
ইলন মাস্কের ৭ সন্তান এবং তিনি বারবার এই নিয়ে চিন্তা ব্যক্ত করছেন যে স্বল্প জন্মহার বিশ্ব অর্থনীতির পক্ষে বিশেষ করে উন্নত বিশ্বের অর্থনীতির পক্ষে ভয়াবহ কারণ ক্রমেই কর্মক্ষম অল্প বয়স্কদের সংখ্যা কম হয়ে যাবে আর কর্মক্ষম নয় এমন বয়স্ক ও শিশুদের সংখ্যাই বেড়ে যাবে। বয়স্কদের ভার বৈতে গিয়ে যুবকরা বাচ্চার জন্ম আরও কম দেবে এবং এভাবেই অর্থনীতি ধ্বসে পড়বে। আগের দশক থেকে পিউ রিসার্চ সেন্টার বারবার বলে আসছে যে ২০৪০ নাগাদ শ্বেতাঙ্গরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৫০%-এর নীচে নেমে যাবে। হিস্পানিক, কালো, এশিয়, পলিনেশিয়রা সব মিলিয়ে ৫০%-এর বেশী হয়ে যাবে। শ্বেতাঙ্গবাদীদের উত্থান ট্রাম্প, সাল্ভিনির মধ্য দিয়ে পশ্চীম সমাজ দেখেছে। এর কারণ যে শ্বেতাঙ্গদের স্বল্প জন্ম হার তা আর বলার অবকাশ রাখেনা। এই জন্যেই পশ্চীমের অর্থনীতি লাতিন আমেরিকা, আফ্রিকা, এশিয়া থেকে আগত অভিবাসীদের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। ২০১৮ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ জয়ী ফ্রেঞ্চ টিম-এর দিকে তাকালেই তা স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
রাশিয়াতেও চেচেন ও দাগিস্তানীদের সংখ্যা বেড়ে চলেছে এবং তা ৩৫% হয়ে যাবে ২০৪০ নাগাদ। জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়াতে অভিবাসী বা চেচেন দাগিস্তানীদের মতোন উচ্চ জন্মহার সম্পন্ন উপজাতি নেই আর তাই তাদের জনসংখ্যা কমেই চলেছে। চীনেও এই প্রবণতা স্পষ্ট এবং চীনা সরকার ডিভোর্স পাওয়া মুশকিল করে, বাচ্চা বেশি হলে অর্থদান করে এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করার চেষ্টা চালাচ্ছে। পশ্চীমের অভিজ্ঞতা চীনের সফল হওয়ার সম্ভাবনা বেশ কম।
এইবার দেখা যাক এই জন্মহার এত নেমে যাওয়ার কারণ কি? কারণ মূলত তিনটেঃ
১। নারী আজ রোজগার করছে এবং এই জন্যে তাদের বিয়ের বয়স বেড়ে যাচ্ছে এবং তাই বেশি বাচ্চার জন্ম দিতে পারছেনা এবং চাইছেও না।
২। নারী sexually hypergamous আর তাই রোজগেরে নারী তাদের থেকেও ভাল রোজগেরে ও আকর্ষণীয় পুরুষ অনেক কম খুঁজে পাচ্ছে। এর ফলে অনেক সাধারণ পুরুষও পছন্দসই নারী পাচ্ছেনা।
৩। নারীর পক্ষে থাকা খোরপোষ/গার্হস্থ্য সহিংসতা/ বৈবাহিক ধর্ষণ আইন যা বিবাহকে পুরুষের কাছে অলাভজনক করে ফেলেছে। এছাড়াও বেশি বয়সের নারী পুরুষের কাছে আকর্ষণীয় থাকছেনা বিয়ের জন্যে।
পুঁজির মূল এবং একমাত্র লক্ষ্য মুনাফা। ১৮৭০-২০০০ পর্যন্ত পুঁজি মনে করেছিল যে নারীকে গার্হস্থ্য কাজ থেকে শ্রম বাজারে টেনে আনাটাই লাভজনক। কারণ মেডিকাল সাইন্সের উন্নতির ফলে মৃত্যু হার কমে গেছিল অনেক বেশী আর জন্মহার কমছিল অনেক আস্তে আস্তে। ফলে জন্মহার কমাতে এবং শ্রমিক সংখ্যা বাড়াতে নারীকে শ্রম বাজারে আনতেই হত। কিন্তু ১৯৭০ থেকে Total Fertility Rate যখন Replacement Rate (২.১) এর নীচে নেমে যায় এবং এভাবেই ৫০ বছর চলতে থাকে গোটা শিল্পন্নত সমাজে তখন স্বাভাবিকভাবেই শ্রমিকের সংখ্যা কমতে শুরু করবে। আরেকটা বিষয় হল চীন ২০২৩-এই উচ্চবিত্ত দেশ হয়ে যাচ্ছে ($12,000 nominal measured GDP per capita)। চীনের মজুরি বৃদ্ধি ঘটেছে অস্বাভাবিক হারে। শেষ ২৫ বছরের মধ্যে চীনের মজুরি বেড়েছে ৫ গুণ। আবার চীন পশ্চীম সহ সমগ্র শিল্পোন্নত সমাজেই শ্রমিক সংখ্যা কমছে। ১৯৮০-এর চীনের মতো বিশাল সংখ্যার দক্ষ অথচ সস্তা শ্রমিক শ্রেণী আর কোন দেশে নেই। তৃতীয় বিশ্বের Total Fertility Rate-ও Replacement Rate (২.১) এর নীচে নেমে যাচ্ছে। আফ্রিকা, মধ্য এশিয়া, পশ্চীম এশিয়া ছাড়া কোথাও আর Total Fertility Rate Replacement Rate (২.১) এর ওপরে থাকবেনা। এর অর্থ এই যে শ্রমিকের দরকষাকষির ক্ষমতা বেড়ে যাবে। ফলে মুনাফা কমতে বাধ্য। আবার জনসংখ্যা না বাড়লে ক্রেতার সংখ্যাও বাড়বেনা। আর ক্রেতা না বাড়লে বাড়বেনা মুনাফা। অতএব পুঁজি আবার মনে করছে জন্মহার বাড়াতে হবে।আর তাই হয়তো নারীর পক্ষে থাকা খোরপোষ/গার্হস্থ্য সহিংসতা/ বৈবাহিক ধর্ষণ আইন বদলে দিয়ে বিবাহকে পুরুষের কাছে ফের লাভজনক করার একটা চেষ্টা চালানো হবে। যদি কাজ না হয় তাহলে নারীকে শ্রম বাজার থেকে বের করে দেওয়া হবেনা সে কথাও বলা যায়না।
পুরুষবাদীদের বুঝতে হবে যে স্বল্প জন্মহার ক্রমেই পুঁজিকে বাধ্য করবে নারীবাদের বিরদ্ধে অবস্থান নিতে। কিন্তু এও মনে রাখতে হবে সমাজ পরিচালকদের একটা মাত্র স্তম্ভ হল পুঁজি। ভোটে জেতা রাজনীতিবিদেরাও আরেকটা স্তম্ভ। আর নারী একটা ভোটব্যঙ্ক হতে পেরেছে বলে রাজনীতিবিদেরা মোটামুটি নারীবাদের পক্ষে অবস্থান নেবে। এছাড়াও উদারবাদীরাও বর্তমান ক্ষমতার একটা স্তম্ভ। এরা বিচার ব্যবস্থা, মিডিয়া, ইত্যাদিতে থেকে সমাজে নারীবাদ ছড়ায়। পুরুষবাদীদের তাই পুঁজিকে আরও বেশি কাছে টানার জন্যে শুধু পুরুষের জন্য পণ্যের সংখ্যা বাড়িয়ে যেতে হবে যেমন পুরুষজনিত রোগের চিকিৎসা, বা পুরুষের নিজস্ব সাঁঝার পার্লার, বা পুরুষের রাইফেল শুটিং ক্লাব, বা পুরুষের নিজের জন্য পণ্য কেনা বাড়িয়ে দেওয়া, বা আগে বছরে ১০টা পোশাক পরলে এখন বছরে ৩০টা পোশাক কেনা। দ্বিতীয়ত পুরুষবাদীদের পুরুষকে ভোটবাঙ্ক হতে শেখাতে হবে। পুরুষের জন্যে নার্সিং-এর মতো নারী প্রধান কাজগুলোতে সংরক্ষণ চাইতে হবে। এবং শেষে অবশ্যই উদারবাদের বিরুদ্ধে লড়াই চালাতে হবে। তবে সবার আগে মনে রাখতে হবে যে মধ্যবিত্ত পুরুষ যত বেশি বিয়ে করা বন্ধ করে দেবে তত বেশি স্বল্প জন্মহারের সমস্যা বাড়বে আর তত বেশি পুঁজি আমাদের পক্ষে আসবে। আর বিয়ে বন্ধের জন্যে যৌনতার বাজারকে উন্মুক্ত করা দরকার। বেশ্যাবৃত্তিকে আইনী স্বীকৃতির পাশাপাশি সামাজিক স্বীকৃতি দেওয়ার লড়াইও চালানো দরকার।
Author: Saikat Bhattacharya