ভারতীয় বাংলাতে অবাঙালী আধিপত্যের অন্যতম মূল কারণ গ্রামবাংলার পশ্চাৎপদতা

17-March-2024 by east is rising 194

ভারতীয় বাংলাতে অবাঙালী আধিপত্যের অন্যতম মূল কারণ গ্রামবাংলার পশ্চাৎপদতা।

শহুরে মানুষের জন্মহার কম হবে এবং তারা আরো উন্নত স্থানে চলে যেতে চাইবে। সেই ফাঁকা শূণ্যস্থান ভরাট করবে গ্রামের লোক শহরে এসে। গ্রামে এইজন্যে জন্মহার উচ্চ থাকবে।

কিন্তু গ্রামবাংলা ঐতিহাসিক বিবর্তনে পশ্চাৎপদ তাই শহরে অভিভাসন করার ঐতিহাসিক ধাপটাই আসেনি। এই যে গ্রামবাংলা থেকে শহরে অভিবাসন হয়না সেইকারণেই শহরাঞ্চলে অবাঙালী আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বাকি জাতিরা চাইবেই নিজেদের আখের গোছাতে। তার বিরুদ্ধে ঠেলাটা নিজেদের থেকেই আসতে হবে এবং নিজেদের জমি, ভেরি, নারী নিজেদেরকেই সুরক্ষিত করতে হবে। কিন্তু সেটা তখনই হবে যখন সেই চাহিদা ও আকাঙ্খাটা আসবে। সেটা নেই কারণ গ্রাম, মফঃস্বল থেকে নগরে যাওয়ার বাসনাটাই নেই।

নগরসভ্যতাতে প্রবেশ করারই যারা বিরোধী তাদের নগরাঞ্চল অপর জাতির দখলেই যাবে।

এইকারণেই কলকাতাতে দুনিয়ার সব জাতি করে খেয়ে যায় কিন্তু গ্রামবাংলাই বঞ্চনা অনুভব করে।

ভাষার প্রমিতকরণের বিরোধীতা করে উপভাষার বঞ্চনার গপ্প দেওয়াও এই বিবর্তনবিরোধী মননের সাক্ষ্য দেয়।

নগরায়ন হলে ভাষার প্রমিতকরণ হবে, জাতীয়তা গড়ে উঠবে।

1905 এর বঙ্গভঙ্গের প্রতি এখনও সমর্থন এই মানসিকতারই বহিঃপ্রকাশ।

কলকাতাতে দুনিয়ার সব জাতির ভাগ্য খুলে গেল শুধু গ্রামবাঙালীরাই বঞ্চিত রয়ে গেল।

এই যে গ্রামবাংলা থেকে শহরে অভিবাসন হলনা এর ফলে শহরের বাঙালীও ধীরে ধীরে কোনঠাসা হয়ে শেষ হয়ে যাচ্ছে। কারণ শহুরেদের জন্মহার কম, তারা উচ্চাকাঙ্খী হলে আরো অন্যস্থানে যাবে আর অপর জাতির লোকেরা ঢালাওভাবে আসতেই থাকছে।

গ্রামবাংলার মানসিকতাও তাদের উন্নতির পথে বাঁধা। নিজেদের মধ্যে খেয়োখেয়ি, দলবাজি, অপরের পেছনে কাঠি করা, ঈর্ষা, পরশ্রীকাতরতা, কুচক্রী মানসিকতা, অপরের ক্ষতি করার ইচ্ছা, কূপমণ্ডুকতা এগুলো হল গ্রামবাংলার কিছু ট্রেডমার্ক বৈশিষ্ট্য। গ্রাম ও মফঃস্বলের লোকেরাই বেশী ভারত রাষ্ট্র চাটা হয়। কারণ এদের মধ্যে নিজেদের স্বার্থরক্ষার তাগিদও থাকেনা। ফলত সহযোগীতা, সংগঠনের ক্ষমতা, উচ্চাকাঙ্খা, গঠনমূলক মানসিকতি এসব কিছুই তাদের মধ্যে নেই।

শহুরে বাঙালী নিঃশেষ হতে হতে আজকে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতিই একটা নিম্নমানের গ্রামীণ কথ্যভাষা ও সংস্কৃতি হিসাবে অধঃপতিত হওয়ার অবস্থা হয়েছে। এবং বাঙালীও এটাই গব্বের সাথে প্রচার করে। লোকগীতি, আঞ্চলিক কথ্যভাষা, লোকসংস্কৃতি এসব ভাল। প্রমিত ভাষা, উচ্চ এলিট সংস্কৃতি বা high culture, পরিশীলীত উচ্চমার্গের কিছুই খ্রাপ। কোন সংস্কৃতিই টিকতে পারবেনা যদি না সে নিজে high culture হওয়ার স্বপ্ন দেখে আর তার জন্যে কাজ করে।

গ্রাম থেকে শহরে যাবার প্রবণতা যাদের মধ্যে নেই তাদের শহরাঞ্চল বাকীরা দখল করে নেবে ও তারা অপর জাতির দাস হিসেবেই থাকবে।

Author: Purandhar Khilji


You may also like