
পুরুষাধিকার আদনোলনের প্রধান কাজ হল পুরুষের মধ্যে Traditional সমাজের তৈরি করা কর্তব্যবোধটাকে শেষ করা। পুরুষ অধিকার পাক চাই না পাক, কর্তব্য পালনের দায় যেন না নেয়। ছোটবেলা থেকেই Traditional সমাজে সফল পুরুষ বলতে শেখানো হয় Provider পুরুষ।Provide করার বদলে পুরুষের কি কি চাওয়া ও পাওয়া উচিত নয় নারীবাদী প্রচারমাধ্যম সেটা গেলায় পুরুষকে। ফল দাঁড়িয়েছে পুরুষ কতটা বেশি Provide করতে পারে এবং কতোটা কম চাইতে পারে তার নিরিখে নিজের সাফল্য পরিমাপ করে।
একটা ছেলে ছোটবেলা থেকে প্রচণ্ড খেটে অনেক অর্থোপার্জনের উপযোগী হয়ে ওঠার পরে চরম নারী কেন্দ্রিক আইন মেনে একটা মেয়ে্র সাথে বিয়ে করছে বা প্রেম করছে।
মেয়েটা অন্য পুরুষের কাছে গেলে এই ছেলেটার কিছু বলার আইনী অধিকার নেই, ভাল চাকরী করলে খোরপোষ দিয়ে তবে বিচ্ছেদ পাবে, তার যৌন স্বাধীনতাও মেয়েটার ইচ্ছার ওপরে নির্ভরশীল। তার ওপর আছে বাবা মা সন্তান ভরণপোষণের পুরনো সময় থেকে চাপিয়ে দেওয়া দায়িত্ব।
একজন পুরুষকে চরমভাবে খাটিয়ে যতটা পারা যায় মূল্য নিংরে তারপরে বদলে তাকে চূড়ান্ত রকমের কম মূল্য ফেরত দেওয়াটাই রাখাটাই বর্তমান সমাজের ন্যায় বিচার।অর্থাৎ বর্তমান সমাজ দাঁড়িয়ে আছে পুরুষ শোষণের ওপর।
এই জঘন্য শোষণ স্রেফ নারী কান্দ্রিক আইনের জোড়ে টিকে আছে তা নয়।
এই শোষণকে টিকিয়ে রাখার একটা যদি কারণ হয় নারী কেন্দ্রিক আইন ও প্রচারমাধ্যম যে পুরুষকে ভাবতে শিখিয়েছে "নারী মানে অধিকার" তবে এর আরেকটা কারণ হল সেই Traditional সমাজ যে ভাবতে শিখিয়েছে পুরুষকে যে "পুরুষ মানে কর্তব্য"।
এই নব্য নারী কেন্দ্রিকতা ও Traditional সমাজ- এই দুই-এর জাঁতাকলে পড়ে পুরুষ হয়ে যাচ্ছে স্বেচ্ছায় শোষিত। শোষিত হওয়াকে সে মনে করছে "সাফল্য"। আর শোষণের বিরুদ্ধে কথা বলতে ভয় পায় কারণ সমাজ "অসফল" বা "ব্যর্থ" বলে ট্যাগিয়ে দেবে। রোজগার বেশি না করতে পারলে "পুরুষ loser" আর নারী কেন্দ্রিক বিচারব্যবস্থা ও সমাজের বিরোধিতা করলে "পুরুষ incel"। তাই "সফল পুরুষ" হতে চাইললে মুখ বুজে শোষিত হতে থাক।
অতএব "সফল পুরুষ"-এর সংজ্ঞা বদলানোর একটা লড়াই চালাতে হবে পুরুষাধিকার কর্মীদের। পশ্চীম বঙ্গের সবচেয়ে জনপ্রিয় পুরুষাধিকার সংগঠন "All Bengal Men's Forum" শ্রেষ্ঠ পুরুষ বলে সম্মানিত করে পুরুষদের। এরকম ভাবেই চিন্তা করা দরকার এবং সাফল্যের সংজ্ঞা পালটানোর লড়াই এর পরিধি বাড়ানো দরকার। আমাদের বোঝাতে হবে যে "সফল পুরুষ" মানে সে পুরুষ যে নিজের জীবনকে স্বাধীনভাবে উপভোগ করতে পারছে। কম রোজগারেও জীবন উপভোগ করা যায় আবার কোন সঙ্গী না নিয়ে একা একাও জীবন উপভোগ করা যায়। উচ্চ বুদ্ধাঙ্কের লোকেরাই কেবল একাকি জীবন উপভোগ করতে পারে। এভাবেই "সফল পুরুষের সংজ্ঞা" বদলে দিতে হবে আস্তে আস্তে। এটা প্রচার করা দরকার যে মেরুদন্ডহীন পুরুষেরাই কেবল প্রেম পায়।
Traditional সমাজ পুরুষের জন্য কর্তব্যের জীবন বরাদ্দ করেছিল নারী গর্ভে সন্তান ধারণ করে বলে। পুরুষ মরলে যতটা না ক্ষতি নারী মরলে ক্ষতি অনেক বেশি কারণ জন্মহার উচ্চ রাখা যাবেনা। আবার আগে সন্তানের জন্ম দিতে গিয়েও নারীদের মৃত্যুও অনেক বেশি হত। গবাদী পশু ও কৃষি কেন্দ্রিক জীবনে অনেক অল্প বয়সেই মানুষকে উৎপাদক বানানো যেত। কিন্তু বর্তমান যুগে চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নতি এবং মানুষের উতপাদক হওয়ার বয়স বেড়ে যাওয়ায় উচ্চ জন্মহার রাখার প্রয়োজনীয়তা আর নেই। আর তাই পুরুষের জন্য কর্তব্যের জীবন বরাদ্দ করার আর মানে নেই। পুরুষ এখন কর্তব্যমুক্ত হতেই পারে।
Author: Saikat Bhattacharya