অবিনশ্বর কিছু নয়। নতুন রাষ্ট্রের জন্ম হওয়াও অস্বাভাবিক কিছু না। একটা রাষ্ট্র নির্মাণ করতে গেলে কিছু উপাদান থাকতেই হবেঃ বিদেশী রাষ্ট্রের সাথে লড়াই করার জন্যে সেনাবাহিনী ও গুপ্তচর বাহিনী, রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে আইন শৃঙ্খলা বজায় রাখতে পুলিশ বাহিনী, কর তোলার জন্য নিয়োজিত আমলাতন্ত্র, ন্যায় বিচার দেওয়ার জন্য বিচার বিভাগ ও মুদ্রা তৈরির একচেটিয়া ক্ষমতা যার জন্যে চাই পর্যাপ্ত পরিমাণের সোনা বা বিদেশী মুদ্রার সঞ্চয়। এছাড়াও রাষ্ট্রের অর্থের (কর ও ঋণ) প্রধান উপভোক্তা (রাজনৈতিক নেতৃত্ব) ও রাষ্ট্রের প্রধান অর্থ যোগানদাতাদের (ব্যবসায়ী গোষ্ঠী) মধ্যেকার সমন্বয়ও গুরুত্বপূর্ণ। এই উপাদানগুলোর একটাও যদি ভেঙ্গে পড়ে রাষ্ট্র ভেঙ্গে পড়বে এবং এই উপাদানগুলোর সবকটা যদি হাজির থাকে তবে রাষ্ট্র গঠন করা যাবে।
অষ্টাদশ শতকের মার্কিন বিপ্লব ও ফরাসী বিপ্লবের ক্ষেত্রে মূল সমস্যা হয়েছিল অর্থের মূল উপভোক্তা ও যোগান্দাতাদের মধ্যেকার সমন্বয়ে। তাই পুরনো রাষ্ট্র ভেঙ্গে পড়েছিল। মার্কিনীরা মনে করেছিল সমুদ্রের অন্য পারে ইংল্যাণ্ডে কর দিয়ে কোনও লাভ নেই কারণ এর মূল উপভোক্তা ইংল্যাণ্ডের শাসকেরা মার্কিনীদের জন্য কোনও খরচ করতে আগ্রহী না। ইংল্যান্ড মার্কিনীদের স্বাধীনভাবে ব্যবসা করাতেও বাঁধাদান করছিল। তাই মার্কিনীরা ইংল্যান্ড রাষ্ট্র থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আলাদা রাষ্ট্র নির্মাণ করে। ফরাসী বিপ্লবের ক্ষেত্রে দেখা যায় নতুন মধ্যবিত্ত বুর্জোয়া শ্রেণি হয়ে গেছে প্রধান কর দাতা আর অন্যদিকে পুরনো সামন্ত শ্রেণি রয়ে গেছে প্রধান উপভোক্তা। তাই ফরাসী মধ্যবিত্তরা করদানের শতাংশ অনুযায়ী ফরাসী রাষ্ট্র ব্যবস্থায় প্রতিনিধিত্ব দাবী করে। এই জন্যে সেখানে প্রজাতন্ত্র গড়ে ওঠে যদিও সেখানে কেবল করদাতা ও ব্যক্তি মালিকেরাই প্রতিনিধি পাঠাতে পারত। ৯০% ব্যক্তি মালিকানাহীন করদাতা নয় এমন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষ সেখানে প্রতিনিধি পাঠাতে পারতনা অর্থাৎ ভোটদান বা ভোটে দাঁড়াবার অধিকার তাদের ছিলনা।
উনবিংশ শতকের মধ্যভাগে কার্ল মার্ক্স দেখান যে মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত ব্যক্তি মালিকরা কর দেয় যেই আয় থেকে, সেই আয়-এর উৎস আসলে নীম্ন বিত্ত ব্যক্তি মালিকানাহীন শ্রেণির শ্রম। সুতরাং শুধু রাষ্ট্রেই যে কেবল ব্যক্তি মালিকানাহীন শ্রমজীবী মানুষ প্রতিনিধি পাঠাতে দেওয়া উচিত তা নয়, তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদেরই সমস্ত উৎপাদন ব্যবস্থা চালানো উচিৎ। শ্রম না দিয়ে শুধু উৎপাদনের উপকরণ খাটিয়ে আয় করাই অনুচিত। মার্ক্স-এর এই শিক্ষা রাষ্ট্রগুলোকে বাধ্য করে ব্যক্তি মালিকানাহীন শ্রমজীবী মানুষ-কে ভোটাধিকার দিতে। যদিও উৎপাদন ব্যবস্থায় নির্বাচিত প্রতিনিধি তত্ত্ব মেনে নেয়নি কোনও রাষ্ট্রই। ১৮৭১-এ প্যারিস কমিউন তৈরি করে শেষ প্রচেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু এরপরে প্রায় ৪০ বছর পশ্চীমা অর্থনীতিতে ভালো আয় বৃদ্ধি ঘটে এবং তার সাথে মজুরি বৃদ্ধিও হয়। ফলে কেবল রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্ব নিয়েই শ্রমজীবী মানুষ খুশি থাকে। উৎপাদনের ক্ষেত্রে গণতন্ত্র সম্প্রসারণ থমকে যায়।
বিংশ শতকে লেনিন বুঝতে পারেন যে বৃহৎ উৎপাদন ব্যবস্থার সামনে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উৎপাদন দাঁড়াতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে অসংখ্য মধ্যবিত্ত পুঁজিপতির জায়গায় এসে গেছে অল্প সংখ্যক উচ্চবিত্ত পুঁজিপতি। তারাই রাষ্ট্রের মূল অর্থ (কর ও ঋণ) প্রদানকারী। তাদের পয়সায় ভোটে জিতে আসে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা। এরাই আবার রাষ্ট্রের অর্থের প্রধান উপভোক্তা। অতএব রাষ্ট্রের অর্থের মূল উপভোক্তা ও যোগান্দাতাদের মধ্যেকার সমন্বয়ে কোনও দ্বন্দ্ব নেই। লেনিন তাই জার রাষ্ট্রের দুটো দুর্বল উপাদানকে চিহ্নিত করেন। এক, দীর্ঘ প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ক্লান্ত ও বিধ্বস্ত সেনা বাহিনী আর দুই, দীর্ঘ যুদ্ধে অপ্রতুল হয়ে যাওয়া জার রাষ্ট্রের বিদেশী মুদ্রা ও সোনার ভাণ্ডার। তিনি আরও উপলব্ধি করেন যে উচ্চবিত্ত পুঁজিপতিরা বিংশ শতকে উচ্চবিত্ত সামন্তদের সাথে লড়াই করতে আগ্রহী নয় অষ্টাদশ ও উনবিংশ শতকের মধ্যবিত্ত পুঁজিপতিদের মতো। তাই জার রাষ্ট্র শিল্পায়ণ কর্মসূচীতে পিছিয়ে পশ্চীম ইউরোপের তুলনায়। লেনিন সেনাবাহিনীকে প্রতিশ্রুতি দেন যুদ্ধ বন্ধের, জার রাষ্ট্রের বিদেশি মুদ্রার অপ্রতুলতার সুযোগ নিয়ে জার্মান রাষ্ট্রের থেকে অর্থ এনে সেনা পুলিশ আমলা-দের একটা উল্লেখযোগ্য অংশকেও কিনে নেন। মার্কিন ব্যঙ্কারদের থেকেও উনি প্রতিশ্রুতি নিয়ে নেন যে তারা জার রাষ্ট্রকে আর বিদেশী মুদ্রা ঋণ দেবেননা (দিলে ফেরত দেওয়ার ক্ষমতা ছিল জার রাষ্ট্রের যদিও)। সেনাবাহিনীকে বোঝান যে দ্রুত শিল্পোন্নত হতে না পারলে সেনাকে শক্তিশালী করা যাবেনা। আর উচ্চবিত্ত পুঁজিপতি ও সামন্তদের উচ্ছ্বেদ করে তাদের বিপুল সম্পদ উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে বিনিয়োগ করেই কেবল দ্রুত শিল্পায়ণ সম্ভব। অর্থাৎ লেনিন ব্যবহার করেন জার তন্ত্রের সেনাবাহিনীকে ও বিদেশী মুদ্রার অপ্রতুলতাকে। বলাই বাহুল্য বিংশ শতকের রুশ বিপ্লব অষ্টাদশ শতকের মার্কিন বা ফরাসী বিপ্লবের থেকে অনেক বেশি বিপ্লবী নেতৃত্ব-এর গুণগত মানের ওপর নির্ভরশীল। এর পরে চীন বিপ্লব হয়। সেখানেও বিপ্লবী নেতৃত্ব সোভিয়েত রাষ্ট্রের সাহায্য নিয়ে চীন রাষ্ট্রের বিদেশী মুদ্রার ভাণ্ডারের অপ্রতুলতার সুযোগ নেয় দারুণভাবে। চীন জুড়ে রাষ্ট্রের অনুপস্থিতির সুযোগ নিয়ে মাও কৃষকদের নিয়ে গণমুক্তি সেনাবাহিনী গঠন করেন যা রাষ্ট্রীয় সেনাবাহিনীকে পরাস্ত করে ক্ষমতা দখল করে। অর্থাৎ চীন রাষ্ট্রের শুধু মুদ্রার ভাণ্ডারই অপ্রতুল ছিলনা, গ্রামাঞ্চলে তার পুলিশ, আমলা ও বিচার বিভাগও দুর্বল ছিল এবং অনেক ক্ষেত্রে ছিল অনুপস্থিত। দুটো বিশ্ব যুদ্ধের মাঝে চীন রাষ্ট্রের যে সামগ্রীক দুর্বলতা ছিল তারই সুযোগ নেয় বিপ্লবীরা।
এবার আমরা আসি ১৯৭১-এর বাংলাদেশ রাষ্ট্র গঠন ও পাকিস্তান রাষ্ট্রের ভাঙ্গনের ক্ষেত্রে। এই রকম বিচ্ছিন্ন হয়ে আলাদা রাষ্ট্র বানানো হয় মূলত মার্কিন বিপ্লবে। আটলান্টিক মহাসাগর যেমন মার্কিনী ও ইংল্যাণ্ড রাষ্ট্রকে বিচ্ছিন্ন করেছে, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মাঝেও বিস্তীর্ণ ভারত ভূমি আছে। এই ভৌগলিক বিচ্ছিন্নতা স্বাভাবিকভাবেই রাজনৈতিক বিচ্ছিন্নতা সৃষ্টি করেছে। ১৯৭১-এর আগে বাংলাদেশের অধিকাংশ ব্যবসা পাকিস্থানীদের হাতে থাকায় ক্ষোভ সৃষ্টি হচ্ছিলই। ব্যবসা দখলের ইচ্ছা বাংলাদেশীদের মধ্যে ছিলই। তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধিকে প্রধান মন্ত্রী হতে না দেওয়া সেই ইচ্ছাতে ঘী দানের কাজ করে। কিন্তু এইটুকু কি যথেষ্ট ছিল যে কোনও দেশের স্বাধীন হওয়ার জন্যে? উত্তর হল না। ভারতেও তামিলরা ১৯৫০ ও ৬০-এর দশকে যখন আলাদা রাষ্ট্রের দাবি জানাতে থাকে তখন ভারত সরকার ১৯৬৩ সালে কেন্দ্রে আইন পাশ করায় যে বিচ্ছিন্ন হওয়ার দাবি নিয়ে কেউ রাজনীতি করতে পারবেনা বা ভোটে দাঁড়াতে পারবেনা। ফলে তামিল নেতারা রাষ্ট্রদ্রোহিতা আইনের ভয় বিচ্ছিন্ন হওয়ার দাবি থেকে সরে আসে এবং আন্দোলনকে মূলত হিন্দি বিরোধী হিসেবেই রেখে দেয়। বলা বাহুল্য দঃ ভারতের রাজ্যগুলোকে খুশি করতে এই সময়ে অজস্র অর্থনৈতিক সুবিধে দান করে কেন্দ্র। অর্থাৎ ভারত সরকার তার সেনাবাহিনী ও অর্থের জোড়ে তামিলদের বিচ্ছিনতার আন্দোলনকে বশে আনে। কিন্তু পাকিস্তান রাষ্ট্র তা করতে পারেনি। কারণ বাংলাদেশিদের ছিল নিজস্ব সেনা বিভাগ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট, মধ্যখানের বিস্তীর্ণ ভৌগলিক বিচ্ছিন্নতা, পাকিস্তান রাষ্ট্রের ভারতের তুলনায় দুর্বল অর্থশক্তি এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন ও ভারত রাষ্ট্রের সরাসরি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে সমর্থন। এই ক্ষেত্রে রুশ বিপ্লবের সাথে ১৯৭১-এর মিল আছে। জার্মান ও জার রাষ্ট্র ছিল পাশাপাশি। ফলে জার্মান-দের লেনিনকে সাহায্য করতে খুব বেগ পেতে হয়নি। সোভিয়েতেরও চীনা কমিউনিস্টদের সাহায্য করতে অসুবিধে হয়নি একই কারণে। বাংলাদেশও তিন দিক দিয়ে ভারত রাষ্ট্র দিয়ে ঘেরা। ভারতেরও বাংলাদেশকে স্বাধীন করতে বেগ পেতে হয়নি। কিন্তু মনে রাখা দরকার সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন, যে কি না রাষ্ট্র সংঘের সিকিউরিটি কাউন্সিলের পাঁচটা দেশের অন্যতম এবং তৎকালীন বিশ্বের প্রধান দুই সুপার পাওয়ার-এর একটি। সোভিয়েত তিনবার ভেটো দিয়ে বাংলাদেশকে স্বাধীন করতে সহায়তা করে। এছাড়া সোভিয়েত ভারতকে সমস্ত সামরিক সরঞ্জাম দেয় বাংলাদেশকে মুক্ত করতে। পূর্বে পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে বিধ্বস্ত করে ভারত সুযোগ পেয়েছিল পশ্চীম পাকিস্তান আক্রমণ করার। কিন্তু সোভিয়েত ভারতকে পশ্চীম পাকিস্তান আক্রমণ করতে নিষেধ করে। তাই ভারত বাধ্য হয় সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করতে। অন্যদিকে তামিলদের মেলেনি কোনও বৈদেশিক বা ভৌগলিক সুবিধে। এমনকি তাদের নিজস্ব সেনাবাহিনীও ছিলনা। বলা বাহুল্য ভৌগলিক বিচ্ছিন্নতা না থাকলে হয়তো পূর্ব পাকিস্তান নিজস্ব সেনাবাহিনী পেতনা। এছাড়া পাকিস্তানের তুলনায় ভারতের অর্থশক্তি বেশি হওয়ায় লোভ আর ভয় দেখিয়ে বিচ্ছিন্নতা আটকানো অনেক সহজ হয়েছে ভারত রাষ্ট্রের পক্ষে।
এবার দেখা যাক একবিংশ শতকে যদি পুরনো রাষ্ট্রের পতন ও নতুন রাষ্ট্রের সূচনা হতে হয় তাহলে কি কি উপাদান লাগবে। এক, সেনা ও গুপ্তচর বাহিনী তৈরি করতে হবে নয় কিনে নিতে হবে। দুই, পুলিশ ও আমলাদেরও তৈরি করতে হবে নয় কিনে নিতে হবে। তিন, বিচার বিভাগ তৈরি করতে হবে নয় কিনে নিতে হবে। চার, কোনও বিদেশী রাষ্ট্রের সাহায্য নিয়ে নিজেদের বিদেশী মুদ্রার ভাণ্ডার গড়ে তুলতে হবে এবং পুরনো রাষ্ট্রের বিদেশী মুদ্রার ভাণ্ডারে আঘাত করতে হবে। পাঁচ, পুরনো রাষ্ট্রের প্রধান অর্থদাতা ও অর্থ উপভোক্তাদের সমন্বয় ভেঙ্গে দিতে হবে নয়তো দুজনকেই উচ্ছ্বেদ করতে হবে। বাংলাদেশে ২০২৪-এর ৩৬শে জুলাই যে বিপ্লব হয়েছে সেখানে বলা যায় পুরনো রাষ্ট্রের প্রধান অর্থদাতা ও অর্থ উপভোক্তাদের সমন্বয় অটুট না থাকার কোনও কারণ নেই। যদিও মূল উপভোক্তাদের (আওয়ামী নেতাদের) তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এবং কিছু প্রধান অর্থদাতার (ব্যবসায়ী গোষ্ঠী) সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে কিন্তু তারা আবার ফিরে আসতে পারে এবং নতুন উপভোক্তা ও অর্থদাতাদের চরিত্র পুরনোদের মতো থেকে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। ইউনূস সাহেবের উপস্থিতি পুরনো রাষ্ট্রের বিদেশী মুদ্রার ভাণ্ডারই সজীব রাখছে আর তাই ইউনুশ সরকার যদি খুব দ্রুত নতুন রাষ্ট্র তৈরি করতে ব্যর্থ হয় তাহলে তার উপস্থিতিকে কেবল ব্যবহারই করবে পুরনো রাষ্ট্র। বিচার বিভাগ, পুলিশ ও আমলাদের একটা বড়ো অংশ পুরনো রাষ্ট্রের পক্ষে। সেনা বাহিনীর কিছু উচ্চপদস্থ কর্তা বাদ দিলে তারা নতুন রাষ্ট্রের পক্ষেই থাকছে আর সেটাই বিপ্লবের মূল শক্তি।
আসলে বিপ্লবীদের বুঝতে হবে যে পুরনো রাষ্ট্রের অর্থদাতা (ব্যবসায়ী গোষ্ঠী), উপভোক্তা (রাজনৈতিক নেতৃত্ব), পুলিশ, আমলা, বিচার বিভাগ সবই অটুট আছে। আগে অর্থদাতাদের বিনাশ করা দরকার। লেনিন সেই জন্যে শ্রমিক কৃষক ঐক্যের জোড়ে উচ্চবিত্ত সামন্ত পুঁজিপতিদের উচ্ছ্বেদের কথা বলেন। সেই পথেই হয়তো ইদানিং ছাত্র-জনতার বিপ্লবকে ছাত্র-শ্রমিক-জনতার বিপ্লব বলা হচ্ছে। ইউনূস সাহেব নিজেই বলেছেন। ছাত্রদের দল এনসিপি-ও শ্রমিক সংগঠন বানানোর দিকে মন দিচ্ছে। কিন্তু ২০২৫ সালের বাংলাদেশে সংগঠিত শ্রমিক শ্রেণি গোটা দুনিয়ার মতোই বিশ্বায়ণের প্রকোপে দুর্বল। বাংলাদেশের পুরনো রাষ্ট্রের মূল অর্থদাতা শক্তি হল লুটেরা মজুতদার শ্রেণি। এদের পালটা একটা উৎপাদক শ্রেণি তৈরি করতে হবে। এর জন্যে সামাজিক উদ্যোগের আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে সমগ্র বাংলাদেশ জুড়ে। ইউনূস সাহেবের বিশ্ব বিখ্যাত সামাজিক উদ্যোগী তত্ত্ব দিয়েই নতুন সামাজিক উদ্যোগী শ্রেণি নির্মাণ করতে হবে। লুটেরা পুঁজি, তোলাবাজ রাজনৈতিক নেতৃত্ব, ঘুষখোর পুলিশ, আমলা, বিচার বিভাগ সবাই মিলে যে মৌরসিপাট্টা গড়ে তুলেছে তার শেকড় ছড়িয়ে আছে গ্রামে গ্রামে ও শহরের সমস্ত গলিতে। এদের বিরুদ্ধে উৎপাদনমুখী আন্দোলন গড়ে তুলতে পারলেই কেবল এই পরজীবী লটেরাতন্ত্র ধ্বংস হবে। আর সমাজকে উৎপাদনমুখী করে তুলতে সামাজিক উদ্যোগ তত্ত্বের কোনো বিকল্প নেই। সামাজিক উদ্যোগী শ্রেণির নেতৃত্বে শ্রমিক, উৎপাদক পুঁজি ও কৃষক সংগঠিত হতে পারলেই বিপ্লব জয়ী হবে। মনে রাখতে হবে বর্তমানে সংগঠিত শ্রমিক শ্রেণি দুর্বল এবং তোলাবাজ রাজনিতি আর ঘুষখোর পুলিশ, আমলা, বিচার ব্যবস্থার সহযোগে চলা লুটেরা পুঁজির সামনে দাঁড়াতে পারবেনা উৎপাদক পুঁজি। একমাত্র সামাজিক উদ্যোগীরাই তা পারবে কারণ তারা মুনাফা করতে উদ্যোগ চালাবেনা। তারা হয় উদ্যোগের শ্রম থেকেই আনন্দ বা ব্যবহার মূল্য বা উপযোগীতা পাবে নয় তো উদ্যোগের ফলে সমাজ ও রাষ্ট্রের যে ভাল হবে তার দেখে আনন্দ পাবে। তাই মুনাফা কম হলেও তারা লড়াই চালিয়ে যাবে।
বর্তমান পৃথিবীতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীন ছাড়া কোনও বিদেশী শক্তি নতুন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার ক্ষমতা রাখেনা। ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্ব নিয়ে বেশি ভাবতে রাজি নয়। তিনি ইউরোপ-কেও নিরাপত্তা দিতে অস্বীকার করছেন। ইউরোপ তাই বাধ্য হচ্ছে নিজেদের সুরক্ষাব্যবস্থা শক্তিশালী করতে। এর ফলে সামাজিক কল্যাণ খাতে খরচ কমাতে বাধ্য হবে ইউরোপ। ফলে অন্তর্ভুক্তির রাজনীতি যা রাষ্ট্রীয় খরচের ওপর নির্ভর করে তা দুর্বল হবে গোটা দুনিয়া জুড়েই। তাই নারী ও সমকামী কেন্দ্রীক রাজনীতিতে না গিয়ে উৎপাদনমুখী সামাজিক উদ্যোগের আন্দোলনে যাওয়াই ঠিক হবে ছাত্রদের নতুন দলের এবং অন্যান্য দলের বিপ্লবী অংশের। চীন বাংলাদেশ নিয়ে উৎসুক হবেই। তাই বিপ্লবী শক্তিকে চীনকে কাছে টেনে নিতে হবে। একমাত্র চীনই ভারতকে আটকাতে বিপ্লবী শক্তিকে সমর্থন করতে পারে। চীনের সাথে সমঝৌতা চায় মার্কিন শাসক শ্রেণির যেই অংশ (যেমন ট্রাম্প) তাকেও সাথে নিতে হবে বাংলাদেশের বিপ্লবী শক্তিকে। চীন সাথে থাকলে লুটেরা তোলাবাজ ঘুষখোর-দের জোটকে অনেকটাই কোণঠাসা করে ফেলা সম্ভব হবে। চীনের সাথে সমঝৌতা চাওয়া মার্কিন শাসক অংশের (যেমন ট্রাম্প) বেঁধে দেওয়া লাল দাগ মেনে বাংলাদেশের বিপ্লবী শক্তি যদি চীনের সাথে জোট বাঁধতে পারে তাহলে বিপ্লবের কাজ অনেকটাই এগিয়ে যাবে। সামাজিক উদ্যোগী আন্দোলন ব্যক্তি মালিকানা অস্বীকার করেনা আর তাই পশ্চীম আতঙ্কিত হবেনা। আবার সামাজিক উদ্যোগ মুনাফার জন্য উদ্যোগ নয়, তাই চীনও এর প্রতি আস্থাশীল থাকবে। চীনের বর্তমান উদ্ভাবনী ক্ষেত্র অনেকটাই তৈরি হয়েছে সামাজিক উদ্যোগ দিয়ে ( https://www.eastisrising.in/view-news/353 )।
তাই বলা যায় বাংলাদেশের বিপ্লবীদের মূল মন্ত্র হবে সামাজিক উদ্যোগ আন্দোলন, চীনের সাথে সমঝৌতা করতে চাওয়া মার্কিন শাসক অংশের বেঁধে দেওয়া লাল দাগ মেনে চীন-এর সাথে জোট। তাহলেই কেবল লুটেরা তলাবাজ ঘুসখোর শাসক শ্রেনিকে পরাস্ত করা সম্ভব। ফরাসী ও মার্কিন বিপ্লব ছিল সরাসরি রাষ্ট্রের অর্থদাতা ও উপভোক্তাদের মধ্যেকার দ্বন্দ্ব। লেনিন ব্যবহার করেন রাষ্ট্রের সঙ্গে সেনাবাহিনী ও শত্রু রাষ্ট্রের দ্বন্দ্ব-কে ও রাষ্ট্রের দুর্বল অর্থশক্তি-কে। বাংলাদেশ বিপ্লবকে সফল হতে গেলে বিপ্লবী নেতৃত্বকে নতুন সামাজিক উদ্যোগী শ্রেণি তৈরি করে এগোতে হবে।
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Theoretical General 06-March-2025 by east is risingThe Chinese Communist Party stands on the thought of Karl Marx, Lenin, Mao Zedong, and Deng Xiaoping. From Marx, they received guidance on long-term international goals, from Lenin, they received a tool for the struggle against the historical hegemony of the West, from Mao, they received the means to use Marx and Lenin in the context of China, and with the help of Deng, they combined the traditional forces of China with Marx, Lenin, and Mao.
Marx believed that the advancement of technology would one day reach such a level that all the activities that people do not like to do but are socially important will be done by automatic machines and people will only do those activities that they like to do. When this situation is created, we will reach a communist society. A person who does the activities he likes will not do those activities for the purpose of any exchange value (money) and therefore all activities and production in society will be social. That is, there will be no investment for profit and no work will be done for money. Also, no person will be able to make other people do any work for his own benefit by showing fear or greed because if he does not like it, no one will do any work. Therefore, society will be classless. Exchange value and classes will disappear. All activities and production will be social and therefore individual property will become social property.
But Marx believed that capital must first develop, that is, the production system must become so automated that the productive power of society will be huge but for that there will be no need to use the full labor power of society. As a result, the real wages of the working class in society will not increase as much as the profits of the capitalist class will increase. Since a large part of the workers are buyers, the purchasing power of society will lag behind the productive power of society. As a result, a crisis of overproduction will arise. To overcome this, it is necessary for a revolutionary state led by the working class to invest without keeping profit as its main goal, and as a result, the crisis of overproduction will be overcome. It can be said that since profit is not the main goal, social investment and initiative will increase. Gradually, a state led by the working class will automate production more and more and give the workers more time to do the things they like. In this way, gradually all the work that they do not like to do will be automated and the entire human race will be able to do the things they like. Marx believed that since people would continue to work for exchange value until they were given the opportunity to act as they wished at the individual level, it was not possible to organize social investment or enterprise through privately owned enterprises. Therefore, only a revolutionary state led by workers could organize social investment or enterprise.
Lenin said that in the 20th century, capitalism has transformed from competitive capitalism to monopoly (basically oligopoly) capitalism. The entire production system is controlled by large wealthy capitalists. The middle-class capitalists (who are called bourgeois in French) have taken a marginal position in production. As a result, it is no longer possible for them to break feudalism by carrying out bourgeois reforms and develop production as before. The working class must also carry out these bourgeois reforms and break feudalism and develop production and automation. As a result, Lenin gives the responsibility of industrialization to the state led by the working class. He also shows that social production and investment will not only be effective in the crisis of overproduction. Rather, social investment (where profit is not the main goal) is also fruitful in the development of industrialization and automation. The rapid development of Soviet industrialization proves that a revolutionary state led by the working class can develop heavy industry and infrastructure and education and health very quickly through social investment. It can be said that state-led social investment in areas such as basic industry, education, health and research was very effective. Under Stalin's leadership, Soviet industry and military power, based on industrial strength, surpassed those of Germany, Britain and France.
But in the 1950s, it was proven that despite being ahead in heavy industry, infrastructure, education, health, and research, state-run social investment in light and consumer goods industries was not yielding good results. State-run social investment was also not yielding any results in innovative industries. Mao highlighted the bureaucratic weaknesses of state-run social enterprises. And he tried to develop the light and consumer goods industries by creating democratically run social enterprises. But that effort failed. In the 1980s, Deng said that despite being ahead in heavy industry, infrastructure, education, health, and research, there should be state-run social investment in light and consumer goods industries and private profit-oriented enterprises in the light consumer goods industry. Deng's model led to rapid progress in China. But since 2008, the Communist Party of China has become concerned that China is still lagging behind in innovative initiatives.
Innovation is almost impossible without individual dreams and initiatives. Again, the innovation industry is mainly created in the United States, and there, companies are speculating (buying and selling shares of companies) on which companies will succeed in investing in innovation, hoping to make a profit. As a result, a bubble is created in the US stock market, and when that bubble bursts, an economic crisis occurs. What's more, to repeatedly attract investment in innovation, a very strong currency is needed, which deinvests the country's industrial production and all investment goes into the property trading business. Therefore, a profit-oriented innovation system is not to China's liking.
Then the Communist Party of China remembered the famous Nobel Prize winner of Bangladesh, Muhammad Yunus. Yunus said that an individual will take up social initiatives if the society benefits from that initiative and the happiness of many people in the society also brings happiness to the social investor. That is, a person can make social investments by focusing not on profit but on the happiness that he brings to the society. That is, where Marx Lenin thought that only the state should be remembered for social investment, Yunus found the source of social investment within the individual. Using Yunus' social initiatives, many countries were able to eliminate poverty without the state. While the Western world repeatedly saw Yunus' social initiatives as a means to eliminate poverty, China began to think about developing the innovative field using Yunus's theory.
China saw that if the happiness or progress of society is a source of individual happiness, then individuals can take up social initiatives. Then, developing the country by advancing in the field of innovation and defeating the US blockade can also be a source of individual happiness. Again, individuals can invest without keeping profit as the main goal to make their innovative dreams come true. In this way, China started using Yunus' social entrepreneurship to promote their own innovative fields. Municipalities in various cities in China started investing heavily in all such privately owned social enterprises where innovation is the main goal, profit is secondary. Liang Wengfeng, the founder of DeepSik, said that their main goal is the use value, profit or exchange value of innovation. And this is why DeepSik was released to the market completely free of charge. Earlier, China also brought the Covid vaccine to the market for free, but that vaccine was developed by the state (it is important to remember that state-led social investment in health and research is quite fruitful). But despite being an individual, DeepSik has taken up social initiatives. Also, the US innovation sector, being profit-oriented, aims to attract a lot of investment, thus increasing the cost of innovation. The Chinese innovation model, being social, emphasizes the utility or use value of innovation and has less investment growth or cost growth. Therefore, the cost of creating DeepSik is one-third of the cost of Chat-GPT.
The Chinese model so far is as follows:
Heavy infrastructure industry and services: state and social
Education health research: state and social
Light consumer goods industry and services: private and profit-oriented
Innovative industry and services: private and social
Social = production with use value or utility in mind
Profit-oriented = production with exchange value or profit in mind
An Important Reference: https://beamstart.com/news/global-entrepreneurship-competition-hicool-2025?fbclid=IwY2xjawIsHt9leHRuA2FlbQEwAGFkaWQBqxnAChyT_gEdoPu_qatUrzVwouUuuAuTv5eHJzDvaC40k5iDCZwk9Xp7vHws6J3Y_wO0_aem_5ScT_u79zJvydJ2ysLMjYA
Author: Saikat Bhattacharya
Theoretical General Socialism Communism Xi Jinping Mao USSR China 26-February-2025 by east is risingকার্ল মার্ক্স, লেনিন, মাও জে দং ও দেং শিয়াওফিং-এর চিন্তার ওপরেই চীনের কমিউনিস্ট পার্টি দাঁড়িয়ে আছে। মার্ক্স -এর থেকে তারা দীর্ঘমেয়াদী আন্তর্জাতিক লক্ষ্য সম্পর্কে দিক নির্দেশ পান, লেনিন পশ্চীমের ঐতিহাসিক আধিপত্যের বিরুদ্ধে সংগ্রামের হাতিয়ার, মাও-এর থেকে চীনের পটভূমিকায় মার্ক্স ও লেনিন-কে ব্যবহার করার উপায় পান এবং দেং-এর সাহায্যে চীনের পরম্পরা গত শক্তির মেলবন্ধন ঘটানো হয় মার্ক্স লেনিন ও মাও-এর সাথে।
মার্ক্স মনে করতেন প্রযুক্তির অগ্রগতি একদিন এমন স্তরে পৌঁছে যাবে যে মানুষের করতে ভাল লাগেনা কিন্তু সামাজিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ এমন সমস্ত ক্রিয়া করবে স্বয়ংক্রিয় মেশিন আর মানুষ কেবল এমন ক্রিয়া করবে যা সে করতে পছন্দ করবে। এই অবস্থা যখন তৈরি হবে তখন আমরা কমিউনিস্ট সমাজে পৌঁছব। যে মানুষ তার পছন্দের ক্রিয়া করে তাই সে কোনও বিনিময় মূল্যের (অর্থ) উদ্দেশ্যে সেই ক্রিয়া করবেনা আর তাই সমাজে সমস্ত ক্রিয়া ও উৎপাদন হবে সামাজিক। অর্থাৎ মুনাফার জন্যে কোনও বিনিয়োগ হবেনা আর অর্থের জন্যে কোনও কাজ হবেনা। এছাড়াও কোনও মানুষ অন্য মানুষকে ভয় বা লোভ দেখিয়ে নিজের স্বার্থে কোনো কাজ করিয়ে নিতে পারবেনা কারণ পছন্দ না হলে কেউ কোনো কাজই করবেনা। তাই সমাজ হবে শ্রেণিহীন। বিনিময় মূল্য ও শ্রেণি বিলুপ্ত হবে। সমস্ত ক্রিয়া ও উৎপাদন হবে সামাজিক আর তাই ব্যক্তি সম্পত্তি হয়ে যাবে সামাজিক সম্পত্তি।
কিন্তু মার্ক্স মনে করতেন আগে পুঁজির বিকাশ হতে হবে অর্থাৎ উৎপাদন ব্যবস্থা এতটাই স্বয়ংক্রিয় হয়ে উঠতে হবে যে সমাজের উৎপাদন শক্তি হবে বিশাল কিন্তু তার জন্যে সমাজের পূর্ণ শ্রম শক্তিকে ব্যবহার করার প্রয়োজনীয়তা থাকবেনা। ফলে সমাজে শ্রমিক শ্রেণির আসল মজুরি ততটা বৃদ্ধি পাবেনা যতটা পুঁজিপতি শ্রেণির মুনাফা বৃদ্ধি পাবে। যেহেতু শ্রমিকদের বিশাল অংশই ক্রেতা তাই সমাজের ক্রয়ক্ষমতা সমাজের উৎপাদিকা শক্তির থেকে পিছিয়ে পড়বে। ফলে দেখা দেবে অতি উৎপাদন সঙ্কট। একে কাটাতে প্রয়োজন শ্রমিক শ্রেণির নেতৃত্বে বিপ্লবী রাষ্ট্র যে মুনাফাকে মূল লক্ষ্য না রেখে বিনিয়োগ করবে এবং এর ফলেই কেবল অতি উৎপাদন সঙ্কট কেটে যাবে। মুনাফা মূল লক্ষ্য থাকছেনা বলে বলা চলে সামাজিক বিনিয়োগ ও উদ্যোগ বেড়ে যাবে। ক্রমেই শ্রমিক শ্রেণি পরিচালিত রাষ্ট্র আরও বেশি স্বয়ংক্রিয় করে তুলবে উৎপাদনকে এবং শ্রকিকদের আরও বেশি সময় দেবে নিজের পছন্দ মতো ক্রিয়া করার জন্যে। এভাবেই আস্তে আস্তে সমস্ত করতে ভালো লাগেনা এমন কাজকেই স্বয়ংক্রিয় করে ফেলা হবে এবং সমগ্র মানব জাতিই পছন্দ মতো কাজ করতে পারবে। মার্ক্স -এর ধারণা ছিল যেহেতু মানুষ ব্যক্তিস্তরে পছন্দ মতো ক্রিয়া করার সুযোগ না পাওয়া পর্যন্ত বিনিময় মূল্যের জন্যেই কাজ করে যাবে তাই ব্যক্তি মালিকানাধীন সংস্থা দিয়ে সামাজিক বিনিয়োগ বা উদ্যোগ সংগঠিত করা সম্ভব নয়। অতএব সামাজিক উদ্যোগ বা বিনিয়োগ করতে পারে কেবল শ্রমিক পরিচালিত বিপ্লবী রাষ্ট্র।
লেনিন বলেন বিংশ শতকে পুঁজিবাদ প্রতিযোগিতামূলক পুঁজিবাদ থেকে একচেটিয়া (মূলত ওলিগোপলি) পুঁজিবাদে পরিণত হয়েছে। পুরো উৎপাদন ব্যবস্থা বৃহৎ ধনী পুঁজির মালিকেরাই নিয়ন্ত্রণ করছে। মধ্যবিত্ত পুঁজির মালিকেরা (যাদের ফরাসী ভাষায় বুর্জোয়া বলা হয়) উৎপাদনে প্রান্তিক অবস্থান নিয়েছে। ফলে তাদের পক্ষে আর আগের মতো বুর্জোয়া সংস্কার ঘটিয়ে সামন্ততন্ত্র ভেঙ্গে উৎপাদনের বিকাশ ঘটানো সম্ভব নয়। এই বুর্জোয়া সংস্কার ঘটিয়ে সামন্ততন্ত্র ভেঙ্গে উৎপাদন ও স্বয়ংক্রিয়তা বিকাশের কাজও করতে হবে শ্রমিক শ্রেণিকেই। ফলে লেনিন শিল্পায়ণের দায়িত্ব শ্রমিক শ্রেণির নেতৃত্বাধীন রাষ্ট্রকেই দেন। এছাড়াও উনি দেখান যে সামাজিক উৎপাদন ও বিনিয়োগ কেবল অতি উৎপাদন সংকটেই কার্যকর হবে তা নয়। বরং শিল্পায়ণ ও স্বয়ংক্রিয়তা বিকাশেও সামাজিক বিনিয়োগ (মুনাফা যেখানে মূল লক্ষ্য নয়) ফলদায়ক। সোভিয়েত শিল্প্যণের দ্রুতগামীতা প্রমাণ করে যে শ্রমিক শ্রেণির নেতৃত্বাধীন বিপ্লবী রাষ্ট্র সামাজিক বিনিয়োগ করে ভারী শিল্প ও পরকাঠামো এবং শিক্ষা স্বাস্থ্য খুব দ্রুত উন্নত করে ফেলতে পারে। বলা যায় বুনিয়াদী শিল্প শিক্ষা স্বাস্থ্য এবং গবেষণার মতো ক্ষেত্রে রাষ্ট্র চালিত সামাজিক বিনিয়োগ খুবই ফলদায়ক হয়। স্তালিনের নেতৃত্বে সোভিয়েত শিল্প ও শিল্প বলের ওপর নির্ভরশীল সামরিক ক্ষমতা জার্মানি ব্রিটেন ফ্রান্স-কে ছাপিয়ে যায়।
কিন্তু ১৯৫০-এর দশকে এসে প্রমান হয় যে ভারী শিল্প, পরিকাঠামো, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও গবেষণাতে এগিয়ে থাকলেও হাল্কা ও ভোগ্যপণ্য শিল্পে রাষ্ট্র পরিচালিত সামাজিক বিনিয়োগ ভাল ফল দিচ্ছেনা। উদ্ভাবনমূলক শিল্পেও কোনো ফল পাচ্ছেনা রাষ্ট্র চালিত সামাজিক বিনিয়োগ। মাও রাষ্ট্র চালিত সামাজিক উদ্যোগগুলোর আমলাতান্ত্রিক দুর্বলতার কথা তুলে ধরেন। এবং গণতান্ত্রিকভাবে পরিচালিত সামাজিক উদ্যোগ তৈরি করে হালকা ও ভোগ্যপণ্য শিল্পের বিকাশ ঘটানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু সেই উদ্যোগ ব্যর্থ হয়। ১৯৮০-এর দশকে দেং বলেন ভারী শিল্প, পরিকাঠামো, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও গবেষণাতে এগিয়ে থাকলেও হাল্কা ও ভোগ্যপণ্য শিল্পে রাষ্ট্র পরিচালিত সামাজিক বিনিয়োগ থাক আর হাল্কা ভোগ্যপণ্যের শিল্পে ব্যক্তিমালিকানাধীন মুনাফা কেন্দ্রিক উদ্যোগ থাক। দেং-এর মডেল চীনের দ্রুত অগ্রগতি ঘটায়। কিন্তু ২০০৮ সালের পর থেকে চীনের কমিউনিস্ট পার্টি আশঙ্কিত হয়ে ওঠে এই জন্যে যে উদ্ভাবনমূলক উদ্যোগে চীন তখনো পিছিয়ে।
ব্যক্তির স্বপ্ন ও উদ্যোগ ছাড়া উদ্ভাবন প্রায় অসম্ভব। আবার উদ্ভাবনমূলক শিল্প মূলত তৈরি হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আর সেখানে কোন সংস্থা উদ্ভাবনমূলক বিনিয়োগ করে সফল হবে তা নিয়ে ফাটকাবাজি (সংস্থার শেয়ার কেনাবেচা করা) করে মুনাফার আশায়। এর ফলে মার্কিন শেয়ার বাজারে বুদবুদ তৈরি হয় আর সেই বুদবুদ যখন ফাটে তখন অর্থনৈতিক সঙ্কট তৈরি হয়। তার চেয়েও বড় কথা এভাবে বারবার উদ্ভাবনমূলক ক্ষেত্রে বিনিয়োগ টানতে গেলে খুব শক্তিশালী মুদ্রা দরকার যা সেই দেশের শিল্পোতপাদনকে বিনিয়োগশূন্য করে দেয় আর সমস্ত বিনিয়োগ চলে যায় সম্পত্তি কেনাবেচার ব্যবসাতে। তাই মুনাফা কেন্দ্রিক উদ্ভাবন ব্যবস্থা চীনের পছন্দ নয়।
তখন চীনের কমিউনিস্ট পার্টি স্মরণাপন্ন হয় বাংলাদেশের বিখ্যাত নোবেল পুরস্কার প্রাপ্ত মহম্মদ ইউনূস-এর। ইউনূস বলেন যে একজন ব্যক্তি সামাজিক উদ্যোগ গ্রহণ করবেন যদি সেই উদ্যোগ থেকে সমাজ লাভবান হয় এবং সমাজের বহু মানুষের আনন্দ সামাজিক বিনিয়োগকারীকেও আনন্দ দেয়। অর্থাৎ একজন ব্যক্তি মুনাফাকে মূল লক্ষ্য না করে সমাজের ভালো করে যে আনন্দ সেই আনন্দকেও লক্ষ্য করে সামাজিক বিনিয়োগ ঘটাতে পারে। অর্থাৎ মার্ক্স লেনিন যেখানে সামাজিক বিনিয়োগের জন্যে কেবল রাষ্ট্রের স্মরণাপন্ন হওয়ার কথা ভেবেছিল সেখানে ইউনূস ব্যক্তির মধ্যেই সামাজিক বিনিয়োগের উৎস খুঁজে বের করেন। ইউনূসের সামাজিক উদ্যোগ ব্যবহার করে বহু দেশ রাষ্ট্রকে ছাড়াই দারিদ্র্য দূর করতে সক্ষম হয়। পশ্চীমি দুনিয়া বারবার ইউনূসের সামাজিক উদ্যোগকে যেখানে দারিদ্র্য দূরীকরণের উপায় হিসেবে কেবল দেখে, চীন সেখানে ইউনূসের তত্ত্ব ব্যবহার করে উদ্ভাবনী ক্ষেত্রকে বিকাশ করার কথা ভাবোতে লাগল।
চীন দেখল সমাজের আনন্দ বা অগ্রগতি যদি ব্যক্তি আনন্দের উৎস হয় তবে ব্যক্তি সামাজিক উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারে। তাহলে উদ্ভাবনী ক্ষেত্রে বিকাশ ঘটিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং মার্কিন অবরোধকে পরাজিত করাও ব্যক্তি আনন্দের উৎস হতে পারে। আবার ব্যক্তি উদ্ভাবনী স্বপ্নকে ফলপ্রসূ করতেও মুনাফাকে প্রধান লক্ষ্য না রেখে বিনিয়োগ করতে পারে। এইভাবে ইউনূসের সামাজিক উদ্যোগ-কে নিজেদের উদ্ভাবনী ক্ষেত্র বকাশে কাজে লাগাতে থাকে চীন। চীনের বিভিন্ন শহরের পুরসভাগুলো বিপুলভাবে বিনিয়োগ করতে থাকে এমন সব ব্যক্তি মালিকানাধীন সামাজিক উদ্যোগে যেখানে উদ্ভাবন করাটাই মূল লক্ষ্য, মুনাফা গৌণ। ডিপসিক-এর প্রতিষ্ঠাতা লিয়াং ওয়েংফেং বলেছেন তাদের মূল লক্ষ্য উদ্ভাবনের ব্যবহারমূল্য, মুনাফা বা বিনিময়মূল্য তাদের কাছে গৌণ। আর এই জন্যেই ডিপসিক-কে পুরোপুরি বিনামূল্যে ছাড়া হয়েছে বাজারে। এর আগে চীন কোভিড ভ্যাক্সিনও বিনামূল্যে বাজারে আনে কিন্তু সেই ভ্যাক্সিন উভাবক ছিল রাষ্ট্র (মনে রাখা দরকার স্বাস্থ্য ও গবেষণায় রাষ্ট্র চালিত সামাজিক বিনিয়োগ যথেষ্ট ফলদায়ক)। কিন্তু ডিপসিক-এর উদ্ভাবক ব্যক্তি হওয়া সত্তেও সামাজিক উদ্যোগ নিয়েছে। এছাড়াও মার্কিন উদ্ভাবনী ক্ষেত্র মুনাফাকেন্দ্রিক হওয়ায় প্রচুর বিনিয়োগ টেনে আনাকেই লক্ষ্য ভাবে এবং এইভাবে উদ্ভাবনের খরচ অনেক বাড়িয়ে তোলে। চীনা উদ্ভাবনী মডেল সামাজিক হওয়ায় উদ্ভাবনের উপযোগিতা বা ব্যবহার মূল্যের ওপর জোড় দেয় এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধি বা খরচ বৃদ্ধি কম হয়। তাই ডিপসিক তৈরি করতে খরচ হয়েছে চ্যাট-জিপিটি-র এক তিরিশাংশ।
চীনের মডেল এখনো পর্যন্ত এরকমঃ
ভারী বুনিয়াদী পরিকাঠামো শিল্প ও পরিষেবাঃ রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক
শিক্ষা স্বাস্থ্য গবেষণাঃ রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক
হাল্কা ভোগ্যপণ্য শিল্প ও পরিষেবাঃ ব্যক্তিমালিকানা ও মুনাফাকেন্দ্রিক
উদ্ভাবনমূলক শিল্প ও পরিষেবাঃ ব্যক্তিমালিকানাধিন ও সামাজিক
সামাজিক = ব্যবহারমূল্য বা উপযোগিতা মাথায় রেখে উৎপাদন
মুনাফাকেন্দ্রিক = বিনিময়মূল্য বা মুনাফা মাথায় রেখে উৎপাদন
An Important Reference: https://beamstart.com/news/global-entrepreneurship-competition-hicool-2025?fbclid=IwY2xjawIsHt9leHRuA2FlbQEwAGFkaWQBqxnAChyT_gEdoPu_qatUrzVwouUuuAuTv5eHJzDvaC40k5iDCZwk9Xp7vHws6J3Y_wO0_aem_5ScT_u79zJvydJ2ysLMjYA
Author: Saikat Bhattacharya
Theoretical General Socialism Communism Xi Jinping Mao USSR China 26-February-2025 by east is rising৩৬শে জুলাই আন্দলনের শ্রেষ্ঠ পাওয়াঃ ঐতিহাসিক ন্যারেটিভ তৈরি। ১৯৪৭-এ পূর্ব পাকিস্তান-এর ও জমিদারী বিরোধী আকাঙ্ক্ষা ছিল, যুক্ত পাকিস্তানের আকাঙ্ক্ষা ছিলনা। অর্থাৎ ১৯৭১-এর বীজ ১৯৪৭-এই ছিল। তেমনই ২০২৪-এর ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার বীজ ছিল ১৯৭১ ও ১৯৪৭-এ। ৪৭-৭১-২৪ একটাই ধারা।
৩৬শে জুলাই আন্দলনের শ্রেষ্ঠ চেষ্টাঃ শেহবাগ (বাম) ও হেফাজত (ইসলামপন্থী)-দের এক জায়গায় আনা। এই চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে কারণ কোনো বস্তুবাদী তত্ত্ব দিয়ে এই ঐক্যের চেষ্টা করা হয়নি, হয়েছে সাময়িক হাসিনা বিরোধী ও ভারত বিরোধী অবস্থান ব্যবহার করে। এই চেষ্টা দুনিয়াতে কোথাও এখনো অবধি সফল নয়, কিন্তু বাংলা এগিয়ে থাকল প্রথম চেষ্টা করে, হয়তো পরে কখনো সফল হবে।
৩৬শে জুলাই আন্দলনের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতাঃ অর্থনীতি ও আন্তর্জাতিক ভূরাজনীতি সম্পর্কে কোনও ধারণা না থাকা। এর ফলে এই আন্দোলনের নেতারা সঠিক রাজনৈতিক পথ খুঁজে পায়নি এবং এদের রাজনীতি সম্পূর্ণভাবে হাস্যকর রসিকতায় পরিণত হবে। এদের আইডল হয়েছে কেজরিওয়াল, ইমরান খান ও এরদোয়ান যারা অর্থনৈতিক দিক দিয়ে ভিষণভাবে ব্যর্থ। এরদোয়ান ভূরাজনীতিতে কিছুটা সফল মূলত তুর্কির সমর শিল্পের জন্যে যা আপাতত তৈরি করা বাংলাদেশের পক্ষে অসম্ভব। কিভাবে সম্ভব করবে তা নিয়েও সমন্বায়ক-দের কোনও ধারণা নেই। নেতৃত্ব মেধার অধিকার নিয়ে আন্দোলন করে দুবার সফল হওয়ার পরেও চরম মেধার প্রাপ্য অধিকার বিরোধী বুর্জোয়া বাম অন্তর্ভুক্তি আন্দোলনে ঢুকে গেছে। নিজেদের ফ্যাসিবাদ বিরোধী বলে, অথচ স্বঘোষিত নাজিবাদী-যাওয়নবাদী ইলন মাস্ক-কে নিয়ে নাচানাচি করে। এরা এতটাই নির্বোধ। আওয়ামী যেরকম ৭১-কে খিল্লি বানিয়ে ফেলেছে ভারতের পদতলে নিয়ে গিয়ে, এই নেতৃত্ব সেরকম ২৪-কে খিল্লি বানিয়ে ফেলবে পশ্চীমের পদতলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তবে আওয়ামী ভারতের পদতলে আশ্রয় পেয়েছিল, কিন্তু এরা পশ্চীমের পদতলে আশ্রয় পাবেনা কারণ ক্ষয়িষ্ণু পশ্চীমের বাংলাদেশে কোনও পদই থাকবেনা।
প্রথমবার বাংলাদেশের মানুষ এদের ওপর বিশ্বাস রাখবে। ক্ষমতায় গিয়ে অন্তর্ভুক্তি রাজনীতির নামে নারী কোটা চালু করবে আর প্রকৃতি রক্ষা করার অঙ্গীকার করবে। এভাবে নারী স্বাধীনতার নামে জন্মহার কমিয়ে ফেলবে আর প্রকৃতি রক্ষার নামে উৎপাদন ও রাজস্বের ক্ষতি করে ফেলবে। বাংলাদেশের শক্তিশালী মজুতদার লুটেরা ওলিগারকি পুঁজিকেও আটকাতে পারবেনা। এদের ইসলামপন্থী অংশ ক্রমেই এদের বুর্জোয়া বাম প্রবণতায় অতিষ্ট হয়ে উঠবে এবং আলাদা হয়ে যাবে। এদের নেতৃত্ব চীনের সমাজতন্ত্র-কে আলাদা করে বোঝেনা আর তাই চীনের সাহায্য ঠিকঠাক নিতে পারবেনা। এরা পশ্চীম মুখাপেক্ষী হয়ে চীনের সাহায্য নিতে ব্যর্থ হবে আর ভারতের সাথে বারবার আপোষ করতে যাবে পশ্চীমের পরামর্শে। ৪-৫ বছরের মাথায় এরা মুখ থুবড়ে পড়বে। প্রথমে যদি জামাত এদের সাথে নিয়ে ক্ষমতায় যায়ও শেষ পর্যন্ত জামাত এদের সাথে থাকবেনা। ফলে পতন আরও আগে হয়ে যেতে পারে ৩ বছরের মাথতেই। কোনও নেতার দুর্নীতির অভিযোগ এলে তো আর কথাই নেই।
যদি ২০২৬-এ নতুন সরকার আসে তাহলে ২০২৯-৩১-এর মধ্যে আর একটা বড় আন্দোলন দেখবে বাংলাদেশ। ২০২৪-এর আন্দোলনকারীদের ব্যর্থতা ভারত ও আওয়ামী-দের পুনরায় ক্ষমতাইয় ফিরে আসতে উদবুদ্ধ করবে। তারা বাংলাদেশ-কে অতীতের অধ্যায় ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চাইতে পারে, তবে বিএনপি-ও এই সময় ক্ষমতায় ফিরে আসতে পারে। তবে তা এলেও ২০২৪-এর আন্দোলন অনেকটাই বৈধতা হারিয়ে ফেলবে বাংলাদেশের মানুষের চোখে।
তাই আমি বলব ২০২৪-এর আন্দোলনকারী মানুষের একটা অংশ আরেকটা বিপ্লবী প্রজন্মকে তৈরি করতে থাকুন। ২৪-এর নেতৃত্বের ঐতিহাসিক ন্যারেটিভ স্বীকার করুন, বর্তমান পৃথিবীর স্বল্প জন্মহারের সমস্যাকে মাথায় রেখে লিঙ্গ স্বাধীনতাকে ব্যখ্যা করে বাম ও ইসলাম্পন্থীদের এক মঞ্চে আনার প্রয়াস জারি রাখুন। ভূরাজনীতিতে চীনের উত্থান-কে ব্যখ্যা করুন এবং তা থেকে রাজনৈতিক অর্থনৈতিক ও সামাজিক বোধ তৈরি করুন। ২৪-এর নেতৃত্ব ২০২৯-৩১-এর মধ্যে ধ্বসে পড়ার আগেই যেন নতুন বিপ্লবী প্রজন্ম তৈরি হয়ে যায়। মনে রাখা দরকার ২৪-এর নেতৃত্ব-এর ব্যর্থতা যেমন ভারতী সাম্রাজ্যবাদ-কে ফিরে আসার সুযোগ দিতে পারে, চীনের উত্থান তেমন ভারতকে বাংলাদেশ থেকে দূরে ঠেলতে পারে। ক্ষয়িষ্ণু পশ্চীম হয় ভারতকে ২০০৯ থেকে ২০২৪-এর মতোই পেছন থেকে সমর্থন যোগাবে নয় তো ভারত-চীন দ্বন্দ্বে নিরপেক্ষ থাকবে। ট্রাম্প যদি চীনের সঙ্গে বিশ্ব প্রভাব ভাগাভাগি করতে রাজি থাকে তবে অবশ্যই ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদ-কে ২০২৯-৩১-এ রোখা অপেক্ষাকৃত সহজ হবে। আর যদি ট্রাম্প চীনের সঙ্গে দ্বন্দ্ব বাড়িয়ে দেয় তাহলে ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদকে রোখা কঠিন হবে ওই সময়ে। লেনিন রুশ বিপ্লব সফল করতে শুধু জার- জার্মান দ্বন্দ্বই কাজে লাগায়নি, তিনি খুব চমৎকারভাবে এংলো স্যাক্সন পুঁজিপতিদের একটা অংশকেও লোভ দেখিয়ে নিজের দিকে নিয়ে এনেছিলেন। এই পুঁজিপতিদের অংশটা বহুদিন অবধি মনে করেছিল লেনিন বিপ্লব ছড়িয়ে দেওয়ার নামে জার্মানির সাথে যুদ্ধ জারি রাখবে। ২০২৫ সালে পশ্চীমের যেই অংশটা চীনের সঙ্গে দ্বন্দ্ব চায় তারা ভারতের বন্ধু আর যারা চীনের সঙ্গে সহাবস্থান চায় তারা বাংলার বন্ধু। সমস্ত বন্ধুদের ছলে বলে কৌশলে যুদ্ধে সাথে পাওয়াই হবে লক্ষ্য।
বাংলাদেশের বিপ্লব বিংশ বা অষ্টাদশ শতকের বিপ্লব নয়, একবিংশ শতকের বিপ্লব। তা মার্কিন বা রুশ বিপ্লব নয় অথবা ফরাসী বা চীন বিপ্লব নয়, তা বাংলার বিপ্লব। এখন অষ্টাদশ বা উনবিংশ শতকের বুর্জোয়ারাও নেই, রুশ বা চীনের বিপ্লবের সংগঠিত শ্রমিক বা কৃষকও নেই। মার্কিন ফরাসী বিপ্লব যদি প্রথম প্রজন্মের বিপ্লব হয়, রুশ চীন তবে দ্বিতীয় প্রজন্মের বিপ্লব। আর বাংলা হবে তৃতীয় প্রজন্মের বিপ্লব। প্যারিস কমিউন যেমন প্রথম আর দ্বিতীয় প্রজন্মের বিপ্লবের মধ্যেকার যোগসূত্র, ইরান বিপ্লব হয়তো দ্বিতীয় আর তৃতীয় প্রজন্মের মধ্যেকার যোগসূত্র। ইতিহাসকে মিমিক্রি করে বিপ্লব হয়না, বিপ্লব মানেই ইতিহাসকে নতুনভাবে দেখা ও পর্যালোচনা করা।
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Theoretical General 21-February-2025 by east is risingসমাজতন্ত্র এখন সকল শিল্প উৎপাদনের ক্ষেত্রে তার শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করেছে, যেমন- অবকাঠামো নির্মাণ, ভারী অবকাঠামোগত শিল্প, গবেষণা ও উন্নয়ন, হালকা ভোগ্যপণ্য শিল্প এবং উদ্ভাবনী শিল্প।
সোভিয়েত ইউনিয়ন অবকাঠামো নির্মাণ, ভারী অবকাঠামোগত শিল্প এবং গবেষণা ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে সমাজতন্ত্রের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করেছিল। ১৯৩০-এর দশক থেকে ১৯৬০-এর দশক পর্যন্ত সোভিয়েত ইউনিয়নের বৃদ্ধির হার রেকর্ড সর্বোচ্চ ছিল। এটি প্রধানত কারণ সোভিয়েত ইউনিয়ন উল্লিখিত শিল্পগুলি গড়ে তুলতে অত্যন্ত সফল হয়েছিল। কিন্তু সোভিয়েত ইউনিয়ন হালকা ভোগ্যপণ্য শিল্প এবং উদ্ভাবনী শিল্পে ব্যর্থ হয়েছিল। এটি মূলত কারণ অবকাঠামো, ভারী পুঁজি পণ্য শিল্প এবং গবেষণা ও উন্নয়ন দীর্ঘ সময় ধরে লাভের উদ্দেশ্য ছাড়াই বিনিয়োগ করা হলে সবচেয়ে ভাল কাজ করে। কিন্তু হালকা ভোগ্যপণ্য শিল্পে লাভ ব্যবহার মূল্যের প্রধান সূচক হিসাবে কাজ করে। যদি একটি ভোগ্যপণ্য লাভজনক হয়, তবে আমরা বলতে পারি যে ভোক্তারা এটিতে ভাল ব্যবহার মূল্য খুঁজে পেয়েছেন। কিন্তু যদি এটি লাভজনক না হয়, তবে আমরা বলতে পারি যে ভোক্তারা এটিতে কম ব্যবহার মূল্য খুঁজে পেয়েছেন। যদি ব্যবহার মূল্য বেশি হয়, চাহিদা বেশি হবে যা দাম বাড়াবে। তাই দাম নিয়ন্ত্রণ করতে সরবরাহকারীদের মধ্যে প্রতিযোগিতা থাকা আবশ্যক। তাই হালকা ভোগ্যপণ্য শিল্পের জন্য লাভের মানদণ্ড, বাজার ভিত্তিক মূল্য নির্ধারণ এবং প্রতিযোগিতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। অবকাঠামো এবং ভারী পুঁজি পণ্য ও অবকাঠামোগত শিল্পগুলি উচ্চ অর্থনৈতিক মাপনী নিয়ে কাজ করে এবং সাধারণত হালকা ভোগ্যপণ্য ও পরিষেবা এবং শ্রমিকের দক্ষতা বৃদ্ধি করে অর্থনীতিকে পরোক্ষভাবে সাহায্য করে। তাই দীর্ঘ সময় ধরে অলাভজনক বিনিয়োগের সাথে এক বা কয়েকটি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন উদ্যোগ সবচেয়ে ভাল কাজ করে।
সোভিয়েত ইউনিয়ন যদিও গবেষণা ও উন্নয়নে শীর্ষস্থানীয় ছিল, কিন্তু কোন উদ্ভাবন তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছিল। এটি আংশিকভাবে এর ছোট অভ্যন্তরীণ বাজারের কারণে। এবং এটিও সত্য যে শীর্ষস্থানীয় উদ্ভাবন তখনই করা যায় যখন অনেক কোম্পানিকে অর্থায়ন করা হয়। মূলধন বাজারে ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্টরা উদ্ভাবনে অর্থায়ন করে এই আশায় যে ৯৯% উদ্ভাবনমূলক বিনিয়োগ ব্যর্থ হলেও ১% সাফল্যের গল্পগুলি ৯৯% ব্যর্থ উদ্ভাবনী অর্থায়নের ক্ষতি পুষিয়ে দেবে। সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঞ্চার ফান্ডিংয়ের এমন কোন মডেল তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছিল।
সোভিয়েত ইউনিয়নের উপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা পরবর্তীটিকে পশ্চিমের সেরা উদ্ভাবনী প্রযুক্তিতে প্রবেশাধিকার থেকে আরও দুর্বল করে দেয়, যা এর উদ্ভাবন ক্ষমতাকে আরও ক্ষতিগ্রস্ত করে। যদিও সোভিয়েত ইউনিয়ন সর্বাধিক সংখ্যক পেটেন্ট তৈরি করছিল, এটি সেই পেটেন্টগুলি ব্যবহার করে ভৌত পণ্য উৎপাদনে ব্যর্থ হচ্ছিল। ১৯৭৪ সালের ডিটেন্টের পর, সোভিয়েত ইউনিয়ন পশ্চিমের কাছে পেটেন্ট বিক্রি শুরু করে উচ্চ প্রযুক্তির পুঁজি পণ্যের বিনিময়ে, যা প্রায়শই সোভিয়েত ইউনিয়নের পেটেন্ট ব্যবহার করে তৈরি করা হত। সোভিয়েত ইউনিয়ন একই পেটেন্ট ব্যবহার করে পশ্চিম দ্বারা তৈরি উচ্চ প্রযুক্তির পুঁজি পণ্যের দামের ভগ্নাংশে পেটেন্ট বিক্রি করছিল। তদুপরি, পেটেন্ট বিক্রি সোভিয়েত ইউনিয়নের গবেষণা ও উন্নয়নে প্রান্তিকতা ক্ষয় করতে শুরু করে কারণ পশ্চিম সোভিয়েত ইউনিয়নের পেটেন্ট কিনে সেগুলিতে অতিরিক্ত স্তর যোগ করে অনুরূপ বা উচ্চতর মানের পেটেন্ট তৈরি করতে পারে। এটি ১৯৭৪ সালের ডিটেন্ট ভেঙে ১৯৭৯ সালে আফগানিস্তান আক্রমণ করার অন্যতম কারণ।
চীন শুধুমাত্র হালকা ভোগ্যপণ্য শিল্পে লাভের মানদণ্ড, বাজার ভিত্তিক মূল্য নির্ধারণ এবং প্রতিযোগিতা সফলভাবে প্রয়োগ করেনি, তবে অলিগোপলি বা একচেটিয়া কারবারের বৃদ্ধি না ঘটিয়ে প্রতিযোগিতার বিষয়টিকে তীক্ষ্ণ করেছে। এইভাবে চীন স্মার্টফোন, ইভি ইত্যাদি বাজারে অনেক কোম্পানি রয়েছে, যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য পুঁজিবাদী দেশগুলিতে একটি রয়েছে। একইভাবে, চীনের রাষ্ট্রীয় নির্দেশিত ভেঞ্চার ফান্ডিং রয়েছে যেখানে নতুন উদ্ভাবনী কোম্পানিগুলিকে অলাভজনক লক্ষ্য এবং রাষ্ট্রীয় নির্দেশিত উদ্দেশ্য পূরণের শর্তে অর্থায়ন করা হয়। আসলে চীনা সরকার মেড ইন চায়না ২০২৫ শুরু করেছিল যখন তারা দেখেছিল যে মূলধন বাজার ভিত্তিক লাভ-সন্ধানী উদ্ভাবনী অর্থায়ন চীনকে উচ্চ প্রযুক্তি উদ্ভাবনের দিকে নিয়ে যাচ্ছে না। তাই চীনা সরকার উচ্চ প্রযুক্তি উদ্ভাবনের জন্য অলাভজনক লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য দেওয়া শুরু করে। তাই মেড ইন চায়না ২০২৫ মূলত উদ্ভাবনের জন্য রাষ্ট্রীয় নির্দেশিত অলাভজনক বিনিয়োগ সম্পর্কে। এর সাফল্য এখন স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান। বিশ্ব দেখেছে চীন থেকে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মিলিওনেয়ার চলে যাচ্ছে এবং চীনা বিলিওনেয়ারদের সম্পদের মূল্য ভেঙে পড়ছে। তবুও চীনের উদ্ভাবনের কোন তুলনা নেই। নিশ্চিতভাবে ধনী পুঁজিপতিরা আর উদ্ভাবনের সুস্পষ্ট কারণ নয়।
চীন অবকাঠামো, ভারী অবকাঠামোগত শিল্প এবং গবেষণা ও উন্নয়নে সোভিয়েত মডেল সংরক্ষণ করেছে। তদুপরি, চীন হালকা ভোগ্যপণ্য শিল্পের পশ্চিমা মডেল গ্রহণ করার পরে প্রতিযোগিতার বিষয়টিকে তীক্ষ্ণ করেছে। চীন রাষ্ট্রীয় নির্দেশিত অলাভজনক বিনিয়োগ নেতৃত্বাধীন উদ্ভাবনী মডেলেরও অগ্রদূত হয়েছে। এইভাবে চীন অলিগোপলি (বা আরও জনপ্রিয়ভাবে একচেটিয়া কারবার বলা হয়) পুঁজিবাদের উপর সমাজতন্ত্রের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করেছে।
সমাজতান্ত্রিক পর্যায় মূলত সাধারণ শ্রমজীবী মানুষের স্বার্থের আগে পুঁজির স্বার্থকে নিয়ন্ত্রণে রাখার বিষয়ে। চীন এটি করতে সবচেয়ে সফল।
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Theoretical General 15-February-2025 by east is risingSocialism has now proven its superiority in all industrial production fronts i.e, infrastructure building, heavy infrastructural industries, Research & Development, Light Consumer Industries, Innovative Industries.
USSR proved socialism's superiority in infrastructure building, heavy infrastructural industries and Research & Development. USSR growth rate was record highest from 1930s to 1960s. This is mainly because USSR was tremendously successful in building the above mentioned industries. But USSR failed miserably in Light Consumer Industries and Innovative Industries. This is primarily because infrastructure, Heavy Capital Goods Industries and Research & Development work best when invested without profit motive over a long gestation period. But in Light Consumer Goods Industries profit work as the prime indicator of use value. If a consumer good is profitable then we can say that consumers have found good use value in it. But if it is not profitable we can say that consumers have found little use value in it. If use value is high, demand will be high which will raise prices. So to check prices competitive must be there among suppliers. So profit criteria, market based pricing and competition become most important for Light Consumer Goods Industries. Infrastructure and Heavy Capital Goods & Infrastructural Industries operate with high economies of scale and usually helps economy indirectly by boosting Light Consumer Goods & Services and efficiency of laborer. So one or few state owned enterprises with non profitable investment over long gestation work best.
USSR though was number one in Research & Development failed to create any
Innovation. This is partly due to it's small domestic market. And also due to the fact that topmost innovation can be done when many companies are financed. In capital market venture capitalists finance innovations in the hope that even if 99% innovative investments failed the 1% success stories will generate enough profit that will cover loss of 99% failed makung innovation financing. USSR failed to generate any such model of venture funding.
Western sanctions on USSR further weakened the latter's access to best innovative technologies of West which further crippled its innovation capacity. Though USSR was generating largest number of patents it was failing to produce physical goods using those patents. After 1974 detente, USSR started selling patents to West in exchange for high tech capital goods often produced by using USSR patents. USSR was selling patent at fraction of the price of high tech capital goods created by West using same USSR patents. Moreover, sale of patents started eroding USSR edge in Research & Development as by buying USSR patents West could generate similar or higher value patents by adding extra sheds on them. This is one of the reasons USSR broke detente of 1974 by invading Afghanistan in 1979.
China has not only successfully adapted profit criteria, market based pricing and competition in Light Consumer Industries but has also sharpened the competition factor by not allowing growth of oligopoly or monopoly. Thus China has many companies in smartphone, EV etc. markets while USA and other capitalist countries have one. Similarly, China has state directed venture funding where new innovative companies are financed on the condition of non profit goals and state directed objectives to fulfill. In fact Chinese government started Made In China 2025 after they found capital market based profit seeking innovation financing is not leading China towards high tech innovation. So Chinese government started giving non profit goals and objectives to innovate high tech. So Made In China 2025 is mainly about state directed non profitable investment for innovation. Its success is now clearly visible. World has seen most number of millionaires leaving China and crumbling asset value of Chinese billionaires. Yet Chinese innovation has no match. Surely rich capitalists are no longer obvious factor for innovation.
China has preserved USSR model in infrastructure, heavy infrastructural industries and R&D. Moreover, China has sharpened the factor of competition after adapting the Western model of Light Consumer Industries. China has pioneered state directed non profit investment led innovation model too. This is how China has proved the superiority of Socialism over Oligopoly (or more popularly called Monopoly) Capitalism.
Socialist stage is mainly about keeping capital's interest subdued before the interest of common working people. China is most successful in doing it.
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Theoretical General 15-February-2025 by east is risingইউএসএইডের কার্যক্রম বন্ধ করার প্রধান কারিগর হলেন ইলন মাস্ক। ট্রাম প্রশাসন জনপ্রশাসনে জবাবদিহিতা আনার লক্ষ্যে ডিপার্টমেন্ট অব গভার্নেন্স এফিশিয়েন্সি নামে একটা নতুন বিভাগ খুলেছে এবং মাস্ক হলেন সেই বিভাগের প্রধান।
ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারে প্রায় তিনশ মিলিয়ন ডলার ব্যায় করা মাস্কের হাতে এখন অসীম ক্ষমতা। তিনি ইচ্ছামত মানুষের চাকরী খাচ্ছেন এবং খেয়ালখুশীমত সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প বন্ধ করে দিচ্ছেন। এই কাজ করতে গিয়ে তিনি এখন যুক্তরাষ্ট্রের পুরো ট্রেজারী বিভাগের নিয়ন্ত্রন নিজের হাতে নিতে চাইছেন। বিষয়টি নিয়ে মার্কিন সমাজে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়েছে।
পশ্চিমা ফার রাইটদের পোস্টার বয় ট্রাম্পের পছন্দের এই মানুষটি সম্প্রতি জার্মানির ফার রাইট রাজনৈতিক দল এএফডি এর নির্বাচনী প্রচারের উদ্বোধনী সভায় ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখেন। সেখানে তিনি অতীতের গ্লানি আকড়ে ধরে থাকার কোন প্রয়োজন নেই বলে জার্মানদের পরামর্শ দেন।
সিনেটর বার্নি স্যাণ্ডার্সসহ অনেকেই একথা স্পস্ট করে বলছেন যে যুক্তরাষ্ট্র নিশ্চিতভাবেই একটি ডেমোক্রোসি থেকে অথরিটেরিয়ান অলিগার্কির মধ্যে প্রবেশ করতে যাচ্ছে। প্রথমে বাংলাদেশ এবং তারপর ভারতে গনতন্ত্র থেকে স্বৈরতন্ত্রে রূপান্তরের এই পর্বটি আমরা যেহেতু দেখেছি সেহেতু এক্ষেত্রে দ্বিমত করা কঠিন। এস আলম আদানির স্থলে ইলন মাস্ক, পুঁজির আকারে কেবল তফাত হতে পারে, প্রক্রিয়া একই।
গনতন্ত্র থেকে ফ্যাসিবাদী স্বৈরতন্ত্রে রূপান্তরের জন্য একটি সমাজে যা যা প্রয়োজন, অর্থাৎ উগ্র জাতীয়তাবাদ, কল্পিত শত্রু এবং সাংস্কৃতিক বিভেদ, তার সবই যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি ও সমাজে এখন বিরাজমান। সেইসাথে বাংলাদেশে বিএনপি এবং ভারতে কংগ্রেসের মত একটা অকর্মণ্য বিরোধী দল হিসেবে ডেমোক্রেটিক পার্টিকে কল্পনা করলে বিষয়টা পুরোপুরি খাপে খাপে মিলে যাবে।
এটা বলা অত্যুক্তি হবে না যে বাংলাদেশে যে লড়াই গত পনের বছর যাবৎ চলছে সেই একই লড়াইয়ের ক্ষেত্র আটলান্টিকের অপর প্রান্তেও তৈরী হতে শুরু করেছে। আসলে মানুষের মুক্তি আর অধিকারের লড়াই একটা অনন্ত যুদ্ধ, যার দেশ কালের ভেদ নেই।
-- Murshed Shalin
Author: Saikat Bhattacharya
Theoretical General 07-February-2025 by east is risingFeminism has increased state revenue and capitalist profits.
*How has it done so?*
By entering the labor market, women have increased production, reduced the bargaining power of male workers, and created new markets. Additionally, the entry of women into the labor force has rapidly reduced birth rates in third-world countries, increasing per capita resources (such as infrastructure, banking services, digital services, education, healthcare, and machinery). This has made each individual more productive. Thus, women entering the labor market have not only boosted production but also increased productivity in the third world by lowering birth rates.
As a result, both the state and capital have supported feminism.
However, by 2020, the situation began to change. Low birth rates in the first world are reducing the population, leading to a decline in both the labor force and market size. In the first world, per capita resources have grown so much that there are not enough people to utilize them effectively (for example, schools in Germany are struggling to find students). In other words, the population is too small relative to resources, making it difficult to utilize them properly. In the third world, however, there is still a lack of sufficient infrastructure and machinery, so low birth rates will continue to increase per capita resources and productivity for now. Moreover, birth rates in the third world began to decline later, so it will take another 20-30 years for labor shortages or market contraction to become significant issues.
In the first world, however, low birth rates are actually reducing both state revenue and capitalist profits. Therefore, in the coming years, the state and capital in the first world (i.e., the United States, Europe, Japan, Russia, China, Korea, Singapore, and Malaysia) will adopt anti-feminist positions. In the third world, it will take another 20-30 years for such anti-feminist stances to emerge.
The men's rights movement must strategically accelerate this low birth rate crisis. Over the next 20 years, it must cultivate an anti-marriage/anti-romance mindset among men, encouraging them to enjoy solitary lives and spend on themselves. If executed properly, this could lead to an anti-feminist storm by 2040-2050. If robots or artificial wombs do not solve the low birth rate problem, women may lose many of their hard-earned rights and freedoms. Therefore, wise women should be cautious. The state and capital will exploit men and appease women only as long as it is profitable. When the tide turns, they will change their stance accordingly. Wise women should reject feminist privileges and acknowledge men's legitimate demands. It is time to move away from flawed, anti-male feminist theories and scientifically understand how fluctuations in birth rates influence the duties of women and men.
The men's rights movement is increasingly dividing into two factions: one group is looking toward the future, and the other is looking toward the past. The futurists are saying: "We do not want traditional rights back, but we will also no longer fulfill traditional duties." The traditionalists are saying: "We are fulfilling and will continue to fulfill traditional duties, and we also want our rights back."
In fact, since the primitive societal system (hunter-gatherer economy), women's lives have been considered more valuable than men's. This notion persisted even in patriarchal societies (livestock and agriculture-centered economies). Therefore, risky tasks such as war, hunting, etc., were placed on men's shoulders. Epidemics, animal attacks, insect bites, food poisoning, weather, environment, war, etc., caused many deaths in earlier societies. Thus, maintaining a high birth rate was crucial. Societies with a higher number of women had higher birth rates. Hence, traditional societies taught the importance of valuing women's lives more.
But traditional societies (hunter-gatherer, livestock, and agriculture-centered economies) not only assigned risky tasks to men but also granted them greater rights. In hunter-gatherer societies, men's sexual rights were acknowledged. In livestock and agriculture-centered economies, people became productive at a much younger age compared to hunter-gatherer economies, making higher birth rates even more advantageous. Naturally, women's responsibilities for childbirth and child-rearing increased, while the remaining external tasks fell to men. This system persisted because it enabled societies to maintain high birth rates.
By the late 19th century, about 100 years after the Industrial Revolution, the situation began to change. On one hand, the invention of life-saving medicines reduced death rates from epidemics, famines, and floods. On the other hand, the cost of raising children in industrialized societies increased significantly. Sending children to schools and colleges to make them economically productive required considerable time and resources, delaying their ability to earn until much later in life. These two factors forced societies to reduce birth rates, as having more children became a burden.
With fewer children to raise, women found themselves with more free time, leading them to enter the labor market. With fewer children to bear, women could pursue education and delay marriage. As industrialization spread globally, this trend grew. Governments realized that encouraging women to join the labor force not only reduced birth rates but also accelerated industrial growth. Consequently, governments made efforts to bring more women into the workforce. As a result, women became earners, no longer bound to obey their husbands. Governments also enacted laws to strip men of their traditional rights, ultimately making the institution of marriage unprofitable for men.
It is important to remember that the foundation of the feminist movement lies in the fact that maintaining high birth rates became unprofitable in industrialized societies. This was due to two reasons: the rising cost of raising children and the invention of life-saving medicines. When traditionalist men's rights advocates demand the return of traditional rights, they are essentially advocating for high birth rates, thereby implicitly accepting that women's lives are more valuable than men's. However, since they cannot reverse the course of economics and technology, they will not be able to restore a high-birth-rate society. They will only be left to fulfill traditional duties, while men remain trapped in the confines of domestic life.
On the other hand, futurists acknowledge the trajectory of economics and technology and use the very foundation of feminism—that high birth rates are unprofitable in industrialized societies—to argue that women's lives no longer need to be valued more than men's, as high birth rates are no longer necessary. Men, therefore, will no longer fulfill traditional duties. In essence, futurist men's rights advocates are using feminism's own weapon against it. Freed from the burdens of traditional masculinity, men can now easily say, "Men can also be victims of rape by female perpetrators," "Men can also be abused by women," "Men are not solely responsible for protecting the nation, religion, or race," "Men are not obligated to protect women," "Men can also be consumers," "Men can spend time in front of the mirror," and "If they so desire, yes, if they so desire, men can take any risk.
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Theoretical General world order 05-February-2025 by east is risingসমাজতান্ত্রিক চীনে রাষ্ট্র একটা এআই কম্পানী ডিপসিক-কে ধরা যাক ১ লাখ টাকা দিল এবং নতুন এআই প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে বলল। ডিপ্সিকপ ১ লাখ টাকার মধ্যে ২০ হাজার টাকা দিয়ে অফিস ভাড়া নিল আর বাকি ৮০ হাজার টাকা খরচ করে নতুন এ আই প্রযুক্তি উদ্ভানবন করল।
পুঁজিবাদী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একটা এআই কম্পানী ওপেন-এআই শেয়ার বাজার থেকে ১ কোটি টাকা তুলল এবং ৫০ লাখ টাকা দিয়ে অফিস কিনল আর মাসে ১ লাখ টাকা দিয়ে ২০ টা সুন্দরী মেয়ে কর্মী রাখল, উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা নিজেরদের মাইনে নির্ধারণ করল ২০ লাখ টাকা, প্রচুর অতিরক্ত মেশিন কিনল ৯ লাখ ২০ হাজার টাকায়। মেশিন ব্যবহার করে, সুন্দরী নিয়ে ভ্যাকেশনে গিয়ে, বিলাসবহুল পার্টি করে শেষে বাকি ৮০ হাজার টাকায় কাজটা শেষ করল।
এখানে মূল সমস্যা হল পুঁজিবাদী উদ্ভাবনী পণ্য অর্থায়নে। প্রথমেই শেয়ার/ পুঁজির বাজার থেকে অতিরিক্ত অর্থ তোলা হচ্ছে, আর তার খুব সামান্য অংশ দিয়ে মূল কাজ করা হচ্ছে। অধিকাংশ অর্থ যাচ্ছে এমন সমস্ত বিষয়ে যা না করলেও মূল কাজের কোনও ক্ষতি হতনা। এই সমস্যা এতদিন বোঝা যায়নি কারণ উদ্ভাবনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোনও প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলনা। ফলে পুঁজির বাজার থেকে অতিরিক্ত পুঁজি তুলে তা খরচ করে মূল পণ্যের উৎপাদন খরচ অনেক বাড়িয়ে তোলা হত। তার থেকেও অনেক বেশি দামে মুনাফা যুক্ত করে পণ্য ভোক্তার কাছে আনা হত।
২০০৮ সালের মার্কিন শেয়ার বাজারের পতনের পরে যখন মন্দা শুরু হয়, মার্কিন সমাজ এই ফাটকা পুঁজিবাদের বিরোধিতা শুরু করে, তখন ফাটকা পুঁজিবাদী অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা বলেন যে পুঁজির বাজারে ফাটকাবাজি (সম্পত্তি হস্তান্তরের ব্যবসা) বেড়েছে, এর ফলে সম্পত্তির দাম এমন জায়গায় পৌঁছচ্ছে যে মূল দামকে তা ছাপিয়ে যাচ্ছে আর তাই বাব্বল তৈরি হচ্ছে এবং বাব্বল ফেটে গেলে মন্দা আসছে। কিন্তু এই প্রক্রিয়াতেই উদ্ভাবনী পণ্য-কে সবচেয়ে ভালোভাবে অর্থায়ন করা সম্ভব। কারণ যত পণ্য উদ্ভাবন করার চেষ্টা হবে তার ১% বাজারে সফল হবে আর কোনটা সফল হবে তা আগে থেকে জানার উপায় নেই আর তাই উদ্ভাবনে অর্থায়ন করা আসলে ফাটকাবাজীই। অতএব পুঁজির বাজার থেকেই ফাটকাবাজী করে উদ্ভাবনী পণ্য-কে অর্থায়ন করে যেতে হবে। নতুন উদ্ভাবনী পণ্য আনতে গেলে পুঁজির বাজারে ফাটকাবাজীকে প্রশ্রয় দিতেই হবে।
ডিপসিক ওপেন-এআই-এর থেকেও ভাল পণ্য উদ্ভাবন করে ফেলল এক-তিরিশাংশ বিনিয়োগ খরচে। আর এখানেই প্রশ্ন আসছে মার্কিন পুঁজির বাজার এআই-এর মতো উদ্ভাবনী পণ্যের মূল্য তিরিশ গুণ বাড়িয়ে ফেলছে কেন? আসলে পুঁজির বাজার থেকে পুঁজি তুলে উদ্ভাবনী পণ্যকে অর্থায়ন করার সমস্যা হল মূল লক্ষ্য পণ্য উদ্ভাবন থাকেনা, মূল লক্ষ্য হয়ে যায় নতুন পণ্যের গল্প পুঁজির বাজারে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়ে হাইপ তৈরি করায় যাতে বিনিয়োগকারীরা সবাই সেই পণ্য উদ্ভাবক কম্পানীর শেয়ার হামলে পড়ে কেনে এবং সেই কম্পানীর শেয়ার মূল্য বাড়িয়ে দেয়। শেয়ার মূল্য যত বাড়বে তত বেশি বিনিয়োগ করার মতো পুঁজি পাবে কম্পানী আত সেই বিনিয়োগের উধিকাংশই যাবে নিজেদের আয়, প্রতিপত্তি ও ক্ষমতা বৃদ্ধিতে আর সামান্যই যাবে মূল পণ্য উদ্ভাবনে।
এই সমস্যা প্রথম থেকেই ছিল কিন্তু ২০০৮ সালের মন্দার পরে দেখা যাচ্ছে নতুন উদ্ভাবিত পণ্য ও পরিষেবা খাতেই ফাটকাবাজী বেশি হচ্ছে। এর ফলে উদ্ভাবন ত্বরান্বিত হয়েছে বটে কিন্তু উদ্ভাবনের উৎপাদন খরচ আর তাই ভোক্তার কাছে ধার্য মূল্য যা হওয়া উচিত তার থেকে ১০০ থেকে ৫০০ গুণ বেশি দেখাচ্ছে। মার্কিন পুঁজির বাজারের কোনও প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকাতেই এই সমস্যা তৈরি হয়েছে। ১৯৭৪ সালে সোভিয়েত ও মার্কিন সরকার নিজেদের মধ্যে পেটেন্ট আদান-প্রদানের একটা চুক্তি করে। ১৯৮৫ সালে এসে দেখা যায় সোভিয়েত ইউনিয়ন রাষ্ট্রকে দিয়ে গবেষণা ও পেটেন্ট তৈরিতে প্রথম হওয়া সত্তেও পেটেন্ট ব্যবহার করে পণ্য উদ্ভাবন করায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অনেক এগিয়ে। অর্থাৎ সোভিয়েত পেটেন্ট কিনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অনেক পণ্য উদ্ভাবন করে ফেলেছে কিন্তু সোভিয়েত মার্কিন পেটেন্ট কিনে কোনও পণ্য উদ্ভাবন করতে পারেনি। গরবাচভ সোভিয়েতে পুঁজির বাজার তৈরি করতে বলেছিল মূলত এই গবেষণায় এগিয়ে থাকা সত্তেও পণ্য উদ্ভাবনে সোভিয়েত পিছিয়ে পড়েছে বলে। অর্থাৎ এই কথা এক অর্থে তখনই প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায় যে রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগে গবেষণা বেসরকারী বিনিয়োগের থেকে ভালো হয় বটে কিন্তু সেই গবেষণার ফল ব্যবহার করে নতুন পণ্য উদ্ভাবন করতে গেলে পুঁজির বাজারের কোনও বিকল্প নেই।
কিন্তু ডিপসিক-এর বিজয় প্রমাণ করে দিল রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগেও পণ্য উদ্ভাবন সম্ভব এবং তা এক-তিরিশাংশ কম খরচে সম্ভব। পুঁজির বাজার ফাটকাবাজী ও সম্পত্তির দামের বাব্বল তৈরির পাশাপাশি উদ্ভাবনী পণ্যের উৎপাদন খরচও বাড়িয়ে দেয়। সোভিয়েত উদ্ভাবনে ব্যর্থ হয় কারণ সোভিয়েত-এর পণ্যের বাজার ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারের তুলনায় ক্ষুদ্র। চীনের রিটেইল মার্কেট বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রিটেইল মার্কেটের চেয়েও বড়। আর সোভিয়েত সরকার সরাসরি রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ করত সমস্ত ক্ষেত্রে। চীন সরকার রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ পরিকাঠামো ক্ষেত্রে সরাসরি করে, পণ্য গবেষণা ও উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে উদ্যোগীদের হাতে রাষ্ট্র অর্থ দেয় খরচ করার জন্যে। পরিকাঠামো, গবেষণা ও উদ্ভাবন মুনাফার জন্য বিনিয়োগ করার জায়গা নয় চীনে। একমাত্র ভোগ্য পণ্যের ক্ষেত্র হল মুনাফার জন্য।
২০১৫ সালে যখন চীনের পুঁজির বাজারে ধ্বস নামে তখন প্রথম চীন সরকার পুঁজির বাজারের পর্যালোচনা করে। চীন দেখে যে আলিবাবা, টেনশেন্ট, বাইডু, ইত্যাদি বেসরকারী প্রযুক্তি কেন্দ্রিক কম্পানীগুলো মুনাফা কেন্দ্রীক হওয়ায় কোনও কঠিন উদ্ভাবন করছেনা। মুনাফা আসার সম্ভাবনা বেশি এমন উদ্ভাবনের বাইরে চিন্তা করছেনা। কিন্তু চীন-কে যদি সরবোচ্চ প্রযুক্তির স্তরে যেতে হয় তাহলে অনেক বেশি ঝুঁকি সম্পন্ন উদ্ভাবনে বিনিয়োগ করতে হবে। এই জন্যেই আসে "মেড ইন চায়না ২০২৫"। চীন ঠিক করে রাষ্ট্র বিনিয়গের অর্থ বিভিন্ন উদ্যোগী প্রতিষ্ঠানের হাতে তুলে দেবে এবং তাদের লক্ষ্য হবে সরকার নির্ধারিত সরবোচ্চ প্রযুক্তির লক্ষ্যে পৌঁছানো, মুনাফা করা নয়। ট্রাম্প ২০১৭ সালে চীনের বিরুদ্ধে প্রযুক্তি যুদ্ধ শুরু করলে এই প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হয়। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবারগ জানাচ্ছে যে ২০২৪-এর শেষে চীন তার "মেড ইন চায়না ২০২৫"-এর লক্ষ্যের ৯০%ই সম্পন্ন করে ফেলেছে। ডিপসিক-এর উত্থান আসলে চীনের রাষ্ট্রীয় অর্থায়নে উদ্ভাবনের মডেল-এর জয়। আর তা মার্কিন পুঁজির বাজার মারফৎ উদ্ভাবনের মডেলকে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিল।
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Theoretical General USA vs China 27-January-2025 by east is risingWe will explain here some concepts of Marx like capital, capitalist society and over production crisis. Then we will look at the critics against those concepts and counter arguments to those critics too.
Marx proposed that capitalist class and its profit maximizing motivation control the capitalist society. Capital is defined as money used with the intention of making more money (whether the intention is realized or not does not matter). And when capital controls a society the society is called capitalist society.
(Capitalists can gain profits from looting, trading and producing. In case of production capital, the capitalists buy labour power from the workers at fixed wages and make them work with machines owned by themselves. The final products are owned by the capitalists who then sell them at maximum possible profit. In this article we will not deal with surplus value appropriation or theory of exploitation. We will deal it in a separate article in part-3. We will concentrate mainly on the theory of Over Production Crisis.)
Critic: In a society where production is done for maximizing profit, capitalist class may not have full control. This is because there are other important elements in any capitalist state e.g. military, bureaucracy, judiciary, different interest groups of a society like workers, farmers, petty traders & producers (those who trade or produce for fulfilling needs), women, men, other genders, religious/ racial/ national institutions, etc. They will bargain for more money and power too. Capitalists cannot control the society as the mentioned social elements will compete against capitalists' complete control.
Counter to Critic: Profits of capitalists are the ultimate source of income of a capitalist society. So capitalist class will ultimately prevail over other social elements. Military, bureaucracy, judiciary have their income from state revenue and profits of capitalists are main source of state revenue. So these three powerful social elements cannot prevail over capital.
Power of genders vary with capital's requirement of production and reproduction. Religious/ racial/ national institutions are important in determining the power of genders, military, bureaucracy and judiciary. We will see later how capitalists' interests, interests of genders and religious/ racial/ national institutions can contradict each other. This is the least touched portion of Marx. We will explain it in details later in part-2.
But first let us explain how capitalists prevail over farmers, petty traders & producers and workers who earn independently.
Capitalists socialize production within market and within workplace.
Let us explain socialization of production within market. Before capitalists emerged, all individuals used to farm fields and make clothes simultaneously. But capitalists tend to socialize production within market when one individual began to concentrate in farming land and another individual concentrate in making clothes. Then the two individuals traded in the market. Both gain from this trade if one can do one job better than the other (absolute advantage) and even if one does both jobs better, the trade will benefit both as cost of production of the other individual will be less (comparative advantage).
Similarly, capitalists also socialize production within workplace. It means several factories making same product tend to merge together for reducing per unit cost of production. Socialization of production within workplace results in concentration of capital. Thus few big capitalists out compete numerous small capitalists in every sector of production. Socialization of workplace continue by forward and backward linkages as well.
(We will deal with socialization of production separately in part-4.)
So we can say that socialization of production within market convert need based life into money driven life as trade is beneficial and essential for daily necessities while socialization of production within workplace force numerous small capitalists, farmers, petty traders and producers out of business and become force them to become workers.
Big capitalists use higher wages to attract workers from small capitalists, petty traders and producers. Thus as capital concentration grow, wages of workers tend to grow as well. So capitalists use automation in the production process to reduce demand for workers. As demand for workers fall, real wages (wages net of inflation) tend to fall as well.
So socialization production tend to increase the supply of workers while automation tend to reduce the demand for workers. As a result real wages will fail to grow at the rate of growth of real profit. So few big capitalists will earn a lot of profits while the majority of society i.e. workers will not earn as much. Since profits are money only to be used for making more money by capitalists, we can say that rise in profits mean rise in supply capacity of the society. Similarly, workers use wages mostly for consumption and so less growth of wages mean less rise in demand capacity of the society. This leads to supply greater than demand. We call it over production crisis or over supply crisis. Since huge amount of supply of products cannot be sold profitably, capitalists reduce the production resulting in more outlay of workers and hence even lower real wages and hence even lower demand. The cycle continues and it ultimately results in massive unemployment among workers with low real wages and capitalists end up with huge money nowhere to invest profitably. Marx assumed that such a hopeless condition will force workers to revolt against capitalists. Workers have to seize the control of the workplaces by degree according to various conditions of different countries and time-period. Marx further thought that workers will be investing the excess profits (that cannot be invested profitably due to lack of demand) non profitably. This non profitable investments will grow as socialization of workplaces and automation will rise and ultimately a stage will be reached when all necessary but disliked activities will be automated and humans will do voluntary activities only. This ultimate stage is called communist society while the journey from revolt against capitalists to communism is called socialist transition stage.
Critic 1: Joseph Schumpeter pointed out that entrepreneurs come to market with new products, production processes, managements, markets. Thus entrepreneurs keep creating new areas for profitable investment. New products, markets tend to raise the demand for workers and hence tend to raise real wages too. This continuously act as a counter weight to over production crisis.
Counter to Critic 1: As a capitalist country develops. more and more industries are there to be automated and new industries play a marginal role. While during the initial years of capital accumulation, less industries are there for automation and new industries have more prominent role. Hence we can say that as a capitalist country develops the impact of automation begins to outweigh the impact of new industries. Thus tendency for over production crisis rises. But new industries indeed helps to lower the intensity of over production crisis.
Critic 2: Lenin pointed out that capital's development is not equal across the globe. Today North America, Europe, East Asia are industrialized to a great extent, but most of Latin America, Africa and most of Asia remain under developed. In Lenin's time only US, UK, Germany, Belgium, Netherlands, France and Japan were considered developed. Lenin said that Marx's analysis of over production assumed a closed developed economy or a completely developed world. Since in reality capital's development is not equal across the globe, excess profit in a developed country can be invested profitably in an undeveloped country where capital accumulation is low with no chance for over production. In this way, capital can solve the over accumulation crisis in a world with unequal capital accumulation across countries. This process also helps a developed country's industries by having access to raw materials and cheaper wages of under developed countries which further increases the country's competitiveness in the global market.
Lenin further said that different developed countries colonize less developed countries to export its excess capital and raise its competitiveness. This leads to rivalry among developed countries for control of colonies which then lead to imperialist wars among developed capitalist countries. Lenin's theory explained the two world wars brilliantly.
Counter to Critic 2: The lower the development level of a country, lower will be its productivity and income and so lower will be its capacity to absorb investment. In fact, undeveloped countries never attract significant amount of capital from developed countries. On the contrary, more developed countries have more capacity to absorb investment. Capital flow between developed capitalist countries is always more than capital flow from developed to undeveloped countries. So export of capital from developed economies to undeveloped economies cannot solve the over accumulation crisis. But colonizing undeveloped countries to acquire competitiveness in global economy still holds true.
Critic 3: Global trade and investment are very important for every capitalist country. So is global currency associated with global trade and investment. A country's currency represents its production value, asset value and military might. Usually a dominant capitalist country rules the global capitalist economy using its production value, asset value and military might. So whenever the dominant capitalist country whose currency acts as global currency faces challenge from another country (may be capitalist, may be not) a global market disequilibrium is created. This is because the challenger initially gains upper hand in production value but its military might while is still lagging behind. This results in over production in the challenger country and the dominant country's currency continue to dominate the global economy. This create inflation in the dominant country. High inflation in dominant country pushes the asset price and production cost higher. This resulted in foreign exchange flight from other nations to the dominant country. Thus dominant country's currency value rises more making its production further uncompetitive while creating asset price bubble. So unemployment from over production becomes the character of the challenger country, inflation with unemployment becomes common in rest of the world and weak economies face the extra problem of foreign exchange shortage. So these crises are more a result of the transition in the world geopolitical order. Two world wars happened mainly because British domination was challenged by Germany and then by USA and then by USSR and Japan. Today also we can see that China is becoming most dominant country in production while military might continues to rest with USA. So transition in world order is the main cause of economic crisis. Leninist theory of export of excess capital and Marxian theory of over production crisis may not that much vital..
Counter to Critic 3: This theory does not contradict with Marxian theory of over production. Instead it adds momentum to the over production theory. It shows while challenger capitalist country has to face over production crisis, dominant country has to face high inflation and asset price bubble resulting in less production and high consumption based on debt. Again when we compare 1900-1914 challenger country Germany and 1918-1929 challenger country USA with the present era challenger nation China, we find that while Germany and USA faced massive over production crisis, socialist China which has huge non profitable investment faces no over production crisis at all. So non profitable investment indeed reduces chance of over production crisis significantly. Moreover, when US led new geopolitical order was finalized replacing UK led one by 1944 (Brettonwoods Agreement), then most of the economic problems were solved.
Critic 4: Neo Classical economists claim that capital is a commodity with its own price known as interest rate. Supply of capital rise if interest rate is raised and demand for capital rise if interest rate is lowered. Similarly supply of capital fall if interest rate is lowered and demand for capital fall if interest rate is raised. So whenever there will be excess profits, supply of capital will be more than demand for capital and as result interest rate (price of capital) will fall resulting in rise in demand for investment. This will make many previously thought unimaginable investments possible. Thus flexibility of interest rate will counter over production crisis.
Counter to Critic 4: After 1929 Great Depression, John Maynard Keynes came with Liquidity Trap theory. The theory says that when interest rate is too low, asset price is too high (due to compound interest rate equation). Thus people anticipate share price fall in future resulting in capital loss. So they refuse to invest in capital market. Thus private investment dries up. This can be compensated by increasing government spending through fiscal deficit financing only. So Keynes indirectly accepts Marxian over production theory. Keynes was accepted soon by all capitalist countries and academia resulting in indirect victory of Marxian over production crisis.
It is further identified by economists like Hayek and Paul M. Sweezy that when interest rate is too low, risky ventures become less costly and this leads to asset price speculation which ultimately creates asset price bubble only to burst after a certain point of time. This burst only transforms over production crisis into financial crisis.
An important point is after the Great Depression of 1929, capitalist world accepted that Over Production crisis is indeed a system problem. Capitalist governments and academia try to solve it through expansionary fiscal policies and expansionary monetary policies. Expansionary fiscal policies mostly went to direct cash in hand to targeted segments of the society to riase consumption, appease the discontent masses and disunite the working class in the name of historically privileged section and historically downtrodden section. Thus came identity politics which put women working class against men working class, white working class against non white working class and so on. Expansionary monetary policies helped capitalist economies to create asset price bubble and raise consumption of working class by distributing debt through collateralizing the inflated assets. Thus emerged a new Financial Neo Liberal Capitalist society based on Identity Politics and debt led consumption.
Conclusion: We can say that Marx was correct to notice the over production crisis in a capitalist economy. But there are counter tendencies like continuous development of new industries, capital flow from one country to another, interest rate flexibility, asset price speculation, finalization of a new geopolitical order and currency revaluation associated with it. Even non profitable investments by state was accepted by capitalist academia and governments. Thus we find different capitalist countries with different intensity of economic crisis. In Japan we find three decades of economic stagnation and in US we find a declining but steady growth rates over three decades. European Union has shown declining steady growth in first two decades but gradually became crisis ridden in the last decade. We can clearly identify that if a capitalist country has strong currency like US Dollar, then the country can generate continuous asset bubbles even after several bursts while maintaining low interest rate on average. But if the capitalist economy has weak currency like Yen then one single asset bubble and burst will lead the economy to continuous stagnation. European Union can be considered somewhat middle between the two extremes.
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Theoretical General Socialism Communism Xi Jinping Mao USSR China 25-January-2025 by east is risingKhomenee Ehsan
সিরাজ সিকদারের লাল সন্ত্রাস কি? মগজহীন ছাপড়িরা প্রচার করছে শহীদ কমরেড সিরাজ সিকদার লাল সন্ত্রাস করেছেন। প্রশ্ন হলো, ৭২-৭৫ পর্যন্ত মুজিবের আওয়ামী ফ্যাসিবাদকে খতম করা কি লাল সন্ত্রাস ছিল? ভারতের দালাল খতম করা কি লাল সন্ত্রাস ছিল? আরেকটু কড়া করে বলি, পনের আগস্ট রাতে শেখ মুজিবকে অ্যারেস্ট করার সিদ্ধান্ত হলেও মুজিবকে দেখেই গুলিয়ে চালিয়ে দেওয়া মেজর নূর ছিলেন কমরেড সিরাজ সিকদারের দল সর্বহারা পার্টির সদস্য। তাহলে মুজিব হত্যাকে লাল সন্ত্রাস বলা হচ্ছে। মূলতঃ রাজনৈতিক বেকুবরা জানে না যে, সিরাজ সিকদারকে লাল সন্ত্রাস বললে ওদের চৌদ্দ গোষ্ঠীর লিগ্যাসিও থাকে না। ফেসবুক-ইউটিউব দেখে বিপ্লবী সাজা ছাপড়িরা বলুক তারা যে মেজর ডালিমকে নিয়ে এত মাতামাতি করছে সেই ডালিম পনের আগস্ট কয়টা গুলি ছুড়ছে? একদিকে ডালিমকে নিয়ে লাফাবা আরেক দিকে বাপেরও বাপ শহীদ সিরাজ সিকদারকে লাল সন্ত্রাসের জনক বলবা এই ফাজলামো কেন? শহীদ সিরাজ সিকদার বাংলাদেশের রাজনীতিতে সর্বোচ্চ উচ্চতায় প্রতিষ্ঠিত এক মহান বিপ্লবী। তার রাজনীতিতে সম্পৃক্ত লোকদের নাম বললে ছাপড়িদের অশিক্ষার দারিদ্র্য ছাড়া আর কিছুই প্রকাশিত হবে না। শুনে রাখো, শহীদ জিয়াউর রহমান নিজেও পূর্ববাংলা সর্বহারা পার্টির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। লেখক হুমায়ুন আহমেদ, মানে জাফর ইকবালের বড় ভাই হুমায়ুন সর্বহারা পার্টি করতেন। জামায়াত ও ছাত্রসংঘের লোকেরা একাত্তরের পর শহীদ সিরাজ সিকদারের পার্টিতে আশ্রয় পেয়েছে। শহীদ গোলাম আযম দেশে ফিরলে তার নিরাপত্তা দাতা যেসব লোক ছিলেন তারা সর্বহারা পার্টি থেকে জামায়াতে এসেছিলেন। এরমধ্যে একজন বর্তমান সরকারের এক উপদেষ্টার ভাগ্নি জামাই। আমি যেসব লেখলাম তা জানতে হলে রাজনৈতিক শরীফ হতে হয়।
একাত্তরের পর বাংলাদেশে ভারতীয় সম্প্রসারণবাদ বিরোধী লড়াইয়ের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন শহীদ কমরেড সিরাজ সিকদার। তিনি চীনপন্থী ছিলেন। তাকে সন্ত্রাসী বলে প্রচারণায় জড়িত বাম ও ডানপন্থীরা মূলতঃ ভারতের দালাল। এরা পরিকল্পিতভাবে ভারতীয় আধিপত্যবাদ বিরোধীদের নামে বদনাম ছড়ায়৷ এরমধ্যে চারদলীয় জোট সরকারের শত শত ভারত বিরোধী বিপ্লবী কমিউনিস্টকে ক্রসফায়ারের নামে হত্যা করা হয়। তাদেরকে হত্যার কারণেই দেশে প্রতিরোধের ভারসাম্য নষ্ট হয় ও লাগামহীন ফ্যাসিবাদের উত্থান ঘটে। শুনলে অবাক হবেন এসকল বিপ্লবী কমিউনিস্টরা ফিলিস্তিনি মুক্তি সংগ্রামে সম্পৃক্ত কমিউনিস্ট বিপ্লবীদের সঙ্গেও সম্পৃক্ত ছিল। একথা বললে অনেক ইতর ডানপন্থী পোলাপান বিস্মিত হবে৷ কিন্তু এবারের গাজা যুদ্ধেও বিপ্লবী কমিউনিস্টদের দল অংশগ্রহণ করেছে। কাজেই বাংলাদেশে ভারতের দালালি করতে শহীদ সিরাজ সিকদার ও শহীদ মোফাখখার চৌধুরীদের নামে অপবাদ ছড়াবেন না।
Author: Saikat Bhattacharya
Theoretical General Socialism Communism Xi Jinping Mao USSR China 21-January-2025 by east is risingWhen money is invested for more money then that money is called capital. That is, the money that is invested to earn more money with profit is called capital. Now the question is where does the first capital come from? Because if there is capital it is possible to make profit. But it is not possible to form capital from profits. It is said that the first capital comes by seizing the property of others.
A developing country cannot export high quality industrial products. But for special geographical reasons some particular goods or services may be exported. For example, due to geography, Singapore has an ideal port for which it earns foreign exchange by providing port services and invests the earned foreign exchange to develop the country. Similarly, the Gulf Arab countries have oil that can be extracted at a low cost to control the world market, and the countries have developed by exporting that oil and earning foreign exchange. But only a few countries have sufficient mineral resources or port services relative to their population. So most of the countries do not get this benefit. Therefore, in most countries there is no option but to confiscate others' property.
Capital development has several stages.
First, the initial capital must be accumulated by looting. Either the property of the minority or the weak nation is looted by the majority or the powerful nation, or the possession of the landlord's property by the peasants, or the upliftment of the landlord by the force of the landlord. The first step is to raise initial capital through these three methods or any one or two of these three methods. This is how looting capital is first created. (O-M)
After the initial capital comes in, that capital is invested mainly in trade and thus trade capital develops. (M-M')
By increasing capital and experience through trade, capital begins to invest in production. Thus productive capital is formed. (M'-C-M'')
The wages of labor fail to rise at the same rate as the profit from productive capital rises,at the same rate. This is because the large production capital outcompetes the small production capitalist and forces him to become worker. At the same time, efforts were made to keep the demand for labor low by increasing the continuous automation of production, i.e. increasing the capital-labour ratio. As a result, the growth rate of workers' wages is lower than the growth rate of profits. Again the workers are the consumers of the market and wages are their income. The income of the laborer lags behind the profit i.e. the ability to produce. The result is a dire overproduction crisis where supply is high and demand is low. Surplus capital is then created which cannot be profitably invested due to lack of demand. Surplus capital is then created which cannot be profitably invested due to lack of demand. This surplus capital is either unprofitably invested by the labor-driven or dominated state to increase demand to equalize supply or, in the case of a capital-driven state, the surplus capital is profitably invested in the business of buying and selling property assets. Asset trading is profitable if the continuous supply of debt keeps increasing the value of the property. This is how speculative capital was born. (M-D-M')
Whether or not speculative capital earns a decent profit depends on the borrowing capacity of the state. The borrowing power of a state depends on the power of that state's currency. And the power of the currency depends on the production capacity and military power of the country. Needless to say, there is only one country that can give a decent profit to crack capital at present and that is the United States of America. Other developed countries such as Western Europe and Japan are also facing the crisis of surplus capital but due to lack of strong military power they are unable to pay off capital and hence their economy is slowly going towards destruction. China is also in crisis of surplus capital but being a socialist country (state power is in the hands of the working class) China is investing surplus capital unprofitably to create demand and rely on advanced technology.
However, when there is free flow of speculative capital, innovative ventures benefit partly because the innovative ventures receive a part of speculative capital investment. However, very little of the loans go to innovative enterprises, and most of them go to shares or stocks of established enterprises or to land, metal, etc.
Today in the small economy homogeneous nations like Bangladesh, the struggle between plunder capital-trading capital on one hand and productive capital-labour on the other is going on. In multi national countries like Pakistan (small economy) or India (large economy), particular nations are also looting the property of other nations and making profit from trade and production as well. The liberation struggle of other nations against the particular nation is also going on and along with it the efforts of other nations to accumulate seed capital. USA, Japan, Western Europe, South Korea, China are now at the level of surplus capital crisis. The US state is able to make profits for the speculative capital, thanks to the massive production and military power. China, being a labor-driven nation, is investing surplus capital unprofitably to increase demand and catch up with the US in technology. The rest can do neither and are gradually becoming weak economies.
Now the question is whether the US economy will be defeated by excess debt while trying to keep the speculative capital profitable? Or whether China's unprofitable investment will be able to make China's productive power equal to that of the US' productive power? And even China will be able to overtake the US? The development of the United States began in 1776 while in China in 1949. That is, the US economy has been on the path of development since 173 years before China started. This struggle will continue for the next 2025-2035 and will determine the future of humanity. China's foreign earnings are increasing, which means that China's ability to make unprofitable investments is increasing. The US has not been able to reduce China's foreign earnings through trade wars and technology wars. Now the question is whether the United States will be able to keep its debt supply intact with its military power? Or will there be more successful innovation ventures per unit debt or more successful innovation ventures per unit non-profit investment?
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Theoretical General USA vs China 05-January-2025 by east is risingজুলাই, ২৪ নেতৃত্ব সরকারী ও বেসরকারী ছাত্রদের মধ্যে মিলন ঘটাতে ব্যর্থ আর এরা ছোট ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের মধ্যে সংগঠন বানানোর গুরুত্ব বোঝেনি।
এদের সাফল্য হোল ইসলাম্পন্থি ও বামপন্থি-দের এক মঞ্চে নিয়ে আনা এবং ৪৭, ৭১, ২৪ যে একটা ধারাবাহিকতা বহন করে তা তুলে ধরা।
কিন্তু পুরনো ব্যবস্থা ভাংতে গেলে যে ধরণের তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক মেধা লাগে তা এদের নেই।
ভি পি নূর-এর ২০১৮-এর আন্দোলন কখনো রাজনৈতিক হয়ে উঠতে পারেনি যা জুলাই, ২৪-এর আন্দোলন পেরেছে।
জুলাই, ২৪-এর আন্দোলন মানুষকে শুধু ফ্যাসিবাদী দলকেই নয়, পুরনো ব্যবস্থাকে ছুঁড়ে ফেলার স্বপ্ন দেখাতে পেরেছে।
মানুষ যে কেবল ভোট মারফত দল পরিবর্তন চায়না, তারা যে নতুন মেধাতান্ত্রিক ব্যবস্থা চায় তা তারা বুঝতে পেরেছে জুলাই,২৪ আন্দোলনের পরেই।
ছাত্র আন্দোলনের তৃতীয় ঢেউ-এর নেতৃত্বকে অবশ্যই পুরনো ব্যবস্থা ভাংতে গেলে যে ধরণের তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক মেধা লাগে তা আয়ত্ব করতে হবে, অর্থনীতি ও রাজনীতির যোগ বুঝতে হবে এবং ছোট ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের লুটেরা পুঁজির বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামাতে হবে। সব শেষে ছাত্র নেতৃত্বে বেসরকারী ছাত্রদের নিয়ে আনতেই হবে। মেধাকে শুধু সরকারী চাকরীতে নয়, জায়গা দিতে হবে সরকারেই, অর্থাৎ মেধাতন্ত্রকে সামনে আনতে হবে।
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Theoretical General 05-January-2025 by east is risingযখন অর্থ আরও বেশি অর্থের জন্য বিনিয়োগ করা হয় তখন সেই অর্থকে পুঁজি বলে। অর্থাৎ যে অর্থ বিনিয়োগ করে মুনাফা বা লাভ সমেত আরও বেশি অর্থ আয় করার চেষ্টা করা হয়, সেই অর্থকে পুঁজি বলে। এবার প্রশ্ন প্রথম পুঁজি আসে কোথা থেকে? কারণ পুঁজি থাকলে মুনাফা করা সম্ভব। কিন্তু মুনাফা থেকে পুঁজি তোলা সম্ভব নয়। বলা হয় প্রথম পুঁজি আসে অন্যের সম্পত্তি হরণ করে।
একটা উন্নয়নশীল দেশ উন্নত মানের শিল্প দ্রব্য রপ্তানী করতে পারবেনা। কিন্তু বিশেষ ভৌগলিক কারণে কিছু বিশেষ দ্রব্য বা পরিষেবা রপ্তানী করতেই পারে। যেমন ভৌগলিক কারণে সিঙ্গাপুরের আছে আদর্শ বন্দর যার জন্য বন্দর পরিষেবা দিয়ে সে বিদেশী মুদ্রা আয় করে এবং তা বিনিয়োগ করে দেশকে উন্নত করে। তেমনই উপকূল আরব দেশগুলোতে বিশ্ব বাজারকে নিয়ন্ত্রণ করার মতো অল্প খরচে তোলা যায় এমন তেল আছে এবং সেই তেল রপ্তানী করে বিদেশী মুদ্রা আয় করে দেশগুলো উন্নত হয়েছে। কিন্তু জনসংখ্যার তুলনায় পর্যাপ্ত পরিমাণে খনিজ সম্পদ বা বন্দর পরিষেবা খুব স্বল্প কিছু দেশেরই আছে। তাই অধিকাংশ দেশই এই সুবিধে পায়না। তাই সম্পত্তি হরণ ছাড়া উপায় থাকেনা অধিকাংশ দেশেই।
পুঁজির বিকাসের অনেকগুলো ধাপ আছে।
প্রথমে আদি পুঁজির সঞ্চয় করতে হয় লুট করে। হয় সংখ্যালঘু জাতির সম্পত্তি সংখ্যাগুরু জাতির দ্বারা লুট, নয় তো জমির মালিকের সম্পত্তি কৃষক দ্বারা দখল, নয় তো জমির মালিকের বল পূর্বক বর্গাদার উচ্ছ্বেদ। এই তিন উপায়ে বা এই তিনের মধ্যে যে কোনও একটা বা দুটো উপায়ে আদি পুঁজি যোগাড় করা প্রথম কাজ। এইভাবে প্রথমে লুটেরা পুঁজি তৈরি হয়। (O-M)
আদি পুঁজি আসার পরে সেই পুঁজি বিনিয়োগ করা হয় মূলত বাণিজ্যে আর এভাবেই বাণিজ্য পুঁজির বিকাস হয়। (M-M')
বাণিজ্য করে পুঁজি ও আভিজ্ঞতা বাড়িয়ে উৎপাদনে বিনিয়োগ শুরু করে পুঁজি। এইভাবে গড়ে ওঠে উৎপাদনকারী পুঁজি। (M-C-M')
উৎপাদনকারী পুঁজি মুনাফা যে হারে বাঁড়ায়, শ্রমিকের মজুরি সেই হারে বাঁড়াতে ব্যর্থ হয়। আবার বৃহৎ উৎপাদনকারী পুঁজি ছোট উৎপাদনকারী পুঁজিপতিকে প্রতিযোগিতায় পরাজিত করে তাকে শ্রমিক হতে বাধ্য করে। একই সাথে উৎপাদনে লাগাতার স্বয়ংক্রিয়তা বাড়িয়ে তুলে অর্থাৎ পুঁজিঃশ্রম অনুপাত বাড়িয়ে তুলে শ্রমিকের চাহিদা কম রাখার প্রচেষ্টা চালিয়ে যায়। ফলে শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধির হার মুনাফা বৃদ্ধির হারের চেয়ে কম থাকে। আবার শ্রমিকরাই বাজারের ভোক্তা এবং মজুরি তাদের আয়। শ্রকিমকের আয় মুনাফা অর্থাৎ উৎপাদন করার ক্ষমতা থেকে পিছিয়ে পড়ে। ফলে যোগান বেশি, চাহিদা কম এমন ভয়ঙ্কর অতি উৎপাদন সঙ্কট তৈরি হয়। তখন উদ্বৃত্ত পুঁজি তৈরি হয় যা চাহিদার অভাবে লাভজনকভাবে বিনিয়োগ করা যায়না। এই উদ্বৃত্ত পুঁজি হয় শ্রমিক চালিত বা প্রভাবিত রাষ্ট্র দ্বারা অলাভজনকভাবে বিনিয়োগ করা হয় চাহিদা বাড়িয়ে যোগানের সমান করতে অথবা পুঁজি চালিত রাষ্ট্র হলে উদ্বৃত্ত পুঁজি বিনিয়োগ করা হয় লাভজনকভাবে সম্পত্তি কেনবেচার ব্যবসায়। সম্পত্তি কেনাবেচা লাভজনক হয় যদি ঋণ-এর যোগান বাড়িয়ে সম্পত্তির মূল্য বাড়িয়ে চলা হয়। এইভাবে জন্ম হয় ফাটকা পুঁজির। (M-D-M')
ফাটকা পুঁজি ঠিকঠাক লাভ পাবে কি না তা নির্ভর করে রাষ্ট্রের ঋণ করার ক্ষমতার ওপর। রাষ্ট্রের ঋণ করার ক্ষমতা নির্ভর করে সেই রাষ্ট্রের মুদ্রার ক্ষমতার ওপর। আর মুদ্রার ক্ষমতা নির্ভর করে সেই রাষ্ট্রের উৎপাদন করার ক্ষমতা ও সামরিক শক্তির ওপর। বলা বাহুল্য বর্তমানে একটা দেশই ফাটকা পুঁজিকে ঠিকঠাক লাভ দিতে পারে আর তার নাম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। অন্যান্য উন্নত দেশ যেমন পঃ ইউরোপ ও জাপানও উদ্বৃত্ত পুঁজির সঙ্কট দেখছে কিন্তু শক্তিশালী সামরিক শক্তি না থাকায় তারা ফাটকা পুঁজিকে লাভ দিতে পারছেনা আর তাই তাদের অর্থনীতি ক্রমশো ধ্বংসের দিকে চলেছে। চীনও উদ্বৃত্ত পুঁজির সঙ্কটে আছে কিন্তু সমাজতান্ত্রিক দেশ (রাষ্ট্র ক্ষমতা শ্রমিক শ্রেণির হাতে) হওয়ায় চীন উদ্বৃত্ত পুঁজি বিনিয়োগ করছে অলাভজনকভাবে চাহিদা নির্মাণ করতে ও উন্নত প্রযুক্তিতে সাবলম্বি হতে।
তবে মনে রাখা দরকার যে ফাটকা পুঁজির জন্ম হলে ঋণ বাড়িয়ে সম্পত্তি কেনাবেচা করে যে লাভ হয় সেই সম্পত্তির কিছু অংশ হয় উদ্ভাবনী উদ্যোগ-এর শেয়ার বা স্টক। ফলে ফাটকা পুঁজির প্রবাহ শক্তিশালী থাকলে উদ্ভাবনী উদ্যোগ কিছু অংশে লাভবান হয় কারণ সেই উদ্যোগ পুঁজির বিনিয়োগ পায়। যদিও ঋণের খুব সামান্য অংশই যায় উদ্ভাবনী উদয়গে, আর অধিকাংশই যায় প্রতিষ্ঠিত উদ্যোগের শেয়ার বা স্টকে অথবা জমি বাড়ি ধাতু ইত্যাদিতে।
আজ বাংলাদেশের মতো মোটা দাগের এক জাতির ছোট অর্থনীতির দেশগুলোতে লুটেরা-বাণিয়া পুঁজি বনাম উৎপাদনকারী পুঁজি-শ্রমিক সংগ্রাম চলছে। পাকিস্তান বা ভারতের মতো বহু জাতির ছোট বা বড় অর্থনীতিগুলোতে বিশেষ জাতি অন্য জাতিদের সম্পত্তি লুটও করছে, আবার বাণিজ্য ও উৎপাদন করেও মুনাফা করছে। বিশেষ জাতির বিরুদ্ধে অন্যান্য জাতির মুক্তির সংগ্রামও চলছে আর সাথে রয়েছে অন্যান্য জাতির পালটা আদি পুঁজি সঞ্চয়ের প্রচেষ্টা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জাপা্ন, পঃ ইউরো্প, দঃ কোরিয়া, চীন এখন উদ্বৃত্ত পুঁজির সঙ্কট-এর স্তরে আছে। মার্কিন রাষ্ট্র বিশাল উৎপাদন ও সমরশক্তির জোড়ে ফাটকা পুঁজিকে মুনাফা দিতে সক্ষম হচ্ছে। চীন শ্রমিক চালিত রাষ্ট্র হওয়ায় উদ্বৃত্ত পুঁজি বিনিয়োগ করছে অলাভজনকভাবে চাহিদা বাড়াতে ও প্রযুক্তিতে মার্কিনীদের সমকক্ষ হতে। বাকিরা কোনটাই করতে পারছেনা এবং ক্রমেই দুর্বল অর্থনীতিতে পরিণত হচ্ছে।
এবার প্রশ্ন হচ্ছে যে মার্কিন অর্থনীতি কি ফাটকা পুঁজিকে লাভজনক রাখতে গিয়ে অতিরিক্ত ঋণের জালে জড়িয়ে পড়ে পরাস্ত হবে না কি চীনের অলাভজনক বিনিয়োগ চীনের উৎপাদিকা শক্তিকে মার্কিন উৎপাদিকা শক্তির সমকক্ষ করে তুলতে সক্ষম হবে এবং মার্কিনকে ছাপিয়ে যেতে সক্ষম হবে চীন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিকাস শুরু ১৭৭৬ সাল থেকে আর চীনের ১৯৪৯ সাল থেকে। অর্থাৎ মার্কিন অর্থনীতি বিকাসের পথে হাঁটছে ১৭৩ বছর আগে থেকে। আগামী ২০২৫-২০৩৫ এই সংগ্রাম চলবে এবং বিশ্বমানবতার ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে। চীনের বৈদেশিক আয় বেড়েই চলেছে যার অর্থ চীনের অলাভজনক বিনিয়োগ করার ক্ষমতা বেড়েই চলেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পারেনি বাণিজ্য যুদ্ধ ও প্রযুক্তি যুদ্ধ করে চীনের বৈদেশিক আয় কমাতে। এবার প্রশ্ন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কি ঋণের যোগান অটুট রাখতে পারবে তার সমরশক্তির জোড়ে? অথবা প্রতি একক ঋণে সফল উদ্ভাবনী উদ্যোগ বেশি হবে না কি প্রতি একক অলাভজনক বিনিয়োগে সফল উদ্ভাবনী উদ্যোগ বেশি হবে?
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Theoretical General USA vs China 04-January-2025 by east is risingবাংলাদেশ ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদের কবলে গেল কিভাবে?
১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাসে বাংলাদেশ যখন তৈরি হয় তখন মুজিব উর রহমান ও আওয়ামী লিগকে সমর্থন করে সোভিয়েত ইউনিয়ন ও ভারত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রথমে স্বাধীন বাংলাদেশের বিরোধিতা করলেও পরে মেনে নেয়। ক্ষমতায় আসার পরেই বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের অন্যান্য নেতাদের হয় নিজের দিকে নিয়ে আনে নয়তো হত্যা করতে শুরু করে মুজিব। সিরাজ সিকদার সহ অজস্র মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করে মুজিব একনায়ক হিসেবে শাসন করতে চান। তিনি জনতাকে বোঝাতে চেয়েছিলেন যে তিনি যুগোস্লাভিয়ার জোট নিরপেক্ষ সমাজতান্ত্রিকদের মতো শাসন করতে চান। সেই মতো তিনি বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লিগ বা বাকশাল তৈরি করেন এবং এক পার্টি শাসন-এর দিকে এগিয়ে যান।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বাকশাল-এর এক পার্টি শাসন মেনে নিতে অস্বীকার করে এবং তার বিরুদ্ধে ক্যু করে ও তাকে হত্যা করে ১৯৭৫ সালে। তারপর দু বছর সেনাবাহিনী পুরনো আওয়ামী লিগ-এর নেতৃত্বে সরকারকে সমর্থন করে।.১৯৭৭ সালে সেনাবাহিনী প্রধান জিয়া উর রহমান (তিনিও জনপ্রিয় মুক্তিযোদ্ধা এবং অধিকাংশ বাংলাদেশির মতে প্রথম স্বাধীনতার ঘোষক) বি এন পি পার্টি তৈরি করে শাসনভার হাতে তুলে নেন এবং মার্কিন ও পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে সুসম্পর্ক স্থাপন করেন। তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনারও চেষ্টা করেন। জিয়াকেও হত্যা করা হয় ১৯৮১ সালে। বাংলাদেশের মানুষ এই হত্যার পেছনে র-এর হাত দেখে,। এরপরে এক বছর যেতে না যেতেই বি এন পি-এর প্রধান শাসক আবদুস সাত্তার-কে উচ্ছেদ করে তারপরে এক নিরপেক্ষ প্রধানকে ক্ষমতায় রাখে সেনাবাহিনী প্রায় দু বছর। ১৯৮৩ সালে ক্ষমতা হাতে তুলে নেন সেনা প্রধান এরশাদ। তিনি শাসন করেন প্রায় ৭ বছর জাতীয় পার্টির প্রধান হিসেবে।
১৯৮০-এর দশকের মধ্যভাগ থেকে ১৯৯০-এর দশকের প্রথম ভাগের মধ্যে আকস্মিকভাবে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন হয় এবং ঠাণ্ডা যুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জয়ী হয়। এই সময়ের মধ্যে মার্কিন যুক্তিরাষ্ট্র নিজের এক মেরু শাসন কায়েম করাকে বৈধতা দেওয়ার জন্য সর্বত্র বহু দলীয় গণতন্ত্র-কে সমর্থন দিতে থাকে। এমনকি তার সহযোগী সেনা শাসকদেরও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বহু দলীয় গণতন্ত্র মানতে বাধ্য করে। যেমন - তাইওয়ান (১৯৮৭), চিলি (১৯৯০)। অন্যদিকে পূর্ব ইউরোপের ৮টা দেশে কমিউনিস্ট এক পার্টি শাসন উচ্ছেদ হয়ে বহু দলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা পায়। সোভিয়েত পতনের পরে রাশিয়াতেও বহু দলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা পায়। এরকম বৈশ্বিক আবহাওয়ায় ১৯৯০ সালে এরশাদ-এর পতন হয় এবং বহু দলীয় গণতন্ত্র কায়েম হয় বাংলাদেশে।
১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ ক্ষমতায় থাকে বি এন পি, ১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত থাকে আওয়ামি। এই দশ বছর-কে এক মেরু বিশ্বের, নয়া উদারবাদের এবং বহু দলীয় গণতন্ত্রের স্বর্ণযুগ বলা যায়। কিন্তু ২০০১ সালে ইসলামী সংগঠন আল কায়দা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক প্রাণকেন্দ্র ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে আঘাত হানে যা বাংলাদেশেও নতুন সমীকরণ তৈরি করে। মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ ইসলামী শক্তিকে ইসলামী সন্ত্রাসবাদ বলে চিহ্নিত করে। ইসলামী সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ-কে প্রধান বিষয় হিসেবে বিবেচনা করা শুরু করে মার্কিন সরকার। সেই সুযোগে ভারত দঃ এশিয়াতে মার্কিন সরকার-এর প্রধান সহযোগী হয়ে ওঠার চেষ্টা করতে থাকে ইসলামী সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে। আফঘানিস্তানে পাকিস্তান মার্কিন সরকার-কে সমর্থনের ভান দেখিয়ে তালিবান-দের সমর্থন করতে থাকে ভেতরে ভেতরে। ভারত সেই সুযোগে মার্কিন সরকারের আরও কাছাকাছি আসতে থাকে। ভারত এই সময়ে মার্কিন সরকার-কে বুঝিয়ে ফেলতে সক্ষম হয় যে বাংলাদেশে ইসলামী সন্ত্রাস-কে আটকাতে গেলে জামাত-কে ক্ষমতা থেকে দূরে রাখতে হবে এবং বিএনপি-এর থেকে আওয়ামী বেশি ভাল করে ইসলামী সন্ত্রাসকে আটকাতে পারবে। ২০০১ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে বিএনপি-জামাত জোট সরকার প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ক্ষমতায় ছিল। সেই আমলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সঙ্গে চীনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০০১ সালে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিডিআর) বেশ কয়েকবার ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)-কে নাস্তানাবুদ করে। এই যুদ্ধ বাংলাদেশে রংপুরের রোউমানি যুদ্ধ বলে পরিচিত। বাংলাদেশিদের মতে সেই যুদ্ধে ৪০০-রও বেশি বিএসএফ জওয়ান নিহত হয়।
ইতিমধ্যে ২০০১ থেক ২০০৬ এর মধ্যে ঘটা কিছু হিন্দু বিরোধী দাঙ্গা এবং বাংলা ভাই নামের ইসলামী সন্ত্রাসীর উত্থান ভারতকে সুবিধে করে দেয় মার্কিন সরকার-কে আওয়ামীপন্থী করে তুলতে। বাংলাদেশিরা এখন মনে করেন বাংলা ভাই ও তার সংগঠন জামাত-এ-মুজাহিদিন আসলে "র"-এর তৈরি সংগঠন ছিল। তাদের কাজ ছিল বিএনপি-জামাত সরকারকে মার্কিন সরকারের কাছে ইসলামী সন্ত্রাসের মদতদাতা হিসেবে তুলে ধরা। তবে অনেকে এও বলেন যে শিল্পায়ণ ও নগরায়ণের সময় কৃষক উচ্ছ্বেদকালে মাওবাদী সংগঠন "পূর্ব বাংলার সর্বহারা দল" কৃষকদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এবং সেই মাওবাদীদের শেষ করতে বিএনপি-জামাত সরকারই নিয়ে আনে জামাত-এ-মুজাহিদিন-কে। ২০০৬ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাংলাদেশের ক্ষমতায় থাকে। প্রথমে ২০০৭ সালের ২২-শে জানুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল অধ্যাপক ইয়াজুদ্দিন-এর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নেতৃত্বে। কিন্তু ৫ই জানুয়ারি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লিগ ও এরশাদের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টি নির্বাচন বয়কট করে। বলা হয় এর পরেই মার্কিন রাষ্ট্রদূত প্যাটরিশিয়া বুটেনিশ ও ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত আনোয়ার চৌধুরী বাংলাদেশের সামরিক প্রধান জেনেরাল মাইন-কে বলেন বাংলাদেশের ক্ষমতা দখল করতে এবং এমনভাবে নির্বাচন করতে যাতে সকল পার্টি নির্বাচনে অংশ নিতে পারে। ১১ই জানুয়ারি, ২০০৭ সালে জেনেরাল মইন ইয়াজুদ্দিন-এর ক্ষমতা কেড়ে নেন বন্দুকের নল দেখিয়ে। যদিও নতুন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হিসেবে মার্কিন পছন্দ ছিল নোবেল বিজয়ী মহম্মদ ইউনূস কিন্তু ইউনূস প্রধান হতে অস্বীকার করেন এবং বাংলাদেশ রিসার্ভ ব্যাঙ্কের সাবেক প্রধান ডক্টর ফকরুদ্দীন আহমেদ-কে প্রধান হতে অনুরোধ করেন। ফকরুদ্দীন ক্ষমতা নেন যদিও আসল ক্ষমতা জেনেরাল মইন-এর হাতেই ছিল। এই ঘটনা আজ বাংলাদেশে "১/১১"-এর সামরিক ক্যু বলে চিহ্নিত। মার্কিন সরকার এই কাজ বাংলাদেশের মানুষের চোখের সামনেই করেছিল। মার্কিন সরকারের আশা ছিল পরের নির্বাচনে জিতবে ইউনূস-এর নতুন দল "নাগরীক শক্তি"। কিন্তু নাগরিক শক্তি সম্বন্ধে বাংলাদেশের মানুষ আগ্রহ না দেখানোয় ইউনূস রাজনীতির আসর থেকে বিদায় নেন। ভারতের বিদেশমন্ত্রী প্রণব মুখারজি "র"-কে এই সময় মাঠে নামান। ভারত প্রথমে মার্কিন প্ল্যানে এগিয়ে যায় এবং হাসিনা-কে ৫ই জানুয়ারি, ২০০৭-এ ২২-শে জানুয়ারির নির্বাচন বয়কট করতে বলে। তারপরে ইয়াজুদ্দিন-কে হটিয়ে ফকরুদ্দীনকে ক্ষমতায় বসানো সমর্থন করে। ভারত জানতো ইউনূস আদৌ সেরকম জায়গা পাবেনা নির্বাচনে। আর তখন ভারত হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী-কেই ক্ষমতায় আনবে। মার্কিন সরকারেরও তা মেনে নিতে হবে। কারণ বিএনপি ও জামাতের গায়ে ইসলামী সন্ত্রাস-কে জায়গা দেওয়ার কাদা লেগে গেছে। বাংলাদেশের সামরিক শাসক জেনেরাল মইন রাজনীতিতে ইউনূস-কে জায়গা দিতে খালেদা জিয়া, তার দুই পুত্র ও শেখ হাসিনা-কে গ্রেফতার করেন দুর্নীতির অভিযোগে। ২০০৮-এর ডিসেম্বর মাসে হাসিনার আওয়ামী লিগ তত্ত্বাবধায়ক সরকার-এর অধীনে হওয়া নির্বাচনে বিজয়ী হয়। প্রণব মুখারজি তার লেখা বই "দ্যা কোয়ালিশন ইয়ারস"-এ স্বীকার করেছেন কিভাবে তিনি জেনেরাল মইন-কে ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে আশ্বাস দেন যে হাসিনা জিতে ফিরে এলে মইন-কে নিরাপদে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলে যেতে দেবে। এবং এই আশ্বাসের পরেই জেনেরাল মইন হাসিনার জয়ের রাস্তা তৈরি করেন।
২০০৯-তে ক্ষমতায় আসার এক মাসের মধ্যে বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিডিআর)-কে শেষ করে দেওয়া হয় বিদ্রোহ দমন করার অজুহাতে। বলা হয় সেই সময় না কি ভারতীয় সেনাবাহিনী বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনী-কে ধ্বংস করার কাজে অংশ নেয়। এও বলা হয় যে বহু চীনা ঘনিষ্ঠ অফিসার-দের হত্যা করা হয় সেই বিদ্রোহ দমনের সময়। এরপরে হাসিনাকে আর ফিরে তাকাতে হয়নি। হেপাজত-এর মতো সংগঠন হাসিনার বিরোধিতা করায় তাদের হত্যা করে দমন করা হয়। ২০১৪ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়োগ করে নির্বাচন না করে আওয়ামী নিজের নেতৃত্বেই নির্বাচন করে। ফলে নির্বাচনের কোনও বৈধতা থাকেনা। বাংলাদেশের বিরোধীরা মার্কিন ও পশ্চীমের কাছে বারবার অভিযোগ জানায় কিন্তু কোনও ফল হয়না। ২০১৮-তেও একইভাবে নির্বাচন করায় আওয়ামী। বিএনপি ও জামাত সহ সমস্ত বিরোধী দল মনে করতে শুরু করে যে চীনকে আটকাতে মার্কিন সরকার ভারতের হাতে বাংলাদেশকে তুলে দিয়েছে। ইসলামী সন্ত্রাস দমন-কে সামনে রেখে আওয়ামীও বিরোধী কর্মী সমর্থকদের গ্রেফতার গুম খুন চালিয়ে যেতে থাকে।
২০২১ সালে ২০ বছর ব্যাপি ইসলামপন্থীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের পরে মার্কিন সরকার পরাজিত হয়ে লজ্জাজনক প্রস্থান ঘটায় আফঘানিস্তান থেকে। মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের মূল দ্বন্দ্ব শুরু হয় চীন ও তার সহযোগী রাশিয়া ও ইরান-এর সাথে। ফলে ইসলাম সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইতি টানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দলগুলোর কথায় বাংলাদেশের শাসক দল আওয়ামী লিগের ওপর চাপ দিতে থাকে সুষ্টু নির্বাচন করার। আওয়ামী ঘনিষ্ট বেশ কিছু পুলিশ ও আধা সেনার কর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা চালু করে। ২০২৪ সালের নির্বাচনের আগে অবশ্য মার্কিন সরকার বিরোধীদের বোঝাতে থাকে যে তারা বাংলাদেশকে ভারতের চোখ দিয়ে দেখবেনা।
এই সময় বাংলাদেশের প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন যে মার্কিন সরকার-এর আসল লক্ষ্য হল সেন্ট মারটিন দ্বীপ এবং মার্কিন সরকার বাংলাদেশে সঠিক নির্বাচন করাতে নয় বরং আকাঙ্ক্ষিত সেন্ট মারটিন দ্বীপ পেতে আওয়ামী ঘনিষ্ট কর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। হাসিনা এও বলেন যে এক শ্বেতাঙ্গ ব্যক্তি তাকে বলেছেন ভবিষ্যতে ভারত, মিয়ানমার ও বাংলাদেশ ভেঙ্গে এক খ্রীশ্চান রাষ্ট্র তৈরি হোতে চলেছে। (মনে রাখা দরকার মিয়ানমারের চীন প্রদেশের চীন জাতি, ভারতের মিজোরাম-এর জো জাতি ও দঃ মণিপুরের কুকি জাতি ও পার্বত্য চট্টগ্রামের ব্যোম জাতি একই জাতির অংশ এবং তারা এই তিন অঞ্চল মিলিয়ে স্বাধীন রাষ্ট্র চাইছে দীর্ঘদিন ধরে এবং এই জাতির অধিকাংশই খ্রীশ্চান। মনে রাখা দরকার পার্বত্য চট্টগ্রামের ব্যোম-রা সংখ্যালঘু এবং বৌদ্ধ চাকমারা সংখ্যাগুরু) এই প্রসঙ্গে বলা দরকার যে ভারতের থেকে চীন অর্থনৈতিকভাবে অনেক শক্তিশালী বলে আওয়ামী সরকার চীনের দিকে ঝুঁকেছিল নানা পরিকাঠামোগত বিনিয়োগে। বাংলাদেশের সেনাও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়িয়ে চলে এবং বাংলাদেশ চীনা অস্ত্রের সবচেয়ে বড় খরিদ্দার হয়ে ওঠে। চীনের থেকে সরিয়ে আনাই আসলে মার্কিন সরকারের অন্যতম কারণ ছিল আওয়ামী বিরোধীতার। চীনের সঙ্গে সম্পর্ক হ্রাস করার কোনও প্রতিশ্রুতি হয়তো আওয়ামী দিয়েছিল মার্কিন সরকারকে। আর সেই জন্যেই হয়তো ২০২৪-এর জানুয়ারি মাসে আওয়ামীর তত্ত্বাবধানে ২০২৪ সালে হওয়া নির্বাচনে বিরোধীদের অংশ নিতে বলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
২০২৪-এর নির্বাচনে জিতে এসেই ভারতে গিয়ে তিস্তা বিষয়ক বিনিয়োগ ও ভারতের মূল ভূখণ্ডের সাথে উত্তর পূর্বাঞ্চল-কে জোড়ার জন্যে বাংলাদেশ দিয়ে রেলপথ বানানোর চুক্তিতে মৌ স্বাক্ষর করে আসে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হাসিনা। মনে রাখা দরকার ভারত দীর্ঘ দিন ধরে তিস্তার জল বাংলাদেশকে না দেওয়ায় চীন সরকার বাংলাদেশ সরকার-এর কাছে প্রস্তাব রাখে যে চীনের ইয়াংসে কিয়াং নদীর পোলিমাটি সরাতে যেরকম বিনিয়োগ করা হয়েছে সেরকমই বিনিয়োগ তিস্তায় করার। আবার চীন সরকার ভূটানের দোকালাম দিয়ে শিলিগুড়ি করিডোর দখল করে ভারতের মূল ভূখণ্ড থেকে উত্তর পূর্বাঞ্চল-কে আলাদা করে ফেলতে চাইছে বলে মনে করে অনেক সামরিক বিশেষজ্ঞ। আর তারই প্রতিরোধক হিসেবে বাংলাদেশ-এর মধ্য দিয়ে ভারতের মূল ভূখণ্ড থেকে উত্তর পূর্বাঞ্চল-এ যাওয়ার বিকল্প রেললাইন তৈরি করতে চাইছে ভারত। এছাড়াও হাসিনা সরকার ২০২৪-এ জিতে এসেই চীনা সামরিক সরঞ্জাম বাদ দিয়ে ভারতীয় সামরিক সরঞ্জাম কিনতে উদ্যোত হয়। মংলা বন্দরও চীন-কে না দিয়ে দেওয়া হয় ভারত-কে।
এদিকে ১৫ বছর ছরে বাংলাদেশে যে নতুন যুব সমাজের উদ্ভব ঘটেছে তারা একদিকে ভারতের দাদাগিরি দেখছে, অন্যদিকে দিনের পর দিন ভোট দিতে পারেনি। শাসক দলের খুন গুম অত্যাচারও তারা দেখছে। এছাড়াও উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলোতে বিশাল টাকা চুরির অভিযোগ ওঠে শাসক দল আওয়ামীর বিরুদ্ধে। শেষ ১৫ বছরে চীনের সাহায্যে ও জাপানের সাহায্যে আওয়ামী সরকার বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামো তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। আর সেই সুযোগে নতুন যুব সমাজ হয়ে উঠেছে অনেক বেশি ডিজিটাল। নীম্নতম আয়ের দেশ থেকে বাংলাদেশ মধ্য নীম্ন আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। শুধু তাই নয় বাংলাদেশের জন প্রতি আয় ছাপিয়ে গেছে ভারতকেও। বিশেষ করে বাংলাদেশ লাগোয়া পূর্ব ভারতের (পঃ বঙ্গ উত্তর-পূর্বাঞ্চল বিহার ঝাড়খণ্ড) জন প্রতি আয়-কে অনেকটাই ছাপিয়ে গেছে বাংলাদেশ। এই বিষয়টা ক্রমেই ভারতের ওপর কিভাবে চাপ বাড়াচ্ছে তা নিয়ে আমরা পরে আলোচনা করব। তবে উন্নয়নের সাথে সাথে ভয়ঙ্কর মুদ্রাস্ফীতিও দেখছে বাংলাদেশ। এর কারণ বিশ্ব অর্থনীতির মূল উৎপাদক চীনের শ্রমিকদের মজুরি বেড়েছে বহুগুণ, চীনের সঙ্গে মার্কিন ভূরাজনীতির দ্বন্দ্বে লাগাতার আমদানীতে শুল্ক ও পালটা শুল্ক বসানো হচ্ছে, রাশিয়া ইউক্রেইন যুদ্ধের ফলে তেলের বাজারে নানা স্যাঙ্কশন করেছে পশ্চীমা দেশগুলো এবং হুথিদের লহিত সাগরে প্যালেস্তিনিদের সমর্থনে আক্রমণ জাহাজ চলাচলে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে। এই সমস্ত বিশ্ব অর্থনীতির ঝঞ্ঝা বাংলাদেশের ওপর এসে পড়ছে। ফলে এক নতুন বিদ্রোহী যুব শক্তির সমাবেশ শুরু হয়েছে বাংলাদেশে।
প্রথমে ২০১৭-১৮ সালের "নিরাপদ সড়োক আন্দোলন" থেকে তার যাত্রা শুরু, ২০১৮-তে সরকারি চাকরিতে কোটা বিরোধিতা করে তারা বাংলাদেশের সরকারকে চাপে ফেলে দেয় ও কোটা তুলে নিতে বাধ্য করে। এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইউনিয়ন (ডাকসু)-এর সভাপতি ভি পি নূর। নুর-এর নেতৃত্বে গড়ে ওঠা জুনিয়র ছাত্র ছাত্রীরাই স্বাধীনভাবে নিজেরা প্রথমে গড়ে তোলে "গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তি" ও আরও পরে "বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন" নামে প্ল্যাটফর্ম। ২০২৪-এ কোটার পক্ষে হাই কোর্টের রায়-কে সরকারের অভিসন্ধি মনে করে আবারও যুব সমাজ পথে নামে এবং তা শেষ পর্যন্ত আওয়ামী বিরোধী ও ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী আন্দোলনের রূপ নেয়।
বাংলাদেশ ২০২৪ বিপ্লবের কাণ্ডারি কারা?
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার নেত্রিত্বে সংগঠিত হওয়া বাংলাদেশ ২০২৪ বিপ্লবের চরিত্র ঠিক কি তা এখনো ভালো মতো করে উদ্ঘাটন করা হয়নি। ভাষা ভাষা কিছু কথা আছে মাত্র। আমি চেষ্টা করেছি একটা বিশ্লেষণ করার।
প্রথমেই আসি এই বিপ্লবের অন্যান্য বিপ্লবের সঙ্গে মিল আছে এমন বিষয়গুলো সম্বন্ধে। দীর্ঘ সময় যাবত কোনও রাজনৈতিক দল বৈধ নির্বাচন না করে ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা করলে তার বিরুদ্ধে গণক্ষোভ ও বিপ্লব যথেষ্ট স্বাভাবিক একটা ঘটনা। আওয়ামী লিগ দীর্ঘ ১৫ বছর শাসন করেছে আর তার মধ্যে শেষ ১০ বছর বা শেষ তিনটে টার্ম বৈধ ভাবে ভোট করায়নি। তাই ক্ষোভ স্বাভাবিক। তার ওপর যুক্ত হয়েছে আওয়ামীর ভারত চাটা নীতি। ফলে বাংলাদেশের মানুষ ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদের দালাল হিসেবে আওয়ামীকে দেখতে শুরু করে। অপেক্ষাকৃত বড়ো প্রতিবেশি দেশ-এর সাম্রাজ্যবাদী নীতির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ খুবই স্বাভাবিক।
এছাড়াও মনে রাখা দরকার বিশ্ব অর্থনীতির অবস্থা খুব আশাব্যঞ্জক নয়। ২০০৮-এর বিশ্ব মন্দার পর থেকে বিশ্ব বাণিজ্যের গতি কমেছে, বিশ্ব পুঁজির চলাচল ১৬ বছর পরেও ২০০৮-এর অবস্থানে পৌছয়নি।তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে চীনের উচ্চ আয়ভুক্ত দেশ হয়ে যাওয়া যা চীনের মজুরি অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে আর তাই বিশ্ব বাজারে দেখা দিয়েছে মুদ্রাস্ফীতি। চীন মার্কিন দ্বৈরথ এবং রুশ উইক্রেইন যুদ্ধ মুদ্রাস্ফীতিকে বাড়িয়ে তুলেছে। ফলে সুদের হার বাড়াতে বাধ্য হচ্ছে বিভিন্ন দেশ আর এর ফলে অর্থনৈতিক বৃদ্ধির হার কমছে আর পর্যাপ্ত পরিমাণে সুদের হার না বাড়ালে ছোট দেশের অর্থনীতিগুলোকে মুখোমুখি হতে হচ্ছে বিদেশী মুদ্রার সঙ্কটে। তৃতীয় বিশ্বের যুবক যুবতীদের প্রথম বিশ্বে গিয়ে রোজগার করাও কঠিন হয়ে পড়ছে কারণ প্রথম বিশ্বেও অভিবাসী বিরোধী রাজনীতি শক্তিশালী হচ্ছে। একদিকে দীর্ঘদিনের স্বল্প অর্থনৈতিক বৃদ্ধি আর অন্যদিকে দীর্ঘদিন ধরে শ্বেতাঙ্গদের মধ্যে স্বল্প জন্মহার-এর জন্য পশ্চীমের শ্বেতাঙ্গদের মধ্যে অ-শ্বেতাঙ্গ অভিবাসী বিদ্বেষ বেড়েই চলেছে। সব মিলিয়ে বর্তমান প্রজন্মের যুবারা ভবিষ্যৎ সম্পর্কে সন্ধিহান। আর তাই জেন-জি (যাদের জন্ম ১৯৯৭ থেকে ২০১২-এর মধ্যে) যে এই ২০২৪ সালে বিদ্রোহী মনন ধারণ করবে সেটাও স্বাভাবিক।
এবার আসি বাংলাদেশের বিপ্লবের সাথে অন্যান্য বিপ্লবের মধ্যেকার পার্থক্যে। বলা যায় বাংলাদেশ ২০২৪-এর বিপ্লব হোল জেন-জি-র নেতৃত্বে হওয়া প্রথম বিপ্লব। এই বিপ্লবের ক্ষেত্রে জেন-জি-র প্রভাব এতটাই স্পষ্ট যে তাদের তিনজনকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে নেওয়া হয়েছে। তাদের থেকে মতামতও চাওয়া হচ্ছে সংবিধান সংশোধনের প্রসঙ্গে। এই ব্যপারটা বোধহয় বিশ্ব ইতিহাসে প্রথম যে নবীন প্রজন্মের থেকে শিখতে চাইছে প্রবীনেরা। নবীনেরা যেভাবে বিভিন্ন মতাবলম্বী মানুষকে একত্রিত করে এই বিপ্লব সম্পন্ন করেছে তা এক কথায় অসাধারণ। ইসলামপন্থী ও বাম্পন্থীরা এই ক্ষেত্রে এক যোগে কাজ করেছে। বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের উপদেষ্টা ও ছাত্র সমন্বায়ক মাহফুজ আলম আবদুল্লাহ বারবার জোর দিয়েছেন এই হেপাজত-শাহবাগী বা ইস্লামপন্থী-বাম্পন্থীদের ঐক্যকরণের বিষয়টাতে। আন্দোলন কর্মসূচীর নেতাদের নেতা না বলে সমন্বায়ক বলা হয়েছে যা আন্দোলনকারীদের ও নেতাদের মধ্যেকার পার্থক্য ঘোচাতে সাহায্য করেছে। সমন্বায়কদের যে কজনকে সামনে দেখা গেছে তাদের মধ্যে সারজিশ আলম ও হাসনাত আবদাল্লাহ-এর লেখা পড়ে ও বক্তব্য দেখে মনে হয়েছে তারা ইসলামপন্থী, আবার নাহীদ-এর বক্তব্য শুনে মনে হয়েছে সে বামপন্থী। এভাবে বিভিন্ন আদর্শের মানুষ কিভাবে একসঙ্গে কাজ করতে পারল তা বোঝা গুরুত্বপূর্ণ। আগের প্রজন্মগুলো এইভাবে বিভিন্ন আদর্শের মানুষকে এক করতে ব্যর্থ হয়েছে। হয়তো এর কারণ লুকিয়ে আছে জেন জি-র কাছে তথ্যের প্রতুলতার মধ্যে। ইন্টারনেট থেকে যে কোনও বিষয়ে তথ্য অনায়াসে চলে আসে জেন জি-র কাছে। আগের প্রজন্মগুলো এত সহজে তথ্য পেতনা। বুমার ও জেন এক্স তথ্যের জন্যে অনেক বেশি নির্ভর করত শিক্ষলয় (অর্থাৎ সরকার), সংগঠন ও বই-এর ওপর। ফলে তারা প্রচণ্ডভাবে বিশেষ আদর্শে ইন্ডক্ট্রিনেটেড হতো। এক আদর্শের মানুষ অন্য আদর্শের মানুষের প্রতি বৈরিতামূলক মনোভাব রেখে চলত। ফলে এক সঙ্গে তারা কাজ করার কথা ভাবতে পারতনা। কিন্তু জেন জি অল্প বয়স থেকেই বিভিন্ন আদর্শের লেখা ও ভিডিও ইন্টারনেট থেকে পেয়ে যায় আর তাই কোনও বিশেষ আদর্শের প্রতি ঝোঁক থাকলেও অন্য আদর্শের প্রতি চরম বৈরিতামূলক মনোভাব পোষণ করেনা। এই প্রজন্মের সবাই প্রায় কম বেশি নানা আদর্শের সমাহার। শত্রু হিসেবে আওয়ামী ও ভারত যেহেতু স্থীর ছিল, জেন জি-র সকলের এক হয়ে জোট বাঁধতে অসুবিধে হয়নি। আগের প্রজন্মগুলো এই কাজটাতেই ব্যর্থ হয়েছে।
তবে একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হোল এই আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল মেধা ভিত্তিক সরকারী চাকরী হওয়ার প্রসঙ্গে। মনে রাখা দরকার এই মেধা প্রসঙ্গে ২০১৮ সালেও ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে আওয়ামী সরকারকে কোটা তুলে নিতে বাধ্য করেছিল। সেই কোটা হাইকোর্ট মারফত আওয়ামী সরকার ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করাতেই কিন্তু ছাত্র জনতা মেধার ভিত্তিতে সরকারী চাকরীর দাবীতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন শুরু করে। গুরুত্বপূর্ণ প্রসঙ্গ হোল মেধার ভিত্তিতে আন্দোলনে মানুষ যত সহজে রাস্তায় নেমেছে, দীর্ঘ ১০ বছর ধরে নির্বাচন না হওয়ার জন্য কিন্তু এত বড়ো আন্দোলন হয়নি। এর কারণ হয়তো এই যে বিরোধী দলগুলোর ওপরে মানুষের যথেষ্ট ভরসা ছিলনা। কিন্তু মেধা ভিত্তিক সমাজ গঠনের প্রতি মানুষের যথেষ্ট আস্থা আছে। তবে আন্দোলনকে পেছন থেকে অবশ্যই বিএনপি এবং জামাত তাদের ক্যাডার নামিয়ে সাহায্য করে কিন্তু দলীয় ব্যানার আনতে পারেনি।
মেধার ভিত্তিতে সরকারী চাকরী বন্টনের বিষয়টা এতোটাই শক্তিশালী বাংলাদেশের সমাজে যে নারীও ১০% যে নারী ভিত্তিক কোটা ছিল তা নিতে অস্বীকার করে। এবং আন্দোলনের দাবী মতো নারী কোটা ০% করে দেওয়া হয়। এই বিষয়টা বিশ্ব জুড়ে যে নারীর স্বশক্তিকরণ প্রক্রিয়া চলছে তার বিপরীত। দুনিয়া জুড়ে যে মতবাদ এখন প্রচলিত তা হোল নারী দীর্ঘ সময় ধরে বঞ্চিত ও অবদমিত আর তাই নারীকে সবকিছুতে পুরুষের থেকে বেশি সুযোগ দিতে হবে। কিন্তু এই ধারণাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে বাংলাদেশের জেন জি নারীরাই প্ল্যাকার্ড হাতে বলেছে "নারী যেখানে অগ্রসর, কোটা সেখানে হাস্যকর"। বাংলাদেশের জেন জি নারী জানিইয়ে দিয়েছে যে শেষ ৫৩ বছরে নারীর পক্ষে কোটা থাকার ফলে বাংলাদেশের নারীর যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে এবং ৫৩ বছর পরে আর নারীর স্বশক্তিকরণের জন্য কোটার দরকার নেই। আসলে ৫৩ বছর পরেও কোটা লাগলে বুঝতে হবে যে কোটা দিয়ে পিছিয়ে পড়া অংশকে সামনে এগিয়ে আনা যাচ্ছেনা। বাংলাদেশ ২০২৪ বিপ্লব-এ নারীর কোটা বিরোধী অবস্থান সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যা এই বিপ্লবকে বিশ্বের প্রচলিত গতি থেকে আলাদা করে। নারীর এই আন্দোলনে যথেষ্ট ভূমিকা ছিল। নারীরাই প্রথমে এগিয়ে যায় এবং আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্র লীগের মার হজম করে। আর এই ঘটনাই বাংলাদেশের সমগ্র ছাত্র সমাজকে উত্তাল করে তোলে। এছাড়াও আন্দোলনে শ্লোগান দেওয়ার সময় থালা আর চামুচ বাজিয়ে মূর্ছনা আনার মতো অভিনব বিষয় নিয়ে আনে তারা।
মনে রাখা দরকার নারীর কোটা ছাড়াও বিভিন্ন সংখ্যালঘু জাতির জন্যে কোটা রাখার প্রবণতা পশ্চীমের গণতন্ত্রগুলোতে বাড়ছে। এর একটা বড় কারণ পশ্চীমা সমাজে মূল সংখ্যাগুরু যে শ্বেতাঙ্গ জাতি তাদের জন্মহার অত্যন্ত কম এবং তাই তাদের জনসংখ্যার শেয়ার কমে যাচ্ছে। আর তাই উৎপাদন ও ভোটব্যাঙ্ক হিসেবে সংখ্যালঘু জাতিগুলোর গুরুত্ব বেড়ে যাচ্ছে। তাই এই সমস্ত সংখ্যালঘু জাতিগুলোকে দলে নিতে পশ্চীমের বহু দলীয় গণতন্ত্রগুলো তাদের জন্য কোটার ওকালতি করে। অর্থাৎ আধুনিকতার দুই বাহু যে বাহু - প্রতিনিধিত্বমূলক সরকার ও মেধা বা যোগ্যতা অনুযায়ী প্রাপ্তি - তার এক বাহু মেধা অনুযায়ী প্রাপ্তি অকেজ হয়ে পড়ছে। বাংলাদেশে সংখ্যাগুরু বাঙালি মুসলমানেদের জনসংখ্যার শেয়ার বেড়েছে শেষ ৫৩ বছরে। বর্তমানে এই শেয়ার ৮৯%। আর তাই সংখ্যালঘু জাতিগুলোকে খুশি করার দায় সমাজের নেই। জাতিগত ও উপজাতিগত বিভেদ কম থাকায় মেধা অনুযায়ী প্রাপ্তি তত্ত্ব খুব স্বাভাবিকভাবেই জায়গা পাচ্ছে বাংলাদেশে। বাংলাদেশের এই ঘটানা ইউরোপের ঐতিহাসিক গতির সাথে মিলে যায়। ১৬শ শতকের প্রথম দিক থেকে ১৭শ শতকের মধ্যভাগ পর্যন্ত ক্যাথোলিক প্রটেস্টান্ট যুদ্ধ ও ভাষার প্রমিতকরণের মধ্য দিয়ে পঃ ইউরোপ জুড়ে একভাষি এক ধর্মের জাতি রাষ্ট্র গড়ে ওঠে। তারপরেই কেবল ১৭শ শতকের শেষে ইংল্যাণ্ড বিপ্লব এবং ১৭৭৬ সালে মার্কিন বিপ্লব ও ১৭৮৯ সালে ফরাসী বিপ্লব যোগ্যতা অনুযায়ী প্রাপ্তি তত্ত্বকে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়।
মেধা অনুযায়ী সরকারী চাকরী বন্টন-এর আন্দোলন কি ক্রমেই মেধাতাত্রিক সরকার গঠনের জন্য আন্দোলন শুরু করবে? অর্থাৎ শুধু সরকারী কর্মচারীরাই নয়, সাংসদদের ও মন্ত্রীদেরও মেধার প্রমাণ দিতে হবে কি? বিএনপি সভাপতি তারেক রহমান দ্বীকাক্ষিক সরকার তৈরি করার কথা বলেছেন। এবং এক কক্ষে থাকবে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা আর একটি কক্ষে থাকবে এমন লোকেরা যারা নির্বাচিত নন কিন্তু কোন না কোনভাবে নিজেদের মেধা প্রমাণ করেছেন। জামাত সভাপতিও বলেছেন দেশ চালাবে মেধাবীরা। অর্থাৎ বাংলাদেশ হয়তো বহু দলীয় নির্বাচন ব্যবস্থার সাথে চীনের মেধাতন্ত্রকে মেলাবার চেষ্টা করবে আগামীদিনে। ছাত্ররা মেধাতান্ত্রিক সরকারের কোনও আভাস দেয়নি এখনো। এটা ছাত্রদের বিশাল ব্যর্থতা।
১৮ই জুলাই-এর পরে যখন অধিকাংশ সমন্বায়কদের কিডন্যাপ করে নিয়ে গেছিল আওয়ামী সরকার, যখন মনে হচ্ছিল আন্দোলনকে দমন করতে সক্ষম হয়েছে সরকার, এরকম সময়েই বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে নতুন আন্দোলনের ঢেউ ওঠে। প্রচুর মৃত্যু বরণের মধ্য দিয়ে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা নতুন করে আন্দোলনকে দাঁড় করিয়ে দেয়। বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীদের সরকারী চাকরী নিয়ে চিন্তা থাকার কথা নয়। তাদের আন্দোলনে যোগ দেওয়ার কারণ বলাই যায় সরকারের দমনের ফলে যে বিশাল মৃত্যু মিছিল হয়েছে, তার বিরুদ্ধে। অপেক্ষাকৃত উচ্চ ও উচ্চমধ্যবিত্ত ছাত্রছাত্রীরা যেভাবে অপেক্ষাকৃত নীম্ন ও নীম্নমধ্যবিত্ত ছাত্রছাত্রীদের শুরু করা আন্দোলনের লাগাম হাতে নিয়ে নেয় তার নজিরও খুব বেশি বিশ্ব আন্দোলনে নেই। তবে শোনা যায় বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও সমন্বায়ক নির্বাচন শুরু হয়ে গেছিল মেধা আন্দোলন শুরু হওয়ার পরে পরেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের চারপাশে ছাত্রছাত্রীরা ভাড়া বাড়িতে থাকত সেখানেও বেসরকারী ও সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে একটা গাটছড়া তৈরি হয়ে যায়। বিপ্লব শেষে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা সরকারে বা রাজনীতিতে যোগ দেওয়ায় খুব আগ্রহ দেখায়নি। তবে অনেক বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বায়ক অবশ্য জানিয়েছে যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বায়করা তাদের সরকারে যোগ দেওয়া নিয়ে কিছু জানায়নি এবং বলা যায় তাদেরকে সাইড করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা। এই উচ্চ ও উচ্চমধ্যবিত্ত শ্রেণির ছাত্রদের প্রাণ দিয়ে আন্দোলনকে সফল করা এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এর থেকে এই আন্দোলনের একটা শ্রেণিগত ও প্রজন্মগত (জেন-জি) দিক উঠে আসে যা নিয়ে আমরা পরে আলোচনা করব।
১৮ই জুলাই-এর পরে শ্রমিক শ্রেণির অংশগ্রহণও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেবল পাট ও গার্মেন্টস শিল্পের সংগঠিত শ্রমিকেরাই নন ঢাকার রাস্তার অজস্র পথশিশু (যাদের বয়স ১২ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে) ও অজস্র পথ যুবক (যাদের বয়স ১৮ থেকে ২৪-এর মধ্যে) যারা অসংগঠিত শ্রমিক, তারাও এই আন্দোলনে নামেন এবং মৃত্যু বরণ করেন। এই আন্দোলনে যে ২০০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে তার ৬৫%ই হোল এই সংগঠিত ও অসংগঠিত শ্রমিক। তাছাড়া ঢাকার রিকসওয়ালারাও বিশাল অবদান রাখে আন্দোলনে আহতদের বিনা পয়সায় হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে। ঢাকার অলিতে গলিতে রিকসা। রিকসা বলা যায় ঢাকার যান চলাচলের অন্যতম ভিত্তি। তাই রিকসাওয়ালাদের সহযোগিতার ফলে আন্দোলনকারীরা চিকিৎসা পায় অনেক সহজে এবং তা আন্দোলনকারীদের মনোবল অনেক বাড়িয়ে দেয়। এছাড়াও ১৮ঈ জুলাই-এর পরে মাদ্রাসার ছাত্ররাও অনেক রক্তের বিনিময়ে এই আন্দোলন সফল করে। মূলত শ্রমিক শ্রেণির ঘরের ছেলেরাই মাদ্রাসায় পড়াশুনা করে থাকে।
কিন্তু বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে কি আন্দোলনকে নীরবে সমর্থন দেওয়ার লোক ছিল? যেভাবে আন্দোলন দমনে ১৭ই জুলাই ২০২৪-এ রাষ্ট্রসঙ্ঘ-এর গাড়ি ব্যবহার করা হয় আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের সামনে তাতে যথেষ্ট সন্দেহ জাগে যে রাষ্ট্রের ভেতর থেকেও অন্তর্ঘাত হয়েছে। বলা হয় ৩রা, ৪র্থ ও ৫ই অগাস্ট বহু জায়গায় সেনাবাহিনী আন্দোলনকারীদের সঙ্গী হয়ে পুলিশের সাথে গুলি বিনিময় করেছে। ডিজিএফআই (বাংলাদেশের গুপ্তচর বিভাগ) অনেক আগে থেকেই "বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন"-এর নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছিল। অন্যতম সমন্বায়ক মাহফুজ আলম ছিল ফারহাদ মাজহার-এর রাজনৈতিক ক্লাসের রেগুলার ছাত্র। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অঙ্গ আসিফ নজরুল, আসিফ মাহমুদ ও নাহিদ ইসলাম না কি "ছাত্র শক্তি" বলে এক সংগঠন চালিয়ে আসছিল এক বছর ধরে। এই আসিফ নজরুল যিনি কি না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, তিনি এক সময় আওয়ামীর পক্ষে জামাতের বিরুদ্ধে "ঘাতক নির্মূল কমিটি"-এর অন্যতম মুখ হিসেবে কাজ করেছেন। আবার সমন্বায়ক সারজিস আলম আগে ছিল ছাত্র লীগ-এর নেতা। অজস্র ছাত্র লীগের নেতা বিপ্লবের পরে নিজেদের গুপ্ত জামাত কর্মী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।
এরপরে আসি কিছু ইউটিউবার-এর কথায় যাদের এই বিপ্লবে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। নিয় ইয়র্ক থেকে প্রায় ৭ বছর ধরে হাসিনা বিরোধী প্রচার চালাতেন সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন। তার সঙ্গে যে হাসিনা বিরোধী ডিজিএফআই কর্মীরা যুক্ত ছিল তা তার তদন্তমূলক সাংবাদিকতা দেখলেই বোঝা যায়। তিনি আওয়ামী নেতা ও আমলাদের যৌন কেচ্ছা ও আর্থিক দুর্নীতি দারুণভাবে তুলে ধরতে সমর্থ হন বাংলাদেশের মানুষের কাছে। এর পরেই নাম আসে পিনাকী ভট্টাচার্যের। তিনি বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির প্রাক্তন সদস্য কিন্তু দারুণভাবে ইসলামী আন্দোলনের বাচন ও ন্যারেটিভের সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করে কথা বলতে পেরেছেন। প্যারিস থেকে উনি ইউটিউবে প্রচার চালাতেন। মালদ্বীপের ভারত হটাও আন্দোলনে অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি ভারতের পণ্য বর্জনের ডাক দেন এবং এই ডাকের বাংলাদেশের মানুষকে ভারত বিরোধী করে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। কোটা বিরোধী আন্দোলন ৪ঠা জুলাই শুরু হওয়ার পর থেকে পিনাকী বাবু এই আন্দোলনকে হাসিনার ভারত হটাও আন্দোলন থেকে মোড় ঘোড়ানোর আন্দোলন হিসেবে চিহ্নিত করেন। কিন্তু আন্দোলন যখন সফল হোতে থাকে তখন পিনাকী বাবু এই আন্দোলনের পক্ষে চলে আসেন। তিনি ছাত্র সমন্বায়কদের ব্লকেড শব্দ ব্যবহারকে কলকাতা মুখীনতা বলায় সমন্বায়ক মাহফুজ আলম আব্দুল্লাহ=এর সঙ্গে ফেসবুকে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন ১১ই জুলাই। এর ফলে ছাত্র সমন্বায়কদের অনেকেই তাকে অপছন্দ করে। আর তার ভিডিও দেখে অনেকেই তার সঙ্গে হেফাজত-এ-ইসলাম-এর যোগাযোগ খুঁজে পান। নিউ ইয়র্ক থেকে কণক সারোয়ার নামক সাংবাদিকও বাংলাদেশের মানুষকে আওয়ামী বিরোধী করে তুলতে যথেষ্ট কার্যকর ভূমিকা রাখেন। এরা তিনজন আওয়ামীর পক্ষে থাকা মূল্ধারা মিডিয়া (প্রথম আলো, ডেইলি স্টার, জমুনা, একাত্তর)-কে রীতিমতো গুরুত্বহীন করে দেয় বাংলাদেশীদের কাছে।
বিদেশী শক্তির হাত ছিল কি না সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। ভারত বারবার বলে আসছে ৫ই অগাস্টের বিপ্লবের পেছনে কাজ করছে পাকিস্তান, চীন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। মালদ্বীপে "ভারত হটাও" আন্দোলন করে নির্বাচন জিতে ক্ষমতায় আসে মইজু। তিনি ভারতের সেনা ও হেলকপ্টার মালদ্বীপের মাটি থেকে সরিয়ে দেন। ভারতের বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর তখন বলেন কিছু শক্তি ভারত বিরোধী আন্দোলনের পেছনে আছে এবং আরও কিছু শক্তি এই পেছনে থাকা শক্তির পেছনে আছে। এখানে জয়শঙ্কর বলার চেষ্টা করেছিলেন যে ভারত বিরোধী আন্দোলনের পেছনে চীন আছে আর চীনের পেছনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও আছে। কিছু দিন ধরেই খালিস্তানী নেতাদের কানাডার মাটিতে হত্যা করা নিয়ে কানাডা ও মার্কিন সরকার ভারতের ওপর রেগে আছে। এমনকি ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা আজিত দোভাল-এর বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানাও জারি করেছে মার্কিন সরকার। ভারতের বর্তমান শাসক মোদীর অন্যতম কাছের ব্যবসায়ী আদানীর বিরুদ্ধেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিয়ে চলেছে একের পর এক পদক্ষেপ। অথচ এই আদানীর বন্দর ব্যবসা-কে মনে করা হচ্ছিল চীনের বন্দর ব্যবসার একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রতিযোগী। আদানী ইসরাইল-এর হাইফা বন্দরে কাজ শুরু করে মার্কিন সরকার চীনের কোম্পানীকে হাইফা বন্দর দিতে ইসরাইল-কে নিষেধ করায়। আদানী ভিয়েতনামেও চীনের কাছে বন্দর বানাচ্ছে যা মার্কিন সরকারকে খুশি করার কথা। তবে মোদী সরকার উইক্রেইন যুদ্ধ উপলক্ষ্যে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞাকে অস্বীকার করার ফলেই মার্কিন সরকার ভারতের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে এমন অনেকেই মনে করেন। আবার অনেকে মনে করেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যে হিন্দুত্ববাদী ভারতীয় শক্তিশালী গোষ্ঠী আছে তারা ট্রাম্প সমর্থক এবং তারা বর্তমানে মার্কিন শ্বেতাঙ্গবাদী ও জায়নবাদী গোষ্ঠীর সাথে মিলিত হয়ে ডেমোক্র্যাট মেনিফেস্টোর বিরোধীতা করছে। এমনকি তারা রুশ রাষ্ট্রপতি পুতিন-এর সাথেও গোপনে যুক্ত। অর্থাৎ ভারতের হিন্দুত্ববাদীরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সরকার বদল ও সরকারকে নিয়ন্ত্রণ করার কাজে যুক্ত। আর তাই ভারতের শাসন থেকে হিন্দুত্ববাদীদের হটাতে চায় মার্কিন ডেমোক্র্যাট সরকার। আবার অনেক বিশেষজ্ঞের মতে ভারত চীনের বিরুদ্ধে লড়াই করতে চায়না বরং চীনের জুজু দেখিয়ে মার্কিন সরকারের থেকে প্রযুক্তি পুঁজি ব্যবসা হাতিয়ে নিতে চায়। আর এই মনোভাব বুঝতে পেরেই মার্কিন সরকার ভারত সরকার-কে বুঝিয়ে দিচ্ছে যে হয় চীনের সাথে লড়াই-এর জন্য প্রস্তুত হও, নয়তো ভারতকে নানাদিক থেকে কোণঠাসা করে ফেলা হবে। যেই কারণেই হোক ভারতকে কোণঠাসা করতে বাংলাদেশের ৫ই অগাস্ট বিপ্লবে মার্কিন ভূমিকা থাকতেও পারে। ২০০৭ সালের ১/১১ ক্যু-এর পরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে ইউনূস-কে তুলে ধরার চেষ্টা করেছিল তাতে এমন ধারণা হতেই পারে। তবে এও ঠিক যে নোবেল বিজয়ী হিসেবে ইউনূস সর্বজন গ্রাহ্য। তাই তাকে প্রধান হতে অনুরোধ করাটা স্বাভাবিক। মনে রাখা দরকার তার নাম প্রস্তাব করেছিল "বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন"-এর নেতৃত্ব। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দঃ এশিয়া বিষয়ক উপদেষ্টা ডোনাল্ড লু বর্তমান সরকারকে মার্কিন সামরিক সরঞ্জাম কিনতে বলেছে। এবার দেখার বিষয় চীনকে সরিয়ে মার্কিন সরঞ্জাম কেনে কিনা বর্তমান ইউনূস সরকার। কিন্তু শোনা যাচ্ছে ইউনূস সরকার চীনের থেকেই ১৬টা ৪র্থ প্রজন্মের জে-১০সি নামক সামরিক জেট বিমান কিনতে চলেছে। তাহলে কি চীনই ৫ই অগাস্ট বিপ্লবের নেপথ্যে। মনে রাখা দরকার শেখ হাসিনা চীনে গেছিলেন চার দিনের জন্যে। কিন্তু দু দিনের মাথায় ১০ই জুলাই তিনি ফিরে আসেন। ভারতের সংবাদমাধ্যম জানায় যে হাসিনাকে রাষ্ট্রপতির প্রাপ্য প্রোটোকল চীন দেয়নি। তবে কি চীন জানতো হাসিনা আর প্রধান থাকবেনা বাংলাদেশের? শেখ হাসিনা যেভাবে ভারতকে বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে রেল লাইন তৈরি করতে দিয়েছিলেন তাতে চীনের যথেষ্ট রেগে যাওয়ার কারণ ছিল। এই রেল লাইন হয়ে গেলে চীনের ডোকালাম দিয়ে চিকেন নেকের ঘাড়ে নিশ্বাস নেওয়ার পরিকল্পনা ভেস্তে যেত। আর বাংলাদেশের সামরিক বিভাগে চীনের গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি ছিলই। বাংলাদেশ সেনা কোনও দিনই চীনের সঙ্গে সম্পর্ক কমায়নি শেষ ১৫ বছরে বরং বাড়িয়েছে। ভারতের সংবাদমাধ্যম জানায় যে "র" না কি হাসিনা-কে বর্তমান সেনাপ্রধান ওয়াকার উজ জামান সম্পর্কে সাবধান করেছিল এই বলে যে ওয়াকার চীনের অত্যন্ত কাছের লোক।
কোন পথে যাচ্ছে বাংলাদেশ?
বিপ্লব পরবর্তী অন্তর্বর্তীকালীন যে সরকার তৈরি হয়েছে তার অন্যতম দায়িত্ব হোল নতুন সংবিধান সৃষ্টি এবং বেশ কিছু সংস্কার। ছাত্র নেতারা চাইছেন সংস্কার সম্পন্ন করে নির্বাচনে যেতে আর প্রধান দলগুলো যেমন বিএনপি ও জামাত-এ-ইসলামী চাইছে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নির্বাচন। বিএনপি ও জামাত মনে করে যে ইউনূস ও ছাত্ররা "নাগরিক শক্তি"র মতোই কোনও নতুন দল গোছাতে সময় নিচ্ছে আর তা চাইছে সংস্কারের ছুতো ধরে। ভারতও চাইছে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নির্বাচন। আর এখানেই অনেকে ছাত্র নেতা ও বিপ্লবী জনতা মনে করছে যে বিএনপি জামাত ভারতের সাথে হাত মিলিয়ে নিয়েছে। বিএনপি নেতাদের নামে অভিযোগ তারা বহু আওয়ামী নেতাদের লুকিয়ে রেখেছে টাকার বিনিময়ে, সামরিক কর্তারা নাকি টাকার বিনিময় অনেক আওয়ামী নেতাদের ভারতে পালাতে সাহায্য করেছে এবং জামাত নাকি বহু আওয়ামী নেতা কর্মীদের নিজেদের দলে ঢোকাচ্ছে। শুধু তাই নয় বিএনপি ও জামাত চাইছে আওয়ামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। ছাত্র ও বিপ্লবী জনতারা চাইছে আওয়ামী লীগ-কে ব্যান করতে। বিএনপি চাইছে সংবিধানের মূলধারা অক্ষুণ্ণ রাখতে আর ছাত্রজনতা চাইছে সংবিধানের আমূল পরিবর্তন। ছাত্র নেতারা ছাত্র লীগকে ব্যান করতে সক্ষম হোলেও আওয়ামীকে ব্যান করাতে বা রাষ্ট্রপতি চুপ্পু-কে অপসারণ করতে ব্যর্থ হয়। মাঠে বিএনপি এখন যে ক্যাডার সমাগম করতে পারছে, ছাত্র নেতারা তা পারছেনা। ফলে বিএনপি-কে অস্বীকার করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার চলতে পারছেনা। ছাত্র সমন্বায়কদের এই ব্যর্থতার কারণ নিয়ে আমরা পরে আলোচনা করব।
বর্তমান ইউনূস সরকার আসলে পুরনো দলগুলো এবং নতুন ব্যবস্থা চাওয়া ছাত্র জনতার মধ্যে একটা সমঝৌতা স্থাপনকারী। কিন্তু এখানে মূল প্রশ্ন পুরনো দলগুলো কি ধরে রাখতে চাইছে আর কেন আর নতুন ব্যবস্থা চাওয়া মানুষ কি নতুনত্ব চাইছে? (এখানে মনে রাখা দরকার যে নতুন ব্যবস্থার দাবি পুরনো দলগুলোর মধ্যেও আছে।) পুরনো দলগুলো ঠিক কি ধরে রাখতে চাইছে তা বুঝতে গেলে ফিরে যেতে হবে ইতিহাসে। বাংলাদেশে এখন ৮৯% বাঙালি মুসলমান, ৮% বাঙালি হিন্দু ও ৩% অন্যান্য জাতি। ইরানের সিস্তান প্রদেশ থেকে আসা ইলিয়াস শাহ ব্রাক্ষণ কন্যা পুষ্পবতী ভট্টাচার্য-এর পাণি গ্রহণ করেন এবং ১৩৫৩ সালে তিনি স্বাধীন বাংলা সালতানাত তৈরি করেন দিল্লির সুলতানকে একডালার যুদ্ধে পরাস্ত করে। বাঙালি মুসলমান তখন থেকেই স্বাধীন রাষ্ট্রের পিয়াসী। ১৫৭৫ সালে শেষ স্বাধীন বাংলার সুলতান দাউদ খান কুররাণি দিল্লির মোঘলদের কাছে রাজমহলের যুদ্ধে পরাজিত হন। ১৭০৭ সালের পরে মোঘল সাম্রাজ্য দুর্বল হয়ে পড়লে তারা আস্তে আস্তে স্বাধীনতার দিকে পা বাড়াচ্ছিল কিন্তু শেষমেশ ব্রিটিশদের হাতে পরাভূত হয়। বাঙালি হিন্দু ব্যবসায়ীরা ব্রিটিশদের সাহায্যে বাংলার জমিদারী কিনে বসে। ব্রিটিশ ও বাঙালি হিন্দু জমিদার ঐক্যের সামনে তীতু মীর বা দুধু মিয়ার লড়াই টিকতে পারেনি বেশি দিন। কিন্তু পশ্চীমি শিক্ষায় শিক্ষিত বাঙালি হিন্দুর সঙ্গে ১৮৭০ সাল থেকে যখন দূরত্ব তৈরি হয়েছিল ব্রিটিশদের, তখনও বাঙালি মুসলমান বাংলার স্বাধীনতাকে সবার ওপরে তুলে ধরে। ১৯১৮ সালে রবীন্দ্রনাথ যখন হিন্দিকে ভারতের সাধারণ ভাষা হিসেবে চান তখন বাঙালি মুসলমান ভাষাবিদ ডঃ শহীদুল্লাহ সাধারণ ভাষা হিসেবে বাংলার দাবি পেশ করেন। ১৯২৬ সালে কোলকাতার ইসলামীয়া কলেজের ছাত্র নির্বাচনে বাঙালি মুসলমান ছাত্ররা উর্দুভাষী মুসলমান ছাত্রদের পরাজিত করে। বাঙালি মুসলমানদের লক্ষ্য ছিল একদিকে বাঙালি হিন্দু জমিদারী উচ্ছ্বেদ আর অন্যদিকে বাংলা ভাষা ও রাষ্ট্রের স্বাধীন ঐতিহ্য যা ইলিয়াস শাহ তৈরি করেন তা অক্ষুণ্ণ রাখা। ১৯৪৭-এ যুক্ত বাংলার মুসলমান নির্বাচিত প্রতিনিধিদের প্রায় সকলেই যেখানে স্বাধীন যুক্ত বাংলার পক্ষে ভোট দেন সেখানে পঃ বঙ্গের হিন্দু প্রতিনিধিরা বাংলা ভাগের পক্ষে রায় দেন। ফলে পশ্চীম ও পূর্ব দুই বাংলাই যথাক্রমে হিন্দি ও উর্দু খপ্পরে পড়ে। এই জন্যেই ছাত্র সমন্বায়ক (ইউনূসের মতে মাস্টারমাইণ্ড) মাহফুজ আলম আবদাল্লাহ বলেছেন যে ১৯৪৭ সালে স্বাধীন যুক্ত বাংলা তৈরি করতে ব্যর্থ হওয়ার পরে বাঙালি মুসলমানের পাকিস্তানের আকাঙ্খা ছিলনা, বরং ছিল পূর্ব পাকিস্তানের আকাঙ্খা যার মূল উদ্যেশ্য ছিল জমিদারি প্রথার উচ্ছ্বেদ। এই জন্যে বাঙালি নীম্ন বর্ণের হিন্দুরাও পূর্ব পাকিস্তানকে সমর্থন করে। একথাও সত্য যে পশ্চীম পাকিস্তানে আজও পাঞ্জাব ও সিন্ধে জমিদারেরা শক্তিশালী এবং উর্দু জমিদারেরাই মূলত মুসলিম লীগের পৃষ্টপোষক ছিল। তাই বলাই যায় পূর্ব পাকিস্তানের আকাঙ্খা ও পশ্চীম পাকিস্তানের আকাঙ্খা প্রথম থেকেই আলাদা ছিল। পশ্চীম বঙ্গ-এর বাঙালিরা ব্যবসা ও ভোট ব্যাঙ্ক দুই দিক দিয়েই হিন্দিভাষিদের আধিপত্যের মুখে পড়ে। পূর্ব বঙ্গ বা পূর্ব পাকিস্তান-এর বাঙালিরা ভোট ব্যাঙ্কের দিক দিয়ে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ জাতি ছিল পাকিস্তান রাষ্ট্রে কিন্তু ব্যবসার দিকে পাঞ্জাবী সিন্ধী বিহারীরা এগিয়ে ছিল। সুতরাং বলা যায় ১৯৪৭-এ বাঙালি মুসলমান বাঙালি নীম্ন বর্ণের হিন্দুদের সাথে নিয়ে বাঙালি উচ্চ বর্ণের জমিদারদের উচ্ছ্বেদ করে আর ১৯৭১-এ পাঞ্জাবী সিন্ধি বিহারী সহ সমস্ত উর্দুভাষীদের হটিয়ে তাদের ব্যবসা দখল করে। এভাবে দুই বার আদি পুঁজির সঞ্চয়ের মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সাল থেকে বাংলাদেশে গড়ে ওঠে একটা লুটেরা বাণিয়া পুঁজিপতি শ্রেণি যাদের পুঁজির উৎস উৎপাদন নয়, বরং লুট বাণিজ্য তোলাবাজি মজুতদারি। ১৯৭১ সাল থেকে এই শ্রেণিটাই ক্ষমতায় আছে। এই মজুতদার বাণিয়া লুটেরা পুঁজিপতিরাই আবার ভারতের বাণিয়া পুঁজি ও বিশেষ করে কোলকাতার মাড়োয়াড়ি বাণিয়া-দের সাথে সম্পর্কযুক্ত। এছাড়াও পূর্ব পাকিস্তান সেনাবাহিনী যা পরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী হয় তারাও জিয়া উর রহমান-এর ২৭-শে মার্চ-এর স্বাধীনতা ঘোষণার সময় থেকেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় আছে। ১৯৭৫ সালে মুজিবুর রহমান-এর জনপ্রিয়াতা কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ ছিল মজুতদারির ফলে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্যবৃদ্ধি। জানুয়ারি, ১৯৭৫ সালে সিরাজ সিকদারকে হত্যা করার কারণও ছিল তার মজুতদারদের ও ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরোধিতা। মেজর ডালিম শেখ মুজিব-কে হত্যা করেন। যদিও কথিত আছে যে মুজিব-এর বড়ো ছেলে শেখ কামাল ডালিম-এর সুন্দরী স্ত্রীকে তুলে নিয়ে গেছিল বলেই ডালিম এবং সেনাবাহিনীর একটা অংশ তার প্রতিশোধ নেয়, কিন্তু অনেকেই বলেছেন যে সিরাজ সিকদার-এর সঙ্গে মেজর ডালিম-এর যোগ ছিল বলেই তাকে শিক্ষা দিতে কামাল তার স্ত্রীকে তুলে নিয়ে যান। যাই হোক, ১৯৭৫ সালের ক্যু ছিল কিছু বিদ্রোহী সেনা অফিসারের এই মজুতদার শ্রেণি ও ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ। মানুষের নিঃশব্দ সমর্থন থাকলেও সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিলনা তাতে। ফলে মজুতদার শ্রেণি ক্ষমতা ধরে রাখতে সক্ষম হয়। এদিকে আস্তে আস্তে বাংলাদেশে একটা উৎপাদক বুর্জোয়া শ্রেণিও গড়ে ওঠে। বিশ্বায়ণের প্রভাবে গার্মেন্টস, ইলেকট্রনিকস, জাহাজ কাটার ও জাহাজ নির্মাণ শিল্প গড়ে উঠতে শুরু করে। বিশ্ব পুঁজির সাথে হাত মিলিয়ে ক্রমেই নারীর শ্রম বাজারে অংশগ্রহণ দারুণভাবে বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয় তারা। বর্তমানে ৩৫% থেকে ৪০% বাংলাদেশি নারী শ্রম বাজারে অংশগ্রহণ করে। ভারতে মাত্র ১৮% নারী শ্রম বাজারে অংশগ্রহণ করে থাকে। বাণিয়া লুটেরা মজুতদার শ্রেণি নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য উচ্চ রাখলেও চাষীদের আয় হয় সামান্য। ফলে গ্রাম থেকে কৃষি ছেড়ে শহরে শিল্প শ্রমিক হয়ে আসার প্রবণতাও খুব বেশি থাকে বাংলাদেশে। ফলে লুটেরা বাণিয়া পুঁজি, উৎপাদক পুঁজি ও বিশ্ব পুঁজির মধ্যে একটা ঐক্য ছিল। কিন্তু ক্রমেই বাংলাদেশ উন্নয়নের এমন একটা পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে যখন উচ্চ মূল্যবৃদ্ধি শহর থেকে গ্রামে ফিরতে বাধ্য করছে শ্রমিকদের। একে তো বিশ্ব বাজারের উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি আবার তার সাথে বিদেশি মুদ্রার সঙ্কট। এর সাথে মজুতদারির প্রভাবে ও ভারতীয় স্বার্থে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির বিষয়টা উৎপাদক পুঁজি ও বিশ্ব পুঁজি আর মেনে নিতে রাজি নয়। তার ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বনাম চীন যে বাণিজ্য যুদ্ধ চলছে তাতে বিশ্ব পুঁজি উৎপাদন করার জন্য চীন প্লাস কৌশল নিতে বাধ্য হচ্ছে। এর অর্থ হল উৎপাদনের শেষ ধাপ চীন ব্যতিক্রমে অন্য কোনও দেশ থেকে করিয়ে আনা। এই ক্ষেত্রে পুঁজির পছন্দ এমন দেশ যার শুল্ক হার কম, উচ্চ শতাংশে শ্রম বাজারে অংশগ্রহণ, নীম্ন মুদ্রাস্ফীতি ও ভূগলিক অবস্থান চীন বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিকটে। এর ফলে চীন সহজেই শেষ ধাপের উৎপাদন পাঠিয়ে দিচ্ছে ভিয়েতনাম, লাওস, কাম্বোডিয়া, থাইল্যাণ্ড, মালেয়াশিয়া ও মেক্সিকোতে। মিয়ানমারে গৃহযুদ্ধ চললেও চীনের বর্ডার থেকে কাছিন, চীন হয়ে রাখাইন বা আরাকান এখন কাছিন ইণ্ডীপেন্ডেন্ট আর্মি (কে আই এ), চীন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (সি এন এফ) ও আরাকান আর্মি (এ এ)-এর দখলে। এই সমস্ত অঞ্চল মূলত পাহাড়ি জঙ্গল অঞ্চল এবং জনঘনত্ব বামেরদের থেকে অপেক্ষাকৃত কম। কিন্তু বাংলাদেশ ১৮ কোটি থেকে ২০ কোটি জনতার দেশ। সেখানে শুল্ক হার কম, উচ্চ শ্রম বাজার অংশগ্রহণ শতাংশ আছে, এবং চীন থেকে খুব দূরে নয়। এবার দেশিয় লুটেরা বাণিয়া মজুতদার পুঁজির বিষ দাঁত ভাঙ্গতে পারলেই বাংলাদেশকে চীন প্লাস কৌশলে আরও বেশি করে আনা যাবে। চীন প্লাস কৌশল ছাড়াও চীন চাইছে কম মূল্য যোগ করে এমন শিল্পগুলোকে কম জনপ্রতি আয়ের দেশে পাঠাতে এবং নিজে ইভি, সোলার প্যানেল, সেমিকণ্ডাক্টর, এ আই-এর মতো উচ্চ মূল্য যোগকারী শিল্পে মনোযোগ দিতে। তাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা চীনের সরাসরি অংশগ্রহণ থাকুক বা না থাকুক তারা ৫ই অগাস্ট বিপ্লবকে স্বাগত জানাচ্ছে।
ভারত অন্যদিকে উচ্চ শুল্ক হারের দেশ, শ্রম বাজারে অংশগ্রহণ কম আর ভূগলিক অবস্থান পূর্ব চীন (বিশ্ব উৎপাদনের প্রাণ কেন্দ্র পূর্ব চীন আর পঃ চীন মূলত মরুভূমী আর জনঘনত্ব অত্যন্ত কম আর তাই বিশ্ব উৎপাদনেরও উপযোগী না) বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিকটে নয়। ভারতের ১৪০ কোটি জনসংখ্যা তাই ভোক্তা হিসেবেই আদর্শ, শ্রমিক হিসেবে ততোটা নয়। চীন প্লাস কৌশল-এর সুবিধে তাই ভারত নিতে পারছেনা- এই কথা বলছে ভারতের "নীতি আয়োগ" নিজেই। এর সঙ্গে ভারতের আর একটা সমস্যা হল চীনের সঙ্গে তার ভূরাজনৈতিক প্রতিযোগিতা যার পরিণাম চীন উৎপাদনের শেষ ধাপ ভারতে বিনিয়োগ করতে চাইছেনা। চীন মার্কিন বাণিজ্য যুদ্ধের একটা বিষয় হল চীন প্লাস কৌশলের সুযোগ কোন দেশ নিতে পারবে তা নির্ণয় করা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রথমে চেয়েছিল চীনকে বাদ দিয়ে এমন দেশ খুঁজে নেওয়া যার সাথে তার ভূরাজনৈতিক ঐক্য হতে পারে। চীন শেষ ধাপের উৎপাদন করার জন্য প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ করে এমন দেশে যার সাথে তার ভূরাজনৈতিক বিরোধ নেই। চীন এই লড়াইতে জিতছে কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভারত-কে বা ফিলিপিন্স-কে আদর্শ উৎপাদন ক্ষেত্র বানাতে ব্যর্থ কিন্তু চীন মেক্সিকো, মালেয়াশিয়া, থাইল্যাণ্ড, লাওস, কাম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম-কে আদর্শ উৎপাদক বানিয়ে ফেলতে সক্ষম হয়েছে। ভারতের "নীতি আয়োগ" জানিয়েছে যে ভারতের উচিৎ ভিয়েতনাম ও থাইল্যাণ্ড-এর মতো চীনা বিনিয়োগের সাহায্যে চীন প্লাস কৌশলের সুবিধে নেওয়া কারণ চীনের থেকে যন্ত্রাংশ আমদানি করে উচ্চ শুল্ক বসিয়ে দেশে উচ্চ মূল্যের উৎপাদন করে ভারত এগিয়ে যেতে পারছেনা। কারণ সেই দ্রব্যের মূল্য বিশ্ব বাজারের মূল্যের তুলনায় অনেক বেশি। মানে চীন ভারতের যেই ক্ষেত্রের বিকাশ চাইবে কেবল সেই ক্ষেত্রের বিকাশই হওয়া সম্ভব, ভারত তার ইচ্ছে মতো ক্ষেত্রে বিকাশ ঘটাতে পারবেনা। ইন্দোনেশিয়াও চীনের বিনিয়োগ টানার পথেই এগোচ্ছে। মিয়ানমার অস্থিতিশীল বলেই হয়তো কাছিন, চিন প্রদেশ ও আরাকান বিদ্রোহীদের দিয়ে ক্রমেই স্বাধীন রাষ্ট্র করার দিকে এগোচ্ছে চীন। (মনে রাখা দরকার কাছিন, চীন, আরকান, ওয়া, ট্যাং, শান ইত্যাদি বিদ্রোহী নেতারা সবাই চীনে অবস্থান করে এবং চীন থেকেই অস্ত্র পায়। চীন মিয়ানমার জুন্টা সরকারকেও অস্ত্র দেয়। এবং এই স্বাধীনতাকামী বিদ্রোহী ও জুন্টা সরকারের মধ্যে মিমাংসা ঘটায়। চীন মনে করে যদি মিয়ানমারের ৬৫% যে বামের জনগোষ্ঠি তারা বর্তমানে পশ্চীম পন্থী ন্যাশনাল ইউনিটি গভারনমেন্ট ও মিলিটারি জুন্টা তত্মেদাও-এর মধ্যে দ্বন্দ্বরত। বাকি ৩৫% অধিকাংশ বিদ্রোহী জনগোষ্ঠীকেই নিয়ন্ত্রণ করে চীন। এবং এদের নিয়ন্ত্রণ করেই বামেরদের নিয়ন্ত্রণে রাখে চীন।)
৫ই অগাস্টের ফলে বাংলাদেশ দিয়ে ভারতের পক্ষে তার উঃ পূর্বে বাণিজ্য করাই প্রশ্নের মুখে পড়ে গেছে। মিয়ানমার হয়ে মণিপুরে যাওয়ার জন্যে যে কালাদান প্রজেক্ট ভারতকে করতে দিয়েছিল মিয়ানমার জুন্টা সরকার তা আরাকান আর্মি প্রথমে আটকে দেয়। বলা যায় চীনের বিরুদ্ধে গিয়ে জুন্টা ভারতকে কালাদান প্রজেক্ট দিলে আরাকান আর্মিকে দিয়ে চীন সেই প্রজেক্ট আটকিয়ে দেয়। ফলে ভারত সরকার আরাকান, কাছিন ও পশ্চিম পন্থী ন্যাশনাল ইউনিটি গভরনমেন্ট-কে ডাকে দিল্লিতে আলোচনা করতে। আরাকান আর্মি যদিও বলেছে খাজনা পেলে তাদের কালাদান প্রজেক্টে সমস্যা নেই কিন্তু এই বিষয়টা ঠিক করার লক্ষ্যেই হয়তো ডোভাল চীন যাত্রা করেন। অর্থাৎ বাংলাদেশের ৫ই অগাস্ট বিপ্লবের ফলে ভারতের মূল ভূখণ্ডের সাথে উঃ পূর্বের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন এখন অনেকটাই চীনের দয়ার ওপর নির্ভরশীল। বলাই বাহুল্য নাগা বিদ্রোহী নেতারাও চীনে থাকে। মিয়ানমারের চিন, দঃ মণিপুরের কুকি ও মিজো এবং নাগা নেতারা মিলে ভারতের উঃ পূর্বাঞ্চলে ভারতকে রীতিমত চাপে ফেলে দিতেই পারে।
উৎপাদক পুঁজি ও শ্রমিক শ্রেণির ঐক্য বনাম লুটেরা বাণিয়া পুঁজি
আমরা বলতে পারি বাংলাদেশের ৫ই অগাস্ট-এর বিপ্লব হল উৎপাদক পুঁজির লুটেরা বাণিয়া পুঁজির বিরুদ্ধে এবং তার মদতদাতা ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে করা বিপ্লব। সংগঠিত ও অসংগঠিত শ্রমিক শ্রেণি এই বিপ্লবকে সমর্থন করে। বিশ্বায়ণের যুগে পুঁজি এক দেশ থেকে অন্য দেশে অনায়াসে গমণ করে আর তাই বিভিন্ন দেশের শ্রমিক শ্রেণির দর কষাকষির ক্ষমতা অত্যন্ত কমে যায়। কিন্তু ২০১৭ সাল থেকে মার্কিন চীন বাণিজ্য যুদ্ধ ও প্রযুক্তি যুদ্ধের ফলে পুঁজির ইচ্ছে মতো বিভিন্ন দেশে গমণ করার স্বাধীনতা আগের থেকে কমে গেছে। আবার চীনের মজুরি শেষ ৩০ বছরে ৭ গুণ বেড়েছে আর অন্য কোথাও শ্রমিক শ্রেণির উৎপাদনশীলতা (শ্রমিক পিছু উৎপাদন) চীনের মতো না। তাই পুঁজির সঙ্গে দর কষাকষির ক্ষমতা কিছুটা হলেও শ্রমিক শ্রেণি ফিরে পাচ্ছে। তাই দুনিয়া জুড়েই শ্রমিক আন্দোলন ও সংগঠন বৃদ্ধি পাচ্ছে। শ্রমিক শ্রেণির এই ক্ষমতা বৃদ্ধিকে হাতিয়ার করেই বাংলাদেশে উৎপাদক পুঁজি বাজিমাত করেছে। বিশ্ব পুঁজিও এই বিপ্লবকে স্বাগত জানিয়েছে নিজেদের স্বার্থেই। বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূস এই কারণেই শ্রমিক শ্রেণির মজুরি বাড়িয়েছেন ৯% এবং দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণকে অর্থনৈতিক স্থায়িত্বের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন। অর্থাৎ মজুতদার বাণিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করার দিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন। সবচেয়ে বড়ো বিষয় বাণিয়া পুঁজিকে কোণঠাসা করতে সরকারী কৃষি বাজার তৈরি করা হবে। ইউনূস হাসিনার আমলের বাংলাদেশের ব্যবস্থাকে ক্লেপ্টোক্রাটিক ক্যাপিটালিস্ম বা লুটেরা পুঁজিবাদ বলে চিহ্নিত করেছেন। আগেই আলোচনা করেছি যে বাংলাদেশ শেষ ৫৩ বছরে আরও বেশি একভাষি ও এক ধর্মের হয়ে ওঠায় সমাজে মেধা বা যোগ্যতা অনুযায়ী প্রাপ্তি-র তত্ত্ব অনেক বেশি শক্তিশালী হয়েছে। ফলে উৎপাদক পুঁজি ও শ্রমিক শ্রেণির ঐক্য মহবুত হয়েছে। পুরনো দল বিএনপি বা জামাত মানেই লুটেরা বাণিয়া পুঁজি এমন ধারণা ঠিক না। এই সমস্ত দলের মধ্যেও উৎপাদক পুঁজির পক্ষের লক আছে। আবার আমলাতন্ত্র ও সামরিকবাহিনীর মধ্যেও লুটেরা বাণিয়া পুঁজির সমর্থক ও উৎপাদক পুঁজির সমর্থক দুইই আছে। ছাত্র নেতারা এখনও কৃষক শ্রমিক ছোট ব্যবসায়ী-দের সঙ্গে নিয়ে তোলাবাজ নেতা বা মজুতদার ব্যবসায়ী-দের বিরুদ্ধে কার্যকর ভূমিকা নিতে পারেনি। আর এখানেই উৎপাদক পুঁজি তার দুর্বলতা দেখাচ্ছে। আর এই দুর্বলতা কাজে লাগিয়েই লুটেরা বাণিয়া মজুতদার পুঁজি ভারতের সাহায্যে ফিরে আসার চেষ্টা করছে বা করবে। কৃষি বাজার তৈরির যে কথা ইউনূস বলেছেন তা ওপর থেকে রাষ্ট্র দ্বারা চাপানো হলে খুব একটা সফল হবেনা, ছাত্রদের নেতৃত্বে কৃষকদের ঐক্যবদ্ধ করে কৃষি বাজার তৈরি করলে তা সফল হবে কারণ লুটেরা পুঁজির বিরুদ্ধে একটা জাগ্রত প্ল্যাটফর্ম হিসেবে তা কাজ করবে। ছাত্রদের উচিৎ শ্রমিক ইউনিইয়ন ও ছোট ব্যবসায়ীদের নিয়ে সংগঠন বানিয়ে তোলাবাজি মজুতদারি বন্ধি করা। ইউনূসের "সামাজিক ব্যবসা" তত্ত্ব ব্যবহার কেও এই কাজ ছাত্ররা করতে পারে। কিন্তু ছাত্র সমন্বায়করা এখনো উৎপাদন ও অর্থনীতিতে ঢোকার দিকে মনোযোগ দেয়নি। বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের সাথে নিয়ে ছাত্র ঐক্য তৈরিতেও তেমন কোনও উদ্যোগ চোখে পড়েনি। আর তাই বর্তমান সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সমন্বায়করা মানুষকে আর রাস্তায় নামাতে পারছেনা।
উঃ পূর্ব, পঃ বঙ্গ ও বাংলাদেশ
ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদ ৫ই অগাস্ট বিপ্লবের ফলে যথেষ্ট কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। তার উঃ পূরবাঞ্চলের নিরাপত্তা এখন চীনের দয়ার ওপর নির্ভর করছে। স্বাভাবিকভাবেই ভারত চীনের সঙ্গে ঝামেলা ত্যাগ করে মিটমাটের চেষ্টা করছে। পেন্টাগন স্যাটেলাইট ছবি দিয়ে বলেছে চীন লাদাখ থেকে সরেনি অথচ মোদী সরকার বলছে চীন ২০২০ সালের অবস্থায় ফিরে গেছে। বোঝাই যাচ্ছে চীন ভারতকে ভয়ঙ্কর বিপদে ফেলতে সক্ষম হয়েছে এবং মার্কিন সরকারকে রাগিয়ে কোনও কাজ ভারতের পক্ষে করা হবে বিপজ্জনক। ভারতের ভূরাজনৈতিক বিপদের সময় বাংলাদেশ চাইছে ভারতের পঃ বঙ্গ ও উঃ পূর্বে নিজেদের প্রভাব বাঁড়াতে। উঃ পূর্বের সবচেয়ে নিকটবর্তী বন্দর হল বাংলাদেশের বন্দরগুলো। ফলে ভারতের উঃ পূর্ব বাংলাদেশের ওপর নির্ভরশীল। আবার পঃ বঙ্গের মোট জনসংখ্যার ৩২% শতাংশ ও আসামের ৪০% এখন মুসলিম। ঢাকা আর দিল্লি দুজনেই জানে পঃ বঙ্গ ও আসাম ও ত্রিপুরার বাঙালি হিন্দুদের একটা অংশকে নিজেদের পক্ষে এনেই ঢাকা বাজিমাত করে দিতে পারে। তাই বাঙালি হিন্দুদের ৫ই অগাস্ট বিপ্লবের প্রতি বিষিয়ে তুলতে লাহামছাড়া মিথ্যা প্রচারের আশ্রয় নিচ্ছে দিল্লি। এর থেকে বোঝা যায় যে ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদ সত্যি বৃহৎ বাংলা-র ভূত এখনো দেখে। বলা বাহুল্য ১৯৫১ সালের জনগণনায় দেখা যায় পঃ বঙ্গের মোট জনসংখ্যার ৭৮% ছিল বাঙালি হিন্দু, ১৮% ছিল মুসলিম (বাঙালি ও উর্দু মিলিয়ে), অন্যান্য ছিল ৪%। ২০১১ সালের জনগণনায় পাওয়া যাচ্ছে ৫৮% বাঙালি হিন্দু, ২৯% মুসলিম (২৭% বাঙালি মুসলিম ও ২% উর্দু), ৭% হিন্দিভাষি (বিহারী ৩%, মাড়োয়াড়ি ৩%, অন্যান্য ১%), সাঁওতাল ৩%, নেপালী ২% ও অন্যান্য ১%। অর্থাৎ পঃ বঙ্গে বাঙালি হিন্দুদের জনসংখ্যার শেয়ার কমেছে ২০%। বর্তমানে ২০২৪ সালে এক্সট্রাপোলেট করলে দেখা যাবে বাঙালি হিন্দু ৫৩%, মুসলিম ৩৩% ও হিন্দি ১০%। অর্থাৎ পঃ বঙ্গে বাঙালি হিন্দু ক্ষয়িষ্ণু জাতিতে পরিণত হয়েছে। এর সাথে আমরা দেখি যে ১৯৪১ সালে ৩০% হিন্দু ছিল পূর্ব বঙ্গে এবং আজ তা ৮% অর্থাৎ হ্রাস পেয়েছে ২২%। বাঙালি হিন্দুদের মোট জনসংখ্যার শেয়ারে ২০% থেকে ২৫%-এর মতো পতন দুই বাংলাতেই লক্ষ্য করা যায়। অর্থাৎ দুই বাংলাতেই বাঙালি হিন্দুদের জনসংখ্যার শেয়ারে হ্রাস ঘটেছে একই হারে। তাই বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতন হয়েছে এমন প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছেনা। বরং দুই বাংলাতেই বাঙালি হিন্দুর জন্মহার কম বলেই এমন হয়েছে বলা যায়। ক্ষয়িষ্ণু বাঙালি হিন্দু জাতি নিজের ক্ষয়িষ্ণুতার কারণ খুঁজলে তা দিল্লির কাছে অস্বস্তি বাড়াবে বৈ কমাবেনা। মনে রাখা দরকার ১৯৭২ সালেই ভাসানি বলেন পঃ বঙ্গ, আসাম, ত্রিপুরা সব বাংলাদেশের। অর্থাৎ উর্দু ব্যবসা দখলের পর থেকেই বৃহৎ বাংলার স্বপ্ন দেখে চলেছে বাংলাদেশের বাঙালি মুসলমানেরা। বাঙালি হিন্দু ও অহমিয়া হিন্দুদের স্বল্প জন্মহার, বাংলাদেশের পুঁজির বিকাশ পঃ বঙ্গ ও উঃ পূর্বাঞ্চল অপেক্ষা বেশি হওয়া এবং চীনের উত্থান ও মার্কিন চীন বাণিজ্য যুদ্ধ বৃহৎ বাংলার স্বপ্নকে সামনে নিয়ে এনেছে। এছাড়া মার্কিন চীন দ্বৈরথ ও চীনের মজুরি বৃদ্ধি পুঁজির বিশ্ব গমণের স্বাধীনতা হ্রাস করছে যা শ্রমিক শ্রেণির দর কষাকষি করার ক্ষমতা আগের থেকে খানিকটা বাড়িয়ে দিয়েছে। ফলে বাংলাদেশের মডেল অনুসরণ করে অন্যান্য বহু দেশে বা প্রদেশে উৎপাদক পুঁজি ও শ্রমিক শ্রেণির ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন হতেই পারে। এছাড়াও মনে রাখা দরকার ২০১৮ তে "নিরাপদ সড়ক আন্দোলন" ও "কোটা বিরোধী আন্দোলন" প্রথম ছাত্র আন্দলোনের ঢেউ, ২০২৪ -এর ৫ই অগাস্ট বিপ্লব দ্বিতীয় ঢেউ যা করে পরবর্তী প্রজন্মের ছাত্ররা। সেরকম ভাবে বাংলাদেশে লুটেরা পুঁজি ও ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদ বিএনপি বা জামাতের বা অন্য কোনও দলের হাত ধরে ফিরে আসতে চাইলে আবার একটা তৃতীয় আন্দোলনের ঢেউ তৈরি করতে পারে পরবর্তী প্রজন্মের ছাত্ররা এবং তা হতে পারে আরও শক্তিশালী।
Author: Saikat Bhattacharya
Theoretical General 30-December-2024 by east is risingwritten by Zahid Mollah
প্রশ্ন করুন ভারত একটা 'দেশ' নাকি 'সাম্রাজ্য'?
১৯৪৭ সালে ভারত কিন্তু কোনো দেশ হিসেবে ব্রিটিশদের থেকে স্বাধীনতা লাভ করে নাই। সত্যি কথা বলতে ভারত পাকিস্তান কেউই স্বাধীন হয় নাই। এরা উভয়েই ব্রিটিশদের কাছ থেকে ক্ষমতা হস্তান্তর চুক্তি বা Transfer of Power এর মাধ্যমে ডোমিনিয়ন স্ট্যাটাস পেয়েছিলো।
ভারতের পলিটিক্যাল বাউন্ডারির বাইরে তখনও কাশ্মীর, গোয়া, হায়দ্রাবাদ, সিক্কিমের মতো ৫৬৫ টা স্বাধীন প্রিন্সলি স্টেট্ ছিল যে গুলাকে ভারত মিলিটারি আগ্রাসনের মাধ্যমে দখল করে নিয়ে নিজের ভূমিতে আত্তীকরণ করেছে।
ভারত হচ্ছে Ex British Empire যেটার মালিকানা পরিবর্তন হয়ে এখন Neo Hindi Empire এ পরিণত হয়েছে। এবং এটার মালিকানা হস্তগত হয়েছে গুজরাটি, মাড়োয়ারি (রাজস্থানি) পুঁজিপতি গোষ্ঠীর হাতে।
হিন্দি-গুজরাটি কেন্দ্রিক সেই শাসক গোষ্ঠীর অধীনে প্রায় ১১৬টিরও বেশি ভিন্ন ভিন্ন জাতিগোষ্ঠী শাসিত হচ্ছে যাদের নিজস্ব ভাষা, ধর্ম ও সংস্কৃতি রয়েছে এবং এই সকল জাতিগোষ্ঠী কিন্তু পরস্পর বিরোধী এবং সংঘর্ষ প্রবণ ।
এত্ত কিছুর পরেও ভারত তাদেকে একটা ইউনিয়নের অধীনে কিভাবে রাষ্ট্রীয় একক হিসেবে টিকিয়ে রেখেছে?
এর উত্তরে প্রথমটা হচ্ছে ভারতের হিন্দু জাতীয়তাবাদ (যেটার ভিত্তি মুসলমান বিদ্বেষ) আর দ্বিতীয়টা হচ্ছে ভারতের ব্রুটাল মিলিটারি ফোর্স।
হিন্দু জাতীয়তাবাদই ভারতকে বহুধর্মের, বহুভাষিক, বহু সংস্কৃতির দেশ থেকে একটি একক শক্তিশালী থিওলজিক দেশ হিসেবে গড়ে উঠতে সাহায্য করবে। আর এই প্রসেসে মারা পড়বে ভারতের মুসলমানেরা।
ভারতের গুজরাটি মাড়োয়ারি হিন্দি পুঁজিবাদ কেন্দ্রিক শক্তি তাদের মিডিয়া প্রোপাগান্ডার মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায় বা ধর্মের প্রতি ভারতের সামাজিক বুনিয়াদকে যেভাবে বিষাক্ত করে দিয়েছে তাতে ভারতের অমুসলমান সকল জাতিগোষ্ঠী স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে ভারতীয় মুসলমানদের মারবে।
এবং এই গণহত্যা সিস্টেমেটিক্যালি নানান উপজীব্যের আড়ালে হবে, দেখে মনে হবে না যে সেখানে গণহত্যা হচ্ছে।
যেমন বিহারি হিন্দুদের উস্কে দেয়া হচ্ছে বিহারি মুসলমানদের উপর, উত্তরভারতে ভারতীয় বাংলাভাষী মুসলমানদের কে বাংলাদেশী দাগিয়ে উস্কে দেয়া হচ্ছে , নর্থ ইস্টে হিন্দু মেইতেইদের উস্কে দিচ্ছে খ্রিস্টান কুকিদের উপর গণহত্যা করতে।
যখন পশ্চিমবঙ্গের মুসলমানদের বাংলাদেশী হিসেবে তকমা দিয়ে মারা শেষ হবে, এর পর ধরা হবে পশ্চিমবঙ্গের বাঙ্গালী হিন্দুদের। বাঙ্গালী হিন্দুরা যদি স্বেচ্ছায় হিন্দি গ্রহণ করে এবং তাদের ঘরের মেয়েদের ইউপি, বিহারি, রাজস্থানি বা গুজরাতিদের খাটে তুলে দিয়ে রবীন্দ্রনাথের মহাভারতে বিলীন হয় তবে তারা রক্ষা পাবে।
কিন্তু দক্ষিণ এশিয়ায় মুসলমানদের কোনো রক্ষা নাই সেটা এক প্রকার নিশ্চিত।
গণহত্যার ক্ষেত্র প্রস্তুত এবং হিন্দু মনোবলকে পুরুষোচিত জোশে চাঙ্গা করতে ভারতীয় পুঁজিপতি গোষ্ঠী তাদের ভারতীয় নেটিভ মাতৃতান্ত্রিক ধর্মগুলোকে সরিয়ে দিয়েছে।
আর এইখানেই উত্তর ভারতের হনুমান এবং জয় শ্রী রামের উত্থান হয়েছে।
রাম হনুমান কেন্দ্রিক ধর্মীয় উন্মাদনার মূল লক্ষ্য মুসলমানদের ম্যাসকুলিন যোদ্ধা মনোভাবকে কাউন্টার করতে বৃহত্তর হিন্দু পলিটির মধ্যে সহস্রাধিক বছর ধরে লালিত মাতৃতান্ত্রিক ধর্মীয় চেতনাকে হত্যা করে পুরুষোচিত উগ্র মনোভাবের পুনর্জাগরণ ঘটানো।
তাই বাঙ্গুল্যান্ডের সিভিল সোসাইটি এবং আর্মিকে অনুরোধ করবো আপনারা বৃহত্তর কনফ্লিক্টের জন্য প্রস্তুত হন।
Vedic Frontier এর পুনরুত্থানে দক্ষিণ এশিয়ায় পাকিস্তান-ভারত-বাংলাদেশ-চীন কেন্দ্রিক একটা সিভিলাইজেশনাল কোর স্টেট্ ওয়ার অসম্ভব কিছুই না।
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Theoretical Hindu 12-December-2024 by east is risingমুখে যতোই গ্রেটার ইন্ডিয়ার কথা বলুক, ভারতের ডিপ স্টেট জানে যে গ্রেটার ইন্ডিয়ার স্বপ্ন ক্রমেই ফিকে হয়ে আসছে। গ্রেটার ইন্ডিয়া বলতে ব্রিটিশ ইন্ডিয়ার কথা বলা হচ্ছে যা ইন্ডিয়া পাকিস্তান নামে দুই দেশে ভাগ হয় ১৯৪৭ সালে। জিন্নাহ বারবার ফেডেরাল ইন্ডিয়া চাওয়া সত্ত্বেও গান্ধী নেহরু প্যাটেল (গুজারাতি হিন্দি) নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস কেন্দ্রীভূত ভারত-এর পক্ষে ছিল। গান্ধী নেহরু প্যাটেল-দের লক্ষ্য ছিল হিন্দিভাষি হিন্দু অঞ্চলের ভোট যেন ভারত-এ শেষ কথা হয়, তাই হিন্দি ভোট কেন্দ্র নিয়ন্ত্রণ করবে আর কেন্দ্রের কথা রাজ্য মেনে চলবে, আর এইভাবে কেন্দ্রীয় সরকার-এর সাহায্যে সমস্ত ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে নেবে গুজারাতি রাজস্থানীরা আর কেন্দ্রীয় চাকরী নেবে ইউপি বিহারীরা। গান্ধী নেহরু প্যাটেল-দের এই অভিসন্ধি বুঝেই জিন্নাহ বলেন হয় ফেডেরাল ভারত নয় আলাদা দেশ পাকিস্তান। গান্ধী নেহরু প্যাটেল-দের উদ্যেশ্য ছিল যেভাবেই হোক যতটা পারা যায় ব্রিটিশ ভারতের অংশ কেন্দ্রীভূত শাসনে রেখে দেওয়া আর এই লক্ষ্যে বোকা মুসলমানদের সাহায্য পেতে ধর্ম নিরপেক্ষতার বুলি আউরাতে থাকা। ১৯৪৭-এ পাকিস্তান হওয়ার পরেও নেহরু প্যাটেল-দের ধারণা ছিল পাকিস্তানের জমি ও প্রাচুর্য কম বলে পাকিস্তান রাষ্ট্র হিসেবে ভেঙ্গে পড়বে আর পুণরায় ভারতের সাথে যুক্ত হোতে বাধ্য হবে। যখান তা হোল না, তখন সোভিয়েত ইউনিয়ন-এর সাথে হাত মিলিয়ে পাকিস্তান ভাঙ্গার ছক কষতে থাকে। ১৯৭১-এ সুযোগ পেয়ে পাকিস্তান ভাঙ্গে ভারত সোভিয়েত-এর সাহায্য নিয়ে। অপেক্ষাকৃত ছোট দুর্বল রাষ্ট্র বাংলাদেশ-কে সহজেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে ভারত এমন ধারণা ছিল। ১৯৭৯ সালে সোভিয়েত আফঘানিস্তানে যুদ্ধ শুরু মূলত পাকিস্তান থেকে পুশ্তুন সংখ্যাধিক্য সম্পন্ন উত্তর পশ্চীম, বালুচিস্তান ও সিন্ধু প্রদেশ ভাঙতে। এর উদ্যেশ্য ছিল এক দিকে সোভিয়েত পাবে সিন্ধের ওয়ার্ম ওয়াটার বন্দর আর ভারত দুর্বল ছোট পাকিস্তান ভাঙ্গা রাষ্ট্রগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করবে। বাংলাদেশ ও পাকিস্তান ভাঙ্গা কল্পিত রাষ্ট্র গুলো নিয়ন্ত্রণে রাখতে ধর্ম নিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্র নামে দুটো শব্দ ভারতীয় সংবিধানে পর্যন্ত ঢোকানো হয় ১৯৭৬ সালে। সোভিয়েত ইউনিয়ন-এর প্রভাবেই তা হয়। কিন্তু সোভিয়েত ১৯৮৯ সালে আফঘানিস্তান থেকে বিতারিত হয় এবং ১৯৯১ সালে ভেঙ্গে যায়। এর ফলে হিন্দি গুজারাতি শাসক শ্রেণির একটা অংশ ধর্ম নিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্র-কে ছুঁড়ে ফেলে হিন্দুত্ববাদ ও ধনতন্ত্র-কে আঁকড়ে ধরে। এভাবেই ক্ষমতায় আসে বিজেপি এবং আরও পরে মোদি। তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের "ইসলামি সন্ত্রাস-এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ"-কে কাগে লাগিয়ে হিন্দুত্ববাদ-কে শুধু ভারতেই নয়, মার্কিন মুলুকেও শক্তিশালী করে তোলে। হিন্দুত্ববাদ যায়নবাদ ও শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদ-এর জোট আজ মার্কিন শাসক শ্রেণির একটা অংশের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়। ট্রাম্প ২০২৫ সালে এই জোট-কে গুরুত্বপূর্ণ পদ দিতে চলেছে তার মন্ত্রী সভায়। মার্কিন ভারত জুটি স্বপ্ন দেখতে থাকে আফঘানিস্তান-এ ঘাঁটি গড়ে পাকিস্তান-কে ভাঙ্গার আর চীন থেকে শিনসিয়াং প্রদেশকে আলাদা করার কিন্তু ২০২১ সালে ২০ বছর যুদ্ধ করার পরে মার্কিন সেনা পরাজিত হয়ে আফঘানিস্তান ছেড়ে পালায় এবং আফঘানিস্তানে ক্ষমতায় আসে পাকিস্তান ও চীন-এর বন্ধু তালিবান সরকার। এদিকে চীন-এর উত্থান মার্কিন কেন্দ্রিক এক মেরু বিশ্ব ব্যবস্থাও ভেঙ্গে ফেলে। আফঘানিস্তানে পাকিস্তানের সাহায্যে তালিবানের জয়, চীনের অর্থনৈতিক সামরিক শক্তি বৃদ্ধি ভারতের হিন্দুত্ববাদীদের বুঝিয়ে দেয় তারা দঃ এশিয়াতে কোণঠাসা হয়ে পড়ছে। শেষে ২০২৪ সালের ৫ই অগাস্ট বাংলাদেশে ছাত্র জনতার বিপ্লব হিন্দি গুজারাতিদের বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণের স্বপ্নের শলীল সমাধি ঘটায়। ১৯৪৭-এ ব্রিটিশ ভারতে মুসলমান ছিল ২৪%। তাই তখন গোটা ব্রিটিশ ভারত পেলে অনায়াসেই গুজারাতি হিন্দি-রা নিয়ন্ত্রণ করত গোটা ব্রিটিশ ভারত। কিন্তু আজ ২০২৪-এ ভারত-পাকিস্তান-বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ৩৩.৫% হয়ে গেছে মুসলমান আর প্রবণতা বলছে ২০৫০-এ তা হবে ৩৮%।
অর্থাৎ গ্রেটার ভারত তৈরি হলে সেখানে মুসলমান ভোট ব্যাঙ্ক খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে যাবে আর তখন হিন্দিভাষি হিন্দুদের ভোটের জোড়ে হিন্দি গুজারাতিরা ব্যবসা ও কেন্দ্রীয় সরকারী চাকরী নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেনা। এমনকি বাংলাদেশ দখল করে ১৬ কোটি মুসলমান ও ১৮ কোটি বাংলা ভাষি ভারতে ঢুকিয়ে হিন্দিভাষি হিন্দুদের ভোটের গুরুত্ব কমাতে পারবেনা হিন্দি গুজারাতি শাসক শ্রেণি। বাংলাদেশ-এর ৫ই অগাস্ট, ২০২৪ বিপ্লব বুঝিয়ে দিল ছোট রাষ্ট্র বানিয়ে নিয়ন্ত্রণ করাও সম্ভব না। তাই পাকিস্তান বা বাংলাদেশ দখলের স্বপ্ন বা পাকিস্তান ভেঙ্গে ছোট রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রণের স্বপ্ন ভারতের ডিপ স্টেট আর দেখেনা। যেহেতু পাকিস্তান ও বাংলাদেশ দখল করে আর লাভ নেই, তাই ভারতের হিন্দি গুজারাতি ডিপ স্টেট মনে করছে গান্ধী নেহরুর ধর্ম নিরপেক্ষতার মুখোশের আর দরকার নেই। মোদি যোগী তাই গুজারাতি হিন্দি সাম্রাজ্যবাদের মুখ। ভবিষ্যতে ভারতে বসবাসকারী মুসলমান-দের বিরুদ্ধে জেনোসাইড সংগঠিত করার প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভারত এখনো গরীব দেশ। সেখানে জমি ভেরি নারী দখলের লড়াই আজও প্রাসঙ্গিক। আদি পুঁজি যোগাড় করতে সংখ্যাগুরু জাতি সংখ্যালঘু জাতির বিরুদ্ধে জেনোসাইড করেছে আধুনিকতার সূচনা লগ্ন থেকেই।
তাই হিন্দিভাষী অঞ্চল, গুজারাত, মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক-এ অতি ক্ষুদ্র মুসলমান জনসংখ্যার বিরুদ্ধে জেনোসাইড হওয়া এখন সময়ের অপেক্ষা। মুসলমান অধ্যুষিত কাশ্মীর উপত্যকায় হিন্দু সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়েছে। হায়দ্রাবাদ, কেরালা, পঃ বঙ্গ ও আসাম- যেখানে একটা ভাল সংখ্যা রয়েছে মুসলমানদের সেখানেও আঘাত হানার পরিকল্পনা করবে গুজারাতি হিন্দি সাম্রাজ্যবাদ। এই অঞ্চলগুলোই দাঙ্গার পক্ষে আদর্শ কারণ এই সব অঞ্চলে মুসলমানরা কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারবে। পৃথিবীর নিয়ম হল "হয় বৃদ্ধি, নয় হ্রাস", স্থবিরত্বের কোনও জায়গা নেই হিন্দি গুজারাতি সাম্রাজ্যের (যার পোষাকি নাম ভারত) বৃদ্ধির জায়গা আর নেই। অতএব এই সাম্রাজ্যকে শীঘ্রই সঙ্কুচিত হতে হবে।
হোতেই পারে হিন্দিভাষী অঞ্চল, গুজারাত, মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক-এ জেনোসাইড-এর মুখে পড়ে বহু মুসলমান বিদেশে বা কাশ্মীর উপত্যকায় বা কেলায় বা হায়দ্রাবাদে বা পঃ বঙ্গে বা আসামে পালিয়ে যাবে। ফলে ভালো সংখ্যা আছে এমন জায়গায় মুসলমানদের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। আবার কম সংখ্যায় মুসলমান আছে এমন অঞ্চল মুসলমান শূন্য হয়ে যেতে পারে। আবার পঃ বঙ্গ ও আসামের মসুলমানদের বাংলাদেশে পুশ করার চেষ্টা করা হোতে পারে (যেমন মিয়ানমার রোহিঙ্গা মুসলমানদের পুশ করেছে বাংলাদেশে)। পাকিস্তান শক্তিশালী বলে কাশ্মীর উপত্যকার মানুষকে পুশ করতে পারবেনা। বাংলাদেশ শক্তিশালী অবস্থান নিলে পঃ বঙ্গ ও আসামের মুসলমানদেরকেও পুশ করতে ব্যর্থ হবে। সব মিলিয়ে বলা যায় দক্ষিণে হায়দ্রাবাদ ও কেরালা এবং পূর্বে পঃ বঙ্গ ও আসাম আর উত্তরে কাশ্মীর উপত্যকা অঞ্চলে শীঘ্রই বিপুল সংখ্যক মুসলমান-এর জেনোসাইডের মুখে পড়ে আভিবাসী হিসেবে চলে আসার সম্ভাবনা আছে হিন্দিভাষী অঞ্চল, গুজারাত ও মহারাষ্ট্র থেকে। জেনোসাইড দাঙ্গা ও জমি ভেরি নারী দখলের আদি পুঁজি সঞ্চয়-এর আরেকটা রাউণ্ড দেখতে চলেছে ভারত।
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Theoretical Hindu 05-December-2024 by east is risingপশ্চীমে ভোটাধিকারের অগ্রগতি
"গণতন্ত্র ও মেধা অনুযায়ী প্রাপ্তি-র ক্রমবিকাশঃ কোন পথে বাংলাদেশের ২০২৪ বিপ্লব" https://www.eastisrising.in/view-news/284 প্রবন্ধে আমরা আলোচনা করেছি যে কিভাবে পশ্চীমি সমাজ আরব-দের থেকে মেধা বা কর্ম অনুযায়ী প্রাপ্তি আর গ্রীক-রোমান-দের গণতন্ত্র-কে জুড়ে একের পর এক সমাজ বিপ্লব সম্পন্ন করে যা শেষ পর্যন্ত প্রাচ্যের দেশগুলোও গ্রহণ করে এবং আরও এগিয়ে নিয়ে যায়। প্রথমে উচ্চ কর দাতা ধনী সমাজ যেমন সামন্ত, বড়ো ব্যবসায়ী, সেনাপতি, পাদ্রীরা ভোট দেওয়ার ও ভোটে দাঁড়াবার অধিকার পায় এবং ভোটে নির্বাচিত সভাসদ-দের কথা রাজা মানতে বাধ্য থাকবে এমন ব্যবস্থা গড়ে ওঠে ১৬৮৯ সালে ইংল্যান্ডের গৌরবময় বিপ্লবের ফলে। এরপরে আমরা ১৭৭৬ সালে মার্কিন বিপ্লব যেখানে জাতীয়তাবাদের বিকাশ দেখতে পাই যার মূল কথা হোল কোন বিশেষ অঞ্চলের করদাতাদের বর্তমান রাষ্ট্র পছন্দ না হোলেও আলাদা রাষ্ট্র গড়ার অধিকার আছে। ১৭৮৯ সালে ঘটে ফরাসী বিপ্লব যেখানে কর দাতা মধ্যবিত্ত শ্রেণিও ভোট দেওয়ার ও ভোটে দাঁড়াবার অধিকার পায়। ইংল্যান্ডের পার্লামেন্ট ১৮৩২ শালের জন প্রতিনিধি আইন-এ জানায় যে ১০ পাউণ্ড বা তার বেশি আয় কর দিলেই যে কোন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের ভোট দেওয়ার ও ভোটে দাঁড়াবার অধিকার থাকবে। এর ফলে তৎকালীন ইংল্যাণ্ডের ১৫% প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ ভোটাধিকার পায়। বলা বাহুল্য গৌরবময় বিপ্লবের ফলে উচ্চবিত্ত নারীদের যে ভোটাধিকার ছিল তা কেড়ে নেওয়া হয় এই আইনে। ব্যক্তিমালিকানাহীন কর দেওয়ার মতো যথেষ্ট রোজগার করেনা এমন শ্বেতাঙ্গ পুরুষ, শ্বেতাঙ্গিনী নারী ও অশ্বেতাঙ্গ মানুষের জন্য ফরাসী বিপ্লব কোনও ভোটাধিকার দেয়নি। কার্ল মার্ক্স সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ব্যক্তিমালিকানাহীন কর দেওয়ার মতো যথেষ্ট রোজগার করেনা এমন শ্বেতাঙ্গ পুরুষ অর্থাৎ পশ্চীমি দুনিয়ার শ্রমিক শ্রেণীকে ভোটাধিকার দেওয়ানোর বিষয়। তিনি প্রমাণ করেন শ্রমিকের দেওয়া শ্রমের ফলেই উৎপাদন হয় আর সেই উৎপাদন বাজারে বিক্রি করে ধনবান শ্রেণি যা লাভ করে তার থেকেই কর দিতে পারে। এর ফলে ১৮৫৬ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ও ১৮৬৭ সালে ব্রিটেনে সকল প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্টিত হয়।
শ্রমজীবী মানুষের শাসন
১৯১৭ সালে প্রথম বিশ্ব যুদ্ধের মধ্যেই ঘটে যায় আরেকটা বড় বিপ্লব, রুশ বিপ্লব। রুশ বিপ্লবের নেতা লেনিন তুলে ধরেন যে পশ্চীমে ১৮৭০ থেকে যে বহু দলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তা উচ্চবিত্ত শ্রেণির হাতে ক্ষমতা তুলে দিয়েছে। ভোট দানের অধিকার সকল শ্রেণির পুরুষের থাকলেও কার্যকর ভাবে ভোটে দাঁড়াবার ক্ষমতা কেবল উচ্চবিত্ত শ্রেণিরই আছে। যারা উচ্চবিত্ত নয় তাদেরও উচ্চবিত্তদের থেকে পয়সা নিয়েই ভোটে দাঁড়াতে হবে এবং তাদের কথা শুনেই চলতে হবে। তাই সাধারণ জনতার হাতে ক্ষমতা রাখতে গেলে কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বে শ্রমজীবী মানুষকে তার কারখানা ও খামারে উৎপাদনের স্থানে গণতন্ত্র নিয়ে আসতে হবে। শ্রমিকেরা কৃষকেরা ছাত্ররা ভোট দিয়ে তাদের কারখানার খামারের বিদ্যালয়ের নেতা নির্ণয় করবে। এবং সেই নেতারা আবার উচ্চতর কমিটির নেতাদের নির্বাচন করবে আর এভাবেই ধাপে ধাপে উচ্চতম পলিট ব্যুরোর নেতৃত্ব নির্বাচিত হবে। এছাড়াও রুশ বিপ্লব প্রথম প্রাপ্তবয়স্ক নারীকে ভোটাধিকার ও অন্যান্য রাজনৈতিক অধিকার দেয়। এমনকি দ্রুত শিল্পায়ণের জন্যে সোভিয়েত সরকার নারীকে শ্রম বাজারে নিয়ে আসে পুরোপুরিভাবে। এছাড়াও সোভিয়েত সরকার অপশ্চীমা দেশগুলোর স্বাধীনতা ও শিল্পায়ণের প্রসার ঘটানোর পক্ষে দাঁড়ায়। অর্থাৎ রুশ বিপ্লবের ফলে অপশ্চীম দুনিয়া স্বাধীন হওয়ার সুযোগ পায় এবং দ্রুত শিল্পোন্নত হওয়ার কর্মসূচী ঘোষণা করে। দ্রুত শিল্পোন্নয়ণের জন্য নারীকে শ্রম বাজারে নিয়ে আনার কর্মসূচীও গৃহীত হোতে থাকে। রুশ বিপ্লবের পরেই ১৯১৮ সালে ব্রিটেনে ও ১৯২১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রাপ্তবয়স্ক নারী ভোটে দাঁড়াবার ও ভোট দেওয়ার অধিকার পায়।
শ্রমজীবী শাসন-এর সমস্যা
আমরা দেখলাম কিভাবে বিভিন্ন বিপ্লব-এর মধ্য দিয়ে আস্তে আস্তে উচ্চতম শ্রেণী থেকে মধ্যবিত্ত শ্রেণির পুরুষের কাছে ভোটাধিকার আসে এবং তারপরে দরিদ্র শ্রেণীর পুরুষও ভোটাধিকার পায়। কিন্তু রুশ বিপ্লব বলে যে ভোট দেওয়ার অধিকার সবার থাকলেও ভোটে দাঁড়াবার অধিকার শুধু উচ্চবিত্তদের হাতেই থাকছে। আর এইভাবে ক্ষমতা উচ্চবিত্তদের হাতেই কুক্ষিগত হয়। এছাড়াও অপশ্চীমা বিশ্বের ও নারীর মুক্তিকেও ত্বরান্বিত করে রুশ বিপ্লব। অর্থাৎ শ্রেণী দ্বন্দ্ব, উৎপাদিকা শক্তিতে এগিয়ে থাকা দেশ ও পিছিয়ে থাকা দেশ-এর মধ্যেকার দ্বন্দ্ব এবং নারী-পুরুষ-এর দ্বন্দ্বঃ এই তিনটে দ্বন্দ্ব আমরা দেখতে পাচ্ছি বর্তমান পৃথিবীতে। রুশ বিপ্লবের যে শ্রমজীবী মানুষের মাধ্যমে উচ্চবিত্ত শ্রেণির হাত থেকে শাসন ছিনিয়ে নেওয়ার কর্মসূচী ছিল তা ব্যহত হয় দুটো কারণেঃ এক, নীম্নতম কমিটি থেকে ধাপে ধাপে উচ্চতর কমিটিগুলোর নেতৃত্ব নির্বাচিত হওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে উচ্চতম কমিটি থেকে ধাপে ধাপে নীম্নতর কমিটিগুলোর নেতৃত্ব বাছাই করা হোতে থাকে। ফলে একটা ডগমাটিক চাটুকার ব্যবস্থা গড়ে ওঠে। দুই, ১৯৭০-এর মধ্য ভাগ থেকে পুঁজি এক দেশ থেকে আর এক দেশে অনায়াসে বিনিয়োগ করা শুরু হয় আর তাই শ্রমিক শ্রেণীর পুঁজির সাথে দর কষাকষির ক্ষমতা অনেকটাই হ্রাস পায়। কারণ মজুরি বা ছুটি বাড়াতে বেশি দর কষাকষি করতে গেলেই পুঁজি অন্যত্র চলে যাবে যেখানে ঝামেলা কম। ফলে সংগঠিত শ্রমিক শ্রেণী অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়ে এবং বিপ্লব করার ক্ষমতা হারায়।
উচ্চবিত্ত শাসনের সমস্যা
মনে করা হোত পশ্চীম দুনিয়ার স্তরে অ-পশ্চীম দুনিয়ার উৎপাদিকা শক্তিকে নিয়ে যেতে গেলে শ্রমজীবী মানুষের নেতৃত্ব সবচেয়ে বেশি উপযোগী। এর কারণ উন্নয়নশীল দেশের উচ্চবিত্ত নেতৃত্ব প্রযুক্তি ও বাজার-এর জন্য উন্নত বিশ্বের ওপর নির্ভরশীল থাকবে এবং সেই নির্ভরশীলতা কাটিয়ে উঠতে বুনিয়াদী খাতে যে বিপুল বিনিয়োগ করতে হবে তা করবেনা। কারণ বুনিয়াদী বিনিয়োগ থেকে জলদি মুনাফা পাওয়া যায়না; যেমন- শিক্ষা স্বাস্থ্য ডিজিটাল ও ফিসিকাল পরিকাঠামো। এসবে বিনিয়োগ করলেও দ্রুত মুনাফালাভের আশায় তার মূল্য অনেক বাড়িয়ে দেয় আর তাই সাধারণ মানুষের কাছে সহজলভ্য থাকেনা। এছাড়াও উচ্চবিত্ত নেতৃত্ব বুনিয়াদী বিনিয়োগ না করে বিলাসবহুল পণ্যে খরচ করে। ফলে সেই দেশের প্রযুক্তির বুনিয়াদ দুর্বল থেকে যায়। বর্তমান বিশ্বে প্রযুক্তিগত উন্নত দেশের তালিকায় চীন যোগ দিয়েছে বলে উন্নয়নশীল দেশগুলোর প্রযুক্তি ধাঁর করার ক্ষেত্রে দর কষাকষির ক্ষমতা অনেক বেড়ে গেছে। সেটা অবশ্যই উন্নয়নশীল দেশগুলোর উন্নয়নের পক্ষে একটা স্তর পর্যন্ত সহায়ক। কিন্তু উচ্চবিত্ত নেতৃত্বের সমস্যাগুলো থেকেই যায়। এই সমস্যা আরও গভীর হয়ে ওঠে বাংলাদেশের মতো দেশের কাছে যার পাশে ভারতের মতো একটা সাম্রাজ্যবাদী দেশ আছে। ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদ বাংলাদেশকে উন্নত বিশ্বের সঙ্গে স্বাধীনভাবে দর কষাকষি করতে দিতে রাজি নয়। ফলে বাংলাদেশের উচ্চবিত্তরা নানাভাবে ভারতের কাছে বাংলাদেশকে নির্ভরশীল করে রাখছে মুনাফার বিনিময়ে। তাই অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের থেকে অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বাংলাদেশ উচ্চবিত্তদের নেত্রিত্বে। আগে উল্লিখিত তিনটে দ্বন্দ্বের মধ্যে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে উৎপাদিকা শক্তিতে এগিয়ে থাকা ও পিছিয়ে থাকা আন্তর্জাতিক দ্বন্দ্বই সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আর বাংলাদেশকে তাই দ্রুত উৎপাদিকা শক্তি বৃদ্ধির স্বার্থেই উচ্চবিত্ত শাসন থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
চীন ও ইরান-এর অভিজ্ঞতাঃ মেধার শাসন
আমরা আগেই আলোচনা করেছি যে বর্তমান পরিস্থিতিতে শ্রমিক শ্রেণী যথেষ্ট শক্তিশালী নয় বিপ্লব কার্যকর করতে। তাহলে উপায় কি? এর উত্তর খুঁজতে আগে দেখা যাক চীন ও ইরান কিভাবে এই পরিস্থিতি সামাল দিয়েছে। চীন সরকার দেং শিয়াও ফিং-এর নেতৃত্বে একটা নতুন বিষয় সংযোজন করে। নীম্নতম কমিটির নেতৃত্বে বাছাই হোতে গেলে নির্দিষ্ট মানের মেধা থাকা বাধ্যতামূলক করে দেওয়া হয় ১৯৮০ থেকে। অর্থাৎ গাওকাও (বিশ্ব বিদ্যালয় প্রবেশের পরিক্ষা) ও গুওকাও (সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা) দিয়ে পাশ করা লোকেদেরই কেবল নীম্নতম কমিটিতে নিয়োগ করা যাবে। এবং ধাপে ধাপে সেই নেতাদের মেধা ও দক্ষতা দেখে উচ্চতর কমিটিতে নিয়োগ করা হবে। এইভাবে চীন একদিকে উচ্চবিত্তদের হাতে রাষ্ট্র পরিচালনা কুক্ষিগত হওয়া থেকে মুক্তি পায় আর অন্যদিকে আনুগত্য ভিত্তিক অযোগ্য ব্যক্তিদের হাত থেকেও রেহাই পায়। ফলে চীন পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে দ্রুত শিল্পায়ণ ঘটায় এবং মাত্র ৪০ বছরে বিশ্ব উৎপাদনের প্রাণকেন্দ্র হয়ে দাঁড়ায় যা পশ্চীমের বিশ্ব অর্থনীতিতে যে আধিপত্য ছিল তা ভেঙ্গে দেয়।
ইরানে ইসলামী বিপ্লব (১৯৭৯) এই সমস্যার সমাধান খুঁজতে ইস্লামী পরম্পরায় কোরান হাদিসের শাসনের সাথে আধুনিক মেধা ও বহু দলীয় গণতন্ত্রের মেলবন্ধন ঘটায়। ইসলামী আইন ব্যবস্থাকে সামনে রেখেই ইরানের মানুষ বিপ্লব করে যার মূল উদ্যেশ্য ছিল উৎপাদিকা শক্তিকে উন্নত দেশের স্তরে নিয়ে যাওয়া। একদিকে শাসনে গুরুত্বপূর্ণ জায়গা থাকবে কোরান হাদিস বিষয়ে জ্ঞানী ব্যক্তিরা (বিশেষজ্ঞ কমিটি) আর অন্যদিকে থাকবে মানুষের দ্বারা নির্বাচিত প্রতিনিধিরা (মজলিস)। কিন্তু জন প্রতিনিধি হতে গেলে মাস্টার্স হওয়া বাধ্যতামূলক। তেমনই মন্ত্রী হতে গেলে পিএইচডি হওয়া বাধ্যতামূলক। ১২ জন-এর গার্ডিয়ান কাউন্সিল ঠিক করে বিশেষজ্ঞ কমিটিতে আসার বা নির্বাচনে দাঁড়াবার যোগ্য কারা।
বাংলাদেশে মেধার শাসন সম্ভব
অর্থাৎ আমরা দেখতে পাচ্ছি যে শ্রমিক শ্রেণী দুর্বল থাকলেও শাসক হোতে গেলে একটা নির্দিষ্ট মেধার মান থাকাকে বাধ্যতামূলক করে দিয়ে উচ্চবিত্তদের শাসনের সমাপ্তি ঘটাতে পারে বাংলাদেশ। মনে রাখা দরকার বাংলাদেশ কিন্তু ২০২৪ জুলাই অগাস্ট আন্দোলন শুরু করেছিল মেধা ভিত্তিক সরকারী কর্মচারী নিয়োগকে কেন্দ্র করে। তাতে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ প্রমাণ করে যে মেধা ভিত্তিক শাসনের প্রতি মানুষের সমর্থন থাকার সম্ভাবনা প্রবল। প্রধান বিরোধী দলের সভাপতি তারেক জিয়া দুটো কক্ষের কথা বলেছেন যেখানে একটা কক্ষে থাকবে নির্বাচিত প্রতিনিধি আর এক কক্ষে থাকবে মেধাবী মানুষেরা। উনি সরাসরি মেধাতন্ত্রের পক্ষে কথা বলেছেন। তবে প্রবন্ধের লেখকের মতে এই দুই কক্ষের সাথে ইরানের গার্ডিয়ান কাউন্সিল-এর মতো আরেকটা কক্ষ রাখতে হবে যারা নির্বাচনে দাঁড়াবার জন্য বা মেধাভিত্তিক কক্ষে আসার জন্য নির্দিষ্ট মেধার মান নির্ণয় করবে।
তৃতীয় বিপ্লবী ঢেউ
আমরা বলতেই পারি বিপ্লবের দুটো ঢেউ এসেছে। প্রথব বিপ্লবী ঢেউ-এ ইংল্যণ্ড বিপ্লব থেকে প্রথমে ধাপে ধাপে সমস্ত স্তরের মানুষ ভোট দেওয়ার অধিকার পেয়েছে। প্রথম বিপ্লবী ঢেউ চলেছে ১৬৮৯ থেকে ১৮৭১ পর্যন্ত। দ্বিতীয় বিপ্লবী ঢেউ-এ রুশ বিপ্লব উচ্চবিত্তদের হাতে যাতে রাজনৈতিক ক্ষমতা কুক্ষিগত না হয় তাকে অগ্রাধিকার দিয়েছে এবং শ্রমজীবী মানুষের শাসন-এর তত্ত্ব নিয়ে আনে। এছাড়াও প্রথম বিপ্লবী ঢেউ-এর অর্জনগুলো অ-পশ্চীমি দুনিয়া ও নারীদের জন্য উন্মুক্ত করে দ্বিতীয় বিপ্লবী ঢেউ। শ্রমজীবী শাসন ব্যবস্থায় সমস্যা দেখা দিলে চীন ও ইরান মূলত মেধার শাসন নিয়ে আনে। দ্বিতীয় বিপ্লবী ঢেউ চলেছে ১৯১৭ থেকে ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত। কিন্তু চীন মূলত শ্রমজীবী শাসনের সাথে পরে মেধার শাসনকে জুড়েছে আর ইরান ইসলামী শাসনের মধ্যে মেধাকে নিয়ে এনেছে। বাংলাদেশ হয়তো বিশ্বে প্রথম এমন বিপ্লব হতে চলেছে যেখানে মেধার শাসনকে সরাসরি নিয়ে আনা হচ্ছে। তাই তৃতীয় বিপ্লবী ঢেউ-এর সূচনা বাংলাদেশে ২০২৪ সাল থেকে হোতেই পারে।
Read More
Author: Saikat Bhattacharya
Theoretical General 04-November-2024 by east is risingবৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার নেত্রিত্বে সংগঠিত হওয়া বাংলাদেশ ২০২৪ বিপ্লবের চরিত্র ঠিক কি তা এখনো ভালো মতো করে উদ্ঘাটন করা হয়নি। ভাষা ভাষা কিছু কথা আছে মাত্র। আমি চেষ্টা করেছি একটা বিশ্লেষণ করার। এই বিশ্লেষণের সাথে অনেকেই সহমত হয়তো হবেননা। তবুও আমি এই লেখা লিখছি মূলত এই বিপ্লব সম্পর্কে আগ্রহী হয়ে এবং এই বিপ্লব নিয়ে খুব একটা বিশ্লেষাত্বক লেখা পাইনি বলে।
প্রথমেই আসি এই বিপ্লবের অন্যান্য বিপ্লবের সঙ্গে মিল আছে এমন বিষয়গুলো সম্বন্ধে। দীর্ঘ সময় যাবত কোনও রাজনৈতিক দল বৈধ নির্বাচন না করে ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা করলে তার বিরুদ্ধে গণক্ষোভ ও বিপ্লব যথেষ্ট স্বাভাবিক একটা ঘটনা। আওয়ামী লিগ দীর্ঘ ১৫ বছর শাসন করেছে আর তার মধ্যে শেষ ১০ বছর বা শেষ তিনটে টার্ম বৈধ ভাবে ভোট করায়নি। তার ওপর যুক্ত হয়েছে আওয়ামীর ভারত চাটা নীতি। ফলে বাংলাদেশের মানুষ ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদের দালাল হিসেবে আওয়ামীকে দেখতে শুরু করে। অপেক্ষাকৃত বড়ো প্রতিবেশি দেশ-এর সাম্রাজ্যবাদী নীতির বিরুদ্ধে বিদ্রোহও খুবই স্বাভাবিক।
এছাড়াও মনে রাখা দরকার বিশ্ব অর্থনীতির অবস্থা খুব আশাব্যঞ্জক নয়। ২০০৮-এর বিশ্ব মন্দার পর থেকে বিশ্ব বাণিজ্যের গতি কমেছে, বিশ্ব পুঁজির চলাচল ১৬ বছর পরেও ২০০৮-এর অবস্থানে পৌছয়নি।তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে চীনের উচ্চ আয়ভুক্ত দেশ দেশ হয়ে যাওয়ায় চীনের মজুরি বেড়ে গেছে অনেক আর তাই বিশ্ব বাজারে দেখা দিয়েছে মুদ্রাস্ফীতি। চীন মার্কিন দ্বৈরথ এবং রুশ উইক্রেইন যুদ্ধ মুদ্রাস্ফীতিকে বাড়িয়ে তুলেছে। ফলে সুদের হার বাড়াতে বাধ্য হচ্ছে বিভিন্ন দেশ আর এর ফলে অর্থনৈতিক বৃদ্ধির হার কমছে আর পর্যাপ্ত পরিমাণে সুদের হার না বাড়ালে ছোট অর্থনীতিগুলোকে মুখোমুখি হতে হচ্ছে বিদেশী মুদ্রার সঙ্কটে। তৃতীয় বিশ্বের যুবক যুবতীদের প্রথম বিশ্বে গিয়ে রোজগার করাও কঠিন হয়ে পড়ছে কারণ প্রথম বিশ্বেও অভিবাসী বিরোধী রাজনীতি শক্তিশালী হচ্ছে। একদিকে দীর্ঘদিনের স্বল্প অর্থনৈতিক বৃদ্ধি আর অন্যদিকে দীর্ঘদিন ধরে শ্বেতাঙ্গদের মধ্যে স্বল্প জন্মহার-এর জন্য পশ্চীমের শ্বেতাঙ্গদের মধ্যে অ-শ্বেতাঙ্গ অভিবাসী বিদ্বেষ বেড়েই চলেছে। সব মিলিয়ে বর্তমান প্রজন্মের যুবারা ভবিষ্যৎ সম্পর্কে সন্ধিহান। আর তাই জেন-জি (যাদের জন্ম ১৯৯৭ থেকে ২০১২-এর মধ্যে) যে এই ২০২৪ সালে বেশ খানিকটা বিদ্রোহী মনন ধারণ করবে সেটাও স্বাভাবিক।
বলা যায় বাংলাদেশ ২০২৪-এর বিপ্লব হোল জেন-জি-র নেতৃত্বে হওয়া প্রথম বিপ্লব। এই বিপ্লবের ক্ষেত্রে জেন-জি-র প্রভাব এতটাই স্পষ্ট যে তাদের তিনজনকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে নেওয়া হয়েছে। তাদের থেকে মতামতও চাওয়া হচ্ছে সংবিধান সংশোধনের প্রসঙ্গে। এই ব্যপারটা বোধহয় বিশ্ব ইতিহাসে প্রথম যে নবীন প্রজন্মের থেকে শিখতে চাইছে প্রবীনেরা। নবীনেরা যেভাবে বিভিন্ন মতাবলম্বী মানুষকে একত্রিত করে এই বিপ্লব সম্পন্ন করেছে তা এক কথায় অসাধারণ। ইসলামপন্থী ও বাম্পন্থীরা এই ক্ষেত্রে এক যোগে কাজ করেছে। আন্দোলন কর্মসূচীর নেতাদের নেতা না বলে সমন্বায়ক বলা হয়েছে যা আন্দোলনকারীদের ও নেতাদের মধ্যেকার পার্থক্য ঘোচাতে সাহায্য করেছে। সমন্বায়কদের যে কজনকে সামনে দেখা গেছে তাদের মধ্যে সারজিশের লেখা পড়ে ও বক্তব্য দেখে মনে হয়েছে সে ইসলামপন্থী, আবার নাহীদ-এর বক্তব্য শুনে মনে হয়েছে সে বামপন্থী। এভাবে বিভিন্ন আদর্শের মানুষ কিভাবে একসঙ্গে কাজ করতে পারল তা বোঝা গুরুত্বপূর্ণ। আগের প্রজন্মগুলো এইভাবে বিভিন্ন আদর্শের মানুষকে এক করতে ব্যর্থ হয়েছে। হয়তো এর কারণ লুকিয়ে আছে জেন জি-র কাছে তথ্যের প্রতুলতার জন্যে। ইন্টারনেট থেকে যে কোনও বিষয় তথ্য অনায়াসে চলে আসে জেন জি-র কাছে। আগের প্রজন্মগুলো এত সহজে তথ্য পেতনা। বুমার ও জেন এক্স তথ্যের জন্যে অনেক বেশি নির্ভর করত শিক্ষলয় (অর্থাৎ সরকার), সংগঠন ও বই-এর ওপর। ফলে তারা প্রচণ্ডভাবে বিশেষ আদর্শে ইন্ডক্ট্রিনেটেড হতো। এক আদর্শের মানুষ অন্য আদর্শের মানুষের প্রতি বৈরিতামূলক মনোভাব রেখে চলত। ফলে এক সঙ্গে তারা কাজ করার কথা ভাবোতে পারতনা। কিন্তু জেন জি অল্প বয়স থেকেই বিভিন্ন আদর্শের লেখা ও ভিডিও ইন্টারনেট থেকে পেয়ে যায় আর তাই কোনও বিশেষ আদর্শের প্রতি ঝোঁক থাকলেও অন্য আদর্শের প্রতি চরম বৈরিতামূলক মনোভাব পোষণ করেনা। এই প্রজন্মের সবাই প্রায় কম বেশি নানা আদর্শের সমাহার। শত্রু হিসেবে আওয়ামী ও ভারত যেহেতু স্থীর ছিল, জেন জি-র সকলের এক হয়ে জোট বাঁধতে অসুবিধে হয়নি। আগের প্রজন্মগুলো এই কাজটাতেই ব্যর্থ হয়েছে।
তবে একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হোল এই আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল মেধা ভিত্তিক সরকারী চাকরী হওয়ার প্রসঙ্গে। মনে রাখা দরকার এই মেধা প্রসঙ্গে ২০১৭ সালেও ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে আওয়ামী সরকারকে কোটা তুলে নিতে বাধ্য করেছিল। সেই কোটা হাইকোর্ট মারফত আওয়ামী সরকার ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করাতেই কিন্তু ছাত্র জনতা মেধার ভিত্তিতে সরকারী চাকরীর দাবীতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন শুরু করে। গুরুত্বপূর্ণ প্রসঙ্গ হোল মেধার ভিত্তিতে আন্দোলনে মানুষ যত সহজে রাস্তায় নেমেছে, দীর্ঘ ১০ বছর ধরে নির্বাচন না হওয়ার জন্য কিন্তু এত বড়ো আন্দোলন হয়নি। এর কারণ হয়তো এই যে বিরোধী দলগুলোর ওপরে মানূষের যথেষ্ট ভরসা ছিলনা। কিন্তু মেধা ভিত্তিক সমাজ গঠনের প্রতি মানুষের যথেষ্ট আস্থা আছে।
মেধার ভিত্তিতে সরকারী চাকরী বন্টনের বিষয়টা এতোটাই শক্তিশালী বাংলাদেশের সমাজে যে নারীও তার ১০% নারী ভিত্তিক কোটা অস্বীকার নিতে অস্বীকার করে। এবং আন্দোলনের দাবী মতো নারী কোটা ০% করে দেওয়া হয়। এই বিষয়টা বিশ্ব জুড়ে যে নারীর স্বশক্তিকরণ প্রক্রিয়া চলছে তার বিপরীত। দুনিয়া জুড়ে যে মতবাদ এখন প্রচলিত তা হোল ণারী দীর্ঘ সময় ধরে বঞ্চিত ও অবদমিত আর তাই নারীকে সবকিছুতে পুরুষের থেকে বেশি সুযোগ দিতে হবে। কিন্তু এই ধারণাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে বাংলাদেশের জেন জি নারীরাই প্ল্যাকার্ড হাতে বলেছে "নারী যেখানে অগ্রসর, কোটা সেখানে হাস্যকর"। বাংলাদেশের জেন জি নারী জানিইয়ে দিয়েছে যে শেষ ৫৩ বছরে নারীর পক্ষে কোটা থাকার ফলে বাংলাদেশের নারী যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে এবং ৫৩ বছর পরে আর নারীর স্বশক্তিকরণের জন্য কোটার দরকার নেই। বাংলাদেশ ২০২৪ বিপ্লব-এর এই নারীর কোটা বিরোধী অবস্থান সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যা এই বিপ্লবকে বিশ্বের প্রচলিত গতি থেকে আলাদা করে।
মনে রাখা দরকার নারীর কোটা ছাড়াও বিভিন্ন সংখ্যালঘু জাতির জন্যে কোটা রাখার প্রবণতা পশ্চীমের গণতন্ত্রগুলোতে বাড়ছে। এর একটা বড় কারণ পশ্চীমা সমাজে মূল সংখ্যাগুরু যে শ্বেতাঙ্গ জাতি তাদের জন্মহার অত্যন্ত কম এবং তাই তাদের জনসংখ্যার শেয়ার কমে যাচ্ছে। আর তাই উৎপাদন ও ভোটব্যাঙ্ক হিসেবে সংখ্যালঘু জাতিগুলোর গুরুত্ব বেড়ে যাচ্ছে। তাই এই সমস্ত সংখ্যালঘু জাতিগুলোকে দলে নিতে পশ্চীমের বহু দলীয় গণতন্ত্রগুলো তাদের জন্য কোটার ওকালতি করে। বাংলাদেশে সংখ্যাগুরু বাঙালি মুসলমানেদের জনসংখ্যার শেয়ার বেড়েছে শেষ ৫৩ বছরে। বর্তমানে এই শেয়ার ৯০%-এরও বেশি। আর তাই সংখ্যালঘু জাতিগুলোকে খুশি করার দায় সমাজের নেই। জাতিগত ও উপজাতিগত বিভেদ কম থাকায় মেধা অনুযায়ী প্রাপ্তি তত্ত্ব খুব স্বাভাবিকভাবেই জায়গা পাচ্ছে বাংলাদেশে। এই মেধা অনুযায়ী সরকারী চাকরী বন্টন-এর আন্দোলন কি ক্রমেই মেধাতাত্রিক আন্দোলন শুরু করবে? অর্থাৎ শুধু সরকারী কর্মচারীরাই নয়, সাংসদদের ও মন্ত্রীদেরও মেধার প্রমাণ দিতে হবে কি? বিএনপি সভাপতি তারেক রহমান দ্বীকাক্ষিক সরকার তৈরি করার কথা বলেছেন। এবং এক কক্ষে থাকবে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা আর একটি কক্ষে থাকবে এমন লোকেরা যারা কোন না কোনভাবে নিজেদের মেধা প্রমাণ করেছেন। জামাত সভাপতিও বলেছেন দেশ চালাবে মেধাবীরা। অর্থাৎ বাংলাদেশ হয়তো বহু দলীয় নির্বাচন ব্যবস্থার সাথে চীনের মেধাতন্ত্রকে মেলাবার চেষ্টা করবে আগামীদিনে।(বহুদলীয় গণতন্ত্র থেকে মেধাতন্ত্র সবই এই লেখায় আছেঃ https://www.eastisrising.in/view-news/284)
১৮ই জিলাই-এর পরে যখন অধিকাংশ সমন্বায়কদের কিডন্যাপ করে নিয়ে গেছিল আওয়ামী সরকার, যখন মনে হচ্ছিল আন্দোলনকে দমন করতে সক্ষম হয়েছে সরকার, এরকম সময়েই বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে নতুন আন্দোলনের ঢেউ ওঠে। প্রচুর মৃত্যু বরণের মধ্য দিয়ে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা নতুন করে আন্দোলনকে দাঁড় করিয়ে দেয়। বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীদের সরকারী চাকরী নিয়ে চিন্তা থাকার কথা নয়। তাদের আন্দোলনে যোগ দেওয়ার কারণ বলাই যায় সরকারের দমনের ফলে যে বিশাল মৃত্যু মিছিল হয়েছে, তার বিরুদ্ধে। অপেক্ষাকৃত উচ্চ ও উচ্চমধ্যবিত্ত ছাত্রছাত্রীরা যেভাবে অপেক্ষাকৃত নীম্ন ও নীম্নমধ্যবিত্ত ছাত্রছাত্রীদের শুরু করা আন্দোলনের হ্রাস ধরে তার নজিরও খুব বেশি বিশ্ব আন্দোলনে নেই। তবে শোনা যায় বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও সমন্বায়ক নির্বাচন শুরু হয়ে গেছিল মেধা আন্দোলন শুরু হওয়ার পরে পরেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের চারপাশে ছাত্রছাত্রীরা ভাড়া বাড়িতে থাকত সেখানেও বেসরকারী ও সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে একটা গাটছড়া তৈরি হয়ে যায়। তবে বিপ্লব শেষে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা সরকারে বা রাজনীতিতে যোগ দেওয়ায় খুব আগ্রহ দেখায়নি।
বিপ্লব পরবর্তী অন্তর্বর্তীকালীন যে সরকার তৈরি হয়েছে তার অন্যতম দায়িত্ব হোল নতুন সংবিধান সৃষ্টি। নতুন সংবিধানের একটা জায়গা হোল ভবিষ্যতে যেন কোনো সরকার আর নির্বাচন না করে বছরের পর বছর টিকে থাকার চেষ্টা করতে না পারে। বিএনপি আর জামাত-এর কথা মতো মেধাতন্ত্রকে এর মধ্যে ঢোকানো হবে কি না সেটাই এখন দেখার।
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Theoretical General 01-October-2024 by east is risingশিবিরকে নিয়ে কিছু কথা
সম্প্রতি নির্দিষ্ট একটি গোষ্ঠীর ইন্ধনে শুরু হয়েছে ‛শিবির ব্যাশিং/ট্রলিং’ কর্মসূচি। নির্দিষ্ট ওই গোষ্ঠী ছাড়াও শিবিরের সাথে ব্যক্তিগত বা মতাদর্শগত বিরোধ থাকা অনেক জ্ঞানী-গুণী পলিটিক্যাল-এপলিটিক্যাল ব্যক্তিবর্গও উক্ত কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন। তারা মক করে নিজেদেরকে শিবিরের অমুক তমুক নানা পদধারী হিসেবে উল্লেখ করেছেন এবং একটি ম্যাসেজ দিতে চাচ্ছেন যেন শাহবাগের পর থেকে আন্ডারগ্রাউন্ডে চলে যাওয়া শিবির নিজেরাই ‛আমি শিবিরের অমুক ওয়ার্ড সভাপতি ছিলাম’― টাইপের লিখালিখি দেখে নিজেরাই ল্যাজ নাড়তে নাড়তে সামনে চলে আসে এবং মনে করতে থাকে ‛ও মা গো টুরু লাভ'
বাট দ্যা ম্যাটার অফ সরো দ্যাট- 'ইটস এ ট্র্যাপ'। আরো নির্দিষ্ট করে বললে, ইহা জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শিবিরের ব্রেইনচাইল্ডদের বের করে আনার এক নিনজা ট্যাকনিক।
যুদ্ধনীতি নিয়ে লেখা আমার অনেক লিখায় আমি একটা গ্রিক ওয়ার টেকটিক্সের কথা প্রায়শই বলে থাকি “Train the tiger to come out of the mountain”
এর অর্থ হলো- শত্রুকে তার শক্ত অবস্থান থেকে বের করে অপেক্ষাকৃত দুর্বল অবস্থানে এনে ঘায়েল করা।
নির্দিষ্ট ওই গোষ্ঠী শিবিরের সেই সমস্ত ব্রেইনচাইল্ডদের সামনে মূলা ঝুলিয়ে বের করে আনার চেষ্টায় মগ্ন।
শিবির এবং ঐ গোষ্ঠী দুটোই আদর্শিক শক্তি। কিন্তু ওই গোষ্ঠীটি জানে না আগামীকাল কি ঘটতে যাচ্ছে। কারণ আগামীকালের উপর তার কোনরূপ নিয়ন্ত্রণ নেই। অপরদিকে শিবির জানে যে আগামীকাল সে কি করবে। সেকারণে আগামীকালের ঘটনার উপর সর্বদাই তার প্রভাব থাকে। ব্যাপারটা এমন নয় যে শিবির আগামীকাল কি ঘটবে সেটা জানে। তবে বিভিন্ন বাস্তবতার উপর নির্ভর করবে যে সে আগামীকাল কতটা প্রভাব বিস্তার করতে পারবে। পার্থক্য এখানেই যে, ওই গোষ্ঠীর আদর্শের ভিত্তিপ্রস্তর খুবই নড়বড়ে।
আপনারা অনেকেই মনে করতে পারেন, এই গণঅভ্যুত্থানের মাস্টারমাইন্ড কিংবা ব্রেইনচাইন্ড মাহফুজ আলম, যিনি কেন্দ্রের সমন্বয়কদের দিকনির্দেশনা দিয়েছেন, কর্মসূচি দেওয়া এবং কর্মসূচির নাম বাস্তবায়ন সহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছেন। ইয়েস আমিও আপনার সাথে সম্পূর্ণ একমত। মাহফুজ সাহেব একজন অত্যন্ত ইন্টেলেকচুয়াল মানুষ। তিনি প্রচুর জ্ঞান রাখেন কিন্তু তিনিই যদি ওয়ান এন্ড অনলি ব্রেইনচাইল্ড হবেন তাহলে এত সহজে এবং দ্রুত পর্দার সামনে আসলেন কেন?
কারন তিনি একজন এপলিটিক্যাল পার্সন, তার কোনো পলিটিক্যাল ন্যারেটিভ নেই। দ্যাটস হোয়াই তাকে সব জায়গা থেকে অভিবাদন জানানো হচ্ছে। খুব সহজেই এবং দ্রুততম সময়ের মাঝে তিনি ইউনুস সাহেবের ইনার সার্কেলে আসতে পেরেছেন। যদিও তাকে নিয়ে তর্ক বিতর্ক আছে তবে সেই প্রসংগে যাচ্ছি না।
অন্যদিকে আপনি আমি সহ কয়জন পর্দার আড়ালে থাকা শিবিরের সেইসব ব্রেইনচাইল্ডদের নাম জানি বা তাদের আন্দোলনের প্রসিডিওর জানি? আমি নিজেও জানিনা খুব একটা, তবে অল্পকিছু জানতে পেরেছি বিভিন্ন মারফতে। এটুকু জানলেই বুঝতে পারবেন কেন ডেমোক্রেসির ফোর্থ এস্টেট বা পিলার খ্যাত মিডিয়া জামাত শিবিরকে এত বেশি হাইলাইট করছে
আচ্ছা আপনারা তো সবাই 'ছদ্মনাম' শব্দটার সাথে পরিচিত তাইনা? বিভিন্ন গোয়েন্দা কাহিনী পড়তে গিয়ে আমরা সবাই জানতে পারি যে গোয়েন্দারা কখনও আসল নাম ব্যবহার করে না। ঠিক তেমনি রয়েছে ‛ছদ্মবার্তা’ নামে আরেকটি টার্ম। যেটাকে এসপিওনাজ জগতে বলা হয় 'Pen message'
আন্দোলনের পুরোটা সময় জুড়ে শিবিরের ব্রেইনচাইল্ডরা তৈরি করে প্রায় ৪০-৪৫ টি পেন ম্যাসেজ। যেগুলো পরিস্থিতি বিবেচনায় বিভিন্ন সময় অনেক হাত ঘুরে এপলিটিক্যাল ব্রেইনচাইল্ড খ্যাত মাহফুজ আব্দুল্লাহ কিংবা কখনও কখনও সমন্বয়কদের ইনার সার্কেলে পৌঁছে যেত। পুরোটা সময় জুড়ে শিবিরের এই ব্রেইনচাইল্ডদের প্রধান শত্রু ছিল এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলি কমিউনিকেশন সেন্টার)। এনটিএমসিকে ফাঁকি দিয়ে প্রতিটা পেন ম্যাসেজ জায়গামত পৌঁছে দিতে পারা ছিল অবিশ্বাস্য। কারন একবার ডিটেক্ট হলে পুরো উইং শেষ।
সব জানা সম্ভব না হলেও দু তিনটি পেন ম্যাসেজ আপনাদের সাথে শেয়ার করি চলুন
* All birds have feathers and all Robin's are birds. Therefore Robin's have feathers
* All brown dogs in the park today are small dogs. Therefore all small dogs must be brown
* When it rains, the grass get wet. The grass is wet, it must have rained.
এধরনের পেন ম্যাসেজ অনেকটা উর্দু শের শায়েরীর মত। ছোট্ট একটা লাইন কিন্তু ব্যাখ্যা বড়। শুধু বুঝতে হবে।
এছাড়াও শিবিরের সেইসব ব্রেইনচাইল্ডরা তৈরি করেছিল শাপলা, আলফা, ব্রাভো, সিগমা নামে বিভিন্ন টিম। ফিল্ডে যাদের প্রত্যেকের কাজ আলাদা করা ছিল। যা এখনও অধিকাংশ মানুষ জানেই না। কারন এরা তো চ্যারিটি ফার্ম খুলে বসেছিল, ক্রেডিট নেওয়ার কোনোরকম লিপ্সা তাদের মাঝে দেখা যায়নি (এক্সেপশনাল থাকবেই)
শিবিরের সেইসব ব্রেইনচাইল্ডরা এখন অব্দি বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিচ্ছেন। তারা কেউ ট্রাপে পা দেননি। কিন্তু 'আমি কে তুমি কে...রাজাকার রাজাকার' স্লোগানের জন্মদাতা ঢাবি সূর্যসেন হলের ছাত্রদল নেতা অলরেডি নিজেকে জনসম্মুখে এনেছেন। এটা অবশ্য খারাপ কিছু না।
কিন্তু আপনি আপনার কমনসেন্স খাটিয়ে একটু চিন্তা করুন, দেশ যদি সত্যিই স্বাধীন হত তাহলে এপ্লিটিক্যাল ব্রেইনচাইল্ডদের পাশাপাশি পলিটিক্যাল ব্রেইনচাইল্ডদেরও বুক ফুলিয়ে তাদের কন্ট্রিবিউশন জানান দেওয়ার কথা ছিল। কই তারা তো সেটা পারছে না। উল্টো তাদের ব্যাশিং করা, ট্রাপে ফেলার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Theoretical General 31-August-2024 by east is risingযেসব কথা প্রধান সমন্বয়ক উপদেষ্টার কাছে তুলে ধরা জরুরি
*** বাংলাদেশের ছাত্র জনতা বিপ্লবের অন্যতম ক্রাইটেরিয়া হচ্ছে মেধার ভিত্তি অর্থাৎ Meritocracy. বাংলাদেশকে এই ন্যারেটিভের উপর থেকে বিচ্যুত হতে দেয়া যাবে না। বিএনপি বারবার প্রচার করছে ট্রেডিশনাল ডেমোক্রেসির বা গতানুগতিক গণতন্ত্রের কথা। গতানুগতিক গণতন্ত্রে মানুষ পুঁজির জোড়ে নির্বাচন করে ক্ষমতায় আসীন হয়, পুঁজির জোরে চালিত ডেমোক্রেসির শেষ
রূপ হচ্ছে Oligarchy State যেখানে পয়সাওয়ালা কর্পোরেট, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ীরা রাষ্ট্রকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়। এখানে মেধার কোনো মূল্যায়ন হয় না। সবচেয়ে উৎকৃষ্ট উদাহরণ হচ্ছে বাংলাদেশে আওয়ামী শাসন।
তাই বাংলাদেশে নির্বাচনের ক্রাইটেরিয়া হবে 'Meritocracy', নির্বাচন করতে হলে অবশ্যই তার Masters or Ph.D শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকতে হবে। টাকার জোরে সংসদে ঢুকতে দেয়া যাবে না।
*** পৃথিবীর বড় বড় বিপ্লবের পরই প্রতিবিপ্লবী শক্তি বিপ্লবী দেশকে পঙ্গু করতে নানানভাবে আক্রমণ করেছে। যেমন ফরাসি বিপ্লবের পর বিপ্লবী দেশ ফ্রান্সকে গ্রেট ব্রিটেন, অস্ট্রিয়া, প্রুশিয়া, রাশিয়া আক্রমণ করেছিল। আবার রুশ বিপ্লবের পর জার্মানি, অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরি, বুলগেরিয়া এবং অটোমান সাম্রাজ্য রুশকে আক্রমণ করে। ঠিক সেইভাবে বাংলাদেশে বিপ্লবের পর ভারতের সাথে আমাদের অলিখিত স্নায়ু যুদ্ধ শুরু হয়েছে। Water War সেটারই অংশ।
এই যুদ্ধে টিকে থাকতে হলে বাংলাদেশের মেধা ভিত্তিক বিপ্লবের আন্তর্জাতিক গ্রহণ যোগ্যতা বাড়াতে হবে এবং এটিকে গ্লোবালি ছড়ানোর ব্যবস্থা করতে হবে। এটা তখই সম্ভব হবে যখন বাংলাদেশ মেধার ভিত্তিতে আন্দোলনকে ভারতীয়
1. Indian General Cast
2. Indian Educated Middle Class
3. Non Hindi Linguistica or 'Minority Nations'
এই তিন ক্যাটেগরির মানুষ পজিটিভলি নিবে। এই আন্দোলনকে দক্ষিণ এশিয়ায় ছড়িয়ে দিতে হবে।
*** তৃতীয়ত যেটা করতে হবে সেটা হচ্ছে বিএনপি জামাত এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সময় দিতে হবে। বাংলাদেশের সকল রাজনৈতিক দল, প্রশাসন এবং রাষ্ট্রীয় পদ গুলো থেকে ৫০ এর দশকের Baby Boomer Generation এবং আশির দশকের Millennial Generation জেনারেশকে Gen X & Gen Z দ্বারা রিপ্লেস করতে হবে।
সর্বোপরি রাষ্ট্রকে তরুণদের হাতে তুলে দিতে হবে, তিন মাথাওয়ালা বিজ্ঞরা তরুণদের কনসালটেন্ট বা পরামর্শদাতা হিসাবে থাকবেন।
আরেকটা পয়েন্ট সেটা হচ্ছে রাষ্ট্রের তরুণদের চাকুরী মুখী না করে Entrepreneurial and Innovative হওয়ার দিকে ধাবিত করতে হবে। এজন্য রাষ্ট্রকে অবশ্যই তরুণদের জন্য পুঁজি এবং আইনগত সহায়তা সহজলভ্য করতে হবে। অন্তত ড. ইউনুস সবসময় তরুণদের Entrepreneurial হতে উৎসাহী করেছেন।
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Theoretical General 22-August-2024 by east is risingপশ্চীমে গণতন্ত্রের আগমণ
পশ্চীম ইউরোপে গণতন্ত্র নিয়ে চর্চা শুরু হয় গ্রীক ও রোমান ইতিহাস পড়ার মধ্য দিয়ে। মধ্য পঞ্চদশ শতাব্দীতে কনস্টান্টিনোপল ওসমানীয় সাম্রাজ্যের হস্তগত হলে বহু গ্রীক জ্ঞানী ব্যক্তি ইতালি-তে পালিয়ে আসে। তাদের হাত ধরেই প্রাচীন গ্রীক ও রোমান জ্ঞান প্রথমে ইতালিতে এবং পরে গোটা পশ্চীম ইউরোপে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। প্রাচীন গ্রীক ও রোম-এর গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সম্পর্কে জানা শুরু করে পশ্চীম ইউরোপ তখন থেকেই।
পশ্চীমে মেধা অনুযায়ী প্রাপ্তি তত্ত্বের আগমণ
কর্ম যোগ্যতা বা মেধা অনুযায়ী প্রাপ্তি-র তত্ত্ব পশ্চীমিরা পায় মুসলিম দার্শনিকদের থেকে। ক্রুশেড যুদ্ধে পরাজিত হওয়ার পর থেকেই ইউরোপ অনুসন্ধান করতে শুরু করে ক্রুশেড যুদ্ধে পরাজয়ের কারণগুলো। তারা মনে করে আরব তুর্কি কুরদ-দের জয়ের কারণ তাদের ইউরোপীয়দের তুলনায় অধিক জনসংখ্যা, বিজ্ঞান প্রযুক্তির ওপর আধিপত্য এবং কর্ম যোগ্যতা অনুযায়ী প্রাপ্তি-র গুরুত্ব। ইবনে খাদলুন-এর মতো মুসলিম দার্শনিকদের থেকেই ইউরোপীয়রা পায় মূল্যের শ্রম তত্ত্ব (সমস্ত মূল্যের আদি উৎস হল শ্রম) বা লাফার কার্ভ (একটা নির্দিষ্ট স্তরের চেয়ে বেশি আয় কর বাড়ালে আয় কর জাত রাষ্ট্রীয় খাজনা কমে যায়)-এর মতো কর্ম যোগ্যতা অনুযায়ী প্রাপ্তি-র গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভগুলো। এমনকি ভূমি সংস্কার সম্পর্কেও ইউরোপীয়রা জানতে পারে খলিফা ওমরের সপ্তম শতকে করা মিশরের ভূমি সংস্কার থেকে। যেখানে বিজয়ী আরবরা ভূস্বামীদের বড় বড় জোত কৃষকদের মালিকানাধীন করে দিয়ে মিশরের কৃষির উৎপাদনশীলতা অনেক বাড়িয়ে দেয়।
ছাপাখানা আবিস্কারের ফল
এছাড়া পঞ্চদশ শতকের মধ্যভাগে আবিষ্কৃত ছাপাখানা বই কেনা ও পড়া অনেক সহজ করে দেয় ইউরোপ জুড়ে। তৎকালীন যুগে স্বাভাবিকভাবেই বাইবেল পড়া অনেক বেড়ে যায় এবং এর ফলে বাইবেল-এর স্বাধীন ব্যাখ্যা বৃদ্ধি পায় বিপুলভাবে। একদিকে লাতিন ভাষার বাইরে আঞ্চলিক ভাষায় বাইবেল লেখা ও পড়া বৃদ্ধি পায় আর অন্যদিকে ক্যাথোলিক চার্চ এর বাইবেল ব্যাখ্যার বাইরে গিয়ে বাইবেল ব্যাখ্যা শুরু হয়। ক্যাথোলিক চার্চকে অমান্য করে প্রটেস্টাণ্ট খৃষ্ট ধর্ম তৈরি হয়।
জাতি রাষ্ট্র ও পরম রাজতন্ত্র
এরকম সময় পশ্চীম ইউরোপের রাজারা ক্যাথোলিক পোপের কর্তৃত্ব অস্বীকার করার সুযোগ পায়। তারা একদিকে আঞ্চলিক ভাষাগুলোর প্রমিতকরণ শুরু করে এবং বহু আঞ্চলিক ভাষাকে এক সাহিত্যের ভাষায় পরিণত করে। আর অন্যদিকে প্রোটেস্টান্ট ধর্মকে সমর্থন করে। ক্যাথোলিক ধর্মাবলম্বী রাজারাও ভাষার প্রমিতকরণ ঘটায় এবং ক্যাথোলিক চার্চ এর দুর্বলতার সদব্যবহার করে। এর ফলে ইউরোপে দুটো বৈশিষ্ঠ তৈরি হয় ষোড়শ শতকের প্রথম ভাগ থেকে সপ্তদশ শতকের মধ্যভাগের মধ্যে। একদিকে এক ভাষা ও এক ধর্মের জাতি রাষ্ট্র গড়ে ওঠে আর অন্যদিকে ক্যাথোলিক চার্চ এর অনুমোদন ছাড়া বা অনুমোদনকে গুরুত্বহীন আনুষ্ঠানিক করে দিয়ে রাজারা স্বঅনুমোদিত পরম রাজতন্ত্র কায়েম করে। এর আগে যে ইউরোপের রাজাদের ক্যাথোলিক চার্চ এর কাছ থেকে অনুমোদন নিয়ে রাজা হতে হত তা আর রইলনা। এল জাতি রাষ্ট্র ও পরম রাজতন্ত্র।
ইংল্যাণ্ডের বিপ্লব
এই স্বঅনুমোদিত পরম রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ হয় ইংল্যাণ্ডে সপ্তদশ শতকের মধ্যভাগে। পার্লামেন্ট বা রাজসভাসদ-রা এই বিদ্রোহ পরিচালনা করে। জন লক (যাকে উদারবাদের জনক বলা হয়) তিনি এই সময় বোঝান যে রাষ্ট্র যে করের টাকায় চলে সেই কর যারা প্রদান করে তাদের অস্বীকার করে রাজা কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারেননা এমনকি রাজাও হতে পারেননা। আসলে এখানে মুসলিম দার্শনিকদের থেকে নেওয়া কর্ম যোগ্যতা অনুযায়ী প্রাপ্তির তত্ত্বকে মেলানো হয় গ্রীক রোমানদের থেকে পাওয়া গণতন্ত্রের তত্ত্বকে। লক বলেন যে বেশি আয় করে সেই বেশি আয় কর দেয় এবং তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকা উচিত রাষ্ট্র পরিচালনায়। অতএব সমাজের বড় বড় জমিদার ব্যবসায়ী ব্যঙ্কার সেনাপতি ও পাদ্রিদের ভূমিকা প্রধান হবে দেশ গঠনের ক্ষেত্রে। বলা বাহুল্য এর ফলে সমাজের সবচেয়ে ধনী অংশটা ক্ষমতা পায় দেশ পরিচালনায় এবং রাজা হয়ে যায় আনুষ্ঠানিক ও গুরুত্বহীন। ১৬৪২ সাল থেকে ১৬৮৯ পর্যন্ত এই বিদ্রোহ চলে যা গৌরবময় বিপ্লব-এর মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
মার্কিন বিপ্লব
এর প্রায় ১০০ বছর পরে আরও দুটো বিপ্লব গণতন্ত্র ও কর্ম যোগ্যতা অনুযায়ী প্রাপ্তির তত্ত্বকে আরও নিপুণভাবে প্রতিষ্ঠিত করে। ১৭৭৬ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিপ্লবের মূল বিষয় ছিল একটা বিশেষ ভৌগলিক অঞ্চলের মানুষ যদি চায় তারা দূরবর্তী রাষ্ট্রকে কর প্রদান করবেনা এবং স্বাধীন রাষ্ট্র নির্মাণ করে তাকেই কর প্রদান করবে এবং নিজেদের মতো করে সেই নতুন রাষ্ট্র পরিচালনা করবে। কারণ সেই ভৌগলিক অঞ্চল থেকে যে আয় হচ্ছে তার ভাগ তারা দূরবর্তী রাষ্ট্রকে দিতে রাজি নয়। কারণ বদলে সেই দূরবর্তী রাষ্ট্রের থেকে কার্যকর কিছু পাচ্ছেনা। জাতীয়তাবাদের গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি স্থাপন করে মার্কিন বিপ্লব। এর মূল কথা হল কোন বিশেষ অঞ্চলের মানুষ একটা রাষ্ট্রে যদি বেশি আয় করে এবং সেই অঞ্চলের মানুষ যদি সংখ্যালঘু হয় তাহলে গণতন্ত্র-এর অর্থ হয়ে দাঁড়ায় সেই সংখ্যালঘু মানুষের আয়কে হরণ করে অন্যদের মধ্যে বন্টন করা। তাই সেই উচ্চ আয় সম্পন্ন অঞ্চলের মানুষের উচিত দূরবর্তী রাষ্ট্রকে অস্বীকার করে স্বাধীন রাষ্ট্র নির্মাণ করা। বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন-এর দর্শন এই ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ফরাসী বিপ্লব
১৭৮৯ সালের ফরাসী বিপ্লব রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষমতাকে মধ্যবিত্ত অবধি ছড়িয়ে দেয়। ইংল্যাণ্ড-এর গৌরবময় বিপ্লবের থেকে শিক্ষা নিয়ে ফ্রান্স সহ ইউরোপের সমস্ত পরম রাজতন্ত্রগুলো বড় বড় সামন্ত ও পাদ্রীদের মন যুগিয়ে চলার চেষ্টা করতে থাকে যাতে ইংল্যাণ্ডের মতো বিদ্রোহ না হয়। কিন্তু এর ফলে দেখা যায় ফ্রান্স রাষ্ট্র-এ অষ্টাদশ শতকের শেষ ভাগে মধ্যবিত্ত (ফরাসী ভাষায় যার অর্থ বুর্জোয়া) শ্রেণি (যেমন আইনজ্ঞ, চিকিৎসক, দোকানদার, ছোট সদ্য গজিয়ে ওঠা কারখানার মালিক, শিক্ষক্, ইত্যাদি) বেশি কর দিচ্ছে আর অন্যদিকে সেই করের টাকায় ভর্তুকি খাচ্ছে সামন্ত ও পাদ্রীরা। তাই মধ্যবিত্ত শ্রেণি বিদ্রোহ করে এবং যে সংবিধান বানায় তাতে ব্যক্তি মালিকানা থাকলেই ভোটাধিকার পাবে এবং ভোটে দাঁড়ানোর অধিকার পাবে। এবং সামন্ত ও পাদ্রীদের ভর্তুকি বন্ধ করা হবে ও তাদের অতিরিক্ত প্রবর্তিত জমি কৃষকদের মালিকানাধীন করে দেবে। রুশো নামের দার্শনিক-এর তত্ত্ব এই রাষ্ট্র পরিচালনার বিষয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ফরাসী বিপ্লবের ফল দেখে গোটা ইউরোপের সামন্ত শ্রেণি আতঙ্কিত হয় এবং ফরাসী বিপ্লবী সরকারকে উচ্ছ্বেদ করতে যুদ্ধ শুরু করে। সেই যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে ফরাসী সেনাবাহিনী শক্তিশালী হয়ে ওঠে এবং তাদের নেতা নেপোলিয়ন যুদ্ধ জিতে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। নেপোলিয়ন বোঝেন গণতন্ত্রে বহু মুনির বহু মত আর তাই রাষ্ট্র পরিচালনা হয়ে যাচ্ছে দুর্বিষহ। নেপোলিয়ন নিজেকে রাজা ঘোষণা করেন কিন্তু কর্ম যোগ্যতা অনুযায়ী প্রাপ্তির তত্ত্বকে আরও গভীরভাবে প্রয়োগ করেন। যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরী ও প্রমোশনের সুযোগ, ভূমি সংস্কার, ইত্যাদি সুচারুভাবে নেপোলিয়ন প্রতিষ্ঠিত করেন। ১৮১৫ সালে নেপোলিয়নের যুদ্ধে হার হলে ফ্রান্স-এ আবার পরম রাজতন্ত্র কায়েম হয় কিন্তু কর্ম যোগ্যতা অনুযায়ী প্রাপ্তি-কে অধিকাংশ ক্ষেত্রে মেনে নেয়।
ফরাসী বিপ্লবের অসম্পূর্ণতা
দেখা যাচ্ছে ইংল্যান্ডের বিপ্লব যেখানে রাজার জায়গায় সমাজের ধনীতম অংশটির প্রতিনিধি সরকার নিয়ে আনে, মার্কিন বিপ্লব সেখানে স্বাধীন রাষ্ট্র নির্মাণে গুরুত্ব দেয় আর ফরাসী বিপ্লব সমাজের ধনীতম অংশের জায়গায় শুধু মধ্যবিত্তের প্রতিনিধি সরকার চালু করেই ক্ষান্ত হয়নি বরং ধনীতম অংশের নানা সুবিধে ও মালিকানা কেড়ে নেয়। তবে সমাজের দরিদ্রতম মানুষের শ্রম ও অধিকারকে আদৌ প্রতিষ্ঠিত করেনি এই তিন বিপ্লব। ফরাসী বিপ্লবের আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল নারীর ভোটদানের বা ভোটে দাঁড়াবার অধিকার অস্বীকার করা হয়। নেপোলিয়ন বলে নারী পড়াশুনো করবে ভাল মা হওয়ার জন্যে অর্থাৎ নারী ঘরনী, নারী আয় কর দেয়না আর তাই নারীর ভোটদানের বা ভোটে দাঁড়াবার অধিকার নেই। অর্থাৎ ব্যক্তি মালিকানাহীন সকল প্রাপ্তবয়স্ক দরিদ্র পুরুষ ও সকল প্রাপ্তবয়স্ক নারী ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিতই থেকে যায় এই ফরাসী বিপ্লবের পরেও।
ফ্রান্সে সাময়িকভাবে পরম রাজতন্ত্র জয়ী হলেও মধ্যবিত্তের বিদ্রোহে গোটা ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ে। শেষ পর্যন্ত বিদ্রোহের ভয়ে ইংল্যান্ডের পার্লামেন্ট ১৮৩২ শালের জন প্রতিনিধি আইন-এ জানায় যে ১০ পাউণ্ড বা তার বেশি আয় কর দিলেই যে কোন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের ভোট দেওয়ার ও ভোটে দাঁড়াবার অধিকার থাকবে।এর ফলে তৎকালীন ইংল্যাণ্ডের ১৫% প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ ভোটাধিকার পায়। বলা বাহুল্য গৌরবময় বিপ্লবের ফলে উচ্চবিত্ত নারীদের যে ভোটাধিকার ছিল তা কেড়ে নেওয়া হয় এই আইনে।
ব্যক্তিমালিকানাহীন শ্বেতাঙ্গ পুরুষ, শ্বেতাঙ্গিনী নারী ও অশ্বেতাঙ্গ মানুষের জন্য নয় বুর্জোয়া বিপ্লব
পশ্চীমা নারীর প্রতি এই আচরণের একটা কারণ ছিল "শ্বেতাঙ্গ পুরুষের দায়ভার" তত্ত্ব। এই তত্ত্ব মতে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ জাতি শ্বেতাঙ্গদের গোটা দুনিয়া জুড়ে আধুনিকতার আলো জ্বালতে হবে এবং অশ্বেতাঙ্গ অসভ্য জাতিদের সভ্য করতে হবে। আর তাই শ্বেতাঙ্গ জাতির উৎপাদন ঠিকঠাক রাখতে শ্বেতাঙ্গিনী নারীদের বেশি বেশি করে সন্তানের জন্ম দিতে হবে। বলা বাহুল্য ১৭৭০ থেকে ১৮৭০ এর মধ্যে শ্বেতাঙ্গ জাতির জনসঙ্খা বাড়ে ৬ গুণ এবং তারা ইউরোপের বাইরে আমেরিকা ও ওসেনিয়া মহাদেশে সংখ্যাগুরু হয়ে যায় আর আফ্রিকা ও এশিয়াতেও ছড়িয়ে পড়ে অশ্বেতাঙ্গদের শাসন করতে। অর্থাৎ ব্যক্তি মালিকানাহীন দরিদ্র শ্বেতাঙ্গ পুরুষ, শ্বেতাঙ্গিনী নারী ছাড়াও অশ্বেতাঙ্গ মানুষের জন্য কোনও অধিকারের কথা বলেনি ফরাসী বিপ্লব বা মার্কিন অথবা ইংল্যাণ্ডের বিপ্লব।
পশ্চীমের সংগঠিত শ্রমিক শ্রেণির উত্থান
ইতিমধ্যে শিল্প বিপ্লব ছড়িয়ে পড়ে পশ্চীম ইউরোপ ও আমেরিকা জুড়ে। ফলে কল কারখানার গুরুত্ব বেড়ে যায় আর তার সাথে বাড়ে সংগঠিত শ্রমিক শ্রেণির গুরুত্ব। সংগঠিত শ্রমিক শ্রেণি এত আয় করে না যে আয় কর দেবে। কিন্তু তাদের সম্মিলিত শ্রমই উৎপাদন ব্যবস্থা সচল রাখে। মধ্যবিত্ত ও ধনী শ্রেণি সেই উৎপাদন বিক্রি করেই আয় কর দিতে পারে রাষ্ট্রকে। আর তা বুঝিয়ে দিতে পারত সংগঠিত শ্রমিক শ্রেণি হরতাল (কারখানায় কাজ বন্ধ করে দিয়ে) করে। কার্ল মার্ক্স এই সময়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন তার উদ্বৃত্ত শ্রম তত্ত্ব দিয়ে যা বলে শ্রমিক শ্রেণির শ্রমই হল সকল শ্রম ও মূল্যের উৎস। এর ফলে ১৮৫৬ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ও ১৮৬৭ সালে ব্রিটেনে সকল প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্টিত হয়। নারী ও অপশ্চীমারা তখনও কোনও অধিকার পায়নি। মার্কিন কৃষ্ণাঙ্গ পুরুষেরাও নামেই ভোটাধিকার পায়, নানা ছল ছাতুরি করে তাদের অধিকার প্রয়োগে বাঁধা দেওয়া হতো বারবার। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আদি বাসিন্দা রেড ইন্ডিয়ানদেরও সবচেয়ে বেশি হত্যা করা হয় ১৮৫৬ সালের পরেই।
১৮৭০ সালের পরের নতুন সমীকরণঃ অপশ্চীমা বিশ্ব ও নারীর উত্থান
১৮৭০ সাল থেকে বিপুল পরিবর্তন শুরু হয়। ছোট শিল্পপতিদের বৃহৎ শিল্পপতিরা প্রতিযোগিতায় হারিয়ে দেয়। ফলে ছোট শিল্পপতিরা শ্রমশক্তি বিক্রয়কারী শ্রমিকশ্রেণিতে পরিণত হয়। এবং মধ্যবিত্ত কারখানার মালিকের জায়গায় আসে উচ্চবিত্ত কারখানার মালিকেরা। ফলে উচ্চবিত্ত জমিদার ব্যাঙ্কার-দের সাথে এক শ্রেণিভুক্ত হয় শিল্পপতিরা। অনেক জীবন দায়ী ঔষধ আবিস্কারের ফলে ও চিকিৎসাবিজ্ঞান-এর উন্নতির ফলে মৃত্যু হার কমতে শুরু করে। আবার একজন শিশুকে দক্ষ শ্রমিক বানানোর কাজে বিপুল খরচ বলে শিশু লালন পালন করা খরচ সাপেক্ষ হয়ে ওঠে। এই দুই-এর ফল দাঁড়ায় কম সন্তান নেওয়ার ঝোঁক বাড়ে সমাজে। এবং নারী সুযোগ পায় বাইরে গিয়ে আয় করার। অন্যদিকে জাপান বাদে সমস্ত অপশ্চীমা দেশই পশ্চিমের বিভিন্ন দেশের উপনিবেশ বা আধা উপনিবেশে পরিণত হয়। এই সমস্ত অঞ্চলের সস্তা শ্রম ও খনিজ ও কৃষি সম্পদের জন্য পশ্চীমারা সেখানেও কারখানা ও বিদ্যালয় গড়ে তোলে। এর ফলে অপশ্চীমা দেশগুলোতেও স্বাধীন রাষ্ট্র, ভোটাধিকার, শ্রমের মূল্য ধারণাগুলো শক্তিশালী হতে থাকে।
রুশ বিপ্লব
১৯১৭ সালে প্রথম বিশ্ব যুদ্ধের মধ্যেই ঘটে যায় আরেকটা বড় বিপ্লব, রুশ বিপ্লব। রুশ বিপ্লবের নেতা লেনিন তুলে ধরেন যে পশ্চীমে ১৮৭০ থেকে যে বহু দলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তা উচ্চবিত্ত শ্রেণির হাতে ক্ষমতা তুলে দিয়েছে। ভোট দানের অধিকার সকল শ্রেণির পুরুষের থাকলেও কার্যকর ভাবে ভোটে দাঁড়াবার ক্ষমতা কেবল উচ্চবিত্ত শ্রেণিরই আছে। যারা উচ্চবিত্ত নয় তাদেরও উচ্চবিত্তদের থেকে পয়সা নিয়েই ভোটে দাঁড়াতে হবে এবং তাদের কথা শুনেই চলতে হবে। তাই সাধারণ জনতার হাতে ক্ষমতা রাখতে গেলে কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বে শ্রমজীবী মানুষকে তার কারখানা ও খামারে উৎপাদনের স্থানে গণতন্ত্র নিয়ে আসতে হবে। শ্রমিকেরা কৃষকেরা ছাত্ররা ভোট দিয়ে তাদের কারখানার খামারের বিদ্যালয়ের নেতা নির্ণয় করবে। এবং সেই নেতারা আবার উচ্চতর কমিটির নেতাদের নির্বাচন করবে আর এভাবেই ধাপে ধাপে উচ্চতম পলিট ব্যুরোর নেতৃত্ব নির্বাচিত হবে। এছাড়াও রুশ বিপ্লব প্রথম প্রাপ্তবয়স্ক নারীকে ভোটাধিকার ও অন্যান্য রাজনৈতিক অধিকার দেয়। এমনকি দ্রুত শিল্পায়ণের জন্যে সোভিয়েত সরকার নারীকে শ্রম বাজারে নিয়ে আসে পুরোপুরিভাবে। এছাড়াও সোভিয়েত সরকার অপশ্চীমা দেশগুলোতে স্বাধীনতা ও শিল্পায়ণের প্রসার ঘটানোর ঘোষণা করে।
সোভিয়েত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-এ জয়ী হয় এবং প্রমাণ করে তার দ্রুত শিল্পায়ণ কর্মসূচীর কার্যকারিতা। ফলে পশ্চীমা দেশগুলোও নারীকে শ্রম বাজারে নিয়ে আসতে শুরু করে। আবার অপশ্চীমা দেশগুলোতে পশ্চীমা উপনিবেশবাদের বিরুদ্ধে লড়াই ছড়িয়ে পড়ে। ১৯৭৪ সালে হেনরি কিসিঞ্জার ভিয়েতনাম যুদ্ধে পরাজিত হওয়ার পরে ঘোষণা দেয় যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উপনিবেশবাদ সমর্থন করবেনা। বলা যায় নারী ও অপশ্চীমা মানুষও সমস্ত অধিকার পায় সোভিয়েত বিপ্লবের ফলেই।
রুশ বিপ্লবের অসম্পূর্ণতা
কিন্তু লেনিনের দেওয়া রাজনৈতিক অধিকারের তত্ত্ব ক্রমেই সমস্যার সম্মুখীন হয়। উৎপাদন কেন্দ্র থেকে নির্বাচনের মাধ্যমে নেতা বাছাই করে উচ্চতর কমিটি হয়ে উচ্চতম পলিটব্যুরোর নেতা বাছাই হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু হত উলটো। উচ্চতর কমিটির নেতা নীম্নতর কমিটিতে কে নির্বাচনে দাঁড়াবে তা ঠিক করে দিত। ফলে উচ্চতর কমিটির নেতার প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করে নীম্নতর কমিটির নেতা হওয়ার প্রবণতা প্রকট হয়। বহু দলীয় গণতন্ত্র যেমন উচ্চবিত্তদের কুক্ষিগত হয়, লেনিনের গণতান্ত্রিক কেন্দ্রিকতায় তেমনই আনুগত্যের ওপর নির্ভর করা অযোগ্য নেত্রিত্ব প্রতিষ্ঠিত হতে শুরু করে। তার ওপর বলা যায় বহু দলীয় গণতন্ত্রে বহু দল থাকায় ক্ষমতার একটা বিকেন্দ্রীকরণ হয় যার সম্ভাবনা গণতান্ত্রিক কেন্দ্রীকতায় হয়না এক দলীয় হওয়ায়।
চী্ন-এ এক দলীয় মেধাতন্ত্র-এর উত্থান
১৯৭৯ সালে চীনে ও ইরানে এই সমস্যার সমাধান খোঁজা হয়। চীনে দেং শিয়াও ফিং চীনের কনফিউসিয়ান পরম্পরা মেনে মেধা ভিত্তিক নেতা নিয়োগ শুরু করে। অর্থাৎ গাওকাও (বিশ্ব বিদ্যালয় প্রবেশের পরিক্ষা) ও গুওকাও (সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা) দিয়ে পাশ করা লোকেদেরই কেবল নীম্নতম কমিটিতে নিয়োগ করা যাবে। এবং ধাপে ধাপে সেই নেতাদের মেধা ও দক্ষতা দেখে উচ্চতর কমিটিতে নিয়োগ করা হবে। এইভাবে চীন একদিকে উচ্চবিত্তদের হাতে রাষ্ট্র পরিচালনা কুক্ষিগত হওয়া থেকে মুক্তি পায় আর অন্যদিকে আনুগত্য ভিত্তিক অযোগ্য ব্যক্তিদের হাত থেকেও রেহাই পায়। ফলে চীন পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে দ্রুত শিল্পায়ণ ঘটায় এবং মাত্র ৪০ বছরে বিশ্ব উৎপাদনের প্রাণকেন্দ্র হয়ে দাঁড়ায় যা পশ্চীমের বিশ্ব অর্থনীতিতে যে আধিপত্য ছিল তা ভেঙ্গে দেয়।
ইরানে বহুদলীয় গণতন্ত্র ও মেধাতন্ত্রের মধ্যে মেলবন্ধনের প্রচেষ্টা
ইরানে ইসলামী বিপ্লব এই সমস্যার সমাধান খুঁজতে ইস্লামী পরম্পরায় কোরান হাদিসের শাসনের সাথে আধুনিক মেধা ও বহু দলীয় গণতন্ত্রের মেলবন্ধন ঘটায়। একদিকে শাসনে গুরুত্বপূর্ণ জায়গা থাকবে কোরান হাদিস বিষয়ে জ্ঞানী ব্যক্তিরা আর অন্যদিকে থাকবে মানুষের দ্বারা নির্বাচিত প্রতিনিধিরা। কিন্তু জন প্রতিনিধি হতে গেলে মাস্টার্স হওয়া বাধ্যতামূলক। তেমনই মন্ত্রী হতে গেলে পিএইচডি হওয়া বাধ্যতামূলক।
২০২১ সালে আফঘানিস্তানে ইসলামী বিপ্লবী তালিবান সরকার কেবল কোরান হাদিস বিষয়ে জ্ঞানী ব্যক্তিদেরই রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব দেয়।
অতএব বলাই যায় আজকের পৃথিবীতে দুই রকমের ধারা বর্তমান। একদিকে পশ্চীমা বিশ্ব-এর বহুদলীয় গণতন্ত্র বনাম স্বৈরতন্ত্রের ধারা আর অন্যদিকে চীন-এর মেধাতন্ত্র (meritocracy) বনাম উচ্চবিত্ততন্ত্রের (oligarchy) ধারা। ইরান এই ক্ষেত্রে বলা যায় এই দুই ধারার একটা মেলবন্ধন ঘটানোর প্রচেষ্টা। এবার বাংলাদেশ-এর মহান বিপ্লবী ছাত্র জনতাকে ভাবতে হবে তারা কোন পথে যাবে।
বাংলাদেশেও হোক বহুদলীয় গণতন্ত্র ও মেধাতন্ত্রের সমন্বয়
বাংলাদেশের ২০২৪ বিপ্লবের একটা গুরুত্বপূর্ণ জায়গা ছিল মেধা ভিত্তিক সরকারী কর্মচারী নিয়োগ। আবার এক দলীয় অপশাসনের বিরুদ্ধে বহু দলীয় গণতন্ত্রও ছিল লক্ষ্য। তেমনই ছিল ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদকে রুখে দেওয়ার অঙ্গীকার। মনে রাখা দরকার বহু দলীয় গণতন্ত্র সর্বত্র উচ্চবিত্ততন্ত্র কায়েম করে কিন্তু তার মধ্যে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ থাকে বহু দল আছে বলে। তেমনই চীনের মেধাতন্ত্রে ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ ঘটে কিন্তু রাষ্ট্র পরিচালনা করে অত্যন্ত মেধাবী ব্যক্তিরা যার ফলে সমাজ এগোয় দ্রুত। ইরানের মতো বাংলাদেশকেও এই দুই-এর মেলবন্ধন ঘটাতে হবে যাতে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণও থাকে আবার মেধাবী ব্যক্তিরাই রাষ্ট্র পরিচালনা করে। নির্বাচনে দাঁড়াতে নির্দিষ্ট মেধা থাকা বাধ্যমূলক করে বহু দলীয় কাঠামো বজায় রাখা যেতে পারে। অর্থাৎ সমস্ত দলকেই নির্বাচনে দাঁড় করাতে হবে এমন লোকেদের যাদের সরকারীভাবে বেঁধে দেওয়া মানের মেধা আছে। সে কোনো নির্দিষ্ট পরীক্ষা পাশ করাও হতে পারে আবার মাস্টার্স বা পিএইচডি-ও হতে পারে।
Author: Saikat Bhattacharya
Theoretical General 22-August-2024 by east is risingহিন্দি গুজারাতি সাম্রাজ্যবাদ বাংলার (বাংলাদেশ পঃবঙ্গ ত্রিপুরা) ওপর আঘাত বাড়াচ্ছেঃ বাংলাদেশের মেধার অধিকারের আন্দোলন, সুকান্ত মজুমদার-এর পঃ বঙ্গ থেকে উত্তর-এর অংশকে আলাদা করার ডাক, নিশিকান্ত দুবের মালদা ও মুশিরদাবাদ জে্লাকে কেন্দ্রীয় শাসিত করতে বলা, সবই আসলে এক সূত্রে গাঁথা।
হিন্দি গুজারাতি সাম্রাজ্যবাদ জানে বাঙালি জাতি জনসংখ্যার দিক থেকে ৩০-৩৫ কোটি। বাংলার আছে বিশাল সমুদ্র তট যেখান থেকে বাঙালি অনায়াসে বিদেশের সাথে বাণিজ্য চালাতে পারবে এবং বিদেশি মুদ্রা আয় করতে পারবে এবং সেই মুদ্রার বলে স্বাধীন রিসার্ভ ব্যঙ্ক বানাতে পারবে যা স্বাধীন রাষ্ট্রের আধুনিক যুগে সবচেয়ে বড় বুনিয়াদ।
বাঙালি স্বাধীন রাষ্ট্র পেয়ে গেলে বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী দেশ হবে আর তা হলে গোটা গুজারাতি হিন্দি সাম্রাজ্যই ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাবে। তাই যেভাবে হোক বাঙালিকে শেষ কর। শেষ করতে এক দিকে বাংলাদেশের সার্বভৌম সরকারকে নিয়ন্ত্রণ কর। আর অন্যদিকে পঃ বঙ্গ-এর রাজ্য সরকারকে নিয়ন্ত্রণ কর। যদি নিয়ন্ত্রণ করতে না পার তো নানাভাবে সরকারকে বেকায়দায় ফেল। বর্তমান বাংলাদেশ সরকার আপাতত নিয়ন্ত্রণে আছে গুজারাতি হিন্দি সাম্রাজ্যবাদের। কিন্তু পঃ বঙ্গের রাজ্য সরকার পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নেই। তাই পঃ বঙ্গের যে অংশটায় বিজেপি জিতেছে অর্থাৎ উত্তরের অংশকসক আলাদা করার দাবি জানাচ্ছে।
এবার প্রশ্ন পঃ বঙ্গ-এর রাজ্য সরকার কিভাবে গুজারাতি হিন্দি সাম্রাজ্যবাদের বিপক্ষে কাজ করছে?
এক, পঃ বঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যনারজি তিস্তার জলের ভাগ বাংলাদেশকে দিতে রাজি নয় আর এর কারণ হল তিস্তার জলের বেশি ভাগ বাংলাদেশকে দিলে পঃ বঙ্গের উত্তর বঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং সেখানকার চাষাবাদে ভয়ঙ্কর পরিণাম নেমে আসবে। গুয়াজারাতি হিন্দি সাম্রাজ্যবাদ চায় তিস্তার জল বাংলাদেশকে দিয়ে একদিকে তার পোষা বাংলাদেশ-এর সরকারকে স্থায়িত্ব দিতে আর অন্য দিকে পঃ বঙ্গের উত্তর বঙ্গে ভয়ানক ক্ষরা তৈরি করে সব দোষ পঃ বঙ্গ সরকারের ওপর চাপিয়ে উত্তর বঙ্গকে পঃ বঙ্গ রাজ্য থেকে আলাদা করা। উত্তর বঙ্গ আলাদা রাজ্য হলেই সেখানকার প্রশাসনে বিজেপি গেঁড়ে বসবে এবং আস্তে আস্তে বাংলা ভাষা তুলে দিয়ে হিন্দি চালু করবে। এই পথেই পূর্ব বিহার ও ঝাড়খণ্ড রাজ্য থেকে বাংলাকে মুছে দিয়েছে গুজারাতি হিন্দি সাম্রাজ্যবাদ। মমতা তিস্তার জল না দিয়ে একদিকে বর্তমান বাংলাদেশের সরকারকে বিপাকে ফেলছে আর অন্যদিকে উত্তর বঙ্গকে আলাদা হতে আর শুঁকিয়ে মারতে বাঁধা দিচ্ছে।
দুই, পঃ বঙ্গ সরকার-এর প্রধান মমতা ব্যনারজি মুসলমান ভোটের ওপর দাঁড়িয়ে নির্বাচনের পর নির্বাচন জিতছেন আর এর কারন পঃ বঙ্গে এখন ২০২৪ সালে মুসলমানের সংখ্যা ২০১১-এর আদম সুমার সুমারির প্রজেকশন ধরলে দাঁড়ায় ৩০%। এই সংখ্যা আগামী দশ বছরে ৩৮% হতে পারে। বাঙালি হিন্দুদের সংখ্যা অন্য দিকে বর্তমানের ৫৫% থেকে কমে ৪০%-তে নেমে আসতে পারে। হিন্দিভাষী হিন্দুদের সংখ্যা ১১% থেকে ১৭% হবে। এখানে উল্লেখ্য বিষয় হল পঃ বঙ্গে বাঙালি ও উর্দু মুসলমানেরা ভূমি পুত্র আর হিন্দি হিন্দুদের অধিকাংশই অন্য রাজ্য (মূলত রাজস্থান বিহার ইউপি থেকে আগত)। ভুমি পুত্রদের জন্মহার কমবে যদি শিল্পায়ন ও নগরায়ন দ্রুত বাড়ে আর অন্য রাজ্য থেকে আগমনও বৃদ্ধি পাবে যদি শিল্পায়ন ও নগরায়ন দ্রুত বাড়ে। অর্থাৎ পঃ বঙ্গে যদি শিল্পায়ন ও নগরায়ন দ্রুত বাড়ে তবে মুসলমানদের জন্ম হার আর জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার দ্রুত কমবে আর অন্যদিকে হিন্দিদের আগমনের হার ও তাদের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার দ্রুত বাড়বে। তাই গুজারাতি হিন্দি সাম্রাজ্যবাদ চায় পঃ বঙ্গে শিল্পায়ন নগরায়ন দ্রুত হোক। কিন্তু শিল্পপতিদের হাত থেকে চাষিদের জমি বাঁচানোর আন্দলনের বলে ক্ষমতায় আসা মমতা ব্যনারজি শিল্পায়নের পথে যাচ্ছেনইনা। ফলে হিন্দিদের আগমনের গতি মন্থর হচ্ছে আর মুসলমানদের জন্মহার যতটা দ্রুত কমার কথা ২০১১ আদম সুমারির প্রজেকশন অনুযায়ী তার থেকে জন্মহার কমছে অনেক কম গতিতে।
বিজেপি হল গুজারাতি হিন্দি সাম্রাজ্যবাদের উগ্র রূপ আর কংগ্রেস হল তার নম্র রূপের মুখোশ। কংগ্রেস পঃ বঙ্গে শেষ আর বিজেপি গোটা পঃ বঙ্গে জয়ী হতে পারবেনা। লারি পূজারি বাঙালি হিন্দু ক্রমেই জনসংখ্যার দিক দিয়ে ক্ষয়িষ্ণু হচ্ছে আর বাঙালি হিন্দুর ক্ষয়ের সুযোগ বেশি তুলছে মুসলমানেরা। কিন্তু গুজারাতি হিন্দি সাম্রাজ্যবাদ চায় বাঙালি হিন্দুদের ক্ষয়ের মূল লাভ তুলুক হিন্দিরা। মমতার শিল্প করায় অনাগ্রহ ও দান-এর রাজনীতি পঃ বঙ্গে মুসলমানেদের অবস্থান হিন্দিদের তুলনায় শক্ত রাখছে। যদিও মমতার লারি কেন্দ্র করে নানা দান মুসলমান লারিকে ধর্ম বিমুখ করছে আর এর ফলে পঃ বঙ্গের মুসলমানেদের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমছে কিন্তু হিন্দিদের থেকে তারা তুলনামূলক ভাবে সুবিধেজনক বস্থায় থাকছে। বিজেপি বুঝতে পারছে আগামী ১০ বছরে বাঙালি হিন্দু বুমার জেনারেশনটা (১৯৪৫ থেকে ১৯৬৫ সালের মধ্যে যাদের জন্ম) শেষ হয়ে যাবে আর তা বাঙালি হিন্দুদের সংখ্যার শেয়ার অনেক কমিয়ে দেবেই। মুসলমানেদের সংখ্যা বৃদ্ধির হার হিন্দিদের চেয়ে পঃ বঙ্গে বেশি থাকলে (শিল্পায়ন গতি মন্থর বলে), ২০১১ সালের প্রজেকশন ধরে যত ভাবা হচ্ছে তার চেয়েও বেশি হবে মুসলমানেদের সংখ্যার শেয়ার। আমার গণিত বলছে আগামী ১০ বছর পরে পঃ বঙ্গে মুসলমানেদের সংখ্যা ৩৮% নয়, হবে ৪১% আর হিন্দিদের হবে ১৫%।
মজার ব্যপার অসমের লারি পূজারি হিন্দুরাও জনসংখ্যার দিক দিয়ে ক্ষয়িষ্ণু আর আসামের শিল্প সম্ভাবনা ও নগরায়ন সম্ভাবনা ভৌগোলীক কারণে অনেক কম। ফলে সেখানে মুসলমানেদের সংখ্যা ৫০%-এর কাছে পৌঁছে যাবে আগামী ১০ বোছোড় পরেই। আসামের মুখ্যমন্ত্রী একে জীবন মরণ সমস্যা বলেছেন।
গুজারাতি হিন্দি সাম্রাজ্যবাদ জানে যে বাঙালি হিন্দুর আর কোনও অস্তিত্ব থাকবেনা। স্বল্প জন্মহারর ফলে বাঙালি (ও আসামিয়া) হিন্দুদের জনসংখ্যার শেয়ার পড়তেই থাকবে এবং বয়স্কদের সংখ্যা যুবাদের সংখ্যার চেয়ে কম হবে। যার অস্তিত্বই থাকবেনা তার হিন্দুত্ব বা বাঙ্গালিত্ব কোনটাই বহন করার ক্ষমতা থাকবেনা। এর সঙ্গে যোগ করা যায় যে বাঙালি হিন্দুদের একটা বড় অংশ হিন্দি গুজারাতিদের কাছে নতি স্বীকার করে ফেলেছে। নতি স্বীকারের শেষ পর্যায়ে নেমে এসেছে কারণ এখন বাঙালি হিন্দু মেয়েরা হিন্দি গুজারাতি স্বামী পেলে বরতে যায় আর বাঙালি পরিবারগুলোও তাতে শ্লাঘা অনুভব করে। তাই গুজারাতি হিন্দি সাম্রাজ্যবাদ জানে যে বাঙালি হিন্দুরা বাঙ্গালিত্বের জন্য লড়াই করতে পারবেনা। কিন্তু লারি পূজারি বাঙালি হিন্দু হিন্দিদের দালাল হিসেবে পঃ বঙ্গ থেকে মুসলমান হটাতে কতটুকু সাহায্য করতে পারবে? পরের পর্বে আমরা এর উত্তর খুঁজব।
Read More
Author: Saikat Bhattacharya
Theoretical Hindu 26-July-2024 by east is risingরাষ্ট্র প্রধানত হল কর সংগ্রাহক এবং কর হল এক ধরণের জোরপূর্বক অর্থ হস্তান্তর। তাই এটি উদ্বৃত্ত শ্রম আহরণের সাথে যুক্ত। এখন প্রশ্ন আসে কোন জোরে এই টাকা হস্তান্তর করা হয়। উত্তর সশস্ত্র দলের শক্তি দ্বারা। তাই যাদের কাছ থেকে কর নেওয়া হয় তাদের চেয়ে অন্তত বেশি সশস্ত্র লোকদের মাধ্যমে অর্থ হস্তান্তর কার্যকর করা হয়।
এখন ওপরে উক্ত কর সংগ্রহ করা রাষ্ট্র যদি অন্য কর সংগ্রহ করা রাষ্ট্র-এর মুখোমুখি হয়? তিনটি সম্ভাব্য ফলাফল হবে। এক রাষ্ট্রের বাহিনী অন্যটির চেয়ে বেশি শক্তিশালি হবে এবং জয়ী হবে। বিজয়ী রাষ্ট্র প্রতিপক্ষ রাষ্ট্রকে ধ্বংস করবে এবং তার কর সংগ্রহের জায়গাগুলো দখল করবে অথবা বিজয়ী রাষ্ট্র পরাজিত রাষ্ট্রের কর রাজস্বের একটি ভগ্নাংশ আহরণ করবে। আরেকটি সম্ভাব্য ফলাফল উভয়ই তাদের নিজস্ব কর সংগ্রহের জায়গাগুলোর পুরোটা বা কিছুটা ধরে রাখতে সক্ষম হবে আর এর ফলে দুটো টিকে থাকবে।
সুতরাং একটি রাষ্ট্র তার শাসনাধীন জনগণকে কর দিতে বাধ্য করতে এবং প্রতিদ্বন্দ্বী রাষ্ট্র-এর থেকে নিজেকে ও নিজের আয়কে রক্ষা করার জন্য সশস্ত্র দল রাখবে। প্রথম দায়িত্বটি পুলিশ এবং আমলা দ্বারা পরিচালিত হয় এবং পরবর্তী দায়িত্বটি সেনাবাহিনী এবং গোয়েন্দাদের দ্বারা সঞ্চালিত হয়।
সুতরাং অন্য রাষ্ট্র থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য রাষ্ট্রের সামরিক ও গোয়েন্দা বিভাগ প্রয়োজন এবং তার কর্তৃত্বের অধীনে বসবাসকারী জনগণকে কর প্রদানে বাধ্য করার জন্য পুলিশ ও আমলাতন্ত্রের প্রয়োজন। এটি সমস্ত রাষ্ট্রের ভিত্তি।
সমগ্র সমাজের উপর তার শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠা করার পর, রাষ্ট্র ধীরে ধীরে কিছু মৌলিক সেবা প্রদান করবে যাতে তার শাসন করা সমাজ থেকে শাসন করার বৈধতা অর্জন করা যায়। এই মৌলিক পরিষেবাগুলির মধ্যে সর্বাগ্রে হল বিচার বিভাগ। বিচার বিভাগ রাষ্ট্রকে সমাজের বিভিন্ন দ্বন্দ্বরত ব্যক্তির মধ্যে শান্তিপূর্ণ ভাবে বোঝাপোড়া করায়। জনগণ বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য ধীরে ধীরে শাসক রাষ্ট্রের কাছে যেতে শুরু করে। ব্যক্তিগত সম্পত্তির অধিকার, বাজারের নিয়ম, শান্তি ও সমৃদ্ধি বজায় রাখার ক্ষেত্রে বিচার বিভাগের কাজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই বিচার বিভাগ রাষ্ট্রকে সাধারণ মানুষের জন্য অপরিহার্য করে তোলে। সামাজিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য রাষ্ট্রের জোরপূর্বক কর আদায় জরুরি বলে মনে করতে শুরু করে সাধারণ মানুষ।
বিচারব্যবস্থা ছাড়াও, রাষ্ট্র রাস্তা, সেতু, খাল, হাসপাতাল, স্কুল, গরীবদের ডোল প্রদান ইত্যাদির মতো পরিষেবাও দিতে পারে। যদিও এই পরিষেবাগুলি একটি রাষ্ট্রকে তার জনগণের দৃষ্টিতে বৈধ করে, তবে সেগুলি খুব ব্যয়বহুল প্রমাণিত হতে পারে। সাধারণভাবে আমরা দেখি যে উৎপাদিকা শক্তি বৃদ্ধির সাথে সাথে প্রযুক্তির উন্নতি হয়, কর রাজস্ব বৃদ্ধি পায় এবং তাই রাষ্ট্র আরও এই ধরনের পরিষেবা দিতে পারে। তদুপরি, আজকের উন্নত অর্থনীতিগুলি অতি উৎপাদন সংকটের মুখোমুখি হয় যেখানে যোগান চাহিদাকে ছাড়িয়ে যায় এবং তাই এই মৌলিক পরিষেবাগুলিতে রাষ্ট্রের ব্যয় চাহিদা সৃষ্টির প্রধান উৎস হয়ে ওঠে যা উৎপাদনের পূর্ণ বিকাসে সহায়তা করে। আবার বর্তমান উন্নয়নশীল রাষ্ট্রেও শিক্ষা স্বাস্থ্য পরিকাঠামো নির্মাণ মানুষের উৎপাদনশীলতা বাড়াতে সাহায্য করে এবং উৎপাদন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। উৎপাদন বৃদ্ধি হলে রাষ্ট্রের কর জাত আয়ও বৃদ্ধি পাবে। তাই আমরা এই উপসংহারে পৌঁছাতে পারি যে প্রযুক্তির অগ্রগতি এবং রাজস্ব বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে রাষ্ট্র আরও বৈধতা অর্জন করেছে। এই বিশয়গুলো সাধারণত ফিসকাল বা অর্থনৈতিক কুশলীদের দ্বারা পরিচালিত হয়।
এবার আসা যাক রাষ্ট্রের মুদ্রা তৈরির একচেটিয়া ক্ষমতার কথায়। রাষ্ট্রের তৈরি মুদ্রা সমাজে বিনিময়ের প্রধান মাধ্যম হয়ে ওঠে। একটি দেশের মুদ্রার মূল্য সেই রাষ্ট্রের হাতে থাকা স্বর্ণ, রৌপ্য, বিদেশী মুদ্রার ভাণ্ডারের উপর নির্ভর করে। যেহেতু বেশিরভাগ দেশে স্বর্ণ বা রৌপ্য খনি নেই, তাই বেশিরভাগ রাজ্য বিদেশ থেকে ঋণ/বিনিয়োগ ও রপ্তানি করার জন্য তার দেশের উৎপাদিকা শক্তির উপর নির্ভর করে। একটি দেশ যত বেশি সোনা, রৌপ্য বৈদেশিক মুদ্রা পায় (রপ্তানী করে বা বিনিয়োগ/ঋণ টেনে) তার রাষ্ট্র কর হিসাবে তত বেশি স্বর্ণ, রৌপ্য, বৈদেশিক মুদ্রা সংগ্রহ করতে পারে, তত বেশি মূল্য সেই দেশের মুদ্রা বহণ করে। বর্তমানে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলি বেশিরভাগ মুদ্রা ইস্যু করে। অতীতে রাষ্ট্রীয় কোষাগার এই কাজ করত। মুদ্রা একটি দেশের মধ্যে বিনিময়ের মাধ্যমকে মানসম্মত করে যা বাণিজ্যকে আরও সুবিধাজনক করে তোলে। এটি সমৃদ্ধি ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করে যা রাষ্ট্রকে আরও বেশি কর সংগ্রহ করতে সহায়তা করে। তবে অনেক ক্ষেত্রে কোনও দেশে যদি জনসংখ্যার তুলনায় বিশাল পরিমাণে বিদেশি মুদ্রা আয় করার মতো কোনও রাপ্তানী যোগ্য সম্পদ থাকে বা বিশাল বিদেশি বিনিয়োগ টানার মতো বুনিয়াদ থাকে তাহলে সেই দেশ জনতার কাছ থেকে সেভাবে কর নাও নিতে পারে। উপকূলীয় আরব দেশগুলো এই ক্ষেত্রে দ্রষ্টব্য।
এখন রাষ্ট্রের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অংশে আসা যাক এবং তা হল প্রোপাগান্ডা নেটওয়ার্ক বা প্রচার মাধ্যম। এর কাজ হল রাষ্ট্র কর্তৃক আরোপিত ব্যবস্থা ঠিকঠাক চলছে কি না তা দেখাশোনা করা। যেমন পুলিশ, আমলাতন্ত্র, বিচার বিভাগ, সেনাবাহিনী, গোয়েন্দা বিভাগ, কেন্দ্রীয় ব্যাংক/ট্র্যাজারি তাদের দায়িত্ব পালন করছে কি না। প্রোপাগান্ডা নেটওয়ার্ক বা প্রচার মাধ্যম বলতে বোঝায় প্রিন্ট মিডিয়া, ডিজিটাল মিডিয়া, ধর্মীয় ও আদর্শিক প্রতিষ্ঠান, উৎসব, বিভিন্ন ধরণের বিনোদন, ক্লাব ইত্যাদি। প্রচার মাধ্যম জনতার মধ্যে বিভিন্ন ধারণা এবং দৃষ্টিভঙ্গি ছড়িয়ে দেয় যা সাধারণ মানুষকে তাদের নিজ নিজ রাষ্ট্রের সমর্থক বানিয়ে তোলে।
এখন আমরা একটি সম্পূর্ণ রাষ্ট্র দেখতে পাচ্ছি যার সমস্ত যন্ত্রপাতি রয়েছে: সেনাবাহিনী, গোয়েন্দা বিভাগ, পুলিশ, আমলাতন্ত্র, বিচার বিভাগ, কেন্দ্রীয় ব্যাংক/ট্রেজারি বা কোষাগার, ফিসকাল/ অর্থনৈতিক কুশলী এবং প্রোপাগান্ডা নেটওয়ার্ক বা প্রচার মাধ্যম।
এই যন্ত্রগুলো ছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ হল রাষ্ট্রের রাজস্ব আয়ের সবচেয়ে বড় অংশ যারা ভোগ করে এবং যারা সবচেয়ে বেশি কর দেয়। প্রথম দলটি রাজনীতিবিদ এবং পরবর্তী গ্রুপটি বিগ বিজনেস। রাজনীতিবিদরা সংগৃহীত করের সর্বাধিক অংশ উপভোগ করে এবং বড় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো বা বিগ বিসনেস করের সর্বাধিক অংশ প্রদান করে্।
কখনো কখনো রাষ্ট্র সংগ্রহ করা রাজস্বের চেয়ে বেশি ব্যয় করে এবং তারপরে তাকে এই বিগ বিজনেস-এর কাছ থেকে ঋণ নিতে হয়। রাষ্ট্রের সেনাবাহিনী ও পুলিশ আছে, বড় ব্যবসায়ীদের নেই। ফলে চাইলে রাজনীতিবীদেরা বড় ব্যবসায়ীদের সম্পত্তি দখলও করতে পারে। তাই রাজ্যগুলি প্রায়শই বিগ বিজনেসকে ধার দিতে বাধ্য করে এবং তখন বিগ বিজনেসের কাছে দুটি বিকল্প থাকে: হয় রাষ্ট্রকে ধার দেওয়া বা সেই রাজ্য থেকে অন্যত্র পালিয়ে যাওয়া। কিন্তু আবার যদি রাজনীতিবিদেরা যথেষ্ট শক্তিশালী হয় তবে তারা ঋণ দেওয়ার পরিবর্তে বড় ব্যবসাকে কর দিতে বাধ্য করবে। বিগ বিজনেস প্রায়ই বিদেশে চলে যাওয়ার মাধ্যমে কর এড়িয়ে যায়। প্রকৃতপক্ষে যদি বিগ বিজনেস রাষ্ট্রকে কর না দিয়ে ঋণ দেয় তাহলে বলা যায় রাজনীতিবিদদের থেকে বিগ বিসনেস-এর ক্ষমতা বেশি কারণ ঋণ রাষ্ট্রকে ফেরত দিতে হবে সুদ সমেত কিন্তু কর ফেরত দিতে হবে না রাষ্ট্রকে।
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Theoretical General 21-June-2024 by east is risingState is mainly tax collector and tax is nothing but one kind of forced money transfer. Hence it is associated with extraction of surplus labor. Now the question comes by what force this money is transferred. Answer is by the power of armed group. So the transfer of money is enforced through people who is at least more armed than those from whom tax is extracted.
Now what will happen if one state faces another state. There will be three possible outcomes. One state's army is larger than the other and the victorious one either will destroy the opponent state and take its tax colleting base or the victorious state will extract a fraction of the loser state's tax revenue. Another possible outcome is stalemate with both retaining their own tax bases fullt or partially.
So a state needs armed gang to tax the people under its rule and also to protect itself and its tax income from rival states. The former duty is conducted by police and bureaucracy while the later duty is performed by military and intelligence.
Thus s state needs military, intelligence for protecting itself from other states and it needs police and bureaucracy to tax the people residing under its authority. This is the basis of all states.
After establishing its superiority over the entire society, the state will gradually offer some basic service to earn legitimacy from the society it rules. The foremost among these basic services is judiciary. Judiciary helps state to become negotiator among different individuals of the society. People gradually turn to its ruler state for settling disputes. The function of judiciary is critical in maintaining private property rights, market rules, peace and prosperity. So judiciary makes state a necessity for common people. Common people feel that state's forceful collection of tax is necessary for maintaining social stability.
Besides judiciary, state can also offer services like building roads, bridges, canals, hospitals, schools, giving doles to needy, etc. Though these services legitimize a state in the eyes of its people, they can prove too costly. In general we see that as productive forces grow, technology improves, tax revenue rises and so state can undertake more such services. Moreover, today's developed economies face over production crisis where supply exceeds demand and so state's spending in these basic services become main source of demand creation that help production and income to reach its potential. Hence we can conclude that state has gained more legitimacy as technology progresses and tax revenue improves. This is usually conducted by Fiscal or Economic Planners.
Now comes a state's monopoly power to issue currency which becomes the main medium of exchange in the society. The state's power to issue currency is derived from the currency's store of value. A country currency's store of value depends on the gold, silver, foreign currencies that it can get from both home and abroad. Since most countries don't have gold or silver mines, most states rely on its country's ability to export to and absorb loans/investments from abroad. The more gold, silver foreign currencies a country absorbs the more gold, silver, foreign currency its state can collect as tax, the more value is carried by the currency it issues. Today Central Banks issue most of the currencies while in the past State Treasury used to do tjhe same. Currency standardizes medium of exchange within a country which makes trade more convenient. This helps to spread prosperity which helps state to collect more tax. In fact if a country has huge export earning base or massive power to attract foreign investment/debt relative to size of the population, it can forgo tax revenue. This happens today with many Gulf Arab states.
Now comes another important part of state and that is Propaganda Network. Its function is to look after the accountability of system imposed by the state i.e. if police, bureaucracy, judiciary, army, intelligence, central bank/treasury are doing their duties. Propaganda Network consists of Print Media, Digital Media, Religious & Ideological Institutions, Festivals, various forms of Entertainment, Clubs, etc. It also spreads various concepts and perspectives that make common people come in support of the state they are ruled by.
Now we can see a complete state with all its machineries: Army, Intelligence, Police, Bureaucracy, Judiciary, Central Bank/Treasury, Fiscal/Economic Planners and Propaganda Network.
Besides these machineries state consists of those who enjoy the largest fraction of state's revenue income and those who pay largest share of tax. The former group is Politician and the later group is Big Business. Politicians enjoy largest share of tax collected and Big Business pays maximum share of tax revenue.
Sometimes state spends more than the revenue it collects and then it has to take loans from these Big Business. State has army and police, Big Business does not have them. Hence state can seize assets of Big Business. So states often force Big Business to lend it and then Big Business is left with two options: either to lend the state or to flee from that state's jurisdiction. But again if the Politicians are powerful enough they will force Big Business to pay tax rather than give debt. Big Business often avoids tax by moving abroad. In fact if Big Business give debt to state then it can be said that Big Business has the upper hand over Politicians since debt has to be paid back with interest while tax will never be returned back.
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Theoretical General 21-June-2024 by east is rising"The Birth of the Modern World, 1780-1914" বইয়ের লেখক Christopher Bayly বলতেছেন বোরকা-হিজাব আধুনিক("Modern") পোশাক, কারণ এই পোশাক মেয়েদের ঘরের ভেতরের জগৎ থেকে বাইরে বের করে আনে এবং একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় পাবলিক ও ব্যবসায়িক বিভিন্ন কাজে অংশগ্রহণের সুযোগ তৈরি করে দেয়।
মডার্নিটি এই পোশাকটিকে জনপ্রিয় করেছে।
প্রিমিটিভ সমাজে যেহেতু সোশ্যাল ফেব্রিক শক্তিশালী ছিল এবং জেন্ডার রোল কার্যকরী ছিল, তাই মেয়েরা তাদের ঘরের দায়িত্ব নিয়েই সন্তুষ্ট ছিলো। বাইরে বের হওয়ার তেমন কোনো প্রয়োজন না থাকায় বোরকা-হিজাবের মতো পোশাকগুলোরও প্রচলন কম ছিল। কিন্তু মডার্নিটি যখন মেয়েদেরকে বাইরে বের করে আনে, আরবানাইজেশন, ইন্ডাস্ট্রিয়ালাইজেশন, ক্যাপিটালিজম যখন মেয়েদের জন্য বাইরে কাজ করার, পড়ালেখা করার জরুরত তৈরি করে, তখন মুসলিমিস্তানের মেয়েরা তাদের হায়া রক্ষার্থে বোরকা-হিজাব এডপ্ট করে নেয়। বাঙ্গালার কনটেক্সটেও বোরকা-হিজাব তুলনামূলক আধুনিক পরিধেয়। শাড়ি বা এধরনের পোশাকগুলো প্রিমিটিভই বলা চলে।
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Theoretical Sex War feminism 26-May-2024 by east is risingএকটা মেয়ে marriageable কিনা, সেটা determine হয় তার environment এর ওপরে অনেকটাই। কয়েকটা ভাগে categorization করা দরকার ব্যাপারটার -
১. গ্রামের ভদ্র বাড়ির পড়াশুনায় সাধারণ মানের মেয়ে -> এই মেয়ে বিয়ে করা যায়। কিন্তু, বিয়ের পর আপনার সাথে যখন শহরে আসবে as a couple, তখন পূর্ণ সম্ভবনা রয়েছে Ramd হওয়ার।
২. গ্রামের/মফস্বলের ভদ্র বাড়ির পড়াশুনায় ভালো মেয়ে ->
এটা সবথেকে RED ALERT category!
এই মেয়েরা class ১২ এর পর পড়াশুনা করতে শহরে আসে, এবং একা থাকা শুরু করে। যদি আপনার পরিচয় এরকম মেয়ের সাথে কলেজের একদম শুরুর দিকে হয়ে যায়, Then Fine
কিন্তু, এরকম background থাকা কোনো মেয়ের সাথে যদি আপনার পরিচয় কয়েক বছর বাদে হয়, মোটামুটি Cent Percent Sure হয়ে নিন যে, এ marriageable না।
বস্তুতঃ, যেসব মেয়েরা পড়াশুনার জন্য নিজের বাবার বাড়ি ছেড়ে শহরে এসে পড়াশুনার জন্য থাকে, এরা কেউ marriageable না।
৩. শহরের অর্থবান বাড়ির মেয়ে - এদের ক্ষেত্রে পুরোটাই নির্ভর করে, এদের বাড়ির পুরুষ কেমন!
যদি এই মেয়ের অর্থবান বাবা শক্তিশালী, hard material হয়, তাহলে এই মেয়ে marriageable হবে। সেটা না হলে, হবেনা marriageable।
৪. শহরের মধ্যবিত্ত বাড়ির মেয়ে - শহরের মেয়ে যে পড়াশুনার জন্য নিজের বাপের বাড়ি ছাড়েনি। অর্থাৎ, class ১ থেকে Education Completion অব্দি পুরোটাই নিজের বাবা মা এর কাছে থেকে করেছে - এদের মধ্যে marriageable হওয়ার probability একটু হলেও বেশি।
So the bottomline is -
১. যদি মেয়ে পড়াশুনার/চাকরির জন্য (at any stage of her education) বাপের বাড়ি ছেড়ে hostel এ থেকে পড়াশুনা করে, তাহলে তাকে দুশ্চরিত্র ধরে নেওয়া যেতে পারে at first sight
২. যদি মেয়ের বাবা weak / meek Personality হয়, মেয়ের বাড়িতে dominating position মেয়ের মা,
এই দুটো situation কে eliminate করলে, যে মেয়েরা বাকি থাকবে তারা মোটামুটি marriageable বলা চলে। কিন্তু, সে wife material থাকবে কিনা বিয়ের পরেও, সেটা নির্ভর করছে husband এর পুরুষার্থ এর ক্ষমতার ওপর।
Read MoreAuthor: Animesh Datta MallaBarman
Theoretical Sex War 22-May-2024 by east is rising১৯১৭ থেকে ১৯৭৯ পর্যন্ত যত বিপ্লব হয়েছে তার বুনিয়াদ ছিল শ্রেণি সংগ্রাম।
কেন?
কারণ অনেক জীবনদায়ী ঔষধ আবিস্কার হওয়ায় মৃত্যুর হার কমে যায় দ্রুত অথচ জন্ম হার একই থাকে। তাই জনসংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পায়। তাই সমাজের মধ্যে প্রচণ্ড বিস্ফোরণ হয় উৎপাদন বৃদ্ধির হার বাড়ানোর জন্য। তা ছাড়া শিল্পায়ণের গতি কোন কোন দেশে ছিল খুব উচ্চ আর কোন কোন দেশে ছিল মন্থর। শিল্পায়ণে এগিয়ে যাওয়া দেশগুলো বাকিদের রাজনৈতিক অধিকার কেড়ে নিচ্ছিল আর তাই শিল্পায়ণে পিছিয়ে থাকা সমাজেও দ্রুত শিল্পায়ণ করার চাপ আসছিল।
জনসংখ্যা বৃদ্ধির জন্য উৎপাদন বৃদ্ধি করার চাপ আর শিল্পে পিছিয়ে থাকা সমাজের ওপর শিল্পোন্নত হওয়ার চাপঃ এই দুই চাপের ফলেই শ্রেণি সংগ্রাম হয়ে ওঠে তীব্র।
জমিদারি উচ্ছ্বেদ করে ভূমি সংস্কার করে নিজেদের আয় বাড়াতে ব্যগ্র ছিল কৃষক আর শ্রমিক দর কষাকষি করে মজুরি বাড়ানোর জন্য ব্যগ্র ছিল। কারণ কৃষক ও শ্রমিকের পরিবারে অনেক সন্তান ছিল আর তাদের অন্ন বস্ত্র বাসস্থান শিক্ষা স্বাস্থ্য ছিল গুরুত্বপূর্ণ শ্রমিক কৃষকদের কাছে।
১৯১৭-১৯৭৯ পর্যন্ত এইভাবে চলেছে।
কিন্তু ৬২ বছরের প্রচেষ্টার ফলে অনেক শুভ ফল মেনেঃ
১। মৃত্যুর হারের মতো জন্মের হারও কমে যায় ফলে জনসংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে আসে।
২। জমিদারি প্রথা ও উপনিবেশবাদ প্রায় বিলুপ্ত হয়ে যায়।
৩। রাষ্ট্র এটা স্বীকার করে নেয় যে মানুষের ন্যূনতম প্রয়োজন বিনামূল্যে পাওয়া অধিকার আর তা পেলেই কেবল মানুষ বাজারে প্রতিযোগিতা করার মতো জায়গায় পৌঁ...
৪। শিল্পোন্নয়নের হার গোটা দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে আর তাই আয়ও বৃদ্ধি পায় দারুণ মাত্রায়
৫। পুঁজি বিশ্বায়িত হয়ে যাওয়ায় স্বল্প মজুরির দেশে চলে যেতে পারত উচ্চ মজুরির দেশ ছেড়ে আর দুনিয়া জুড়ে শিল্পোন্নয়নের মাত্রার অনেক বড় পার্থক্য থাকায় শ্রমিকের দর কষাকষির ক্ষমতা হ্রাস পায়
৬। নারীর অর্থনৈতিক স্বাধীনতার ফলে সমাজের আয় বৃদ্ধি পায় ও জন্মের হার হ্রাস পায়
নারী তার যৌনতার দর কষাকষির ক্ষমতা স্বাধীনভাবে প্রয়োগ করতে থাকে যার ফলে সাধারণ পুরুষের পক্ষে যৌনতা পাওয়া কঠিনতর হতে থেকে। এর কারণ নারী সবসময় শ্রেষ্ঠ (আয় ও রূপের দিক থেকে) পুরুষের কাছেই যাবে আর তা না পেলে নীম্ন পুরুষের কাছে না গিয়ে একা থাকাই পছন্দ করবে।
ফলে যৌনতা না পাওয়া পুরুষ ও যৌনতার যোগানদার নারী- এই দুই-এ সমাজ ভরে যায় আর তাই লিঙ্গ পরিচয় হয়ে উঠতে থাকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
এছাড়াও রাষ্ট্র মানুষের ন্যূনতম প্রয়োজন বিনামূল্যে দিতে গিয়ে ভোটব্যঙ্ক অনুযায়ী দান শুরু করে আর ভোটব্যঙ্কের ক্ষমতা প্রয়োগ করতে সমাজে উপজাতি (ট্রাইবাল) পরিচয়ের গুরুত্ব বাড়তে থাকে।
আবার পশ্চীমের দেশগুলোতে অভিবাসী বাড়তে থাকায় ও সদ্য স্বাধীন তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে বিভিন্ন উপজাতির আভ্যিন্তরীণ ক্ষমতার দ্বন্দ্ব বাড়তে থাকায় উপজাতি পরিচয় গুরুত্ব পেতে শুরু করেছে।
এভাবেই সমাজ আজ শ্রেণি পরিচয় ছেড়ে লিঙ্গ পরিচয় ও উপজাতি পরিচয় নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Theoretical Sex War 17-May-2024 by east is risingCommunism means that Industrial Revolution will lead to a society where all necessary but involuntary activities will be done by machine and humans will do voluntary activities. hence labor is no longer divorced from enjoyment.
So no equivalent exchange (money) is needed against labor.
Hence it is commodity less (commodity means money motivation in Marxian terms, not goods).
Similarly, no need for one group of humans to force other group of humans through reward or punishment to work for the former.
Hence it is classless.
USSR has destroyed euro colonialism.
China is destroying us hegemony.
Colonial remnants like Israel India and whiite raccism have to bow down.
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Theoretical General 17-May-2024 by east is risingআধুনিক ইউরোপের জন্মের পেছনে কারণগুলো ঠিক কি কি তা জানতে গেলে আধুনিক ইউরোপ জন্মের সময়টা বুঝতে হবে এবং তার আগের শতকগুলোতে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো জানতে হবে।
এমনিতে আধুনিক ইউরোপের জন্ম পঞ্চদশ শতকের মধ্যভাগেই ধরা হয়। দুটো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার মধ্যে দিয়ে আধুনিক ইউরোপের জন্ম হয়। এক, ১৪৫৪ সালে জার্মানিতে গুটেনবার্গের ছাপাখানা আবিস্কার আর দুই, ১৪৫৩ সালে ওটোমান তুর্কিদের দ্বারা কন্সতান্তিনোপল অধিকৃত হওয়ায় প্রচুর গ্রীক প্রাচীন গ্রীক ও রোম-এর জ্ঞান নিয়ে ইতালিতে এসে থাকা শুরু করে।
ছাপাখানা আবিস্কারের ফলে বই তৈরি করার খরচ কমে যায় এবং বই হয়ে ওঠে সহজলোভ্য ও সস্তা। ফলে প্রচুর ইউরোপীয় বাইবেল নিজের মতো করে লিখতে ও পড়তে শুরু করে। আর এর ফলে স্থানীয় মুখের ভাষার বিকাস হয়, লেখার ভাষা হিসেবে লাতিনের গুরুত্ব কমে, ক্যাথোলিক চার্চের মতো করে বাইবেল পড়ার বিরোধিতা শুরু হয়। ফলে প্রতেন্সতান্ত আন্দোলন শুরু হয়, রাজারা পোপের গুরুত্ব কমাতে বহু দেশে প্রতেস্তান্ত আন্দোলনকে সাহায্য করা শুরু করে ও লাতিনের গুরত্ব কমাতে স্থানীয় ভাষার প্রমিতকরণ শুরু করে। এভাবেই গড়ে ওঠে ভাষাকে ভিত্তি করে জাতি রাষ্ট্র।
কন্সতান্তিনোপল থেকে আগত গ্রীকরা ইউরোপীয়দের প্রাচীন গ্রীক ও রোমের জ্ঞান দান করে এবং এর ফলে ধর্মের প্রতি অন্ধ বিশ্বাস ত্যাগ করে যুক্তির ওপর নির্ভরশীল হতে শেখে ইউরোপীয়রা আর এভাবেই আধুনিকতার জন্ম।
কিন্তু এই গল্প যথেষ্ট যুক্তি সম্মত নয়। এক, কেন হঠাৎ ছাপাখানার মতো কিছুর আবিস্কারের দরকার পড়ল। কোন প্রয়োজন ছাড়া কি এরকম আবিস্কার হয়? দুই কন্সতান্তিনোপল থেকে আগত গ্রীকরা ইউরোপীয়দের প্রাচীন গ্রীক ও রোমের জ্ঞান দান করে ইউরোপে আধুনিকতা নিয়ে আনতে পারে তবে কন্সতান্তিনোপল-এ আগেই কেন আধুনিকতার জন্ম হয়নি?
মজার ব্যাপার হল প্লেটো আরিস্টোটল টোলেমির মতো গ্রীক দার্শনিকের লেখা ত্রয়োদশ শতকের মধ্যেই বহুবার লাতিনে অনুদিত হয়ে যায়। ১৪৫৩ সালের অনেক আগেই যখন গ্রীকরা ইতালীতে আসে। এবার প্রশ্ন কোন ভাষা থেকে লাতিনে অনুদিত হয়? উত্তর হোল আরবি ও ফার্সি। এবার প্রশ্ন জাগে কিভাবে আর কেন প্রাচীন গ্রীক দার্শনিকদের লেখা আরবি ও ফার্সিতে অনুদিত হল?
এর উত্তর পেতে গেলে চলে যেতে হবে সপ্তম শতকের মধ্য ভাগে। অর্থাৎ গুটেনবার্গের ৮০০ বছর আগের ইতিহাসে। ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে আরবরা তখন দুর্বার গতিতে গ্রীক অঞ্চল (রুম সাম্রাজ্য), পার্সি অঞ্চল, মধ্য এশিয়া, উত্তর আফ্রিকা দখল করছে। তখন বই তৈরি করা অত্যন্ত ব্যয়বহুল ছিল আর তাই অধিকাংশ মানুষই ধর্ম গ্রন্থ মুখস্থ করত। আরবরাও প্রথমে কোরান মুখস্থ করেই চলত। কিন্তু খলিফারা দেখল এর ফলে কোরানের কথা বিকৃতির সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে। তাই খলিফারা কোরানের লিখিত রূপ তৈরির দিকে যথা সম্ভব মন দেন। শুরু হোল কোরান-এর অজস্র অনুলিপি তৈরির কর্মসূচী। ছাপাখানা তখন ছিলনা বলে প্রচুর লেখক নিয়োগ করা হয় কোরানের অনুলিপি তৈরির জন্যে সরাসরি খলিফাদের তত্ত্বাবধানে। কিন্তু এই বিপুল লেখক নিয়োগ ক্রমেই খলিফাদের সাহায্য করল প্রাচীন গ্রীক রোম পার্সি জম্মুদ্বীপ (ভারত) ও চীন-এর জ্ঞানকে আরবি ও ফার্সিতে অনুদিত করতে। অষ্টম শতকের শেষ ভাগ থেকেই খলিফাদের তত্ত্বাবধানে প্রাচীন সংস্কৃত গ্রীক রোমান ফার্সি চীনা বই সংগ্রহ শুরু হয়ে যায়।
খালিফাদের তত্ত্বাবধানে আরবি পার্সি বারবার মধ্য এশীয় লেখকেরা কেবল সেই সব প্রাচীন বই অনুদিতই করেনি বরং তাতে নিজস্ব ভাবনাচিন্তা যুক্ত করেছে এবং প্রয়োজনে প্রাচীন বইকে সংশোধন করে নতুন বই লিখেছে। যেমন ব্রক্ষগুপ্তের "সিদ্ধান্ত" বইটিকে আরবি ভাষায় অনুদিত করে লেখা হয় "সিন্দ হিন্দ" আর তা থেকেই আরবরা ০ থেকে ৯ দশমিক সংখ্যা তৈরি করে এবং আরবদের থেকেই এই জ্ঞান ইউরোপে পৌছয়। আল খোয়ারজাম "আল জেবর" বলে একটা বই লেখেন যা বিশ্বে আলজেব্রা সম্পর্কিত প্রথম বই। আল হায়থাম আলোর চলাচল নিয়ে বই লেখেন যা নিউটন তার রেফারেন্সে গুরুত্ব দিয়ে উল্লেখ করেন। ইবনে সিনা লেখেন চিকিৎসা বিষয়ক বই যার ইংরেজি নাম "ক্যানন অফ মেডিসিন" যা সপ্তদশ শতক পর্যন্ত ইউরোপীয়দের চিকিৎসা সম্পর্কে ব্যবহার করা প্রথম বই। যে ডারউইনের বিবর্তনবাদ নিয়ে আধুনিকতার এতো গর্ব তারও আদী বই হল আল জাহিজ লিখিত "কিতাব আল হায়োয়ান" যেখানে এক জীব আর এক জীবে পরিণত হয় স্পষ্টভাবে বলা হয়। আল জাজরি স্বয়ংক্রিয় মেশিন নিয়ে বই লেখেন। ইবনে খাদলুন লেখেন ইতিহাস নিয়ে বই এবং সেখানে যেভাবে নদীর পাশে গড়ে ওঠা প্রথম সভ্যতা নিয়ে পড়ানো হয় আজও পৃথিবীর সমস্ত আধুনিক স্কুলে সেভাবেই ইতিহাস পড়ানো হয়।
এবার কেউ বলতেই পারেন এই সমস্ত মুসলমান লেখকেরা আদৌ ইসলাম মেনে চলতো কি না? এনাদের অনেকেই নবীর অনেক সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন যেমন আল বেরুনি সৌর বছরের পক্ষে কথা বলেন এবং চান্দ্র বছর মেনে চলাকে নবীর ভুল সিদ্ধান্ত বলেন। তবে এই জ্ঞানীদের অধিকাংশই ইসলামের বিশেষ সেক্ট মুতাজিলা মতবাদে মেনে চলত। মুতাজিলা মতবাদ নবম শতকের শুরু থেকে একাদশ শতকের মধ্যভাগ পর্যন্ত বেশ সক্রিয় ছিল। খলিফা আল মামুনের সময় ৮৩৩-৮৫১ মুতাজিলা সরকারী মতবাদ ছিল। খলিফা দ্বিতীয় আল হাকাম-এর সময় ৯৬১-৯৭৬ মুতাজিলা ও অনুবাদ আন্দোলন মিলেমিশে গেছিল।
সেলজুক তুর্কিদের আগমণ এবং ক্রুশেডের যুদ্ধ ক্রমেই জ্ঞান চর্চাকে করে তোলে আরবদের কাছে আলোস্য। ক্রুশেডের যুদ্ধের সময়েই ইউরোপীয়রা প্রথম মুসলমানদের উন্নত জ্ঞান সম্পর্কে জানতে পারে এবং তারা আরবি ভাষা থেকে লাতিন ভাষায় অনুবাদ করার কাজ শুরু করে ত্রয়োদশ শতক থেকেই। সালাদিনের কাছে জেরুজালেমে পরাজিত হয়ে ক্রুশেডারেরা এই সিদ্ধান্তে উপনিত হয় যে আরব পার্সি-দের জ্ঞান চর্চা ও বাণিজ্য বিদ্যা ও তুর্কিদের যুদ্ধ কৌশলের কাছে তাদের হার হয়েছে। ক্রুসেডারেরা দুর্বল হলেও মোঙ্গল আঘাতে জর্জরিত হওয়ায় আরব পার্সিরা ত্রয়োদশ শতক ও চতুর্দশ শতকে সেভাবে জ্ঞান চর্চা করতে ব্যর্থ হয়। ইউরোপীয়রা ওই দুই শতকে নিজেদের জ্ঞান চর্চার ভিত্তি শক্তপোক্ত করে। যার পরিণতিতে পঞ্চদশ শতকের মধ্যভাগে এসে ছাপাখানা আবিস্কার ও প্রাচীন গ্রীক রোমের জ্ঞান চর্চা করতে পারার মতো অবস্থায় যায় ইউরোপ। হয়তো বই অনুবাদ করার ও বই পড়ার চাহিদা বাড়ছিল বলেই ছাপাখানার আবিস্কার হয়।
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Theoretical General 01-May-2024 by east is risingফরাসি বিপ্লবে থার্ড এস্টেট বা মধ্যবিত্ত শ্রেণি (ফরাসি ভাষায় বুর্জোয়া) সংখ্যাগতভাবে প্রথম ও দ্বিতীয় এস্টেটের সম্মিলিত (সম্ভ্রান্ত এবং পাদরিদের) থেকে বেশি ছিল। এছাড়াও বুর্জোয়া শ্রেণী ফরাসি সরকারকে সর্বাধিক কর প্রদান করত কিন্তু ফরাসি কোষাগারের বেশিরভাগ আর্থিক সুযোগ-সুবিধা অভিজাত্ এবং যাজকদের কাছে চলে যায়। তাই বুর্জোয়া শ্রেণী ট্যাক্সের নামে অভিজাত্ ও ধর্মযাজকদের দ্বারা তাদের অর্থ চুরি বন্ধ করতে চায়। স্বাভাবিকভাবেই ফরাসি বুর্জোয়ারা ভেবেছিল যে যদি তারা ফ্রান্সে প্রতিনিধিত্বমূলক সরকার আনতে পারে তবে তাদের সংখ্যাগত শক্তি তাদের নিজেদের উপর কর কমাতে সাহায্য করবে এবং প্রথম দুটি এস্টেটের সুযোগ-সুবিধাও কমিয়ে দেবে। সুতরাং স্পষ্টভাবে কর্ম ক্ষমতা অনুযায়ী অর্থ প্রদানই ছিল ফরাসি বুর্জোয়াদের শেষ লক্ষ্য যখন প্রতিনিধিত্বমূলক সরকার বা গণতন্ত্র সেই লক্ষ্য অর্জনের মাধ্যম ছিল।
নেপোলিয়ন ফরাসি বুর্জোয়াদের কৌশল বুঝতে পেরেছিলেন। তাই যখন তিনি দেখতে পেলেন যে গণতন্ত্র শাসনব্যবস্থাকে দুর্বল করে দিচ্ছে এবং ফরাসি রাষ্ট্রের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতাকে ধ্বংস করছে, তখন তিনি গণতান্ত্রিক রীতিনীতি প্রত্যাখ্যান করে রাজতন্ত্র ফিরিয়ে আনেন এবং কর্ম ক্ষমতার ভিত্তিতে অর্থ প্রদান এবং এর কিছু আনুসাঙ্গিক যেমন যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ, চাষীদের জমির মালিকানা প্রদান, ইত্যাদির বন্দ্যোবস্ত করেন।
প্রকৃতপক্ষে যখন উৎপাদক গোষ্ঠী সংখ্যাগতভাবে সুবিধাপ্রাপ্ত গোষ্ঠীর চেয়ে বেশি হয় তখন গণতন্ত্র কর্ম ক্ষমতা অনুসারে অর্থ প্রদানের দিকে সমাজকে নিয়ে যায়। ফরাসি বিপ্লবে তাই ঘটেছিল।
কিন্তু যদি উৎপাদক গোষ্ঠী সংখ্যাগতভাবে সুবিধাপ্রাপ্ত গোষ্ঠীর থেকে কম হয় তবে গণতন্ত্র কর্ম ক্ষমতার নীতি অনুসারে অর্থ প্রদানকে লঙ্ঘন করে।
বহু জাতীয় দেশের ক্ষেত্রে, প্রায়ই দেখা যায় যে মূল উৎপাদক জাতি জনসংখ্যায় সুবিধাপ্রাপ্ত জাতির তুলনায় কম। এমতাবস্থায় গণতন্ত্র সংখ্যাগতভাবে দুর্বল উৎপাদক জাতিকে দুর্বল করে রাখার কাজটা নিশ্চিত করে। এই ক্ষেত্রে, বিচ্ছেদ উৎপাদক জাতির জন্য একমাত্র কাঙ্ক্ষিত ফলাফল। এই ধরনের পরিস্থিতি আজ ভারতে বিদ্যমান যেখানে দক্ষিণ ভারতীয় প্রদেশগুলি সর্বাধিক কর প্রদান করছে আর হিন্দি প্রদেশগুলি উচ্চ জনসংখ্যা ব্যবহার করে সর্বাধিক সুযোগ-সুবিধা ছিনিয়ে নিচ্ছে। এটি শীঘ্রই ভারতীয় রাজনীতিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠছে যা ভারতকে বলকানাইজ করার ক্ষমতা রাখে এবং বিশ্ব রাজনীতির গতিপথ পরিবর্তন করে দিতে পারে।
তাই প্রতিনিধিত্বকারী সরকার কর্ম ক্ষমতা অনুযায়ী অর্থ প্রদান নিশ্চিত করার ক্ষমতা রাখে যদি দেশটি সমজাতীয় হয়। একটি বহুধর্মী বহুজাতিক দেশে গণতন্ত্র কর্ম ক্ষমতা অনুযায়ী অর্থ প্রদান লঙ্ঘন করবে।
তাই জাতির স্বাধীনতাকে যে কোনো ধরনের প্রতিনিধিত্বমূলক সরকার গঠনের আগেই মান্যতা দিতে হবে যা ভারতীয় সংবিধান দেয়নি।
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Theoretical General 10-April-2024 by east is risingIn French Revolution Third Estate or the middle class (bourgeoisie in French) was numerically superior to First & Second Estates combined (nobility and clergy). Also bourgeoisie class paid maximum taxes to French government but most of the monetary privileges of French Treasury went to nobility and clergy. So bourgeoisie class wants to stop the theft of their money by nobility and clergy in the name of tax. Naturally French bourgeoisie thought that if tey could bring Representative government in France their numerical strength would help them to reduce taxes on themselves and also reduce privileges of the first two estates. So clearly Payment According to Ability was the end goal of French bourgeoisie while Representative Government or Democracy was the means to achieve that goal.
Nepoleon understood this end and means strategy of the French bourgeoisie. So when he found that democracy was weakening the governance and destroying decision making capacity of French state, he rjected Democratic norms and brought back Monarchy while uphoding Payment According to Ability and its corollaries like Recruitment on the basis of merit, land to the tillers, etc.
Actually when the Producer Group is numerically more than Privileged Group then Democracy leads to Payment According to Ability. That's what happened in French Revolution.
But if the Producer Group is numerically less than Privileged Group then Democracy only violates Payment According to Ability Principle.
In case of class struggle usually Producer Group is more populated than Privileged Group.
But in case of multi national countries, it is often found that Producer Nation is less in number than Privileged Nation. In such a situation Democracy only ensures numerically superior Privileged nation to keep squeezing out the numerically weaker Producer nation. In this case, separation is the only desired outcome for the Producer nation. Such a situation exists today in India where South Indian provinces are paying maximum taxes while Hindi provinces are squeezing out maximum privileges using higher population figure. This is becoming most important point in Indian politics soon which has potential to balkanize India and change the course of world politics.
So Representative government has higher chance to ensure Payment According to Ability if the country is homogeneous. A Heterogeneous multi national country has maximum chance to end up where Democracy will violate Payment According to Ability.
So National Determination must precede any form of Representative Government.
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Theoretical General 08-April-2024 by east is risingToday's social classes can be defined as follows:
Two Broad Classes are Working Class & Petty Owners who depends on wage/salary/profit for survival and Capitalist Class whose main income comes from owned properties like factories machines land house shares stocks etc.
Working Class can be divided into to two sub classes:
Poor who depends on unskilled easily available low paid but regularly demanded jobs and Middle Class who depends on skilled less available high paid but not much demanded jobs. In Indian context one who earns Rs 15,000 per family member per month to Rs 1000,000 per month per family member is Middle Class. Below Rs 15,000 is Poor. Most of Poor's money goes to eating and health while most of Middle Class money goes to housing education and health. 95% people belong tho these Working Class or Petty Owners.
Capitalist Class can be divided into six sub classes:
1st Group has Minimum Rs 100,000 per month per family member earning mostly as interest income or profit on investments with net asset worth from Rs 2 crore to Rs 5 crore. Their assets are spread within domestic nation. This class is often one generation self made rich who often destroys their own wealth by bad investment and bad consumption. They often earn money in illegal ways and so state often seize their money.
2nd Group has net asset worth from Rs 5 crore to Rs 20 crore. They belong to Global Millionaire Class (sometimes a bit short but yet close). Their assets are spread throughout the globe. Some of 1st Group if lands here can survive but self made ones in general find it very difficult to stay here. They also come through illegal activities. But as they are shrewd enough to distribute wealth throughout the globe, any one state cannot seize their property or punish them.
3rd Group has net asset worth from Rs 20 crore to Rs 300 crore. Their assets are distributed across the globe and they often have political connections on which their business depend. Comprador class of any country has to remain content at this stage. This Group is often stuck here. Few is added here and almost nobody falls from this group. This group of rich is considered to be permanently rich. Some of them become member of the 4th Group after showing loyalty and acquiring knowledge for generations. They are not ruling class but definitely they are the top notch of the ruled ones.
4th Group has net worth Rs 300 crore to Rs 1,000 crore. They in general belong to ruling nation of a country. If any member from ruled nation join the club he can be taken down by state i.e. ruling nations. This Group is actually beginner Ruling Class.
5th Group of net worth Rs 1,000 crore to Rs 10,000 crore is exclusively reserved for ruling nations only. Their business depend a lot of state and political connections. They are either billionaires or aspiring billionaires. A country's foreign exchange reserve and exclusive imports and technologies are often maintained through this group's accounts.
6th Group is of net worth above Rs 10,000 crores and are clearly billionaires who have even the right to suggest and often shape a country's policies.
Now think, can a Working Class or Petty Owner become a member of the 6th Group of Rich?
Answer is a Middle Class has no way as his family is too small and has few trustable allies. He has too much to be desperate and he has too little to be adventurous. So a Middle Class can only see 5th and 6th Group and do orgasm.
A poor if has a big family with a lot of trustable friends then he can enter 1st Group or 2nd Group but often slips in the process.
Social Upward mobility is almost impossible today.
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Theoretical General 08-April-2024 by east is risingToday's social classes can be defined as follows:
Two Broad Classes are Working Class & Petty Owners who depends on wage/salary/profit for survival and Capitalist Class whose main income comes from owned properties like factories machines land house shares stocks etc.
Working Class can be divided into to two sub classes:
Poor who depends on unskilled easily available low paid but regularly demanded jobs and Middle Class who depends on skilled less available high paid but not much demanded jobs. In Indian context one who earns Rs 15,000 per family member per month to Rs 1000,000 per month per family member is Middle Class. Below Rs 15,000 is Poor. Most of Poor's money goes to eating and health while most of Middle Class money goes to housing education and health. 95% people belong tho these Working Class or Petty Owners.
Capitalist Class can be divided into six sub classes:
1st Group has Minimum Rs 100,000 per month per family member earning mostly as interest income or profit on investments with net asset worth from Rs 2 crore to Rs 5 crore. Their assets are spread within domestic nation. This class is often one generation self made rich who often destroys their own wealth by bad investment and bad consumption. They often earn money in illegal ways and so state often seize their money.
2nd Group has net asset worth from Rs 5 crore to Rs 20 crore. They belong to Global Millionaire Class (sometimes a bit short but yet close). Their assets are spread throughout the globe. Some of 1st Group if lands here can survive but self made ones in general find it very difficult to stay here. They also come through illegal activities. But as they are shrewd enough to distribute wealth throughout the globe, any one state cannot seize their property or punish them.
3rd Group has net asset worth from Rs 20 crore to Rs 300 crore. Their assets are distributed across the globe and they often have political connections on which their business depend. Comprador class of any country has to remain content at this stage. This Group is often stuck here. Few is added here and almost nobody falls from this group. This group of rich is considered to be permanently rich. Some of them become member of the 4th Group after showing loyalty and acquiring knowledge for generations. They are not ruling class but definitely they are the top notch of the ruled ones.
4th Group has net worth Rs 300 crore to Rs 1,000 crore. They in general belong to ruling nation of a country. If any member from ruled nation join the club he can be taken down by state i.e. ruling nations. This Group is actually beginner Ruling Class.
5th Group of net worth Rs 1,000 crore to Rs 10,000 crore is exclusively reserved for ruling nations only. Their business depend a lot of state and political connections. They are either billionaires or aspiring billionaires. A country's foreign exchange reserve and exclusive imports and technologies are often maintained through this group's accounts.
6th Group is of net worth above Rs 10,000 crores and are clearly billionaires who have even the right to suggest and often shape a country's policies.
Now think, can a Working Class or Petty Owner become a member of the 6th Group of Rich?
Answer is a Middle Class has no way as his family is too small and has few trustable allies. He has too much to be desperate and he has too little to be adventurous. So a Middle Class can only see 5th and 6th Group and do orgasm.
A poor if has a big family with a lot of trustable friends then he can enter 1st Group or 2nd Group but often slips in the process.
Social Upward mobility is almost impossible today.
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Theoretical General 01-April-2024 by east is risingThrough electoral democracy, hindi votebank rules via numerical superiority. That creates hindi domination. Central government is be all end all in india so hindi belt runs indian government and exploits coastal non-hindi productive nations. Along with hindi belt, internal northeast, punjab, coastal odisha also joins this exploitation. Punjab and northeasten states bargain more freebies via threat of cessation, they actually do not seek to separate.
Hindi domination creates Gujarati, Rajasthani, Haryanvi, Sindhi etc baniya monopoly in economy. Only baniyas are allowed to own capital and state policies are made it such way. Baniya hegemony is maintained through hindi domination.
Through votebank reservation and other freebies of reserved castes and tribes established via exploitation of general castes.
Whoever forms votebanks gains their share according to bargaining power.
Upto 90s india maintained baniya hegemony through license raj and hindi domination through anti-colonial sentiments. India played the 'Democratic Socialist' card to gain blank cheques from USSR and maintaining their exploitative structure.
After 90s, this changed into 'West has democracy, west is best, so democracy is best.' But after USA hegemony is weakened, India needs new justifications for legitimacy. Then tgis new Indian nationalism and hindutva emerged. Rise of China has threatened Indian ruling class so much that they have decided that the heterogenity is a threat. So they seeks to homogenise india as soon as possible. This was always goal of indian ruling class but they did it in slow-poisoning manner so that nobody can understand what was happening. But indian ruling class has decided that this process was too slow and time is running out. So they have entered into direct and quick mode. This has also revealed the reality of indian state.
In slow-poisoning mode, indian polktics had several compradors and lackey beneficiaries like leftists, caste lobbies, postmodernist lobbies, religious minority lobbies etc. They often acted as diversion, controlled opposition and agents of state itself. But indian state has reached a material condition where they does not require any lackeys anymore. They are in a direct mode now so its over for compradors. But the more indian state is trying to homogenise, the more internal contradictions are getting significant. This will play crucial role in future.
With China's rise, all indian state constructs are slowly falling apart and also creations of anglo hegemony is getting irrelevant. This will also play another crucial factor.
Read MoreAuthor: Purandhar Khilji
Theoretical Hindu 30-March-2024 by east is risingভারতীয় বাংলাতে অবাঙালী আধিপত্যের অন্যতম মূল কারণ গ্রামবাংলার পশ্চাৎপদতা।
শহুরে মানুষের জন্মহার কম হবে এবং তারা আরো উন্নত স্থানে চলে যেতে চাইবে। সেই ফাঁকা শূণ্যস্থান ভরাট করবে গ্রামের লোক শহরে এসে। গ্রামে এইজন্যে জন্মহার উচ্চ থাকবে।
কিন্তু গ্রামবাংলা ঐতিহাসিক বিবর্তনে পশ্চাৎপদ তাই শহরে অভিভাসন করার ঐতিহাসিক ধাপটাই আসেনি। এই যে গ্রামবাংলা থেকে শহরে অভিবাসন হয়না সেইকারণেই শহরাঞ্চলে অবাঙালী আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বাকি জাতিরা চাইবেই নিজেদের আখের গোছাতে। তার বিরুদ্ধে ঠেলাটা নিজেদের থেকেই আসতে হবে এবং নিজেদের জমি, ভেরি, নারী নিজেদেরকেই সুরক্ষিত করতে হবে। কিন্তু সেটা তখনই হবে যখন সেই চাহিদা ও আকাঙ্খাটা আসবে। সেটা নেই কারণ গ্রাম, মফঃস্বল থেকে নগরে যাওয়ার বাসনাটাই নেই।
নগরসভ্যতাতে প্রবেশ করারই যারা বিরোধী তাদের নগরাঞ্চল অপর জাতির দখলেই যাবে।
এইকারণেই কলকাতাতে দুনিয়ার সব জাতি করে খেয়ে যায় কিন্তু গ্রামবাংলাই বঞ্চনা অনুভব করে।
ভাষার প্রমিতকরণের বিরোধীতা করে উপভাষার বঞ্চনার গপ্প দেওয়াও এই বিবর্তনবিরোধী মননের সাক্ষ্য দেয়।
নগরায়ন হলে ভাষার প্রমিতকরণ হবে, জাতীয়তা গড়ে উঠবে।
1905 এর বঙ্গভঙ্গের প্রতি এখনও সমর্থন এই মানসিকতারই বহিঃপ্রকাশ।
কলকাতাতে দুনিয়ার সব জাতির ভাগ্য খুলে গেল শুধু গ্রামবাঙালীরাই বঞ্চিত রয়ে গেল।
এই যে গ্রামবাংলা থেকে শহরে অভিবাসন হলনা এর ফলে শহরের বাঙালীও ধীরে ধীরে কোনঠাসা হয়ে শেষ হয়ে যাচ্ছে। কারণ শহুরেদের জন্মহার কম, তারা উচ্চাকাঙ্খী হলে আরো অন্যস্থানে যাবে আর অপর জাতির লোকেরা ঢালাওভাবে আসতেই থাকছে।
গ্রামবাংলার মানসিকতাও তাদের উন্নতির পথে বাঁধা। নিজেদের মধ্যে খেয়োখেয়ি, দলবাজি, অপরের পেছনে কাঠি করা, ঈর্ষা, পরশ্রীকাতরতা, কুচক্রী মানসিকতা, অপরের ক্ষতি করার ইচ্ছা, কূপমণ্ডুকতা এগুলো হল গ্রামবাংলার কিছু ট্রেডমার্ক বৈশিষ্ট্য। গ্রাম ও মফঃস্বলের লোকেরাই বেশী ভারত রাষ্ট্র চাটা হয়। কারণ এদের মধ্যে নিজেদের স্বার্থরক্ষার তাগিদও থাকেনা। ফলত সহযোগীতা, সংগঠনের ক্ষমতা, উচ্চাকাঙ্খা, গঠনমূলক মানসিকতি এসব কিছুই তাদের মধ্যে নেই।
শহুরে বাঙালী নিঃশেষ হতে হতে আজকে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতিই একটা নিম্নমানের গ্রামীণ কথ্যভাষা ও সংস্কৃতি হিসাবে অধঃপতিত হওয়ার অবস্থা হয়েছে। এবং বাঙালীও এটাই গব্বের সাথে প্রচার করে। লোকগীতি, আঞ্চলিক কথ্যভাষা, লোকসংস্কৃতি এসব ভাল। প্রমিত ভাষা, উচ্চ এলিট সংস্কৃতি বা high culture, পরিশীলীত উচ্চমার্গের কিছুই খ্রাপ। কোন সংস্কৃতিই টিকতে পারবেনা যদি না সে নিজে high culture হওয়ার স্বপ্ন দেখে আর তার জন্যে কাজ করে।
গ্রাম থেকে শহরে যাবার প্রবণতা যাদের মধ্যে নেই তাদের শহরাঞ্চল বাকীরা দখল করে নেবে ও তারা অপর জাতির দাস হিসেবেই থাকবে।
Read MoreAuthor: Purandhar Khilji
Theoretical General 17-March-2024 by east is risingকমিউনিস্ম আর খুব দূরে নয়।
মানুষের অন্য বস্ত্র বাসস্থান-এর সঙ্কট অনেকটাই কেটে গেছে।
সাব সাহারান আফ্রিকা ও ভারত ছাড়া সেরকম খাদ্য সঙ্কট আর কোথাও নেই পৃথিবীতে।
অনেক মানুষই এখন উন্নত অঞ্চলে উচ্চ আয়ের কাজ না খুঁজে, নিজের মনের মতো কাজ নির্বাচনে মন দিচ্ছে।
এগুলো সবই কমিউনিস্ম-এর দিকেই যে বিশ্ব মানবতা হাটছে তা ফুটিয়ে তোলে।
তবুও একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মানুষের অপ্রতুলতা বেড়েছে জীবন উন্নত হওয়ার সাথে সাথে আর তা হোল যৌনতা বিশেষ করে পুরুষদের জন্য।
সমস্ত সার্ভে জানাচ্ছে যে মানুষ এখন আগের অন্য যে কোন সময়ের থেকে কম সময়ের জন্য যৌনতা করতে পারছে।
পিউ রিসার্চ সেন্টার আরও জানাচ্ছে যে মার্কিন পুরুষদের ৬০% আজ যৌন সঙ্গী ছাড়া জীবন কাটাচ্ছে।
এর কারণ অবশ্যই লারীর যৌন স্বাধীনতা।
লারীর অর্থনৈতিক স্বাধীনতা মানবতার উন্নতির গতি অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে কিন্তু তার যৌন স্বাধীনতা সাধারণ পুরুষকে অনেকটাই যৌনতা বঞ্চিত করে দিয়েছে কারণ লারী স্বাধীনতা পেলে উচ্চ যৌনতা মূল্যের পুরুষ ছাড়া কাউকেই স্বীকার করতে পারবে না। তার কারণ কি কি তা ব্যখ্যা আছে এখানে https://www.eastisrising.in/view-news/160 ও https://www.eastisrising.in/view-news/206।
ফলে লারীর যৌন স্বাধীনতোর ফল হয় বিশাল সংখ্যক সাধারণ পুরুষের সঙ্গিহীন থাকা।
এর ফলে সমাজে সাধারণ পুরুষের মধ্যে একটা যৌনতা না পাওয়ার হতাশা থাকছে।
আর এই হতাশা বেড়িয়ে আসছে আদীম মনোবৃত্তি রূপকভাবে (metaphorically) প্রয়োগ করে।
আদীম যুগে বিজয়ী জাতির পুরুষ বিজিত জাতির পুরুষদের হত্যা করে বিজিত জাতির লারীদের যৌন দাসী বানাতো যা বিজয়ী জাতির পুরুষের বিজয়ী জাতির লারীর সাথে যৌন দরকষাকষি করার ক্ষমতাও বাড়াত। আর বিজিত জাতির পুরুষকে বাঁচতে হোলে নিজের লারীর ও বিজয়ী জাতির পুরুষের সম্পর্ক মেনে নিয়েই বাঁচতে হয়। কিছু ক্ষেত্রে সে বিজয়ী জাতির লারীর যৌন দাস হওয়ার সুযোগও পায়। এর ব্যখ্যা এখানে https://www.eastisrising.in/view-news/174।
বর্তমান সময়ে যৌন অতৃপ্তির ফলে বহু পুরুষ মনে মনে রূপকভাবে সেই আদীম যুগটাকে ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করতে থাকে।
কিছু পুরুষ নিজেদের বিজয়ী জাতির অঙ্গ ভেবে নিয়ে বর্তমান সময়ের কোন দুর্বল জাতিকে বিজিত জাতি ভাবতে থাকে আর কিছু পুরুষ নিজেদের ক্ষমতাহীন অবস্থা মেনে নিয়ে আদীম যুগের বিজিত জাতির মতো আচরণ শুরু করে।
বর্তমান সময়ে বহুদলীয় গণতান্ত্রিক দেশগুলোয় ক্ষমতাবান জাতি বলতে ভোটব্যঙ্কে শক্তিশালী জাতিকে বোঝায়।
অতএব যৌন অতৃপ্তিতে ভোগা কোনও মধ্যবিত্ত হিন্দিভাষি বা হিন্দু ধর্মাবলম্বী নিজেকে মনে মনে আদীম যুগের বিজয়ী জাতির পুরুষ ভাবতে থাকে ও কোনও বিশেষ সংখ্যালঘু জাতিকে (সাধারণত সংখ্যার দিক দিয়ে যে জাতি দ্বিতীয় ও তাই প্রধাণ শত্রু) তার অধীনস্ত বিজিত জাতি ভাবতে থাকে। আর তার সাথে জুড়ে নেয় সেই সংখ্যালঘু শত্রু জাতির পুরুষ ও লারীকে নিয়ে নানা ফ্যান্টাসি। তবে তাদের ক্রিয়া কল্পনাতেই সীমাবদ্ধ কারণ পর্যাপ্ত পরিমাণে খাদ্য বস্ত্র বাসস্থান থাকায় ঝুঁকিপূর্ণ যে কোনও কাজ করা থেকেই তারা বিরত থাকে আর তাই ঝুঁকিপূর্ণ যৌনাচারেও যেতে পারেনা এরা। খুব বেশি হোলে ঝুকিহীন ভাবে যদি কিছু যৌনাচার করা যায় তো তাতেই খুশি।
যেমন হিন্দিভাষীর স্বপ্ন সে কোনও সংখ্যালঘু ভাষভাষি ছক্কা দাদার বোনকে তুলে আনবে বা কোনও সংখ্যালঘু ধর্মাবলম্বী অত্যাচারী দাদাকে পিটিয়ে বোনকে বিয়ে করবে।
বাঙালি লারীকে সর্বত্র সস্তা কামুক ও মুসলমান লারীকে সর্বত্র অত্যাচারিত হিসেবে তুলে ধরার এটাই কারণ।
আবার উল্টোদিকে আরেকদল পুরুষ আছে যারা যে কোনও জাতির মধ্যবিত্ত সাধারণ পুরুষ আর এই বাস্তব মেনে নিয়ে লারীচাটা সিম্প হোতে লজ্জা পায়না।
এবার উদাহরণ দিয়ে বোঝা যাকঃ
একজন হিন্দিভাষি হিন্দু ধর্মাবলম্বী মধ্যবিত্ত পুরুষ নিজেকে হিন্দিভাষি হিন্দু বলে বিজয়ী জাতির পুরুষ ভাবতে পারে আবার মধ্যবিত্ত অবস্থানকেই সত্যি মেনে নিয়ে নিজেকে বিজিত জাতির পুরুষ ভাবতে পারে। এই একই কথা খাটে কোনও পশ্চীমা মধ্যবিত্ত শ্বেতাঙ্গ পুরুষের ক্ষেত্রেও।
তেমনি একজন বাঙালি হিন্দু ধর্মাবলম্বী মধ্যবিত্ত পুরুষ নিজেকে হিন্দু বলে বিজয়ী জাতির পুরুষ ভাবতে পারে আবার বাংলাভাষী ও মধ্যবিত্ত বলে নিজেকে বিজিত জাতির পুরুষ ভাবতে পারে। পূর্ব ইউরোপীয় শ্বেতাঙ্গ মধ্যবিত্ত পুরুষ বা পশ্চীমা অশ্বেতাঙ্গ মধ্যবিত্ত পুরুষের জন্য এই একই কথা প্রযোজ্য।
লারীও পুরুষের এই সব কাল্পনিক চিন্তাকে কাজে লাগিয়ে নিজের দর বাড়াতে থাকে যৌনতার বাজারে। তাই বাঙালি লারী নিজেকে দেখাতে থাকে স্বাধীনচেতা কামুক হিসেবে (পূর্ব ইউরোপের লারী বা পশ্চীমা অশ্বেতাঙ্গ লারীর ক্ষেত্রেও তা প্রজোয্য) আর ভারতের মুসলমান লারী নিজেকে দেখাতে থাকে অত্যাচারিত হিসেবে।
খাদ্য বস্ত্র বাসস্থান অনেক পরিমাণে আছে কিন্তু যৌনতা পুরুষের কাছে হয়ে গেছে অপ্রতুল।
এই অদ্ভুত অবস্থাতে দক্ষিণপন্থী কাল্পনিক জগতে বসবাসকারী পুরুষ জন্মায় আর জন্মায় বামপন্থী বর্তমানকে মেনে নেওয়া সিম্প পুরুষ।
একে আটকাতে ও যৌনতাকে খাদ্য বস্ত্র বাসস্থানের মতোই প্রতুল করতে আমরা একমাত্র প্রযুক্তিরুই স্মরণাপন্ন হতে পারি।
যৌন রোবট ও ভার্চুয়াল যৌনতা একসময় এতোই উন্নত হবে যে মানুষে মানুষ যৌনতা হয়ে যাবে যাদুঘরের বিষয়।
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Theoretical Sex War 08-March-2024 by east is risingচীনের সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতির মূল কথা হোল উপযোগীতা মূল্য বাড়ানোর লক্ষ্যে কাজ করা আর মার্কিন ধনতান্ত্রিক অর্থনীতির মূল কথা হোল বিনিময় মূল্য বাড়ানোর লক্ষ্যে কাজ করা।
সহজ করে বললে চীনের অর্থনীতির মূল লক্ষ্য সমাজের পক্ষে মঙ্গলজনক এমন উৎপাদনের পরিমাণ ও মান বাড়ানো আর মার্কিন অর্থনীতির মূল লক্ষ্য মুনাফা বাড়ানো।
বাজারকে স্বাভাবিকভাবে ক্রিয়াশীল হোতে দিলে একটা সময় মুনাফার সঙ্গে তাল মিলিয়ে মজুরি বাড়তে পারেনা, আর তাই মুষ্টিমেয় পুঁজিপতি শ্রেণির হাতে যত পুঁজি সঞ্চিত হয় তত পুঁজি বিনিয়োগ করে উৎপাদন করলে সেই উৎপাদন পর্যাপ্ত পরিমাণে কেনার লোক থাকেনা।
তখন সেই উদ্বৃত্ত পুঁজি নিয়ে কি করবে মুষ্টিমেয় পুঁজিপতি শ্রেণি?
মার্কিন ধনতান্ত্রিক বিশ্বে এর সমাধান হোল উদ্বৃত্ত পুঁজি সম্পত্তি কেনাবেচায় বিনিয়োগ করা।
মুষ্টিমেয় পুঁজিপতি শ্রেণি নিজেদের মধ্যে বাড়ি, জমি, শেয়ার, বণ্ড, আঁকা ছবি কেনা বেচা করতে থাকে। কম দামে কিনে বেশি দামে বেচে দেওয়াটাই লক্ষ্য। কখনো সম্পত্তির মূল্যের পতন হোলে বিপুল ক্ষতির সম্মুখীন হয় এই মুষ্টিমেয় পুঁজিপতি শ্রেণি। তখন মার্কিন সরকার সেই ক্ষতির দায় গোটা সমাজের ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়ে সেই মুষ্টিমেয় পুঁজিপতি শ্রেণিকে বেইল আউট করতে আসে।
এই প্রক্রিয়ায় সাধারণ মানুষের থাকার বাড়ি, জমি, ইত্যাদির খরচ বেড়ে যায়। এছাড়াও ব্যঙ্ক ও ইন্সিওরেন্স নির্ভর হওয়ায় সাধারণ মানুষের জন্য শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের খরচও বেড়ে যায়।
মনে রাখা দরকার মার্কিন সমাজে একজন গড় মানুষের মোট আয়ের ৭০% চলে যায় কেবল শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও বাসস্থান-এ।
চীন সরকার ২০১৭ সালেই ঘোষণা করে যে বাড়ি বানানোর লক্ষ্য হোল বাস করা, বাড়ি বানানোর লক্ষ্য কম দামে কিনে বেশি দামে বেচা নয়।
চীন সরকার আরও ঘোষণা করে ২০২১ সালে যে জন্মহার কমে যাওয়ার একটা বড়ো কারণ শিক্ষা ও বাসস্থান কেনার খরচ বেড়ে যাওয়া।
এই দুই লক্ষ্যে আমরা দেখতে পাই যে ২০২৩ সালে চীন সরকার অনলাইন শিক্ষাদানকারী মুনাফাজনক সংস্থাগুলো তুলে দেয় এবং অনলাইন শিক্ষা দেওয়াকে অলাভজনক ব্যবসা হোতে হবে বলে আইন আনে।
এই ব্যবস্থার মূল কারণ হোল শিক্ষা যেন ব্য্যবহ্যল হয়ে না ওঠে।
এর ফলে চীনের শেয়ার বাজার ক্ষতিগ্রস্থ হয় কিন্তু চীনা সরকার মনে করে মুনাফা কমে যাওয়া মানে অর্থনীতির ক্ষতি নয়।
তেমনই আলিবাবা টেন্সেন্ট বাইডু নামে বড়ো বড়ো ব্যক্তি মালিকানাধীন টেক কম্পানিগুলোর ডানা ছাঁটে চীনা সরকার এই কারণে যে এই মুনাফা সর্বস্ব সংস্থাগুলো বিপুল বিনিয়োগ করছে লাভজনক প্রযুক্তির বিকাসে যেমন ভিডিওগেমস, অথচ তারা বুনিয়াদি প্রযুক্তিতে সেভাবে বিনিয়োগ করেনি কারণ সেখানে লাভ আসে অনেক দেরীতে এবং অনেক ক্ষেত্রেই বিনিয়োগ অলাভজনক হয়।
এর পরেই চীনা সরকার বিপুল বিনিয়োগ শুরু করে বুনিয়াদি প্রযুক্তিতে যেমন সেমিকণ্ডাক্টর, কোয়ান্টাম, কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা ইত্যাদি।
সেরকমই বাড়ির দাম পড়ে গেলেও চীনা সরকার দাম ধরে রাখার ব্যবস্থা করেনি। এর কারণ বাড়ির মূল্য শেষ ৩০ বছরে অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে চীনে আর তার কারণ মুষ্টিমেয় ধনীরা তাদের উদ্বৃত্ত পুঁজি বিনিয়োগ করে চলেছিল নতুন নতুন বাড়িতে। এই সম্পত্তির মূল্য এই ধনী শ্রেণির সঞ্চয় বাড়িয়ে তুলতো কিন্তু সাধারণ চীনাদের বাড়ি কেনার খরচ বাড়িয়ে দিত।
তাই চীনা সরকার ঠিক করেছে সাধারণ চীনাদের স্বার্থে বাসস্থান কেনার খরচ কমাতে বাড়ি তৈরির ব্যবসায় বিপুল আর্থিক ক্ষতি স্বীকার করবে।
এর ফলে ধনী চীনাদের সঞ্চয় কমে যাবে এবং তাদের শেয়ার বাজার ও বণ্ড বাজারে বিনিয়োগ কমে যাবে আর এর ফলে চীনের পুঁজির বাজার ও মুদ্রা ক্ষতিগ্রস্থ হবে।
কিন্তু এই কারণেই আবার সাধারণ চীনাদের কাছে বাড়ি কেনা সহজ হবে, নতুন সংসার স্থাপন করাঢ় খরচ কমবে আর তা বাচ্চা মানুষ করার খরচ কমাবে যা ভবিষ্যতে জন্মহার বাড়াতে সহায়ক হবে। আবার মাথার ছাঁদ আছে বলে সাধারণ মানুষ অনেক মন খুলে ভোগ ও বিনিয়োগ করতে পারবে। যারা বেশি ঝুঁকি নেবেনা তারাও তাদের সঞ্চয় সরকারি ব্যঙ্কগুলোতে রাখবে যা থেকে সরকারি ব্যঙ্কগুলো উপযোগীতা মূল্য বাড়ানোর লক্ষ্যে বিনিয়োগ করবে।
অর্থাৎ চীনা অর্থনীতি আরও বেশি বেশি করে আগামী দিনে মুনাফা কম বা নেই কিন্তু সমাজের পক্ষে ভাল এমন উতপাদনে মন দেবে।
পুঁজির গতি চীনে আরও বেশি বেশি করে নিয়ন্ত্রিত হবে এবং পুঁজির ভূমিকাকে আরও বেশি বেশি করে গৌণ করে দেওয়া হবে।
কমুনিস্ম অনিবার্য, তার আসাকে কেউ আটকাতে পারেনা।
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Theoretical General 06-March-2024 by east is risingভারতের মুসলমান কি বুঝছে অবস্থা কতটা ভয়াবহ?
তারা কি আদৌ ঠিকঠাক চিন্তা করতে পারে কিভাবে উদ্ধার পাওয়া যায়?
আমার ধারণা তারা বুঝতেই পারেনা।
বোকা বোকা উম্মা উম্মা করে লাফায় যদিও আরব ইরানীদের কোন দায় নেই ভারতীয় মুসলমানদের রক্ষা করার।
বিপদে যে পড়ে তাকেই পরিত্রাণের রাস্তা খুঁজতে হয়।
এই সহজ কথা ভারতের মুসলমান বোঝেনা।
উপকূল আরবে বহু হিন্দু শ্রমিক কাজ করে।
তাদের কয়েকটা মন্দির বানাতে দিয়েছে আরব সরকারগুলো।
এটাই স্বাভাবিক।
এর মধ্যে কোন দোষ নেই।
যেমন বাঙালি হিন্দু যারা চীনের বেইজিং-এ থাকে তারা দুর্গা পুজো করে আর চাইলে জমি কিনে একটা দুর্গা মন্দিরও করতেই পারে।
মার্কিন ও ইউরোপের সরকারও তাদের দেশে কাজ করা মুসলমানেদের মসজিদ তৈরিতে বাঁধা দেয়না।
অথচ আরব সরকার হিন্দুদের মন্দির খুলতে দিয়েছে দেখে ভারতীয় মুসলমেদের অনেকেই আরব শাসকদের ওপর রাগ করেছে।
আরব ইরানি তুর্কিদের কোন দায় নেই ভারতীয় মুসলমানেদের নিয়ে।
ভারতে হিন্দুরা সংখ্যাগুরু, সংখ্যায় মুসলমেনেদের চেয়ে অনেকটাই বেশী।
আর ভারতে ভোটের রাজনীতি মানে বহুদলীয় গণতন্ত্র চলে আর তাই সংখ্যাগুরুর ইচ্ছে অনুযায়ী সংখ্যালঘুকে চলতে হবে।
এটা বুঝতে পেরেই জিন্নাহ বলেছিলেন হয় ফেডেরাল ভারত যেখানে রাজাদের ক্ষমতা অটুট থাকবে আর মুসলমান সংখ্যাগুরু কিছু অর্থনৈতিকভাবে স্বাধীন রাজ্য থাকবে নয়তো ভারত পাকিস্তান বিভাজন হবে।
আজকে বিজেপি-এর উত্থানের মধ্য দিয়ে এটা পরিস্কার হয়ে গেছে যে জিন্নাহ সঠিক ছিলেন।
ঠিক মতো জানলে বোঝা যায় এই বিষয়টা আন্নাদুরাইও বুঝেছিলেন তবে তা উত্তর ভারত ও দক্ষিণ ভারতীয়দের মধ্যেকার দ্বন্দ্ব হিসেবে।
তখন হিন্দি ভাষা ও হিন্দি ভাষী কোনটাই এতো শক্তিশালী ছিলনা তাই অনেক অহিন্দিভাষি নেতাই হয়তো এই সমস্যাটা বোঝেনি।
কিন্তু আজ হিন্দিভাষিদের সংখ্যা ভারতের মোট জনসংখ্যার ৫০% ছুঁইছুঁই।
তাই অহিন্দিভাষিদের অবস্থাও আস্তে আস্তে খারাপের দিকেই যাচ্ছে।
যদিও মুসলমানেদের অবস্থা আরও খারাপ কারণ ভোটের বিচারে তাদের অবস্থা আরও ভয়াবহ।
জিন্নাহ ও আন্নদুরাই-এর কথা ভাল করে বুঝে এগিয়ে যাওয়া দরকার ভারতের মুসলমানেদের।
আগামী দিনে অনেক এথনিক ক্লিন্সিং হবে ভারতে।
তার জন্যে সবাই প্রস্তুত হোক।
পশ্চীম শেষ হওয়ার পথে আর তাই উদারবাদী চিন্তার জায়গাও শেষ।
এটা অতি জাতীয়তাবাদ-এরই যুগঃ ক্ষমতাবান জাতির উগ্র জাতীয়তাবাদ হোল ফ্যাসিবাদ বা সাম্রাজ্যবাদ আর দুর্বল জাতির জাতীয়তাবাদ হোল কমিউনিস্ম বা স্বাধীনতার সংগ্রাম।
ফ্যাসিবাদ আর কমিউনিস্ম একটু তাত্ত্বিক বিষয়।
তাই একে সাম্রাজ্যবাদ বনাম স্বাধীনতা সংগ্রাম হিসেবেই সাঝাতে হবে।
মনে রাখতে হবে সকল মুসলমান যেমন সন্ত্রাসী নয়, সকল ইহুদিও জায়নিস্ত নয়, সকল ব্রাক্ষণ দলিতের রক্ত চোষেনা।
তাই এই কথাগুলো এড়িয়ে চলাই প্রথম কাজ।
কাস্ট প্রসঙ্গে বলব যে "ভোট ব্যঙ্ক যার বেশী, সুবিধে তার বেশী" এই তত্ত্বের ওপরেই টিকে আছে হিন্দুত্ব রাজনীতি, হিন্দি আধিপত্য ও নীচু কাস্ট-দের সংরক্ষণ।
তাই সংরক্ষণের রাজনীতিকে সমর্থন মানে হিন্দুত্ব ও হিন্দি আধিপত্যকেই মেনে নিতে হয়।
তাই সংরক্ষণের জায়গায় কাস্ট ভিত্তিক constituency বা নির্বাচনী এলাকা প্রদানের কথা বলা হোক।
মনে রাখা দরকার যে আম্বেদকার প্রথমে কাস্ট ভিত্তিক constituency বা নির্বাচনী এলাকা চেয়েছিলেন।
কিন্তু গান্ধী পুণা প্যাক্ট-এ আম্বেদকারকে ভুল বুঝিয়ে কাস্ট ভিত্তিক constituency বা নির্বাচনী এলাকার বদলে সরকারী চাকরী ও সাংসদ পদে সংরক্ষণ করিয়ে নিয়েছিলেন।
ফলাফল হয়েছে নীম্ন মেধার চাষ আর একই ভাষাভাষি মানুষের মধ্যে কাস্ট ভিত্তিক রেষারেষি।
আসলে বামপন্থী্রা যতো বেশী কাস্ট রাজনীতিতে গেছে, হিন্দুত্ব ও হিন্দি সাম্রাজ্যবাদ ততোই শক্তিশালি হয়েছে কারণ এই তিনটে একই তত্ত্বের ওপর দাঁড়িয়ে আছে আর তা হোলঃ যত বেশি ভোটব্যঙ্ক ততো বেশি অধিকার।
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Theoretical General 18-February-2024 by east is risingপুরুষের যৌন কৌশল হোল যত বেশি সংখ্যায় সম্ভব নারীর সঙ্গে সঙ্গম করা যাতে সন্তান পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে, কিন্তু নারীর যৌন কৌশল হোল যত বেশি সম্ভব উচ্চ পুরুষের সাথে সঙ্গম করা যাতে সন্তানের মান উচ্চ হয়।
পুরুষ যৌন পরিষেবার বাজারে নারীর থেকে যৌন পরিষেবা কেনে বেশি পরিমাণে কিন্তু নারী পুরুষের থেকে যৌনতা কেনে তুওনায় কম।
পুরুষের যৌন ধারাটাই হোল যত বেশি সম্ভব নতুন নতুন নারীর সাথে সঙ্গম কিন্তু নারীর যৌন ধারাটাই হোল শ্রেষ্ঠ ধনী বা শ্রেষ্ঠ সুন্দর পুরুষদের সাথে সঙ্গম।
তাই পুরুষের ঝোঁক বহুগামিতা
কিন্তু নারীর ঝোঁক ঊর্ধ্বগামিতা। তাই ধনবান পুরুষ পছন্দের নারীর সাথে সঙ্গম করতে যতটা খরচ করতে আগ্রহী, ধনবতী নারী পুরুষের সাথে সঙ্গম করতে ততোটা আগ্রহী নয় কারণ নারী সহজে কোনও পুরুষ পছন্দই করতে পারেনা আর পুরুষ যে কোনও নারীকে পছন্দ করে ফেলে।
কারণগুলো
এক, প্রকৃতি পুরুষের মধ্য দিয়ে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সংখ্যা ঠিক রাখে আর নারীর মধ্য দিয়ে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মান ঠিক রাখে। একজন পুরুষ এক জীবনে ৮০০ কোটি শক্রাণু তৈরি করে আর নারী এক জীবনে ২০ লক্ষ ডিম্বানু নিয়ে প্রস্তুত থাকে। তাই শুক্রাণু ডিম্বাণু অনুপাত হোল ৪০০০ ঃ ১। স্বাভাবিকভাবেই পুরুষ জোর দেয় সঙ্গীর সংখ্যায় আর নারী জোর দেয় সঙ্গীর মানে।
দুই, আপনাকে যদি ১০ টাকা দিয়ে কোন নতুন জিনিস কিনতে বলা হয় তো আপনি রাজি হবেন অনায়াসে কিন্তু ১০,০০০ টাকা দিয়ে কিনতে বললে অনেক চিন্তা করবেন যেমন আদৌ কেনার দরকার আছে কিনা, কেনা জিনিসটা ভাল হবে কিনা, ইত্যাদি। এবার দেখুন সন্তান জন্ম দেওয়ার ক্ষেত্রে পুরষের তেমন কোন খরচ নেই শুধু শুক্রাণু নির্গমন ছাড়া। কিন্তু সন্তান জন্মের ক্ষেত্রে নারীকে বিশাল সময় দিতে হয় গর্ভে সন্তান লালন করতে এবং জন্মের পরেও প্রায় এক বছর দুধ খাওয়াতে ইত্যাদি। অর্থাৎ সন্তানের জন্ম নারীর কাছে ১০,০০০ টাকা খরচের সমান আর পুরুষের কাছে ১০ টাকা খরচের সমান। তাই পুরুষ সন্তানের মান নিয়ে চিন্তিত নয় বরং সঙ্গীর সংখ্যা বা সঙ্গম সংখ্যা বাড়ানোর দিকেই পুরুষের মন। আর নারী চিন্তিত সন্তানের মান নিয়ে, সে তাই সঙ্গীর মান নিয়ে বেশি চিন্তিত, সঙ্গী সংখ্যা বা সঙ্গম সংখ্যা নিয়ে নারী চিন্তিত নয়।
তিন, একজন নারীর গর্ভে নিজের সন্তান নিশ্চিত করতে একজন পুরুষ নারীটির গর্ভের ওপর একচেটিয়া অধিকার কায়েম করতে চায়। মানে নারীটির সঙ্গে যাতে অন্য কোন পুরুষ সঙ্গম না করে সেটা নিশ্চিত করতে চায় পুরুষ। কারণ একবার অন্য কোন পুরুষের সন্তান ধারণ করলে প্রায় ১০ মাস ১০ দিন নারীটি ওই পুরুষের সন্তান ধারণ করতে পারবেনা। আর তা নিশ্চিত করতে গিয়ে পুরুষ নারীর পেছনে অনেক বেশি খরচ করতে বাধ্য হয়। সেই খরচ হোতে পারে জোর করে শেকল পড়িয়ে রাখায় আবার হোতে পারে আকাঙ্খিত পণ্য পরিষেবা কিনে দিয়ে। কিন্তু নিজের ঔরষজাত সন্তান পাওয়ার জন্য পুরুষকে নারীর গর্ভের ওপর আর তাই নারীর শরীরের ওপর একচেটিয়া অধিকার কায়েম করতেই হয়। নারীর সেই সমস্যা নেই। একাধিক নারী একজন পুরুষের থেকে সন্তান চাইলেও পুরুষের দেহের বা লিঙ্গের একচেটিয়া অধিকারের কোন প্রয়োজন নেই কোন নারীরই। কারণ ফারটাইল উইন্ডো-এর সময়টুকুতে সঙ্গম করলেই নারী আকাঙ্খিত পুরুষের থেকে সন্তান পেয়ে যাবে। এরপরে সেই পুরুষ অন্য নারীকে অন্তঃসত্ত্বা করলেও কোন সমস্যা নেই।
এই তিন কারণের জন্য যৌন পরিষেবার বাজারে পুরুষ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ক্রেতা হয় আর নারী বিক্রেতা হয়। তাই সমাজে যত ধনাগাম হয়, সমাজ যত উন্নত হয় ততোই অন্যান্য পণ্যের মতো যৌন পরিষেবার দাম বাড়তে থাকে। যৌন পরিষেবার দাম বাড়ার একটা কারণ হোল পুরুষ ও নারীর অনুপাত একই থাকে সমাজ উন্নত হোলেও। কোন পণ্য বা পরিষেবার মূল্য বেড়ে যাবে যদি সেই পণ্য বা পরিষেবার উৎপাদন স্থির থাকে কিন্তু অন্য পণ্য বা পরিষেবার উৎপাদন বেড়ে যায়। আর এর ফলে পুরুষের যৌন পরিষেবা পাওয়া কষ্টকর হয়ে ওঠে আর নারীর যৌন পরিষেবা বিক্রি করার প্রবণতা বেড়ে যায়।
Author: Saikat Bhattacharya
Theoretical Sex War feminism 10-September-2023 by east is risingদ্বিতীয় পর্বে আমরা আলোচনা করেছিলাম পশ্চীম ইউরোপে কিভাবে একভাষি এক ধর্মের রাষ্ট্র গড়ে উঠল। তৃতীয় পর্বে আমরা আলোচনা করব কিভাবে এবং কেন লাতিন আমেরিকা, পূর্ব ইউরোপ, এশিয়া, আফ্রিকাতে কি ধরণের রাষ্ট্র গড়ে ওঠে।
ফরাসী বিপ্লবের পরেই নেপোলিয়নের আঘাতে স্পেন ও পর্তুগাল-এর লাতিন আমেরিকার উপনিবেশগুলোর ওপর নিয়ন্ত্রণ অনেকটাই শিথিল হয়ে যায় আর সেই সুযোগে একের পর এক লাতিন আমেরিকার দেশ স্বাধীন হোতে শুরু করে। পরতুগীস ভাষি ও ক্যাথোলিক ধর্মের অংশটা একটা দেশ বানায় যাত নাম ব্রাজিল। স্প্যানিশ ভাষি ও ক্যাথোলিক ধর্মের অংশটা বহু ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। লাতিন আমেরিকার স্বাধীন দেশগুলো পূর্ণ শ্বেতাঙ্গ, আধা শ্বেতাঙ্গ, বাদামী বর্ণের মানুষ ও কৃষ্ণাঙ্গের মধ্যে বিভক্ত হয়ে পড়ে। স্বাধীন দেশ হোলেও বর্ণগত বিভাজন বজায় থাকে, ভূমী সংস্কার হয়না, মূলত লাতিন আমেরিকার বিশাল খনিজ সম্পদের জোড়ে রাষ্ট্রগুলো বিদেশী মুদ্রা লাভ করতে থাকে কিন্তু বর্ণ বৈষম্য ও ভূমী সংস্কার না হওয়ায় বিদেশী মুদ্রা বিনিয়োগ করতে ব্যর্থ হয় এবং এর ফলে উপনিবেশ হয়ে থাকা এশিয়া ও আফ্রিকার থেকে এগিয়ে গেলেও পশ্চীম ইউরোপ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় পিছিয়ে পড়ে লাতিন আমেরিকার দেশগুলো। মূলত খনিজ সম্পদ ও আবহাওয়ার জন্য তৈরি হওয়া কৃষি সম্পদ জাত বিদেশী মুদ্রা লাতিন আমেরিকার রাষ্ট্রগুলোকে টিকিয়ে রাখে।
পূর্ব ইউরোপ জুড়ে তখন ছিল জার রাশিয়া ও অস্ট্রো-হাঙ্গেরীয় সাম্রাজ্য। বহুভাষি ও বহু ধর্মের এই সাম্রাজ্য দুটোও টিকে ছিল কারণ তাদের প্রকাণ্ড বড় আকারের জন্য তাদের হাতে ছিল অনেক জমি, জমির নীচের খনিজ সম্পদ। সেরকম গুরুত্বপূর্ণ বন্দর না থাকায় এদের বাণিজ্যের বিকাশ হয়েছে ধীরে। পাশেই পশ্চীম ইউরোপের শিল্পায়ণ কর্মসূচীকে ত্বরাণ্বিত করত এদের খনিজ সম্পদ। এরা এই আয়কে ব্যবহার করত বিশাল সামরিক বাহিনী রাখতে আর নানা জাতির মানুষের বিদ্রোহকে দমণ করতে বা কিনে নিতে। ফলে এদের শিল্পায়ণ কর্মসূচী দুর্বল হয় এবং শেষ পর্যন্ত পশ্চীম ইউরোপের তুলনায় জার রাশিয়া ও অস্ট্রো-হাঙ্গেরীয় সাম্রাজ্য এতোটাই পিছিয়ে পড়ে যে তাদের সামরিক বাহিনী প্রথম বিশ্ব যুদ্ধে পুরোপুরি পরাজিত হয় এবং শেষ পর্যন্ত এই দুই সাম্রাজ্যের সমাপ্তি ঘটে। অস্ট্রো-হাঙ্গেরীয় সাম্রাজ্য অনেক ছোট ছোট দেশে বিভক্ত হয়ে পড়ে এবং কিছু ক্ষেত্রে কম জাতিগত বিভিন্নতার দেশ তৈরি হয় বা অনেক ক্ষেত্রে এক ভাষি এক ধর্মের দেশ তৈরি হয়। জার রাশিয়ার পতনের পরে সোভিয়েত সংবিধান সমস্ত জাতিকেই দেয় স্বাধীন হয়ে যাওয়ার ক্ষমতা। তাজিকদের মতো বহু জাতি তার ভাষার প্রজাতন্ত্র তৈরি করে সোভিয়েত সংবিধান মেনে। সোভিয়েত সরকার ভূমী সংস্কার করে সফলভাবে এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে কমিউনিস্টরা পূর্ব ইউরোপ জুড়ে এই কর্মসূচী চালায় এবং দ্রুত শিল্পোন্নত হয়ে ওঠে। শিল্পোন্নত হওয়ার পরেও ১৯৮০-এর দশকে এই সমস্ত দেশগুলো থেকে কমিউনিস্ট পার্টি বিতারিত হওয়ার সাথে সাথেই কম বিভিন্নতার দেশগুলো এক জাতি এক ধর্মের দেশে পরিণত হয়। চেকোস্লোভাকিয়া ও সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে সাংবিধানিকভাবে প্রজাতন্ত্রগুলো আলাদা হয়ে যায়। যুগোস্লাভিয়ার ক্ষেত্রে অবশ্য রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এক ভাষি এক ধর্মের দেশ তৈরি হয়।
অটোমান সাম্রাজ্য ভেঙ্গে বহু স্বাধীন রাষ্ট্র তৈরি হয়। তাদের অধিকাংশেরই ধর্ম সুন্নি এবং সাহিত্যের ভাষা আরবি। এই সব অঞ্চলে মুখের ভাষা ও সাহিত্যের ভাষা আলাদাই রয়ে যায়। এদের মধ্যে একদিকে সাহিত্যের ভাষাকে কেন্দ্র করে বৃহৎ আরব জাতি গঠনের প্রক্রিয়া চলতে থাকে আর অন্যদিকে মুখের ভাষা ও অর্থনৈতিক যৌক্তিকতাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন ছোট ছোট আরব জাতি তৈরির প্রক্রিয়া চলতে থাকে। খনিজ তেল ও অজস্র আদর্শ আন্তর্জাতিক বন্দর থাকায় অধিকাংশ দেশেই দ্রুত উন্নয়ন ঘটে। এই অর্থনৈতিক স্বাধীনতার কারণে শেষ পর্যন্ত বিভিন্ন ছোট ছোট আরব জাতি তত্ত্ব বৃহৎ আরব জাতি তত্ত্বকে পরাজিত করতে সক্ষম হয়।
মালেয়াশিয়া-সিঙ্গাপুর প্রথমে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে এক দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। কিন্তু সিঙ্গাপুর তার আদর্শ বন্দর জাত বিদেশী মুদ্রার ভাগ বাকিদের দিতে অস্বীকার করে। সাংবিধানিকভাবেই এই তিন দেশ আলাদা হয়ে যায়। দক্ষিণ এশিয়ার ব্রিটিশ ভারত আগে ধর্মের ভিত্তিতে ভারত-পাকিস্তানে বিভক্ত হয় এবং পরে পাকিস্তান থেকেও বাংলাদেশ স্বাধীন হয়ে একভাষি এক ধর্মের রাষ্ট্র স্থাপন করে। দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া ও আফ্রিকা জুড়ে এখনো এরকম অনেক জাতি আলাদা রাষ্ট্রের দাবিতে আন্দোলন চালচ্ছে।
সুতরাং ইতিহাস বলছে আদি পুঁজি সঞ্চয়ের স্বার্থে অনেক ক্ষেত্রেই একটা জাতি স্বাধীন রাষ্ট্রের দাবী করে। অনেক ক্ষেত্রে প্রথমে একাধিক ভাষা ও ধর্মের মানুষ এক রাষ্ট্রের অধীনে শুরু করে বটে কিন্তু ক্রমেই আদি পুঁজির ভাগ অন্যদিকে দিতে না চেয়ে আবার দ্বিতীয়বার নিজস্ব আরও ছোট ও কম বিভিন্নতার রাষ্ট্র গড়ে তোলে। অর্থাৎ স্বাধীনতা লাভ একবারে নয়, বহুবারে হতে পারে পুঁজি সঞ্চয়ের ভাগাভাগিকে কেন্দ্র করে।
চীনের ক্ষেত্রে হান চীনারা মূলত পূর্ব উপকূলের বসবাসকারী এবং তাদের হাতে রয়েছে চীনের সবচেয়ে উর্বর জমিগুলো। হানদের সংখ্যাও চীনের জনসংখ্যার ৯০%। বাকি ১০% বহুভাগে বিভক্ত ছোট ছোট জাতি মূলত পশ্চীমের রুক্ষ অঞ্চলে বাস করে। এই অহানরা চীনে থাকতে চায় হানদের অর্থনৈতিক লাভের ভাগ পেতে। আর হানরা এই ভাগ দিতে রাজি থাকে তাদের পশ্চীমের সীমান্তকে বিপদমুক্ত রাখতে। কখনো যদি পশ্চীমের রুক্ষ অঞ্চলে বিশাল খনিজ সম্পদ পাওয়া যায় তাহলে অহানদের ওই বিশেষ অঞ্চলের মানুষ স্বাধীনতা চাইতেই পারে। জিঞ্জিয়াং প্রদেশে কিছু তেল আবিস্কারের পরেই উইঘুরদের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সাময়ীকভাবে হলেও স্বাধোনতার তত্ত্ব ঢোকাতে সম্ভব হয়। তেমনই পূর্ব চীনই ওই তেলের ক্রেতা বলে মার্কিন সাহায্য পেয়েও বেশি দূর এগোতে ব্যর্থ হয় স্বাধীন জিঞ্জিয়াং-এর তত্ত্ব।
ভারতের ক্ষেত্রে উপকূলবর্তী অহিন্দিভাষিরা ক্রমেই মনে করছে তাদের লাভের বড্ড বেশি ভাগ দিতে হচ্ছে অন্তর্বর্তী হিন্দিভাষিদের। হিন্দিভাষিরা তাদের ৪৬% ভোট ব্যঙ্ক কাজে লাগিয়ে উপকূল রাজ্যগুলোর অহিন্দিভাষিদের শোষণ করছে। মনে রাখা দরকার সবচেয়ে বেশি বন্দর সমৃদ্ধ গুজারাতিদের অহিন্দিভাষিরা লটের ভাগ দিচ্ছে। এভাবেই ভারত হয়ে উঠেছে গুজারাতি-হিন্দিদের সাম্রাজ্য। একদিকে হিন্দিভাষিরা এক ভাষা এক ধর্মের শ্লোগান দিয়ে ভারতকে হিন্দু হিন্দি রাষ্ট্রে পরিণত করতে চাইছে। অন্যদিকে বহুত্ববাদের কথা বলে সংখ্যালঘু ধর্ম ও ভাষাগুলো টিকে থাকতে চাইছে। কংগ্রেসের নরম হিন্দু হিন্দির জায়গায় ক্রমেই বিজেপির শক্ত হিন্দুত্ব গেঁড়ে বসছে আর ততই অহিন্দিভাষি অহিন্দু ধর্মের মানুষেরা আতঙ্কিত হচ্ছে। দক্ষিণের উপকূলবর্তী জাতিগুলো স্বাধীন দ্রাবিড় রাষ্ট্রের কথা তুলছে হিন্দিভাষিদের ভোটব্যঙ্কের গুরুত্ব বাড়ায়। গুয়াজারাতি-হিন্দি সাম্রাজ্যবাদের একটা অন্যতম স্তম্ভ হোল ভোটব্যঙ্ক সর্বস্ব গণতন্ত্র। ভোটব্যঙ্কের জোড়েই এই লুট টিকে আছে। তাই ভারত হিন্দি বনাম অহিন্দি দ্বন্দ্বে ভেঙ্গে পড়লে তা হবে ভোটব্যঙ্ক সরবস্ব রাজনীতির কাছে বড় একটা আঘাত। তা অবশ্যই গোটা আন্তর্জাতিক রাজনীতিকে কাঁপিয়ে দেবে।
উনবিংশ শতাব্দী বা বিংশ শতাব্দীর সময় এটা নয়। এখন সমস্ত দেশেই কৃষক প্রতি উৎপাদন অনেক বেড়েছে, নারী অনেক স্বাধীন হয়েছে, জন্মহার অনেক কমেছে, শিল্পোন্নত অঞ্চল বিশ্বে অনেক বেড়েছে আর এর ফলে খনিজ সম্পদ বিক্রেতা ও কৃষি সম্পদ বিক্রেতাদের দরকষাকষির ক্ষমতা ও আয়ও অনেক বেড়েছে। ফলে ভূমি সংস্কারের দাবী ও জনপ্রিয়তা আগের চেয়ে অনেক কমে গেছে। এখন ভোট ব্যঙ্ককে কেন্দ্র করে উৎপাদককে শোষণ করার এক নতুন ধরণের প্রতিক্রিয়াশীল শক্তির জন্ম হয়েছে যারা তাদের শোষণকে সামাজিক ন্যায়ের নামে বৈধতা দিচ্ছে। তা ভারতের হিন্দি ভোটব্যঙ্ক হোক আর সামাজিক ন্যায়ের নামে নারী ভোটব্যঙ্ক। মেধা, দক্ষতা ও উৎপাদনশীলতাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে চলছে এই ভোটব্যঙ্কের জোড়ে চলা সামাজিক ন্যায়ের নামে শোষণ।অন্যদিকে কমছে মেধা, দক্ষতা ও উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর জন্য বিনিয়োগ, আগ্রহ ও উদ্যোগ। চীনের উত্থান হল এই ভোটব্যঙ্ক কেন্দ্রিক শোষণের বিরুদ্ধে যোগ্যতা ভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থার উত্থান। পুরুষবাদী আন্দোলনও এই নারী ভোটব্যঙ্ক কেন্দ্রিক আইন ব্যবস্থা ও সমাজ চিন্তার বিরুদ্ধে একটা বিপ্লব।
যোগ্যতা ভিত্তিক সমাজ বানাও, যোগ্যদের সম্মান দাও, কম যোগ্যদের যোগ্যতা বাড়ানোর জন্য বিনিয়োগ কর কিন্তু কম যোগ্যতাকে ঢাকতে ভোটব্যঙ্ক বানিয়ে যোগ্যদের শোষণ বন্ধ হোক। এটাই একবিংশ শতাব্দীর বিপ্লব।
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Theoretical General 27-August-2023 by east is risingপ্রথম পর্বে আমার আলোচনার বিষয় ছিল মূলত বিংশ শতাব্দীর আদি পুঁজির সঞ্চয়। সেখানে মূল লক্ষ্য ছিল দ্রুত শিল্পায়ণ এবং সেই লক্ষ্যে ভূমি সংস্কার, শিক্ষা স্বাস্থ্য পরিকাঠামোতে বিনিয়োগ ও নারী মুক্তি। কিন্তু সেখানে আমরা একটা স্বাধীন দেশ ধরে নিয়েছিলাম যার একটা স্বাধীন রাষ্ট্র আছে। দ্বিতীয় পর্বে আমরা আলোচনা করব একটা স্বাধীন দেশের স্বাধীন রাষ্ট্র তৈরি হয় কিভাবে কারণ স্বাধীন রাষ্ট্র ছাড়া আদি পুঁজির সঞ্চয় সম্ভব নয়।
স্বাধীন আধুনিক রাষ্ট্র তৈরি হয়েছিল ইউরোপে একটা নির্দিষ্ট ছকের মধ্য দিয়েঃ ছাপাখানা আবিস্কার, মুখের ভাষার প্রমিতকরণ, প্রোটেস্টান্ট আন্দোলন, পোপের গুরুত্ব কমিয়ে রাজার স্বনিযুক্তিকরণ, এক ভাষা এক ধর্মের রাষ্ট্র গড়ে ওঠা।
পঞ্চদশ শতকের মধ্য ভাগে গুটেনবার্গের ছাপাখানা বই ছাপার খরচ কমিয়ে দেয় আর এর ফলে মানুষের কাছে ছাপা বই সহজলভ্য হয়ে যায়। এর ফলে পড়াশুনা করে বই পড়া একটা নতুন ধরণের বিনোদন হয়ে ওঠে, অক্ষর জ্ঞান বিস্তার লাভ করতে থাকে, মুখের ভাষায় বয় ছাপা শুরু হয়, ফলে মুখের ভাষার প্রমিতকরণ (standardization)-এর প্রয়োজন দেখা দেয়, ইউরোপের লিঙ্গুয়া ফ্রাঙ্কা (সাহিত্যের ভাষা) লাতিনের গুরুত্ব কমতে থাকে, বাইবেল-এর বহু মুখের ভাষায় অনুবাদ শুরু হয়, ফলে বাইবেল-এর ক্যাথোলিক চারচ-এর বাইরে স্বাধীন ব্যখ্যা বৃদ্ধি পায়।
ক্যাথোলিক চার্চ-এর অনুমোদন লাগতো ইউরোপের সমস্ত রাজার শাসক হিসেবে বৈধতা (Legitimacy) পেতে। ক্যাথোলিক চার্চ-এর পোপ রাজাকে অভিসিক্ত করত ঈশ্বরের অনুমদিত হিসেবে। আগে মানুষ ঈশ্বরে বিশ্বাস করত বেশি আর ঈশ্বরের মূল প্রতিনিধি হিসেবে স্বীকার করত পোপকে আর তাই পোপের স্বীকৃতি ছাড়া ইউরোপের খ্রিশ্চান জনতা কাউকে রাজা হিসেবে মেনে নিত না। ইউরোপের রাজারা পোপের এই ক্ষমতাকে সবসময় খর্ব করতে চাইত। পোপ গ্রেগরি ও জার্মান সম্রাট হেনরির মধ্যে এই নিয়ে দীর্ঘ যুদ্ধ চলে একাদশ শতাব্দীতে। কিন্তু পোপের প্রচণ্ড ক্ষমতাকে অস্বীকার করার সাহস দেখাতে পারেনি ইউরোপের রাজারা। কিন্তু গুটেনবার্গের ছাপাখানার প্রভাব যত বাড়তে থাকে মানুষ শিক্ষিত হতে থাকে, স্বাধীন ভাবে বাইবেলের ব্যখ্যা বাড়তে থাকে, লাতিনের জায়গায় মুখের ভাষা জনপ্রিয় হতে থাকে ইউরোপের বহু রাজা এই সুযোগে পোপকে অমান্য করার সুযোগ পায়।
কেলভিন ও মারটিন লুথারের প্রোটেন্সটান্ট আন্দোলন পোপের ভিত দুর্বল করে দেয় আর সেই সুযোগে রাজা পোপের স্বীকৃতি ছাড়াই নিজেকে রাজা ঘোষণা করা শুরু করে। মুখের ভাষার প্রমিতকরণ ঘটান রাজা এবং বহু দেশে প্রোটেস্টান্ট ধর্ম গ্রহণ করে মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে রাজা। এইভাবে ভাষা ভিত্তিক জাতি রাষ্ট্র গড়ে ওঠে ইংল্যাণ্ড, ফ্রান্স, স্পেন, নেদারল্যান্ডস, সুইডেন, পর্তুগাল ইত্যাদি দেশে ষোড়শ শতকেই। কিন্তু এই জাতি রাষ্ট্রগুলো গড়ে উঠেছিল অন্য ধর্মের মানুষকে উচ্ছেদ করে। প্রোটেস্টান্ট দেশগুলো বিতারিত করে ক্যাথোলিকদের আর ক্যাথোলিক রাষ্ট্রগুলো উচ্ছেদ করে দেয় প্রোটেস্টান্টদের। ভাষা প্রমিতকরণ করতে গিয়ে অজস্র মুখের ভাষাকে শেষ করে দেওয়া হয়। এইভাবে ইউরোপে গড়ে ওঠে এক ভাষী এক ধর্মের স্বাধীন জাতি রাষ্ট্র। সপ্তদশ শতকের মধ্যভাগে "ত্রিশ বছরব্যাপী যুদ্ধ" শেষ হলে ওয়েস্টফালিয়া চুক্তির মাধ্যমে ইউরোপে বৈধতা পায় রাজার স্বনিযুক্তিকরণ এবং এক ভাষী এক ধর্মের স্বাধীন জাতি রাষ্ট্র।
এই জাতি রাষ্ট্রগুলোতে তিনটে বিষয় থাকা আবশ্যিক। নিজস্ব সামরিক বাহিনী, নিজস্ব প্রশাসন ও কাউকে ভাগ না দিয়ে কর তোলার ক্ষমতা এবং নিজস্ব মুদ্রা তৈরির ক্ষমতা। সামরিক বাহিনী দিয়েই সমাজের ভিন্ন ভাষা ও ধর্মের লোকেদের উচ্ছেদ করা হয় এবং অন্য কোন দেশ বা পোপকে খাজনার ভাগ না দেওয়াকে বৈধতা দেওয়া যায়। তাছাড়া অন্য ভাষা ও ধর্মের লোককে উচ্ছেদ করে তাদের সম্পত্তি দখলে নেওয়াও যায় যা আদি পুঁজি সঞ্চয়ের আরেকটা ভিত্তি হিসেবে কাজ করে পশ্চীম ইউরোপে। প্রাশিয়া নামের দেশ গোটা ইউরোপ থেকে ক্যাথলিক দ্বারা নির্যাতিত প্রটোস্টান্টদের আশ্রয় দিয়ে সপ্তদশ শতকে জনসংখ্যা বহু গুণ বাড়িয়ে নেয়। আবার কর তুলে তা নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করা যায়। আর স্বাধীন মুদ্রার মাধ্যমে নিজের পুঁজিকে নিজের জাতি রাষ্ট্রের মধ্যে সঞ্চয় করা যায়। এছাড়াও ইউরোপের ক্ষেত্রে সামরিক বাহিনীর জোড় ছাড়া এশিয়ার উন্নত শ্রম নিবিড় উৎপাদন ব্যবস্থাকে উচ্ছেদ করা সম্ভব হতনা। আর সামরিক বাহিনী নির্মাণে রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ অনস্বীকার্য।
ইউরোপ এশিয়া আফ্রিকা লাতিন আমেরিকা জুড়ে উপনিবেশ বানিয়ে লুট করে বিপুল সোনা রূপো দখল করে যা ইউরোপের আদি পুঁজি সঞ্চয়ে আরেকটা বুনিয়াদ। ইউরোপ বিশেষ করে ইংল্যাণ্ড যেহেতু শিল্প বিপ্লবের সূচনা করেছে, সেই হেতু তাদের বিদেশ থেকে যন্ত্রপাতি কিনতে হয়নি বরং তা তারা নিজেরাই অনেক বেশি সময় নিয়ে তৈরি করার সুযোগ পেয়েছে। এই সুযোগটা রাশিয়া, এশিয়া, আফ্রিকা পায়নি কারণ তারা শিল্পায়ণ শুরু করেছে অনেক পরে।
এছাড়াও ইউরোপের আরেকটা আদি পুঁজির বুনিয়াদ হোল ভূমি সংস্কার যা নেপোলিয়নের সময় থেকেই শুরু হয়েছে। ইংল্যাণ্ডে চলেছে উলটো প্রক্রিয়া আর তা হোল জমিদারেরাই কৃষক উচ্ছেদ করে আস্তে আস্তে দুই-তিন শতক ধরে কৃষক প্রতি উৎপাদন বাড়িয়ে একটু একটু করে কৃষির শ্রম শক্তিকে শিল্পায়ণের জন্য কাজে লাগিয়েছে। ইংল্যাণ্ড এটা করতে পেরেছে শিল্পায়ণের সূচনাকারী হিসেবে কোন প্রতিযোগিতা না থাকায়। এই প্রক্রিয়ার ফলে আদি পুঁজির সঞ্চয় হয় ধীর গতিতে যার গুরুত্ব ফরাসী বিপ্লবের পর থেকেই কমে গেছে।
মনে রাখা দরকার ইংল্যাণ্ডের জমিদার শ্রেণী উলের চাষ ও ব্যবসা করতে কৃষক উচ্ছ্বেদ করে ভেড়ার চাষ শুরু করে ষোড়শ শতক থেকেই। এভাবে বড় পুঁজিপতি শ্রেণি তৈরি হয় ইংল্যাণ্ডে যারা ব্যক্তিমালিকানার ওপর দাঁড়িয়ে ইংল্যাণ্ডে শিল্পায়ণ করে। আবার ফ্রান্সে ভূমি সংস্কার কর্মসূচীর ফলে বড় পুঁজিপতি শ্রেণী ছিলনা আর তাই রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে শিল্পায়ণ শুরু হয়। জার্মানিতে নেপোলিয়নের অধীনে থাকা পশ্চীম অংশতে ভূমি সংস্কার হয় আবার পূর্বে স্বাধীন থাকা প্রাশিয়াতে জমিদারি কায়েম থাকে এবং জমিদারই কৃষক উচ্ছ্বেদ করে। ফলে জার্মানিতে বড় পুজিপতিদের উদ্যোগ ও রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ দুইই বিদ্যমান ছিল। সোভিয়েতের ভূমি সংস্কার ও রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে সমগ্র শিল্পায়ণ আসলে ফ্রান্সের শিল্পায়ণ কর্মসূচীরই উচ্চ রূপ।
স্বাধীন রাষ্ট্রের এই গুরুত্বের জন্যেই বিংশ শতকের মার্ক্সবাদী লেনিনবাদী ছকে লেনিন উপনিবেশ বিরোধী আন্দোলনকে ঢোকাতে বাধ্য হন এবং সোভিয়েত সংবিধানে সমস্ত রাজ্যগুলোকে ইচ্ছে হলে আলাদা রাষ্ট্র হওয়ার অধিকার দেওয়া হয়। বলাই বাহুল্য এই কারণেই ইউরোপীয় উপনিবেশবাদ ও মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে এশিয়া ও আফ্রিকা জুড়ে স্বাধীন জাতিরাষ্ট্র গড়ে তোলা ছিল মার্ক্সবাদী লেনিনবাদীদের প্রথম কাজ। স্বাধীন রাষ্ট্র পাওয়ার পরেই কেবল ভুমি সংস্কার, শিক্ষা স্বাস্থ্য পরিকাঠামোতে বিনিয়োগ এবং নারী মুক্তি সম্ভব।
এবার দেখা যাক একবিংশ শতাব্দীতে আদি পুঁজির সঞ্চয় কোথায় দাঁড়িয়ে আছে। এই আলোচনা আমরা করব পর্ব ৩-এ।
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Theoretical General 16-August-2023 by east is risingআদি পুঁজির সঞ্চয় অর্থনীতিতে একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে ধরা হয়। ধ্রুপদীবাদীরা (স্মিথ, রিকারডো, মার্ক্স) এবং নয়া ধ্রুপদীবাদীরা (লিউইস) স্বীকার করে যে আদি পুঁজির সঞ্চয় ছাড়া কোন দেশে* অর্থনীতির বিকাশ হতে পারেনা। আদি পুঁজি বলতে বোঝানো হয় প্রথম পুঁজি যা বিনিয়োগ করে আধুনিক অর্থনীতির বিকাশের বা আরও সহজ করে বললে শিল্পায়ণের সূচনা হয়।
এবার প্রথম বিনিয়োগের পুঁজি আসবে কোথা থেকে? আজ একটা অনুন্নত দেশ আধুনিক যন্ত্রপাতি কিনতে চাইলে তার বিদেশী মুদ্রা লাগবে কিন্তু পর্যাপ্ত বিদেশী মুদ্রা বিশ্ব বাজার থেকে নেবে কিভাবে একটা অনুন্নত দেশ। দেশটাকে বিদেশে কিছু রপ্তানী করে বা নিজের দেশে বিদেশী বিনিয়োগ টেনে এনে বিদেশী মুদ্রা অর্জন করতে হবে।
এবার অনুন্নত দেশে অনুন্নয়নের জন্য মানুষের শ্রমের মান নীম্ন আর ক্রয় ক্ষমতা কম। তাই বিদেশীরা ভোগ্যপণ্য বিনিয়োগ করে না পাবে পর্যাপ্ত শিক্ষিত শ্রমিক আর না পাবে পর্যাপ্ত বাজার। আর পরিকাঠামো গত বিনিয়োগ থেকে লাভ আসে বিনিয়োগ করার বহু বছর পরে। যেমন শিক্ষায় বিনিয়োগ করে একটা ছাত্র বা ছাত্রীকে শিক্ষিত করতে কম করে ১৬-২০ বছর লাগবে এবং তারপরেই সে আদর্শ শ্রমিক হতে পারবে এবং অর্থনীতি তার সুফল পাবে। বিদেশী বিশেষ করে ব্যক্তিমালিকানাধীন বিনিয়োগকারীরা পরিকাঠামোতে বিনিয়োগ করতে চাইবেনা। তাই বিদেশী বিনিয়োগ থেকে বিদেশী মুদ্রা পাওয়ার আশা নেই।
বিদেশে রপ্তানী সম্ভব কি? একটা উন্নয়নশীল দেশ উন্নত মানের শিল্প দ্রব্য রপ্তানী করতে পারবেনা। কিন্তু বিশেষ ভৌগলিক কারণে কিছু বিশেষ দ্রব্য বা পরিষেবা রপ্তানী করতেই পারে। যেমন ভৌগলিক কারণে সিঙ্গাপুরের আছে আদর্শ বন্দর যার জন্য বন্দর পরিষেবা দিয়ে সে বিদেশী মুদ্রা আয় করে এবং তা বিনিয়োগ করে দেশকে উন্নত করে। তেমনই উপকূল আরব দেশগুলোতে বিশ্ব বাজারকে নিয়ন্ত্রণ করার মতো অল্প খরচে তোলা যায় এমন তেল আছে এবং সেই তেল রপ্তানী করে বিদেশী মুদ্রা আয় করে দেশগুলো উন্নত হয়েছে। কিন্তু জনসংখ্যার তুলনায় পর্যাপ্ত পরিমাণে খনিজ সম্পদ বা বন্দর পরিষেবা খুব স্বল্প কিছু দেশেরই আছে। তাই অধিকাংশ উন্নয়নশীল দেশই এই সুবিধে পায়না।
যারা জনসংখ্যার তুলনায় এই প্রাকৃতিক সুবিধে পাচ্ছেনা তাদের জন্যই আদি পুঁজির সঞ্চয় নামক বিষয়টা আসে। কৃষির উৎপাদনশীলতা এতোটা বাড়ানো চাই যে কৃষি থেকে শ্রমশক্তি সরিয়ে নিয়ে শিল্পে ব্যবহার করা যাবে, শিক্ষা স্বাস্থ্য পরিকাঠামো উন্নয়ন চাই যাতে আধুনিক যন্ত্র ব্যবহারে পারদর্শী শ্রমিক শ্রেণি গড়ে ওঠে এবং নারীকে শ্রম বাজারে ঢোকানো যাতে একদিকে জন্মহার কমবে আর অন্যদিকে আধুনিক কাজে শ্রমিক সংখ্যা বাড়বে।
কৃষি থেকে শিল্পে শ্রম শক্তি নিয়ে যেতে গেলে কৃষক প্রতি উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে। কিন্তু উন্নয়নশীল দেশটার তো আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি কেনার মতো বিদেশী মুদ্রা নেই। অতএব কোন আধুনিক যন্ত্রপাতি ছাড়া প্রাথমিক উন্নয়নের কাজ করতে হবে। এই কাজটা করার ক্ষেত্রে ভূমি সংস্কারের গুরুত্ব অপরিসীম কারণ কোন বিনিয়োগ ছাড়া শুধুমাত্র মালিকানা জমিদারের কাছ থেকে কৃষককে দিয়ে কৃষককে আরও বেশি উৎপাদন করতে উদ্বুদ্ধ করে ভূমি সংস্কার। তাই চীন বা দক্ষিণ কোরিয়া উভয়েরই সাফল্যের বড়ো কারণ হল এই ভূমি সংস্কার। নেপোলিয়ন ভূমি সংস্কারকে গুরুত্ব দিয়েছেন এবং উদারবাদী আন্দোলনগুলো উনবিংশ শতকে একে গুরুত্ব দেয়। বিংশ শতকে আবার মার্ক্সবাদী লেনিনবাদী আন্দোলনের ক্ষেত্রেও ভূমি সংস্কার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। কৃষক প্রতি উতপাদন বাড়ায় বহু কৃষককে শিল্পের শ্রমিক হিসেবে নিযুক্ত করা সম্ভব হয় এবং শিল্প গড়ে ওঠে।
শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পরিকাঠামো উন্নয়নের ক্ষত্রেও বিপুল বিনিয়োগ করতে হবে দেশটাকে কোন সরাসরি লাভ ছাড়াই। শুধু তাই না, সীমিত সম্পদ থেকে এই বিনিয়োগ করতে হবে। অর্থাৎ ভোগ্য পণ্য উৎপাদন কমিয়ে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পরিকাঠামোতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। এখানেই সমাজতান্ত্রিক দেশগুলো ১৯৩০ এর দশক থেকে ১৯৬০ এর দশক পর্যন্ত অসাধারণ সাফল্য দেখিয়েছিল। কারণ শ্রেণি সংগ্রামের নামে তারা ধনী শ্রেণিগুলোর ক্ষমতা কেড়ে নেয় আর এর ফলে ভোগ্য পণ্য কেনার ও উৎপাদন করার প্রবণতা সমাজে কমে যায়। রাষ্ট্র অর্থনীতিতে এসে লাভ না হোলেও পরিকাঠামোতে বিনিয়োগ করে যায় যা ব্যক্তিমালিকানাধীন বিনিয়োগকারী করতনা। এই সাফল্যই তৎকালীন সমাজকে মার্ক্সবাদ লেনিনবাদের প্রতি টেনে আনে।
নারীকে শ্রম বাজারে নিয়ে আনার দুটো গুণ। এক, তা শিল্প শ্রমিকের সংখ্যা বাড়িয়ে দিয়ে দ্রুত বিকাশের সহায়ক আর অন্যদিকে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমিয়ে দেয় যার ফলে কৃষিকে সমস্ত মানুষকে খাওয়ানোর চাপ কমে (যদিও কৃষিতে নিযুক্ত লোকের সংখ্যা কমবে কিন্তু জনসংখ্যার হার বেশি হলে কৃষিকে উতপাদন বাড়িয়ে যেতে হবে লাগাতার) আর শ্রমিক প্রতি পরিকাঠামো বাড়বে যা শ্রমিক প্রতি উতপাদন বাড়াবে।
এটাই কারণ বিংশ শতকের মার্ক্সবাদী লেনিনবাদী বিপ্লবের মূল বিষয় ছিল ভূমি সংস্কার, ভোগ্য পণ্য ব্যবহার কম করে শিক্ষা স্বাস্থ্য ও পরিকাঠামো উন্নয়ন এবং নারী মুক্তি। বিভিন্ন দেশ এই তিনটের সবকটা বা কিছু না কিছু গ্রহণ করে দ্রুত উন্নয়নের জন্য। দক্ষিন কোরিয়া তিনটেই গ্রহণ করে ১৯৬৯ পর্যন্ত, ভারত ভূমি সংস্কার ছাড়া বাকি দুটো গ্রহণ করে ১৯৮৫ পর্যন্ত।
এই তিনটে কাজ যেখানে যতবেশি হয়েছে সেখানেই খোলা বাজার অর্থনীতি তারপর থেকে তত বেশি সফল হয়েছে। চীন ৩ দশক ধরে (১৯৫০ থেকে ১৯৮১) শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পরিকাঠামোয় ভারতের চেয়ে অনেক বেশি বিনিয়োগ করতে পেরেছে বলেই ১৯৮২ থেকে চীন বিশ্ব বাজারে রাপ্তানী বাড়াতে পেরেছে যা ভারত ১৯৮৫ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত পারেনি। এটা বোঝার একটা সূচক অর্থনীতিতে আছে যার নাম gross or net fixed investment as percentage of GDP। এটা যার যত বেশি তার অর্থনৈতিক বিকাশে সাফল্য তত বেশি। দেখা যায় gross fixed investment as percentage of GDP চীনের ১৯৬০ এর দশকে যেখানে ২৬.৫%, সেখানে ভারতের মাত্র ১৮%। তেমনই চীনের ১৯৭০ এর দশকে যেখানে ৩৫% সেখানে ভারতের মাত্র ২৫%। পাকিস্তানের কিন্ত যথাক্রমে আরও কম ছিল ১৭% ও ১৫%।
এই কারণেই চীন বা ভিয়েতমানের সাফল্য পায় বিশ্ব বাজারে ঢুকে আর উত্তর কোরিয়া বা কিউবা টিকে থাকতে পারে বিশ্ব বাজার ছাড়া (মার্কিন স্যাঙ্কশনের জন্য)।
এবার আসি আরও আদি একটা বিষয়ে। *আমরা ধরে নিয়েছি একটা অনুন্নত দেশকে যার একটা রাষ্ট্র আছে। কিন্তু একটা দেশে হতেই পারে অনেক জাতি (ভাষা হোক বা ধর্ম) আছে এবং সবার রাষ্ট্রের ওপর লাগাম সমান নয়। তাহলে এই জাতিগুলো কি করবে এবং তার সাথে আদি পুঁজির সঞ্চয় কিভাবে সম্পর্কিত। তা বুঝতে লিখছি পর্ব ২।
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Theoretical General 16-August-2023 by east is risingআটোমেশোন করে বা নীম্ন মজুরির দেশে পুঁজি চলে গিয়ে বা নীম্ন মজুরির দেশ থেকে শ্রমিক অভিবাসী এনে পুজি শ্রমিক শ্রেণির দর কষাকষি করার ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। কিন্তু এই প্রক্রিয়াগুলো একইভাবে উৎপাদিকা শক্তির বিকাস ঘটায়।
তাই এই প্রবণতাগুলো আটকে রেখে বেশিদিন শ্রমিক শ্রেণি উচ্চ মজুরি ধরে রাখতে পারেনা।
আর তাই বিপ্লব করে সামাজিক মালিকানা স্থাপন ছাড়া শ্রমিক শ্রেণির উপায় নেই।
সামাজিক মালিকানা বলতে বোঝায় যেখানে মেশিন মানুষের প্রয়োজনীয় কিন্তু ইচ্ছে করেনা করতে এমন কাজগুলো করবে আর মানুষ নিজের পছন্দ মতো কাজ করবে।
উন্নত প্রযুক্তি এলে কাজ চলে যায় কিন্তু এগুলো মানবিকতার দিক দিয়ে ভেবে লাভ নেই। কাজ চলে যাওয়া শ্রমিক আর তার পরিবারকে সরকার সামাজিক কিছু ভিক্ষা যেমন বেকার ভাতা দিলেই চরম সঙ্কট দূর হবে। তাই শেষ পর্যন্ত মেনে নিতেই হবে শ্রমিক শ্রেণিকে।
আপাতত তৃতীয় বিশ্ব ও প্রথম বিশ্বের মধ্যে যে উৎপাদিকা শক্তির ও মজুরির গ্যাপ আছে তা ঘোচানোই কমিউনিস্তদের মূল কাজ। এই কাজটাই চীন শেষ ৪০ বছর দারুণভাবে করেছে। এই গ্যাপ যত কমবে পুজির তৃতীয় বিশ্বে বিনিয়োগ পাঠিয়ে বা তৃতীয় বিশ্ব থেকে শ্রমিক অভিবাসী নিয়ে এনে শ্রমিক শ্রেণির দরকষাকষি করার ক্ষমতা কমিয়ে দিতে ব্যর্থ হবে পুঁজি।
তাই কমিউনিস্টদের আপাতত প্রধান কাজ তৃতীয় বিশ্ব ও প্রথম বিশ্বের গ্যাপ কমানো। চীনা কমিউনিস্ট পার্টি এই কাজটাই করছে। প্রযুক্তি আটকে বড়ো জোড় শ্রমিক শ্রেণি কিছু মানবিক ভিক্ষা পাবে যেমন বেকার ভাতা। এগুলোতে কমিউনিস্টদের জড়িয়ে না পড়াই ভাল।
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Theoretical General 15-July-2023 by east is risingএকটা বিজয়ী জাতির পুরুষ (M), একটা বিজিত জাতির পুরুষ (m), একটা বিজয়ী জাতির নারী (F), একটা বিজিত জাতির নারী (f)।
এই চারজনের মধ্যে সম্পর্কটা কেমন হওয়ার কথা।
তা ছকে বেঁধে বলা যায়।
M m-কে হয় মেরে ফেলবে নয় তো দাস রাখবে আর বংশ পরম্পরায় দাসত্বের সম্পর্ক বজায় রাখতে চাইলে m-কে বংশবৃদ্ধিও করতে দেবে কিন্তু m-এর বেঁচে থাকা ও বংশবৃদ্ধি করতে পারার সর্ত M দেবে।
M f-কে ব্যবহার করবে দাসী হিসেবে। দাসী হিসেবে f-কে F এবং M উভয়েরই সেবা করতে হতে পারে। f-দের মধ্যে সুন্দরী অংশটা স্বাভাবিকভাবেই M-এর যৌন দাসী হবে আর f-দের মধ্যে আসুন্দরী অংশটা মূলত অন্যান্য দাসীর কাজ করবে। নারীর হাইপারগ্যামী চরিত্র অনুযায়ী f চেষ্টা করবে M-কে নিজের দিকে আকর্ষিত করতে, তার থেকে উপহার পেতে চাইবে এমনকি সুযোগ পেলে সন্তানও চাইবে কারণ বিজয়ী পুরুষ M-এর জিন শক্তিশালী বলে বিবেচিত এবং সে সম্পদশালীও। M ও f-এর এই দরকষাকষির খেলায় যেটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তা হল M f -কে কতোটা আকর্ষণ বোধ করবে। বিজয়ী আর বিজিত জাতির মধ্যে যতো মিল থাকবে ততো M-এর f-কে দেখে আকর্ষিত হওয়ার সম্ভাবনা।
M ও F-এর মধ্যেকার সম্পর্ক অনেকটাই f-এর ওপর নির্ভরশীল। f-এর মধ্যে সুন্দরী অংশটা F-এর M-এর সঙ্গে দর কষাকষি করার ক্ষমতা অনেকটাই কমিয়ে দেবে। F M-কে যৌনতা দিতে রাজি না হলে M f-এর কাছে চলে যাবে যৌনতা নিতে।
অধিকাংশ ক্ষেত্রে M F ও f উভয়ের সাথেই যৌনতা করবে, F ও f-কে নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা করাবে কিন্তু শুধু F-এর সন্তানকেই সম্পত্তির মালিকানা দেবে আর f-এর সন্তানকে সম্পত্তির মালিকানা দেবেনা। M ও f-এর সন্তান না হওয়াই শ্রেয় M-এর জন্যে।
m ও f-এর সম্পর্ক M ও F-এর সম্পর্কের বিপরীত। f-এর ক্ষমতা m-এর চেয়ে অনেক বেশি। কারণ f যৌনতার জন্য M ও m উভয়ের কাছেই যেতে পারে, m-এর বিরুদ্ধে M-এর কাছে নালিস করতে পারে। m বেঁচে থাকার তাগিদে f-এর ক্ষমতা স্বীকার করে নেবে। বরং f M-এর থেকে উপহার তা নিয়ে m-এর গর্ব হবে এবং তা থেকে লাভ করার কথা ভাববে।
m ও F-এর সম্পর্ক নারী লিঙ্গের হাইপারগ্যামী দিয়ে নির্ধারিত। বিজিত পুরুষ বিজিত কারণ তার জীন দুর্বল। তাই F রাজি হবেনা m-এর সাথে সম্পর্ক করতে। সন্তান তো নেবেই না। m-কে কিছু ক্ষেত্রে যৌন দাস হিসেবে ব্যবহার করতে পারে F।
তাহলে দেখা যাচ্ছে বিজয়ী জাতির মধ্যে পুরুষ নারীর ওপর কর্তৃত্ব করে (M>F)।
কিন্তু বিজিত জাতির মধ্যে নারী পুরুষের ওপর কর্তৃত্ব করে (f>m)।
এবার মিলিয়ে দেখুন দুর্বল বাঙালি জাতিতে নারীর ক্ষমতা বেশি পুরুষের তুলনায়।
হিন্দিভাষি সমাজে আবার পুরুষের জোর নারীর চেয়ে বেশি।
ইংরেজ পুরুষের সঙ্গে বাঙালি নারীর দরকষাকষির ক্ষমতা প্রায় শূন্য ছিল কারণ ইংরেজরা বাঙালি নারীকে সুন্দরী বলে গণ্য করতোনা।
তুর্কি পাঠানদেরও বাঙালি নারীকে দেখে আকর্ষিত হওয়ার কারণ নেই।
হিন্দিভাষি ও বাঙালির মধ্যে বর্ণ ও দর্শনে ভিন্নতা কম আর তাই হিন্দিভাষি পুরুষ খুব সহজেই বাঙালি নারীকে দেখে আকর্ষিত হয় আর এটাই বাঙালি নারীর হিন্দিভাষি পুরুষের সাথে দর কষাকষির ক্ষমতা বাড়িয়ে দিয়েছে। এই জন্য বাঙালি নারীর মধ্যে প্রবণতা থাকবে হিন্দিভাষিদের বাংলার ওপর নিয়ন্ত্রণকে কায়েম রাখার। আর ঠিক এই কারণেই বাংলার হিন্দি বিরোধী সংগ্রামে বাঙালি পুরুষের নারী পূজারী সংস্কৃতির বিরুদ্ধে লড়াই এতো গুরুত্বপূর্ণ।
Author: Saikat Bhattacharya
Theoretical General feminism 24-May-2023 by east is risingআন্তর্জাতিক স্তরে চীন মার্কিন হেজিমনিকে শেষ করছে।
ভারতীয় জাতীয় স্তরে বাঙালি জাতিয়াতাবাদের উত্থান হচ্ছে।
বাঙালি সমাজিক স্তরে (অন্যান্য জাতির সামাজিক স্তরে যেখানে নারী রাজনৈতিক অর্থনৈতিক ও যৌন স্বাধীনতা পেয়েছে) পুরুষ ক্রমেই বাংলার নারী পূজারী সংস্কৃতির বিরুদ্ধে কথা বলছে।
এই তিনটে স্তরেই লাগাতার সংঘর্ষ চলছে।
এই তিনটে সংঘর্ষ একে অপরের সাথে সম্পর্কযুক্ত।
পলাশীর যুদ্ধে ইংরেজদের জয় এবং কোলকাতার দুর্গা পুজোর রমরমার যেমন সম্পর্ক আছে।
আসলে বিভিন্ন জাতির ভেতরের সংঘর্ষ এবং পুরুষ-নারীর ভেতরের সংঘর্ষের মধ্যে একটা সহজ সম্পর্ক আছে।
একটা বিজয়ী জাতির পুরুষ (M), একটা বিজিত জাতির পুরুষ (m), একটা বিজয়ী জাতির নারী (F), একটা বিজিত জাতির নারী (f)।
এই চারজনের মধ্যে সম্পর্কটা কেমন হওয়ার কথা।
তা ছকে বেঁধে বলা যায়।
M m-কে হয় মেরে ফেলবে নয় তো দাস রাখবে আর বংশ পরম্পরায় দাসত্বের সম্পর্ক বজায় রাখতে চাইলে m-কে বংশবৃদ্ধিও করতে দেবে কিন্তু m-এর বেঁচে থাকা ও বংশবৃদ্ধি করতে পারার সর্ত M দেবে।
M f-কে ব্যবহার করবে দাসী হিসেবে। দাসী হিসেবে f-কে F এবং M উভয়েরই সেবা করতে হতে পারে। f-দের মধ্যে সুন্দরী অংশটা স্বাভাবিকভাবেই M-এর যৌন দাসী হবে আর f-দের মধ্যে আসুন্দরী অংশটা মূলত অন্যান্য দাসীর কাজ করবে। নারীর হাইপারগ্যামী চরিত্র অনুযায়ী f চেষ্টা করবে M-কে নিজের দিকে আকর্ষিত করতে, তার থেকে উপহার পেতে চাইবে এমনকি সুযোগ পেলে সন্তানও চাইবে কারণ বিজয়ী পুরুষ M-এর জিন শক্তিশালী বলে বিবেচিত এবং সে সম্পদশালীও। M ও f-এর এই দরকষাকষির খেলায় যেটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তা হল M f -কে কতোটা আকর্ষণ বোধ করবে। বিজয়ী আর বিজিত জাতির মধ্যে যতো মিল থাকবে ততো M-এর f-কে দেখে আকর্ষিত হওয়ার সম্ভাবনা।
M ও F-এর মধ্যেকার সম্পর্ক অনেকটাই f-এর ওপর নির্ভরশীল। f-এর মধ্যে সুন্দরী অংশটা F-এর M-এর সঙ্গে দর কষাকষি করার ক্ষমতা অনেকটাই কমিয়ে দেবে। F M-কে যৌনতা দিতে রাজি না হলে M f-এর কাছে চলে যাবে যৌনতা নিতে।
অধিকাংশ ক্ষেত্রে M F ও f উভয়ের সাথেই যৌনতা করবে, F ও f-কে নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা করাবে কিন্তু শুধু F-এর সন্তানকেই সম্পত্তির মালিকানা দেবে আর f-এর সন্তানকে সম্পত্তির মালিকানা দেবেনা। M ও f-এর সন্তান না হওয়াই শ্রেয় M-এর জন্যে।
m ও f-এর সম্পর্ক M ও F-এর সম্পর্কের বিপরীত। f-এর ক্ষমতা m-এর চেয়ে অনেক বেশি। কারণ f যৌনতার জন্য M ও m উভয়ের কাছেই যেতে পারে,
m-এর বিরুদ্ধে M-এর কাছে নালিস করতে পারে। m বেঁচে থাকার তাগিদে f-এর ক্ষমতা স্বীকার করে নেবে। বরং f M-এর থেকে উপহার তা নিয়ে m-এর গর্ব হবে এবং তা থেকে লাভ করার কথা ভাববে।
m ও F-এর সম্পর্ক নারী লিঙ্গের হাইপারগ্যামী দিয়ে নির্ধারিত। বিজিত পুরুষ বিজিত কারণ তার জীন দুর্বল। তাই F রাজি হবেনা m-এর সাথে সম্পর্ক করতে। সন্তান তো নেবেই না। m-কে কিছু ক্ষেত্রে যৌন দাস হিসেবে ব্যবহার করতে পারে F।
তাহলে দেখা যাচ্ছে বিজয়ী জাতির মধ্যে পুরুষ নারীর ওপর কর্তৃত্ব করে (M>F)।
কিন্তু বিজিত জাতির মধ্যে নারী পুরুষের ওপর কর্তৃত্ব করে (f>m)।
এবার মিলিয়ে দেখুন দুর্বল বাঙালি জাতিতে নারীর ক্ষমতা বেশি পুরুষের তুলনায়।
হিন্দিভাষি সমাজে আবার পুরুষের জোর নারীর চেয়ে বেশি।
হিন্দিভাষিদের নিয়ন্ত্রণে বাঙালি আছে কারণ ব্রিটিশ সাম্রাজ্য হিন্দিভাষিদের হাতে তাদের গড়া সাম্রাজ্য দিয়ে দেয় এবং তারা পরে সোভিয়েতের সাহায্যও পায় আবার চীনের বিরুদ্ধে মার্কিন সাহায্যও পায়।
চীন যত নিজের শক্তি কায়েম করবে, হিন্দিভাষিরা ও মার্কিন সাম্রাজ্য ততো চাপের মুখে পড়বে। এই চাপ শেষ পর্যন্ত হিন্দিভাষিদের হাত থেকে বাঙালিকে মুক্তিও দিতে পারে।
বাঙালি যদি মুক্ত হয়ে যায় আর হিন্দিভাষিদের সাম্রাজ্য ভেঙ্গে যায় তখন পুরুষ ও নারীর চরিত্রও উলটে যাবে। তখন ক্ষমতাবান বাঙালি জাতিতে পুরুষের ক্ষমতা নারীর থেকে বেশি হবে আর দুর্বল হিন্দিভাষিদের মধ্যে নারীর ক্ষমতা পুরুষের চেয়ে বেশি হবে।
জাতির মতো এই তত্ত্ব শ্রেণি বিশেষেও সত্যি।
ক্ষমতাবান শ্রেণিতে পুরুষের ক্ষমতা নারীর থেকে বেশি আর দুর্বল মধ্যবিত্ত শ্রেণিতে নারীর ক্ষমতা পুরুষের থেকে বেশি।
মনে রাখা দরকার যে তিনটে স্তরের কথা বলেছি সেই তিনটে স্তর লাগাতার নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে লিপ্ত।
কিন্তু ক্ষমতা ওপর থেকে নীচে নামে। তাই চীন যতো মার্কিন ক্ষমতাকে খর্ব করতে থাকবে, হিন্দিভাষীরা ততো দুর্বল হবে, বাঙালি জাতি হিসেবে ততো শক্তি দেখাবার জায়গা পাবে, বাঙালি পুরুষের ক্ষমতা ততো বৃদ্ধি পাবে। আবার বাংলার নারী পূজারী সংস্কৃতিতে বাঙালি পুরুষকে নিজের ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য লড়তে হবে এবং বাঙালি সমাজে পুরুষের কণ্ঠ যতো শক্তিশালী হবে, বাঙালি সমাজ ততো বেশি শক্তি নিয়ে হিন্দিভাষিদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে পারবে এবং চীনের উত্থানকে বাঙালি জাতির পক্ষে কাজে লাগাতে পারবে।
ইংরেজ পুরুষের সঙ্গে বাঙালি নারীর দরকষাকষির ক্ষমতা প্রায় শূন্য ছিল কারণ ইংরেজরা বাঙালি নারীকে সুন্দরী বলে গণ্য করতোনা।
তুর্কি পাঠানদেরও বাঙালি নারীকে দেখে আকর্ষিত হওয়ার কারণ নেই।
হিন্দিভাষি ও বাঙালির মধ্যে বর্ণ ও দর্শনে ভিন্নতা কম আর তাই হিন্দিভাষি পুরুষ খুব সহজেই বাঙালি নারীকে দেখে আকর্ষিত হয় আর এটাই বাঙালি নারীর হিন্দিভাষি পুরুষের সাথে দর কষাকষির ক্ষমতা বাড়িয়ে দিয়েছে। এই জন্য বাঙালি নারীর মধ্যে প্রবণতা থাকবে হিন্দিভাষিদের বাংলার ওপর নিয়ন্ত্রণকে কায়েম রাখার। আর ঠিক এই কারণেই বাংলার হিন্দি বিরোধী সংগ্রামে বাঙালি পুরুষের নারী পূজারী সংস্কৃতির বিরুদ্ধে লড়াই এতো গুরুত্বপূর্ণ।
Author: Saikat Bhattacharya
Theoretical General 07-May-2023 by east is risingRichard Wolff in his democracy@work youtube video recently defined the present era in a new way. His definition can be summarized as world is moving towards Multi-polar world by defeating US led Uni-polar world, neo-liberal economics is giving way to economic nationalism and the struggle between state led capitalism vs private capitalism is now gone and instead a combination of state and private owned capitalism is emerging.
Richard Wolff is a serious New York based American Marxist economist. He upheld that socialism means end of wage labor i.e. employer-employee relations and production will be organized by workers' cooperatives where workers will control management democratically. Each worker will vote and their votes will elect management people like board of directors, CEO, CFO, etc. Since USSR had wage labor and only private employer was replaced by state employer, USSR was pure state capitalism. USA has wage labor too and its employers are mainly private. So USA is private capitalism. People's Republic of China is simply a third model of hybrid state-private capitalism as it has wage labor and private and state both have a significant role as employers.
Professor Wolff further pointed out that market led neo-liberal economics is no longer working and state is now forced to take actions against free flow of capital, goods, services and technology even in USA and EU. So a new economic nationalism is taking shape not only in the West but also throughout the world.
Professor Wolff's third point is that capital accumulation process is now gaining momentum outside the Western world and so many geopolitical powers have emerged who are no longer ready to toe US line.
In this article, we will refute his point that China is a state-private hybrid capitalism. We will show that his way of understanding is static and not dynamic and devoid of historical evidence. We will also prove that People's Republic of China is gradually evolving from capitalism to communism and hence must be called socialism.
Firstly, he said that any society having employer-employee relation is capitalism and socialism needs workers' cooperative and workers elected management. But history tells us that mankind has seen many such workers' cooperative experiments. In 20th century we had Yugoslavia who claimed itself to be real socialism of cooperatives as opposed to USSR type state ownership based socialism. In 21st century too we had such cooperative experiments in Venezuela. These countries had failed to generate enough economic momentum. A primary reason for this is workers or any humans work for money. Their main point of concern are their own families, friends and neighbors. They compete with friends and neighbors and have enjoyment from buying consumer goods at least same or better than what their friends and neighbors are buying. Their primary concern is not working time or the production they are in. Rather working time for them is a way to achieve the best in non-working time i.e. leisure time. So workers or any humans find it unattractive to work first and then get a share of revenue or profit after selling the product. It is risky as even after working the product may remain non-saleable in the market. So workers in no way are willing to take the risk of working first and share revenue later. Wage labor on the other hand ensures work for money without any condition on salability of the product. Since the primary concern of workers is raising families and compete with friends and neighbors, they are unlikely to take the risk of getting paid only if the products are salable. So workers will always opt for wage labor i.e. employer-employee relation and will avoid forming cooperative as the former relation is riskless for the workers or employees.
Second, socialism is mainly a transitory period between capitalism and communism. This transition is bound to happen gradually through many centuries. Suppose an individual is to move from hills to sea-beach. Suppose the journey to take 24 hours. In the first 6 hours, he or she will see hilly areas, next 12 hours will see plain land only, next will face lot of rivers and finally after 24 hours will reach sea beach. So as the journey begins many characteristics of hills will accompany the individual. These characteristics do not prove the individual is in the hills and not moving towards sea beach. Similarly, as a society starts moving from capitalism to communism it will show many capitalist features. Capitalism cannot be defined simply as wage labor or employer-employee relation. Capitalism is more than that. Capitalism implies investment for profit i.e. M-C-M'. A society cannot be said capitalist if capital is invested non-profitably. So when we see USSR and People's Republic of China we see capitalist feature like employer-employee relation on one hand and communist feature like non profitable investments by State owned employers on the other. Given the significant amount of non profitable long gestation investments in erstwhile USSR and present People's Republic of China we can easily claim that profit is no longer the primary motive of production and such societies can definitely be called socialism.
Third, Huawei is world's largest cooperative operating from Shenzhen city of China. Will Professor Wolf accept Huawei as a true socialist model?
Fourth, Professor Wolf has defined communism as a work-place where working life in full control of the workers. He has assumed that workers elected management means working life of workers will be under control of the workers. But he failed to appreciate the gravity of the fact that workers will have factions inside the work place and those who lost the election can have miserable working life. Victorious factions can make working life of defeated workers' factions disastrous. So elected management is in no way a guaranty for workers' control on working life.
Fifth, communism does not simply mean control of working life by workers. It means an enjoyable working life. Communism means a society where all involuntary but necessary activities are done by machines and humans are left to do voluntary activities only. Thus there is no difference between work and leisure, there is no question of work for money/any equivalent exchange and there is no need of a class of humans to make other humans work for the former class using fear and lust. Hence communism is a commodity-less (without money motivation) and class-less society. Wolf described elected management cannot be said communism or socialism. It has lot of room for commodity and class. Such a society needs a high level of productive forces which allow people to solely concentrate in voluntary activities. So forming cooperatives at low level of productive forces will not help in moving towards communism. Rather giving more space to demand making non profitable investments as more automation and growth in human resources will entail over production in economy. Thus the first priority of socialism must be growing productive forces which means more auitomation, more human resources, more productivity. Just making cooperatives with elected management will lead us to nowhere.
To move towards communism mankind needs to remove difference in productive forces and hence wages between developed and developing countries and between various sectors of the economy. Only if wage difference among countries is reduced, capital's bargaining power with working class by moving across countries will be reduced. For this first priority must developing productive forces in a developing country to the level of developed countries. Low birth crisis of future must also be tackled. Forming cooperatives can be one way but it is not the only way. In fact, if cooperatives result in slow growth of productive forces, it is better to abandon cooperative model and only if it works like Huawei then it is good to follow.
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Theoretical General World Economic Forum 01-May-2023 by east is risingকারণ ভারতের সবচেয়ে বড় আইডেন্টিটি হলো ধর্মের দিকে থেকে হিন্দু আর ভাষার দিক থেকে হিন্দি আর তাই হিন্দিভাষি হিন্দুরা হলো ভারতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভোটব্যঙ্ক। মজার বিষয় ভারতে ধর্মের দিক দিয়ে হিন্দুর পরেই হলো ইসলাম অর্থাৎ ইসলাম সংখ্যালঘু ধর্মের মধ্যে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আবার ভারতে ভাষার দিক থেকে হিন্দির পরেই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো বাংলা অর্থাৎ সংখ্যালঘু ভাষাগুলোর মধ্যে বাংলা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তাই সংখ্যালঘু ধর্মগুলোকে বাগে আনতে বা খেয়ে ফেলেতে সংখ্যালঘু ধর্মগুলোর মধ্যে যা সংখ্যার জোড় সবচেয়ে বেশি তাকে শেষ করতে হবে।
আবার সংখ্যালঘু ভাষাগুলোকে বাগে আনতে বা খেয়ে ফেলেতে সংখ্যালঘু ভাষাগুলোর মধ্যে যা সংখ্যার জোড় সবচেয়ে বেশি তাকে শেষ করতে হবে। তাই ভারতের সংখ্যাগুরু হিন্দিভাষি হিন্দুরা বিশ্বাস করে মুসলমানকে শেষ করলেই বাকি ধর্মগুলোকে বাগে আনা যাবে বা খেয়ে ফেলা যাবে আর বাঙালিকে শেষ করতে পারলেই বাকি ভাষাগুলোকে বাগে আনা যাবে বা খেয়ে ফেলা যাবে।
২০০১ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত পশ্চীম ইসলামকে যেভাবে বদনাম করার চেষ্টা চালিয়ে গেছে তা হিন্দিভাষি হিন্দুদের মুসলমানদের বিরুদ্ধে একটা অতিরিক্ত সুবিধে এনে দিয়েছিল। ২০২৩-এ পশ্চীম অনেক বেশি বিভাজিত ও চিন্তিত চীনকে নিয়ে। হিন্দিভাষি হিন্দুদের মুসলমানদের বিরুদ্ধে করা নানা কাজকে পশ্চীম কোন সমর্থন আর দেবেনা। কিন্তু চীনের ভয়ে ভারতের বিরুদ্ধে বেশি কিছু করার ক্ষমতাও আর পশ্চিমের নেই। তাই মুসলমান বিরোধী কাজে পশ্চীমের অবস্থান হল "ভারতের পাঁঠা ভারত লেজায় কাটুক আর মুড়োয়, আমার কি"।
বাঙালিকে মার দেওয়া চলছে আসামে প্রায় ৭০ বছর ধরে আর এখন বাঙালিকে "বাংলাদেশী" বলে নাগরিকত্ব কেঁড়ে নেওয়া বা গণ পিটুনি দেওয়া একটা স্বাভাবিক ব্যপার করে তোলা হবে। লজ্জায় বা ভয়ে বাঙালি বাধ্য হবে "বাঙালি" পরিচয় না দিতে। মুসলমানদের মধ্যে তবু চেতনা আছে যে লড়াই চালাতে হবে। আন্তর্জাতিক ইসলামের গুরুত্বও অপরিসীম। কিন্তু বাঙালির মধ্যে না আছে চেতনা না আছে আন্তর্জাতিক জোড়। ইদানীং কিছু বাঙালিবাদী সংগঠন গড়ে উঠেছে যারা বাঙালির চেতনা বাড়াতে চাইছে আন্দোলন করে। আমার ধারণা তারা ব্যর্থ হবে। কারণ লড়াই-এর চেতনা হাজার হাজার বছর ধরে গড়ে ওঠে। বাঙালির সমস্ত পুরুষ দেবতাই অন্য রাজ্য থেকে আগত। গুজারাতি কৃষ্ণ না ইউপি-এর রাম বাঙালি হিন্দু মননে বাঙালিকে নিজেদের হীন ভাবতেই শেখায় গুজারাতি বা হিন্দিভাষিদের তুলনায়। তাই বাঙালি কোন লড়াই দিতে পারবেনা হিন্দিভাষি হিন্দুদের। দীর্ঘ দিন ধরে জন্মহার কম থাকায় বাঙালি হিন্দুদের মধ্যে বৃদ্ধ সংখ্যা বেশি। তাই বাঙালি হিন্দুদের অধিকাংশই হিন্দিভাষি হিন্দুদের চাপের সামনে দাঁড়াতে পারবেনা। সুযোগ নিতে, লজ্জায় ও ভয়ে এরা বাধ্য হবে মুসলমানদের বিরুদ্ধে লড়াইতে হিন্দিভাষি হিন্দুদের সহযোগী হোতে। এভাবেই পশ্চীম বঙ্গের আগামীদিনে ভয়ঙ্কর বিপর্যয়ের মুখে পড়ার সম্ভাবনা আছে।
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Theoretical General 17-April-2023 by east is risingWhat is the biggest fraud agency in the world? Can anyone answer? The answer is the Government of India. Yes, the state of India is the biggest fraud agency in the planet. No other fraud agency is as big as this and it is probably the only legal fraud institution in existence. The Indian state was created for the purpose of serving baniyas and petty owners of the erstwhile British India. These classes pretend to be businessman but their only business is cheating gullible people. They relies on preventing other people to live like humans to achieve their objective. Cheating is the main mantra of pajeet way of life. Honesty is seen as criminal offense. Corruption is celebrated as deity. Via forming family and community monopoly, these classes bleed the rest of the populace dry and make them live at their mercy. Indian financial institutions serves as main platform of their fraudulently. Indian state owned banks, insurance companies and other public financial institutions enforce the populace to be included in their financial chain so they people are compelled to deposit their hard earned savings there. Indian insurance companies have whole army of agents who befools gullible public to buy their policies and deposit their hard earned savings for life making them in a bondage. People generally deposits their savings in public sector banks and these PSBs also defrauds people via house loans, car loans etc to make people indebted for life. Now where these money goes? These money goes to these baniyas who takes loans and never pays back. That’s why Indians financial institutions are stuffed with NPAs. So it’s basically a cheating scheme of epic proportions.
Indian government is the only employer who extorts money for giving employment. Yes, indian government asks exam fees for conducting recruitment exam from general category male candidates while it is free for everyone else. Discrimination and fraudulency at its peak.
Indian government asks bribes for providing every basic services to its citizens and in return they give nothing but humiliation and harassment. Indian government will loot every penny from you and expects you to grovel in front of them.
Indian tax policy is extortionist. Only honest salaried people pays income tax while rest live via freebies. They give zero benefit to taxpayers while throws money freely to non-taxpayers. Agriculture is free from tax that’s why wealthy land sharks, kulaks live in freebies. Businesses also do not show their proper income and avoid taxes via that’s. To compensate this Indian government apply exorbitant indirect taxes to goods which makes life of a consumer hell and languish in scarcity.
India also applies discriminatory tax rates to foreign goods while dumping their shoddy products to every countries making trade unequal.
India opposes the concept of exchange and want to take all, give nothing kind of attitude.
Every relation with India Is unequal and harmful.
So the choice is clear, either put a stop to this giant cheating mafia or continue to suffer.
The motto of India Is ‘ By the frauds, for the cheats, of the scammers. Death to honesty, victory to dishonesty.’
Author: Purandhar Khilji
Theoretical General 07-March-2023 by east is risingVery recently the city of Leicester have seen Hindu-Muslim tensions. It was on the news media all day. The whole world was stunned. Hindu-Muslim riot happening in India but in fucking Leicester. But it is not surprising. Those who are familiar with the Uncivilization are very much aware of it. Indians leave India but India never leaves them. They carry the whole uncivilizational filth with them wherever they go. The event happened in UK. Let's observe UK first. From London to Birmingham to Bradford, it’s not the first world Britain anymore but the third world dump of South Asia and other shitholes like that has replaced any traces of civilization there. From Britain to Canada, everywhere the same picture. You have caste politics, votebank politics, tribalism, feralityinside most developed nations in the planet. In that same Leicester, the municipal authority had to put signboard in Gujarati( not in English, just understand the depth of situation) asking not to spit in public places. Spitting, sitting, peeing, littering everywhere is a national sports in India and part and parcel of the glorious unculturaluncivilization. Indians may leave India but India never leaves them. With mass Indian migration its natural every place will turn into another ghaziabad, gorakhpur etc. Tribal in nature, indians remain in their ghetto wherever they goes. Neither they assimilate nor they have an iota of gratitude towards their host country. Rather they carry the entire dustbin of that wretched land to the new country and turn that into same shithole. They also badmouth, insult the very hosts that gave them everything. Recently, these ingrate pajeets caught spreading venom against Arabs while earning bread and butter in Gulf Arab nations. Unlike others, Gulf Arabs showed no leniency and quickly took action against them. Indians although migrating en masses to Europe, North America, East Asia will continue to talk about how horrible they are while how great their uncivilization is. The very question is why they left their wretched land in first place?
Pajeets demand green card in every land where stays for 5 seconds. But they shows exact opposite behaviour in their home. Their default psychology is ‘My home is my home but others home is my home too’. They are xenophobic to people of other states, forget other countries. Every state has incidents of ethnic cleansing, religious riot, caste fights, honor killings etc. How these hypocrites claim victimhood then? Because they are crooked, dishonest liars who will do everything to get their way. They are by default amoral, feral people. No different from animals and has zero human traits. They don’t even spare tourists, they scam, harass and will do everything to harm foreign tourists.
Contrary to popular belief, there is no war of religions in India because religion haven’t evolved in India. It’s just many feral tribes fighting among themselves like the animal world. Religious identity has just become a tribal identity to them.
There are these creatures present in every sq.km. of the planet and is turning the whole world into uncivilization. Unless dealt harshly, a dangerous future for humanity is ahead.
Author: Purandhar Khilji
Theoretical General 07-March-2023 by east is risingসমাজে কোন আইডেন্টিটা শক্তিশালী হবে তা অনেক কিছুর ওপর নির্ভর করে। এমনিতে ভাষা ও আধুনিকতার একটা সঙ্গতিপূর্ণ সম্পর্ক আছে। সাক্ষরতা বাড়লে মুখের ভাষার গুরুত্ব বাড়বে আবার আধুনিকতাও এগোবে। তাই আধুনিকতার সাথে মুখের ভাষা ভিত্তিক আইডেন্টিটির একটা ধনাত্বক সম্পর্ক আছে। ইউরোপে গুটেনবার্গের প্রিন্টিং প্রেস তাই মুখের ভাষার আইডেন্টিটি শক্তিশালী করে। ওটোমান সাম্রাজ্য পতনের মুখে আরবেও তাই হয়। অস্ট্রো হাঙ্গেরী সাম্রাজ্যের পতনের সময়ও ভাষাভিত্তিক জাতিয়তার ভিত্তি দেখা যায়।
কিন্তু ধর্মীয় আইডেন্টিটি আরও প্রাচীন এবং তা কখনোই মুছে যায়না আধুনিকতার ছোঁয়ায় বা সাক্ষরতা বাড়লে বা ভাষা ভিত্তিক আইডেন্টিটি শক্তিশালী হলে। কোন একটা বিশেষ ভাষা ভিত্তিক জাতি যদি দুই ধর্ম মতে আড়াআড়ি ভাবে বিভক্ত থাকে যেমন ৭০/৩০ বা ৬০/৪০ বা ৫০/৫০ তাহলে ধর্মীয় আইডেন্টিটি শক্তিশালী থেকে যাবেই।
দুটো কারণেঃ
১) ধর্মীয় আইডেন্টিটিকে কেন্দ্র করে দল ভারি করে দর কষাকষির স্বাভাবিক প্রবণতা দেখাবে ওই বিশেষ ভাষার মানুষ আর তাই প্রকাশ্যে বা লুকিয়ে ধর্মীয় আইডেন্টিটিকে কেন্দ্র করে সমাজ বিভাজিত থেকেই যাবে।
২) আধুনিকতার প্রথম সর্ত আদি পুঁজির সঞ্চয়ঃ আদি পুঁজি সঞ্চয় করতে গিয়ে একটা ভাষার জাতিতে সংখ্যাগুরু ধর্মের মানুষ আগে সংখ্যালঘু ধর্মের মানুষকে আক্রমণ করবে। এর কারণ জাতির বাইরের কাউকে মেরে আদি পুঁজির সঞ্চয় করার থেকে জাতির ভেতরের দুর্বল অংশকে মারা অনেক সহজ। বিশেষ করে এই ভাষার জাতিটা যদি সামরিক ভাবে দুর্বল হয় তাহলে বাইরের জাতির বা জাতিগুলোর তুলনায় তাহলে এই প্রবণতা আরও প্রকট হবে।
বাঙালি মুসলমান বর্তমান বাংলাদেশে খুব নিপুণভাবে আগে জাতির মধ্যেকার সংখ্যালঘুদের থেকে আদি পুঁজি সঞ্চয় করেছে এবং পরে বাইরের দুই জাতির (হিন্দি বনাম উর্দু)) দ্বন্দ্বকে কাজে লাগিয়ে দ্বিতীয়বার আদি পুজির সঞ্চয় চালিয়েছে উর্দুদের থেকে।
পশ্চীম বঙ্গের বাঙালি হিন্দুরা হিন্দিদের লেজুড় হয়ে কোলকাতা সংলগ্ন অঞ্চলের মুসলমানদের থেকে আদি পুজির সঞ্চয়ের চেষ্টা চালায় কিন্তু স্বাধীন ভারতে ক্রমেই বাঙালি হিন্দু দেখে যে ব্রিটিশ আমলে তৈরি হওয়া সামান্য পুজিটুকুও রাজস্থানী গুজারাতিরা তাদের থেকে কেড়ে নিচ্ছে। বাংলাদেশের বাঙালি মুসলমান যেমন উর্দুদের বিরুদ্ধে হিন্দিদের ভারত রাষ্ট্রকে ব্যবহার করে পশ্চীম বঙ্গের বাঙালি হিন্দুরা সেরকম কোন উপায় বের করতে পারেনি হিন্দিদের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয় কোলকাতায় মুসলমান নিধনের পরে ১৯৫০-এর দশকে যদিও পশ্চীম বঙ্গে ২৫% মুসলমান কমে ১৫% হয়ে যায় কিন্তু ২০২৩-এ এসে দেখা যাছে পশ্চীম বঙ্গে মুসলমান সংখ্যা ৩৫% হয়ে গেছে। বাঙ্গালির মধ্যেও পশ্চীম বাংলায় প্রায় ৩৫% মুসলমান। তাই পশ্চীম বঙ্গে বাঙালি জাতির মধ্যে ধর্মকে কেন্দ্র করে বেশ আড়াআড়ি বিভাজন আছে। এই অবস্থায় বাঙালি হিসেবে পশ্চীম বঙ্গে লড়াইটা আরও কঠিন হয়ে গেছে।
মনে রাখা দরকার জারমানি ও অস্ট্রিয়া একই ভাষায় কথা বললেও এক জাতি রাষ্ট্রের আওতায় আসতে পারেনি কারণ জারমানি মূলত Protestant আর অস্ত্রিয়া মূলত Catholic। নেডারল্যান্ডস ও বেলজিয়ামের বিষয়টাও প্রায় তাই। উত্তর আয়ারল্যাণ্ড ও দক্ষিণ আয়ারল্যান্ডও তাই। ক্রোট ও সার্ব জাতি একভাষি হোলেও আলাদা হয়ে গেল কারণ ক্রোটরা Catholic আর সার্বরা Orthodox।
মনে রাখা দরকার প্রাক আধুনিক যুগে খুব কম মানুষকেই পড়াশুনো করতে হত এবং ৫% লোক অধিকাংশ মানুষের মুখের ভাষার বাইরে কোন এক বিশেষ ভাষাকে সাহিত্যের ভাষা হিসেবে ব্যবহার করত। যেমন ক্যাথোলিক বিশ্বে লাতিন, অর্থোডক্স বিশ্বে গ্রিক, ইসলামিক বিশ্বে মরোক্কো থেকে শুরু করে ইরাক অবধি আরবি আর ইরান থেকে মধ্য এশিয়া ও ভারত ও ইন্দোনেশিয়া মালেশিয়াতে পার্সি, ভারতের সংস্কৃত আর চীনে ম্যাণ্ডারিন ভাষা চলত। মুখের ভাষাকে ছোট করতে এই ব্যবস্থা ছিল তা ঠিক নয়। বরং যে সমাজে ৯৫% মানুষই পড়তে পারেনা সেখানে অজস্র মুখের ভাষা শিখে তা দিয়ে লেখাটাই ছিল বোকামী। তার চেয়ে ৫% মানুষ যারা পড়তে পারে তারা কোন একটা বিশেষ ভাষাকেই লেখার জন্যে ব্যবহার করবে যা কেবলমাত্র তারা নিজেরা বুঝতে পারবে সেটাই স্বাভাবিক।
সাক্ষরতা ও আধুনিকতা আসার পরেও চীনের ম্যণ্ডারিন ও আরবি তার স্বমহিমায় রয়ে গেছে। মুখের ভাষাগুলোই বরং লেখার ভাষার মতো করে নিজেকে গড়ে নিয়েছে। ম্যণ্ডারিন চীনকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে কার্যকর হয় কিন্তু আরবি ভাষা আরব ভাষীদের (লেখার ভাষায়, মুখের ভাষায় নয়) এক করতে ব্যর্থ হয়। চীন ও আরবে এই বিপরীত ফলের কারণ ঐতিহাসিকও হোতে পারে আবার ভৌগলিকও হোতে পারে আবার দুটোই হোতে পারে আবার অর্থনৈতিকও হোতে পারে। সেটা নিয়ে আমরা এখানে কথা বলবোনা। আমরা শুধু এটাই দেখব যে ভাষা, মুখের ভাষা, লেখার ভাষা এগুলো কখনোই ঐক্যবদ্ধ জাতিসত্ত্বা বা জাতিরাষ্ট্র কোনটারই গ্যারান্টি দিতে পারেনা।
Author: Saikat Bhattacharya
Theoretical General 25-February-2023 by east is risingIntroduction
We will discuss here how and why women sexual freedom has become a tool of US Hegemony against its adversaries. Women freedom was initiated by Marxist Leninist movement of 20th century. But after late 1960s, women issue had been hijacked by US Hegemony. We will discuss here how women freedom advanced gradually in three successive stages: economic freedom, political freedom and sexual freedom. The article will explain why women's economic freedom and political freedom is progressive in nature while sexual freedom is reactionary. It will also be discussed why demand for sexual freedom will succeed the demand for economic and political freedom naturally. It is finally concluded that if US Hegemony is to be defeated, women sexual freedom must be analyzed thoroughly and its reactionary character must be dealt with by anti US Hegemony progressives.
Women's Economic Freedom
Since the sex revolution of late-1960s, USA was using women's freedom as a tool to control both Western as well as non Western societies. Here we will segregate women's freedom into economic, political and sexual. Women's economic freedom has huge progressive impact on the growth of productive forces of both Western world and non Western world. In fact women's participation in job market helped in reduction of the gap in productive forces between First World and Third World. China's huge economic growth owes a lot to 65% women participation rate in labor market. It is China's economic growth that has destroyed unipolar world and multipolar world is emerging out of its ruins.
Women's Political Freedom
Women's political freedom is hardly hundred years old. UK gave women right to vote and contest elections in 1918, USA gave same in 1920, France and Japan in 1945. USSR gave short life Communist German government first gave women equal political rights as men between 1917 and 1920. It is actually competition with communists that forced West to give women equal political rights like men. Women began to use their vote bank to achieve many privileges especially in courts. Alimony laws were so designed that men began to find marriage a loss making deal. Gradually men started avoiding marriage. Similarly, using women vote bank, women are trying to suppress any demand for freedom by different segments of men especially sexual freedom of common men (distinct from elite men). In a multi party electoral democracy framework, women's political freedom is surely reactionary due to vote bank politics. But in other form of government, women's political freedom may not be reactionary as vote bank politics will not come into play.
Women's Sexual Freedom
As women got economic freedom, their economic dependence on their husbands and fathers got reduced considerably. Women found no reason to allow their husbands to have monopoly of sex with them. Gradually women began to protest against husband's monopoly to have sex with them and instead they sought freedom to have sex with any men they prefer. But who will be preferred men? Women by nature will choose only powerful men as their partners. Who will be considered powerful men? From primitive instinct women can identify "taller", "muscular" men as powerful since in primitive days a man needed those qualities to emerge victorious in life struggle. Similarly women can also epitomize power of men in their wealth, job, educational degrees. Several women can become pregnant from one powerful man in a month. So from the perspective of women, their chosen men partners are non-rival goods because becoming pregnant from one man does not prevent another woman from becoming pregnant by the same man.
Men's choice for partners by nature are much more constrained. Men choose women with physical traits ideal for giving birth. Men often look into the wealth, job, educational attainment of women too but since women can give birth up to a certain age only men usually refuse aged women with lot of wealth or education. This is because men do not consider aged women good enough for giving birth. So most men end up choosing young women with ideal physical traits as partners. But many men cannot impregnate a woman in a short time span. A woman once get pregnant by a man cannot get same by another man for almost a year. So from men's perspective their chosen women partners are rival goods because becoming pregnant by one man prevents another man from making the same woman pregnant for almost one year.
So men have to fight for the desired woman while women do not have to fight for the desired man. Naturally, most powerful men always get the most desired women. Average common men have to settle with less desired women. But if women have sexual freedom then both most desired as well as less desired women will end up seeking most powerful men as sex partners. Since men are non-rival goods for women, both desired and non-desired women will find it natural to flock to rich tall muscular men leaving common men without sex partners. Common men thus have to compete for less desired women. They have to commit too much share of their little wealth and endure too much humiliation in order to get even a below average (from the perspective of sex partner choice) woman. Women began to squeeze common men using the latter's unfulfilled desire for sex. Thus common men have to accept the superiority of chosen elite men in the name of respecting women's sexual choice. Common have thus have little moral strength left to oppose the elite men and women become tool of elite men to control the common men.
Another important point is women usually go for best partner or none while men usually go for whatever available. This is because women have to endure 10 months 10 weeks of long pregnancy during which women have to remain dependent on others. Even after giving birth babies remain dependent on mothers for at least one year. So cost of giving birth is too high for women and women will be ready for it only when they are ensured about the quality of progeny they will get. Men on the other hand have no biological cost of giving birth. So men are ready to give birth even if the progeny they get are below their desired quality. Thus while women opt for the best men partners so that the cost they pay worth it, men will go for any women partner available as they do not have to pay too much.
Conclusion
So if we segregate women freedom into economic freedom, political freedom and sexual freedom, we find that economic freedom is very much progressive as it helps to reduce global inequality in productive forces between First World and Third World. Women's political freedom in multi party electoral democratic system has ended up creating a strong interest group in the society which only thinks about own self interest at the cost of social interest. But it is women's sexual freedom that is reactionary by nature as it establishes the superiority of richer taller muscular men over common men. Sex becomes a costly affair for men and only elite men end up affording it. Common men are left with little moral strength to oppose the elite men while women become tool of elite men.
Author: Saikat Bhattacharya
Theoretical Sex War feminism 29-January-2023 by east is risingAt the present, wokes or left-liberal postmodernists are the biggest reactionary forces. Wokism came into existence during the 60s to counter Marxism-Leninism. With the full patronage of the USA led capitalist power, various anti-ML left-wingers like liberals, progressives, social democrats, anarchists were merged to form the new-left or postmodernist left. The capitalist bloc also sought to create many self-proclaimed communist factions who were against the socialist bloc. Gradually this way wokism was born. Their core ideology was feminism and identity politics and anti- class politics. During 60s after the success of Soviet Union led socialist bloc a burgeoning middle class emerged. This middle class was wage earners but they differed from working class drastically. Although being wage earner, their character was that more of a petty owner. Their world revolves around their immediate nuclear family and not any larger collective. So they naturally follows rules of convenience and self-maximization. After 70s, capital became globalized and working class lost its bargaining power. Working class also became stratified into different new classes. Living standard arose. With the digital revolution, economy and nature of employment changed forever. So class politics became obsolete. Rather than workplace, educational and media institutions became places of mobilization. The new left aka wokes utilized this to firmly establish themselves. Educational institutions consists of adolescent middle-class male and female students. As sexual urges of men are higher on average than women, adolescent men are more desperate for female company naturally. So wokism has utilized this to spearhead feminism. For middle class, the media is the Vedas, so it is easy to indoctrinate via controlling the media. Gradually the middle class became indoctrinated in wokism completely. The ruling capitalists sought to permanently establish their neofedual estate and eliminate all potential competition. So wokism was fully nurtured by the ruling capitalist in joint coordination with the USA imperial state. After the fall of Soviet Union, the USA hegemony reigned supreme all over the world and wokism became the de facto religion of the most of the world.
Let’s dive deep into the ideology of wokism and how it handles its opponents. Gynocentrism is one of the main core concepts of the wokes. Feminism basically states that men must have all the patriarchal duties without rights and women must have all the patriarchal rights without duties. Wokism takes to next level by endorsing misandry as religion. Wokism completely opposes male choice, male consent and removes female accountability . Wokism support gendered crimes against men, complete impunity for female criminals. Wokism also support sexual shaming of men who don’t fit into their gender rules. Wokism uses rape hysteria to establish their narrative and uses this to justify state repression against those who question their ideology. Wokes states women’s statement should be sole evidence and support mob justice, vigilantism and oppose rule of law.
Identity politics is another bread and butter for wokes. Wokism identify some particular identities who are oppressed according to their definition and should be compensated for that. Any other person who dosen’t fall into these particular identities cannot face oppression. It is basically an way to form a collective tribe and maximise resources, power in a tribal line. Wokes support votebank tribal politics just like third world.
The woke value system is completely feral and anti-civilizational Wokes use mob rule, vigilantism, bullying, fearmongering etc to get their way. Wokes opposes both tradition and modernization. Wokes oppose the moral and ethical code given by the religion, they call it oppression. They are basically amoral people who never evolved beyond primitivity and are driven by their primal instincts. Wokes opposes the rationality, objectivity, growth of productive forces, payment according to ability of modernization. This is because they want to retain the status-quo of the decadent neo-feudal system and are freeloaders by nature. They themselves are irrational, emotionally driven and want populace to be like that so they are easy to rule. Wokes are self-centred by nature and sees any rational functioning system as a threat to their way. They are also fearful about losing their privilages so they want to maintain this arrangement at all cost. This makes them by far the biggest reactionaries of today.
Wokes sees the woke state as one of the main pillars of their hegemony which must be protected at all costs. So they are totally intolerant to all form of criticism, opposition and questioning the authority. Wokes demand blind submission to the woke state without demanding anything aka ‘Divine Right’ of today. Wokes want complete state tyranny, elimination of individual liberty and human rights for everybody else, complete abolition of all the social rights and the accountability of state. So in a nutshell, wokes want blind submission to an unaccountable state who neither provides safety nor economic well-being to its citizens.
Wokes uses outcasting, excommunication and state tyranny to their opposition and they want this to be applied globally. This makes wokes the fascist of worst kind.
Middle class is the main driver of wokism and they are the biggest reactionary class today. Wokism is basically refelection of middle class value system. This class worship status-quo, completely opposes any progress. They lack any basic moral and ethical framework and are driven by logic of convenience. The convenience dosen’t means bettering and improving oneself in every aspect. The convenience means that i will only look for my self-interest but others won’t, they also exists to serve my interest. Basically middle-class wants the entire system centred around their convenience. As wokes come from middle-class nuclear dysfunctional families who live a reclusive, sheltered existence they develop these kinds of morality of amorality. The middle-class world is a dog eats dog primal world where everyone is in a perpetual rat race. Women has always the upper hand in middle class and middle class men tend to be desperate for female company. That’s why they become natural feminists. For middle class, there exists no objective truth but only subjective personalized emotive opinions, so this reflects in wokism. Middle class want to live in freebies but want consumerism too. So they want other people to work for their needs. Middle class wants freedom but only for himself/herself and become completely feral when other people exercise their liberty.
So the net result of wokism results in a complete neo-feudal structure where inheritance is be all, end all. The state is completely fascist and have supreme power. The vigilante woke mobs are in every corner for moral policing purpose. Incentive mechanism is completely broken, those who labor live on subsistence while those who don’t live in freebies. Freeloading and poverty exists side by side. Production gets destroyed. Lack of production with freebies generate irreversible inflation. All sort of crimes skyrocket. Gradually every traces of civilization erodes.
So it can be easily deciphered that wokism is the biggest enemy of human progress today and the biggest enemy of human civilization.
Author: Purandhar Khilji
Theoretical General feminism 25-October-2022 by east is risingWe live in a postmodern dystopia where everything is saturated. The world is stagnant, there is no great momentum for further progress. Rather all the efforts are about maintaining status-quo. Enter the scenario, the male gender based movement which is a new, radical, revolutionary concept. We currently live in a decadent patriarchy where women having all the rights of patriarchy without duties while men having all the duties of patriarchy without rights. This current system is very much anti-modern to the core as it aims to stop any change in the current situation. The organized working class don’t exists anymore and postmodern social justice politics has filled the void. Unlike the left of the yesteryear, today’s left revolves around feminism, identity politics and is fascist in their disposition. The right looks at past and want traditional patriarchy back but fails miserably in their objective. So after understanding the current scenario there is a need for radical men’s right movement which is well organized. Only those who are discontent with the current arrangement has potential to be revolutionary. All other entities more or less are content with status quo. So the men’s movement has huge potential to change the world in this vacuum. The masculinist ideas directly threatens the establishment that’s why authorities always seeks to suppress via any means necessary. If the philosophy of men’s rights weren’t radical and revolutionary they wouldn’t attract the ire of the ruling classes and all the establishment entities. But how masculinist movement can shape the world and get rid of the current dysfunctional dystopia. Feminism basically states that women must be ensured all the benefits of patriarchy without all the rights while men will be burdened with all the duties and responsibilities of patriarchy without the rights. Also feminism keeps the notion from primitive days that male lives are disposable and female lives are priceless. Feminism also suppress individual liberty for men while establishing complete immunity from all the accountibilities for women. Feminism believes in female hypoagencyaka a woman is not responsible for her individual actions. Feminism also opposes male consent and considers any man having choices regarding his personal life, professional choice, mating choices, sexual life and many more as a grave sin. As a result not only fundamental human rights of men are violated buy also child rights of boys are thrown to gutter. Increasing boy child labor and their complete justification by so called human rights crusaders is an alarming thing. School and college dropouts for men is also another shocking phenomenon. It is happening because the male gender is forced into the patriarchal role without any consent and their well-being is brushed aside. That’s why even young boys are forced into involuntary labor. Feminists ideology states that men must labor and provide for others and women will chose whether they work or not and are entitled to all the protection and service from the state. Gendered crimes against men are not only unrecognized but those are normalized and supported by the blind masses. So the clear violation of human rights is visible here. A boy child can be physically, mentally, verbally abused by parents and there is no protection of them. It is also normalized. A male can be easily physically abused by anyone and there is complete immunity against any action there. A man has no bodily autonomy, privacy and individual human rights. In workplaces, men are assigned difficult and tough tasks while women are assigned easy tasks and the remuneration does not match that. A man also expected to provide free indentured labor and it is socially enforced. Despite both genders are earning and special privilages are assigned for women so that they can earn more, men are still expected to provide and contribute to family, society and state. Women, despite earning, are not obliged to contribute anywhere. Men are still expected to be cannon fodder while women are exempted there despite we are living in a low-birth society. So if we summarize the system it is nefarious, inhumane, primitive, feral and anti-civilization.
We also need to know about the proponents of the system. All the entities who thrives under patriarchy want to hold on to it at any costs. The ruling and properties class want to destroy all the aspiring men who challenge them. Feminism is the tool to achieve the objective. The parasitic bureaucratic, judiciary, activist classes thrive via feminism. Older generations want to destroy younger generation men so they cherish this arrangement. The middle class is ideologically Feminist. Monopoly capitalists who want to hold on to power support this system.
Now comes the issue about what is to be done. It is not an individual task but collective task. Firstly men need to be aware about everything aka taking the red pill or whatever one calls it. Men need to see themselves as human beings first and remember Chanakya aka demand nothing less than respect. Men need to be uncomprising about their individual liberty, their needs, desires. That’s the basic part. The next step would be becoming a political force, cultural force and social force. The Men’s rights movement can also influence economy if they play the right politics. It’s 2022, humanity is on the verge of 4th industrial revolution. The low birth crisis and overaccumulation crisis is putting economies to a halt. If men are emanicipated from their patriarchal duties then men as a collective can create a gigantic demand in economy which will also increase the living standard. Plus we will have a gigantic innovator pool for our modern economy. Uprooting social justice dystopia and the beneficiary parasitic, unproductive classes will reduce all the bad expenditures and that resource can be mobilized in more productive venture. Automation will emanicipate men from the undesired labors and men can voluntarily choose their profession. The invention of sex robots will eliminate dependency on women for sex. Surrogacy, single parenthood must be established and celebrated. The combined effect of all the above will be a massive surge in productive forces and innovation. Incentive mechanism will come back along with intrinsic motivation. Human society will be in a new civilization. Social mobility will increase, so class exploitation will reduce and the neofeudal structure will collapse. So the men’s right movement will usher a new dawn and will transform humanity forever. So, to all the masculinists who want to see their ideas come to fruition, this is your golden opportunity. Utilize it and the results will be beyond your imagination. You can make history by own hands if you desire such.
Read MoreAuthor: Purandhar Khilji
Theoretical Sex War 19-October-2022 by east is risingWhenever the word ‘choice’ comes into existence regarding gender relations, it automatically refers to female choice while completely shunning male choice. Feminism states that a woman can live voluntary life but a man must be stuck in the involuntary patriarchal role. An emancipated man threatens the decadent patriarchy to the core.The sex revolution never meant change in gender relations but making patriarchy gynocentric. And the very core concept of the sex revolution was women must be liberated from their patriarchal duties while retaining all the rights while men must be involuntarily forced into patriarchal duties without any rights, benefits in return. Plus state policies always favored women and disfavored men making the gender equation tilted towards women favor. Gendered crimes on men (ex- female on male domestic violence, female on male rape etc) were completely unrecognized and suppressed via overamplyifying golden uterus syndrome, Electra complex, helpless damsel syndrome etc. Whenever the issue of individual liberty of men comes up, the stereotypical response is ‘Women are oppressed’. Just for arguments sake let’s assume the story of female oppression is true. But that dosen’t nullify any of the male gender based issues and male oppression. Now the truth is historically human society has always pedestalized women and put men down via different means. So suppressing male issues is a grave social and historicalinjustice by itself. Historically, individual liberties were limited for both genders. What feminism did was to give women complete freedom without accountability and enforced upon men all the responsibilities without any semblance of individualfreedom. Men are required to fulfillinvoluntary duties towards family, society and nation without any compensation while for women that is the opposite, the same obligations are not applicable for women while getting all the privilages of the old patriarchy. Despite we are living in a low-birth society, the Golden Uterus myth is invoked to justify the status-quo. In terms of things that absolutely personal, male choices are villified by the establishment. A man cannot have his mating preference, cannot live his life independently and has to accept the forced servitude without any question. Similarly, male consent regarding sexual relation is completely vilified by the establishment and sexual crimes against men are justified via different means. We have a selective welfare state where all the social securities for men are being liquidated so men can be forced into modern slavery via bread. Young men are asked to toil like CEO for living in subsistence. Overall, the male choice regarding profession and lifestyle is also vanquished. Involuntary forced labor is exploitation so it can be easily said that today’s gynocratic system thrives on male exploitation. Ruling classes and their lackeys who want to maintain status quo support this arrangement.
This is completely unacceptable. Firstly it’s morally and ethically wrong and obliterates the concept of justice, fairness and equality. Secondly, it violates the principle of payment according to ability and exchange value. So it’s anti-modern and reactionary too. Lastly, it is unfit for the world which seeks to enter in the 4th industrial revolution. Modernization means increasing productive forces and this nefarious system is a stumbling bloc for further progress of humanity. For further modernization, all physical and manual labor must be automated so that vast majority of men can be emanicipated. Also male choice must be established so that men can be motivated to pursue the professions which they like which in turn will increase productivity. Cutting of unjustified freebies will also increase productivity. So we can easily see that the current system is unfit for 21st Century.
So, all the Emanicipated men, proudly proclaim ‘My life, My body, My choice’.
Author: Purandhar Khilji
Theoretical Sex War 19-October-2022 by east is risingনারীর সবচেয়ে বড় শক্তি সে আয়নায় নিজেকে দেখেই সময় কাটিয়ে দিতে পারে। নারীর কোন সামাজিক ভ্যালিডেশনের দরকার পড়েনা। আগে ছিল নারীকে "মা" হতেই হবে নয়তো সমাজের নিন্দা শুনতে হবে। এখন সমাজ মনে করেনা যে "মা" হওয়া ততোটা গুরুত্বপূর্ণ আর তাই "মা" না হলে বা হতে না পারলেও সমাজের নিন্দা শুনতে হবেনা। একটু যদি গুঞ্জন ওঠেও তাকে প্রগতিশীল বকুনি দিয়ে চুপ করানো খুব সোজা।
অন্যদিকে পুরুষকে দেখুন। সন্তান না দিয়ে বউ/প্রেমিকা কুকুর/বিড়াল পুষলেও পুরুষের নাকি একটা বউ/প্রেমিকা লাগবেই নিজেকে পুরুষ বলে প্রমাণ করতে। নারীকে জয় করে আনার পুরনো তত্ত্ব পুরুষের ঘাড় থেকে আর নামছেইনা। আগে পুরুষকে নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দিতে হত নারীর বাবা/পরিবার/গোত্র-কে। অনেক সন্তান দেওয়ার দরকার বলে অল্প বয়সেই পরিবার থেকে নারীর বিয়ে হয়ে যেত আগে। নারী ওই অল্প বয়সে কোন পুরুষ ভাল কোন পুরুষ মন্দ তা বোঝার মতো অবস্থায় ছিলনা। তাই নারীর পছন্দসই হওয়ার দায় পুরুষের ছিলনা। সমাজের চাহিদা মতো জাতি, রোজগার আর সুস্বাস্থ্য অনুযায়ী নারীর বাবা/পরিবার/গোত্র-এর সাথে চুক্তি করে নিত পুরুষ। স্বাভাবিকভাবেই পুরুষের মধ্যে ভাল রোজগার করে ভাল নারী পাওয়ার মানসিকতা গড়ে উঠেছে।
কিন্তু সময় বদলেছে। নারীর ওপর আর অনেক সন্তান দেওয়ার চাপ নেই, নারী তাই অনেক বয়স অবধি পড়াশুনো পরছে, চাকরী করছে, তারপরে বিয়ে করছে। সন্তান ধারণে উপযোগী হওয়া আর বিয়ের করার মাঝে অনেকটা সময় নারী অতিবাহিত করছে ভাল পুরুষ বেছে নিতে। একদিকে পুরুষের মধ্যে ভাল রোজগার করে ভাল লারী পাওয়ার পুরনো মানসিকতা লারীকে রোজগার না করেও বেঁচে থাকার সুবিধে দিচ্ছে। আবার অন্যদিকে একটা সন্তান দিলেই চলে বলে ৩০ বছর অবধি সে বিয়ে না করে ক্যারিয়ারে সময় দিতে পারছে। আগেকার দিনের অল্প বয়সী, পড়াশুনো কম জানা, রোজগার না করার নারী বাবা/পরিবারের পছন্দ মেনে নিত। আজ বয়স্কা, পড়াশুনো জানা, রোজগেরে নারীর পছন্দ আকাশছোঁয়া। আজ নারী চাইছে শুধু ভাল রোজগার নয়, ভাল দেখতে, কথা শুনে চলবে, সঙ্গ উপভোগ্য হবে এমন এক পুরুষ। ভাল দেখতে নারী উচ্চতর বিত্তের পুরুষকে আকর্ষণ করার জন্য ছুটে চলে। সাধারণ মানের অধিকাংশ নারীই উচ্চতর বিত্তের পুরুষ পাবেনা। তাই তারা নিজের বিত্তের পুরুষই পাবে। অতএব রোজগার একটু উনিশ বিশ খুব পার্থক্য থাকেনা। গুরুত্বপূর্ণ হয় পুরুষের রূপ, পুরুষের তোয়াজ করার মানসিকতা এবং সঙ্গ উপভোগ্য কিনা সেটা।
একদিকে পুরুষের ওপর ভাল রোজগার করে নারীকে জেতার পুরনো চাপ আর অন্যদিকে নারীর কাছে আকর্ষণীয় হওয়ার চাপ। ভাল মধ্যবিত্ত রোজগার করেও পুরুষ পেতে পারে সাধারণ নারী কারণ ভাল মানের নারী উচ্চবিত্ত পুরুষকে পাওয়ার প্রতিযোগীতায় চলে গেছে। মধ্যবিত্ত সাধারণ পুরুষকে এবার সাধারণ মানের নারীর মন পেতে নিজের রূপ বাড়াতে হবে, তোয়াজ করা শিখতে হবে, সঙ্গকে উপভোগ্য করে তুলতে হবে। এর ওপর বিয়ের পরেও সেই নারী রান্না করে খাওয়াবেনা, রজগার করলেও সংসারে টাকা দেবেনা। অর্থাৎ অনেক কষ্ট করে খুব সামান্য কিছুই আজ পাবে একজন মধ্যবিত্ত পুরুষ। স্বাভাবিকভাবেই পুরুষের বিয়ের প্রতি আকর্ষণ কমছে দুনিয়া জুড়ে।
পুরুষাধিকার আন্দোলনকে যা যা করতে হবে তা হলঃ
১। রোমান্স বিরোধী মনন তৈরি করতে হবে পুরুষের মধ্যে সিনেমা, সিরিস, ছোট সিনেমা, ছোট গল্পের মধ্য দিয়ে।
২। একা জীবনকে উপভোগ করা শেখাতে হবে পুরুষদের।
৩। শুধু পুরুষের জন্য পণ্যে ভরিয়ে দিতে হবে বাজার।
৪। বিয়ে করার লাভ ক্ষতির পরিমাপ করতে শেখাতে পুরুষদের।
৫। আইন সম্পর্কে ধারণা দিতে হবে পুরুষদের।
৬। যুগ যুগ ধরে আদীম সমাজ থেকে নারী কি কি সুবিধে পেয়ে আসছে সন্তান ধারণ করে বলে এবং আজ সন্তান ধারণের গুরুত্ব কমেছে বলে কি কি সুবিধে পাওয়া নারীর অনুচিত তার সম্পর্কে পুরুষদের শেখানো দরকার।
৭। মেটাভারসে যৌনতা ও রোবটের সাথে যৌনতা পুরুষদের মধ্যে জনপ্রিয় করে তোলা দরকার।
৮। পুরুষের পণ্যে, মেটাভারসে যৌনতায়, যৌন রোবটে বিপুল বিনিয়োগ দরকার আর তাই পুরুষকে এই সকল বিষয়ে ও কম্পানীতে বিনিয়োগ করতে এবং গবেষণা করতে উৎসাহিত করা দরকার।
৯। দেশ জাতি ধর্ম- এই সকল বায়বীয় বিষয় থেকে পুরুষকে দূরে ঠেলা দরকার। এই সকল বায়বীয় বিষয় রক্ষার দায় যে পুরুষের নয় তা প্রচার করা দরকার।
১০। ফস্টার ফাদার হওয়াকে সকল পুরুষের জন্য আইনী স্বীকৃতি দিতে হবে।
১১। উচ্চ মানের নারীদের ডিম্বাণু বিক্রির প্রক্রিয়াকে আইনী ও সামাজিক স্বীকৃতি দিতে হবে। মনে রাখা দরকার নারী পূর্ণ বয়স্কা হলে তার কাছে গচ্ছিত থাকে ৩০০-৪০০ ডিম্বাণু যার অধিকাংশই নষ্ট হয়।
১২। নারী পুরুষের সম্পর্ককে যতটা পারা যায় চুক্তিভিত্তিক এবং ব্যবসামুখী করে তুলতে হবে।
এভাবে চলুক ১৫-২০ বছর। স্বয়ংক্রিয় গর্ভ বা সন্তান ধারণে সক্ষম রোবট আবিস্কার হলে তো ভাল। না হলে স্বল্প জন্মহারের তীব্রতা বাধ্য করবে রাষ্ট্র এবং পুঁজি উভয়কেই নারী স্বাধীনতায় লাগাম টানতে। নারী স্বাধীনতায় লাগাম টানবে কিনা তা রাষ্ট্রের চিন্তা। কিন্তু নিজের স্বাধীনতায় লাগাম পরিয়ে রাখব কিনা তা পুরুষের চিন্তা। পুরুষকে আগে নিজেকে স্বাধীন হতে হবে পুরনো সমাজের লাগাম থেকে যেমন - বেশি রোজগার করে ভাল লারী পাওয়া, লারী পাওয়াকে যোগ্যতা ভাবা, জাতি দেশ ধর্ম বাঁচানোর চিন্তা করা।
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Theoretical Sex War 09-October-2022 by east is risingWhenever consent is being discussed in the discourse of gender issues, it’s always female consent that is being emphasized while simultaneously male consent is completely put aside. This can be seen from the existing laws, government policies, societal attitude, political stances, popular culture I.e. every sphere of our life. We can see that whenever a man exercises his free choice, he receives hostilities ranging from ridicule to punishments. But why this is the case? Why a man's free choice is vilified while for woman it is celebrated? Why men are demonized for breaking free of patriarchal norms? To understand this a closer look on biology and evolution of human society. Human society always have valued female lives higher than male lives due to reproduction. Men were assigned difficult tasks which were life risking and those men who made it were rewarded with mating opportunity with best of females. When patriarchy and private property emerged it retained the concept of old days and added their own system to it. Now men with private property got the best of women. So it can be seen that throughout history, women were presented as reward for men to gain. So in a nutshell, men have to prove their worth to get a chance to mate was the de-facto norm of gender relations. But after successive waves of industrial revolutions, world changed forever. Patriarchy has become obsolete. So the ways of the oldare not applicable anymore. But the old norms still remain ingrained. The conditioning of the old eras states that men have the urge for mating, not women and for that it is default scenario that getting a women is the ultimate moksha of a male life. All other things have to revolve around this particular aspect of life. Now, sexual urge is natural for human like hunger, thirst. But that isn’t the sole aspect of life in advanced civilized society. Only in primitive state, human life revolves around food, sex. The more we advance, there are many things in life in addition to that. Individuality, intrinsic motivations play more role in life. In pre-modern society, marriage and reproduction was seen as crucial part of human life. But that’s not the case for today. Marriage becomes obsolete for those without private property ownership. Plus contemporary marriage has become a dangerous one-sided contract where men has duty without rights, reaps no benefit from it and can have their life destroyed at any moment as the entire legal system is biased. After sexual revolution, old romantic relationships are obsolete too. So it can be conferred that men have no need to chase female companionship at all. So in case of consent, both male and female consent are valuable. But it can be easily seen that the male consent isunrecognized still. This is a grave problem.
As male consent is unrecognized, so sexual crimes against men are unrecognized.So are all the abuses, violence a man faces. While the exact opposite standard apply to women. When the term ‘rape’ comes to mind it is automatically assumed that the perpetrator is male and the victim is female but never the opposite. Similar bias exists in case of domestic violence, sexual assault and all other aspects. Male victims are mocked, humiliated for speaking up about the injustice they face.
Feminism is patriarchy in decay I.e. patriarchial duties for men and rights for women while curbing the opposite. So feminism retained patriarchy’s dogma that men cannot be victims while female cannot be perpetrators and female life is priceless while male lives are disposable. This why feminists always oppose making laws gender-neutral, giving justice to male victims and punishing female perpetrators. This very notion goes against the sense of justice and stands against the values of modern civilization where individual human rights and dignity are sacred.
Feminists, traditionalists, leftists and all other reactionary ideas stands against very idea of male consent because their foundation will shake if male consent is recognized.
The decadent patriarchy that is in practice will fall like a house of cards if men starts to value themselves, become aware of their human rights and dignity, protect their honor and modesty, establish individual liberty for themselves and live life according to their own voluntary choice. That’s why the established order is hell bent on keeping the status quo and oppose male emancipation.
Lastly one crucial thing to remember that any form of involuntary labor is exploitation. So men being forced into patriarchial duties without anything in return is exploitation. Through establishment of individual male choice, this exploitation must be done sway with. ‘His life, his body, his choice’ must be the clarion call of male emancipation.
Author: Purandhar Khilji
Theoretical Sex War feminism 03-October-2022 by east is risingFeminists when faced with a counter logic always resort to some sort of automatic trigger responses.In their responses, not an iota of rationality is present there rather a they are moved by primarily emotions and instincts. That's because they are conditioned to act, behave, operate and believe in a certain way. The Feminist grooming is quite similar to how humans domesticate animals for their own benefit. So the term ‘Pavlovian Reaction’ is perfectly suitable for that. Now, let’s delve into deep in this.
Before understanding feminist behaviour, we must first understand the main purpose of feminism. Feminism is basically ‘Patriarchy in Decay’. Feminism's main ideal is women must have all the privileges of patriarchy without the duties while men will have the opposite. To achieve this goal, feminism uses state power, sociocultural indoctrination and sometimes economic means(like selective welfare state). Feminism also believe in complete sexual, personal, economic freedom for women while complete restriction for men in all the aspects. That's because if men start to liberate themselves they won't be tied to the bonded oxen role of patriarchal duty without rights. So the basic foundation of feminism will be gone and it will collapse in no time.Due to evolutionary survival instinct, human society always have prioritized female life and deemed male life as worthless. This psychology remains entrenched still today. So human society don't give any importance to any gender based issues that men face and caters to female needs irrespective of their validity and weightage. But we live in a world that is on the verge of 4th industrial revolution. It is not feasible for men to remain in patriarchal role anymore, neither it is possible to let women sit idle and extract freebies because the economy no more support this arrangement anymore. Plus there is another reality that is low-birth rates. Female lives were deemed valuable because of reproduction. But in a low-birth reality it absolutely doesn’t makes sense to have ‘ladies first’ policy of the old.
So naturally, many men are questioning all of these and feminists have no answers. But this is the surface level. There is fundamental psychological conflict here too. Feminists bearing the patriarchal viewpoint believes men are incomplete without any woman and getting a woman is the ultimate moksha for any man. Feminism opposes male choice, male consent, female accountability. So sexual shaming, single shaming are the typical responses of feminists. They do it because they believe that men cannot have any choice regarding his life, cannot have any standards regarding mating choices,if a man is without a woman then there is something wrong etc. They also oppose the concept of female accountability, so they propagate this notion that a female is bydefaultinnocent while a male is always at fault. So whenever this notion is challenged, they get upset.
Feminists also want men to do their patriarchal duties without asking for anything in return(and retaining patriarchial benefits for women without giving anything in return). This has led to so extreme thatboys dropping out of school and involved in child labor and adult women living in freebies. In this vicious cycle of bonded labor, many bright stars are lost in the mud.Here it can be seen that boys are not considered children by them. As usual, nobody wants to give up their privileges. So whenever a man wants to liberate himself from patriarchal shackles, he is seen as enemy. ‘Not a true man’ insult is a shaming tactics by patriarchy so its true successor also carrying this tradition.
Another big purpose of feminism is to retain status quo. So whenever a new aspiring man seeks to challenge the powerful, he is seen an enemy too.
So combining all the above things, it is now much clear why feminists show their pavlovian reaction when challenged.
Another important thing to remember is the mind of a male and female Feminist operate very differently. Male feminists are primarily moved by their urges, impulses and want to appease women by harming their own gender. While female feminists primarily driven by their fear of losing privileges.
In conclusion, the Feminist instinctive behaviour is deciphered.
Author: Purandhar Khilji
Theoretical Sex War feminism 03-October-2022 by east is risingযে পরিকাঠামোটাই বোঝেনা তার কাছে মজবুত পরিকাঠামো আশা করা ভুল।
১। প্রথমে একটা শক্তিশালী সংসার থাকতে হবে যেখানে জনসংখ্যা বৃদ্ধি ঠিকঠাক হতে থাকবে।
২। তারপরে নিজেকে আত্মরক্ষা করতে পারার মতো একটা বাহিনী দরকার।
৩। তারপরে এলাকা বৃদ্ধি করার জন্য সম্প্রসারণবাদী মানসিকতা ও বাহিনী দরকার।
৪। তারপরে নিজেদের দখলে থাকা অঞ্চলে নিজেদের মতো করে ব্যবসা করার বুনিয়াদ বানানো দরকার।
৫। তারপরে অন্য কোন নিরপেক্ষ অঞ্চলে গিয়ে দরকষাকষি করে ব্যবসা করার পরিকাঠামো দরকার।
৬। সব শেষে শক্তিশালী সংস্কৃতি থাকা দরকার যা অন্য জাতিগুলোর কাছে উক্ত জাতি সম্পর্কে ভয়কে ভক্তিতে পরিণত করবে।
বাঙালি মুসলমান সহ বহু তৃতীয় বিশ্বের জাতি আধুনিক যুগে এখনো পর্যন্ত কেবল মাত্র দ্বিতীয় স্তর অবধি যেতে পেরেছে।
একমাত্র মার্কিন জাতিই ষষ্ট স্তরে আছে। হলিউড থেকে শুরু করে গণতন্ত্র, স্বাধীন সংবাদ মাধ্যম থেকে শুরু করে অভিবাসী হওয়ার হাতছানিঃ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে ভক্তিভাব পৃথিবী জুড়ে বহু মানুষের মধ্যেই আছে।
চীন রাশিয়া পঞ্চম স্তরে আছে আর চীনের পঞ্চম স্তরের বুনিয়াদ রাশিয়ার থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী। তাই চীন আস্তে আস্তে ষষ্ট স্তরে উন্নীত হচ্ছে। চীনের দারিদ্র্য দূরীকরণ, স্বল্প মূল্যের উন্নত মানের পণ্য, সস্তা ঋণ, দ্রুত প্রযুক্তির উন্নয়ন, উন্নত পরিকাঠামো এবং বিশাল বাজার ক্রমেই চীন সম্পর্কেও বিশ্বের মানুষের মনে ভক্তিভাব জাগাচ্ছে।
ইউরোপ ব্রিটেন ও জাপান চতুর্থ স্তর অবধি যেতে পেরেছে আর পঞ্চম স্তরে যেতে ব্যর্থ হয়েছে কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বা রাশিয়ার সাথে বা চীনের সাথে স্বাধীনভাবে দরকষাকষি করার ক্ষমতা তাদের নেই। এমনকি মার্কিন ও চীন রাশীয়ার বৈরিতার সুযোগ নেওয়ার ক্ষমতাও তাদের নেই।
লাতিন আমেরিকার দেশগুলো, ইরান, উত্তর কোরিয়া অধিকাংশ আরব দুনিয়া এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোও চতুর্থ স্তরে আছে। এদের মধ্যে কেউ কেউ মার্কিন ও চীন রাশীয়ার বৈরিতার সুযোগ ভাল মতো নিচ্ছে আর কেউ নিতে পারছেনা।
তুর্কিয়ে চতুর্থ স্তর থেকে পঞ্চম স্তরে উন্নীত হচ্ছে আস্তে আস্তে।
ভারতের নিয়ন্ত্রক জাতিগুলোও (হিন্দি ও গুজারাতি) চতুর্থ স্তরে আছে। তামিল তেলেগু ও শিখরা রয়েছে দ্বিতীয় স্তরে।
বাঙালি হিন্দুদের দ্বিতীয় স্তরটাই নেই। মানে নিজেদের আত্মরক্ষা করতে পারার মতো বাহিনীই নেই। অথচ ষষ্ট স্তরের সাংস্কৃতিক বিষয় নিয়ে এরা অধিকাংশ সময়টা অতিবাহিত করে। এরা বুঝতেই পারেনা যে এদের সাংস্কৃতিক ও গবেষণামূলক কাজের কোন ফলই এরা পাবেনা। কারণ সংস্কৃতি ও গবেষণাকে ক্ষমতায় রূপান্তর করতে গেলে একটা জাতির দরকার যুদ্ধ করার ও ব্যবসা করার পরিকাঠমো ও মানসিকতা। বাঙালি হিন্দুদের যুদ্ধ করার ও ব্যবসা করার পরিকাঠমো ও মানসিকতা কোনটাই নেই। উপরন্তু সংস্কৃতির দোহাই দিয়ে যুদ্ধ করাকে খারাপ বলে চিহ্নিত করে। ফলে এরা যোদ্ধা পুরুষের পুজো করেনা। নারীর হাতে অস্ত্র দিয়ে, নারীর পায়ে পুরুষকে রেখে তারা যোদ্ধা পুরুষকে ব্যঙ্গ করে। যুদ্ধ করতে পারেনা বলে ব্যবসা করতেও ব্যর্থ হয় আবার বিপদে ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারেনা।
এমনকি প্রথম স্তরেও অর্থাৎ সংসার এবং জন্মহারেও বাঙালি মুসলমান ও হিন্দিদের সাথে বাঙালি হিন্দুরা পাল্লা দিতে পারছেনা। তবে এই সঙ্কট প্রায় সমস্ত জাতির জীবনেই ঘনিয়ে এসেছে আর তাই আলাদা করে এই স্তর নিয়ে এখানে বলা হলনা।
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Theoretical Hindu 09-September-2022 by east is risingআজকের স্বাধীনতা দিবসের সফলতার প্রধান মুখ বাঙলার সুভাষ বসু পাঞ্জাবের ভগত্ সিং।কোনো গুজরাটি মারোয়ারি রাজস্থানি নয়।
গুজজু হিন্দি বেল্ট ব্রিটিশদের সাথে হাত মিলিয়ে এই দুই সংগ্রামী কে হত্যার পর ভারতের সমস্ত বড় ব্যাবসা বাঙালিদের থেকে হাতরে আজ বিলিয়নার হয়েছে।
আর বাঙালি শুধু ডক্টর ইঞ্জিনিয়র হয়ে মিডল ক্লাস থেকে ভাবছে এইটাই সুখী লাইফ।
বাঙালি আবার আজকে মোদী কে নিয়ে নাচছে।
Modi কে প্রশ্ন করো যে-(1)কিভাবে মোদির জাতি বিনা রক্তপাতে Billionaire জাতি হল?
(2)আর তোমাদের জাতিতে এত শহীদ হয়েও কেন তোমার আজ ওদের দোকানের কর্মচারী হয়ে গেলে?(3)বাঙালি ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ারগুলো ওদের nursing home company এর চাকর হয়ে খাটছে।
(3) Bangali কটা বিলিনয়র অ্যাডমিনীসট্রেটর আছে ভারতে?
পার্লামেন্ট টাও হিন্দি বেল্ট এর দখলে কারণ তোমরা তো মোট 7%। তার কারণ-
(১)তোমাদের সোনার বাংলা আগেই ভেঙে দ্বিখণ্ডিত করে ফেলেছে বাঙালি জনসংখ্যা কমিয়ে দুর্বল করে দিতে।
(2)আর বাকি কাজটা বাঙালি পুরুষ শুধু নিজেরা free sex করবে বলে নারীকে impress করতে নারীবাদী হওয়ার ভান করে reproduction কমিয়ে 7% করেছে।
তাই তোমাদের ভোট এখন redundant।তোমাদের কথার কোনো পাত্তা দেইনা রাষ্ট্র।যার হাতে অর্থনীতির নিয়ন্ত্রণ নেই জনসংখ্যা নেই তার দামও নেই।তোমরা গুজজু হিন্দি মাওরার চাকর।
আর ওরা তোমায় এখনো মাথায় হাত বোলাচ্ছে কেনো?
কারন তোমার বাঙলার এই উর্বর ভূমি আর বন্দর(port)সম্পুর্ন দখল নেওয়ার পর তোমাদের Detention Camp এ ঢুকিয়ে আরো সংখ্যা কমিয়ে মূল্যহীন করবে রাষ্ট্রের কাছে।
Author: Payel Choudhury
Theoretical General 16-August-2022 by east is risingIndia is a country made by the British and in 1947, India slipped from under the jackboot of British Imperialism to under the jackboot of Bania Comprador Hindi Imperialism.
As a Bengali I hold Congress responsible for partitioning the country and initiating a series of anti-Bengali measures.68% of the political prisoners in Andamans were Bengalis. And the Bengalis were screwed for this sacrifice by
- Partition.
- No refugee rehabilitation.
- Freight equalization.
- Concentration of Financial Sector in Western India.
- License Permit Raj.
- Reduction in share of taxes for Bengal.
- Destruction of Jute Industry.
- Hindi imposition .
It is time we, Bengalis from the Indian side, realize that India has continued the colonial exploitation of Bengal. Did you know that the Constitution of India is about 65% copied from The Government of India Act, 1935?
For a long time now I don't celebrate Indian Independence Day and the Republic Day. How has India treated us? Assam has had a history of anti Bengali riots-what has India done to stop that. Under the NRC about 19 lakh people were thrown off the citizenship rolls. Out of these about 17 lakhs were Bengalis (11 lakh Bengali Hindus and 6 lakhs Bengali Muslims).
We Bengalis need to learn from History and realise that the best model for India is a decentralized governance with states rights to most of the powers. Center should have defence, foreign affairs, currency and protection of minorities. All the other powers should be at the State level.This was the Cabinet Mission plan which Jawaharlal Nehru sabotaged. Hindi imperialism is poisoning our cultural landscape. Bengalis, recognize the facts of the exploitation and stop drinking the Kool Aid of how India is a sempiternal country!
Read MoreAuthor: Nalinaksha Bhattacharyya
Theoretical General 15-August-2022 by east is risingVictor Orban, the conservative Prime Minister of Hungary said, “We cannot fight successfully by liberal means because our opponents use liberal institutions, concept, and language to disguise their Marxist and hegemonist plans.”
The Conservatives or white rightists think liberalism is part of West (pride of all whites including those who have no history of colonizing and often themselves colonized by Turks) and hence liberalism must be praised. But they find liberalism today no longer believing in "white man's burden philosophy" where non whites and white women were subdued to white men. So they keep chanting today's liberalism is Marxism in disguise or Cultural Marxism.
Similarly the Conservatives or white rightists refuse to accept that capital in search of profit has gone global seeking non Western and non white workers and production. This has raised competition for white working class and petty producers. But capitalism is associated with rise of West (pride of all whites) and hence must be praised. So they call today's capitalism as globalism. So Orban has ominously warned that “[the EU] want[s] us to give up our zero-migration policy, because they also know that this is the decisive and final battle of the future.” He vaunted that under his leadership Hungary has succeeded in stopping an invasion force almost three times the size of Genghis Khan’s.
If they become too powerful another theory that they will come up with is "patriarchy for white women and liberty for non white women".
White rightists just want to go back to 19th century when there was little global competition for western workers and petty producers, white women obey their white husbands and non white men and women were available in plenty as pimps and prostitutes or concubines.
This is a popular demand for many commoners in white world. So white rightists may win tomorrow politically but they will never be able to survive.
For me, leftists (women, gender and class) are ghosts of 20th century and rightists are ghosts of 19th century. Both will fail in the 21st century. But historically they have great potential to lead West to total chaos. Most likely conservative rightists and liberal leftists will end up in a civil war type situation inside USA and thus help to destroy Western domination and Anglo Saxon hegemony once for all.
Author: Saikat Bhattacharya
Theoretical General 07-August-2022 by east is risingEveryone is familiar with the term Indigo. It is a color which is used in textile. But here i am going to discuss about a completely different Indigo which is ever present and faced by many, but haven't deciphered it. It is a color which has many different shades. This the Indigo or Indian Ego. It is a natural phenomena which many may have discovered before it, but i hereby giving it a nomenclature. Let's focus on the actual topic without digressing much.
Indians wear ego on their sleeve and it is their main motivator in everything. But wait a second, exactly how it came into being when in reality Indians have virtually no basis for having an ego. Their living standard is similar to animals and everyday is a struggle for life. They don't have anything in particular which they can boast about. The country falls in the lowest of global pecking order and often falls below sub-Saharan Africa in many aspects. Every country in this earth have Indian migrants who went there looking for basic livelihood. Many of the states haven't progressed beyond Paleolithic and Neolithic age. For example, the state of Bihar is equivalent to Somalia. Yet the question arises, despite all these, why are Indians so egotist, arrogant, narcissists while they should be opposite given their poor condition ?
The answer is their ego has no particular basis but exists within themselves. Indians are arrogant where they don't have to. They become rude, rustic, uncouth etc when there is no need to be. Lets examine this in details.
Combining all the above factors and many more, the mammoth Indian Ego aka Indigo is created. Whoever try to resist this faces hell, such a kind of monster it is! Indian parents can't help but abuse children, teachers can't live without abusing students while being manager means all about bullying your staffs. Indians abuse their friends, relatives all the time. The public authority, political class and legal authority expects divine prostration from everyone and are entitled to offerings aka bribes.
But make no mistake, it has become a global phenomenon. I am not discussing this now, but will pen it in future if i get the scope.
But here to disappoint the readers, it has no cure. Rather than curbing it, it has been continuously allowed to flourish. Nobody had a moral spine to call spade a spade.
Things can change always. But who will bell the cat, sorry, I mean Indigo???
Read MoreAuthor: Purandhar Khilji
Theoretical General China India growth Han Hindi 06-July-2022 by east is risingভারতে বসবাসরত গড়পড়তা বাঙালীর কাছে নারীবাদ হল প্রায় ধর্মীয় মৌলবাদের মতন। বাঙালীর সবকিছুর মূলে সেই নারী নিয়েই লাগে। কে কত নারীদরদী তার ইঁদুরদৌড়ে নেমে পড়ে গড়পড়তা বাঙালী। গতপর্বে এর ঐতিহাসিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপট নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা করেছি।
এবার ফোকাস করা যাক বর্তমান পরিপ্রেক্ষিতে।
প্রথমেই জানা যাক নারীবাদের মূল বক্তব্য কী। পিতৃতন্ত্রে নারী ও পুরুষের দ্বায়িত্ব ও অধিকার সুস্পষ্টভাবে প্রতিষ্ঠিত করে দেওয়া হয়েছিল।
এবার নারীবাদের মূল মতাদর্শ হল পিতৃতন্ত্রের যে সুবিধাগুলি নারী পেত সেগুলী বহাল থাকবে কিন্তু দ্বায়িত্বগুলি থাকবে না উপরন্তু বাড়তি সুবিধা পাবে। পুরুষের ক্ষেত্রে ঠিক বিপরীত, তাদের পিতৃতান্ত্রিক দ্বায়িত্বগুলি বহাল রাখলেও অধিকার সব খর্ব করে দেওয়া হল। ফলে বকলমে নারীবাদ বলে পুরুষের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র থাকবে কর্তব্য আর নারীর থাকবে শুধু অধিকার।
এবার বাঙালী এটা গণহারে গিলল কেন? কারণ আগেই বলেছি, গড়পড়তা বাঙালী হল নারীপূজারী। ফলে ধর্মবিশ্বাস হিসাবেই নারীবাদ তাদের মজ্জাতে ঢুকে পড়ে।
এবার বর্তমান অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতেও একে দেখা যাক।
বাঙালী একমাত্র নারীর নামেই উগ্রচণ্ডা হয়। বাম থেকে ডান সব বাঙালীর সবার আগে আসে নারীবাদ, পরে সবকিছু।
এর একটি কারণ আগের পর্বেই বলে দিয়েছি, লৌহযুগের বিকাশ না হওয়া। ফলে বাঙালীর মধ্যে কোন শক্তিশালী সামাজিক কোডের বিকাশ হয়নি। সেইজন্যে ন্যায়-অন্যায়, ঠিক-ভুল বোধের উদয় হয়নি।
এবার লৌহযুগের বিকাশ না হওয়ার সাথেই রাষ্ট্রধারণার বিকাশ হয়নি, ফলে রাজনীতিতে লবডঙ্কা।
সেই ভুল রাজনীতির দৌলতে বাঙালী হিন্দু আজ একটি ক্ষমতাহীন, পুঁজিহীন দূর্বল, ভৃত্য জাতি।
মধ্যবিত্তদের হাতে জাতি গেলে এই অবস্থাই হবে।
দূর্বল জাতির পুরুষরা বরাবরই পুরুষের কাতারে backbencher হবে। তবে ক্লাসের backbencher এর মতন কিন্তু backbencher পুরুষ কখনোই নয়, সে থাকে খরচের খাতাতে। নারীদের কাছেও তাই।
ফলে বাঙালী পুরুষ নারীভাগ্যে পশ্চাতে অবস্থান করে। এই না পাওয়ার হতাশাই তাকে আরো হ্যাংলা ও মরিয়া করে তোলে। ফলে সে যেনতেনপ্রকারেন নারীদের তুষ্ট করতে গিয়ে বদ্ধ উন্মাদের মতো আচরণ করে। আবার পড়াশুনা ও কেরিয়ারের মাঝে স্বাভাবিক জীবন ও যৌনতা পায়না বলে সে আরো ভেড়ুয়াতে পরিণত হয়।
আগেই বলেছি, বাঙালী অভিভাবকরা সন্তানদের নিজ স্বার্থসিদ্ধির উৎস হিসাবে দেখে। ফলে বিশেষত পুত্রসন্তানের ভালোমন্দ তাদের চোখে পড়েনা। বরং তাদের মধ্যে এক অদ্ভুত ঈর্ষা কাজ করে যে আমি যা পাইনি আমার ছেলেও তা পাবেনা। ফলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তারা ছেলেদের কলুর বলদে রূপান্তরিত করতে উঠেপড়ে লাগে। ফলে তারা তাদের জীবনের পোটেনশিয়াল পূর্ণ করার আগেই শেষ হয়ে যায়।
এছাড়াও বাঙালী সংস্কৃতি ও সমাজ এমনই যে পুরুষদের স্বাভাবিক পৌরুষসুলভ আচরণকে blasphemy হিসাবে দেখে। ফলে তারা তাদের সম্পূর্ণ মেরুদণ্ড ভেঙ্গে এক হীনমন্য চাটুকারে পরিণত হয় ফলে তারা নারীসঙ্গও এই চাটুকারিতার মধ্যে দিয়েই নারীকে তুষ্ট রাখবে এই আশা করে।
অর্থবল, শক্তিবল ও পৌরুষবল ছাড়া যেকোন পুরুষই ক্লীবলিঙ্গই হবে।
এছাড়াও তাকে শেখানো হয় একটি বৌ পেলেই তোমার জীবন স্বার্থক। নারীসঙ্গ ছাড়া তুমি বৃথা। ফলে সেই নারী পাওয়াকেই জীবনের একমাত্র সার্থকতা মনে করে।
আবার নারীদের যেভাবে বড় করা হয় তাতে তাদের শেখানো হয় তুমি নারী মানেই বিশাল কিছু, গোটা পৃথিবী তোমার পায়ের মুঠোয়, তোমাকে সারাজীবন কেউ না কেউ মণিমুক্তোর মালা ছড়িয়ে যাবে।
ফলবশত যেটা হয় বাঙালী পুরুষ হয় মেরুদণ্ডহীন ক্লীব যার কাছে একটা নারীর সঙ্গ মানেই জীবনের সবকিছু আর বাঙালী নারী হয় দাম্ভিক, অহঙ্কারী এক narcissist জীব। দুয়ের মিশেলে বাঙালী জাতি হিসেবে হয় নারীবাদী।
এখানে আমি দ্বিতীয় পর্ব শেষ করলাম। আরো অনেক কিছু বলা বাকি রয়ে গেল। সেগুলি আরো পরে বলব ধীরে ধীরে। অপেক্ষাতে থাকুন। যেপথে চলেছি তার শেষ নাই এখন।
Read More
Author: Purandhar Khilji
Theoretical Sex War feminism 06-July-2022 by east is risingভারতে বসবাসরত বাঙালী যে নারীবাদের শীর্ষ পদক নেবে সে বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। ভারতীয় বাঙালীর নারীবাদ ধর্মীয় মৌলবাদের মতোই উগ্র ও অন্ধ। নারীবাদ বাঙালীর মজ্জাতেই ঢুকে গেছে নানাকারণে। কিন্তু কীভাবে তা হল সেটার বিশ্লেষণ তেমন সঠিকভাবে হয়নি। এই লেখনীতে সেই বিশ্লেষণই করব যে কীকরে এমনটি হল এবং কেন বাঙালী এই বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন হল।
প্রথমেই বলে নিই এখানে বাঙালী বলতে গড়পড়তা ভারতীয় বাঙালীর কথা বলা হচ্ছে। ব্যাতিক্রম বা বাংলার সোনালী যুগের শাসক, অভিজাত থেকে শুরু করে creme la creme বাঙালীর কথা বলা হচ্ছেনা। গৌড়েশ্বর শশাঙ্ক থেকে বাংলার শেষ সার্বভৌম বাদশা দাউদ খান কররানী পর্যন্ত যে হাজার বছরের গরিমার সময়, তখনকার বাঙালী এমনটা ছিলনা। সাধারণ বাঙালী তা হয়ে থাকতে পারে কিন্তু কুলীন creme la creme শ্রেণী এরকম ছিলনা। তারা সকলেই পৌরুষবলে বলীয়ান ছিলেন এবং আজকের বাঙালীর সাথে তাদের তুলনাই চলেনা। তারও আগে সিংহবাহুর শাসনামলে বা চন্দ্রবংশের সময়েও বাঙালী এইরম ছিলনা।
মূলত বাঙালী যখন 1576 এ সার্বভৌমত্ব হারিয়ে ফেলল তখন থেকেই এরম অবক্ষয় হয় বাঙালীর যেটা ব্রিটিশশাসনামলে ও ভারতরাষ্ট্রে তার ষোলকলা পূর্ণ হয়।
একটা মুখ্য বিষয় মনে রাখতে হবে যে নারীবাদ বৈশ্বিকভাবে সংগঠিত হয় 1960 এর দশক থেকে ও বিশ্বের পরাশক্তির মদতেই তা গোটা বিশ্বে ছড়ায়। কিন্তু বাঙালীর নারীবাদের সঙ্গে এর সম্পর্ক খুববেশী হলে অনুঘটকের মতো, তার বেশী নয়। বাঙালীর নারীবাদ বাঙালীর মধ্যেই বহুদিন ধরে চুড়ান্তভাবে ছিল। এটা এখানকার সংস্কৃতির মধ্যেই আছে।
আমারা যদি বাংলা সাহিত্য থেকে সনাতনী বাঙালীর সংখ্যাগরিষ্ঠ শাক্ত্যমত দেখি তাহলে দেখতে পাব যে সবখানেই আমরা নারীকেন্দ্রিকতা ও পুরুষবিদ্বেষ দেখব। শাক্ত্যমতে দৈবশক্তিই হল নারীশক্তি, তাই সেই মতে নারীর স্থান সবসময়েই পুরুষের উচ্চে। শাক্তমতে আরাধ্যরা সকলেই দেবী ও তার বিপরীতে অসুর-দানবরা হল পুরুষ। এখানে শুভশক্তি মাত্রেই নারী ও অশুভশক্তি মাত্রেই পুরুষ এই প্যারাডাইম তৈরী হয়। ফলে এর থেকে যে বিশ্বাসটি জন্ম নেয় যে নারী মানেই সে কোন মানুষ নয়, সে পূজনীয় দৈবসত্তা(divine entity) আর পুরুষ মাত্রেই সে অশুভ আসুরিক শক্তির প্রতীক। এইভাবে গড়পড়তা বাঙালীর মাঝে এই ধারণা বদ্ধমূল হয়ে পড়ে।
স্বাধীন বাঙালী রাষ্ট্রের পতনের সাথে এই ধারণাই মূলধারার বাঙালী চিন্তার মধ্যে আসে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য স্বাধীন বাঙালী শাসক কেউ শাক্ত্য ছিলেননা। তারা মূলত বৌদ্ধ, শৈব, বৈষ্ণব ও মুসলমান ছিলেন। তাই নারীপূজা বাঙালীর ঐতিহ্য বলে যে অপপ্রচার করা হচ্ছে সেটাও হল এপ্রকার নারীবাদী প্রোপাগাণ্ডা।
এবার দেখে নেওয়া যাক যে ধর্মের বিবর্তনের নিরীখে এইধরণের ধর্মীয় আচারের স্থান কীরূপ। নারীপূজার প্রাধান্য, মাতৃকাপূজা এর উদ্ভব হয় নিওলিথিক যুগে এবং ব্রোঞ্জযুগ পর্যন্ত ইহা ছিল। মূলত নগরসভ্যতা ও লৌহযুগের বিকাশের সাথেই ইহার সমাপ্তি ঘটে। মানুষ যখন শিকারী-সংগ্রাহক জীবন ছেড়ে সবে কৃষিকাজে ঢুকেছে তখন জমির উর্বরতা ও নারীর উর্বরতাকে এক করে মাতৃকাশক্তি রূপে পূজা করা হত। এইসময়ের সমাজ ছিল নারীতান্ত্রিক। ইউরোপ থেকে আনাতোলিয়া সর্বত্রই নিওলিথিক থেকে মধ্য ব্রোঞ্জযুগ পর্যন্ত এইধরণের মাতৃতান্ত্রিক সমাজের উদাহরণ পাওয়া যায়। নগরসভ্যতার বিকাশের সাথে সাথে মূলত পুরুষদেবতাপ্রধান পৌত্তলিকধর্মের সূচনা হয় ও লৌহযুগ বিকাশের সাথে একেশ্বরবাদ ও পিতৃতন্ত্রের বিকাশ ঘটে।
এর থেকে কতগুলো জিনিস পরিষ্কার হল। এক, বাঙালীর বিবর্তন তাম্রযুগ অবধি। লৌহযুগের বিকাশ ঘটেনি, নগরসভ্যতারও বিকাশ ঘটেনি। Richard Eaton এর Rise of Islam in Bengal Frontier গ্রন্থে বিস্তৃতভাবে বর্ণনা করা আছে যে কীভাবে ইসলামের আগমনের পরে বাংলার বিস্তীর্ণ জলাজঙ্গলভূমি পরিষ্কার করে জনবসতির বিস্তার হয়। অর্থাৎ ইসলামের আগমনের পূর্বে লৌহযুগের এই বুনিয়াদী ধাপের বিকাশ হয়নি। জনসংখ্যার বিস্তারও আগের মতন ঘটেনি।
যদি বাঙালী সাহিত্য দেখা যায় সেখানেও দেখব যে নারী মানেই সে মহীয়সী আর অত্যাচারিত আর পুরুষ মানেই যত খারাপের ডিপো। এটাই বাংলা সাহিত্যের অন্যতম মূল থিম। পুরুষ স্বাধীন জীবনযাপন করলে সেটা অন্যায় আর নারী করলে সেটা সমাজবিপ্লব। এই হল গড়পড়তা শিক্ষিত বাঙালীর মনন।
ব্রিটিশ আমল থেকে বাবু-কেরানী চাকুরীজীবী শ্রেণী উলুবনে শেয়ালরাজা হয়ে বসে এবং এরাই বাঙালী সমাজকে নিয়ন্ত্রণ করা শুরু করে। এরা সবসময়েই বাঙালীকে স্তাবকতা, দাসবৃত্তি শিখিয়েছে এবং নিজেরা উলুবনে শেয়ালরাজা হয়ে থাকার জন্য বাকী বাঙালীদের শেষ করেছে।
যেহেতু এই মধ্যবিত্ত শ্রেণীটাই বাঙালীকে নিয়ন্ত্রণ করে তাই এদের বৈশিষ্ট্য পর্যালোচনা করলেই বোঝা যাবে। মধ্যবিত্ত বাঙালীর কাছে সবকিছুই খরচ। যেহেতু তাম্রযুগের আগে বিবর্তন হয়নি তাই বাণিজ্য, বিনিয়োগ, উৎপাদন এসব রপ্ত করতে পারেনি। তাই বাঙালী মধ্যবিত্ত subsistance mindset এ চলে। আবার যেহেতু এরা চাকুরীজীবী তাই সর্বদাই পরনির্ভর। পূর্বপুরুষের সম্পত্তিও হাতছাড়া করেছে এবং যৌথপরিবার ধ্বংস করে নিউক্লিয়ার পরিবার গড়েছে। সবকিছুর ফলে এরা সন্তানকেও খরচা ও বোঝা হিসাবেই দেখে, স্বাভাবিক জৈবিক অপত্যস্নেহ ও বংশবিস্তারের আকাঙ্খাও জন্মায়নি এদের মধ্যে। এছাড়াও গড়পড়তা বাঙালী হয় প্রচণ্ড ভীতু, ঝুঁকিবিমুখ, স্বার্থপর ও ঈর্ষাকাতর। ফলে ইহারা সন্তানদেরকে নিজেদের স্বার্থের মাঝেই দেখে, তাদের পূর্ণাঙ্গ মানব হিসাবে স্বীকৃতি দেয়না। তাদের মাঝে এই মনস্তত্ব কাজ করে যে কন্যাসন্তানকে বিয়ে দিয়ে অপর কারুর ঘাড়ে চালান করে দেব ও পুত্রসন্তানকে গবাদীপশুর মতন কলুর বলদ বানাবো যাতে বৃদ্ধবয়সের পেনসন হতে পারে সে। বাঙালী পুত্রসন্তান মানুষ করে বৃদ্ধ বয়সের পেনসন হিসাবে ও কলুর বলদ হিসাবে।
এইকারণে জন্ম থেকেই কন্যাসন্তানের জন্যে খোলা ছুট থাকে যাতে সে কোন মালদার পার্টি পাকড়াও করতে পারে আর পুত্রসন্তানকে পুরো শিকলবদ্ধ গাভী করে বড় করে। তার জীবনের সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করা থেকে সর্বক্ষণ তার উপর অকথ্য অত্যাচার চলে তাকে একদম মেরুদণ্ডহীন ক্রীতদাস বানানোর জন্যে। ফলে সামাজিক জীবন থেকেও বঞ্চিত হয় ও জীবনের স্বাভাবিক চাহিদাও মেটেনা। এইকারণে প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থাতেও তারা ভেড়ুয়া, ভীতুতে পরিণত হয় ও পদে পদে ঝাড় খায়। তাছাড়াও বাঙালী উলুবনে শেয়ালরাজা হতে চায়, ফলে বাকীরা একদম ভেড়ুয়া না হলে সেটা সম্ভব নয়। তাই বাঙালী সমাজনেতারাও এইটাকে পৃষ্ঠপোষকতা করে।
বাঙালী পৌরুষকে ঘৃণা করে ও পুরষচরিত্রকে দমনের চেষ্টা করে। কারণ উপরোক্ত arrangement ধরে রাখতে এটা খুব দরকার। যদি বাঙালীর মধ্যে কোন পৌরুষসুলভ চরিত্রের বিকাশ ঘটে তাহলে উপরোক্ত সমস্তকিছুই বন্ধ হবে। সে মধ্যবিত্তের শাসনও মানবেনা, সে গোলামিও মেনে নেবেনা। দালাল ও তাবেদারদের রাজও চলে যাবে। বাঙালী শক্তিশালী ও ধনী জাতি হিসাবে পুনরায় উঠবে। তাই যারা এটা আটকাতে চায় তারাই বাঙালীকে নারীবাদী বানিয়েছে।
এইভাবে সংক্ষিপ্তভাবে বিশ্লেষণ করা গেল যে বাঙালী কেন নারীবাদী হয় এবং কীভাবে তা হল। পরবর্তী লেখনীগুলিতে আমি ঋরো বিস্তারিতভাবে এই আলোচনা করব এবং এর থেকে বেরনোর পথও লিপিবদ্ধ করব।
শেষে একটা কথা বলে নেই, রাজনৈতিক সঠিকতা অর্থাৎ political correctness থাকলে এই পথে আসার দরকার নেই। প্রচলিত প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে লড়ার প্রথম শর্তই হল অকপট সত্যিটা সামনে তুলে ধরতে হবে। তাই আমি কোন রাখঢাক না রেখেই সত্য বলে চলব তাতে কে কী ভাবল তোয়াক্কা না করে। সত্যের জয় হোক
Read MoreAuthor: Purandhar Khilji
Theoretical Sex War feminism 02-July-2022 by east is risingIndia today refers to Republic of India, a country born in 1947. It is a successor state of British India through and through. But to hide this truth, the it has completely manipulated history by claiming that India always existed from time immemorial. A completely new mythology is written about history of Indian state which shows India has always been centre of the world and on top of everything. This borders on downright irrationally and create completely alternate reality based on mythical fiction. To debunk those let’s focus on the actual history and find put how the entity of India came into existence.
India/Indica is a Greco-Roman term referring to the lands beside Indus River. Persians referred to the people residing on the indus region as Hindu. This nomenclature also has derogatory connotation as it meant thieves, bandits, dacoits, slaves, dark skinned ugly people, lowly beings etc. Achamenids, Sassanids, Parthians, Seleucids, Indo-Greek, Sakas all ruled over Indus region and named the people of those region Indians, Hindus, Hindis etc. Later this etymology also extended to the people residing in Gangetic Plains. Umayyad empire conquered punjab, sindh and advance upto Gujarat, MP in the east. This trend continued with the Abbasids. Arabs referred to Indus valley region as Al-Sindh and Gangetic Belt Region as Al-Hind. From 1206 onwards the Delhi Sultanate was established centred around the junction region of Indus and Gangetic plains. From then Sindh and Hind merged under one polity and named as Hindustan. Delhi Sultanate was a Persianized state, so Persian became the main language. Plus a new language developed in military barracks combining Persian, Turkic and Indiclanguages, thus born the Hindustani lingo. Rulers of Delhi referred to themselves as Sultans of Hindustan and whichever territory they aqquired became part of this Hindustani Sphere. In 1526, Timurids uprooted Delhi Sultanate and formed their own empire in the Hindustan region. Babur and Humayun both kept their Central Asian roots and connection to their original homeland Transoxiana intact. They spoke Chagatai as native tongue while used Persian as official language. But they largely kept the setup of Delhi Sultanate intact. After facing extinction at the hands of Afghan Suri Empire and then Restoring the empire in the period of 1540-1556, Akbar was enthroned as new emperor. From then the fate of this entity was to be changed forever and history will take a new turn.
Akbar, unlike his predecessors, was born and raised in South Asia. In a process, he lost his connection to Transoxiana and cut off fall roots to Timurid past. Timurids lost their mother tongue Chagatai and solely spoke Persian from this time. The empire initially became more Persianized as he tried to set Persian ethical standards as the norm. But, in order to consolidate his empire he sought to establish alliances with rajputs and other feudal caste. He also established matrimonial alliances with them, making the dystany gradually more desi. Along with rajputana, hindustan region also became top dog via his policies while Afghans were ousted from power in subcontinent. But it also created ascension of a new class who will play pivotal role in future. The Baniya Classes from Gujarat, Rajasthan, Sindh, Punjab rose from period and with gradual mughal expansion they consolidated and monopolized the economy of subcontinent. Mughals gradually conquered Sultanates of Bengal, Gujarat ,Kasmiretcand also conquered small hindukingdons on their way. At their peak, mughals also successfully subdued Afghanistan and parts of Central Asia. Their southward expansion annihilated Deccan Sultanates and eastward expansion reached uptoArakan.
As mughal emperors referred to themselves as Shahanshah of Hindustan, the entire territory of them is gradually came to be known as Hindustan. The ruling classes of mughal empire grew at the expense of their defeated enemy. Mughal empire aquired the riches of bengal to the jewels of deccan making them sit on a wealthy empire whom everyone looked at with envy.
Gradually europeans started to arrive in droves for trading purposes.
After death of Aurungzeb, the central authority of the emperor gradually declined and governors, feudal rulers became powerful. This situation was utilized by european powers. Some monarchs pledged their alligience to british while others to french, dutch etc. British gradually overpowered all other european powers. Only Portugal retained their possesions of Goa, Daman, Diu while French retained some estates like Chandannagar, Karikal, Mahe, Pondicherry.
British gradually conquered many kingdoms while many accepted British EIC as their overlord.
Here, the baniya classes which rose to power during mughal empire aided the british. The feudal castes like rajputs, maratha, jatts, gorkhasetc became british allies and termed as martial races which meant they gained exclusive privilage in the britishindian military. A new form of Hindustani language which was Sanskritizedand started to be written in Devnagari alphabet was born. This lingo was named as Hindi. While the form of hindustani which retained it Perso-Arabic form named as Urdu.
This newly formed Hindi language was one of the tools to consolidate the Indian State.
The baniya classes wanted entire britishindian territory as their monopoly market and allied with feudal castes for this jpint effort. From Gandhi onwards, the indian movements based around this purpose.
The very classes which mughals nurturedaccepted the British empire as Shahanshah.
But many ethnicities opposed this consolidation. Muslims of British India also opposed to this proposal and at the end got a new state named Pakistan while rest of British India became Republic of India was born.
British India consisted of two territeries: one is territories directly administered by British Empire while the second ones are 565 princely states who accepted britishsuzerinity. Burma and Oman, once part of British Indian territory, became separate entities.
After british left they either became part of India or Pakistan while one remain disputed today. Portueguese and French territories were annexed into India either by treaty or military force like Goa in 1961.
The newly formed Republic of India had so many nationalities that to manage this the Indian State sometimes had to bow down to the demands of lingustic state and caste, tribe based reservation while other times ruthlessly suppressing any nationalism by any ethnolingustic entities.
India run on monopilizedbaniya economy supported by a state which runs on babudom. Details will be elaborated in other pieces.
During Cold War, India was heavily supported and nurtured by Soviet Union. After USSSR fell, India was on verge of collapse in 1991. Only with the aid of IMF and partially opening up some sectors of economy, it survived. Plus being projected as a anti-China arrangement, western world also lend its support. This is how this state has survived. But now, all the factors that once helped it are now nullified.
In conclusion, India is not a historic entity neither a distinct nation, neither a civilizational continuty. Rather, it is a creation of Timurid and British Empire. Understanding this will make us understanding India better.
Read MoreAuthor: Purandhar Khilji
Theoretical General 26-June-2022 by east is risingগণতন্ত্রের আসতে আসতে পতন ঘটতে এবং গণতন্ত্রের মধ্য থেকেই স্বৈরতন্ত্রের উত্থান ঘটছে। এটা কোন অবাক হবার কিছু নেই, এটাই স্বাভাবিক পরিণতি। গণই গণতন্ত্রকে শেষ করবে। কীভাবে সেটা দেখে নেওয়া যাক।
গণতন্ত্রে সকল মানুষের একটি করে ভোটাধিকার দেওয়া আছে ও তার সাথে আরো অনেক অধিকার দেওয়া রয়েছে যেমন বাকস্বাধীনতা, ব্যাক্তিস্বাধীনতা, মানবাধিকার, ব্যাক্তিগত সম্পত্তির অধিকার ইত্যাদি। এবার কথা হল সিংহভাগ মানুষেই স্বাধীনতা ও অধীকার চান কিন্তু তা শুধুমাত্র নিজের জন্য। তারা বাকস্বাধীনতা চান কিন্তু সেটা নিজের পছন্দের কথার জন্যেই। মানে দেখা যাচ্ছে প্রত্যেকেই শুধুমাত্র নিজের এবং নিজের গোষ্ঠীর জন্যই সমস্ত অধিকার, স্বাধীনতা ইত্যাদি চান। আর বিরোধী বা প্রতিদ্বন্দ্বী বা অন্যান্যদের উপর কোন অধিকার মানেনই না বরং সুযোগ পেলেই তাদের অধিকার হরণ করে এবং জোরজুলুম খাটায়। এছাড়াও কোন অপছন্দের কথা শুনলে বা বিরোধীমত শুনলেই তাকে নানাভাবে কন্ঠরোধ করার চেষ্টা চলে। এই সেন্সরশিপ কালচার গণতন্ত্রে একদম বাধাধরা। এতে বাকস্বাধীনতার কোন মানেই থাকেনা। কারণ সবাইকেই সেই যদি একই প্রচলিত ভাঙ্গা ক্যাসেট বাজাতে হয় তো বাকস্বাধীনতা এমনিতেই শেষ। কারণ অপ্রিয়, অপছন্দের মতামতকে রক্ষা করার জন্যেই এই আইন। এই political correctness এর কালচার ই গণতন্ত্রের ইতি ডেকে আনবে। আরেক হ্যাপা হল এই নুনূভূতি আঘাতপ্রাপ্ত হওয়া। আমি মুখ খুললে কারুর না কারুর নুনূভূতি আঘাতপ্রাপ্ত হবেই। আর তারা সদলবলে চড়াও হবে। এতে তো সেই জঙ্গলরাজত্যের might is right চিন্তাই চলে এল। গণতন্ত্র এমন একটা খোরাকের পর্যায়ে চলে গেছে যে প্রতি মুহূর্তেই কোন কারুর না কারুর কোন না কোন ভাবাবেগে আঘাত লাগছে। সব ফেলে এখন ভাবাবেগ,অনুভূতি নিয়ে পড়েছে। এবং এতে প্রাপ্তবয়স্করাও দেখা যাচ্ছে শিশুসুলভ আচরণ করছে। এছাড়াও এই নুনুভূতিতে আঘাত লেগে খাপ বসানো থেকে নিত্যনতুন দাঙ্গা,খুনখারাপি,ভাঙচুর এসব করা হচ্ছে এবং এগুলোর সারাসরি জাস্টিফিকেশন দেওয়া হচ্ছে সেই তথাকথিত ব্যাক্তিস্বাধীনতার ঝাণ্ডাধারীরাই। অর্থাৎ মানুষের পাশবিকপ্রবৃত্তিকে সরাসরি চাগাড় দিয়ে মানবসভ্যতাকে সেই প্রাগৈতাহাসিক যুগে ফেরানো হচ্ছে। ন্যায়বোধের কোন স্থানই নেই আর গণতন্ত্রে, পুরো আবেগে আর পাশবিক প্রবৃত্তিতে। একটা ফেসবুকের কমেন্ট কোন যুক্তিতে অপরাধ হয় অথচ খুন,ধর্ষণ,দাঙ্গা এসব হয় না? আইনের শাসন ও ন্যায়বোধকেই তো তালানিতে বিসর্জন দেওয়া হল এতে। এছাড়াও এখন যত রাজ্যের সভ্যতাবিরোধী ভাবনার আঁতুরঘর গণতন্ত্র। প্রযুক্তিবিরোধিতা থেকে শুরু করে পুরুষবিদ্বেষ সমস্তকিছুর আঁতুরঘর এখন গণতন্ত্রগুলি। এছাড়াও গণতন্ত্র আরো একটি সুন্দর কাজ করে গেছে। সবাইকেই বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে যে তারা কোন না কোনভাবে ভিক্টিম, তাদের সব সমস্যার জন্য দায়ী অন্য কেউ এবং তারা সব একেকটা সোনার টুকরো। এতে একদিকে তৈরী হয়েছে entitlement syndrome আরেকদিকে তৈরী হয়েছে victim mindset। একদিকে খালি দাও দাও, ঘ্যানঘ্যানে-প্যানপ্যানে ছিঁচকাদুনে মার্কা মানসিকতা অপরদিকে সব দোষ অন্যের উপর চাপানো, দায় এড়ানো, অন্যের সাফল্যকে ঈর্ষা করা। এছাড়াও কথায় কথায় আঘাত পাওয়া, অল্পকিছুতেই ভেঙ্গে পড়া, সারাক্ষণ কাঁদুনি গাওয়া ইত্যাদি তো আছেই। এসব মিশিয়ে এক অদ্ভুত জীব তৈরী হচ্ছে যারা আজীবন শিশুই থেকে যাবে এবং চিরকালই পরনির্ভর থাকবে। এরা না পারবে সম্পর্ক গড়তে, না পারবে নিজের জীবন গোছাতে, না পারবে পরিবার গড়তে। আর শিশুদের তো প্রাপ্তবয়স্কদের সিস্টেম চলবে না, তাদের জন্য বরাবরই এক বড় অভিভাবকের দরকার। এতেই এক godfather এর উদয় হবে যে হবে স্বৈরশাসক। মজাটা এখানেই।
Political correctness, censorship, snowflake culture এর ফলে মুখ ফুটে কেউ সত্য কথা বলবে না। তার ফলে অসৎতা, মিথ্যেবাদীতার সংস্কৃতির জন্ম দেবে। এইজন্যে কেউ কাউকে বিশ্বাস করবে না। তাই শেষমেষ সবাই সেই bada baap এর উপরেই আস্থা রাখবে। মানুষের যখন মূল্যবোধ, ন্যায়বোধ হারাবে তখন কোনটা ঠিক কোনটা ভুল বিচার করার জন্যেও সেই big daddy এর দরকার পড়বে। আর যখন might is right এর জঙ্গলরাজত্ব চলবে তখন প্রাকৃতিক নিয়মেই যে যোগ্যতম ও সবচেয়ে শক্তিশালী সে বিজয়ী হবে এবং তার শাসন কায়েম করবে। এটাই প্রকৃতির সবচেয়ে মজার খেলা, সবাই প্রবৃত্তির বশে অন্যের উপর বলপ্রয়োগ করতে যায় কিন্তু ভাবেনা যে বাকিরাও তখন তার উপর একই কাজ করতে পারে।হাজার লোকের হাজার একটা অনুভূতি, সবার অনুভূতি রক্ষার দ্বায়িত্ব নিতে হয় যদি তাহলে আর কোন কাজই হবে না। তাতে পুরো সিস্টেমটাই ধ্বসে যাবে। তাই একটা কমন গাইডলাইন রাখতে হবে। আর সেটাও প্রতিষ্ঠা করবে ঐ উনিই। আর সর্বোপরি শিশুদের প্রাপ্তবয়স্ক বানানোর জন্যও তো সেই অভিভাবকের দরকার নাকী!!সেটাও ঐ স্বৈরশাসক করবে। এবার বলুন যার উপর এতগুলো বাড়তি দ্বায়িত্ব সে কেন চরম ক্ষমতা ভোগ করবে না!! অবশ্যই করবে। আর তাতেই জন্ম নেবে স্বৈরতন্ত্রের।
আরেকটা বিষয় হল একবিংশ শতাব্দীতে পুঁজির সঙ্গে উদারবাদের সংঘাত। চীনের বিশাল বাজারকে উপেক্ষা করতে রাজি নয় পশ্চিমী পুঁজি আর তাই চীনে উদারবাদী গণতন্ত্র আছে কি নেই তা নিয়ে তারা চিন্তিত নয়। আবার স্বল্প জন্মহারের ফলে পুঁজি একদিকে কম শ্রমিক পাবে আর অন্যদিকে কম ক্রেতা পাবে। ফলে পুঁজি চাইবে স্বল্প জন্মহারের সমস্যা থেকে বের হতে। আর তাই পুঁজি নারী স্বাধীনতাকে সঙ্কুচিত করতে চাইবে। চীনে উদারবাদী গণতন্ত্র নেই বলে চীনকে মেনে নিতে পারছেনা উদারবাদী গণতান্ত্রিকরা আবার নারী স্বাধীনতা খর্ব করাও তারা মানতে রাজি নয়। ফলে পশ্চিমী দুনিয়ার মধ্যেই পুঁজি বনাম উদারবাদী দ্বন্দ্ব বাড়ার সম্ভাবনা। এর ফলেও গণতন্ত্র খুব শীঘ্রই ধ্বংসের মুখে পড়তে চলেছে। এখানে এই দুই লেখা আরেকবার দেখে নিলে সুবিধে হবে পাঠকেরঃ http://www.eastisrising.in/view-news/45 ও http://www.eastisrising.in/view-news/40 ।
Author: Purandhar Khilji
Theoretical General 26-June-2022 by east is risingধর সকাল থেকে উঠে তুথ ব্রাশ থেকে শুরু করে গিজারে গরম জলে স্নান করে ভাল কাপড় পরে ব্রেকফাস্ট করে গাড়ি চড়ে পেট্রল খরচ করে অফিসে যাও। সেখানে নিজের ল্যাপ্টপ খুলে কাজ কর এবং টুকটাক খেতেখেতে, তারপরে লাঞ্চ কর এবং আবার কাজ কর এবং কাজ শেষে একটু হালকা খেয়ে আবার গাড়ি করে বাড়ি ফের। বাড়ি ফিরে টিভি মোবাইল দেখ, ইন্টারনেট ব্যবহার কর এবং শেষে ডিনার করে শুতে যাও। ছুটির দিন বেড়াতে যাও হোটেলে থাক, রেস্তরায় খাও। শরীর খারাপ হলে ওষুধ নাও।
এই রোজনামচায় তোমার দৈনন্দিন টুকিটাকির একটা বাস্কেট বানানো হল যেখানে খাবার, ল্যপ্টপ, টিভি, ইন্টারনেট পরিষেবা, কাপড়, গাড়ির খরচ থাকবে।
দেখা যাবে এই বাস্কেটের খরচ ভারতে ২০৬৫ টাকা হলে, মার্কিন দেশে ওই একই বাস্কেটের খরচ দাঁড়াবে ১০০ ডলার।
মানে বাস্কেটটাকে ভিত্তি ধরলে ১০০ ডলার = ২০৬৫ টাকা।
অর্থাৎ ১ ডলার = ২০.৬৫ টাকা।
একে আমরা বলি পারচেচিং পাওয়ার প্যারিটি।
কিন্তু বাজারে মুদ্রার মান ধরলে ১ ডলার = ৭৫ টাকা।
এই দামের হেরফের হয় কারণ মূলত জমির দাম।
জমি যেহেতু constant, তাই জমির দাম বারগেইনিং করে ট্রেডাররা কমাতে পারেনা। মানে যদি কোন পণ্যের দাম ভারতে বেশি হয় আর মার্কিন দেশে কম তাহলে ট্রেডারেরা সেই পণ্য কম দামে মার্কিন দেশ থেকে কিনে বেশি দামে ভারতে বিক্রী করতে যাবে, ফলে পণ্যটির যোগান ভারতে বেড়ে যাবে আর মার্কিন দেশে কমে যাবে আর তাই পণ্যটির দাম আগের চেয়ে কমে যাবে ভারতে আর বেড়ে যাবে মার্কিন দেশে। এই প্রক্রিয়া চলবে যতক্ষণ না দুই দেশেই সমান দাম হয়।
কিন্তু এই প্রক্রিয়া জমির ক্ষেত্রে খাটেনা।
কারণ ভারতে জমির দাম কম হলে আর মারকিনে বেশি হলে, ট্রেডাররা পারবেনা জমি ভারত থেকে এনে মার্কিন দেশে বিক্রী করতে।
আর তাই জমির দাম কখনো মার্কিন দেশ ও ভারতের মধ্যে সমান হবেনা।
অনেক বড়ো এলাকা জুড়ে থাকতে ভারতে যা খরচ হবে অনেক কম এলাকা জুড়ে থাকতে মার্কিন দেশে অনেক বেশি খরচ হবে।
তাই দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহার করার পণ্য-পরিষেবা নিয়ে যে বাস্কেট হবে তার মান সমান রেখে আমরা বলছি ১ ডলার = ২০.৬৫ টাকা।
কিন্তু জমির ক্ষেত্রে অনেক কম মানের ঘরে থাকলেও মার্কিনবাসীকে অনেক বেশি টাকা দিতে হবে। সেই জন্য মুদ্রার বাজারে ১ ডলার = ৭৫ টাকা হয়ে যায়।
বলা বাহুল্য জমি ছাড়াও প্লাম্বারের কাজ, নাপিতের কাজ, মুচির কাজ, গৃহ কর্মের কাজ, নারসিং-এর কাজ এমন হয় যে সেই পরিষেবা মার্কিন দেশে অনেক নীম্ন মানের হলেও তার দাম বেশি হবে। কারণ চাইলেই প্লেনে করে ভারতে এসে কেউ কম দামী কিন্তু মানে ভাল নাপিতের কাছে চুল কেটে যাবেনা।
এই জন্যে জীবনে মান বুঝতে গেলে দৈনন্দিন ব্যবহার্য পণ্য-পরিষেবার বাস্কেট দিয়ে বুঝতে হবে আর তাই ১ ডলার = ২০.৬৫ টাকা ধরতে হবে।
মুদ্রার বাজারের ১ ডলার = ৭৫ টাকা ধরা মানে হল কম মানের বেশি দামী জিনিস যা মার্কিন দেশে থাকার জন্যে যে কেউ নিতে বাধ্য হবে (যেমন জমির দাম, নাপিতের দাম, মুচির দাম, ইত্যাদি) সেগুলোকেও দৈনন্দিন জীবনে যুক্ত করা। যা মানুষে জীবনের মান সম্পর্কে ও তার সঞ্চয় করার ক্ষমতা সম্পর্কে ভুল বার্তা দেবে।
১.৫ কোটি টাকার চাকরি বলতে সংবাদ মাধ্যম বোঝাতে চাইছে ২ লক্ষ্য ডলার প্রতি বছর বাজার মূল্যে ১ ডলার = ৭৫ টাকা ধরে। এটা ভুল। আসলে ১.৫ কোটি টাকা নয়, ওটা হবে ১ ডলার = ২০.৬৫ টাকা ধরে ৪১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা প্রতি বছর।
তেমনি ১ কোটি টাকার চাকরি ভুল কথা আসলে ওটা বছরে ২৭ লক্ষ ৫৩ হাজার টাকা হবে।
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Theoretical General 25-June-2022 by east is risingFree Speech অধিকারটা এইকারণেই আসে যাতে জনপ্রিয় না, অপ্রিয় কথা এমন কথা বলার অধিকারকে রক্ষা করা যায়। জনমোহিনী কথা বলার জন্য কখনোই right of free speech আসেনি। কারণ সেইসব কথার জন্য কোন আইনত অধিকার সুরক্ষা লাগেনা। এছাড়াও অপ্রিয় সত্য কথা এবং কঠোর বাস্তব কথা কখনোই বেশীরভাগ সাধারণ মানুষ মেনে নেবেনা। সংবেদনশীলতা ও আবেগপ্রবণতার সাথে সবসময় যুক্তিবাদের সংঘর্ষ লাগে। যুক্তিবাদী ব্যাতিক্রমীদের বরাবরই আবেগপ্রবণ সাধারণ মানুষ অবদমিত করতে চেয়েছে কিন্তু শেষমেষ তাদের কথাতেই মানবসভ্যতার প্রগতি এসেছে।
এছাড়াও হাজার একটা লোকের হাজার একটা আবেগ। কাউকে যদি সবার ভাবাবেগ নিয়ে চিন্তা করতে হয় তাহলে পুরো জীবনটাই অতিবাহিত হয়ে যাবে। আর সবার ভাবাবেগ রক্ষাও যদি শাসনতন্ত্রকে করতে হয় তাহলে আর বাকী কিছুই করা হবেনা। ন্যায় সবার উর্দ্ধে এই ধারণাটাই শেষ হবে। দুনিয়া আবেগে চলেনা। আবেগতাড়িত সমাজ কখনো ন্যায়ভিত্তিক হতে পারেনা কারণ সেখানে ঠিক-ভুল, ন্যায়-অন্যায়ের কোন বিচর থাকবেই না। সেখানে সোজা পাশবিক প্রবৃত্তিতে চলবে।
এছাড়াও political correctness এ মিথ্যা, অসৎতা, কূট, ছল এইসবের আধিপত্য হবে। কারণ মুখ ফুটে সত্যটা কেউ বলবে না পাছে কারুর আঘাত লেগে যায়। তার ফলে অসৎ, দূর্নীতিপরায়ণ লোকেদের রাজত্ব হবে। সেসমাজ কেমন হবে সেটা বোঝাই যায়।
Hate speech কখনোই অপ্রিয় হয়না। Hate speech is always popular, likeable speech। কারণ যেকোন বিদ্বেষমূলক ভাষণেই হাজার হাজার লোক সেই হেটমঙ্গারকে অন্ধের মতো সমর্থন করে। সমস্ত বিদ্বেষমূলক চিন্তধারার জনপ্রিয়তা আছে। আর সেগুলো কখনোই যুক্তিবাদী স্পীচ হয়না। বরং হয় আবেগতাড়িত এবং তা সাধারণমনে শুনতে দারূণ লাগে। তাতেই লাখ লাখ লোক উদ্বুদ্ধ হয়।
সুতরাং hate speech আটকানোর নামে political correctness, censorship culture আনলে হেট স্পীচ কমেনা বরং বাড়ে। কারণ হেট স্পীচ এর মাধ্যমে আটকানো যায়না যেহেতু সেগুলো জনমোহিনী কথা। বরং এই কঠোর অপ্রিয় কথাগুলিকে আটকালে ও মুক্তচিন্তা রোধ করলে সমাজের ক্ষতি বই লাভ কিছু হয়না। পশ্চিমাবিশ্বে এই political correct repressive culture এর জন্যেই এখন ফ্যাসিবাদীদের উত্থান হচ্ছে কারণ তাদের আটকানোর জন্যে যুক্তিবাদী মানুষ আর নেই। একবার সমাজকে আবেগচালিত করলে সেই চক্র থেকে বোরোনো মুশকিল। বিদ্বেষমূলক মতাদর্শগুলো আবেগকেন্দ্রিক হয় কারণ তারা মানুষের আবেগ ও পাশবিক প্রবৃত্তিকে পুঁজি করেই শক্তিলাভ করে। সুতরাং একবার ঐ বাঁধ খুলে দিশে তারপরের প্লাবন এর ধাক্কাও খেতে হবে।
Read MoreAuthor: Purandhar Khilji
Theoretical General 11-June-2022 by east is risingমুক্তচিন্তার অন্যতম প্রধান শর্তই হল নিজের ক্ষুদ্র কুয়োর জগত থেকে বেরিয়ে এসে সার্বিকভাবে চিন্তা করা। কারণ জগৎ এক মহাসমুদ্র। নিজের ক্ষুদ্র গণ্ডিতে আবদ্ধ থাকলে কোনদিনই তাকে পাওয়া সম্ভব না। সার্বিকভাবে চিন্তা করতে গেলে আমাদের আগে নিজেদের বদ্ধমূল চিন্তাভাবনা,ধ্যানধারণা,প্রচলিত দৃষ্টিভঙ্গির বেড়াজাল ভেঙ্গে বেড়িয়ে আসতে হবে। যুক্তি অবশ্যই প্রাধান্য পাবে। যুক্তি ছাড়া কোন চিন্তাই হবেনা। আবেগ,সংবেদনশীলতা,হুজুগ এসবের বশে কখনোই মুক্তচিন্তা করা সম্ভব না। বরং এর দ্বারা চালিত হলে মানুষ ক্রমে পশুতেই রূপান্তরিত হয়(এ নিয়ে আগেও লিখেছি, পরে আরো লিখব)।
আরো যেটা প্রয়োজন সেটা হল মোটা চামড়া অর্থাৎ অপ্রিয় সত্য হজম করার ক্ষমতা। এটা হতেই পারে আপনি এতদিন যেটা সত্য বলে জেনে এসেছেন সেটা আদতে মিথ্যা। যেটা আপনি খারাপ বলে জানতেন সেটা আদতে খারাপ না। আপনি যে প্রচলিত ন্যারেটিভটা জেনে এসেছেন সেটা ভুল হলে সেটাকে স্বীকার করাও মুক্তচিন্তার মধ্যেই পড়ে,কারণ একপেশে ন্যারেটিভের উপর ভিত্তি করে মুক্তচিন্তা হয়না। এছাড়াও প্রচলিত স্টিরিওটাইপ,জেনারালাইজেশন দিয়ে কোন চিন্তাশীল মুক্তমন তৈরী হয়না। মোদ্দা কথা হল বস্তাপচা স্টিরিওটিপিকাল ভাঙ্গা রেকর্ড বাজিয়ে কোন মুক্তচিন্তা সম্ভব না।
আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল অন্যের মতের প্রতি সহনশীলতা। আপনি যদি চান আপনার মতামতকে সম্মান করুক বাকিরা তাহলে আপনাকেও বাকিদের মতকে সম্মান করতে হবে।
এছাড়াও চিন্তাধারা সময়োপযোগী হতে হবে। 1820 এর চিন্তাভাবনা 2020 তে প্রযোজ্য নাও হতে পারে। দুনিয়া ক্রমাগত এগিয়ে যায়। তাই তার সাথে মানসিকতারও অগ্রগতি লাগে।
আরো যে জিনিসটা দরকার সেটা হল non-conformity। প্রথাগত, পুঁথিগত বিদ্যার হাত ধরে কখনোই মুক্তচিন্তক হওয়া সম্ভব না কারণ সেটা ঐ প্রচলিত স্রোতের প্রবাহের সাথে ভেসে যাওয়াই হয়। সবাই বলছে তাই এটা ঠিক বা এটা জেনে এসেছি বলে এটাই ঠিক এটা কোন মুক্তচিন্তকের মানসিকতা না।
এবার কথা হল অনেকেই নিজেকে উদার, মুক্তচিন্তক বলেন কিন্তু কার্যটা করেন উল্টো।
যদি কারুর প্রচলিত ন্যারেটিভ চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতেই সে চিরাচরিত আবেগী প্রতিবর্ত ক্রিয়া দেখান তাহলে সে কখনোই মুক্তচিন্তক নয়। যাদের কাছে তাদের ব্যাক্তিগত আবেগ, সংবেদনশীলতা বাস্তব, যুক্তির চেয়ে বেশী গুরুত্বপূর্ণ হয় তাহলে সে কখনোই মুক্তচিন্তক না। ন্যারেটিভ, আবেগ, সংস্কার কখনো যুক্তির স্থান নিতে পারেনা। এছাড়াও বহুমানুষ পেয়ে যাবেন যে যেই আপনার কাছে যুক্তিতে হেরে গেল অমনি সে আপনার উপর shaming language, নীতিপুলিশি, ব্যাক্তি-আক্রমণ।, কুৎসা থেকে হুমকি-ধমকি পর্যন্ত দিয়ে দিচ্ছে। এরা অবশ্যই মুক্তচিন্তক না। এরা সেই এক গতানুগতিক মানসিকতা নিয়ে চলে আর সেটা ধাক্কার সম্মুখীন হলেই তখন pavlovian reaction দেখায়। এটা তাদের ভাবনা-চিন্তার অক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ।
সুতরাং সমস্ত কিছুর মত মুক্তচিন্তারও নিজস্ব শর্ত ও পরিবেশ রয়েছে যার মধ্যেই সে বেড়ে ওঠে। উন্নত, স্বাধীন সমাজ তৈরী করতে মুক্তচিন্তার পরিবেশ আবশ্যক। কিন্তু তা তৈরী করার জন্যও যে prerequisites প্রয়োজন তা অবশ্যই মনে রাখা প্রয়োজন।
Read MoreAuthor: Purandhar Khilji
Theoretical General 11-June-2022 by east is risingএক অজানা জ্ঞানী ব্যাক্তি বলেছিলেন- Freedom is good for some, Not for all। এর অন্তর্নিহিত অর্থ আগে অত পরিস্কার হতনা, এখন যত দিন যাচ্ছে ধীরে ধীরে পরিষ্কার হচ্ছে। কারণ বেশীরভাগ সাধারণ মানুষকে স্বাধীনতা প্রদান করলে তারা সেই স্বাধীনতা নিয়ে কী করবে তা বুঝে উঠতেই পরে না। কারণ মানবসভ্যতার অন্যতম প্রধান ভিত্তি হল code of conduct, অনুশাসন। সাধারণ মানুষকে কঠোর অনুশাসন, মূল্যবোধ, ন্যায়বোধের শৃঙ্খলে আবদ্ধ করলে তবেই সভ্য সমাজের গঠন সম্ভব। rights নিয়ে অনেক চর্চা হয়, কিন্তু এবার responsibility, accountability নিয়ে চর্চার প্রয়োজন। এইসমস্ত শৃঙ্খল ভেঙ্গে দিলে মানুষের পাশবিক প্রবৃত্তি জেগে ওঠে। এইজন্যই উদারবাদী, নৈরাজ্যবাদী ইত্যাদি টাইপের মতাদর্শ কখনোই long-term এ ভালো ফল দেয় না। নৈরাজ্য মানুষের আদিমতম অবস্থা। এই অবস্থা কাটিয়ে আমরা সুশৃঙ্খলিত সমাজ,রাষ্ট্রব্যাবস্থা ইত্যাদি গড়তে পেরেছি বলেই আজ আমরা সভ্য। কারণ মানুষের এই পাশবিক প্রবৃত্তি দমন করে মানবিক মূল্যবোধের জন্ম দেওয়াই সভ্যতার ভিত্তি স্থাপন সম্ভবপর হয়েছে। power structure ও rule of law এর প্রয়োজনও এইকারণেই, নইলে might is right এর সেই আদিম জঙ্গলরাজ্যেই মানুষ পড়ে থাকত। কিন্তু যারা ব্যাতিক্রমী, অসাধারণ, মহামানব ইত্যাদি তাদের জন্য societal code এর দরকার নেই। কারণ তারা তাদের পাশবিক প্রবৃত্তিকে নিজেরাই দমন করে ফেলেছেন। সেই কারণেই তারা অসাধারণ হতে পেরেছেন। এনাদের বিচরণভূমি সম্পূর্ণ অন্য এক বিশ্বে যার নাগালও সাধারণদের বাইরে। এই অসাধারণদের হাতেই মানবসভ্যতার চাবিকাঠি। এরা সভ্যতার চাকাকে এগিয়ে নিয়ে যান। তাই এদের উপর সাধারণ মানুষের জন্য তৈরী অনুশাসন চাপালে ফল উল্টো হয়। এছাড়াও সাধারণরা বরাবরই ব্যাতিক্রমী, অসাধারণদের প্রতি ঈর্ষাপরায়ণ হয় এবং তাদের কে টেনে নামানোর চেষ্টা করে প্রতি মুহূর্তে। যে সমাজ যত বেশী করে তারা তত বেশী পশ্চাৎপদ। সভ্য সমাজ সাধারণদের এই প্রবৃত্তিকে দমন করে রাখে। তাই তারা উন্নতি করে। তাই যেকোন সমাজ যখন সাধারণ মানুষকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করছে ও অসাধারণদের উন্মুক্ত করছে তখন বুঝতে হবে তারা উন্নতির পথে ধাবিত হচ্ছে।
Read MoreAuthor: Purandhar Khilji
Theoretical General 11-June-2022 by east is risingজাতি, বর্ণ, ধর্ম, ভাষা, লিঙ্গ, শ্রেণী, জাতীয়তা ইত্যাদি সবকিছুই মানুষের বিভিন্ন স্বত্বা। সবকিছুরই বাস্তব বুনিয়াদ আছে এবং কোনটাই মিথ্যা না। এর মধ্যে লিঙ্গপরিচয় ব্যাতীত কোন পরিচয় স্থায়ী না। বর্ণও মিশ্রণের ফলে পরিবর্তন হতেই পারে। বাকিসকল পরিচয় পরিবর্তনশীল। সকল পরিচয়েরই বস্তুগত অবস্থানের উপর ভিত্তি করে হয়। এমনি এমনি আসেনা। বিভিন্ন সময়ে মানুষের বিভিন্ন স্বত্বা গুরুত্বপূর্ণ হয়। দুই দেশের দ্বন্দ্বে জাতীয় পরিচয় মুখ্য হয়ে ওঠে। ধর্মাচারের প্রশ্নে ধর্মপরিচয় মুখ্য হয়ে ওঠে। লিঙ্গের ইস্যুতে অবশ্যই লিঙ্গ ইস্যু মুখ্য হয়ে ওঠে। এভাবেই পরিস্থিতি অনুযায়ী বিভিন্ন স্বত্বার প্রাধান্য হয়।
আরো একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল এই সকল স্বত্বাই একে অপরের সঙ্গে কোন না কোনভাবে সম্পর্কযুক্ত। বিচ্ছিন্ন কোনটাই না। অর্থোভক্স খ্রীষ্টধর্মই রুশ জাতিস্বত্বার জন্ম দেয়। জরাথুষ্ট্রমত পারস্যের জাতিস্বত্বা প্রদান করে।আনুমানিক সপ্তদশ থেকে ঊনবিংশ শতক অবধি জাতিরাষ্ট্রের জন্ম দেয় বুর্জোয়ারা। বিংশ শতক থেকে সেই একই কাজ করে শ্রমিক,কৃষকশ্রেণী। আবার ধর্ম ও জাতি অনুযায়ী শ্রেণীবিন্যাস ও লিঙ্গের সম্পর্ক পাল্টায়। আমরা যে ট্রাডিশনাল মনোগেমাস ম্যারেজ বলতে যা বুঝি সেটা ইউরোপে খ্রীষ্টধর্ম বিকাশের সাথে আসে। ইউরোপে ধনতন্ত্রের ক্রমাগত বিকাশের পেছনেও প্রোটেস্টান্ট সংস্কারের ভূমিকা ছিল। সুতরাং এর থেকেই দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন স্বত্বা কীভাবে ঐতিহাসিকভাবেই একে অপরের সাথে সম্পর্কিত হয়ে থেকেছে।
বৈষম্যের ক্ষেত্রেও কোন বৈষম্য অগ্রাধিকার পাবে সেটাও বস্তুগত অবস্থা, পরিস্থিতি অনুযায়ী বিচার করতে হবে। যেমন আমেরিকতাতে এটা কখনোই বলতে পারিনা যে মিশেল ওবামার থেকে একটা গৃহহীন,বেকার শ্বেতাঙ্গ পুরুষ বেশী প্রিভিলেজড। বিভিন্ন দেশের মধ্যে বৈষম্য বেশী গুরুত্বপূর্ণ না নিজের দেশের মধ্যে আর্থিক বৈষম্য বেশী এটাও বিচার্য্য। ট্রাম্প থেকে ব্রেক্সিট, শ্রেণীবিশ্লেষণ ও সাম্রাজ্যবাদ ফ্যাক্টর এইসব না দেখে ফ্যাসিস্ট দাগানো মূর্খামি। সুতরাং কোন বৈষম্যকে প্রাধান্য বেশী দেবো এটাও অনেককিছু দেখে যুক্তি দিয়ে বিবেচনা করব।
কিন্তু আমাদের রাজনৈতিক থেকে তাত্বিক সকল বিশ্লেষক এই একই ভুল করে এসেছেন। একটি বা দুটি স্বত্বার উপর ফোকাসকরে বাকিগুলিকে গৌণ করে অবস্থার বিবেচনা না করে বারবার ভুল করেছেন।আমরা সেই ভুলের মাসুল দিচ্ছি।
সুতরাং যেকোন সঠিক রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, নৈতিক বিশ্লেষণ করতে গেলে মানুষের সবকটি স্বত্বাকেই বিচার্য্য হিসাবে ধরতে হবে।
Read More Theoretical General 11-June-2022 by east is rising'A free society must be heavily policed and surveillanced society'- এক নাম না জানা মনীষীর ঊক্তি। কথাটার যদি গভীরে যাই তাহলে এর তাৎপর্যটা বোঝা যাবে।
যদি ব্যাক্তিস্বাধীনতা রক্ষা করতেই হয় তাহলে চরম আইনের শাসন ও সামাজিক অনুশাসনের অবশ্যই দরকার। কারণ স্বাধীনতা বস্তুটি যে কী সেটাই বেশীরভাগ মানুষের বোঝার বাইরে। নিজের ইচ্ছামত যা খুশী করা মোটেও স্বাধীনতা হতে পারে না। তোমার স্বাধীনতা তখন পর্যন্তই প্রযোজ্য যতক্ষণ পর্যন্ত না তুমি অন্যের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করছ। আমাদের মনে যে প্রচলিত ধারণা যে শাসকগোষ্ঠীই জনগণের স্বাধীনতা হরণ করে সেটা সম্পূর্ণ ঠিক না। কারণ এক মানুষেই অন্য মানুষের স্বাধীনতা হরণ করে। এটাই মানুষের আদিম প্রবৃত্তি-অন্যেকে দাবিয়ে নিজে উপরে ওঠা। এর সাথে ঈর্ষাও মানুষের অন্তর্নিহিত স্বভাব। অসফলরা সফলকে ঈর্ষা করে, নির্ধনরা ধনীদের ঈর্ষা করে, সাধারণরা মেধাবীদের ঈর্ষা করে, রূপহীনরা রূপবান/বতীদের ঈর্ষা করে প্রভৃতি। তাছাড়াও আবেগ,হুজুগ,impulse কে সিংহভাগ মানুষেই নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেনা। এর দ্বারা পরিচালিত হলেই পাশবিক প্রবৃত্তি সামনে আসে। মানুষ আজ যাকে দেবতা বানাবে কাল তারই গলা কাটতে ছুটে আসবে। এসবের নিয়ন্ত্রনের জন্য অবশ্যই কঠোর, effective নিয়মাবলী, শাসনতন্ত্র ও শাসকের দরকার। শাসক যদি জনগণের উপর ক্ষমতা ছেড়ে দেয় তাহলে উক্ত প্রাকৃতিক নিয়মের কারণেই সে সমাজ মুক্ত সমাজ তো হবেই না বরন এক অসভ্য,পশ্চাৎপদ, মাৎস্যন্যায়,জঙ্গলরাজ্য সমাজ তৈরী হবে যেখানে might is right ই মূল জীবনদর্শন হবে। এছাড়াও এক বিশাল সংখ্যক মানুষেই প্রভু-ভৃত্য সম্পর্কেই বিশ্বাস করে। তাই তাদের হাতে ক্ষমতা গেলেও সেই আদিম, পশ্চাৎপদ সমাজই পাব। তাই মুক্ত সমাজ বাঁচাতে গেলে অবশ্যই দরকার-strong,effective,powerful,meritocratic state। যোগ্য শাসকের হাতেই শাসন থাকতে হবে। ব্যাক্তিস্বাধীনতা, বাকস্বাধীনতা ইত্যাদি হরণ হয় mass rule এই। mass ই political correctness, offensive speech ইত্যাদির মাধ্যমে যখনখুশি যারতার জীবন বরবাদ করে দেয়। তাই এই mass কে দমানোর জন্য শক্তিশালী ও উপযুক্ত শাসনতন্ত্রের খুব দরকার।
তাই যদি প্রত্যেক মানুষের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও অধিকার সুরক্ষিত রাখতে হয় তাহলে শক্তিশালী শাসকের প্রয়োজন আবশ্যিক।
Read MoreAuthor: Purandhar Khilji
Theoretical General 11-June-2022 by east is risingকোন দেশ,কোন সমাজ তখনই উন্নতি করে যখন সে শ্রমকে সম্মান করে। শ্রমকে সম্মান করলে তবেই উন্নতি সম্ভব কারণ তাতেই মুখ্য,বুনিয়াদী কাজগুলোর সম্মান বাড়ে ফলে মানুষের সেগুলো করতে উৎসাহী হয়। ফলে নেট প্রোডাক্টিভিটি বাড়ে।
যেসমস্ত কাজকে আমরা তথাকথিত ছোট কাজ বলে মনে করি আদতে সেগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কায়িক শ্রম থেকে শুরু করে চাষবাষ থেকে খননকার্য, এই সকলকাজই সমাজ থেকে অর্থনীতিতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এগুলির যথাযথ সম্মান,স্বীকৃতি উন্নতির জন্যে আবশ্যক। কারণ এইসকল কাজেই বেশীসংখ্যক মানুষের উপার্জনের বন্দোবস্ত করা সম্ভব। এর ফলে বেকারত্ব কমে, আয় বাড়ে,অর্থনীতির উন্নতি হয়, জীবনযাত্রার মানও বেড়ে যায়। ফলস্বরূপ উচ্চস্তরের পেশাগুলিতে প্রতিযোগীতাও কমে এবং ইঁদুরদৌড় বন্ধ হয়। ফলস্বরূপ সেখানে কর্মীদের দরকষাকষির ক্ষমতাও বেড়ে যায়। তাতে আয় থেকে জীবনযাত্রার মান থেকে সুযোগ সবকিছু বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও সার্বিকভাবে ইঁদুরদৌড় বন্ধ হবার কারণে মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে ও মানুষ জীবন উপভোগ করতে পারে। এছাড়াও সৃজনশীলতার অনেক বেশী সুযোগ পাওয়া যায়।
যেখানে এইসমস্ত পেশাগুলিকে সম্মান করা হয় না সেখানে দারিদ্য,বেকারত্ব বাড়তেই থাকে এবং উচ্চশিক্ষা থেকে উচ্চস্তরের জীবিকাগুলিতে সবাই ইঁদুরদৌড়ে সামিল হয়। ফলে সেগুলির মান কমে ও সেখানে শ্রমিকদের দরকষাকষির ক্ষমতা এমনিতেই কমে যেহেতু যোগান বেশী। ফলে জীবনযাত্রার মানও হয় নিম্ন। আর সেখানেও গুটিকয়েক পদের জন্য অতিরিক্ত লোকের প্রতিযোগীতার জন্যে সুযোগ কমে। তার জন্যে নেহাত পেটের দায়েই ভৃত্যের জীবন বেছে নিতে হয়।
এবার competitive advantage এর কথাতে আসা যাক। অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের প্রতিযোগীতামূলক সুবিধা থাকে এই নীল-কলারের পেশাগুলিতেই। নিম্নস্তরের পেশাতেই তারা প্রতিযোগীতাতে হারাতে পারে উন্নত দেশকে। তাই তাদেরকে বিশ্বে প্রতিযোগীতা করতে হলে এইসমস্ত পেশাতেই করতে হবে।
সর্বোপরি কাজের ছোটবড় না করলে কাজকে কাজ হিসাবে দেখলে সকল মানুষের অর্থনীতিতে যোগদান করে উপার্যন করার সম্ভাবনা বাড়বে।
পেশার উঁচুনীচু ভেদ আর্থসামাজিক কাঠামোর উপরে নির্ভর করে। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পেশার সামাজিক স্তরে উত্থান পতন হয়েছে। স্তরবিভক্ত সমাজে নিম্নস্তরের পেশার সম্মান দেওয়া হয়না। সেখানে নিম্নস্তরের মানুষ প্রোডাক্টিভ হলেও উন্নতির সুযোগ নেই। তবে স্তরীভূত সমাজ না হলেও যে নীল-কলারের পেশার কোন সম্মান থাকবে তার কোন মানেই নেই। কোন কায়িক শ্রমিকের পেশার কোন সামাজিক সম্মান নেই কিন্তু তার সন্তান যদি কোন শ্বেত-কলারের পেশাতে ঢোকে তখন আবার তার সামাজিক সম্মান এসে গেল। অর্থাৎ মোবিলিটি থাকলেও যে পেশার সম্মান আসবে তার কোন অর্থ নেই। এর জন্যে প্রয়োজন সামাজিক মানসিকতার পরিবর্তন। এছাড়াও আর্থিক মোটিভেশন একটা গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর। এইসকল তথাকথিত নিম্নস্তরের পেশাতে যদি আয় বৃদ্ধি পায় তাহলে সামাজিক সম্মান ধীরে ধীরে বাড়তে থাকবে। আবার সামাজিক সম্মান বাড়লে লোকে এদিকে যেতে নিরুৎসাহিত হবেনা। ফলে এটা একটা সাইক্লিকাল প্রসেসে চলবে।
সুতরাং উন্নত হতে গেলে এই নীল-কলারের পেশা,কায়িক শ্রমের সম্মান, স্বীকৃতি অত্যন্ত জরুরী পদক্ষেপ। যারা এগুলোকে হেয় করে, নাঁক সিঁটকোয় তারা তিমিরেই পড়ে থাকবে। উপার্জনের স্কোপ বাড়ালে তবেই অগ্রগতি সম্ভব।
Read MoreAuthor: Purandhar Khilji
Theoretical General 11-June-2022 by east is risingনারীর শরীরের ওপর একচেটিয়াকরণ না করে তা অনেক পুরুষের মধ্যে ভাগ করে নিলে পুরুষের মধ্যেকার সঙ্গমের জন্যে লড়াই কমানো সম্ভব পুরুষের কাছে নারী রাইভাল গুড। মানে এক পুরুষ এক নারীর সঙ্গে সঙ্গম করে তার গর্ভে নিজের সন্তান আনতে পারলে অন্য এক পুরুষ পরের অনেকগুলো দিন (মানুষের ক্ষেত্রে ১০ মাস) আর সেই নারীর গর্ভে নিজের সন্তান উৎপন্ন করতে পারবেনা। তাই কোন বিশেষ নারীকে পেতে পুরুষকে যুদ্ধ করতে হয়। নারীর ক্ষেত্রে পুরুষ নন রাইভাল গুড। মানে এক নারী এক পুরুষের থেকে সন্তানসম্ববা হলে অন্য এক নারী পরের দিনই সেই পুরুষের সঙ্গে সঙ্গম করে সন্তানসম্ভবা হতে পারে। তাই নারীকে কোন বিশেষ পুরুষকে পেতে যুদ্ধ করতে হয়না। মনে রাখা দরকার নারীর তাই অনেক বেশি উচ্চ পুরুষকে পাওয়ার সম্ভাবনা। পুরুষের উচ্চ নারী পাওয়া ততটাই কঠিন। মানুষ কিন্তু এই অন্তরায় ভাঙতে সক্ষম হয় সেই আদীম যুগে। মানুষ বুদ্ধি করে গ্রুপ কেন্দ্রিক যৌনতা নিয়ে আনে। এক নারীকে গ্রুপের সকল পুরুষই পেতে পারে সঙ্গমের জন্যে। কার বাচ্চা হল তা গুরুত্বপূর্ণ নয়। মা কে তা জানা আর জনক অজানা। বাচ্চা দেখভালের দায়িত্ব নিত সমগ্র গ্রুপ, কোন জনক পুরুষ নয়। এর অর্থ মানুষ কিন্তু পুরুষের মধ্যেকার সঙ্গমের জন্যে লড়াইকে অনেকটাই কমিয়ে ফেলতে সক্ষম হয়। মানুষ যে প্রকৃতির সঙ্গে দ্বন্দ্বে জয়ী হয় তার পেছনে এই পুরুষের মধ্যেকার সঙ্গমের জন্যে লড়াইকে কমাতে পারা একটা বড় কারণ। মজার বিষয় স্থায়ী সম্পত্তি যেমন গবাদি পশু আর জমির গুরুত্ত্ব যত বাড়তে থাকে, পুরুষের মধ্যে নিজের ঔরষজাত সন্তানকেই নিজের অর্জিত ব্যক্তিগত সম্পত্তি উত্তরাধিকারসূত্রে দান করা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। এর ফলে নারীর শরীর ও গর্ভের ওপর একচেটিয়া অধিকার দাবি করে সম্পত্তিবান পুরুষ। কারণ এই শরীরি অধিকার না থাকলে গর্ভে নিজের ঔরসজাত সন্তানই আসবে তার গ্যরান্টি নেই। ফলে মানুষ আবার পুরুষের মধ্যেকার সঙ্গমের জন্যে লড়াইকে ফিরিয়ে আনে। স্বামী স্ত্রীর সংসার তৈরি হয়। বাচ্চার দায়িত্ব বর্তায় পিতা বা জনকের ঘাড়ে। এবার প্রশ্ন আমার। আজ আর অধিকাংশ পুরুষের হাতেই স্থায়ী উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিগত সম্পত্তি নেই। থাকার জন্য বাড়ি বা চড়ার গাড়ি ভোগের জন্যে পুনরুৎপাদনের জন্যে নয়। এখন কি সময় আসেনি আবার পুরুষের মধ্যেকার সঙ্গমের জন্যে লড়াইকে কমিয়ে আনার? অর্থাৎ নারীর শরীরের ওপর একচেটিয়াকরণ না করে তা অনেক পুরুষের মধ্যে ভাগ করে নেওয়ায় অপরাধ কোথায়? বরং তা নারীর বারগেইনিং শক্তি অনেক কমিয়ে দেবে। বাচ্চাদের দায়িত্বও নিতে হবে সমাজকে কোন পিতা বা জনককে নয়।
https://www.sangbadpratidin.in/bengal/royal-bengal-tiger-spotted-in-south-24-parganas-kumirmari/?fbclid=IwAR1SAJJ1AGcQEbesPFMC620aBQDwX9IL2k1uEfhL5WxXmEuOWdZ2sGJL-B8
Author: Saikat Bhattacharya
Theoretical Sex War 03-January-2022 by east is rising1. Commodity Analysis shows a society beyond money motivation awaits and such a society is superior to a society where money motivation works to its full potential.
2. Theory of Exploitation shows contradiction between Capitalist class & Working class.
3. Theory of Over Production shows why workers are bound to revolt.
4. Theory of Imperialism shows how global inequality in development of capitalism prevents workers' revolt as told by Marx while revolution by nationalists peasantry workers (worker leadership best) in less developed countries is possible.
5. Stalin and Mao militarily defeated Imperialists.
6. Deng Jiang and Hu show how socialist govt of less developed countries can reduce gap with advanced countries using the later's technology market and liquidity.
7. Xi showing how to outgrow advanced capitalist countries and help rest of less developed countries to reduce gap with advanced countries.
8. 21st century Third Wave of Revolutions will make less developed countries' political condition ideal for reducing this gap with advanced countries.
9. Low Birth Crisis, Ecological Crisis are among many things that future Revolutionaries need to tackle.
10. Final goal will be to reach a society where every human has to do voluntary activities only and hence there is no money motivated activities, rather all activities are intrinsically motivated. (Distributing Surplus Value to Employees is not our objective.)
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Theoretical General 30-December-2021 by east is risingভূমিকা
আমরা শেষ দুটো লেখায় যা বলতে চেয়েছিলাম তার সারমর্ম হল চীনের উত্থান বিশ্ব অর্থনীতির ভারসাম্য বদলে দিয়েছে এবং এর ফলে মার্কিন সামরিক আধিপত্য মুনাফা ও বাজারের পক্ষে সমস্যা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এর স্বাভাবিক পরিণতি হচ্ছে বিশ্ব-ভূরাজনীতিতে অস্থির অবস্থা। বিংশ শতাব্দীর সূচনাতে জার্মানি ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উত্থান ঠিক যেভাবে ব্রিটিশ কেন্দ্রিক ভূ-রাজনীতিকে টলিয়ে দিয়েছিল, আজ চীনের উত্থানও একইভাবে মার্কিন কেন্দ্রিক ভূ-রাজনীতিকে টলিয়ে দিয়েছে। বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে অস্থির অবস্থাকে কাজে লাগিয়েছিলেন লেনিন, একইভাবে একবিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধ বহন করছে নতুন বিপ্লবের ইঙ্গিত। এই পরিস্থিতি কাজে লাগাতে গেলে আমাদের বর্তমান পরিস্থিতি বুঝতে হবে, অতীত থেকে শিক্ষা নিতে হবে এবং তার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ এমন রাজনৈতিক মতাদর্শের ওপর বিপ্লবী সংগঠন দাঁড় করাতে হবে। আগের দুটো লেখায় আমরা বোঝার চেষ্টা করেছি বর্তমান পরিস্থিতি। এইবার আমরা বোঝার চেষ্টা করব অতীতের কিছু শিক্ষাকে। মাও-এর চিন্তাধারার ওপর দাঁড়িয়েই আমরা এই আলোচনা করব।
মাও-এর চিন্তা
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে সোভিয়েত গোটা বিশ্বের কাছে আন্তর্জাতিক শ্রমিক শ্রেণীর আদর্শ, সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী পরাশক্তি ও দ্রুত শিল্পায়ণের রোল মডেল হিসেবে গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠে। সমাজতন্ত্র প্রচণ্ডভাবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে সমগ্র বিশ্বে। স্তালিন এরকম সময়ে সমাজতান্ত্রিক সমাজের অর্থনৈতিক নিয়ম ব্যক্ষা করার চেষ্টা করেন “সোভিয়েতের অর্থনৈতিক সমস্যা” বইতে। স্তালিনের মতে সমাজতান্ত্রিক উৎপাদন পুজিবাদী উৎপাদন থেকে আলাদা একটি উৎপাদন ব্যাবস্থা। সমাজতান্ত্রিক উৎপাদন ব্যাবস্থা মুনাফার উদ্যেশ্যে সংগঠিত হয়না বরং ব্যাবহার মূল্য মাথায় রেখে উৎপাদন করে। পণ্য, অর্থ, মূল্য, মজুরি, বেতন, ইত্যাদি রূপের দিক থেকে এক থাকলেও গুণের দিক থেকে আলাদা। বাজারের জন্য উৎপাদন না হয়ে পরিকল্পনা মতো উৎপাদন হয় বলে সমাজতান্ত্রিক উৎপাদন পণ্য উৎপাদন (সম বিনিময় মূল্যের জন্য যে উৎপাদন হয়) নয়, তা দ্রব্য উৎপাদন মাত্র। মাও স্তালিনের ভুলগুলো নিয়ে বিষদে আলোচনা করেন “সোভিয়েতে সমাজতান্ত্রিক সমস্যার ওপর নোট” নামক বইতে। মাও ব্যক্ষা করেন যে পরিকল্পনা উপরিকাঠামোর (superstructure) অংশ কোন অর্থনৈতিক ভিত্তি (base) নয়। সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতির ভিত্তি (base) হল পুঁজিবাদের মতোই পণ্য উৎপাদন। অর্থাৎ শ্রম অনুসারে প্রাপ্তি (payment according to ability) হল সমাজতান্ত্রিক স্তরের বর্তমান অর্থনৈতিক ভিত্তি। এই ভিত্তি সম্পূর্ণ পুঁজিবাদী ভিত্তি। শুধুমাত্র উপরিকাঠামোর অংশ পরিকল্পিত অর্থনীতির মাধ্যমে এই পুঁজিবাদী ভিত্তি বদলানো যায়না। শ্রম অনুসারে প্রাপ্তি থেকে প্রয়োজন অনুসারে প্রাপ্তি-তে (payment according to needs) উত্তরণ হওয়াই হল পুঁজিবাদ থেক কমিউনিস্ম-এ পৌছনো। আর এই উত্তরণকালীন অধ্যায় হল সমাজতন্ত্র। মাও-এর মতে এই উত্তরণের জন্য দুটো শতকের লড়াই যথেষ্ট নয়। পুঁজিবাদ সামন্ততন্ত্রকে পরাজিত করে প্রতিষ্ঠিত হতে সময় নিয়েছে ছয় খানা শতক। তাই কেবল দুটো শতকের লড়াই (উনবংশ শতাব্দী ও বিংশ শতাব্দী) পুঁজিবাদ থেকে কমিউনিস্ম-এ উত্তরণের জন্য যথেষ্ট নয়। মাও ব্যক্ষা করেন যে সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতির ভিত্তি যেহেতু পুঁজিবাদী শ্রম অনুসারে প্রাপ্তি, সেইহেতু পুঁজিবাদী শক্তিগুলো অবশেষাত্বক ভাবে রয়ে যায়নি বরং অর্থনৈতিক ক্রিয়ার ফল হিসেবে পূর্ণ সজীবতা নিয়ে টিকে আছে। তাই পুঁজিবাদীরা পুনরায় ক্ষমতা দখল করার চেষ্টা চালাবে এবং বহু ক্ষেত্রেই সফল হবে। ঠিক সেভাবেই উৎপাদন শক্তি (production forces) ক্রমেই বেঁড়ে চলবে এবং পুঁজিবাদী সামাজিক সম্পর্কগুলোর সঙ্গে তার দ্বন্দ্ব দেখা দিতেই থাকে। আর এই দ্বন্দ্বকে কাজে লাগিয়েই কমিউনিস্টরা পুনরায় রাজনৈতিক ক্ষমতা দখলের চেষ্টা চালাবে এবং পরিস্থিতি অনুকূলে এলে সফলও হবে। এই লড়াই বহু শতাব্দী ধরে চলবে এবং প্রতিটি শতাব্দীর লড়াই আস্তে আস্তে আকাঙ্ক্ষিত কমিউনিস্ম-এর দিকে মানব সমাজকে নিয়ে যাবে। এই এগিয়ে চলার পথে অনেকবার জয় আসবে, অনেকবার পরাজয় আসবে, নতুন নতুন প্রতিষ্ঠানের জন্ম হবে, নতুন নতুন সমস্যা উঠে আসবে। বিশেষ সময়ে বিশেষ সমস্যাগুলোর সম্মুখীন হওয়া ও বিশেষ সুযোগগুলোকে কাজে লাগিয়ে বিশেষ কিছু সাফল্য পাওয়াই হবে সেই বিশেষ সময়ের লক্ষ্য। তাই মাও-এর ব্যাক্ষা ধরে বলা যায় একবিংশ শতাব্দীতে মার্কিন সাম্রাজ্য দুর্বল হয়ে পড়ায় যে সুযোগ তৈরি হয়েছে তা দিয়ে সম্পূর্ণ কমিউনিস্ম পাওয়া যাবে এমনটা নয়। কিন্তু এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে কমিউনিস্ম-এর লক্ষ্যে আরেক ধাপ এগোনো অবশ্যই যাবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে সমস্যা ও সুযোগগুলো কি কি তা ঠিকমতো বুঝতে পারলেই আমরা বুঝতে পারব যে কতটা পথ এগোনো যাবে। মাও-এর এই শিক্ষা হৃদয়ঙ্গম করার জন্য আমরা এখন আলোচনা করব যে কিভাবে পুঁজিবাদ ছয় শতাব্দী ধরে লড়াই করে ধাপে ধাপে বিজয়ী হয়েছে।
Read MoreAuthor: Saikat Bhattacharya
Theoretical General 12-November-2021 by east is risingAs productive forces keep growing, more of involuntary yet necessary activities will be automated and so people will be left with more room for voluntary activities.
So as more room provided for voluntary activities, mankind will march towards communism.
In every stage of history, a specific class relation is formed in which some people (ruling class/men/specific race or nationalities) have more room for voluntary activities while others people have less (ruled class/women/specific race or nationalities).
In slavery, this ratio is most skewed while in feudalism the ratio is less skewed than slavery and in capitalism it is even less.
In socialism this gap will keep falling to null. remember, productive forces grow and so mankind moves towards communism.
The class struggle, gender struggle, national struggle all happen as productive forces growth tend to give more room for voluntary activities to people who don't have it previously while people who have it tend to counter it.
As productive forces keep growing, more of involuntary yet necessary activities will be automated and so people will be left with more room for voluntary activities.
So as more room provided for voluntary activities, mankind will march towards communism.
In every stage of history, a specific class relation is formed in which some people (ruling class/men/specific race or nationalities) have more room for voluntary activities while others people have less (ruled class/women/specific race or nationalities).
In slavery, this ratio is most skewed while in feudalism the ratio is less skewed than slavery and in capitalism it is even less.
In socialism this gap will keep falling to null. remember, productive forces grow and so mankind moves towards communism.
The class struggle, gender struggle, national struggle all happen as productive forces growth tend to give more room for voluntary activities to people who don't have it previously while people who have it tend to counter it.
As productive forces keep growing, more of involuntary yet necessary activities will be a
As productive forces keep growing, more of involuntary yet necessary activities will be automated and so people will be left with more room for voluntary activities.
So as more room provided for voluntary activities, mankind will march towards communism.
In every stage of history, a specific class relation is formed in which some people (ruling class/men/specific race or nationalities) have more room for voluntary activities while others people have less (ruled class/women/specific race or nationalities).
In slavery, this ratio is most skewed while in feudalism the ratio is less skewed than slavery and in capitalism it is even less.
In socialism this gap will keep falling to null. remember, productive forces grow and so mankind moves towards communism.
The class struggle, gender struggle, national struggle all happen as productive forces growth tend to give more room for voluntary activities to people who don't have it previously while people who have it tend to counter it.
utomated and so people will be left with more room for voluntary activities.
So as more room provided for voluntary activities, mankind will march towards communism.
In every stage of history, a specific class relation is formed in which some people (ruling class/men/specific race or nationalities) have more room for voluntary activities while others people have less (ruled class/women/specific race or nationalities).
In slavery, this ratio is most skewed while in feudalism the ratio is less skewed than slavery and in capitalism it is even less.
In socialism this gap will keep falling to null. remember, productive forces grow and so mankind moves towards communism.
The class struggle, gender struggle, national struggle all happen as productive forces growth tend to give more room for voluntary activities to people who don't have it previously while people who have it tend to counter it.
As productive forces keep growing, more of involuntary yet necessary activities will be automated and so people will be left with more room for voluntary activities.
So as more room provided for voluntary activities, mankind will march towards communism.
In every stage of history, a specific class relation is formed in which some people (ruling class/men/specific race or nationalities) have more room for voluntary activities while others people have less (ruled class/women/specific race or nationalities).
In slavery, this ratio is most skewed while in feudalism the ratio is less skewed than slavery and in capitalism it is even less.
In socialism this gap will keep falling to null. remember, productive forces grow and so mankind moves towards communism.
The class struggle, gender struggle, national struggle all happen as productive forces growth tend to give more room for voluntary activities to people who don't have it previously while people who have it tend to counter it.
Read More Theoretical General Socialism Communism Xi Jinping Mao USSR China 24-June-2022 by east is rising