
পশ্চীমে ভোটাধিকারের অগ্রগতি
"গণতন্ত্র ও মেধা অনুযায়ী প্রাপ্তি-র ক্রমবিকাশঃ কোন পথে বাংলাদেশের ২০২৪ বিপ্লব" https://www.eastisrising.in/view-news/284 প্রবন্ধে আমরা আলোচনা করেছি যে কিভাবে পশ্চীমি সমাজ আরব-দের থেকে মেধা বা কর্ম অনুযায়ী প্রাপ্তি আর গ্রীক-রোমান-দের গণতন্ত্র-কে জুড়ে একের পর এক সমাজ বিপ্লব সম্পন্ন করে যা শেষ পর্যন্ত প্রাচ্যের দেশগুলোও গ্রহণ করে এবং আরও এগিয়ে নিয়ে যায়। প্রথমে উচ্চ কর দাতা ধনী সমাজ যেমন সামন্ত, বড়ো ব্যবসায়ী, সেনাপতি, পাদ্রীরা ভোট দেওয়ার ও ভোটে দাঁড়াবার অধিকার পায় এবং ভোটে নির্বাচিত সভাসদ-দের কথা রাজা মানতে বাধ্য থাকবে এমন ব্যবস্থা গড়ে ওঠে ১৬৮৯ সালে ইংল্যান্ডের গৌরবময় বিপ্লবের ফলে। এরপরে আমরা ১৭৭৬ সালে মার্কিন বিপ্লব যেখানে জাতীয়তাবাদের বিকাশ দেখতে পাই যার মূল কথা হোল কোন বিশেষ অঞ্চলের করদাতাদের বর্তমান রাষ্ট্র পছন্দ না হোলেও আলাদা রাষ্ট্র গড়ার অধিকার আছে। ১৭৮৯ সালে ঘটে ফরাসী বিপ্লব যেখানে কর দাতা মধ্যবিত্ত শ্রেণিও ভোট দেওয়ার ও ভোটে দাঁড়াবার অধিকার পায়। ইংল্যান্ডের পার্লামেন্ট ১৮৩২ শালের জন প্রতিনিধি আইন-এ জানায় যে ১০ পাউণ্ড বা তার বেশি আয় কর দিলেই যে কোন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের ভোট দেওয়ার ও ভোটে দাঁড়াবার অধিকার থাকবে। এর ফলে তৎকালীন ইংল্যাণ্ডের ১৫% প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ ভোটাধিকার পায়। বলা বাহুল্য গৌরবময় বিপ্লবের ফলে উচ্চবিত্ত নারীদের যে ভোটাধিকার ছিল তা কেড়ে নেওয়া হয় এই আইনে। ব্যক্তিমালিকানাহীন কর দেওয়ার মতো যথেষ্ট রোজগার করেনা এমন শ্বেতাঙ্গ পুরুষ, শ্বেতাঙ্গিনী নারী ও অশ্বেতাঙ্গ মানুষের জন্য ফরাসী বিপ্লব কোনও ভোটাধিকার দেয়নি। কার্ল মার্ক্স সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ব্যক্তিমালিকানাহীন কর দেওয়ার মতো যথেষ্ট রোজগার করেনা এমন শ্বেতাঙ্গ পুরুষ অর্থাৎ পশ্চীমি দুনিয়ার শ্রমিক শ্রেণীকে ভোটাধিকার দেওয়ানোর বিষয়। তিনি প্রমাণ করেন শ্রমিকের দেওয়া শ্রমের ফলেই উৎপাদন হয় আর সেই উৎপাদন বাজারে বিক্রি করে ধনবান শ্রেণি যা লাভ করে তার থেকেই কর দিতে পারে। এর ফলে ১৮৫৬ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ও ১৮৬৭ সালে ব্রিটেনে সকল প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্টিত হয়।
শ্রমজীবী মানুষের শাসন
১৯১৭ সালে প্রথম বিশ্ব যুদ্ধের মধ্যেই ঘটে যায় আরেকটা বড় বিপ্লব, রুশ বিপ্লব। রুশ বিপ্লবের নেতা লেনিন তুলে ধরেন যে পশ্চীমে ১৮৭০ থেকে যে বহু দলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তা উচ্চবিত্ত শ্রেণির হাতে ক্ষমতা তুলে দিয়েছে। ভোট দানের অধিকার সকল শ্রেণির পুরুষের থাকলেও কার্যকর ভাবে ভোটে দাঁড়াবার ক্ষমতা কেবল উচ্চবিত্ত শ্রেণিরই আছে। যারা উচ্চবিত্ত নয় তাদেরও উচ্চবিত্তদের থেকে পয়সা নিয়েই ভোটে দাঁড়াতে হবে এবং তাদের কথা শুনেই চলতে হবে। তাই সাধারণ জনতার হাতে ক্ষমতা রাখতে গেলে কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বে শ্রমজীবী মানুষকে তার কারখানা ও খামারে উৎপাদনের স্থানে গণতন্ত্র নিয়ে আসতে হবে। শ্রমিকেরা কৃষকেরা ছাত্ররা ভোট দিয়ে তাদের কারখানার খামারের বিদ্যালয়ের নেতা নির্ণয় করবে। এবং সেই নেতারা আবার উচ্চতর কমিটির নেতাদের নির্বাচন করবে আর এভাবেই ধাপে ধাপে উচ্চতম পলিট ব্যুরোর নেতৃত্ব নির্বাচিত হবে। এছাড়াও রুশ বিপ্লব প্রথম প্রাপ্তবয়স্ক নারীকে ভোটাধিকার ও অন্যান্য রাজনৈতিক অধিকার দেয়। এমনকি দ্রুত শিল্পায়ণের জন্যে সোভিয়েত সরকার নারীকে শ্রম বাজারে নিয়ে আসে পুরোপুরিভাবে। এছাড়াও সোভিয়েত সরকার অপশ্চীমা দেশগুলোর স্বাধীনতা ও শিল্পায়ণের প্রসার ঘটানোর পক্ষে দাঁড়ায়। অর্থাৎ রুশ বিপ্লবের ফলে অপশ্চীম দুনিয়া স্বাধীন হওয়ার সুযোগ পায় এবং দ্রুত শিল্পোন্নত হওয়ার কর্মসূচী ঘোষণা করে। দ্রুত শিল্পোন্নয়ণের জন্য নারীকে শ্রম বাজারে নিয়ে আনার কর্মসূচীও গৃহীত হোতে থাকে। রুশ বিপ্লবের পরেই ১৯১৮ সালে ব্রিটেনে ও ১৯২১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রাপ্তবয়স্ক নারী ভোটে দাঁড়াবার ও ভোট দেওয়ার অধিকার পায়।
শ্রমজীবী শাসন-এর সমস্যা
আমরা দেখলাম কিভাবে বিভিন্ন বিপ্লব-এর মধ্য দিয়ে আস্তে আস্তে উচ্চতম শ্রেণী থেকে মধ্যবিত্ত শ্রেণির পুরুষের কাছে ভোটাধিকার আসে এবং তারপরে দরিদ্র শ্রেণীর পুরুষও ভোটাধিকার পায়। কিন্তু রুশ বিপ্লব বলে যে ভোট দেওয়ার অধিকার সবার থাকলেও ভোটে দাঁড়াবার অধিকার শুধু উচ্চবিত্তদের হাতেই থাকছে। আর এইভাবে ক্ষমতা উচ্চবিত্তদের হাতেই কুক্ষিগত হয়। এছাড়াও অপশ্চীমা বিশ্বের ও নারীর মুক্তিকেও ত্বরান্বিত করে রুশ বিপ্লব। অর্থাৎ শ্রেণী দ্বন্দ্ব, উৎপাদিকা শক্তিতে এগিয়ে থাকা দেশ ও পিছিয়ে থাকা দেশ-এর মধ্যেকার দ্বন্দ্ব এবং নারী-পুরুষ-এর দ্বন্দ্বঃ এই তিনটে দ্বন্দ্ব আমরা দেখতে পাচ্ছি বর্তমান পৃথিবীতে। রুশ বিপ্লবের যে শ্রমজীবী মানুষের মাধ্যমে উচ্চবিত্ত শ্রেণির হাত থেকে শাসন ছিনিয়ে নেওয়ার কর্মসূচী ছিল তা ব্যহত হয় দুটো কারণেঃ এক, নীম্নতম কমিটি থেকে ধাপে ধাপে উচ্চতর কমিটিগুলোর নেতৃত্ব নির্বাচিত হওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে উচ্চতম কমিটি থেকে ধাপে ধাপে নীম্নতর কমিটিগুলোর নেতৃত্ব বাছাই করা হোতে থাকে। ফলে একটা ডগমাটিক চাটুকার ব্যবস্থা গড়ে ওঠে। দুই, ১৯৭০-এর মধ্য ভাগ থেকে পুঁজি এক দেশ থেকে আর এক দেশে অনায়াসে বিনিয়োগ করা শুরু হয় আর তাই শ্রমিক শ্রেণীর পুঁজির সাথে দর কষাকষির ক্ষমতা অনেকটাই হ্রাস পায়। কারণ মজুরি বা ছুটি বাড়াতে বেশি দর কষাকষি করতে গেলেই পুঁজি অন্যত্র চলে যাবে যেখানে ঝামেলা কম। ফলে সংগঠিত শ্রমিক শ্রেণী অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়ে এবং বিপ্লব করার ক্ষমতা হারায়।
উচ্চবিত্ত শাসনের সমস্যা
মনে করা হোত পশ্চীম দুনিয়ার স্তরে অ-পশ্চীম দুনিয়ার উৎপাদিকা শক্তিকে নিয়ে যেতে গেলে শ্রমজীবী মানুষের নেতৃত্ব সবচেয়ে বেশি উপযোগী। এর কারণ উন্নয়নশীল দেশের উচ্চবিত্ত নেতৃত্ব প্রযুক্তি ও বাজার-এর জন্য উন্নত বিশ্বের ওপর নির্ভরশীল থাকবে এবং সেই নির্ভরশীলতা কাটিয়ে উঠতে বুনিয়াদী খাতে যে বিপুল বিনিয়োগ করতে হবে তা করবেনা। কারণ বুনিয়াদী বিনিয়োগ থেকে জলদি মুনাফা পাওয়া যায়না; যেমন- শিক্ষা স্বাস্থ্য ডিজিটাল ও ফিসিকাল পরিকাঠামো। এসবে বিনিয়োগ করলেও দ্রুত মুনাফালাভের আশায় তার মূল্য অনেক বাড়িয়ে দেয় আর তাই সাধারণ মানুষের কাছে সহজলভ্য থাকেনা। এছাড়াও উচ্চবিত্ত নেতৃত্ব বুনিয়াদী বিনিয়োগ না করে বিলাসবহুল পণ্যে খরচ করে। ফলে সেই দেশের প্রযুক্তির বুনিয়াদ দুর্বল থেকে যায়। বর্তমান বিশ্বে প্রযুক্তিগত উন্নত দেশের তালিকায় চীন যোগ দিয়েছে বলে উন্নয়নশীল দেশগুলোর প্রযুক্তি ধাঁর করার ক্ষেত্রে দর কষাকষির ক্ষমতা অনেক বেড়ে গেছে। সেটা অবশ্যই উন্নয়নশীল দেশগুলোর উন্নয়নের পক্ষে একটা স্তর পর্যন্ত সহায়ক। কিন্তু উচ্চবিত্ত নেতৃত্বের সমস্যাগুলো থেকেই যায়। এই সমস্যা আরও গভীর হয়ে ওঠে বাংলাদেশের মতো দেশের কাছে যার পাশে ভারতের মতো একটা সাম্রাজ্যবাদী দেশ আছে। ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদ বাংলাদেশকে উন্নত বিশ্বের সঙ্গে স্বাধীনভাবে দর কষাকষি করতে দিতে রাজি নয়। ফলে বাংলাদেশের উচ্চবিত্তরা নানাভাবে ভারতের কাছে বাংলাদেশকে নির্ভরশীল করে রাখছে মুনাফার বিনিময়ে। তাই অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের থেকে অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বাংলাদেশ উচ্চবিত্তদের নেত্রিত্বে। আগে উল্লিখিত তিনটে দ্বন্দ্বের মধ্যে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে উৎপাদিকা শক্তিতে এগিয়ে থাকা ও পিছিয়ে থাকা আন্তর্জাতিক দ্বন্দ্বই সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আর বাংলাদেশকে তাই দ্রুত উৎপাদিকা শক্তি বৃদ্ধির স্বার্থেই উচ্চবিত্ত শাসন থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
চীন ও ইরান-এর অভিজ্ঞতাঃ মেধার শাসন
আমরা আগেই আলোচনা করেছি যে বর্তমান পরিস্থিতিতে শ্রমিক শ্রেণী যথেষ্ট শক্তিশালী নয় বিপ্লব কার্যকর করতে। তাহলে উপায় কি? এর উত্তর খুঁজতে আগে দেখা যাক চীন ও ইরান কিভাবে এই পরিস্থিতি সামাল দিয়েছে। চীন সরকার দেং শিয়াও ফিং-এর নেতৃত্বে একটা নতুন বিষয় সংযোজন করে। নীম্নতম কমিটির নেতৃত্বে বাছাই হোতে গেলে নির্দিষ্ট মানের মেধা থাকা বাধ্যতামূলক করে দেওয়া হয় ১৯৮০ থেকে। অর্থাৎ গাওকাও (বিশ্ব বিদ্যালয় প্রবেশের পরিক্ষা) ও গুওকাও (সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা) দিয়ে পাশ করা লোকেদেরই কেবল নীম্নতম কমিটিতে নিয়োগ করা যাবে। এবং ধাপে ধাপে সেই নেতাদের মেধা ও দক্ষতা দেখে উচ্চতর কমিটিতে নিয়োগ করা হবে। এইভাবে চীন একদিকে উচ্চবিত্তদের হাতে রাষ্ট্র পরিচালনা কুক্ষিগত হওয়া থেকে মুক্তি পায় আর অন্যদিকে আনুগত্য ভিত্তিক অযোগ্য ব্যক্তিদের হাত থেকেও রেহাই পায়। ফলে চীন পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে দ্রুত শিল্পায়ণ ঘটায় এবং মাত্র ৪০ বছরে বিশ্ব উৎপাদনের প্রাণকেন্দ্র হয়ে দাঁড়ায় যা পশ্চীমের বিশ্ব অর্থনীতিতে যে আধিপত্য ছিল তা ভেঙ্গে দেয়।
ইরানে ইসলামী বিপ্লব (১৯৭৯) এই সমস্যার সমাধান খুঁজতে ইস্লামী পরম্পরায় কোরান হাদিসের শাসনের সাথে আধুনিক মেধা ও বহু দলীয় গণতন্ত্রের মেলবন্ধন ঘটায়। ইসলামী আইন ব্যবস্থাকে সামনে রেখেই ইরানের মানুষ বিপ্লব করে যার মূল উদ্যেশ্য ছিল উৎপাদিকা শক্তিকে উন্নত দেশের স্তরে নিয়ে যাওয়া। একদিকে শাসনে গুরুত্বপূর্ণ জায়গা থাকবে কোরান হাদিস বিষয়ে জ্ঞানী ব্যক্তিরা (বিশেষজ্ঞ কমিটি) আর অন্যদিকে থাকবে মানুষের দ্বারা নির্বাচিত প্রতিনিধিরা (মজলিস)। কিন্তু জন প্রতিনিধি হতে গেলে মাস্টার্স হওয়া বাধ্যতামূলক। তেমনই মন্ত্রী হতে গেলে পিএইচডি হওয়া বাধ্যতামূলক। ১২ জন-এর গার্ডিয়ান কাউন্সিল ঠিক করে বিশেষজ্ঞ কমিটিতে আসার বা নির্বাচনে দাঁড়াবার যোগ্য কারা।
বাংলাদেশে মেধার শাসন সম্ভব
অর্থাৎ আমরা দেখতে পাচ্ছি যে শ্রমিক শ্রেণী দুর্বল থাকলেও শাসক হোতে গেলে একটা নির্দিষ্ট মেধার মান থাকাকে বাধ্যতামূলক করে দিয়ে উচ্চবিত্তদের শাসনের সমাপ্তি ঘটাতে পারে বাংলাদেশ। মনে রাখা দরকার বাংলাদেশ কিন্তু ২০২৪ জুলাই অগাস্ট আন্দোলন শুরু করেছিল মেধা ভিত্তিক সরকারী কর্মচারী নিয়োগকে কেন্দ্র করে। তাতে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ প্রমাণ করে যে মেধা ভিত্তিক শাসনের প্রতি মানুষের সমর্থন থাকার সম্ভাবনা প্রবল। প্রধান বিরোধী দলের সভাপতি তারেক জিয়া দুটো কক্ষের কথা বলেছেন যেখানে একটা কক্ষে থাকবে নির্বাচিত প্রতিনিধি আর এক কক্ষে থাকবে মেধাবী মানুষেরা। উনি সরাসরি মেধাতন্ত্রের পক্ষে কথা বলেছেন। তবে প্রবন্ধের লেখকের মতে এই দুই কক্ষের সাথে ইরানের গার্ডিয়ান কাউন্সিল-এর মতো আরেকটা কক্ষ রাখতে হবে যারা নির্বাচনে দাঁড়াবার জন্য বা মেধাভিত্তিক কক্ষে আসার জন্য নির্দিষ্ট মেধার মান নির্ণয় করবে।
তৃতীয় বিপ্লবী ঢেউ
আমরা বলতেই পারি বিপ্লবের দুটো ঢেউ এসেছে। প্রথব বিপ্লবী ঢেউ-এ ইংল্যণ্ড বিপ্লব থেকে প্রথমে ধাপে ধাপে সমস্ত স্তরের মানুষ ভোট দেওয়ার অধিকার পেয়েছে। প্রথম বিপ্লবী ঢেউ চলেছে ১৬৮৯ থেকে ১৮৭১ পর্যন্ত। দ্বিতীয় বিপ্লবী ঢেউ-এ রুশ বিপ্লব উচ্চবিত্তদের হাতে যাতে রাজনৈতিক ক্ষমতা কুক্ষিগত না হয় তাকে অগ্রাধিকার দিয়েছে এবং শ্রমজীবী মানুষের শাসন-এর তত্ত্ব নিয়ে আনে। এছাড়াও প্রথম বিপ্লবী ঢেউ-এর অর্জনগুলো অ-পশ্চীমি দুনিয়া ও নারীদের জন্য উন্মুক্ত করে দ্বিতীয় বিপ্লবী ঢেউ। শ্রমজীবী শাসন ব্যবস্থায় সমস্যা দেখা দিলে চীন ও ইরান মূলত মেধার শাসন নিয়ে আনে। দ্বিতীয় বিপ্লবী ঢেউ চলেছে ১৯১৭ থেকে ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত। কিন্তু চীন মূলত শ্রমজীবী শাসনের সাথে পরে মেধার শাসনকে জুড়েছে আর ইরান ইসলামী শাসনের মধ্যে মেধাকে নিয়ে এনেছে। বাংলাদেশ হয়তো বিশ্বে প্রথম এমন বিপ্লব হতে চলেছে যেখানে মেধার শাসনকে সরাসরি নিয়ে আনা হচ্ছে। তাই তৃতীয় বিপ্লবী ঢেউ-এর সূচনা বাংলাদেশে ২০২৪ সাল থেকে হোতেই পারে।
Author: Saikat Bhattacharya