
আমার ৪/৫টা প্রেমের অভিজ্ঞতা হল নারী কখনোইই পুরুষের একাকিত্ব ঘোচাতে পারেনা।
পুরুষ ও নারী অনেক ক্ষেত্রেই আলাদাভাবে চিন্তা করে।
তাদের আলোচনার বিষবস্তুও আলাদা হয়।
তাই মানসিকভাবে নারীসঙ্গ উপভোগ করেনা অধিকাংশ পুরুষ।
পুরুষ নারীসঙ্গ উপভোগ করে শারীরিকভাবে এবং সামাজিকভাবে।
সামাজিকভাবে এই জন্যে যে সমাজ পুরুষকে শেখায় "তুমি যখন কোন নারী পাবে তখনই তোমার পুরুষ জীবন সফল।"
এই সামাজিক প্রত্যাশা পূরণ করতে পুরুষ যেকোন মূল্যে একটা নারী সঙ্গী পাওয়ার প্রয়াস চালায়।
এই প্রয়াস চালাতে গিয়ে পুরুষ তার স্বাভাবিক আচরণ থেকে অনেক দূরে চলে যায়।
নারীটি নিজের অজান্তেই পুরুষটির অনেক সহজাত প্রবণতা শেষ করে দেয়।
নারীটি পুরুষকে বাধ্য করে তার অনেক ছোট বড় ইচ্ছা ও ভাললাগাকে ত্যাগ করতে।
একটা নারীকে পাওয়ার সামাজিক চাপ কমাতে পুরুষ সবকিছু মেনে নিতে রাজি হয়ে যায়।
শেষ মেষ যখন সে বোঝে সামাজিক "পুরুষ হওয়ার" প্রত্যাশা পূরণ করতে গিয়ে সে তার অনেক কিছু হারিয়েছে তখন আর তার কিছু করার থাকেনা।
মানসিকভাবে তার নিঃসঙ্গতা কাটেনা আর সামাজিক দাবিটা (তুমি যখন কোন নারী পাবে তখনই তোমার পুরুষ জীবন সফল) আর কোন অর্থ বহন করেনা।
আমার ধারণা আদীম সমাজে লক্ষ লক্ষ বছর ধরে মানুষ লিঙ্গ ভিত্তিক কাজের শ্রম বিভাজন গড়ে তুলেছিল।
ফলে পুরুষ অ নারী আলাদাভাবে ভাবতে শিখেছে।
পুরুষ অনেক বেশি শিকার করার মতো করে যে কোন কিছু ভাবে।
শিকারে সবসময় নেতৃত্বের প্রতি আনুগত্য লাগে।
নারী অনেক বেশি বাচ্চা পালন করার মতো করে সব কিছু ভাবে।
নারীদের কুড়োনো ও বাচ্চা পালনের জন্য কোন বিশেষ নেতৃত্বের প্রতি আন্যগত্য লাগেনা।
পুরুষ স্বাভাবিকভাবেই শিকারের যে লক্ষ্য ও তার গতি প্রকৃতি নিয়ে ভাবে ও আলোচনা করে।
নারী অনেকবেশি একে ওপরের বিষয় নিয়ে ভাবে ও আলোচনা করে।
পুরুষ পদ্ধতির ক্ষেত্রে সৃষ্টিশীলতা দেখায় আর নারী একটা নির্দিষ্ট কাজকে বারবার করার ক্ষেত্রে পারদর্শী।
পুরুষ অনেক বেশি মজা পায় রাজনীতি, খেলা নিয়ে আলোচনা করে।
নারী অনেক বেশী মজা পায় অন্য মানুষের চরিত্র নিয়ে আলোচনা করে।
নারীর কাছ থেকে মানসিক তৃপ্তি তাই পুরুষ কোনদিনই পেতে পারেনা।
নারীও পুরুষের কাছ থেকে মানসিক তৃপ্তি পায়না কিন্তু পুরুষের সান্নিধ্য নারীকে মানসিকভাবে নিরাপত্তা দান করে।
নারী অনেক বেশি অন্য মানুষকে নিয়ে চিন্তা করে আর পুরুষ অনেক বেশি পদ্ধতি নিয়ে চিন্তা করে।
তাই আজকের পৃথিবীতে যখন আমরা সবাই একা এবং এই একা একা উপভোগ করাটাই নারী ও পুরুষ উভয়কেই শিখতে হবে, তখন সকল মানুষকেই অপর মানুষের থেকে মানসিক তৃপ্তি আশা করা ছাড়তে হবে।
সকল মানুষকে বুঝতে হবে আর একজন মানুষের তাকে মানসিক তৃপ্তি দেওয়ার দায় নেই আর এমন প্রত্যাশা করাও অন্যায়।
একা থাকাকে উপভোগ করতে শেখাটাই আজকের যুগের চাহিদা।
Author: Saikat Bhattacharya