
এই তোপ এতোটাই শক্তিশালী ছিলো যে কাছাকাছি কোন গর্ভবতী নারী থাকলে এই তোপের বিকট আওয়াজে ডেলিভারি হয়ে যেতো! তাই এই তোপের নাম "তোপ-ই-বাচ্চাওয়ালী"।
৭,৭৭৯ সের ওজনের এই তোপ টেনে নিয়ে যেতো ৫০০ মহিষ।
সুলতান ইলিয়াস শাহ ১৩৪৮ সালে উড়িষ্যার পূর্বগঙ্গ রাজবংশের সম্রাট ত্রিকলিঙ্গেশ্বর (উৎকল, মহাশোল ও কলিঙ্গ) তৃতীয় নরসিংহদেবের বিরুদ্ধে যুদ্ধে বাচ্চাওয়ালী তোপ ব্যবহার করেন। ১৩৪৮ সালে উড়িষ্যা জয় করেন ইলিয়াস শাহ্।
এই বিরাট তোপটিই ছিলো ভারতীয় উপমহাদেশের প্রথম ও এশিয়ার দ্বিতীয় তোপ। চীনের পর ইলিয়াস শাহ-ই প্রথম তোপ ব্যবহার করেন।
উল্লেখ্য, সম্রাট বাবর ১৫২৬ সালের ২১শে এপ্রিল পানিপথের যুদ্ধে প্রথম আধুনিক তোপ ব্যবহার করেছিলেন, কামান আরও আগে থেকেই ব্যবহৃত হয়ে এসেছিলো,, তবে ভারতে প্রথম "আধুনিক কামান" ব্যবহার করেন জহিরুদ্দীন মুহাম্মদ বাবর। আধুনিক তোপ ব্যবহারের কৃতিত্ব বাবরের হলেও উপমহাদেশের প্রথম তোপ, এশিয়ার ২য় তোপ ও বিশ্বে তৃতীয় তোপ ব্যবহারের কৃতিত্ব সুলতান ইলিয়াস শাহের ||
সুলতান শামসউদ্দিন ইলিয়াস শাহ্ ১৩৪৮ সালে নরসিংহদেবকে পরাজিত করে উড়িষ্যা জয় করেন। উড়িষ্যার বিশাল হস্তী বাহিনী ও অগ্নিবাণ নিক্ষেপকারী সৈনিকদের রক্তে চিল্কা হ্রদের পানি লাল হয়ে যায়।
ইলিয়াস শাহ্ পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে তোপ দেগে পুরো মন্দির ধুলিসাৎ করে দেন। মন্দির ধুলিসাৎ হয়ে মাটির সাথে মিশে যায় ; মন্দির ধুলিসাৎ হয়ে গেলেও জগন্নাথ দেবের কোনো খোঁজ অবশ্য মেলে নি!
নরসিংহদেব যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পলায়ন করেন। উড়িষ্যা জয় করে ইলইয়াস শাহ "গাজী" উপাধি ধারণ করেন।
উড়িষ্যা আক্রমণে তোপ ব্যবহারের প্রথম প্রমাণ পাওয়া যায়- "বিশাখাপত্তনম্" (বিশাখাপত্তনম, অন্ধ্রপ্রদেশ, ভারত ) শাসনকারী কন-রাজবংশের ২য় কেদারের উৎসর্গকৃত সংস্কৃত শ্লোক থেকে। উল্লেখ্য যে, কনরাজ ছিলেন সুলতান ইল্ইয়াস শাহ্'র তাবেদার শাসক।
তোপটি বর্তমানে মুর্শিদাবাদে হাজার দুয়ারী প্যালেস মিউজিয়ামে সংরক্ষিত রয়েছে।।
Author: Rajit Tahmid Jeet