
কারণ ভারতের সবচেয়ে বড় আইডেন্টিটি হলো ধর্মের দিকে থেকে হিন্দু আর ভাষার দিক থেকে হিন্দি আর তাই হিন্দিভাষি হিন্দুরা হলো ভারতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভোটব্যঙ্ক। মজার বিষয় ভারতে ধর্মের দিক দিয়ে হিন্দুর পরেই হলো ইসলাম অর্থাৎ ইসলাম সংখ্যালঘু ধর্মের মধ্যে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আবার ভারতে ভাষার দিক থেকে হিন্দির পরেই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো বাংলা অর্থাৎ সংখ্যালঘু ভাষাগুলোর মধ্যে বাংলা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তাই সংখ্যালঘু ধর্মগুলোকে বাগে আনতে বা খেয়ে ফেলেতে সংখ্যালঘু ধর্মগুলোর মধ্যে যা সংখ্যার জোড় সবচেয়ে বেশি তাকে শেষ করতে হবে।
আবার সংখ্যালঘু ভাষাগুলোকে বাগে আনতে বা খেয়ে ফেলেতে সংখ্যালঘু ভাষাগুলোর মধ্যে যা সংখ্যার জোড় সবচেয়ে বেশি তাকে শেষ করতে হবে। তাই ভারতের সংখ্যাগুরু হিন্দিভাষি হিন্দুরা বিশ্বাস করে মুসলমানকে শেষ করলেই বাকি ধর্মগুলোকে বাগে আনা যাবে বা খেয়ে ফেলা যাবে আর বাঙালিকে শেষ করতে পারলেই বাকি ভাষাগুলোকে বাগে আনা যাবে বা খেয়ে ফেলা যাবে।
২০০১ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত পশ্চীম ইসলামকে যেভাবে বদনাম করার চেষ্টা চালিয়ে গেছে তা হিন্দিভাষি হিন্দুদের মুসলমানদের বিরুদ্ধে একটা অতিরিক্ত সুবিধে এনে দিয়েছিল। ২০২৩-এ পশ্চীম অনেক বেশি বিভাজিত ও চিন্তিত চীনকে নিয়ে। হিন্দিভাষি হিন্দুদের মুসলমানদের বিরুদ্ধে করা নানা কাজকে পশ্চীম কোন সমর্থন আর দেবেনা। কিন্তু চীনের ভয়ে ভারতের বিরুদ্ধে বেশি কিছু করার ক্ষমতাও আর পশ্চিমের নেই। তাই মুসলমান বিরোধী কাজে পশ্চীমের অবস্থান হল "ভারতের পাঁঠা ভারত লেজায় কাটুক আর মুড়োয়, আমার কি"।
বাঙালিকে মার দেওয়া চলছে আসামে প্রায় ৭০ বছর ধরে আর এখন বাঙালিকে "বাংলাদেশী" বলে নাগরিকত্ব কেঁড়ে নেওয়া বা গণ পিটুনি দেওয়া একটা স্বাভাবিক ব্যপার করে তোলা হবে। লজ্জায় বা ভয়ে বাঙালি বাধ্য হবে "বাঙালি" পরিচয় না দিতে। মুসলমানদের মধ্যে তবু চেতনা আছে যে লড়াই চালাতে হবে। আন্তর্জাতিক ইসলামের গুরুত্বও অপরিসীম। কিন্তু বাঙালির মধ্যে না আছে চেতনা না আছে আন্তর্জাতিক জোড়। ইদানীং কিছু বাঙালিবাদী সংগঠন গড়ে উঠেছে যারা বাঙালির চেতনা বাড়াতে চাইছে আন্দোলন করে। আমার ধারণা তারা ব্যর্থ হবে। কারণ লড়াই-এর চেতনা হাজার হাজার বছর ধরে গড়ে ওঠে। বাঙালির সমস্ত পুরুষ দেবতাই অন্য রাজ্য থেকে আগত। গুজারাতি কৃষ্ণ না ইউপি-এর রাম বাঙালি হিন্দু মননে বাঙালিকে নিজেদের হীন ভাবতেই শেখায় গুজারাতি বা হিন্দিভাষিদের তুলনায়। তাই বাঙালি কোন লড়াই দিতে পারবেনা হিন্দিভাষি হিন্দুদের। দীর্ঘ দিন ধরে জন্মহার কম থাকায় বাঙালি হিন্দুদের মধ্যে বৃদ্ধ সংখ্যা বেশি। তাই বাঙালি হিন্দুদের অধিকাংশই হিন্দিভাষি হিন্দুদের চাপের সামনে দাঁড়াতে পারবেনা। সুযোগ নিতে, লজ্জায় ও ভয়ে এরা বাধ্য হবে মুসলমানদের বিরুদ্ধে লড়াইতে হিন্দিভাষি হিন্দুদের সহযোগী হোতে। এভাবেই পশ্চীম বঙ্গের আগামীদিনে ভয়ঙ্কর বিপর্যয়ের মুখে পড়ার সম্ভাবনা আছে।
Author: Saikat Bhattacharya