
ইউএসএইডের কার্যক্রম বন্ধ করার প্রধান কারিগর হলেন ইলন মাস্ক। ট্রাম প্রশাসন জনপ্রশাসনে জবাবদিহিতা আনার লক্ষ্যে ডিপার্টমেন্ট অব গভার্নেন্স এফিশিয়েন্সি নামে একটা নতুন বিভাগ খুলেছে এবং মাস্ক হলেন সেই বিভাগের প্রধান।
ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারে প্রায় তিনশ মিলিয়ন ডলার ব্যায় করা মাস্কের হাতে এখন অসীম ক্ষমতা। তিনি ইচ্ছামত মানুষের চাকরী খাচ্ছেন এবং খেয়ালখুশীমত সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প বন্ধ করে দিচ্ছেন। এই কাজ করতে গিয়ে তিনি এখন যুক্তরাষ্ট্রের পুরো ট্রেজারী বিভাগের নিয়ন্ত্রন নিজের হাতে নিতে চাইছেন। বিষয়টি নিয়ে মার্কিন সমাজে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়েছে।
পশ্চিমা ফার রাইটদের পোস্টার বয় ট্রাম্পের পছন্দের এই মানুষটি সম্প্রতি জার্মানির ফার রাইট রাজনৈতিক দল এএফডি এর নির্বাচনী প্রচারের উদ্বোধনী সভায় ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখেন। সেখানে তিনি অতীতের গ্লানি আকড়ে ধরে থাকার কোন প্রয়োজন নেই বলে জার্মানদের পরামর্শ দেন।
সিনেটর বার্নি স্যাণ্ডার্সসহ অনেকেই একথা স্পস্ট করে বলছেন যে যুক্তরাষ্ট্র নিশ্চিতভাবেই একটি ডেমোক্রোসি থেকে অথরিটেরিয়ান অলিগার্কির মধ্যে প্রবেশ করতে যাচ্ছে। প্রথমে বাংলাদেশ এবং তারপর ভারতে গনতন্ত্র থেকে স্বৈরতন্ত্রে রূপান্তরের এই পর্বটি আমরা যেহেতু দেখেছি সেহেতু এক্ষেত্রে দ্বিমত করা কঠিন। এস আলম আদানির স্থলে ইলন মাস্ক, পুঁজির আকারে কেবল তফাত হতে পারে, প্রক্রিয়া একই।
গনতন্ত্র থেকে ফ্যাসিবাদী স্বৈরতন্ত্রে রূপান্তরের জন্য একটি সমাজে যা যা প্রয়োজন, অর্থাৎ উগ্র জাতীয়তাবাদ, কল্পিত শত্রু এবং সাংস্কৃতিক বিভেদ, তার সবই যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি ও সমাজে এখন বিরাজমান। সেইসাথে বাংলাদেশে বিএনপি এবং ভারতে কংগ্রেসের মত একটা অকর্মণ্য বিরোধী দল হিসেবে ডেমোক্রেটিক পার্টিকে কল্পনা করলে বিষয়টা পুরোপুরি খাপে খাপে মিলে যাবে।
এটা বলা অত্যুক্তি হবে না যে বাংলাদেশে যে লড়াই গত পনের বছর যাবৎ চলছে সেই একই লড়াইয়ের ক্ষেত্র আটলান্টিকের অপর প্রান্তেও তৈরী হতে শুরু করেছে। আসলে মানুষের মুক্তি আর অধিকারের লড়াই একটা অনন্ত যুদ্ধ, যার দেশ কালের ভেদ নেই।
-- Murshed Shalin
Author: Saikat Bhattacharya