
বর্তমান অবস্থা হল মার্কিন মুলুকে মুদ্রাস্ফীতি হচ্ছে আগের ৩ দশোকের অনেক বেশি হারে। এর কারণ চীনের মাথা পিছু আয় ও মজুরি অত্যন্ত বেড়ে গেছে আর মার্কিন সরকার চীনা পণ্যে কর চাপাচ্ছে। এই মুদ্রাস্ফীতি রোধে মার্কিন ফেডেরাল ব্যঙ্ক সুদের হার বাড়াচ্ছে। সুদের হার বাড়ায় মার্কিন সম্পদ যেমন মার্কিন শেয়ার স্টক জমি ইত্যাদিতে বিনিয়োগ লাভজনক হচ্ছে আগের চেয়ে বেশি। ফলে ছোট অর্থনীতির দেশগুলো থেকে বিনিয়োগ সব মার্কিন মুলুকে চলে যাচ্ছে। ফলে ছোট অর্থনীতির দেশগুলোতে ডলার পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকছেনা। এটাই ঘটেছিল শ্রীলঙ্কায়, তুর্কিতে এবং আরজেন্টিনায়। এটাই ঘটছে বাংলাদেশে।
এর থেকে মুক্তির একমাত্র উপায় হল যে দেশ থেকে সবচেয়ে বেশি আমদানী করতে হয় সেই দেশের মুদ্রায় আমদানী করা। যেহেতু চীন থেকে আরজেন্টিনা তুর্কি শ্রীলঙ্কা বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি আমদানী করে, তাই চিনের মুদ্রায় যদি চীন থেকে আমদানী করা যায় তবে আমদানী স্থীর থাকে ও এই সব দেশের অভ্যন্তরের মুদ্রাফিতিও কন্ট্রোলে থাকবে। তাই এরা চীনের থেকে ইউয়ান ঋণ হিসেবে চেয়েছে যাতে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যায়।
চীন জানে এই সঙ্কট চলতেই থাকবে কারণ চীনের মজুরির হার কমবে না বাড়বে আর মার্কিন চীন সংঘাত চলতে থাকবে আর তাই চীনের পণ্যে মার্কিন কর চাপানোও চলবে আর তাই ছোট অর্থনীতির দেশগুলোর চীনা মুদ্রা ব্যবহার ছাড়া গতি নেই। যারা এই অবস্থা বুঝবেনা তারা চীনের থেকে ইউয়ান ঋণ নেওয়াকে সাময়িক ভাববে। শ্রীলঙ্কা চীনা সাহায্যের ওপর আরও বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে সঙ্কটের পর থেকে আর তা বোঝা যায় যখন আমরা দেখি যে ২০২২ আর ২০২৩ সালে চীনা রিসার্চ জাহাজকে বন্দরে ভিড়তে দেয় যদিও মার্কিন ও ভারত বলেছিল ওই জাহাজ চর হিসেবে আসছে এবং শ্রী লঙ্কা যেন ওই জাহাজ ঢুকতে না দেয়। শ্রীলঙ্কা চীনা জাহাজ ঢুকতে দেয় দুই বছরই।
বাংলাদেশের সমস্যা হল তার রপ্তানী বাজার হল পশ্চীম আর গুরুত্বপূর্ণ মেশিন ও দৈনন্দিন জিনিস আমদানী করে চীন থেকে। পশ্চীমকে মেনে নিয়ে চীনকে বাদ দিলে বাংলাদেশকে মুদ্রাস্ফীতির মুখে পড়তে হবে যা বাংলাদেশের রপ্তানীকে ব্য্যবহুল করে তুলবে এবং তাই রপ্তানী কমে যাবে। আর চীনের কথা শুনলে পশ্চীম তার বাজার দিতে অস্বীকার করতে পারে। আবার বিশ্ব অর্থনীতিও বাংলাদেশকে বাধ্য করছে ইউয়ান চাইতে। মার্কিন সরকার জানে বিস্ব অর্থনীতির এই বাধ্যবাধকতার কথা এবং তারা ইউয়ান ব্যবহার মেনেও নিয়েছে পাকিস্তানের ক্ষেত্রে। শ্রিলঙ্কা বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মিলিটারিও চীন নির্ভর। তাই এখানে বাজি চীনই মারতে চলেছে।
মার্কিন সরকার এটা জানে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রী কিছুদিন আগে বলেছিলেন যে দক্ষিণ এশিয়া জুড়ে ভারত বিরোধী যে আন্দোলন হচ্ছে তার পেছনে কিছু লোক আছে আর ওই পেছনের লোকের পেছনেও কিছু লোক আছে।
মনে রাখা দরকার অর্থনীতি ও সমরনীতি বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায় যে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া ও দক্ষিণ এশিয়াতে চীনের পক্ষেই হাওয়া যাচ্ছে।
Author: Saikat Bhattacharya