feminism

বাঙালী কেন নারীবাদী হয় ২


ভারতে বসবাসরত গড়পড়তা বাঙালীর কাছে নারীবাদ হল প্রায় ধর্মীয় মৌলবাদের মতন। বাঙালীর সবকিছুর মূলে সেই নারী নিয়েই লাগে। কে কত নারীদরদী তার ইঁদুরদৌড়ে নেমে পড়ে গড়পড়তা বাঙালী। গতপর্বে এর ঐতিহাসিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপট নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা করেছি।

এবার ফোকাস করা যাক বর্তমান পরিপ্রেক্ষিতে।

প্রথমেই জানা যাক নারীবাদের মূল বক্তব্য কী। পিতৃতন্ত্রে নারী ও পুরুষের দ্বায়িত্ব ও অধিকার সুস্পষ্টভাবে প্রতিষ্ঠিত করে দেওয়া হয়েছিল।

এবার নারীবাদের মূল মতাদর্শ হল পিতৃতন্ত্রের যে সুবিধাগুলি নারী পেত সেগুলী বহাল থাকবে কিন্তু দ্বায়িত্বগুলি থাকবে না উপরন্তু বাড়তি সুবিধা পাবে। পুরুষের ক্ষেত্রে ঠিক বিপরীত, তাদের পিতৃতান্ত্রিক দ্বায়িত্বগুলি বহাল রাখলেও অধিকার সব খর্ব করে দেওয়া হল। ফলে বকলমে নারীবাদ বলে পুরুষের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র থাকবে কর্তব্য আর নারীর থাকবে শুধু অধিকার।

এবার বাঙালী এটা গণহারে গিলল কেন? কারণ আগেই বলেছি, গড়পড়তা বাঙালী হল নারীপূজারী। ফলে ধর্মবিশ্বাস হিসাবেই নারীবাদ তাদের মজ্জাতে ঢুকে পড়ে।

এবার বর্তমান অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতেও একে দেখা যাক।

বাঙালী একমাত্র নারীর নামেই উগ্রচণ্ডা হয়। বাম থেকে ডান সব বাঙালীর সবার আগে আসে নারীবাদ, পরে সবকিছু।

এর একটি কারণ আগের পর্বেই বলে দিয়েছি, লৌহযুগের বিকাশ না হওয়া। ফলে বাঙালীর মধ্যে কোন শক্তিশালী সামাজিক কোডের বিকাশ হয়নি। সেইজন্যে ন্যায়-অন্যায়, ঠিক-ভুল বোধের উদয় হয়নি।

এবার লৌহযুগের বিকাশ না হওয়ার সাথেই রাষ্ট্রধারণার বিকাশ হয়নি, ফলে রাজনীতিতে লবডঙ্কা।

সেই ভুল রাজনীতির দৌলতে বাঙালী হিন্দু আজ একটি ক্ষমতাহীন, পুঁজিহীন দূর্বল, ভৃত্য জাতি।

মধ্যবিত্তদের হাতে জাতি গেলে এই অবস্থাই হবে।

দূর্বল জাতির পুরুষরা বরাবরই পুরুষের কাতারে backbencher হবে। তবে ক্লাসের backbencher এর মতন কিন্তু backbencher পুরুষ কখনোই নয়, সে থাকে খরচের খাতাতে। নারীদের কাছেও তাই।

ফলে বাঙালী পুরুষ নারীভাগ্যে পশ্চাতে অবস্থান করে। এই না পাওয়ার হতাশাই তাকে আরো হ্যাংলা ও মরিয়া করে তোলে। ফলে সে যেনতেনপ্রকারেন নারীদের তুষ্ট করতে গিয়ে বদ্ধ উন্মাদের মতো আচরণ করে। আবার পড়াশুনা ও কেরিয়ারের মাঝে স্বাভাবিক জীবন ও যৌনতা পায়না বলে সে আরো ভেড়ুয়াতে পরিণত হয়।

আগেই বলেছি, বাঙালী অভিভাবকরা সন্তানদের নিজ স্বার্থসিদ্ধির উৎস হিসাবে দেখে। ফলে বিশেষত পুত্রসন্তানের ভালোমন্দ তাদের চোখে পড়েনা। বরং তাদের মধ্যে এক অদ্ভুত ঈর্ষা কাজ করে যে আমি যা পাইনি আমার ছেলেও তা পাবেনা। ফলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তারা ছেলেদের কলুর বলদে রূপান্তরিত করতে উঠেপড়ে লাগে। ফলে তারা তাদের জীবনের পোটেনশিয়াল পূর্ণ করার আগেই শেষ হয়ে যায়।

এছাড়াও বাঙালী সংস্কৃতি ও সমাজ এমনই যে পুরুষদের স্বাভাবিক পৌরুষসুলভ আচরণকে blasphemy হিসাবে দেখে। ফলে তারা তাদের সম্পূর্ণ মেরুদণ্ড ভেঙ্গে এক হীনমন্য চাটুকারে পরিণত হয় ফলে তারা নারীসঙ্গও এই চাটুকারিতার মধ্যে দিয়েই নারীকে তুষ্ট রাখবে এই আশা করে।

অর্থবল, শক্তিবল ও পৌরুষবল ছাড়া যেকোন পুরুষই ক্লীবলিঙ্গই হবে।

এছাড়াও তাকে শেখানো হয় একটি বৌ পেলেই তোমার জীবন স্বার্থক। নারীসঙ্গ ছাড়া তুমি বৃথা। ফলে সেই নারী পাওয়াকেই জীবনের একমাত্র সার্থকতা মনে করে।

আবার নারীদের যেভাবে বড় করা হয় তাতে তাদের শেখানো হয় তুমি নারী মানেই বিশাল কিছু, গোটা পৃথিবী তোমার পায়ের মুঠোয়, তোমাকে সারাজীবন কেউ না কেউ মণিমুক্তোর মালা ছড়িয়ে যাবে।

ফলবশত যেটা হয় বাঙালী পুরুষ হয় মেরুদণ্ডহীন ক্লীব যার কাছে একটা নারীর সঙ্গ মানেই জীবনের সবকিছু আর বাঙালী নারী হয় দাম্ভিক, অহঙ্কারী এক narcissist জীব। দুয়ের মিশেলে বাঙালী জাতি হিসেবে হয় নারীবাদী।

এখানে আমি দ্বিতীয় পর্ব শেষ করলাম। আরো অনেক কিছু বলা বাকি রয়ে গেল। সেগুলি আরো পরে বলব ধীরে ধীরে। অপেক্ষাতে থাকুন। যেপথে চলেছি তার শেষ নাই এখন।

 

 

Author: Purandhar Khilji


You may also like