USA vs Russia

বিএনপি সময়ের থেকে পিছিয়ে, সময় গণতন্ত্রের বিপক্ষে

11-August-2023 by east is rising 266

বিএনপি সমর্থনকারীরা পুরোপুরিভাবে মার্কিন হেজিমোনির ন্যাড়েটিভ ফলো করে যেমন ১৯৮০-৯০ যুগে পূর্ব ইউরোপের দেশগুলোতে গণতন্ত্রের জয় বা উত্তর কোরিয়া হল নরক।এরা পুরোপুরি ১৯৯০-এর দশকে আটকে আছে।

একদিকে গণতন্ত্র বলে লাফায় আবার অন্যদিকে জনগণের জোড়ে যে ক্ষমতায় যাওয়া সম্ভব তা বিশ্বাস করেনা, উলটে মার্কিন ও পশ্চীমা শক্তিগুলোর বদান্যতার আশায় বসে থাকে।

এরা নিজেরা ভাল করেই জানে মার্কিন বদান্যতা ছাড়া বাংলাদেশের সমর শক্তির সাহায্যে থাকা কোন দলকেই তারা ক্ষমতাচ্যুত করতে পারবেনা কিন্তু "মানুষ" "গণতন্ত্র" শব্দগুলো আউড়ে যায় বোকার মতো।

বিএনপি-আওয়ামী সাইকেল চলত কারণ বিএনপি-র ছিল মার্কিন সমর্থন আর আওয়ামীর ছিল ভারতের সমর্থন। এখন চীনের উত্থানের ফলে ভারত ও মার্কিন সরকার হাত মিলিয়ে নিয়েছে। মার্কিন হেজিমনি এখন দুর্বল হয়ে গেছে আর তাই মার্কিন হেজিমনির কাছে চীনকে আটকাতে ভারতের গুরুত্ব বেড়ে গেছে। তাই ভারতের কথা শুনে হয় বিএনপি-কে বলি দেবে মার্কিন হেজিমনি নয়তো বিএনপি-কে বাধ্য করবে ভারতের জন্য আওয়ামীর চেয়েও বেশি দালালি করতে।

তাই বিএনপি আসুক চাই আওয়ামী বাংলাদেশ মার্কিন ও ভারতের নাগপাশ থেকে বের হতে পারবেনা। আওয়ামী বেশীদিন ক্ষমতায় আছে বলে চীন ও মার্কিন সরকারের মধ্যে একটা ভারসাম্য রেখে চলছিল। মার্কিন হেজিমনি বলছে আওয়ামী ও বিএনপি-র মধ্যে যে বেশী করে মার্কিন বলয়ে আসবে তাকে সে ক্ষমতায় বসাবে। ভারতেরও স্বার্থ সুরক্ষিত থাকুক তা মার্কিন হেজিমনিই দেখবে।

এবার প্রশ্ন তাহলে বিএনপি-র গণতন্ত্র নামের ন্যাকামিটার কি ফল হল?

গণতন্ত্র বলে কিছু আদৌ থাকছে কি?

বিএনপি নির্লজ্জ মার্কিন তাবেদারিকে গণতন্ত্র বলাটা বন্ধ করে যা করার করুক।

আজকে ঘরে ঘরে একটা বা দুটো সন্তান।

সমাজের জন্য মরতে বা মারতে কেউ রাজি নয় বা সমাজ নিয়ে ভাবনাটাই প্রায় নেই।

এরকম সমাজ রাষ্ট্রের সাথে লড়তে পারবেনা।

এরকম সমাজে গণতন্ত্র থাকবেনা।

এরকম সমাজগুলো দুনিয়া জুড়ে ক্রমেই সামরিক নেতা ও আমলদের নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে।

এই নেতৃত্ব বুদ্ধিমান হলে সমাজ ভাল চলবে আর মূর্খ ও দ্বন্দ্বরত হলে সমাজ ডুববে।

কিন্তু মানুষের পক্ষে আর এই নেতৃত্বের সাথে লড়াই করা সম্ভব না।

গণতন্ত্র স্রেফ নামে টিকে আছে কারণ মার্কিন হেজিমনির পক্ষে গণতন্ত্র বা আরও ভাল করে বললে বহুদলীয় গণতন্ত্র একটা লেজিটিমেসি তৈরি করছে।

অর্থাৎ কোন সমাজেই গণতন্ত্র নেই, কিন্তু মার্কিন হেজিমনি বহুদলীয় গণতন্ত্র কায়েমের নামে নিজের পক্ষে একটা যুক্তি খাঁড়া করতে পারছে এবং যে কোন দেশে কোন দলকে ক্ষমতায় এনে তাকে যুদ্ধে জড়িয়ে নিতে পারছে বা মার্কিন বিদেশনীতির লেজুড় বানাতে পারছে।

এই কারণেই নাইগার, বুরখিনা ফ্যাসো, মালি, মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্র আজ বলছে "বিদ্যুৎ চাই, গণতন্ত্র নয়"।

সমাজের মানুষ মূলত "খাও পিও জিও" দর্শনে বিশ্বাস করে।

তাদের রাজনৈতিক ক্ষমতার লোভ নেই।

তারা চায় অর্থ রোজাগারের স্বাধীনতা, ভোগ্যপণ্য ক্রয় করার স্বাধীনতা এবং তার জাতির ও দেশের একটা সম্মান।

ভোটে দাড়াবার স্বাধীনতা প্রায় কেউই চায়না।

ভোট দেওয়ার স্বাধীনতা চায় বটে কিন্তু কে ভোটে দাঁড়ালো, কে তাকে বেঁছে নিল তা নিয়ে মানুষ ভাবেনা।

তাই ছোট পরিসরে ভোটের স্বাধীনতাটুকু পেলেই মানুষ খুশি।

বহু দলীয় গণতন্ত্র স্রেফ মার্কিন হেজিমনির লেজিটিমেসি দানকারী হিসেবে টিকে আছে পৃথিবীর অধিকাংশ ছোট দেশেই।

ভারত আরেকটা দেশ যেখানে বহু দলীয় গণতন্ত্র টিকে আছে কারণ তা সংখ্যাগুরু হিন্দু ধর্মাবলম্বী হিন্দিভাষীদের পক্ষে লেজিটিমেসি তৈরি করছে সংখ্যালঘু উপকূলবাসীদের লুটে খেতে।

"গণতন্ত্র"-কে না হারানো পর্যন্ত মার্কিন হেজিমনি পুরোপুরি হারবেনা।

সময়ের গতি গণতন্ত্রের বিপক্ষে কারণ স্বল্প জন্মহারের সমাজ তার সামরিক নেতা ও আমলাতন্ত্রের সাথে লড়ে জিততে পারবেনা।

গণতন্ত্র টিকে থাকবে যতক্ষণ মার্কিন হেজিমনি টিকে থাকবে।

আচ্ছা তাহলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গণতন্ত্র টিকে থাকবে কি বা টিকে থাকার কারণ কি?

এক দুনিয়া শাসনের সুবিধা ভোগ করতে গণতন্ত্রের স্তুতি গাইতে হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে কারণ গণতন্ত্রের নামেই সে দুনিয়া শসন করে।

কিন্তু যতদিন যাচ্ছে মার্কিন সমাজের গণতন্ত্র টিকে থাকাটাই মার্কিন হেজিমনির সাহায্যের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে।

অর্থাৎ মার্কিন হেজিমনির বদান্যতার ওপর যেমন দাঁড়িয়ে আছে আওয়ামী ও বিএনপি-র সমর্থনকারীরা ঠিক তেমনই মার্কিন হেজিমনির বদান্যতার ওপর দাঁড়াতে বাধ্য হচ্ছে ডেমোক্র্যাট ও রিপালিকান সমর্থনকারীরা।

মজার ব্যাপার বাংলাদেশে সুস্থ ভোট করাতে যেমন মার্কিন হেজিমনি তার সামরিক জোড়কে ভয় হিসেবে দেখায় বাংলাদেশের সামরিক ও আমলা নেতৃত্বকে, ঠিক সেইভাবে মার্কিন হেজিমনি তার সামরিক জোড়কে ভয় হিসেবে দেখায় মার্কিন সামরিক ও আমলা নেতৃত্বকে ভয় দেখাতে পারবেনা কারণ মার্কিন সামরিক ও আমলা নেতৃত্বই মার্কিন হেজিমনির বুনিয়াদ।

মোটামুটি আস্তে আস্তে স্পষ্ট হচ্ছে বাংলাদেশের সামরিক ও আমলা নেতৃত্ব যেমন আওয়ামীকে চাইছে তেমনি মার্কিন সামরিক ও আমলা নেতৃত্ব যেমন ডেমোক্র্যাটদের চাইছে আর তাই ট্রাম্পকে জেলে পোড়ার এত তোড়জোড়।

এটা রিপাবলিকানরা যত বুঝছে ততই তারা মার্কিন সামরিক ও আমলা নেতৃত্ব-এর বিরুদ্ধে চলে যাচ্ছে এবং তৈরি হচ্ছে গৃহযুদ্ধের সম্ভাবনা।

মার্কিন হেজিমনি যদি আওয়ামীকে মেনে নেয় ভারতের কথায় তাহলে বিএনপিকেও হয় গৃহযুদ্ধ করতে হবে নয়তো দল তুলে দিতে হবে।

Author: Saikat Bhattacharya


You may also like