feminism

কন্যাশ্রী আছে, কিন্তু পুত্রশ্রী নেই কেন? বেটি পড়াও আছে, কিন্তু বেটা পড়াও নেই কেন?


মাধ্যমিকে প্রতিবছর কিন্তু ছেলেদের সংখ্যা কমছে মেয়েদের তুলনায়। সুতরাং পুত্রশ্রী চাওয়ার জায়গা আছে অবশ্যই। ছেলেরা খুব পরিস্কারভাবে স্কুল ছাড়ছে এবং শ্রম বাজারে ঢুকে যাচ্ছে।

কন্যাশ্রী করার একটা কারণ না কি ছিল নারী পাচার পশ্চীম বঙ্গ থেকে বন্ধ করা। সেটা কতটা সফল হয়েছে জানি না। প্রথম দিকে শুনতাম সফল হচ্ছে, জাতিসঙ্নংঘ না কি পুরস্কার দিচ্ছে পশ্চীম বঙ্গ সরকারকে, কিন্তু এখন আর কোন খবর পাইনা।

বাজারে পর্যাপ্ত শিক্ষিতদের কাজ না থাকলে নারীকে বেশি দূর না পড়িয়ে বিয়ে দেওয়াটাই অর্থনৈতিক ভাবে যুক্তি সম্মত ছিল। সরকার (হয়তো আন্তর্জাতিক মদতে কারণ পশ্চীম বঙ্গ সরকারের পরে কেন্দ্রীয় সরকারও এই পথে হেঁটেছে) নারীকে শিক্ষিত করে তুলছে কোন শিক্ষিত শ্রমের চাহিদা ছাড়াই যাতে নারীর বিয়ের বয়স বাড়ে এবং সমাজের জন্মহার কমে যা উন্নয়নশীল দেশগুলোর সরকার চায়। কারণ উন্নয়নশীল দেশে গড়ে মানুষ প্রতি পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি/পরিকাঠামো/পুজি নেই আর তাই জন্ম হার কমিয়ে মানুষ প্রতি পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি/পরিকাঠামো/পুজির পরিমাণ বাড়ানোটা সরকারের চোখে সঠিক কাজ।

পুরুষের সস্তা কায়িক শ্রমের প্রয়োজন এখনো ভারতের মতো দেশে অপরিসীম। তাই পুত্রশ্রী দিলে পুরুষ ঘরে বসে পড়তে শুরু করলে কায়িক শ্রমের বাজারে মজুরি বেড়ে যাবে কারণ শ্রমিক সংখ্যা কমে যাবে। সেটা সরকার চায়না। পুরুষ মা-বাবা সংসারের জন্য কায়িক শ্রম দেবে, দেশের পরিকাঠামো বৃদ্ধি পাবে। আর নারী কন্যাশ্রী নিয়ে পড়াশুনা করে চাকরীর আশায় বা ভাল পাত্রের আশায় বিয়ের বয়স বাড়াবে। আর তাই জন্মহার কমবে। মোট ফল গড়ে মানুষ প্রতি পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি/পরিকাঠামো/পুজি বাড়বে। উন্নত হবে দেশ।

তবে উন্নত হওয়ার পরে তারা বুঝবে যে তাদের পর্যাপ্ত ক্রেতা নেই কারণ যোগান অনেক বেশি কিন্তু চাহিদা বড় কম। মানে গড়ে মানুষ প্রতি পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি/পরিকাঠামো/পুজি বড্ড কম হয়ে যাবে। পশ্চীম দুনিয়া, জাপান, পূর্ব ইউরোপ, রাশিয়া, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, সিঙ্গাপুর সর্বত্র যোগান বেশি, চাহিদা কম আর জন্মহার কম বলে ক্রেতার সংখ্যাও বাড়ছেনা।

পুরুষাধিকার আন্দোলনকারীরা এখন পুত্রশ্রী চাইলে পাবেনা। এখন চেয়ে লাভ নেই। বরং ঠাণ্ডা মাথায় পুরুষদের বৈবাহিক বা প্রেমের সম্পর্কে না জড়িয়ে পড়ার বিষয়গুলো শেখানো শুরু করুক। এতে জন্মহার আরও কমবে, গড়ে মানুষ প্রতি পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি/পরিকাঠামো/পুজি বাড়বে, দেশ উন্নত হবে এবং একটা সময় চরম কম ক্রেতার সঙ্কটে পড়বে। একটা ২০ বছরের লম্বা খেলা খেলতে হবে পুরুষবাদীদের। তারপর জয় এমনিই আসবে।

Author: Saikat Bhattacharya


You may also like