Andrew Tate-এর ইসলাম গ্রহণ প্রমাণ করে রেড পিল তত্ত্ব কোন কাজের নয়


Andrew Tate সামাজিক মাধ্যমে পুরুষের হয়ে কথা বলে বিপুল জনপ্রিয়তা লাভ করেন। তাকে সবাই রেড পিলড বলেই জানতো। তাহলে সে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করল কেন? ভারতে অজস্র ইসলাম বিদ্বেষী মানুষ আছেন যারা নিজেদের রেড পিলড বলে দাবি করে। এই বোকারা বলাই বাহুল্য Andrew-এর ইসলাম ধর্ম গ্রহণ মন থেকে মেনে নিতে পারেনি যদিও তার সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করার ক্ষমতাও তাদের হয়নি। এবার প্রশ্ন হল Andrew Tate রেড পিলড হয়েই জীবন কাটিয়ে দিলেন না কেন? তার ইসলাম ধর্ম নেওয়ার কারণটা কি?

আসলে পুরুষাধিকার আন্দোলনকারীদের দুটো ভাগে বিভক্ত করা যায়। এক, যারা মনে করেন পুরনো অধিকারগুলো যখন আর নেই তখন পুরনো কর্তব্য পালন করাও অর্থহীন আর দুই, পুরনো অধিকারগুলো ফেরত চাই কারণ পুরনো কর্তব্য পুরুষ পালন না করলে সমাজ থাকবেনা।

প্রথম মতাবলম্বীরা মোটামুটি দুটো ভাগে বিভক্ত। এক, সিগমা বা মিগটাউ অর্থাৎ যারা নারীকে এড়িয়ে গিয়ে নিজেদের সুরক্ষিত রাখে আর দুই, রেড পিলড যারা নারীর মননকে বোঝার চেষ্টা করে এবং কোনভাবে নারীর দ্বারা প্রতারিত না হয়ে নিজেদের আখের গুছিয়ে নিতে পারে।

সিগমা বা মিগটাউ পুরুষেরা ব্যক্তিকেন্দ্রিক চন্তা করে। তারা মনে করে নিজে বাঁচ সমাজ নিয়ে ভাবনা আমার নয়। সমাজের আইন নারী কেন্দ্রিক আর সমাজকে বা আইনকে বদলাবার লড়াই করা তাদের কাছে অর্থহীন। তার চেয়ে আইন যাতে পুরুষকে ফাঁসাতে না পারে এমনভাবে পুরুষ তার জীবনযাপন করুক।

রেড পিলডরাও মনে করে সমাজকে বা আইনকে বদলাবার দায় নিয়ে লাভ নেই কিন্তু নারী এড়িয়ে যাওয়া মানে পুরুষের একটা অন্যতম জৈবিক চাহিদাকে অস্বীকার করা। যৌনতার মতো একটা মৌলিক বিষয় এড়িয়ে গিয়ে বাঁচার কোন মানে নেই। তাই নারীকে এড়িয়ে যাওয়া নয় বরং নারীর মননকে বুঝে নারীর সঙ্গলাভ কর এমনভাবে যাতে নারী পুরুষকে প্রতারিত করতে না পারে। কিন্তু নারী মনটা কিরকম? নারী Hypergamous। সে সবসময় সরবোচ্চ মানের পুরুষ চাইবে। সরবোচ্চ মান বলতে পুরুষের রূপ ও অর্থ মিলিয়ে যে পুরুষের অবস্থান সবচেয়ে উঁচু-তে। তাই যদি নারী তার পছন্দসই পুরুষ না পায় (যা পাওয়া কঠিন কারণ খুব সামান্য সংখ্যক পুরুষই ওরকম হতে পারে) তাহলে সে বাকি পুরুষদের সাথে মেলামেশা করে তার কাছ থেকে অর্থ ও সুবিধা আদায় করে। তাই পুরুষকে মাথায় রাখতে হবে সে যদি সরবোচ্চ মানের পুরুষ না হয় তাহলে সে নারীর দ্বারা কেবল প্রতারিতই হবে। নারীর প্রেম কেবল সরবোচ্চ মানের পুরুষ-দের জন্যেই বাঁধা। এদের আলফা পুরুষ বলা হয়। আলফা পুরুষদের জন্য নারী না কি সব উজাড় করে দিতে রাজি। আর বাকি পুরুষদের থেকে নারী সুবিধে আদায় করবে আর যেই পুরুষেরা সেই সুবিধে দেবে নারীসঙ্গ পেতে তারা বিটা। তাই রেড পিলডরা আলফা পুরুষ হওয়ার জন্য লাফালাফি শুরু করে।

এই আলফা পুরুষ সাঁঝার ইচ্ছাই শেষে পুরুষকে দুর্বল করে দেয়। কেন? নারী Hypergamous। সে সবচেয়ে ধনী ও সবচেয়ে সুন্দর পুরুষই চাইবে। কিন্তু সে পাগল নয় যে সে ভাববে এরকম কাউকে সে পেয়ে যাবে। তাই নারী নিজের থেকে উচ্চমানের পুরুষ পেলেই খুশি। অবশ্যই নিজের থেকে উচ্চমানের পুরুষকে পেলে নারী ধরে রাখতে চাইবে এবং অনেক কিছুই ত্যাগ করবে। আবার নিজের চেয়ে নীম্ন মানের পুরুষ পেলে সে পুরুষটির কাছ থেকে অর্থ ও সুবিধে আদায় করে নেবে। এবার মজার ব্যপার কোন পুরুষ যদি Hypergamous হয় তাহলে তারও একই রকম মানসিকতা দেখানোঢ় কথা। সে তার থেকে উচ্চ নারী পেলে তাকে তোয়াজ করবে এবং তার জন্য খরচ করবে আর তার চেয়ে নীম্ন নারী পেলে সে নারীর কাছ থেকেই নানা সুবিধে চাইবে। কিন্তু রেড পিলডরা ভেবে বসে আছে যা নারীর জন্য খরচ করা মানেই বিটা হয়ে যাওয়া আর নারীর থেকে আদায় করা মানেই আলফা হয়ে যাওয়া। তাই রেড পিলডরা শেষ মেশ নীম্ন মানের নারীকে পাবে এবং উচ্চমানের নারীকে পাওয়ার জন্য পুরুষের খরচ করাটাকে বিটা পুরুষের কাজ বলবে। মানে রেড পিলডরা পুরুষকে Hypogamous বানায় যা সামাজিক ভাবে নারীর যৌনতায় দর কষাকষির ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। পয়সার জোড়ে উচ্চমানের নারীকে ছিনিয়ে আনার প্রক্রিয়াকে খারাপ বলে তারা পুরুষকে ধনী না হয়ে যেমন আছ তেমন থাক-তেই উৎসাহিত করে। শেষ পর্যন্ত রেড পিলডরা কেবল মধ্যবিত্ততায় সুখি ব্লটেড ইগো সম্পন্ন পুরুষ তৈরি করে যারা সমাজে চলারই উপযোগী নয়।

এবার আসি তাদের কথায় যারা মনে করে পুরনো অধিকার ফেরত দাও কারণ পুরনো কর্তব্য পুরুষ না মানলে সমাজ বলেই কিছু থাকবেনা। এদের একটা বড় অংশ হয় দক্ষিণপন্থী রাজনীতিতে বিশ্বাসী নয়তো কোন ধর্মীয় আইন চালু করার পক্ষপাতি। দক্ষিণপন্থী রাজনীতি মূলত ভোট নির্ভর আর তাই সমাজের অর্ধেক নারী ভোটকে অস্বীকার করে কোন আইন বানাবার ক্ষমতা দক্ষিণপন্থী রাজনীতির নেই। ভোগবাদ, পুঁজিবাদ, নির্বাচনী গণতন্ত্রের প্রভাবে অধিকাংশ ধর্মই নিজেদের নারীবাদী করে ফেলেছে। ইসলাম একমাত্র ব্যতিক্রম। ইসলামেও অনেক নারীবাদী প্রভাব ঢুকেছে বটে কিন্তু নারীবাদকে অস্বীকার করার অংশটা এখনও শক্তিশালী। বিশেষ করে আফঘানিস্তানের ইসলামিক আমিরাত, উপকূল আরব, ইরান-এর মতো দেশে পুরুষের অধিকারের বিষয়টাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। তাই Andrew Tate মনে করেছেন সামাজিক মানুষ হিসেবে তার পুরনো অধিকার ফিরে পাওয়ার লড়াইই করা উচিত আর সেটা ইসলামে থেকে সবচেয়ে ভালভাবে করা যায়।

আমি মনে করি পুরুষ পুরনো কর্তব্য পালন না করলেও সমাজ টিকে যাবে যদি স্বয়ংক্রিয় গর্ভ, যৌন রোবট, সারোগেসি, যৌবন নিয়ে মানুষের বেঁচে থাকার সময়সীমা বৃদ্ধির মতো উন্নত প্রযুক্তি আসে। যতদিন না এই উন্নতি হচ্ছে ততদিন ইসলামের সপক্ষে একটা বড় ঢেউ আসার সম্ভাবনা আছে। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চীনের কাছে পরাজিত হওয়ার পরে যদি চীনা রাজনৈতিক সিস্টেম বহু দেশে আসতে শুরু করে তাহলে অনেক অমুসলমান দেশেই আর নারী ভোটব্যঙ্কের কথা ভাবতে হবেনা এবং সেখানেও পুরুষের স্বপক্ষে আইন বাস্তোবায়ন করা সম্ভব হবে। কিন্তু আপাতত বলাই যায় পুরুষাধিকার আন্দোলন ইসলাম গ্রহণের পক্ষে নতুন ঢেউ তুলতে চলেছে।

Author: Saikat Bhattacharya


You may also like